সেকাল, একাল এবং আকাল...
গরমের দেশের মানুষ আমি। মাথায়, পিঠে সূর্যের প্রখর তাপের আদর নিয়ে বড় হয়েছি, বেড়ে উঠেছি। এই আমাকে হঠাৎ করে চৈত্র মাসের কড়া রোদ থেকে তুলে নিয়ে ডিপ ফ্রিজের মধ্যে ঢুকিয়ে দিলে কেমনে সহ্য হয়! আর প্রকৃতিও, মশকরা করতে বড় ওস্তাদ। সারাজীবন শুনে আসলাম, এই শহরে তুষারপাতের রেকর্ড খুব নগণ্য। হয় না বললেই চলে। পঞ্চাশ বছর আগে নাকি জম্পেশ তুষারপাত হয়েছিলো।
তো আমি মনে মনে একটু খুশীই হয়েছিলাম। কিন্তু কীসের কী! ঘাঁটি গাড়ার দুই বছরের মাথায় এমন তুষারপাত হলো যে জনগণ বলতে শুরু করলো 'গত পঞ্চাশ বছরে এমন তুষারপাত এই শহরে আর হয় নি!' আমি মনে মনে এবং কখনো ঠাণ্ডায় জমে যাওয়া রাস্তায় তুষারের উপর দিয়ে গপগপ করে হেঁটে যাওয়ার সময় প্রকৃতিকে আমার বড় কুটুম বানিয়ে ইচ্ছেমতো গালাগালি করি। আবার যেদিন রাস্তায় হাঁটতে হয় না, সেদিন ধোঁয়া ওঠা কফির মগে চুমুক দিয়ে সুখ-দুঃখের আলাপ করি, বড় কুটুম্বের মতোই।
কফির অভ্যাস আমার ছেড়ে গেছে বহুদিন হয়। কিন্তু প্রকৃতি শালার মশকরা থামে নি আমার সঙ্গে। আমার প্রবাস জীবনের স্মরণকালের সবচেয়ে ক্যারাব্যারা তুষারপাত হচ্ছে এবার, এই পোড়া শহরে। ঘর থেকে বেরুবার পর যে পথে এই সেদিনও সেঞ্চুরি পাতায় ভরে থাকতো, সে পথে এখন জমে থাকা তুষারের স্তুপ। সেঞ্চুরি পাতা বিছানো যে পথে আমি চোখ বুজে নানা কল্পনায় উদ্ভাসিত হয়ে বেখেয়াল পা ফেলেছি অযতনে, সেই একই পথে এখন আমাকে পা ফেলতে হয় দৃষ্টি সজাগ রেখে, খেয়াল করে, সযতনে। প্রায়ই ফেলার সঙ্গে সঙ্গেই পা ঘড়াৎ করে দুই ফুট ডানে-বামে সরে যায়। যে কোনো সময় ঘটে যেতে পারে অঘটন। হয়ে যেতে পারে প্রেস্টিজের ফালুদা, একেবারে খোলা রাজপথে!
অবশ্য এ রকম টালমাটাল হয়ে হাঁটতে গিয়ে একটা ব্যাকরণ আবিষ্কার করে ফেলেছি এ পথে হাঁটার। যথাসম্ভব ছোট পদক্ষেপে ডানে-বামে ঝুঁকে হাঁটলে অঘটন ঘটিয়ে 'পাংচার-ই-প্রেস্টিজ' হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তবে সমস্যা হলো, দূর থেকে লোকে দেখে জম্বি বলে ভুল করতে পারে (কারণ রাস্তাটা কবরস্থানের পাশ দিয়ে)। অথবা কোনো পেঙ্গুইন শিকারির বারো নম্বর বন্দুকের গুলি এসে পশ্চাৎদেশে উষ্ণ আদর বুলাতে পারে! তবে ব্যাকরণ না মানলে কী হয়, সেটা দেখা গিয়েছিলো আজকে বিকেলে। ধড়াশ করে যখন এক বালিকা শহরের মতিঝিল এলাকার ব্যস্ততম সড়কে একেবারে শুকনার মধ্যে আছাড়টা খেয়ে পড়লো!
