মেডিকেলে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই দেখি সিনিয়ররা খালি ভয় দেখায় যে মেডিকেল ভাইভা মানে নাকি পুলসিরাত পাড়,পার্থক্য একটাই এক্ষেত্রে পুলসিরাতের ওই পাড়ে কোন জান্নাত নাই, খালি পুলসিরাত আর পুলসিরাত । আমি ভেবেছি হুদাই, ভাইভা আর এমন কি, পড়ব, প্রশ্ন করবে, উত্তর দিব, ঝামেলা শেষ, লিখতে হবে না ,কষ্ট কম। তাই ভয় টয় পাই নি ( বলদের নাকি কলিজা বড় থাকে ,আমার কলিজা হাতির সমান! )। ক্লাস শুরুর পর প্রথম ভাইভা দিলাম অ্যানাটমির এক আইটেম। আমার নন মেডিকেল বন্ধুরা অবশ্য আইটেমের নাম শুনলেই নড়ে চড়ে বসত। একবার এক দোস্তকে বললাম আমার আইটেম আছে, সে ভ্রু কুচকে আমাকে বলে " তুই আবার আইটেম দিবি কেম্নে, আইটেম তো দিব ঐশ্বরিয়া, ক্যাটরিনারা"। সে সব দুঃখের কথা থাক। অ্যানাটমির সে ভাইভাটা নিয়েছিল অসম্ভব সুন্দরী কুহেরিন ম্যাডাম। তার জন্য আমাদের ক্লাসের অর্ধেকের বেশী ছেলে পাগল ছিল, কেউ কেউ গান কবিতা লিখে খাতাও ভরিয়ে ফেলেছিল, এবং তার কিছু কিছু ম্যাডামের কানেও গিয়েছিল। শেষ মেশ ম্যাডাম একজনকে ডেকে বলতে বাধ্য হয়েছিল “ তুমি জান, ঠিক সময়ে বিয়ে হলে আমার তোমার সমান একটা ছেলে থাকত”। এই ডায়ালগ তখনকার দিনে চরম উদাসের লেখার মতই কয়েক সহস্র লাইক পেয়েছিল, এখনও সময় সুযোগ মত আমরা এর সদ্ব্যবহার করি। ম্যাডাম সেই প্রথম ভাইভাটা এত চমৎকার করে নিয়েছিল যে আমাদের মনেই হয়নি পরীক্ষা দিচ্ছি, সেদিনকার সেই কয়েক ঘণ্টার আইটেম টেবিলেই দুইটা তথ্য ভুল প্রমাণিত হয়েছিল,এক-মেডিকেল ভাইভা মানেই আতঙ্ক, দুই- সুন্দরী মেয়ে মাত্রই হৃদয়হীন।
আমাদের সব ভয় ডর কেটে যখন আমরা চিকিৎসা বিজ্ঞান অধ্যয়ন খুব খারাপ কিছু না এমন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছি সেরকম সময়ে আমাদেরকে ( বিশেষ করে ছেলেদেরকে ) চোখের পানিতে ভাসিয়ে ম্যাডাম বদলি হয়ে যান। এরপর আসেন টি টি মাহবুব,তার নামের আগে টি টি কেন দোহাই লাগে আমাকে কেউ জিজ্ঞেস করবেন না, বললে সচল মডুরা অসংলগ্ন ভাষা ব্যবহারের দায়ে আমার হাচলত্ত কেড়ে নিবে। মাহবুব স্যার চমৎকার পড়াত, চমৎকার পরীক্ষা নিত, সমস্যা একটাই স্যারের কথাতে দুর্গন্ধ। তার এক একটা কথাতে আমাদের কান গরম হয়ে সেরেব্রাম , তার নিচে সেরিবেলাম পাড় হয়ে মেডুলা অবলঙ্গাটা পর্যন্ত উত্তাপ চলে যেত। প্রশ্ন পারলে অথবা না পারলে , যাই হোক, কান গরম করা কথা শুনতেই হত।পরবর্তীতে এরকম আরও বেশ কিছু স্যারদের পেয়েছি যাদের কথা শুনলে মনে হত মুখে একটা ছাঁকনি লাগিয়ে দেয়া দরকার, যাতে কথাবার্তা গুলো শ্রবণযোগ্য হয়। এমনকি কিছু কিছু স্যারের প্রফের ভাইভার টেবিলেও নোংরা কথা বলার রোগ আছে।
আমরা এমন দিন খুব কমই কাটিয়েছি যেদিন কোন ভাইভা দিতে হত না। একটা সময়ের পরে পরীক্ষা না থাকলেই ফাঁকা ফাঁকা লাগত দুনিয়া । আমাদের ক্লাসের কিছু অতি ভাল ছাত্র ছাত্রী ( এক্ষেত্রে ছাত্রীর সংখ্যাটাই বেশী) ছিল যারা সেই ফাঁকা ফাঁকা লাগাটা ঠিক মেনে নিতে পারত না এবং চেয়ে চেয়ে স্যারদের কাছ থেকে পরীক্ষার ডেট নিয়ে আসত। শুরু হল চিকিৎসাবিদ্যা অধ্যয়ন, ইনফিনিটিভ পুলসিরাত পাড়ি দেয়া । এরমধ্যে মহসিন স্যারের( আমাদের সবচেয়ে প্রিয় স্যার) আর এক অদ্ভুত যন্ত্রণা ছিল সকাল ৮ টায় ডেমো ক্লাসে ঝড়ের বেগে পড়িয়ে বলত ১২ টার ডিসেক্সন ক্লাসে পরীক্ষা দিতে হবে। ৯ টা থেকে ১২ টার মধ্যে যে ফিজিওলজির, বায়োকেমিস্ট্রির ক্লাস , আইটেম আছে সেগুলোর কথা মনে রাখার দায়িত্ব স্যারের না, আমরাও মনে করানোর সাহস পেতাম না। সুতরাং এর মাঝেই পড়তাম, আইটেম দিতাম। কিভাবে কে জানে !
