প্রিয় ফিল্ম-০১: ১৯৭১

ধ্রুব হাসান এর ছবি
লিখেছেন ধ্রুব হাসান (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৩/১২/২০০৭ - ১:৩২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

প্রিয় ফিল্ম-০১: ১৯৭১১৯৭১:যে কাহিনী কখনো বলা হয়নি, শোনা হয়নি কিন্তু শুধুমাত্র দেখা গেছে! যে চোখ দেখেছে তা, ইতিহাসের অন্ধকারস্তুপে ধীরে ধীরে মারা গেছে সে একদিন। বলা হয় ইতিহাস লেখে ক্ষমতাবানরা, তাই হয়তো আমাদের ক্ষমতাবানদেরো দরকার ছিলোনা ঐ ঘটনা স্বীকার করার, অথবা ইতিহাসের পাতায় লিখে রাখার। যারফলে জানা ইতিহাস থেকে আমাদের ইতিহাস আজ নিশ্চিহ্ন। ১৯৭১-এ ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে এক যুদ্ধ হয় যাকে ‘বাংলাদেশ ওয়ার’ নাম দেয়া হয়েছিলো। ঐ যুদ্ধের হারকে পাকিস্তান কোনদিন মেনে নিতে পারেনি, আমরাও ঐ যুদ্ধকে কখনোই ভুলতে পারিনি; কারণ ঐ যুদ্ধ আমরা কাধেঁ কাধ মিলিয়ে লড়েছি আমাদের প্রিয় মাতৃভূমির পক্ষ থেকে।

প্রায় এমনটিই আছে ফিল্মটির ভূমিকায়। ছবিটি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনায় যাওয়ার আগে গভীরভাবে শ্রদ্ধা জানাই ৩০ লক্ষ হারানো প্রানের প্রতি, বীরাংগনাদের প্রতি, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি এবং সর্বোপরি সেসব ভারতীয় বীরযোদ্ধাদের প্রতি যারা আহত ভাইয়ের পাশে দাড়িঁয়ে লড়েছেন কাধেঁ কাধ মিলিয়ে, অকুতভয়ে – যাদের কেউ শহীদ হয়েছেন, কেউবা পঙ্গু , কেউ কেউ পাকিস্তানে আটকা পড়ে নিঃশ্বেষ করেছেন নিজের জীবন। সালাম তোমাদের সবাইকে এই বিজয়ের মাসে।

আমার প্রিয় ফিল্মের তালিকা অতি দীর্ঘ, শুধু সচলের পাঠকদের সাথে শেয়ার করবো বলে এই পর্যন্ত ৮ থেকে ১০ রিভিউ ভালোলাগা থেকে লিখেছি কিন্তু কোনটাই শেষ হয়নি শেষ পর্যন্ত। দেখতে দেখতে ডিসেম্বর এসে গেল, হঠাত ক’দিন আগে হাতে আসলো অম্রিত সাগরের ১৯৭১ ছবিটি। ফিল্মটি মুক্তি পেয়েছে ৯ মার্চ ২০০৭, মানে এ বছর। কিছু দিন আগে একটা ইন্টারভিউ পড়ছিলাম অপর্ণা সেনের, উনি দেখলাম ভীষন ক্ষেপা কেনো অস্কারের জন্য এতো ভালো ভালো ফিল্ম থাকতে একলব্য পাঠানো হলো! তার মুখেই জানতে পারি এই ছবিটার কথা। সেই থেকে জোগারের চেষ্টা করে শেষমেষ পেলাম এবং দেখলাম। না ছবিটা হতাশ করলো না আমাকে। কোনদিকে শেষ হলো ঠেরি পেলাম না; কোথাও মনে হয়নি ঝুলে গেছে, একেবারে শেষ পর্যন্ত উত্তেজনাটা ধরে রাখতে পেরেছেন পরিচালক। অনেক জায়গায় পরিচালক কোনরকম রিস্কে না গিয়ে জাম্প কাটের ব্যবহার করেছেন, এতে ব্যক্তিগতভাবে আমি একটু হোচট্‌ খেলেও পরিচালক বুদ্ধিমানের মতো অনেক খরচ বাচিঁয়েছেন। যদিও তখনো জানতাম না এটা তার প্রথম ছবি; পরে যখন জেনেছি তখন তার দুঃসাহসের তারিফ না করে পারিনি।

1971যাইহোক এবার একটু আলাপ করি ছবিটা দেখার অভিজ্ঞতা নিয়ে।গল্পটা হলো, ১৯৭১: বাংলাদেশ(ভারত)-পাকিস্তান যুদ্ধে বন্ধী ছয়জন যুদ্ধবন্ধীকে ঘিরে; মেজর সুরজ সিং (মনোজ বাজপাই), ক্যাপ্টেন জেকব (রবি কিষন), ফ্লাইট লে.টে. গুরটু (দীপক দবরিয়াল),ক্যাপ্টেন কবির (কুমুদ মিশ্র), সুবেদার আহমেদ (চিত্তরঞ্জন গিরি) এবং ফ্লাইট লে.টে. রাম (মানব কাউল)। এদের সবাই একসাথে বন্ধী ছিলো একই প্রিজন ক্যাম্পে, নানা অবস্থায় প্রায় এক দেড় বছর বন্ধী হতাশ জীবন কাটানোর পর ওরা বুঝে গেল তাদের নিজ দেশে ফেরার সম্ভাবনা অতিক্ষীন বা প্রায় নেই! ফেরার জন্য যা কিছু করার নিজেদেরই করতে হবে, বসে না থেকে নিতে হবে পালানোর সুযোগ। পাকিস্তানভিত্তিক কিছু মানবাধিকার সংঘঠন আর আন্তর্জাতিক রেড ক্রস সোসাইটির চাপে পড়ে তদানিত্তন পাক সরকার নানাভাবে এসব বন্ধীদের লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করে পাক বর্ডারের বিভিন্ন সেনা ঘাটিঁতে। আর এই সুযোগে এই ছয়জন বন্ধী বারবার চেষ্টা করে পালানোর; কয়েকবার পালাতে গিয়ে ধরা পড়লেও একবার তারা ঘটাতে সক্ষম হয় এক প্রলয়ের! এখানে মিশনের সফলতা বা ব্যর্থতা অপ্রাসংগিক, প্রাসংগিক হলো ঘটে যাওয়া ইতিহাস! নিষ্ঠুর ও আবেগশূন্য এই ইতিহাস দর্শককে যেন ঠেলে দেয় এক ভয়াবহ অর্থহীনতায়!এই ঘটনাকে উপজীব্য করে আসে ততকালীন পাক-ভারত রাজনীতি, দেশপ্রেম, ধর্ম, ব্যক্তিগত প্রেমসহ নানা মানবিক উপাদান। ছবিটির মূল প্লট ৭১ কে ঘিরে, যা আমাকে স্বরন করিয়ে দেয় হলিউড ক্লাসিক ‘দ্য গ্রেট এসক্যাপের’ কথা। এমন কি মনের অজান্তে কিছু কিছু মিল খুজেঁ পাই ‘সেভিং প্রাইভেট রাইয়ান’ বা ‘ব্ল্যাক হক ডাউনের’ সাথেও। তবে ১৯৭১ নিজ মানবিক গুনেই ভিন্নতার ছাপ ফেলে হৃদয়ের অনালোকিত আবেগের ঘরে।