সেরেন্ডিপিটি অথবা স্নোম্যান
ডিসেম্বর মাঝের মাঝামাঝি থেকে আমার কেমন জানি লাগতে শুরু করে। মিশ্র একটা অনুভূতি। মিশ্র বলছি এইজন্য যে আমি আসলে বুঝতে পারি না আমার কেমন লাগছে, বা কেমন লাগা উচিৎ! চারদিকে কেমন বিষণ্ণ একটা সুর, পরিবেশ, আবহ। কিন্তু ততোটা বিষণ্ণ যেনো আমাকে করতে পারছে না। কিংবা আমি বারবার বিষণ্ণ হতে গিয়েও হতে পারছি না। হচ্ছি ডিসেম্বারাহত বা অন্যকিছু, অথবা বিপরীতে! বুঝে উঠতে পারি না কিছুই।
একেবারে ছেলেবেলা থেকে এই ডিসেম্বর অবধি, কখনোই কিছু আমার মতো করে সম্পন্ন হয় নি। যা-ই করতে গিয়েছি, ফিরে এসেছি অন্যকিছু নিয়ে। অন্যকিছু, অপরিকল্পিত। এভাবে প্রতিটা ডিসেম্বরই আমার কাছে এসেছে সেরেন্ডিপিটি হয়ে। এবারও এর বিকল্প হয় নি। গিয়েছি আইস স্ক্যাটিং করতে, ফিরে এসেছি পেট ভরে ভাত খেয়ে। বের হয়েছি সিনেমা দেখতে যাবো বলে, রাস্তায় কয়েকজনের সঙ্গে দেখা হয়ে গেলো। সন্ধ্যা কেটে গেলো আড্ডা আর গুলতানি মেরে। এবার ক্রিসমাসের ছুটিতে ঘরে বসে ঝিমাবো আর ঘুমাবো বলে সব পাকাপাকি করে রেখেছিলাম, কিন্তু আর কয়েক ঘন্টা পরেই বের হয়ে পড়তে হবে। পুরো ছুটিতে আর নিজের ঘরে ঘুমবিলাস করা হবে না। মুখপোড়া ডিসেম্বরের বাকি আছে আর কয়েকটা দিন। এই ক'দিনে ঐতিহাসিক সেরেন্ডিপিটির অন্যথা হবে বলেও মনে হচ্ছে না। একটা স্নোম্যান বানানোর শখ আমার বহুদিনের। স্নোম্যান বানাতে গিয়ে নিজেই স্নোম্যান না হয়ে গেলে জানোবোনি।
বিবিধ
আমি মানুষটা আজীবনই লাস্টবেঞ্চি। মানে পিছনে থাকতেই স্বচ্ছন্দবোধ করি। সামনে আসলে অস্বস্তি হয়। অনেকটা পেঁচার মতো। কিন্তু তারপরেও কেউ অনবরত খোঁচালে পেঁচাও যেমন কোটর থেকে বের হয়ে দিনের আলোতে আসে। আমার ক্ষেত্রেও তাই হয়। গত বছরের নির্ধারিত ক্রিসমাস পার্টিতে যাই নি যাওয়ার মতো মানসিক অবস্থায় ছিলাম না বলে। এবারও যাবো না বলে ঠিক করে রেখেছিলাম। তবে এবার কারণ ভিন্ন। সেদিন ব্যাপক তুষারপাত হচ্ছিলো আর বারটাও ছিলো রবিবার। সুতরাং দুপুরে ব্রাঞ্চের দাওয়াতে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না ঘুম কাজা করে। কিন্তু ঐ যে, পাবলিকের গুঁতা। সকাল সাড়ে দশটা থেকে শুরু হলো ফোন কল। এগারোটার সময় ফোন ধরে বললাম, এই তো আমি অন দ্য ওয়ে। অথচ তখনও ঘুমের ঠেলায় চোখ খুলতে সমস্যা হচ্ছে। রেখে দিয়ে আবারও দিলাম ঘুম। তারপর আবার ফোন এলো সাড়ে এগারোটায়, তুমি কই! নিজের স্টলে যতো পদের গায়-গালি ছিলো সব ঢেলে দিলাম ফ্রি স্টাইলে। স্টক শেষ হবার পর কিছু ধার করলাম। বিভিন্ন ভাষা থেকে, যেগুলোর মানে অবশ্যই জানি না। এবং এগুলো কোন ভাষার শব্দ সেটাও জানি না। তাতে কী? মন চাইছে গালি দিতে, মন ভরে দিছি। কিচ্ছা খতম!
একটা ছেঁড়া জিন্স, ময়লা সোয়েটার আর পকেটের সেলাই ছুটে যাওয়া এক জ্যাকেট পরে গিয়ে হাজির হলাম দাওয়াতে। তারপরের কাহিনি ভিন্ন। সেইটা এখন বলবো না। যা বলার জন্য এই দাওয়াতনামার কথা বললাম সেইটা হলো, ঐ খোঁচানি। অনবরত খোঁচাতে থাকলে পেঁচাও যেমন বের হয়ে আসে, তেমনি আমাদেরও সময় হয়েছে আলোতে বের হয়ে আসার।
শাহরুখ নিয়ে কম কেচ্ছা তো হলো না। গোটা বাংলাদেশই ভেঙ্গে পড়লো সমালোচনায়। তো সমস্যার মূলে যেতে চাইলো কতোজন? কতোজন চাইলো নিজের ঘর থেকে, নিজের পরিবার থেকে, নিজের আত্মীয় স্বজনের কাছ থেকে হিন্দি চ্যানেলের দাপটকে খুদাপেজ জানাতে? কতোজন জানাতে সক্ষম হলো?
