১৮ বছর পর লন্ডন আবার দেখলো নিয়ন্ত্রনহীন তুষারপাত! নিয়ন্ত্রনহীন বলার পেছনে কারণ, যদিও দীর্ঘ বিরতির পর লন্ডনের বুকে জমা হলো ১২ থেকে ১৪ ইঞ্চি পুরোত্বের বরফ তবুও সবার ধারণা এরও নিয়ন্ত্রণ সম্ভব ছিলো। কতৃপক্ষ আগেভাগে উদ্যোগ নিলে যাতায়াত ব্যবস্থার এতোটা বেহাল দশা হতোনা। কর্মমূখী লোকজনের ঘরে বসে হলিডে কাটাতে হতোনা। বিবিসিসহ বেশ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে প্রতিবেদক ও ভুক্তভোগীদের ক্ষোভে প্রকাশ, কর্তৃপক্ষের গা ছাড়াভাব এর জন্য দায়ী। একজন তো দেখলাম ক্ষেপে গিয়ে বলেই ফেললো, আমরা এখন তৃতীয় বিশ্বের মতো সামান্য দুর্যোগও নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনা! যদিও লন্ডন ট্রান্সপোর্ট চীফ জানালেন, 'তিনারা সাধ্য মতো চেষ্টা করছেন'। এই উত্তরে উপস্থাপক যে প্রশ্ন রাখেন তা বেশ কৌতূহল উদ্রেককারী, 'তাহলে রাশিয়াসহ য়ুরোপের অন্যান্য দেশ কি করে - ১৬ থেকে -৩৬ ডিগ্রীর উইন্টার মোকাবেলা করে?' তখন নেতার উত্তর দেখে হাসবো না কাদঁবো বুঝলাম না,' আমরা যদি দু'দিনের বরফের জন্য মাত্রাতিরিক্ত খরচ করে ফেলি তা ঠিক?' উপস্থাপক সাহেব এই উত্তরের পর সিদ্ধান্তে গিয়ে বললেন, 'এর মানে হলো যথাযত ব্যবস্থা নেয়া হয়নি!'। টিভি স্ক্রিনে যাই চলুক জনগণের, বিশেষ করে কামলা মানুষদের একদিনের তুষারপাতে যা তা অবস্থা! গত রাতে নর্থ ওয়েষ্ট থেকে ইষ্ট-এ আসতে আমার লাগলো প্রায় তিন ঘন্টা (অথচ বড়জোড় ৫০ মিনিট লাগার কথা!)। আমারো পরে যারা বাড়ী ফিরেছে তাদের অনেকেই ভোরে বাসায় এসেছে! লন্ডন জীবনের প্রথম ৭-৮ ইঞ্চি বরফ ভেঙ্গে বাড়ী ফেরা হলো! সকালে অফিসের গাড়ী এসে একরকম রেসকিউ করে অফিস নিয়ে গেল বেলা ২টায়।
রাতে ও ভোরে পথে যেতে যেতে কিশোর-তরুণ-যুবা অনেনকেই দেখেছি আনন্দে মেতে উঠতে। আমিও কিছু সময় মেতেছিলাম ঐ আনন্দে! আইসম্যান গড়তে কিছু বরফ আমিও তুলে দিয়েছি। তরুণ হাউসম্যাট-ছোটভাই-বন্ধুদের সাথে মিলে রাত দুপুরে ঘর নোংরা করেছি বরফ ছুড়ে ছুড়ে!
কিন্তু সকালে কাজের কথা ভেবে, রাস্তাঘাটে মানুষের দুর্দশা দেখে আনন্দে ভাটা পড়ে গেছে। কনকনে বরফ কুচিঁ জুতোর ভেতর গলে গেলে বিরক্ত হয়েছি। কাজ শেষে বাড়ী ফিরতে গিয়ে উৎকন্ঠিত হয়েছি! হাইওয়েতে ঘন্টাখানেক কিউতে দাড়িয়ে থাকতে হয়েছে! তবুও যা ভালোলেগেছে তা হলো মানুষের শৃংখলাবোধ! যখন শহরের অবকাঠামো ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয় তখনো নাগরিকদের শৃংখলা ও ধৈর্য দেখে অবিভূত হয়েছি! সব মিলিয়ে লন্ডন জীবনের এ এক নতুন অভিজ্ঞতা......এই নগরটা কখন যে আমার নগর হয়ে গেল টেরও পাইনি! আজ লন্ডনের অবকাঠামো ঠিকঠাক মতো কাজ না করলে নিজেরও একধরনের দুর্বলতা বলে মনে হয় নাগরিক হিসেবে! এই শহর আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়ের শহর, ভালোবাসার শহর।
কৃতজ্ঞতাঃ বিবিসি, লন্ডন।
মন্তব্য
ছবিগুলা দেইখা মনডা উদাস হয়া গ্যালো
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
এইটুকুতেই এই অবস্থা! হেঃ হেঃ হেঃ
তুষারপাত দেখতে দেখতে আমি ক্লান্ত...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
খুঁজে যাই শেকড়ের সন্ধান...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
ব্যাক্তিগত ব্লগ | আমার ছবিঘর
তুষারপাতের আনন্দ_3 ছবির আন্টি কি কুনো ছুখবর দিতে ছায়?
যেমন ধরেন "মুবারক হো ধ্রুব, থুমি মামা হতে ঝাচ্ছ!" টাইপ?
---------------------------------------------
দুঃখ তোমায় দিলেম ছুটি...
বুক পাঁজর আজ ফাঁকা।
দুঃখ বিদায় নিলেও সেথায়...
দুঃখের ছবি আঁকা।
দৃশা
ভাইগ্য ভালো যে 'ম' এর জায়গায় 'ব' কননাই...
_______________
এক ছাগলের দুই কান,
তুই আমার জানের জান।
_______________
::সহজ উবুন্টু শিক্ষা::
আজকেও নাকি পড়বো, ভালো তাইলে কাইলকে আফিস আইতে ঐবো না।
------------------------------------------------------
স্বপ্নকে জিইয়ে রেখেছি বলেই আজো বেঁচে আছি
------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !
ছবিতে তুষারপাত দেখে মন ভরল।
তয় সত্যি সত্যি তুষারপাত দেখতে হইলে উত্তর মেরু আইসেন। তিন-চার মাস আমরা তিন-চার ফুট তুষারের স্তুপের নিচেই থাকি। বছরের প্রথম তুষার পাতে শুভ্র-প্রশান্ত পৃথিবী দেখার যে আনন্দ, সেটা মলিন হয়ে যায় কল্পনায় ভেসে ওঠা নিত্যদিনের ছবিটায়, যেখানে থকথকে কাদার মত তুষারের তলে রাস্তাটাও হয় নর্দমা।
নতুন মন্তব্য করুন