আমির মাসুদ ইরান থেকে আগত। উত্তর আমেরিকায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিষয়ে পিএইচডি গবেষণারত। অত্যন্ত অমায়িক এই মানুষটি নিদারুণ যুক্তিবাদী। বিশ্বাসে অজ্ঞেয়বাদী। তার নিজের ভাষায় 'এপিস্টেমলজিকালি এগ্নস্টিক'।
পাবে আড্ডার শেষ দিকে ইন্টেলিজান্স সিঙ্গুলারিটি নিয়ে আমাদের রিসার্চ গ্রুপের জম্পেশ একটা আলোচনা হচ্ছিল। পাব থেকে ডিপার্টমেন্টে যাবার পথে অমায়িক আমির মাসুদ আমার সাথে সিঙ্গুলারিটি নিয়ে আলাপ করতে চাইলেও আমার আগ্রহ তার এপিস্টেমলজিকাল এগ্নস্টিসিজ্ম নিয়ে। পূর্বের এক আলাপে এ নিয়ে তার সাথে তর্ক করার সুযোগ হয় নি। কিন্তু এর পর বেশ কিছু সময় চলে গেছে। প্রায় অর্ধবছর। চিন্তার অনেক চাকা ঘুরেছে। এই এগ্নস্টিসিজ্ম নিয়ে এখন অনেক সিধা প্রশ্ন আছে।
- আমাকে একটা কথা বলো আমির। যে জিনিসটা দেখতে আমি কখনো পাই নি, কখনো পাবোও না, সেটার অস্তিত্ব নিয়ে আমি কেন সংশয়ে থাকব? সেটার অস্তিত্ব থাকতেও পারে, এমন একটা বিশ্বাসের সুযোগ রেখে দিব কি যুক্তিতে? জানতে চাইলাম।
- এটা হলো আমাদের জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার পরিণাম। আমাদের পর্যবেক্ষণের জগত সীমিত। জগতের সকল অংশ আমাদের পর্যবেক্ষণের আওতায় নাও থাকতে পারে। আমাদের পর্যবেক্ষণ বাড়তে পারে। কিন্তু বাড়তে থাকলেও, আমাদের সর্বোচ্চ পর্যবেক্ষণের সীমায় পৌঁছে গেলেও জগতের এমন অংশ থাকতে পারে, যা পর্যবেক্ষণের বাইরেই রয়ে যাবে। সে জগতের অস্তিত্ব নেই, বা আছে, কোনটাই আমাদের পক্ষে বলা সম্ভব নয়।
- যেটা আমার পর্যবেক্ষণের আওতায় আসবেই না, সেটার অস্তিত্বে বিশ্বাসের প্রশ্ন কোথায়? ব্যাপারটা কি এমন যে ধরো - একটা ঈশ্বর ওই অদেখা জগতে থাকতেও পারে বা নাও পারে। তোমার বিশ্বাসের অবস্থানটা কি অনেকটা এরকম?
- আমার বিশ্বাসের অবস্থানটা এরকম হলেও, ওটা আমার একটা যৌক্তিক অবস্থানও বটে। বলে আমির।
- তাহলে এখন ধরো আমি বললাম, ওই অদেখা জগতে একটা সাদা বর্ণের একশৃঙ্গি অশ্ব আছে। তুমি কি এই জিনিসের অস্তিত্ব প্রশ্নেও অজ্ঞেয়বাদী?