এবার আসা যাক ফিল্মটির নির্মান নিয়ে। পরিচালক অম্রিত সাগরের সাহসের তুলনা না করে পারিনা, কারন তিনি প্রথম ফিল্ম বানাতে গিয়ে এমন একটা প্লট বেছে নিলেন যা একি সাথে ব্যাপক,বিতর্কিত ও ঝুকিঁপূর্ণ। হয়তো তিনি এই সাহস পেয়েছেন তার দাদা বিখ্যাত পরিচালক রামানন্দ সাগর এবং তার বাবা মতি সাগরের কাছ থেকে। অবশ্য মতি সাগর ৭১ যুদ্ধের পর এই গল্পটি লিখে রেখেছিলেন নিজে ছবি করবেন বলে, তার আর পরিচালনার সুযোগ না হলেও এই ছবিটির প্রডিওসার কিন্তু তিনি, মানে ষ্টুডিও ১৮। তবে অম্রিত তার ফিল্ম পরিচালনার উপর কোর্সটি শেষ করেন ক্যালিফোর্নিয়া থেকে; ধরে নেয়া যায় এতে তার হলিউড ঘরানার চোখ তৈরী হয়েছে। যার ফলে তার ছবি তথাকথিত মুব্বই ছবির বাহুল্য বর্জিত। চিত্রনাট্য, কষ্টিউম, অভিনয় বা সংলাপ, সেট, এমন কি ভি.এফ.এক্স ইফেক্ট প্রয়োগেও দেখা যায় বেশ চিন্তাশীলতা। আমার সবচেয়ে বেশী ভালো লেগেছে সিনেমাটোগ্রাফী আর কালার কারেকশন বা সেপারেশনের কাজ, একেবারে ম্যাটালিক টোনটা ধরে রাখতে পেরেছে শেষ পর্যন্ত; অনেকটা কমান্ডো গেমসের কালার পেলেইট! তবে কালারিষ্টের নাম না জানার কারনে আপনাদের জানাতে পারছিনা (পরে জেনে সংযুক্ত করে দেব)। তবে এক্ষেত্রে দু’জনের নাম না জানালেই নয়, এক হলো সিনেমাগ্রাফার চিরত্তন দাস, যার সুন্দর সিনেমাটোগ্রাফী ছবিটিকে নিয়ে গেছে গ্লোবাল ফিল্মের মানে। দ্বিতীয়জন হলেন ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ডিরেক্টর অম্রিত সাগরের ভাই আকাশ সাগর, যার অতি প্রাঞ্জল মিউজিক কম্পোজিশনের কারণে কোন কোন জায়গায় জাম্প কাটগুলোকেও সহনীয় লাগে। ছবির প্রতিটি ট্রানজিশনে এর ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক অন্তরালে থেকে দর্শকদের এমনভাবে ধাবিত করে পরবর্তী ধাপে, আমি দর্শক হিসেবে যাষ্ট ভেসে যাই! চিত্রনাট্যটির সবচেয়ে বড় মজার দিক হলো, ছবির শেষ পর্যন্ত দর্শক পরিণতিটা আগাম ধারনা করতে চেষ্টা করেও সুবিধে করতে পারেন না; নানা রকম সম্ভাব্য পরিনতি উকিঁ মারে শেষ অবধি! আর স্ক্রিনপ্লেটির শক্তিশালী দিক হলো, টার্গট থেকে বিচ্যুত না হওয়া, শেষ পর্যন্ত ফোকাস ঠিক থাকা! তবে পাশাপাশি দুর্বল দিক হলো কোন কোন জায়গায় মনে হয়েছে প্রয়োজনীয় ডিটেলেস্‌-এ যাননি পরিচালক; অবশ্য এ নিয়ে মন্তব্য করার আগে কততম স্ক্রীপট্‌ নিয়ে কাজ করা হয়েছে জানতে পারলে ভালো হত।যুদ্ধের ছবির আরেকটি বড় বিষয় হলো এ্যাকশন। ১৯৭১ এর এ্যাকশন ডিরেক্টর স্যাম কুশলের কাজ সত্যিই দারুন! সিনেমাটোগ্রাফার-এ্যাকশন ডিরেক্টর-ডিরেক্টর, এই ত্রয়ীর যথাযত সমন্বয়ে একটা প্রোডাকশনের ৫০% সফলতা চলে আসে; এরপর বাকী কাজ বর্তায় পোষ্টপ্রোডাকশন টিমের উপর। সে বিচারে এই ছবি দারুনভাবে সফল (সমকালীন হিন্দি ছবির বিচারে)।

group picরাজপুতানা রাইফেলস্‌ এর মেজর হিসেবে ৭১-এ যুদ্ধকালীন সময়ে এ্যামনিশন শেষ হয়ে যাওয়ায় পাকিস্তান আর্মির হাতে ধরা পড়েন মেজর মেজর সুরজ সিং (মনোজ বাজপাই)। বন্ধী হওয়ার পর দুই দুইবার পালানোর চেষ্টা করেন তিনি। ব্যর্থ হওয়ায় তার উপর নেমে আসে ভয়ঙ্কর নির্যাতন। একসময় তাকে নিয়ে আসা হয় বর্ডারের কাছাকাছি এক পাহাড়ি ক্যাম্পে। অনেকদিন পর মনোজ বাজপাই-এর অসামান্য অভিনয় দেখলাম (এমনিতেই এই লোকটার অভিনয় আমার দারুন লাগে)! আরো আশ্চর্য হয়ে দেখলাম তারকাহীন এবং নায়িকাহীন এই ছবিতে কি করে এতো দুর্দান্ত অভিনয় করলেন ছোট-মাঝারি-বড় প্রতিটি অভিনেতা; প্রতিটি চরিত্র যেন এখানে নিজ নিজ মহিমা নিয়ে উদ্ভাসিত! বিশেষ করে দুই ফ্লাইট লে.টে. জুটির অভিনয় চমতকার, এদের একজন গুরতু অপরজন রাম। ছবির শুরুর দিকে দেখা যায় প্রতি রাতে নিয়ম করে এদের পেটানো হয়, আর সকালে প্যারেড। নিয়ম অনুযায়ী ঈদের আগের রাতেও তাদের পেটানো হলো তাদের, মেজর সুরজ বাদে। পরদিন মানে ঈদের দিন পিকআপ ভ্যানে আসছে আরেকদল যুদ্ধবন্ধী, সবাই ক্লান্ত, অবসন্ন। এর মাঝে গুরতু (ফ্লাইট লে.টে.)রামকে((ফ্লাইট লে.টে.)লক্ষ্য করে জিজ্ঞেস করে,