সরাসরি এদেশের হিন্দি চ্যানেলের মূলে আঘাত করাটা একটু কঠিন বটে। এতোদিনের জেঁকে বসা সিন্দবাদের ভূতটাকে এতো সহজে ঝেড়ে নামানো সহজ কাজ না। তবে কাজটা সহজ করার জন্য কয়েকটা ধাপ অনুসরণ করা যেতে পারে যার একটা হলো ফেসবুক। ফেসবুকে আমি হিন্দি গান, হিন্দি, সিরিয়াল, হিন্দি সিনেমা, হিন্দি টক শো, হিন্দি কমেডি শো- মোদ্দা কথা হিন্দি চ্যানেল সম্পর্কিত যা কিছু আছে সবকিছু শেয়ার করা থেকে বিরত থাকবো। নিজে শুনি আর না-ই শুনি, অন্তত আমার কাছ থেকে যেনো অন্য আরেকজন শুনতে উদ্বুদ্ধ না হয়, সে চেষ্টা করবো। এবং আমার বন্ধু তালিকায় যে সম্মানিত বন্ধু হিন্দি অনুষ্ঠান বা তার অংশ বিশেষ সানন্দে শেয়ার করবেন, আমি তাঁর প্রতি সম্মান প্রদর্শনার্থে ভবিষ্যতে তাঁর নিকট হতে আসা যেকোনো ধরনের ফিড আমার পাতায় না দেখানোর বন্দোবস্ত করবো। ইমেইলের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য হবে।
আমার কথাগুলো অন্যরকম শোনালে দুঃখিত। এক শাহরুখের অনুষ্ঠানের সমালোচনা করে কোনোই ফল হবে না, যদি না আমরা নিজেদেরকে সংশোধন করি। ফেসবুকে আর গুমেইলে হিন্দি গান/অনুষ্ঠানের জয়জয়কার ধরে রেখে বাংলাদেশে হিন্দি চ্যানেল বর্জনের আন্দোলন কখনোই ফলপ্রসূ হবে না। এই আমি কয়ে দিনু।
সবাই আনন্দে থাকুন,
হ্যাপি হলিডেইজ!
মন্তব্য
এবার শুনলাম এখানে বেশ ভালো ঠান্ডা পড়বে। এখনও তেমন ঠান্ডা পড়েনি, ভাগ্যটা ভালোই মনে হচ্ছে এখনো, দেখা যাক। ইউরোপের অবস্থা শুনে মনে হচ্ছে ঠান্ডাটা মনে হয় শিফট হয়ে ওদিকে চলে গেছে।
হিন্দী চ্যানেল, হিন্দী মুভি, হিন্দী গান বর্জনের ব্যাপারে আমার কিছু দ্বিমত আছে। শুধুমাত্র ভারত আমাদের প্রতিবেশী আর বাংলাদেশে হিন্দীর আগ্রাসনের কারণে হিন্দী কোন কিছুই দেখা যাবে না, শোনা যাবে না, আমি এই নীতিতে বিশ্বাসী না। আমি ভালো যেকোন কিছুই গ্রহন করতে রাজী আছি তবে সেটা কোন মতেই আমার নিজের সংস্কৃতিকে বিসর্জন দিয়ে নয় যেটা শাহরুখের অনুষ্ঠানে আমরা দেখেছি। সেটার জন্য আমাদের হিন্দীকে একদম বর্জন করতে হবে এটা মেনে নিতে পারছি না। আমি নিজে হিন্দী মুভি দেখি মাঝে মাঝে, হিন্দী গান শুনি, কিন্তু এতে যদি কেউ বলে যে আমি বাংলা সংস্কৃতিকে হেয় করছি কিংবা বাংলার চেয়ে হিন্দীকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছি সেটা হবে ভুল। আমি সবচেয়ে বেশি দেখি ইংরেজি মুভি, তাতে কী আমি ইংরেজিকে বাংলার চেয়ে বেশি পছন্দ করি বোঝায়? মোটেই না, আমি মনে করি।
এভাবে আসলে কোন কিছু বন্ধ করা সম্ভব না। আমাদের আসলে নিজেদের জিনিসকে ভালবাসতে হবে, মনে করতে হবে এগুলো আমার। কোন বিজাতীয় কিছুই এটাকে রিপ্লেস করতে পারবে না। কিন্তু সেটার জন্য বাকি সব কিছু বন্ধ করে দেবার কোন প্রয়োজন নেই। আর এ-শিক্ষা নিজের ঘর থেকেই দিতে হবে বাবা-মাদের তাদের সন্তানদের। তাহলেই বাংলা সংস্কৃতি আজীবন টিকে থাকবে।
_________________________________________________
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।
------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।
আর ভালো করে বললে, সেই উপলব্ধিটা ফিরিয়ে আনতে হবে আপনাকে-আমাকেই। সেইজন্যই এই উদ্যোগ। কোনো রেষারেষি থেকে না।
আপনার সুন্দর, গোছানো মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
দুঃখের ব্যাপার আসলে এটাই,হুজুগে আমরা শাহরুখকে কষে গালাগাল করতে কসুর করিনা, গাজী ইলিয়াসকে কাঁধে চড়িয়ে নায়ক বানাতেও দ্বিধা করিনা, কিন্তু গোটা জিনিসটা একটু তলিয়ে দেখতে আমাদের ভীষণ অনীহা। কদিন আগে খোমাখাতায় আমার এক বলিউডপেয়ারু বন্ধুর সাথে এ নিয়ে বেশ বচসাও হল, ফলাফলে আমার বন্ধুতালিকা থেকে তাকে কতল করতেও বাধ্য হয়েছি। যাই হোক, সামনে সবার অখন্ড অবসর, এসব কাসুন্দি ফেঁদে সবার মেজাজ আর খিটখিটে এখন নাই করি।
হ্যাপি হলিডেইজ ধুগোদা!!