একটু দ্বিধা করে তারপর প্রত্যয় নিয়ে আমির বলল, হ্যাঁ।
- তারপর আমি যদি বলি, ওই একশৃঙ্গি অশ্বের বাম পায়ের উপরের অংশে একটা লাল দাগ আছে, তোমার অবস্থান কি তারপরেও এমন যে - সেটা থাকার প্রমাণ করা যাচ্ছে না, আবার না থাকার প্রমাণও করা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে আমি তাই অজ্ঞেয়বাদী। লাল দাগ নেই এমনটা আমি বলতে পারব না।
এবার একটু অনিচ্ছায় কিন্তু নিজের যুক্তির বশবর্তী হয়ে মাথা ঝাঁকালো। তারপর বলল, আমি যদি আমার যুক্তির সাথে আমার বক্তব্যের সঙ্গতি রাখতে চাই, তবে উত্তর হবে হ্যাঁ। আমার অবস্থান অনেকটা এমনই।
- আচ্ছা, তাহলে ঈশ্বর প্রসঙ্গে আসি। এমন ঈশ্বর থাকতে পারেন বা নাও পারেন, যাকে আমরা কখনো পর্যবেক্ষণ করতে পারব না বলে তার অস্তিত্বকে কোনোভাবেই প্রমাণ বা অপ্রমাণ করতে পারব না। তা যে বিষয়ে আমাদের প্রমাণ বা অপ্রমাণের ব্যর্থতা আছে, তার উপর বিশেষণ আরোপের ব্যাপারটা যুক্তির সাথে যাচ্ছে কি?
- যেমন?
- যেমন, আমি দেখতেও পাচ্ছি না, প্রমাণও করতে পারছি না। অথচ সেই একই বিষয় কে আমি বলছি ঈশ্বর। সেই ঈশ্বরটি একশৃঙ্গি অশ্ব থেকে কিভাবে আলাদা? তার বিশেষ কি বৈশিষ্ট্য আছে যেটা আরোপ করে তাকে ঈশ্বর বলা হচ্ছে?
- আগেই বলে নেই, এই পুরো ব্যাপারটাই স্পেকুলেশন। কেননা এখানে প্রমাণের ব্যর্থতা আগেই স্বীকার করে নেয়া হচ্ছে। তদুপরি, এখানে আমার একটি বিষয়ের উপর জোর আরোপের বাধ্যবাধকতাও নেই। কারণ আমার অবস্থান এর পক্ষে নয়, বরং এর অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত না হবার পক্ষে। এখন সেই প্রশ্নসাপেক্ষ, অপ্রমাণিত অস্তিত্বকে ঈশ্বর বলা যাবে যদি ধারণা করা চলে যে ভৌত জগতের প্রাণী বা জড়কুলের উপর তার প্রভাবটা নিয়ন্ত্রণের পর্যায়ে পড়ে। অর্থাৎ এসবের উপর তার একটা নিয়ন্ত্রণ আছে বলে যদি অনুমান করা হয়।
- ভৌত জগত মানে যেটা আমাদের পর্যবেক্ষণ তথা বিজ্ঞানের আওতায় পড়ে?
- ঠিক তাই।
- কিন্তু ওই ঈশ্বরতো তুমি বলছ - পর্যবেক্ষণ-অসাধ্য। অর্থাৎ সে আধিভৌতিক জগতের বাসিন্দা। সেই জগত থেকে কেউ যদি ভৌত জগতে ইন্টারফেয়ার করে, তাহলে তো সেই প্রভাব বা নিয়ন্ত্রণটাও পর্যবেক্ষণের আওতায় চলে আসে।
- সেটা ঠিক।
এবার একটু সংকোচ। আরেকটু ভেবে নিতে চাইল। যুক্তির প্রতি তার যথেষ্ট অনুবর্তিতা। তার চিন্তার প্রতি আস্থা নিয়েই অপেক্ষা করতে থাকলাম।
আমরা তখনও পথ হাঁটছি। একটু ভেবে নিয়ে, কোনো প্রকার বক্তব্য পরিবর্তনের ছাপ না রেখেই উত্তর করলো,
