বেশ মাথাব্যাথা নিয়ে ভোরে ঘুম ভেঙ্গে ছিলো আজ। তারপর আবারো ঘুমিয়ে পড়ি, উঠি বেশ বেলা করে। কিন্তু তবুও অস্বস্থি যাচ্ছেনা; যাচ্ছেনা প্রচন্ড মাথাব্যথাও! ভাবছিলাম এসব ফালতু স্বপ্ন নিয়ে বেশী পাত্তা দিতে নাই। পাত্তা যে দিচ্ছি তাও না, তবে মাথা থেকে ব্যাপারটা সরানোও যাচ্ছেনা বলে হয়তো দীর্ঘ সময় ধরে মাথাব্যাথা হচ্ছে! যাক আর প্যাচাল না পাইড়া ঘটনা বলি।
বয়স ও সময়টা সমসাময়িক কিন্তু লোকেশনটা হলো আমার প্রিয় শহর চট্টগ্রামের একটি পাড়া। বেশ মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। আমি, বাবা, আরো কয়েকজন একটা হলুদ রঙের অটো রিক্সার ভেতর আটকা পড়েছি। বৃষ্টির কারনে বের হতে পারছিনা। এমন সময় দেখি প্রচন্ড বাতাসের তোড়ে ট্যাক্সিটা দুলে দুলে উঠছে! আশে পাশে লোকজন প্রায় দিকবিদিক শূণ্য হয়ে দৌড়াচ্ছে। ঐ লোকজনের মধ্যে আমি আমার মেজো ভাইকেও দেখি একটা বিরাট ধনুক নিয়ে দৌড়াতে! বেশ অবাক হয়ে ট্যাক্সি থেকে একাই নামতে যাই, দেখতে ব্যাপারখানা আসলে কি! কিন্তু যেই নামতে যাব অমনি দেখি সাইঁ সাইঁ করে ট্যাক্সির দু’দিকে হাজার মাইল স্পীডে কি যেন গেল! ট্যাক্সি একদিকে হেলে পড়তে না পড়তেই অন্যদিকে আবার! অল্প কিছু সময় পর অবশ্য তান্ডব থামলে আমরা সবাই ট্যাক্সি থেকে বের হই। তখনো বাইরে অবিরাম বৃষ্টি হচ্ছে! মেঝো ভাইরে জিজ্ঞেস করি ঘটনা কি? ও জানায় একটা বিশাল বড় সাপ বাতাসের বেগেঁ এদিক ওদিক ছুটে বেড়াচ্ছে! জিজ্ঞেস করলাম কি সাঁপ? ও উত্তর না দিয়ে শ’য়ে শ’য়ে মানুষের সাথে খুন্তি হাতে ঐ আশ্চর্য সাপটিকে খুজেঁ চলেছে। আমিও ওদের সাথে যোগ দিলাম, কিন্তু কোন অস্ত্র ছাড়া। একসময় অবিরাম বৃষ্টির কারনে যখন চোখেমুখে অন্ধকার দেখছি ঠিক তখনি পাড়ার বড় ড্রেনটির হোলের একদিকে সাপটার মাথা দেখতে পাই। আমি যাষ্ট হা করে তাকিঁয়ে থাকি......সাদা-ধূসর-কালো ডটে অপূর্ব সুন্দর তার ত্বক! সরাসরি আমার চোখের দিকে তার চোখ! আমার ভাই (যাকে আমি খুবই অপছন্দ করি শুধুমাত্র বিএনপি সাপোর্ট করে বলে) আমার দৃষ্টি অনুসরণ করে খুন্তি হাতে এগিয়ে যায় ওকে আঘাত করতে। আমি ঝাপটে ধরে ফেলি ভাইকে, “ আমাকে একবার সুযোগ দাও, ও তোমাদের আঘাত করবেনা”। মাছ ধরার একটা বিশাল জাল নিয়ে ভয়ে ভয়ে আমি সাপটার মুখের দিকে এগিয়ে যায়। ও আমার চোখ থেকে চোখ ফিরিয়ে নিয়ে মাথাটা কেমন করে যেন ভেতরে গুজেঁ শরীরটা সামনের দিকে বাড়িঁয়ে দেয়। আস্তে আস্তে ওর গোটা শরীরটা জালের ভেতর চলে আসে! আমি ক্রেনওলাকে চিতকার করে বলি, জালটাতে লাগানো হুক ধরে টেনে তুলতে। ড্রাইভার সাহেব ধীরে ধীরে বিশাল