শান্তি ব্যাপারটা বহুত আগে আমাকে ছেড়ে পালিয়েছে; যতটুকু রয়ে গেছে তার উপমা টানা যায় অবসরে জাবর কাটার মতো করে! যেমন আমার এক গোলাপী রঙের একখানা পুতুল ছিলো, যার আবার গানের গলা ছিলো সুপারভ্ (ওর কথা এখানে বাদ)! ভীষন জেদী এক বোন ছিলো আমার যাকে আদর না করে ঘর থেকে বের হলে সারাটা দিন ব্যর্থ হয়ে যেত! এখনো মনে পড়ে, ছোট বেলায় কদাচিৎ জ্বর-ফর হতো (জ্বরে পড়ার জন্য রীতিমতো দোয়া পড়তাম)হলে সোজা গিয়ে আমার পিচ্ছিটার কোলে শুয়ে পড়তাম। কিন্তু ও এতো সার্প যে, আমার চেহারা দেখেই বুঝে যেত জ্বরের মাত্রা! ধাক্কা দিয়ে মাথাটা সরিয়ে দিতো...হা হা হা। সবচেয়ে বিস্ময়ের ব্যাপার হলো একদিন, ১৯৯৮ বা ৯৯ সালের দিকের ঘটনা, আমাদের ইউনিতে একটু গন্ডগোল হলো, কোন এক কারণে আমার ডান হাতের কনুইয়ের নীচ থেকে কবজির উপর পর্যন্ত কেটে যাওয়াতে অনেকগুলো সেলাই দিতে হলো তবুও ব্লিডিং বন্ধ হচ্ছিলোনা। অনেকগুলো প্রলেপ দিয়ে বাসায় ফিরে দেখি পিচ্ছি রুমে বসা, কোনরকম ভূমিকা ছাড়া বলে বসলো, ‘কোথায় কোথায় জখম হয়েছে দেখাও’। আমি অবাক না হওয়ার চেষ্টা করে বলি, ‘কই কিছু হইনাই তো, তুই তাড়াতাড়ি আম্মাকে গিয়ে ভাত দিতে বল’। ও নিঃশব্দে চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে আমার শার্টটা খুলে কালচে হয়ে যাওয়া ড্রেসিংগুলো পাল্টাতে শুরু করলো.....! এইসব সুখ এখন ইতিহাস, আজ প্রায় চার বছর হতে চল্লো ওর মুখ দেখা হচ্ছেনা। আমার পিচ্ছির আরেকটা পিচ্ছি হয়েছে, ওকে এখনো ছুয়েঁ দেখার সৌভাগ্য হয়নি আমার! সেই ছোট্ট মানুষটিরও আজ এমন এক অবস্থা কি করবো আমরা বুঝে উঠতে পারছিনা। জন্মের এক বছরের মাথায় আমাদের পরিবারের এক ডাক্তার আবিষ্কার করলেন আমাদের ফিদা কোন এক বিশেষ রোগে আক্রান্ত। জানা গেল রোগটার নাম Idiopathic thrombocytopenic purpura (ITP)। রোগের কারন এখনো প্রায় অজ্ঞাত! শতকরা ৯০% উপর সমাধানযোগ্য রোগ এটি। কিন্তু কিছু আছে ব্যতিক্রম, গত দুই বছর ফ্লোরিডায় টানা চিকিৎসার পর ডাক্তাররা বলছেন, তাদের চিকিৎসার শেষ পর্যায় চলছে এটি। এখন মাত্র দু’টি উপায় খোলা আছে, এক. অপারেট করা (সফল হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ) এবং দুই. নতুন নতুন ঔষধের এক্সপ্যারিমেন্ট চালিয়ে যাওয়া (যার সফল আউটপুট একমাসের চেয়ে কম!)। একমাস যেতে না যেতে ব্লাড প্লাটিনাম নেমে ৫০০০-এ চলে আসছে! এখন আমরা বিকল্প খুজঁছি, মানে বিকল্প চিকিৎসার সুযোগ বের করার চেষ্টা করছি। সচল বা অতিথিদের মধ্যে কেউ যদি এই বিষয়ে জেনে থাকেন, বিশেষ করে জাপান-সিঙ্গাপুর-মালেশিয়া-চীন ওইসব দেশে (বা পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে) যারা আছেন তারা যদি কোন বিকল্প পথের সন্ধান দিতে পারেন তবে ভীষনভাবে কৃতার্থ হই। কারো যদি ওপেন প্লাটফর্মে কোনরুপ পরামর্শ দিতে অনিচ্ছা থাকে তো প্লিজ মেইল করুন আমার সচলের মেইলে, অথবা এই ঠিকানায়ও ইমেইল করে আপনার মূল্যবান পরামর্শ দিতে পারেন।
অনেক ধন্যবাদ সবাইকে, নিজের জন্য কিছু চাইছি বলে আগে ভাগেই সচল কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। ভালো থাকুন সবাই।
মন্তব্য
কি বলবো? চারপাশের পৃথিবীটা বড়বেশী শোকগ্রস্ত হয়ে গেছে। বাড়লো আরেক ফোঁটা।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
......................
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
নতুন মন্তব্য করুন