গুরতুঃ ‘এই সুন্‌না’
রামঃ ‘কিয়া হে?’......ঘুম জড়ানো কন্ঠে।
গুরতুঃ‘এই সুন্‌ না...’
রামঃ ‘কিয়া হে?’
গুরতুঃ ‘আরে ইয়ে পাকিস্তান মে পাঞ্জাবী রেহতে হে?’
রামঃ ‘হু, রেহতে হে’
গুরতুঃ ‘আরে ইয়ে সিন্ধি?’
রামঃ ‘আরে য়ুওভি রেহতে হে বাবা’ (বিরক্ত সে)
গুরতুঃ ‘তো সুননা, ইয়ে আপনে মুসলমান ব্রাদারতো হ্যায়ই...?’
রামঃ ‘হে,...তো কিয়া হুয়া?’
গুরতুঃ ‘নেহি ইয়ার, মাই সোস রাহা তাহ্‌ ইয়েতো হামারা হিন্দুস্তান মে বি তো হে!’
রামঃ ‘হে, তো হুয়া কিয়া?’ (ক্ষেপে গিয়ে)
গুরতুঃ ‘আবে তো পাকিস্তান বানায়া কেউ থাহ্‌?’ (ক্ষেপে গিয়ে)
রামঃ ‘গলতি হো গেয়ি, আগে সে নেহি বানায়ে গা’

গুরতু এবং রামগুরতু এবং রামপুরো আলাপটা এতো আবেদনময় যে আপনার মনটায় হাসতে হাসতে খারাপ হয়ে যাবে। ঘটনা আগাতে থাকে বন্ধী ক্যাম্পের নানা মানবিক টানাপোড়ন নিয়ে।সবচেয়ে টাচি হলো মেজর সুরজের ডায়েরী লেখা! তার ধারাভাষ্য থেকে জানা যায় ‘......হিন্দুস্তান্‌নে হামে কিউ ভুলা দিয়া হামে মালুম নেহী, পাকিস্তান হামে কেউ ভুলা দেনা চাহ্‌তা হে হামে পাতা নেহী ! বেহেরহাল উমিদ কি এলাওয়া জিন্দা রেহ্‌নেকা কোয়ি ওর সাহারা নেহী হো, হাম ভি ইস্‌ উমিদ কি সাহারে জিন্দা হে কে হাম কভি হামারে আপনো সে...কভি মিল পায়ে গে! লেকিন মাই ইয়ে ভি জানতা হো কে ইয়ে উমিদ হাত পর হাত রাখকর বয়েটনেসে নেহি হোতি...মাই একবার ফের আনে ওয়ালে কাল কা ইন্তেজার করুঙ্গা’। এভাবেই মেজর সুরজ খুজেঁ ফিরে পালানো পথ। ছবির প্রথম টার্নিং পয়েন্ট দেখি সুবেদার আহমেদকে দিয়ে। সে তার মুসলমানিত্ব পুজিঁ করে মোটামুটিভাবে ধারণা করতে সক্ষম হয় তারা বর্তমানে ঠিক কোথায় বন্ধী! বুঝতে পারে তারা আহমেদা বাদে বন্ধী, যা ইণ্ডিয়ান বর্ডারের কাছে। এ নিয়ে মেজর সুরজ ও তার সিনিয়র অফিসারসহ সবাই মিলে বসে পালানো উপায় খুজঁতে; বাগরা বসায় সিনিয়র অফিসারটি। এদিকে যখন নিজেদের মধ্যে চলছিলো তুমুল বাকবিতন্ডা, ঠিক তখন মুলতান জেলে আনর্জাতিক রেড ক্রস নিয়ে মেজর সুরজের স্ত্রী হাজির। পুরো জেল ঘুরে পাওয়া গেল না একজনো ৭১ এর বন্ধী (কারন আগেই বন্ধীদের সরিয়ে নেয়া হয়েছে চকলালা ক্যাম্পে)! মেজরের স্ত্রী তা মানতে রাজী নন, কেননা তিনি চেনেন তার স্বামীর হাতের লেখা! কিন্তু আনর্জাতিক রেড ক্রসকে পাকিস্তান বুঝাতে সক্ষম হয় যে এখানে কোন ৭১ এর বন্ধী নাই। এই পরিকল্পনানুযায়ী স্ক্রীপ্টের দ্বিতীয় টার্নিং পয়েন্ট আসে যখন মুলতান থেকে কর্ণেল ছুটে আসে এক সুখবর নিয়ে যে, ৭১ এর বন্দ্বীদের রিপার্টিশনের মাধ্যমে ফিরিয়ে দেয়া হবে ভারত। এই আনন্দে পুরো ক্যাম্প আত্বহারা হলেও ষড়যন্ত্রের গন্ধ খুজেঁ পেলেন মেজর সুরজ,সুবেদার আহমদ, ক্যাপ্টেন কবির, ক্যাপ্টেন জেকব; পরে এদের দলে যোগ দেন ফ্লাইট লে.টে. গুরতু ও রাম। এই ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে যায় যখন সুবেদার আহমদ খুজেঁ পান নিউজ পেপারের ঐ দিনের তাজা খবর, ‘......ইন্ডিয়ার পাচঁবার চিন্তা করে কথা বলা উচিত কোনরকম দোষারোপ করার আগে, কারণ আন্তর্জাতিক রেড ক্রস গোটা পাকিস্তানের জেল ঘুরেও কোন ৭১ এর বন্ধী বের করতে পারেনি’। উল্লেখ্য তখন জিয়াউল হকের সামরিক সরকার ক্ষমতায়। তো এই ষড়যন্ত্র আচঁ করতে পেরে ঐ রাতে পালানোর পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরুর সিদ্ধান্ত নেয় মেজর সুরজ গ্রুপ, যাতে তারা রেড ক্রস পাকিস্তান থাকতে থাকতে তাদের মনোযোগ টানতে পারে! ছবির এই অংশের আরেকটি দৃষ্টিনন্দন দিক হলো একষ্টিক সুরের পাঞ্জাবী গান, দারুন কম্পোজিশনের খেলা দেখিয়েছেন এতে আকাশ সাগর।