- আসলে আধিভৌতিক জগতের কোনো কিছু যদি ভৌত জগতে প্রভাব ফেলে থাকে, তখন ওই বস্তু আর আধিভৌতিক জগতের থাকে না। সেটা তখন ভৌত জগতেরই অংশ হয়ে যায়।
- মানে আমাদের পর্যবেক্ষণের আওতায় চলে আসে। ফলে সেটার অস্তিত্ব আর এপিস্টেমলজিকালি অজ্ঞেয় থাকে না। বরং পর্যবেক্ষণ দ্বারা সত্যাসত্য যাচাইযোগ্য হয়ে যায়। আমি বললাম।
- হুমম।
- তাহলে আধিভৌতিক জগত - যে জগত সম্পর্কে তুমি অজ্ঞেয়বাদী, সেটা হলো ভৌত জগত থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন একটা জগত। ওই জগত পর্যবেক্ষণের বাইরে। দুই জগতে কোনো কানেকশান নেই। এখন কথা হলো, পর্যবেক্ষণ-অসাধ্য যে কোনো বক্তব্য বা তত্ত্ব তো অর্থহীন।
- ঠিক, অর্থহীন। যৌক্তিক প্রত্যক্ষবাদ।
- লজিক্যাল পজিটিভিজম।
- তবে অস্তিত্বহীন এমনটা কিন্তু প্রমাণিত না। আমির বলল।
- আমি একটা বিষয় এখানে লক্ষ করলাম। যুক্তিগতভাবে আমার আর তোমার অবস্থান প্রায় একই। ভৌত জগত আর আধিভৌতিক জগত সম্পর্কে আমাদের ধারণাগুলো একই। পর্যবেক্ষণবিহীন বক্তব্যের অর্থশূন্যতা বিষয়েও আমরা একমত, দুজনেই লজিকাল পজিটিভিস্ট এ ব্যাপারে। পার্থক্য কেবল থাকছে ওই পর্যবেক্ষণ-অসাধ্য আধিভৌতিক জগতের অস্তিত্বের প্রশ্নে অবস্থান নিয়ে। দুজনেই মানছি, ওই জগতের কোনো প্রভাব নেই আমাদের জীবন ও জগতে। কেবল তুমি বলছ এমন জগত থাকতেও পারে, আর আমি কোনো প্রকার ঝুঁকির সুযোগ না রেখেই বলতে পারছি ওটা নেই।
মাথা নাড়ল আমির। কিন্তু এখানে আরেকটি বিষয়ও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, যেটা আমি মুখে বলছি না, কিন্তু পরিষ্কার। সেটা হলো আমিরের যদির-ঈশ্বর আধিভৌতিক জগত থেকে পালিয়ে গেছে। ওখানে একশৃঙ্গি অশ্বের অস্তিত্ব নিয়ে আরো কিছুক্ষণ তর্ক সে করতে পারবে। কিন্তু ঈশ্বরকে পর্যবেক্ষণ-অসাধ্য ওই জগতে রাখতে আর সে পারবে না। কারণ, ঈশ্বর মানে যার ভৌত জগতে ব্যাপক প্রভাব আছে। আমিরের প্রথম অবস্থানের এই চ্যুতির দিকে সরাসরি ইঙ্গিত না করে বললাম,
- তাহলে ঈশ্বর নেই। তুমি এই বিষয়ে এখন একমত?
- না তা কেনো?
- তবে কোন জগতে আছে সে?
- এই ভৌত জগতে থাকতে পারে।
- সেক্ষেত্রে তার অস্তিত্বের সত্যাসত্য যাচাইযোগ্য?
সেটার উত্তর না করে বলল,
- পিঁপড়ার কাছে আমরা যেমন। উভয়ই তো ভৌত জগতেই আছি তাই না? আমাদের সাপেক্ষেও তার অবস্থান তেমন।
- অতিবুদ্ধিমান প্রাণী বলা চলে তাকে।
- হ্যাঁ।
- তার মানে কিন্তু ঈশ্বর না।
- না, সে কিন্তু ঈশ্বরও হতে পারে। আমির বলে।
- মানে আমাদের উপর তার নিয়ন্ত্রণ থাকবে? কিভাবে?