--------------------------------------------
আজি দুঃখের রাতে সুখের স্রোতে ভাসাও ধরণী
তোমার অভয় বাজে হৃদয় মাঝে হৃদয় হরণী।
--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।
আপনি আজকে একজন বলিউড পেয়ারিকে বাদ দিচ্ছেন, কয়দিন পর অবস্থা এমন দাঁড়াবে যে বলিউড পেয়ারিরা আপনাকে বাদ দিবে দেদারসে! তখন রাস্তার কোনা-খামচি-গলি-ঘুপচিতে একেকজন 'সোহাল' আর 'গাজী' খুঁজে পাবেন।
বাকি যারা থাকবে, তারা সব শহীদ! মানে বলিউড নন-পেয়ারি।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
এটি একটি উপায় হতে পারে।
স্নোম্যান বানানি হইলে পোফাইল পিকে লটকাই দিয়েন, দেক্তে মঞ্চায়।।
_______________________________________________
সিগনেচার কই??? আমি ভাই শিক্ষিৎ নই। চলবে টিপসই???
হ। কয়েকটা ফটুক আছে। দেখি, খোমাখাতায় তুলে দিমু নি।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
একটি জিনিস খেয়ালে এলো হের ধুগো, প্রতি ক্রিস্টমাসেই আপনি একটা লেখা অবশ্যি দেন।
এই লাইনটা পড়ে খুব হাসলাম।
আর হিন্দী সিরিয়াল আর টিভি শো বর্জন করেছি বহু আগেই। সিনেমা দেখা আর গানও শোনা হয় কালে ভদ্রে। এখন থেকে শেয়ারিং ও বন্ধ করবো তবে।
_________________________________________
সেরিওজা
ক্রিসমাস সময়টা এলেই আমার মনটা উদাস হয়। কিবোর্ডের উপর থাবড়াথাবড়ি শুরু হয়ে যায়। বিনিময়ে জনগণের চোখ আর মগজের উপর প্রবল চাপ!
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
এই তো, মাঝে সাঝে লেখা দেন, নইলে ক্যাম্নেকি? আর বরফের কথা বাদ্দেন, আমার প্রফেসরও বলছিল, ম্যুনিখে থাকতাম, ছোটোবেলা-কিশোরবেলা-যুবকবেলা কখনও বরফ দেখি নি, আর এই কয় বছরে একেবারে ভাসিয়ে দিচ্ছে।
রাস্তার পাশে জমিয়ে রাখা বরফের স্তুপ এক মানুষ সমান! আমার ছয় বাৎসরিক মরারদেশেপোরারদেশে থাকাকালীন সময় তো বাদই দিলাম, বিগত কুড়ি বছরেও নাকি এইরূপ তুষারপাত হয় নাই জর্মন্দেশে।
তবে এই কথা প্রতি বছরেই শুনি। দুই হাজার পাঁচ সালেও শুনছিলাম, গত পঞ্চাশ বছরেও নাকি এমনে বরফ পড়ে নাই। এইবার তো তাও ত্রিশ বছর কমায়ে বলতেছে লোকে!
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
হিন্দী বা উর্দুতে আমার ব্যাপক এলার্জি। হিন্দী চ্যানেল বাসায় চলবে এটা আমি কল্পনাও করতে পারিনা। বর্জনের প্রশ্নও তাই আসে না।
লেখা ভালো হয়েছে। বরফের মধ্যে হাঁটার পদ্ধতি ঠিক আছে।
...............................
নিসর্গ
'এসো নিজে করি' পিপিদা। এবার হেঁটে সেই হন্টন প্রণালী ভিডিও করে দর্শক মণ্ডলীকে দেখান তো দেখি।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
"জম্বি অথবা পেঙ্গুইন" !!