পালানোর পরিকল্পনাপালানোর পরিকল্পনাপরিকল্পনা অনুযায়ী পালানোর সিদ্ধান্ত হয় ১৪ঠা আগষ্ট পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসের দিন। সাজানো পরিকল্পনানুযায়ী ঘটনা এগিয়ে যায়, এই ঘটনায় সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে সুবেদার আহমদ। জেকবের বোমা যখন পানিতে ভিজে অকেজো হয়ে পরে তথন সুবেদার বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়ে নিজের জান কোরবানি করার সিদ্ধান্ত যদি না নিত তাহলে ঘটনার মোড় একবারে উলটো দিকে ঘুরে যেত। ফিল্মের পুরো প্রথম ভাগের এইটা একটা বড় মোচড়, যা নির্ধারণ করে দেয় পরবর্তী পরিণতি। এই জায়গায় দারুন বিকল্প বেছেঁ নেন স্ক্রীপ্ট্‌ রাইটার! আহমদ নিজে শহীদ হয়ে সু্যোগ করে দেয় তার বাকী সাথীদের। মেজর সুরজ গং সুলতানা খানমকে সাথে নিয়ে এগিয়ে যায় মুজ্জাফরাবাদের দিকে (বর্ডারের দিকে)।এই অংশে মেজর মালিকের (পাকিস্তানের) ইন এবং চেক পোষ্টের ঘটনা ছবির দ্বিতীয় পর্বের প্রথম টার্নিং পয়েন্ট। এখন পর্যন্ত ছবি কোথায় একফোটাও ঝুলেনি, একেবারে টান টান উত্তেজনা! ৫ জনের গ্রুপ পৌছেঁ যায় মুজাফফরাবাদ। এই অংশে ক্যাপ্টেন জেকবের বিচক্ষনতা, দূর্দান্ত অভিনয় এবং আত্ববলিদান যোগ করে আরেকটি নতুন মাত্রা। পাকিস্তান আর্মি ঘিরে ফেলেছে মুজাফ্‌ফরাবাদ, পালানোর পথ রুদ্ধ! এই অংশে রামের স্বতস্ফূর্তভাবে আত্মবলিদানের দ্বায়িত্ব নেয়া ছবিটিকে পৌছেঁ দেয় তার চরম পরিণতির দিকে, যেন মনে হয় স্বতীর্থদের একের পর এক বলিদানই তাকে দুঃসাহসী করে তুলে। এই অংশের দারুন মনোমুগ্ধকর এ্যাকশন দেখে এ্যাকশন ডিরেক্টর সাম কুশলের তারিফ না করে পারা যায় না !বিশেষ করে রামের নিজেকে ব্লাষ্ট করার দৃশ্য অপূর্ব মাত্রা এনে দেয় পুরো ছবির কোয়ালিটিতে। রিয়েলিটিটাই এমন যে শোকের মাতম করারই সুযোগ পেলনা গুরতু, রামের পরম বন্ধু!

বেচেঁ যাওয়া তিনজনবেচেঁ যাওয়া তিনজনএই পর্যায়ে আমরা প্রায় ছবির শেষ পরিণতির দিকে ধাবিত, দর্শক হিসেবে আকাঙ্ক্ষা, একজন হলেও যেন পৌছেঁ যায় ভারত! টানটান উত্তেজনা! এই অংশের নতুন কিন্তু গুরুত্ত্বপূর্ণ সংযোজন হলো সাবিনা জাহাঙ্গীর তথা রেডক্রসের নতুন করে ইনবলভ্‌মেন্ট! এটাই কি সুলতানা খানমের একিন তথা বিশ্বাস রাখার ছোট অথচ গুরুত্বপূর্ণ তোফা! যাইহোক এই ঘটনা নতুন মাত্রা যোগ করে ছবির; যদিও এই পর্যায়ে এসে ভারতীয় কর্তৃপক্ষেরও খানিকটা ইনফরমেশন যোগ করতে পারতেন পরিচালক! বেচেঁ যাওয়া তিন যুদ্ধবন্ধী (যাদের একজন নতুন করে আবার আহত) তাদের বাইক ফেলে এগিয়ে যায় বারমোল্লা ইন্ডিয়ান বর্ডারের দিকে, এই জায়গা বড় রূঢ়, বরফের আস্তরে ঢাঁকা চারদিক। এদিকদিকে স্বজন হারানোর শোক, আহত সাথী আর দীর্ঘ পথের ক্লান্তি ভেঙ্গে ওরা তিনজন ৪০ কিমি পথ পায়ে হেটেঁ পারবে কি পৌছঁতে আপন বাসভূমে? না ভাগ্য মনে হয় তাদের সাথে নেই, মনের জোরে আর কতোখানি পারা যায়! এতো দীর্ঘ বরফের পথ ক্যাপ্টেন কবির মেজর সুরজের কাধেঁ চড়ে পাড়ি দেয়া পর হঠাত নিঃশব্দে মারা যায়। ভোরের আলোতে একদিকে যেমন ভারতীয় সিমান্তের আবিস্কার এনে দেয় নতুন প্রাণশক্তি, অন্যদিকে কবিরের মৃত্যু যোগ করে নতুন মাত্রা। বাকী দু’জন নেমে আসে পাহাড়ের গা বেয়েঁ, কিন্তু তাদের সাথে নেমে আসে পাকিস্তানি হেলিকপ্টার, আহত করে দেয় ওদের দু’জনকে। এই প্রথম ইন্ডিয়ান আর্মি আর পাক আর্মি মুখোমুখি, তবে ইন্ডিয়ান আর্মি ফায়ার চিজ্‌ করে দেয় যখন বুঝতে পারে এই ফায়ারিং তাদের জন্য নয়। এই ধাপে এসে ছবিটি তার চরম পরিণতির দিকে ধাবিত! অসাধারন এ্যাকশনের কাজ, ম্যাকআপ আর মেজর সুরোজ সিং তথা মনোজ বাজ পাইয়ের অসাধারণ অভিনয় দক্ষতা মোহিত করে ফেলে আমাকে। মূহর্মুহ ফায়ারিঙ্গের ভেতর গুলিবিদ্ধ অবস্থায় শেষ পর্যন্ত সে পৌছেঁ যায় ইন্ডিয়ান সীমান্তে, অসাধারন ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক পরিণতিটাকে পোক্ত করে; মেজর শেষ বারের মতো উঠে দাড়িঁয়ে হাত বাড়িয়ে দেয় আপন ভূমের পতাকার দিকে...একটি বুলেট এসে বিদীর্ণ করে দেয় মেজরের বুক! টানটান উত্তেজনার অবাসান, মেজরের পকেটে থাকা আইডি দেখে তার লাশ ফিরিয়ে দেয়া হয় পাকিস্তান কর্তৃপক্ষকে; একজন গাদ্দার হিসেবে মেজরের নিথর দেহ পড়ে থাকে পাকিস্তান সীমান্তে!

ওরা ছ'জনপরবর্তীতে মুলতান জেলে বন্ধী বেচেঁ যাওয়া গুরতুর কাছে সংরক্ষিত ডায়েরী থেকে জানা যায়, ৭১-এর যুদ্ধ বন্ধীর কথা যেমন জানতো পাকিস্তান-ইন্ডিয়া সরকার তেমনি জানতো আন্তর্তাজাতিক রেড ক্রসসহ দুনিয়ার তাবত পত্রিকা। তাহলে প্রশ্ন উঠে এই নিঃশব্দে ঝরে যাওয়া জীবনের জিম্মাদার কে ?? এই প্রশ্নের উত্তর কেউ জানে আজ পর্যন্ত! তবে ধারণা করা হয় ৭১-এর যুদ্ধে বন্ধী ৫৪ জন ভারতীয় সেনাদের শেষ ১৯৮৮ সালে দেখা যায় পাকিস্তানের বিভিন্ন জেলে, এরপর তাদের আর কেউ দেখেনি!