- থাকতে পারে। আমাদের মস্তিষ্ক কিভাবে কাজ করে তাই তো আমরা জানি না। সেটাকে কোনো উচ্চতর প্রাণী কিভাবে প্রভাবিত করছে, সেটা আমরা এই মুহূর্তে না জানতেই পারি।
- কিন্তু এমন একটা কিছু আমি কেনো ভাবতে যাব? পর্যবেক্ষণ দ্বারা প্রয়োজন সূচিত না হলে এমন কিছু ভাবার আমার প্রনোদনাটি কি?
কিছু মুহূর্ত চিন্তা করে নিয়ে বলল,
- বেশ, পর্যবেক্ষণপ্রসূত চিন্তার কথা যদি তুমি বলো - জগতে অনেক মানুষ আছে, যারা আধ্যাত্মিক অস্তিত্ব অনুভবের কথা বলে। আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতাজাত ভৌতিক প্রতিক্রিয়া-দাবীর কথা মানুষ রিপোর্ট করেছে। তুমি ওগুলোকে পর্যবেক্ষণতাড়িত প্রেষণা ধরে নিয়ে এগুতে পারো।
- ওগুলো! আমি ঐসব কথিত-অভিজ্ঞতার রিপোর্ট থেকে এত কঠিন তত্ত্বে যাব কেনো, যেটা যাচাই করা প্রায় অসাধ্য? আমি তো বরং ঐসব পর্যবেক্ষণের আরো অনেক সহজ এবং উপযুক্ত ব্যাখ্যায় যেতে পারি। যেমন বলতে পারি, ওরা মিথ্যে কথা বলে। অথবা বলতে পারি, ওদের বিশেষ কোনো রোগ আছে। আমার এই ব্যাখ্যার জন্য তো তোমার ব্যাখ্যার চেয়ে ঢের কম শক্তির প্রয়োজন।
- তুমি এখানে ওকামের রেজর ব্যবহার করছ।
- ওকামের রেজর সম্ভবত পর্যবেক্ষণ-সাধ্যতার ধার ধারে না। কেবলই সহজ ব্যাখ্যার পক্ষপাতিত্ব করে। আমার পক্ষপাতিত্ব এখানে বরং পর্যবেক্ষণপ্রসূত বিষয়ের প্রতি। ব্যাখ্যাটা সহজ কিনা তা পরের প্রশ্ন। আমার শক্তি-সংক্রান্ত বক্তব্য ওকামের রেজরের ব্যবহারের দিকেই ইঙ্গিত করে বটে। তবে, আরো সংহত করে বললে আমার বক্তব্যটা হবে এমন - আমার ব্যাখ্যাটার পর্যবেক্ষণগত ভিত্তি আছে। এমনটা ঘটতে দেখা গেছে। অর্থাৎ মানুষকে মিথ্যা বলতে দেখা গেছে এবং বিভিন্ন রোগের কারণে ব্যতিক্রমী অভিজ্ঞতার কথা বলতে দেখা গেছে। কিন্তু তোমার যে অনুমান - উচ্চতর প্রাণী দ্বারা আমাদের উপর অদৃষ্ট অথচ প্রবল নিয়ন্ত্রণ, সে ধরনের কোনকিছু কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা দেখতে পাই নি। এমন কোনো পর্যবেক্ষণের সম্মুখীনও আমরা হই নি, যেটার ব্যাখ্যায় এই পর্যায়ের অনুমানের প্রয়োজন পড়ে।
ডিপার্টমেন্ট বিল্ডিং-এ চলে এসেছি অনেক আগে। আমির এই শেষ কথাগুলোর সময়টাতে ধীরে ধীরে অন্যমনস্ক হয়ে পড়ছিল। বললাম, তোমার কিছু কাজ ছিল ডিপার্টমেন্টে?
- ও হ্যাঁ! ক'টা বাজে?