ক্রিসমাসের শুভেচ্ছা রইল ধুগো'দা...
"চৈত্রী"
আরে চৈত্ মাস যে! কই থাকেন মিয়া?
দেরিতে হলেও, আপনাকেও শুভেচ্ছা। সাথে নিউ ইয়ারের।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
লেখা ভালো হয়েছে। গত সপ্তাহে আমাদের এখানে সামান্য তুষারপাত হল। পরদিন গলেও গেল, কিন্তু কয়েক ঘন্টার মধ্যেই গলা পানি জমে পুরো শক্ত বরফ, এখনো জমে আছে। দুঃখিত, আপনার জম্বি স্টাইল এই বরফে কাজ দিবে না। এই বরফে চলতে হলে বসে হাত দিয়ে ঠেলে ঠেলে এগোতে হবে। হ্যাপি হলিডেইজ!
-রু
হ। আপনার পদ্ধতিও ঠিক আছে। তবে একটা ইম্প্রোভাইজেশন আছে। ভালো দেখে একটা পলিথিন ব্যাগ নিন। তারপর তাতে আরাম করে বসুন। পলিথিনের সামনের দিক আর পেছনের দিক থেকে সুতলী বেঁধে কাড়া বানিয়ে গলায় আটকে দিন। তারপর নৌকার মতো লগি মারতে থাকুন ঘর ঝারার ঝাণ্ডার ডাণ্ডা দিয়ে। দেখবেন কেমন তরতর করে এগিয়ে যায় 'পলিনৌকাখানি মোর'!
মজা করলাম। আসলে তুষারপাতের সবচেয়ে বাজে ব্যাপারটাই হলো এইটা। পানি 'কাঁচ বরফ' হয়ে যাওয়া। লোকজনের কোমর ভাঙার জন্য মোক্ষম জায়গা।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ঠিক কথা বলেছেন । ভালো উদ্যোগ।
ইয়া হাবিবি
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
হাসতে হাসতে পেট ব্যাথা হয়ে গেল।
এবার তুষারপাত খুব বেশি হচ্ছে। কানাডাতেও তাই মনে হয়। সবকিছু কেমন সাদাকালো। সকালে ঘুম থেকে উঠেই মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। বিষণ্ণ চারদিক। রাস্তাঘাট সব ফাঁকা। ধুর!
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
আর কৈয়েন না!
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
লেখা ভাল লাগছে ধুগো। লও একখান স্লোম্যান নেও!!!
----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
সচল জাহিদ ব্লগস্পট
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
স্যার, স্নোম্যানতো জানতাম স্নো দিয়া বানায়! আপনার ওখানে কী এবার স্নো পরেনি?!
অবশ্য যদি নির্ঝর সোনা এটা বানায়ে থাকে তাহলে আলাদা কথা। কেন জানি মনে হচ্ছে এটা নির্ঝরেরই কীর্তি । ও দিন কে দিন বেশি কিউট হচ্ছে মাশাল্লাহ।
_________________________________________________
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।
------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।
মামুন -৩০ এর মধ্যে বাইরে বইসা স্নোম্যান বানানোর সাহস পাইনাই, কিন্তু সে বানাবেই, তাই দুধের সাধ ঘোলে। কীর্তির অনেক কিছুই তার করা, আমি হেল্পার (!!) আরকি।
----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
সচল জাহিদ ব্লগস্পট
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
জাহিদ ভাই, এইটাতো স্নোম্যান হয় নাই, প্লাস্টিক ম্যান হয়ে গেছে হে হে হে
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
মেরী ক্রিসমাস ধুগো'দা
আমি আমার বারান্দায় একখান স্নো-মেইডেন বানামু ভাবতেছি
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
মেরি ক্রিসমাস এন্ড হ্যাপি নিউ ইয়ার...
বানাইবেনই যখন তাইলে আর স্নো-মেইডেন ক্যান, একেবারে স্নো-কুর্নিকোভা বানায়া ফেলেন!
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
বাংলাদেশে হিন্দী চ্যানেল দেখার অনেক দর্শক আছে সে কথা সত্য। কিন্তু বাংলাদেশে পাকি চ্যানেল দেখার দর্শকও কি অনেক? নয়তো চার/পাঁচটা পাকি চ্যনেল চালানো হয় কেন? নাকি অপারেটররা ভাবেন - হিন্দী চ্যনেল দেখাইতেসি তাই পাকিস্তানী চ্যানেলও দেখামু!