আপনাদের যদি এই ছবিটি দেখতে ইচ্ছে করেতো চেষ্টা করুন অরিজিনাল প্রিণ্ট যোগার করে দেখতে, কারন এতেই শুধুমাত্র ছবিটির কোয়ালিটির স্বাদ পাবেন। আর যারা অপারগ তাদের য়ুটিউবের লিংক দিলাম, যা চৌদ্দ পর্বে ভাগ করা, দেখে নিতে পারেন এখানে। ডানদিকে রেইটেইড ভিডিওস টেবের নীছে দেখবেন একে একে চৌদ্দটি পর্ব দেয়া আছে।


মন্তব্য

স্নিগ্ধা এর ছবি

ছবিটার কথা জানতাম না , তাই ধন্যবাদ!!!

তবে গল্পের পুরাটাই তো মনে হয় জেনে গেলাম, দেখার আগ্রহ একটু কমে গেল।

তবুও ধন্যবাদ।

ধ্রুব হাসান এর ছবি

যত ডিটেলই আমি চলচ্চিত্রটি সম্পর্কে লিখিনা কেন, এই ছবি তার চেয়ে বেশী কিছু; আসলে যে কোন ভালো ছবিই তাই, ঘটনা বলে দিলেও আপনি ছবির পরিণতির টেনশন থেকে মুক্তি পাবেন না। অতকিছু না ভেবে দেখে ফেলুন, মজা পাবেন।

নিঝুম এর ছবি

চমতকার লেখা!!!কাল্কেই ছবিটা দেখতে হয়।যিফরানের কাছে আগেই শুন্সিলাম আপনি ছবির পোকা।এখন বুঝলাম আপনি বর্ণ্নাও করেন অসাধারণ।
--------------------------------------------------------
ঘুম মানেও একধরনের বেঁচে থাকা...

---------------------------------------------------------------------------
কারও শেষ হয় নির্বাসনের জীবন । কারও হয় না । আমি কিন্তু পুষে রাখি দুঃসহ দেশহীনতা । মাঝে মাঝে শুধু কষ্টের কথা গুলো জড়ো করে কাউকে শোনাই, ভূমিকা ছাড়াই -- তসলিমা নাসরিন

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

কত ছবি দেখা হয় নাই। এই ছবিটাও না। এমনকি সেইভিং প্রাইভেট রায়ান বা ব্ল্যাক হক ডাউনও দেখি নাই।
তবে আজ রাতে ফিল্ম ফোরে দুইটা ছবি দেখলাম। । পুরনো ছবি কিন্তু একেবারে নোট নিয়ে নিয়ে দেখলাম। জেনিফার লোপেজের ওয়েডিং প্ল্যানার আর ডেমি মুরের ইনডিসেন্ট প্রোপাজাল। দ্বিতীয়টা আগে দেখা ছিলো। একসাথে অনেকগুলো ছবি দেখার সুযোগ থাকলে এখন আমি বেছে নেই ফ্যামিলি (পিজি-১২) কমেডি ধরনের ছবি।

ধ্রুব হাসানকে ধন্যবাদ। এত বিস্তৃত করে ১৯৭১ ছবিটির রিভিউ করার জন্য। বাংলা ভাষায় কখনও এরকম বিস্তারিত রিভিউ পড়িনি। এমনকি হিন্দি সংলাপও তুলে দিয়েছেন ধ্রুব।
ধ্রুব চিত্রশিল্পী, সুতরাং ছবি দেখার সময় তার চোখ কালার প্যালেট খুঁজবে এটা স্বাভাবিক। আমাদের দেশে পরিচালকদেরকে কালার প্যালেটের কথা কখনও বলতে শুনি না। অবশ্য রং-ই ঠিকঠাক মত আসে না, কালার প্যালেট ঠিক করে শুটিং শুরু করার কথা তারা ভাববে কখন।

গল্পের মোচড় নিয়েও ধ্রুবকে বেশ আগ্রহী দেখা গেলো। হলিউডি (এই পরিচালকও হলিউডি ঘরানার) ছবির কাহিনীর মোচড়ের একটা স্বত:সিদ্ধ ফর্মুলা আছে। এ নিয়ে পরে আলাদা পোস্ট করতে পারি। তবে একটু আগে ম্যাডানোর বর্তমান স্বামী গাই রিচির একটা গ্যাংস্টার ছবি দেখাচ্ছিলো ফিল্ম ফোরে। শুরু হওয়ার ২০ মিনিট পরও বুঝা গেলো না কাহিনীর উদ্দেশ্য কি। সুতরাং উঠে চলে এলাম। হলিউড এ বিষয়ে একেবারে মাপা। ১০ মিনিটের মধ্যে সেট-আপ শেষ হবে, মূল চরিত্রগুলোর সাথে দর্শকের পরিচয় হবে এবং ছবির মূল কাহিনীটা কি বা নায়ক/মূল চরিত্র এই ছবিতে কি করতে যাচ্ছে তা দেখানো হয়ে যাবে।

জাম্প-কাট নিয়ে ধ্রুব দেখলাম অস্বস্তিতে ভুগছেন। ধ্রুব জাম্প-কাটকে পরিচালকের একধরনের অনভিজ্ঞতা বলেই দেখছেন। ছবিটি দেখিনি। সুতরাং জাম্পগুলো না দেখলে বুঝা যাচ্ছে না এগুলো ইচ্ছাকৃত নাকি শুটিং-এর সময় ফ্রেমিং বদলানোর সময় ক্যামেরা এ্যাঙ্গেল বদলানো হয়নি। এ কাজটাতো ক্যামেরা অপারেটরেরই করার কথা। তাছাড়া ডিওপি রয়েছেন। সুতরাং জাম্প-কাটের দোষ পরিচালকের ওপর বর্তায় না। তবে ছবির কাহিনী শুনে মনে হচ্ছে এমনও হতে পারে যে জাম্প-কাটটা প্রিপ্ল্যানড ছিলো। যুদ্ধের বা সংঘর্ষের দৃশ্যে জাম্প-কাট থাকলেই বরং দর্শক নাড়া খায়।
ম্যাচিং কাট অনেক বেশি রোমান্টিক আর ব্যালান্সড দৃশ্যের জন্য। যেখানে দর্শককে নির্মাতারা আবিষ্ট করে রাখতে চায়।
আমি নিজে জাম্প-কাট বেশ পছন্দ করি। এটা অবশ্যই সাবজেক্টিভ একটা বিষয়। এডিটিং দিয়েও চরিত্রকে ফুটিয়ে তোলার একটা উপায় মনে হয় এটাকে আমার। ধরা যাক একটা সুন্দরী মেয়ের পড়েছে এক বইয়ের পোকা ছেলে আর একটা মাস্তান। এখন বইয়ের পোকা ছেলেটার দৃশ্যগুলো আমি করতে চাইবো ক্যামেরাকে যত কম সম্ভব নড়িয়ে। স্মুথ ম্যাচিং কাট দিয়ে। আর মাস্তান ছেলের জন্য উড়াধুরা জাম্প কাট। তাছাড়া ক্যামেরা থাকবে কাঁধে। একটু একটু কাঁপবে ফ্রেম। চরিত্রের মতোই উড়াধুরা আরকি।

