বিভূঁইয়ে পাঞ্জাবি পরার হ্যাপা অনেক। উপলক্ষই পাওয়া দুষ্কর পাঞ্জাবি পরিধানের। আবার উপলক্ষ পেলেও আবহাওয়া লক্ষ্য করা মস্ত এক ফ্যাক্টর। ঝলমলে, গনগনে দিন হলে কোন কথা নেই, কিন্তু যদি হয় মাঘ মাসের কোন একটা সময়ে! তাহলে শীতে বাঘ তাড়াতে তাড়াতে ভানু সাহেব তার দুইখান কথা না বলে থাকতেই পারবেন না!
পুজার দাওয়াত ছিলো অনেক আগে থেকেই। ভুলেও গিয়েছিলাম। হঠাৎই একজন জানালো যাবো কীনা। আমি পারতঃপক্ষে এড়িয়ে চলতে চাই, কিন্তু এবার পাঞ্জাবি পরার লোভের পাশাপাশি আরেকটা জরুরী তাগিদে যেতে হলো বৈকি! ঘটনাটা খুলেই বলি তাহলে-
ছোটভাই দেশ থেকে আসার পর থেকেই কেমন মনমরা থাকে। চাপা স্বভাবের মানুষ, প্রকাশ না করলেও ঠিকই বুঝি দেশ থেকে আসার পরের সিনড্রোমে ভুগছে। খুব খারাপ জিনিষ এটা। চান্স পেলেই বাড়ির গল্প করছে, ঢাকায় ল্যান্ডিং থেকে ফিরতি ফ্লাইটে ওঠার আগ পর্যন্ত সব ঘটনার পুংখানুপুঙ্খ বয়ান করে ফেলছে সুযোগটি পেলেই। মা বলছিলো, আসার আগে নাকি অন্যবাড়ি গিয়ে কেঁদেছে পাছে মা আসতে দিবে না এই ভয়ে। আমাকে ক্ষণে ক্ষনেই তাগাড়া দিচ্ছে দেশে চলে যেতে।
যাইহোক, তার বাংলাদেশ ভ্রমন পরবর্তী সিনড্রোম কাটাতেই পুজোতে যাওয়া। পুজো তো না ঠিক, পুজোর অনুষ্ঠান। আমি যেতেই দেখা-সাক্ষাত-কোলাকোলি শেষে লুচি খাওয়ার আমন্ত্রন। 'তোমার ভাই এসেছে শুনলাম...'- কয়েকজনের সপ্রতিভ জিজ্ঞাসা। কৌতূহল মেটাই অঙুলি যথাস্থানে নির্দেশ করে। ভাবীরা খাওয়া তুলে দিলো, আমার স্বাস্থ্যের অবনতির কথা মনে করিয়ে দিলো, অনেকদিন বাদে দেখা- খানিক হাপিত্যেশ হলো। এবং অবশেষে পেটপুরে ডাল-সব্জি দিয়ে অগুণতি লুচি খাওয়া হলো।
এবার গানাবাজনা হলো। পেছনে দাঁড়িয়ে যতো রকম দুষ্টামী করা যায় করা হচ্ছিলো। সামনে বসা আধা-বাঙালী তিনজন ললনার সঙ্গেও চোখাচোখি হলো, ড্যাম কেয়ার ভাব দেখানো হলো (ছোট ভাই আছে যে সাথে, তাছাড়া আজকে মিশনতো ভিন্ন!), দল বেঁধে বাইরে গিয়ে বিড়ি ফুঁকা হলো, এবং অবশেষে ফেরার পথ ধরা হলো।
একজন কোথাও বসে সময়ক্ষেপণের আহবান জানালো। এবারো রাজী হলাম ছোট ভাইয়ের জন্যই। নির্ধারণ হলো বায়ার্ণের 'সালভাটোরে'। ভালো লাগার মতো একটা জায়গা। যারা বায়ার্ণ দেখেনি তারা অন্তত ঐ ছোট্ট জায়গাটুকুতে বায়ার্ণের আমেজ এবং আবেশ দুই'ই পেতে পারে। বিরাট লিটার মগে এক্সপোর্ট বীয়ার, নানা সাইজের 'পাওলানার'-র গেলাস, বিশাল স্ক্রীণে ফুটবল খেলা, বায়ার্ণের স্কাল্পচারাল ভিউয়ের একপাশে জার্মানীর বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সালভাটোরে পরিভ্রমন এবং ভালোলাগার মানপত্র, পরিবেশ সব মিলিয়ে চমৎকার একটা জায়গা সময় কাটানোর। ওখানে বসেও বোধ করি বেচারা ছোট ভাই দেশের অলিতে গলিতেই ঘুরে বেরিয়েছে।
বাংলাদেশ ভ্রমনোত্তর এই সিন্ড্রোম কাটাতে খুব শীঘ্রই তার প্রিয় সুইজারল্যান্ডে একটা ট্যুর করা যায় কিনা ভাবছি। আবার এটাও ভাবি পাশের দেশ হল্যান্ডে গেলেও ভালো। ফুলের দেশ, মন ফুরফুরে হবে নিশ্চই, যদিনা জটিল কোন প্রেম রোগ থেকে থাকে। আর আমারও অনেক দিন হলো, হল্যান্ডের ফ্রেশ গঞ্জিকা সেবন করা হয় না।
মন্তব্য
অগুণতি লুচি খেয়েছেন!!! হিংসায় মরে যাচ্ছি!