- আহ, অনেক রাত হয়ে গেছে।
- আমাকে তাহলে যেতে হচ্ছে।
- ঠিক আছে। আবার কথা হবে, আমির।
আমিরের যুক্তি-অনুবর্তিতার প্রতি আমার একটা আস্থা আছে বটে। আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করব 'এপিস্টেমলজিকালি এগ্নস্টিক' আমিরের পরের পর্যায়ের চিন্তাগুলো নিয়ে তার সাথে আবার কথা বলতে।
মন্তব্য
কোথায় যেন পড়েছিলাম, অজ্ঞেয়বাদী আসলে ভীতু নাস্তিক।
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
উপভোগ্য আলাপ।
আলাপটা করেও উপভোগ করেছিলাম , ধন্যবাদ হিমু ভাই।
ঈশ্বরবাদীদের মধ্যে দু'টো দল আছেঃ এক, যারা শুধু বিশ্বাস করে যুক্তির ধার ধারেনা আর দুই, যারা ঈশ্বরের অস্তিত্ত্বকে প্রমান করার চেষ্টা করে 'ঈশ্বরের উপস্থিতি না থাকলে কি হত' সেই যুক্তি দেখিয়ে। অভিজ্ঞতা বলে ঈশ্বরের অস্তিত্ত্ব নেই এটি যুক্তি দিয়ে প্রমান করা যতটা সহজ এর বিপরীতটা প্রমান করা ততটাই কঠিন। তাই এখন আর যুক্তি খুজিনা , সরাসরি বিশ্বাসে চলে আসি।
তোমাদের তর্ক বেশ উপভোগ করলাম, তবে আমার পর্যবেক্ষণে আমিরকে মাঝে মাঝে যুক্তির দুয়ার থেকে সরে যেতে দেখেছি, মনে হয়েছে ও যা বিশ্বাস করে তা নিয়ে ও নিজেই দ্বিধায় আছে।
লেখা প্রসঙ্গে আসি, উইলিয়াম ওকামের রেজর তত্ত্ব নিয়ে খুব সংক্ষেপে কিছু কথা মনে হয় বলার প্রয়োজন ছিল, না হলে পাঠককে আবার উইকি মামুর কাছে কষ্ট করে যেতে হবে হয়ত। সার্বিক ভাবে বলতে গেলে চমৎকার পোষ্ট, চিন্তা করার মত যথেষ্ট খোরাক আছে। ধন্যবাদ ধ্রুব।
----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
মন্তব্যে মানিক!
আলাপের শুরুতে কিন্তু আমির এতটা দ্বিধায় ছিল না।
আপনি ঠিক ধরেছেন জাহিদ ভাই। আরো খেয়াল করলাম, পুরো ব্যাপারটার আলোচ্য 'অজ্ঞেয়বাদ', কিন্তু ওটা নিয়েই কোনো ভূমিকা দেই নাই। লজিক্যাল পজিটিভিজমেরও একই অবস্থা।
এখন এগুলো পাঠক না জানলে লেখার ভিতর থেকে একটা আইডিয়া করে নিতে হবে, আর যাচাইয়ের জন্য তো উইকি মামু আছেই
ধন্যবাদ জাহিদ ভাই।
পড়ে ভালো লাগলো। তবে আলাপটা বচসায় রূপ নেয়নি বোধহয়। শিরোনামের সাথে তাই মেলাতে পারলাম না। এরকম লেখা আরো লিখুন।
ঠিকই বলেছেন মনে হয়। এসব বিষয় নিয়ে তর্ক করি না তো, আমার জন্যে এটাই যথেষ্ট বচসাতুল্য ছিল
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
"ঈশ্বর মানে যার ভৌত জগতে ব্যাপক প্রভাব আছে।"----লাইনটা পছন্দ হয়েছে।
মুশফিকুর রশীদ সাহেবের সাথে একমত হতে পারলাম না।
********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।
********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপু।
বরাবরের মতই দারুণ লাগলো পড়ে।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ধন্যবাদ স্পর্শ।
পুরান পাঠক ফিরে পাবার একটা আনন্দ আছে।
চমৎকার কথোপকথন ! আপনার লেখাটি পড়ে 'মুক্তমনায়' রায়হানের লেখার কথা মনে পড়ছে, তবে পার্থক্য আপনার বন্ধুর যুক্তিবাদী মনমানসিকতা আর রায়হানের বিজ্ঞানের কঠিন পরিভাষা ব্যবহার করে সাধরণ মানুষকে বিভ্রান্ত করায়।
এ ধরনের লেখা আরও লিখুন। ভালো থাকবেন।
আপনি বিজ্ঞানের কোনো কঠিন পরিভাষা ব্যবহার করেননি। তবুও আপনার এই মন্তব্যে আমি বিভ্রান্ত বোধ করছি!! একটু ব্যাখ্যা দিয়ে আলোকিত করবেন কি আমাকে?