চমত্কার লেখার জন্য ধ্রুবকে আরেক প্রস্ত ধন্যবাদ। এই সুযোগে লম্বা একটা মন্তব্য ঝেড়ে দিলাম। ধ্রুব'র সাথে গল্পই হলো না ফিল্ম নিয়ে কোনোদিন....
-----------------------------------------------
খড়বিচালি জোগাড় করি, ঘর বানাবো আসমানে

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

ধ্রুব হাসান এর ছবি

শোহেইল ভাই ধন্যবাদ আপনার আগ্রহভরে দীর্ঘ লেখাটি পড়ার জন্য, পারলে ছবিটা দেইখেন, তারপর যদি লেখাটা কষ্ট করে আবার পড়েনতো অনেক কমেন্টের একটা হিল্লা খুজেঁ পাওয়া যাবে। আসলে আমার চিত্রশিল্প নিয়ে পড়ার উদ্দেশ্যটাই ছিল ফিল্মে কালারের ব্যবহারটা বোঝা, কিন্তু এখনো কেল্লা বহুদূর! তবে আমি এখানে যে কালার প্লেটের কথা বলেছি তার সাধারণত করে থাকে ভিএফএক্স আর্টিস্ট্‌; যার কাজই হলো ফ্রেম ধরে ধরে কালার কারেকশন করা, এতে সুবিধের জন্য ষ্টিল ছবি পাশে রেখে কাজ করা হয়। তবে পরিচালক প্রি-পোডাকশনেই ভিএফএক্স আর্টিসের সাথে বসে ঠিক করে নেয় কোন কালার টোনে পুরো ছবিটা শুটিং করবেন, এর অসাধারন কাজ দেখবেন ৩০০ ফিল্মে। তবে আপনি জাম্প কাট নিয়ে যা বলেছেন তা আসলে শুটিংয়ের একেকটা টাইপ যা বিষয় নির্ভর। জাম্প কাট হতে পারে অনেক রকমের(এ বিষয়ে প্রয়োজনে বিস্তারিত আলাপ হতে পারে)! এমন কি ফ্রেম জাম্প করতে পারে, সিকোয়েন্স জাম্প করতে পারে, টোটাল সাবজেক্টও জাম্প করতে পারে, তবে তখন ঠিক আর তাকে জাম্প কাট বলা যাবেনা। এটা আমার ভালো লাগা খারাপ লাগা থেকেও বেশী ডিপেন্ড করে পরিচালক বিষয়টিকে কিভাবে ব্যবহার করছেন! আর ঐ যে বললেন ডিওপির দ্বায়িত্ব ব্যপারটা; ঐ ব্যাপারে আমার একটু আপত্তি আছে, যেহেতু ফিল্ম আখেরে ডিরেক্টরস্‌ মিডিয়া তাই ছবির সমস্ত ভালোমন্দের জন্য প্রথমেই যে লোক দায়ী তিনি হলেন পরিচালক। তাই যে কোন টেকনিকের ব্যবহারে ডিওপি-এডিটর-এ্যাকশন ডিরেক্টর-ভিএফএক্স ডিরেক্টর তথা সমস্ত টেকনিক্যাল হেন্ডস্‌রা দ্বায়িত্ববান হলেও আখেরে এরো দ্বায়িত্ব গিয়ে বর্তায় পরিচালকের উপর, কারণ ছবি ফাইনাল প্রিন্টের আগ পর্যন্ত কেবল পরিচালকই পারেন বারবার পরিমার্জন করতে যতক্ষন না তিনি তুষ্ট হন!

আবারো ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। যদি আগ্রহী পাঠক পাইতো ইচ্ছে আছে সিলেক্টিভ কিছু ছবির শুধু কালার, ইফেক্ট, এ্যানিমেশন ওয়ার্ক, সিনেমাটোগ্রাফী বা এ্যাকশন নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করার। ভালো থাকুন।

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

আলোচনা হোক, অসুবিধা কী। যারা সিনেমা ধর্মে নাই তারা বয়েত নিবে। শিল্প-মাধ্যমের বিভিন্ন শাখায় যদি শেষ-জ্ঞান পর্যায়ের আলোচনা না হলো তাহলে ব্লগের মাহাত্ম্য কি। হোক আলোচনা।

৩০০ ফিল্মটা কিছুদিন আগে এডিটিং-এর এক ক্লাশে এ্যাডোবি-আফটার ইফেক্টস্ এর ব্যবহার বুঝাতে দেখাচ্ছিল। তবে মার-কাট ছবি কম দেখি বলে ক্লাশ ফাঁকি দিয়েছিলাম। জোগাড় করে দেখতে হবে।

পরিচালকের দায়-দায়িত্ব সম্পর্কে আপনি যা বললেন তা হয়তো আর্ট-ফিল্ম ঘরানার জন্য খুবই প্রযোজ্য। বিশেষ করে অঁতর হিসেবে যেখানে পরিচালকরা ছবি নির্মান করেন সেখানে তাঁদের দায়-দায়িত্ব বর্তায়। ইংল্যান্ড, ইউরোপে ও আমাদের উপমহাদেশে পরিচালকই শেষ কথা। কিন্তু বিশাল বাজেটের ছবি যেখানে বানানো হয়, বাণিজ্যিক ছবির ক্ষেত্রে হলিউডে পরিচালকের ভূমিকার সীমাবদ্ধতা আছে। গোট পাঁচেক বিখ্যাত পরিচালক ছাড়া হলিউডে আর কাউকে এডিটিং রুমেও ঢুকতে দেয়া হয় না। প্রযোজকরা নিতান্ত দয়া করলে একটা ডাইরেক্টরস্ কাট করতে দেয়। তবে এটার স্থান হয় ডিভিডি ভার্সনের এ্যাক্সেস ফুটেজে।
যেক্ষেত্রে পরিচালক অঁতর সেক্ষেত্রে শিল্প-সৃষ্টির দায়-দায়িত্ব তার। আর বাণিজ্যের ক্ষেত্রে শিল্প-সৃষ্টির পর আরো নানা বাণিজ্য-চিন্তা যোগ হয়। তবে ফিল্মকে আমি কোলাবোরেটিভ মিডিয়া হিসেবেই দেখতে ভালবাসি। শিল্পীরা সৃষ্টিসুখেই স্বৈরাচারি হয় সেক্ষেত্রে সিনেমার এক ধরনের গণতান্ত্রিক শিল্প-মাধ্যম হওয়ার সুযোগ রয়েছে ।