সাপটাকে টেনে উপরের দিকে তুলে নেয়। আমরা দুজন শহরের বাইরের দিকে (মনে হয় ভাটিয়ারি এলাকা) রওয়ানা হই। একটা সময় বৃষ্টিও থেমে যায়, আমরা পাহারের বেশ গভীরে গিয়ে ক্রেনটা থামায়। আমি আলতো করে সর্পটার শরীরের নীচে হাতঁ রাখি, আমার গোটা শরীর যেন একটা অস্বাভাবিক শক্তিতে আন্দোলিত হয় ক্ষনিকের জন্য! ড্রাইভারকে ধীরে ধীরে নামাতে বলি, পুরোপুরি মাটিতে নামানোর পর জালের বাধঁনটা খুলে দিই। ও বিশাল বড় মুখটা বের করে আমার মুখের সামনে এনে জিবটা বের করে কি যেন বলে (আমি ঠিক বুঝিনা)! তারপর চোখটা নামিয়ে যেইনা সে রওয়ানা দেয় পাহাড়ী জঙ্গলের ভেতর তখনি হঠাত করে আবারো দমকা হাওয়া শুরু হয়। পলকের মধ্যে সে হাওয়া যেন হেরিকেনের রুপ নেয়! দূর থেকে অদ্ভূত এক শব্দ ভেসে আসতে থাকে! যেই আমি পেছন ফিরে তাকাই, এমনি দেখি হাজার হাজার নানা বর্ণের সাপের বাচ্চা উড়ে উড়ে আস্ছে আমার দিকে। আমি ভয় পেয়ে যে লুকাবো সে সময়ও নেই। সেকেন্ডের মধ্যে ওরা আমাকে পাশ কাটিয়ে উড়ে উড়ে যেতে থাকলো জঙ্গলের ভেতর......! একটা সময় ঐ সাপঝড় থামলো, সবাই চলে গেল। ড্রাইভারের চিতকারে সম্বিত ফিরে পেলাম! দেখি তখনো কেন জানি আমি নিঃশব্দে কেদেঁ চলেছি!!
(আহা লেখাটা শেষ করার পর যেন মাথাব্যাথাটা একটু কমেছে!)
মন্তব্য
এইটার সাথে আপনার আব্বার মৃত্যুর কোনো সম্পর্ক আছে?
ভাল লাগলো।
সম্পর্ক আছে কি নাই কি করে বলি? আমি তো নিজেও জানিনা, তবে অনেকদিন পর উনাকে দেখলাম! বেশ ভালো লাগছিলো পরে। আর কিছু বলার নাই...।
- স্বপ্নগুলো আসলেই কেমন জানি হয়!
কালকে আমি স্বপ্নে দেখলাম আমাকে একই সঙ্গে তিনজন ললনা অ্যাপয়েন্টমেন্ট দিয়েছে এবং তিনজনই একই সময়ে, বেলা ১১ টায়। ব্যাপারটা ফানি মনে হলেও ফানি না, কারণ আমার একজনের সঙ্গেও দেখা করার সুযোগ নেই। আমার ডানে আর বামে যথাক্রমে নীল ও হালকা খাকী পোষাকের দুইজন জার্মান পুলিশ দেখলাম দাঁড়িয়ে বাংলায় বলছে আমাকে নিয়ে যেতে এসেছে। আমাদের গ্রামের বাড়িতে জার্মান পুলিশ খাটি বাংলায় কী করে কথা বলছিলো, এটা তখন মোটেও আশ্চর্য লাগছিলো না। উপরন্তু ললনাত্রয়ের তিনজনই ভিনদেশী ছিলো!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আসলে ব্যক্তির টাইপ অনুযায়ী মনে স্বপ্নও হানা দেয়। যেমন যেহেতু একটু পাগলা টাইপ, তাই সব ফাউল টাইপের স্বপ্নই দেখি; আর আপনি মিষ্টি মিষ্টি স্বপ্ন
মুগ্ধ করলো এই অকপট স্বীকারোক্তি।
আমি কিন্তু, ভাই, ভীষণ ভয় পাই সাপকে! নিচের ছবিটা দেখেও আমার গা শিরশির করছে।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
মৌমাছির জীবন কি মধুর?