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
অপারেটরদের চেয়ে এখানে দায়টা দর্শকের বেশি।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ডেকোটা রাজ্যের ঠাণ্ডা মুল্লুকে চাকরি করেছি পুরো দুই বছর। ফ্রিজের বাইরে বরফ দেখার ইচ্ছে আর নেই। যখন ওখানে ছিলাম - মনে হতো মনুষ্যসমাজে শীতনিদ্রা দেওয়ার সিস্টেম থাকা উচিত ছিল। এক ঘুমে শীত পার করা যেত।
শীতের সময় ঢাকায় ফোন করলে আব্বা তাপমাত্রা জানতে চাইতেন, আমি মার্কিন দেশের ফারেনহাইট স্কেলকে অঙ্ক কষে সেন্টিগ্রেড করে আব্বাকে জানাতাম। একদিন উইন্ডচিল সহ তাপমাত্রা -৪০ এ নেমে গেল, ওই দিন আর অংক করতে হয়নি, কেননা, ওই তাপমাত্রায় সেন্টিগ্রেড আর ফারেনহাইট একই! ওটাই আমার দেখা রেকর্ড...এর কিছুদিন পরে আমি ওখান থেকে পালাই।
স্থানীয় অনেক লোকজন পুরুষানুক্রমে ওখানে বাস করতেন, বাইরের লোক ওই রাজ্যে টিকতে পারে না। তাদের কাছে তাদের পূর্বপুরুষদের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার গল্প শুনেছিলাম। প্রথম সেটেলাররা ফ্রি জমি পেত সরকার থেকে, এমন হয়েছে যে প্রথম শীতেই পরিবারের দুই/তিন সন্তান ঠাণ্ডায় মারা গেছে। পুরো শীতকাল সেই ডেডবডি বাইরে ফেলে রাখতে হয়েছে, সদগতি করার মত আবহাওয়া ছিল না। একমাত্র হতদরিদ্র মানুষই নাকি ওখানে যেত। লিটল হাউস অন দ্য প্রেইরি খ্যাত লরা ইঙ্গলস ওয়াইল্ডারের পরিবার ওই মুল্লুকে ছিলেন...
তোমার লেখা পড়ে অনেক কিছু মনে পড়ল, তাও এই জীবনে আর শীতকালে ওইমুখো হচ্ছি না।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আপনি ডেকোটামুখো হবেন কি-না ভাবছেন, আর আমি ভাবছি জর্মন্দেশ ছেড়ে আরব নাইলে আফ্রিকামুখো হবো কি-না!
সহ্য হয় না আর। তবে আজকে বেশ উষ্ণ বাইরে। মোটে মাইনাস দুই।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আমি যেখানে থাকি সেটা না কি জার্মানীর গরমতম জায়গাগুলার একটা, কিন্তু এবারের তুয়ারপাত মনে হচ্ছে সেই বিষয়টাকে দূর্ণাম হিসেবে গ্রহন করেছে!
বাসার বাইরে হাটু-বরফ আজকে। অবশ্য বাইরে বের হবার তাড়া নেই। ঘরে রঙ করছি, দেশে যাবার আগে বাসা বুঝিয়ে দেবার দায় আছে, তাই।
ভাল লেগেছে লেখা ধুগো। ভাল থাকো।
দেশে যাবার আগে বাসা বুঝিয়ে দিচ্ছেন মানে? ফিরে নতুন বাসায় উঠবেন নাকি?
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
১.
হাত ধুতে গিয়ে মনে হল পানির টেম্পারেচার নির্ঘাত ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বরফের কাছাকাছিই। আজকে মনে হয় ৯ ডিগ্রি বাইরে। এখন পৌষের শুরু। গরমে এবার আবারো ৪৬ ডিগ্রি ছুঁয়েছিল কাঁটা। আর মাঘে ৪-এ নামবেই, এবার মনে হয় বরফও পড়তে পারে। গতপরশুর খবরে বলেছে অন্তত চারজন শিশু মারা গেছে রাজশাহীতে। গরমটা তাও মেনে নেয়া যায়, কিন্তু আমাদের এখানে তো এয়ারটাইট না ঘড়-বাড়ি, তাও ঘর-বাড়ি আছে তবুও আমরাই টিকতে পারছি না, আশ্রয়হীন গরীব পথশিশুদের দেশে কেন এত ঠাণ্ডা পড়ে বলতে পারেন?
২.
সেরেন্ডিপিটি ভালো জিনিস। প্ল্যান করে জীবনে না চলাই উত্তম। স্নো-ম্যানের একটা ছবি দিয়েন, স্নো-উম্যানের সাথে।
৩.