ও আরেকটা বিষয় আলোচনা করলে ভালো হতো। উপরের মন্তব্য দেখে আবার ধন্দে পড়ে গেলাম। কালার প্যালেটের ধরন নিয়ে চিন্তা তো পরিচালককে প্রোডাকশন শুরুর আগেই করতে হয়, তাই না। যখন ভিএফএক্সের মত যান্ত্রিক সুবিধা ছিলো না/( যারা ব্যবহার করতে পারেন না) তখনও তো পরিচালকরা তাদের ছবির জন্য কালার প্যালেট পছন্দ করে নিতেন। প্রোডাকশন ডিজাইন, সেট পেইন্টিং, লাইটিং ও কস্ট্যুম ডিজাইন দিয়ে তারা তো ছবির কাহিনীর ভাব বা মুড অনুযায়ী একটা পছন্দের রং-সুষমা তো দেয়া হয় এখনও। তাই না। মূল প্রোডাকশনে যদি কালার প্যালেট ঠিক করে নেয়া না হয় তবে পোস্ট-প্রোডাকশনে গিয়ে খুব বেশি সুবিধা পাওয়ার কথা না।
তবে পোস্ট-প্রোডাকশনে ভিএফএক্সের ব্যবহার নিয়ে একটা আলাদা লেখা দেন। এই ফাঁকে ৩০০টা দেখে নেই।
-----------------------------------------------
খড়বিচালি জোগাড় করি, ঘর বানাবো আসমানে

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

ধ্রুব একবার বলেছে তো কি হয়েছে? আরো বলতে দেন।
এতো বড় একটা রিভিউ লেখার পর দেখা যাবে ধ্রুব এক মাসের জন্য হাওয়া। এইজ্ন্য বেশি করে নাড়াচাড়া দিয়ে রাখি। তাছাড়া, কালার প্যালেট মেইনটেইন করার বিষয়ে আমি নিজে জানতে আগ্রহী। কিন্তু গল্প আর অভিনয় নিয়েই বেশি কথা হয়, নির্মান সংক্রান্ত এসব বিষয়ে খুব একটা কথাবার্তা শুনি না। এই সুযোগে আমাদের নিজেদের সম্পদ- মানে ধ্রুব'র কাছ থেকে যদি শোনা যায় তো খারাপ কি?

হলিউডে এডিটরদের ক্ষমতা শুনে অলৌকিক মনে মনে লাফাচ্ছে। হুমম, অনেক পরিচালকই এই পদ্ধতিতে কাজ করতে গেলে বিপন্ন বোধ করে। ঝবি বাণিজ্য না করলে পরিচালক তখন প্রযোজনা সংস্থার কাঁধে দায়িত্ব চাপায় যে দোষ এডিটিং-এর। প্রতিবার এডিটিং-এর পর ছবিটা ফোকাস গ্রুপের সামনে প্রিভিউ-এর ব্যবস্থা করা হয়। তারপর জরিপে যদি দেখা যায় লোকে পছন্দ করছে তবে সেই অংশ রাখা হয়। নতুবা বদলানো হয়।
এগুলো আসলে প্র্যাকটিক্যাল বিষয়। লিংক পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ, গুগল করে দেখতে হবে। কারণ আমি তো ইন্টারনেটে পড়িনি, ঘোড়ার মুখ থেকেই শুনেছি। তবে বইয়ের নাম দিতে পারি। আচ্ছা পোস্টই দেবো না হয়।
-----------------------------------------------
খড়বিচালি জোগাড় করি, ঘর বানাবো আসমানে

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

আদিত্য এর ছবি

'............ঘোড়ার মুখ থেকেই শুনেছি'...ঘোড়া? ঘোড়াও কি এখন শিক্ষক হয়ে গেল? আর তথা কথিত দু'একটা বাণিজ্যক ফিল্মের উদাহরন দিয়ে কি সাধারনভাবে বলা যায় হলিউডে ডিরেক্টরদের এডিট প্যানেলে ঢুকতে নিষেধ? আর চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্লাসে কি শুধু স্বস্তা বাণিজ্যিক ছবির নির্মাণ সম্পর্কেই বলা হয় নাকি? জানতাম না তো!

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

আদিত্য কে? আদিত্য কবীর নাকি? অবশ্য আদিত্য কবীর হলে ঘোড়ার মুখ থেকে কথাটা বুঝার কথা।

ঘোড়ার মুখ থেকে কথাটা ইংরেজি '(straight) From the horse's mouth' এর বাংলা। আপনি যদি একটা অক্সফোর্ড ডিক্সনারি খুলেন তবে দেখবেন এই ইডিয়মটার মানে হচ্ছে: ' information given by somebody who is directly involved and therefore likely to be accurate'.

যা বলেছিলাম তা শুনেছি এমন লোকদের কাছে যারা প্র্যাকটিক্যালি হলিউডে ছবি নির্মানের সাথে জড়িত। তারা সরাসরি জড়িত সুতরাং তাদের কথা সঠিক হওয়ারই কথা। সেই অর্থে তারা আমার ইডিয়মের ঘোড়া। আশা করি এই জবাবে আপনি সন্তুষ্ট হবেন।

'আর তথা কথিত দু'একটা বাণিজ্যক ফিল্মের উদাহরন দিয়ে কি সাধারনভাবে বলা যায় হলিউডে ডিরেক্টরদের এডিট প্যানেলে ঢুকতে নিষেধ?'
-আপনার এই বক্তব্যের মধ্যেই উত্তর কিছুটা লূকানো।হলিউড নিজস্ব ঘরানার ছবি নির্মান করে। আমরা একে বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে নির্মিত বলেই জানি। হলিউডে বাণিজ্যিক ফিল্ম ছাড়া আর কিছু হয় বলে আমি অন্তত: জানি না। সুতরাং হলিউডে গোটা পাঁচেক বাদে বেশিরভাগ পরিচালকরা এডিটিং-এ মতামত দেয়ার সুযোগ পান না। এটাই সত্য। এখন পরিচালক যদি নিজেই প্রোডিউসার হন তবে অন্য কথা। আবার পরিচালক যদি ডাইরেক্টরস্ গিল্ডের সদস্য না হন অথবা বড় স্টুডিওর বাইরে নিজস্ব আয়োজনে ছবি বানান তবে সেটাও ভিন্ন বিষয়। ডাইরেক্টরস্ গিল্ডের সদস্য হলে অন্তত: একটা ডাইরেক্টরস্ কাটের (এডিট) আইনগত অধিকার তার হয়।