কারণে-অকারণে, স্থানে-অস্থানে বমি করার কথাটি বেমালুম ভুলে গেলেন?
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
- গঞ্জিকায় বমি হয় গুরু সন্ন্যাসী? পেটে বিষোদগার হলেই না তবে হয়। ফ্রেশ মালে নো প্রবলেম
আর লুচিতে হিংসা হবারই কথা। এই একটা জিনিষের বিনিময়ে ললনা-টাংকীও ছাড়তে পারি আমি।
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
হল্যান্ড এর গঞ্জিকার সুখ্যাতি এই অজপাড়াগায়ে বইসাও পাইছি তাও বেশ অনেক দিন হইল।
কিন্তু আফসোস... হিমু ভাইয়ের মত গুহাচিত্রও তো আঁকতে পারিনা।
আম,কলা আর ছাতা... আমার ছবি আঁকার দৌড় এই পর্যন্তই।
=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=
বুকের মধ্যে আস্ত একটা নদী নিয়ে ঘুরি
---------------------------------
বাঁইচ্যা আছি
- আপনেতো তাও আম-কলা-পাতা-ছাতা আঁকতে পারেন, এই গরীবতো তাও পারে না। উদ্ভিজ্জ্ব ফল আঁকলে সেটা হয় প্রাণীজ অঙ্গের মতোন। এবং সেটা হয় এমনই অঙ্হ যেটা আদৌ কেউ আজোবধি দেখে নাই। এইবার বুঝেন ঠ্যালা!
আর হল্যান্ডের কথা কী কমু ভাই। কওনের জিনিষ না, কেবল টানার জিনিষ আর গাছে চড়ার জিনিষ এইটা!
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
সিনড্রোমটা বাসলেই ভয়াবহ! একদম কয়েকটা দিন শেষ করে দেয়! তবে ২ভাই একসাথে থাকার ব্যাপারটা অনেকটাই সহায়ক হবার কথা।
হল্যান্ডে আকাম করতে যাবার আগে ভাইকে নিয়ে ফ্যুসেন ঘুড়ে আসতে পারেন। তবে আর কিছুদিন পরে গেলেই ভালো লাগবে।
___________________________
বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"
- মারাত্বক ভয়াবহ! এক সপ্তাহ হয়ে গেছে এখনো স্বাভাবিকতাই ফিরে আসছে না বেচারার।
ফ্যুসেন আগুন জায়গা। দেখি হুজুর কী বলেন!
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আহা রে! বেচারা!
আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
- আপনাকে জুনিয়র (বিপ্লব)
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আহারে !
ড্যাম কেয়ার ভাব দেখাইতে গিয়া কিসব সুযোগ যে হাতের ফাঁক দিয়া উড়াল দিলো, তা কে জানে !!
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
- ঈশ!! দিলেনতো মনটা ট্যাপ খাওয়াইয়া
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
হল্যান্ডের আরও একটা জিনিষ খুব বিখ্যাত। ওইটা থেকে সাবধান....
কি মাঝি? ডরাইলা?
- (বেড়াল)
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
নামকরণের সার্থকতা এই পর্বে বুঝলাম। সুইজারল্যান্ডে পরে যান, আগে হল্যান্ড থেকে ঘুরে আসেন। চন্ডালীটা জমুক।
- শামীম হক
- বস, একলা থাকলে চন্ডালী জমবো। ভাইতো লগে, এইবার জমবো কেবল গুরুটা
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
নতুন মন্তব্য করুন