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
আপনি রায়হান আবীরের কথা বলছেন? ওনার লেখা তো ভালো পাই। আপনি ওনার লেখাটির লিঙ্ক দেন। ওনাকে আপনার মেসেজটা পৌঁছে দিবো। কঠিন পরিভাষা এর আগে আমি প্রায় সবকয়টি লেখায় নিজে ব্যবহার করেছি।
অনেক লেখায় এর প্রয়োজন পড়ে। আমার কাছে ইংরেজি শব্দ ব্যবহার আর বাংলা কঠিন পরিভাষা ব্যবহার প্রায় একই ব্যাপার মনে হয়। তাই পরিভাষা ব্যবহারটা একটা পছন্দ হিসেবে করি। এখন সেটা ব্যবহারের পেছনে মানুষকে বিভ্রান্ত করার উদ্দেশ্য দেখতে পাওয়াটা আপনার আরোপিত।
আপনিও ভালো থাকবেন।
এই আলাপ আমাদের আগের জেনেরেশনের সাথে করতে গেলে প্রথমে খামু শক্ত মাইর, তারপর হমু ত্যাজ্য
আলোচনা হাতাহাতি পর্যায়ে যায়নি বলে হতাশ হলাম
মুরুব্বিদের সাথে এসব নিয়া তর্ক করা হইলো পর্যবেক্ষণ অসাধ্য তত্ত্বের মতই অর্থহীন।
অজ্ঞেয়বাদীদের হাতাহাতির রেকর্ড নাই।
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
চমৎকার একটা আলোচনা
অজ্ঞেয়বাদীদের অনেকেই ভীতু নাস্তিক বললেও তারা সবাই কিন্তু যুক্তিবাদী না
আপনার বন্ধুটিকে তার অজ্ঞতা/অজ্ঞাততার পক্ষে খুবই খুবই যুক্তিসম্পন্ন একজন মানুষ মনে হলো
যদিও তার কিছু কিছু কথা সংশয়বাদীতার দিকে চলে যাচ্ছিল
এটা বোধহয় স্বাভাবিক
০২
অজ্ঞেয়বাদীদের মধ্যে মূলত তিনদলের লোক দেখা যায়
একদল অজ্ঞেয়তার যুক্তি জানেন; এদেরকে কিছুটা নাস্তিকতা এবং অনেকটা সংশয়বাদ ঘেঁষা মনে হয়
একদল যুক্তির ধার ধারেন না। যুক্তি দাঁড়ও করান না। তর্কে যানও না। থাকতেও পারে নাও থাকতে পারে। আমি জানি না। এবং এ বিষয়ে আমার কোনো মাথাব্যথা নেই বলে নিজের মতো চলতে থাকেন
আর আরেকদল:
তৃতীয় এই দলকে খুব ভালো করে চিত্রিত করে দ্বীজদাসের এই গানটা
এরা সম্ভাবনার জন্য ইনভেস্ট করতে রাজি
হয়ত নাই। কিন্তু যদি থাকে তাইলে পরকালে ঈশ্বর লেম্বুচিপা দিবে। তাই তারে দুইটা প্রণাম ঠুকি কাজের ফাঁকে
০৩
বিষয়টা বেশ কাকতালীয়
গতকাল সন্ধ্যাতেই এনকিদু আর নিবিড়ের সাথে আলপা হচ্ছিল এই অজ্ঞেয়বাদ আর সংশয়বাদ নিয়ে