আর চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্লাসে কি শুধু স্বস্তা বাণিজ্যিক ছবির নির্মাণ সম্পর্কেই বলা হয় নাকি? জানতাম না তো!
-আপনার এই কথাটা খুব মজার আদিত্য। তবে জানার কি আর শেষ আছে। জানতেন না জানলেন। বাণিজ্যি মানেই সস্তা নয়। আর ক্লাসও বিভিন্ন রকম আছে। শুধু চলচ্চিত্র বোদ্ধা তৈরি করে এরকম না হয়ে অন্যরকম ক্লাশও আছে যেখান থেকে শেখে লোকে বাণিজ্যিক বা জনপ্রিয় ধারার ছবিই বানায়। সেরকম ক্লাশ আছে আদিত্য।

আর সবশেষে বলি, আমার লেখা বা মন্তব্যের উপর আস্থা রাখতে পারেন। আপনার চেনা বা জানাশোনার সাথে না মিললেও আস্থা রাখতে পারেন। না জেনে আন্দাজে কিছু বলা আমার স্বভাবে নেই। আপনি হয়তো এতোটা সন্দেহ করতেন না যদি না আমি এই তথ্যটা দিতাম যে হলিউডে বেশিরভাগ পরিচালকদের এডিটিং বা সম্পাদনার উপর হাত থাকে না। আগেই বলেছি বইয়ের নাম দিতে পারি। ইন্টারনেট থেকে পড়িনি। তবু আপনার ভীষণ খটকা লাগছে বলে গুগলে (directors right to edit)সার্চ দিয়া একটা বইয়ের পাতা পেলাম। (এখানে লিংক দিয়েছিলাম কিন্তু এতে ধ্রুব'র পাতা নীচে নেমে যায় তাই মুছে ফেল্লাম)

পড়ে যদি দেখেন আমি যা আগে বলেছিলাম তা সত্য হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি, তবে একটা শুকনা ধন্যবাদ দিয়ে যাবেন আশা করি। আর আপনার চলচ্চিত্রের শিক্ষকদের অন্তত: এই একটা নতুন তথ্য জানায়ে অগ্রসর করে তুলবেন।

উপরে দেয়া গুগল থেকে পাওয়া লিংকটা কাজ করছে না। সুতরাং বইটির সংশ্লিষ্ট প্যারাগ্রাফ তুলে দিচ্ছি (ভাই, কত কষ্ট দেবেন, আপনার শিক্ষকেরা ঠিকমত পড়ায় নাই বলে, আমাকে টাইপ করতে হচ্ছে):
We need to remember that in the start-up years of the film business, producers and writers were basically nonexistent, and directors had enormous latitude and authority. This authority receded over time until the creative rights of directors, as we saw earlier, became crystallized contractually in the prerogative to produce a director's cut of the film. The producer, of course, in free to revamp that cut, and the executive suite has the ultimate say. Our directors saw the current landscape as less than egalitarian, with a only handful of directors today getting final cut. Where there were once eight to ten, there are now fewer than five or sex, names like Spielberg, Cameron, Lucas and Scorsese. (page 75)

বইয়ের নাম (Hollywood in Wide Angle: How Directors View Fillmmaking by Rothman) গুগুলে বইয়ের নাম লিখে সার্চ করলে সম্পূর্ণ বইটাই পড়তে পাওয়ার কথা। আমি অন্তত: পুরো বইটাই পাচ্ছি।

অনুবাদ করে দিতে বলবেন না আবার। আমার আগের মন্তব্যগুলো মিলিয়ে পড়েন। বুঝবেন আশা করি। (বহুত কষ্ট দিলেন।)
-----------------------------------------------
খড়বিচালি জোগাড় করি, ঘর বানাবো আসমানে

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

আদিত্য এর ছবি

thanku, এ বিষয়ে পরে আবার ডিভেট হবে, আপাতত আপনার লিংটা পড়ে নেই। আমার কাছে বিকল্প কিছু উদাহরন আছে এবাউট হলিউড, এখানে বা আপনার পোষ্টে সময় করে পোষ্ট দিবনে। কষ্ট দেয়ার জন্য গর্বিত! ভালো থাইকেন।

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

তথ্য নিয়া ডিবেটের কিছু নাই। তথ্য, তথ্যই। পাঁচজন পরিচালকের নাম এই বইতেও লেখা আছে। আমি তো আর এই বই পড়ে মন্তব্য লিখি নাই।

সে যাক, উপরে টাইপ করার সময় দুইটা ভুল হয়েছে। e এর জায়গায় i হবে। অর্থাত sex না হয়ে six হবে। একজায়গায় is আবার in হয়েছে।
-----------------------------------------------
খড়বিচালি জোগাড় করি, ঘর বানাবো আসমানে

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

ধ্রুব হাসান এর ছবি

ভাইজান বিষয়টি ধরতে পারার জন্য ধন্যবাদ আপনারে। ও আপনারেতো অভদ্রের মতো একটা ধন্যবাদও দিলাম না, আমাকে ছবিগুলো আপলোড করতে আর লিঙ্ক দিতে সাহায্য করার জন্য...আল্লাহ পাক আপনাকে হায়াত দারাজ করুক, অন্তত আমার চাইতে আরো বেশীদিন দুনিয়াতে ফাজলামি করার যেন হায়াত দেন তিনি......আমিন (উত্তরে কইবেন চুম্মা আমিন, বুঝলেন)!

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

ও হ্যা, ধ্রুব-র মন্তব্যটা এখন বুঝতে পারলাম।

ধ্রুব-র মন্তব্যের উত্তরে কী বলতে হবে তাও ধ্রুব বলে দিয়েছে। হাসি
-----------------------------------------------
খড়বিচালি জোগাড় করি, ঘর বানাবো আসমানে

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

মাহবুব লীলেন এর ছবি

ছবিটির কথা আমিও জানতাম না
খুঁজে দেখবো পাই কি না

অতিথি লেখক এর ছবি

ছবিটার নাম আমি শুনাছিলাম আগে কিন্তু দেখে আশাহত হতে পারি বিধায় আর দেখা হয়নি। আপনার বর্ণনা পড়ে দেখার আগ্রহ পাচ্ছি। অচিরেই দেখব। ধন্যবাদ আপনাকে এত প্রাণবন্ত একটা লেখার জন্য।

সু

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

হিন্দি মালুম নেহি, কিন্তু আপনার রিভিউটা ভালো লেগেছে, এখন মুভিটা দেখতে ইচ্ছা হচ্ছে।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

সিনেমার আলোচনা দেখে মন্তব্য করতে শুরু করে এখন দেখছি আমার মন্তব্য জোড়া লাগালে ধ্রুব'র পোস্টের অর্ধেক হয়ে যাবে।
দু:খিত ধ্রুব আলোচনাটা ১৯৭১ ছবি ছাড়িয়ে সিনেমার দিকে চলে গেছে। তবে তাড়াতাড়ি নতুন লেখা দেন।
-----------------------------------------------
খড়বিচালি জোগাড় করি, ঘর বানাবো আসমানে

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।