হিন্দি নিয়ে মাতামাতি, ভারতীয় না বরং বলিউডি সংস্কৃতি নিয়ে মাতামাতি বলি, আর হিন্দি চ্যানেল বর্জন নিয়ে আমার নিজের কিছু চিন্তাভাবনা ছিল যা খানিক আগে হিমু ভাইয়ের পোস্টে একটা অগোছালো বিশাল মন্তব্যে বলে এসেছি, তাই আর রিপিট না করি।
আমার একটা অনুরোধ ছিল, দেশে আপনার পরিবারের স্নেহের শিশুদেরকে এই সংসস্কৃতি বা চ্যানেলগুলো থেকে জোর-জবরদোস্তি দূরে রাখার ব্যবস্থা নেবেন তো? তার আগে একটা কাজ করা যায় নাকি একটু ভাবা যেত, দেশের টিভি চ্যনেলগুলোয় যে দেদারসে ক্যাটরিনা কাইফেরা ওয়েস্টার্ন পোশাক পরে শপিং মলে ঘুরে বেড়াবার বিদেশি অ্যাডগুলো দেখাচ্ছে ওগুলো একটু বর্জনের ব্যবস্থা আগে গ্রহণ করা যায় নাকি দেখা গেলে বেশ হত!
ভালো থাকুন। একটা চমৎকার ছুটি কাটুক পরিবার পরিজনদের সাথে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
ক্রিসমাস ইভ্
বৈরী আবহাওয়াতে দূর পাল্লার সব ট্রেইনের সময়সূচীর অবস্থা ব্যারাছ্যাড়া। একটা ট্রেইন দেখলাম একশ পঞ্চাশ মিনিট লেইট। সব লোকজন স্টেশনের খোলামেলা প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে ঝরঝর তুষার খাচ্ছে, সাথে বাতাস ফ্রি। ট্রেইন লেইট, অথচ কারো মধ্যে কোনো বিরক্তি নেই। সবাই খোশ মেজাজে। চারদিকে এতো মানুষের খোশ মেজাজ দেখে কয়েক ঘন্টা মোটে ঘুম হওয়া আমার মেজাজও চরম খোশ হয়ে গেলো। আমিও তাদের মতো দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বাতাসের সাথে বৃষ্টির মতো উড়ে আসা তুষার খেতে থাকলাম।
পুরো সাতল্লিশ মিনিট পর আমার নির্ধারিত ট্রেইন এলে পরে টুক করে উঠে গেলাম। উঠে আরেক পেরেশানি। একটা সিটও খালি নাই। মালপত্র রাখার তাকেও একই অবস্থা। করিডোরে না দাঁড়িয়ে একটা কম্পার্টমেন্টের পেট বরাবর এসে দাঁড়িয়ে পড়লাম কী মনে করে। ভীড় এড়াতেই মনেহয়। তারপর ট্রেইন ছাড়লে এদিক-সেদিক তাকিয়ে কিশোর কুমারের সেই গানটা ভজতে শুরু করলাম, "কেউ যায়রে বন্ধুর বাড়ি, ট্রেইনে চইড়া উজানে। কেউ লাগেজ টাইনা বউয়ের, শুইয়া পড়ে ঘুমের টানে..."
এই প্রথমবারের মতো সাথে বউ নাই বলে একটু আরামই লাগলো। যে কসরত করে ঘর থেকে স্টেশনে আসতে হইছে। সাথে বউ থাকলে কী হৈতো আল্লায়ই জানে। অবশ্য বউ থাকলে ক্ষতি ছিলো না। কিন্তু বউয়ের সাথে যে দুইটা ইয়া বিশাল লাগেজ টানতে হতো মুফতে, সেইটাই আসলে চিন্তার বিষয়! কয়েকজনের দিকে তাকিয়ে মায়াই লাগলো। সেটা কেটে গেলো পিচ্চিদের দেখে।
একটু পরেই সিট পেয়ে গিয়েছিলাম। সেখানে বসে বসেই নানা বয়সের, নানা আকারের, নানা রঙের জামা পরা পিচ্চিদেরকে দেখছিলাম। কেউ সবে হাঁটতে শিখেছে, কেউ মুখে এখনো চুশনী লাগিয়ে বাবার হাত ধরে চলছে, কেউ তার সমবয়সীদের সাথে দাদুর বাড়ি গিয়ে কী কী করবে, তার ফিরিস্তি মিলিয়ে নিচ্ছে।
আমার পাশের সিটে বসেছিলেন এক বয়ষ্ক মহিলা। এক পর্যায়ে অনভ্যস্ত হাতে মোবাইল বের করে নাম্বার টিপে কানে ধরে কথা বললেন। "আলেকজান্ডার, এটা কি তুমি?.... আমি তোমার দাদু বলছি... আমার ট্রেইন লেট করেছে, আসতে প্রায় এক ঘন্টা দেরী হবে... আমি 'অমুক স্টেশনে' নেমে তারপর ট্রাম ধরে চলে আসবো... ওহ্, তোমাদের অনেক দয়া... আমি আবার ফোন দিবো, এখন রাখি আমার বাবু আলেক্স..."