আজ দেখি চমৎকার একটা পোস্ট
ধন্যবাদ লীলেনদা।
আমির তার যুক্তির জন্য এ মহলে প্রসিদ্ধ। যুক্তির অনুবর্তনের জন্যে নিজের বিশ্বাসের অবস্থানটাকেও সে যেভাবে পরিমার্জন করতে পারল মুহূর্তের মধ্যে, সেটা সত্যিই বেশ প্রশংসনীয়।
আমি যদিও তাকে বলেছি সে যৌক্তিক প্রত্যক্ষবাদী, কিন্তু পুনর্বার ভাবার পর বুঝতে পারছি, সে আসলে কিন্তু প্রত্যক্ষবাদী না। কেবলই যুক্তিবাদী। প্রত্যক্ষবাদ অধিবিদ্যা (meta-physics) কে বাতিল করে, আমির তা করে নি।
সাধারণত যুক্তিবাদী না হলে আর কারো সাথে তর্কে যাই না। আমি অবশ্য নিজে যুক্তিবাদের সাথে যোগ করি প্রত্যক্ষবাদকে, যা মনে করে পর্যবেক্ষণে প্রোথিত না এমন জ্ঞান অর্থহীন। এটা ছাড়া যুক্তি কল্পনার মেটা লেভেলে চলে যায়। বাস্তবতা আর অনেক কাল্পনিক/অবাস্তব বা আধিভৌতিক জগতের মাঝখানে বিচরণ করে এবং সেগুলো নিয়ে কুটতর্ক কোরে বাস্তবতাকে বোঝার একটা মানসিক লাইসেন্স পায়। প্রত্যক্ষবাদ ছাড়া যুক্তি আমার মতে বাস্তবতার আসে পাশে থাকতে পারে না। অর্থপূর্ণ হয় না। মানুষ তখন জ্বীন, ভূত, আকডুম, বাগডুম, একশৃঙ্গী অশ্ব, এক চক্ষু দানবের অস্তিত্বও তর্ক করার মত গুরুত্বপূর্ণ মনে করতে পারে। ওগুলোর অস্তিত্ব নিয়ে সংশয়ে থাকে। বাতিল করতে পারে না।
কবিতাংশটা দারুণ লাগলো, পুরো কবিতাটা কোথায় পাবো?
কাকতালই হইলো সত্যিকারের ধারমা।
আর ঈশ্বরের লেম্বুচিপা হইলো প্যাসক্যালের ওয়েজার, আরেকটা ভ্রান্ত-ধারমা।
আরেকটা মডেল আছে, যেখানে ঈশ্বর অন্ধবিশ্বাসীদেরকেই শুধু লেম্বুচিপা দেয় আর যুক্তিবাদীদের স্বর্গে পার্সেল করে।
এখন কথা হইলো কোন মডেল সত্য? ঈশ্বর অন্ধবিশ্বাসীদের আদর করবে, ঈশ্বরের ব্যাপারে এই ধারণা আরোপের ভিত্তি কি? নয়নেও দেখি নাই, শ্রবণেও শুনি নাই, কিন্তু তার চরিত্র জানলাম ক্যাম্নে! লেম্বুচিপা একটা ভ্রান্ত-ধারমা।
চমৎকার , প্রাণবন্ত আলোচনা
ধন্যবাদ মামুন ভাই!
অকামের ক্ষুর নিয়ে একটা বাংলা লেখা এখানে।
---মহাস্থবির জাতক---
ধন্যবাদ মহাস্থবির জাতক।
তাৎপর্যমূলক আলোচনা। উনি কি সত্যিই অজ্ঞেয়বাদী নাকি সংসয়বাদী?
