এইবার গরমই পেলাম না। গরম মানে 'গরম' না, মানে হলো সামার আরকি! গেলোবার তো তাও গায়ের জামা খুলে, নিম্নাংশের বস্ত্র অবগুণ্ঠন করে বৈদ্যুতিক পাখার বাতাস চালনা করতে হয়েছে গাত্রে। আর এবার শালার একটা দিনও (আসলে রাত বলা উচিত) লেপ-কাঁথা ছাড়া কাটানো যায় নি। জার্মান ওয়েদার, ললনার চাইতেও বেশি আনপ্রেডিকটেবল। এই যেমন ধরি আজকার সকালটা। কি ঝকমকা রোদ দিয়া শুরু হইছে। বাইরে বের হয়ে দেখি লে হালুয়া, রৌদ্রখাদক চশমার অনুপস্থিতিতে চোখ কেমন দুষ্ট বালকদের মতো পিট পিট করে। অবস্থাটা চিন্তা করেন, মাইনষে দেখলে কইবো কি! কইবো, পোলা খারাপ! কেমনে জানি চায়।
আইচ্ছা, এই তো গেলো সকালের বর্ণনা। তো এখন কি অবস্থা?
কি আবার! একেবারে সাদাচামড়ার ললনাদের মতোন। হুট করেই চারদিক কালো করে থোম ধরে আছে। ভাবলাম রৌদ্রের দেখা মিললে চোখের খানিক ব্যায়াম টেয়াম হবে। না কীসের কি! ললনারা পাতলা-খাটো-ছোট জামা পরবে কি যা আছে ঐটাকেই টেনেটুনে একাকার করায় ব্যস্ত। আচ্ছা রোযা রমযানের দিন এগুলা কি বলি, কি দেখি?
তাইলে রোযার কথাই লিখে রাখি। সেদিন গেলাম ইফতার খাইতে। খিধায় পেট ফাইট্টা অর্ধেক হয়ে গেছে। আটটায় ইফতার, বাজে তখন সোয়া সাতটা। ৪৫ মিনিট কেমনে যায়?
হোস্ট, বেশ বয়স্ক ভদ্রলোক। ক্যালিগ্রাফী আর কবিতার দারুণ শখ। টিভিতে দক্ষিণ আফ্রকার সঙ্গে বাংলাদেশের খেলায় ভূয়সী প্রশংসা করছেন। আমার চোখ তখন সামনের টেবিলে সংরক্ষিত ভুজভাজা না কি ভাজার পাত্রের প্রতি। পেটের পিড়াপিড়িতে হাত বাড়াই আবার ফিরিয়ে আনি। হঠাতই মাথায় দারুণ বুদ্ধি খেললো। বললাম বাহ্ আপনার এই পিসটাতো চমতকার। নতুন কিছু করছেন নাকি? ভদ্রলোক বললেন, আরেকটায় হাত দিয়েছি। দেখবে তুমি? দাঁড়াও নিয়ে আসছি।
তিনি উঠে গেলেন। ড্রয়িং রুমের দরজা ছাড়ানোর আগেই আমার অজান্তেই হাত চলে গেলো সেই পাত্রে। কয়েকমুঠো ঠপাঠপ মুখে দিয়ে বসে পড়লাম ঠাঁয়। কথা আর বলতে পারি না। ভদ্রলোক ফিরে এলেন। এখন আমার অবস্থা কেরোসিন। মুখ খুললেই টপটপ করে পড়তে থাকবে জিনিষগুলো। মাথা ঝাঁকালাম, যেন ইফতারীর ঠিক আগ মুহূর্তে কথা বলা মানা আছে আমার। উনি উঠে গেলেন খানিক পর।
তারপর আরকি। টেবিলে ডাক পড়লো। কথা কম কাম বেশি- জীবনে এই মন্ত্র মেনে না চললেও সেদিন ঠিকই চলতে থাকলো একের পর এক। খানিক পর মিসেস শাহ্ বললেন, তোমাকে আরও কিছু দেবো? মুখ ব্যস্ত তাই হাতেই উত্তর দিতে হলো। টেবিল থেকে একটা ডিশও ভরা ফেরত যাবে না কিচেনে, এটাই ছিলো আমার মটো। অবশেষে জীবনে এই প্রথম একটা কাজ ফুলফিল করতে পেরে মনে আনন্দ নিয়ে বাংলাদেশের হার দেখলাম।
কতোদিন ললনাদের সঙ্গে টাংকিবাজী করা হয় না। টাংকিবাজী বুঝি ভুলেই যাচ্ছি। অবশ্য রমযানের পবিত্রতা বলেও একটা কথা আছে। দেখি, আর কয়েকটা দিনইতো। তারপর না হয় আবার লুঙি খুলে মালকোচা মেরে মাঠে নেমে পড়া যাবে। তখন না হয় আবার নিত্য নতুন রসদ নিয়ে, রসিয়ে রসিয়ে লেখা হবে নে 'ধুসর গোধূলির ললনা ঘটন'। এই কয়টা দিন ইট্টু সবুরে দেখি কি মেওয়াটা পাই।
মন্তব্য
প্রাসঙ্গিক ফতোয়া:
টান্কিবাজিতে রোজা ক্ষতিগ্রস্থ হয় না।
ধুসর গোধূলি
আপনার ই-মেইল এ্যাড টা দেন,
আর নাইলে আমাকে আপনার ১টা ফটো মেইল করে দেন।
আমার ই-মেইল --
____________________________
লাল গানে নীল সুর হাসি হাসি গন্ধ......
লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ
সুজন দা,
বাংলাদেশের ঢাকাই ছবিতে ইদানিংকালে শাকিব খান নামের এক নায়ক আছে। গুগলে সার্চ দিয়ে একটা ছবি খুঁজে নেন।
ওতেই কাজ হওয়ার কথা।
আমি ও আমার স্বপ্নেরা লুকোচুরি খেলি
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
শাকিব খানের 'জানের জান' সিনেমাটা দেখছিলাম, জোশ বই। মুনমুন ছিলো নাঈকা। সোশ্যাল একশন ছবি।
ভাল ভয় পেলাম। ধুসরকে দাও - য়াত দেওয়া যাবে না। সরু পেটে না কি গরু আটে, রাখেন ছবি দেখে কথাটা বলি, না হলে মিথ্যে অভিযোগে আবারও ফেঁসে যাব। বেশ মজা করেই পড়লাম। খাবারের ফিরিস্তি থাকলে আরও ভাল হতো। ধন্যবাদ।
অন্ধকারের উতস হতে উতসারিত আলো
কয়দিন রোজা রাখলাম।
কেউ দাওয়াত দেয় না।
আমি ও আমার স্বপ্নেরা লুকোচুরি খেলি
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
সৌরভ
আইসা পড়।
কি মাঝি? ডরাইলা?
ধৈর্য ধরে থাকো সুনা।
হাঁটুপানির জলদস্যু
হ
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
নতুন মন্তব্য করুন