আমার সামনের তরুণী ফোন দিলো তার মা'কে। বললো তার বাবা যেনো আগের সময়ে স্টেশনে চলে না আসে, কারণ ট্রেইন লেইট করেছে। আর ফোনে চার্জ নেই খুব বেশি। তবে আধাঘন্টা আগে আবার ফোন করে জানাবে।
পাশে দাঁড়ানো আরেক যাত্রী মধুর ভাষায় কথা বলে উঠলো ফোনে। মেয়েটি ছিলো ফ্রেঞ্চ। ভাষাটা জানি না বলে উদ্ধার করতে পারলাম না কী কথা বললো সে!
একটু পরপর একেকজনকে দেখলাম উঠে গিয়ে ট্রেনের বিস্ট্রো থেকে গরম কফির গ্লাস কাগজের ট্রে'তে সাজিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সঙ্গীদের জন্য।
পুরো কম্পার্টমেন্ট জুড়েই উৎসব উৎসব আমেজ। কারো মধ্যে কোনো উৎকণ্ঠা নেই, কোনো উদ্বেগ নেই, কোনো তাড়াহুড়া নেই, কোনো বিষাদ নেই। সবাই কোনো না কোনো ভাবে উপভোগ করছে সময়টা। কেউ নেমে যাবার আগে পাশের জনকে 'মেরি ক্রিসমাস' জানিয়ে নেমে যাচ্ছে। কেউ উঠে আবার হাসি হাসি মুখে সম্পূর্ণ অপরিচিত সহযাত্রীর সাথে গল্পে মেতে উঠছে বাইরের তুষারপাত আর ছুটে চলা ট্রেইনের সাথে পাল্লা দিয়ে...।
মেরি ক্রিসমাস
ক্রিসমাস ইভের সন্ধ্যাটা গল্প করে কাটিয়ে, টিভি দেখে রাত ভোর করে ঘুমাতে গিয়েছি। দুপুরে ঘুম থেকে উঠে পরে ভাতিজিকে নিয়ে বিকেলের দিকে স্নোম্যান বানাতে গিয়েছি। একটুপরেই ঠাণ্ডায় জমে গিয়ে ভেতরে এসে হিটারের উপর পা তুলে দিয়ে সোফাতে চ্যাগায়ে শুয়ে টিভি'তে পাইকারী দরে সিনেমা দেখতে শুরু করেছি।
এখন আবার ভোর হয়ে গেলো। কালকে সকালে না উঠতে পারলে আমার কপালে খারাবিই আছে। তাই এখন ঘুমায়ে হবে জোর করে হলেও। যাচ্ছি তাই।
সবার জন্য 'হোয়াইট' ক্রিসমাসের অনেক অনেক গরম শুভেচ্ছা থাকলো।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ল্যাখা পড়ে ধুগোর জন্য দুঃশ্চিন্তায় পড়ে গেলাম।
কাকস্য পরিবেদনা
হ। আমিও।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভাই দারুন আপনার লেখার ক্ষমতা। খুব ভাল লেগেছে। তবে ভাই, প্রকৃতিকে আমিও বড়কুটুম বানিয়েছি কিন্তু সেটা আপনি যে কারনে বানিয়েছেন ঠিক তার বিপরীত কারনে। ভাই যেমন বলেছেন, গরমের দেশের মানুষ আমি জীবনে তুষারপাত দেখি নাই, এইবার ভাবলাম জীবনে প্রথমবারের মত সেই সাধখানা পুরন হবে। আমাদের এখানে আগমনের দিন থেকেই দিনগুনতে লাগলাম কবে শীত আসবে। দেখতে দেখতে শীত এল ঠিকই কিন্তু তুষারের আর দেখা নাই। গত সপ্তাহে হালফ ইঞ্চির মত তুষার পড়েছিল, ভাই তাতেই আমাদের কি ফুর্তি! হাজার হলেও জীবনের প্রথম অভিজ্ঞতা! আজ নাকি তুষারপাত হবে, রাত জেগে বসে আছি দেখার জন্য, কিন্তু শালার প্রকৃতি কি হয় কে জানে?
মাহফুজ খান
ধৈর্য্য ধরে থাকেন ভাই। হপ্পায় তো হুরু।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আমিও ব্যাকবেঞ্চার! আর ঘরে বসে বৃষ্টি ভাল পাই, রাস্তায় না!
এইখানে অবশ্য কোবি ব্যতিক্রম। খালি রাস্তায় না, রাস্তার মাঝখানে ঝুম বৃষ্টিতে বসে চা খেতেও কোবি সক্ষম।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ইহা একখানা স্নোম্যান তৈরীর প্রয়াস। আঁকিয়ে হিসেবে আমার বেশ সুনাম ছিলো এককালে, ব্যাঙ আঁকতে গেলে হতো কিঞ্চিৎ গরু। এবার দেখতে পাচ্ছি ভাস্কর হিসেবেও আমি বেশ সুনাম করতে পারবো!
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ধুগোদা, বরফ কয় ইঞ্চি পড়সে তার ছবি দেখতে চাই।
এক মানুষ সমান।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ইয়াল্লা!!
নতুন মন্তব্য করুন