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। অজ্ঞেয়বাদে সংশয়বাদের আবির্ভাব মনে হয় স্বাভাবিক।
"রায়হানের বিজ্ঞানের কঠিন পরিভাষা ব্যবহার করে সাধরণ মানুষকে
বিভ্রান্ত করায়।" মনে হচ্ছে আমার করা এই মন্তব্যটি বিভ্রান্তির সূত্রপাত।
ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করছি:
প্রথমত ধ্রুব বর্ণন এর লেখা আমার কাছে অত্যন্ত সাবলীল মনে হয়েছে
এবং তাঁর লেখায় কোথাও কঠিন পরিভাষা আছে বলে দাবি করিনি। আমি
পরিষ্কার বলেছি বায়হানের লেখার কথা। সুতরাং স্পর্শের বিভ্রান্ত বোধ করার
কারণ দেখছি না।
ধ্রুব বর্ণন, আমার 'সাধরণ মানুষকে বিভ্রান্ত করায়" কথাটা কিন্তু স্পষ্টই
রায়হানকে নিয়ে বলা। কখনোই আপনার উদ্দেশ্যে নয়।
মুক্তমনায় বিপ্লব পাল এর এর একটা লেখা পড়ে প্রথম রায়হানের লেখাটির খোঁজ পাই। সেখানে রায়হান অনেক ফালতু যু্ক্তির মাঝে
অজ্ঞেয়বাদ, অক্কামের রেজর ইত্যাদি দিয়ে ঈশ্বরের অস্তিত্ত প্রমাণ করার চেষ্টা। পরবর্তিত জাহেদ আহমেদ, বিল্পবপাল প্রমুখরা প্রতিযুক্তি নিয়ে দাড়ালে রায়হান ছাগুপানা শুরু করে।
আপনার লেখার 'আমির মাসুদ'কে বরং আমার মনে হয়েছে যুক্তির প্রতি শ্রদ্ধাশীল। যখন তাঁর(আমিরের) যুক্তি আপনি স্পষ্ট ভাবে খণ্ডন করলেন তখন তিনি কিন্তু নীরব থেকে আপানার যুক্তিটিকে মেনে নিয়েছেন। আমার দুলাইনে করা মন্তব্যে আমি এই তুলনাটা করতে চেয়েছিলাম।
আর এ রায়হান আপনার উল্লেখিত 'রায়হান আবীর' না। যার কথা বলছি সে সেই সময় শুধু রায়হান নাম দিয়ে লিখতো।
ধান ভানতে শিবের গীত গেয়ে ফেললাম, রায়হানের লেখার লিঙ্কটি দেই (সাথে জাহেদ আহমেদ এবং বিল্পব পাল এর উত্তরগুলিও)। ধন্যবাদ
আস্তিকতা ও নাস্তিকতা : একটি বিশ্লেষণ : (রায়হান)
Horse’s egg, God vs. belief, no belief
(A response to Raihan) : (Jahed Ahmed)
র্যাণ্ডম পাগলামো : (বিপ্লব পালের এই ধারাবাহিক লেখাটি প্রদত্ত লিংকটি অনুসরণ করে পেজের একদম নীচে ডানদিকে পাবেন)
বোঝা যাচ্ছে কঠিন পরিভাষার পাশাপাশি অতিসংক্ষেপণও বক্তব্য বোঝার বিপরীতে অন্তরায়। আপনার এর আগের বক্তব্যটা অতিরিক্ত সংক্ষিপ্ত ছিল। সেখান থেকে ভেতরের এত গল্প আমাদের পক্ষে বোঝা বেশ কষ্টই ছিল বৈকি! শীবের গীত হবে কেন? অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যই দিলেন। আপনি যে আমার কথা বলেন নি তা অবশ্যই বুঝেছি। ব্যাপারটা পরিষ্কার করার জন্য ধন্যবাদ।
বিজ্ঞানের কঠিন পরিভাষাই কি বিভ্রান্তির অস্ত্র ছিল কি না দেখতে হবে, বিভ্রান্তি সাধারণত তৈরী করা হয় অর্ধেক তথ্য আর হেত্বাভাস দিয়ে।
আবারো ধন্যবাদ, লিংকগুলোর জন্যও।
নতুন মন্তব্য করুন