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
আমিও একসময় পেতাম; কিন্তু আমার মারমা বন্ধুদের কল্যানে ঐ শিরশিরানী একেবারে গায়েব হয়ে গেছে। একসময় সুযোগ পেলেই চলে যেতাম খাগড়াছড়ি আর রামগরের পাহাড়ে। আপনি সবুজ সাপ দেখেছেন কিনা জানিনা, আমার মারমা বন্ধুরা মজা করে প্রায় আমার গলাই ঐসব ঝুলিয়ে দিতো! অনেক্ষন পর টের পেয়ে যখন ঐগুলারে ছুড়ে দিতাম তখন ব্যাটারা বেশ মজা পাইতো। পরে আসতে আসতে গায়ে সয়ে গেছে।
সাপ জিনিসটা ছোটবেলা থেকেই আমার অদ্ভুত রকমের প্রিয়
আর আর আমার হিসেবে সবচে সুন্দর চোখ হলো সাপের
দুর্ধর্ষ টলটলে আর স্বচ্ছ
চা বাগানের জঙ্গলে জন্মানোর কারণে আমার শৈশবের পুরোটাই কেটেছে সাপের খুব কাছাকাছি
সাপ কিন্তু কোনোভাবেই হিংস্র প্রাণী না
এই ব্যাপারে আপনার লগে দেখি পুরা মিলা গেল! আমার সাপের গায়ের রঙের চেয়ে সুন্দর কালার আর কিছুই মনে হয়না। এতো অপূর্ব সাপের ত্বক! আর চোখগুলাতো মাশাল্লা মারহাবা টাইপ।
সাপে আমার ভয় লাগে না একেবারেই।
বরং সাপ নিয়ে তৈরি সিরিয়াল বা সিনেমার আমি মহাভক্ত।
স্বপ্নটা জটিল।
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
সাপ আর কুকুর এই দুইটা জিনিস আমি প্রচন্ড ভয় পাই , বলতে পারেন আমার সপফোবিয়া আছে । আমার বিছানাটা জানালার কাছে । ঘুমের আগে প্রায় দিনই মনে হয় পাশের আমগাছটা থেকে সবুজ লিকলিকে একটা সাপ দেয়াল বেয়ে বিছানায় চলে আসবে ।
--------------------------------------------------------
কেউ একজন অপেক্ষা করে
সাপ প্রাণীটাকে আমার ঠিক ভয় না, কেমন যেন একটা অস্বস্তি লাগে। শুধু মাত্র সাপ না, সরীসৃপ মাত্রই আমি ভীষণ অস্বস্তি বোধ করি, গা ঘিন ঘিন করে দেখলে।
আপনার লেখাটা দারুন লাগলো ( অবশ্য স্বপ্নটাই বেশ রোমাঞ্চকর ), তবে সাপের ছবিগুলি দেখে, বুঝতেই পারছেন অনুভূতি কী !
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
হুমমম, যেভাবে সাপের বাচ্চাদের উড়তে দেখলেন, অনেক অনেক মানুষের বাচ্চা একসাথ হওয়া ছাড়া তো কোন উপায় নেই !!!
স্বপ্ন যুগোপোযোগী হয়েছে, যেযুগে যতটুকু স্বপ্ন দেখা জায়েজ অতটুকুই দেখেছেন
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
আমারও সবজান্তার মতো কাহিনি... যে কোনও সরীসৃপ দেখলেই অস্বস্তি লাগে... আমি সাপের ছবির দিকে তাকাই না কখনো... ন্যাশনাল জিওগ্রাফিতে সাপ দেখাইলে সইরা যাই...
কি দরকার অস্বস্তিতে?
আজকেও ফ্রন্ট পেজে সাপের বিশাল ছবি দেখে অস্বস্তি হচ্ছিলো খুব... ভাবছিলাম এই পোস্ট পড়বোই না... তবু পড়লাম... কিন্তু এখনও কেমন অস্বস্তি হচ্ছে...
কিন্তু এর দায় কোনওভাবেই আপনার না... এটা আমার নিজস্ব সমস্যা...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
হাহাহা...
আপনার মন্তব্যের শিরায় শিরায় অস্বস্তি টের পাইলাম...
ইজি ম্যান...
কে কারে কি কয়! তুমি তো মিয়া টিকটিকি, তেলাপোকা দেখলেই মাইয়াদের (কোন নারীবাদী দয়া করে শব্দটা পড়বেন না) মতো যে লম্ফ আর চিল্লানিটা দাও! এই পোলা আবার অন্যের ভয় দেইখা হাসে!... হা হা হা
হাহাহা...
আমি ভয় পাই ওগুলারে... ঘেন্না বলতে পারেন। তবে, সাপরে আমি ভয়ও পাই, কিন্তু, মুগ্ধও হই।
কিছু শব্দ ব্যবহারে তীব্র পেতিবাদ জানাইতেসি।
পা ঠুকলাম প্রতিবাদে। বিছানার ওপর।
সবারটাই দিলেন? আমার প্রশ্নের উত্তর দিলেননা? হুমম।
নতুন মন্তব্য করুন