একবার সব ডিপার্টমেন্টেই কার্ড ফাইনাল চলছে, এবং যেদিন ফিজিওলজির লিখিত পরীক্ষা সেদিন বায়োকেমিস্ট্রির ভাইভার ডেট পড়ল আমাদের প্রথম ৫০ জনের। ফিজিও ডিপার্টমেন্টে গেলাম, তারা উদাস হয়ে বলল আমরা কি জানি ? বায়ো ডিপার্টমেন্টে গেলাম , কল্পনা ম্যাডাম তার অতি মিষ্টি হাসিটা দিয়ে বলল "ঠিকাছে, তোমাদের জন্য কন্সিডার করলাম, ভাইভা ১২ টা থেকে শুরু হবে, ওখানে পরীক্ষা দিয়ে এখানে চলে এস" । ( আহ, কি শান্তি, একই টাইমে শুরু হলে তো ডাম্বেল্ডরকে খুঁজতে হত হারমিওনিকে দেয়া সেই জাদুর ঘড়িটার জন্য ) পরীক্ষা কখন দিতে আসব সেটাতো বুঝলাম কিন্তু পড়ব কখন সেটা আর বুঝিনি । বোঝার জন্য মাথা ঘামানর সময়ও ছিল না। পরবর্তীতে এরকম ঘটনা অনেক বার হয়েছে, একই দিনে এক ডিপার্টমেন্টের ওয়ার্ড ফাইনাল তো আর একটার কার্ড ফাইনাল, একটার লিখিত তো আর একটার মৌখিক। একসময় অভ্যস্ত হয়ে গেছি। সাধে কি আর মনীষীরা বলে গেছেন, মানুষের(শরীরের) নাম মহাশয়, যাহা সহাবে তাহাই সয়।
মেডিকেলে পাগল না হলে নাকি বড় স্যার হওয়া যায় না, এটা আমাদের একটা বহুল প্রচলিত গোপন প্রবাদ। স্যারদের পাগলামির একটা উদাহরণ দেই। আমরা নতুন ৩য় বর্ষ, ওয়ার্ডে ইতস্তত ঘুরাঘুরি করছি, ডিপার্টমেন্টাল হেড ডেকে নিয়ে একটা এক্সরে ধরিয়ে আমাকে বলে “বল এটা কি?” আমি ওই জিনিস জীবনেও দেখিনি, আমার শূন্য দৃষ্টি দেখেই স্যারের মাথায় জ্বর চলে আসল, এক পর্যায়ে যখন দেখা গেল কেউই পারে না,ততক্ষণে তাপমাত্রার কারণে স্যারের ব্রেইন বাষ্প হওয়া শুরু হয়েছে , সে সিএ কে ডাকিয়ে এনে বলল “ তুই রামছাগল তাই তোর ছাত্ররাও সব রামছাগল,কি করিস তুই ওদের নিয়ে, মাঠে গিয়ে ঘাস খাস সব একসাথে ? ” সিএ ভাইয়া গালিগালাজ হজম করে বলল স্যার ওরা ৩য় বর্ষ। স্যার এতক্ষণ একবারও প্রশ্ন করেননি আমরা কোন ইয়ার এবং স্যারের হাতে যে এক্সরে টা ছিল ওটা এমডি পার্ট ২ এর ভাইভার জন্য আলাদা করে রাখা ছিল !
মেডিকেলের স্যারদের ভাইভা নেয়ার ভঙ্গীর সবচেয়ে অদ্ভুত ব্যাপারটা হল তারা প্রথমেই ছাত্রকে ভয় পাইয়ে দেয়, একটা প্রশ্ন একটু ভুল বললেই এমন হুঙ্কার ছাড়বে এরপর আর মাথায় কিছু থাকে না। কেউ কেউ তো জঘন্য গালিগালাজও করেন, আরে বাবা , পারলে পাস করাও, না পারলে ফেল, গালি দিতে হবে কেন? স্যারদের মুড বুঝাও ভার! কিছু স্যার আছেন না পেরে যদি কেউ চিন্তা করে উত্তর দিতে যায় খেপে যাবে, না পারলে বলতে হবে পারি না। আবার কেউ আছেন পারি না বলেছ তো তুমি শেষ । একেকজন এক এক ধরনের উত্তর পছন্দ করেন। ধরা যাক উচ্চ রক্তচাপের কারণ কি কি ? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে কারণ গুলো বলতে হবে সিরিয়াল অনুযায়ী ,সেই সিরিয়ালও এক এক স্যার এর জন্য এক এক রকম। আমাদের শুধু প্রশ্নের উত্তর না, কোন উত্তর কোন স্যারের জন্য সেটাও মুখস্থ করতে হত মাঝে মাঝে । সবচেয়ে খারাপ ব্যাপার হল ৩০ মিনিট ধরে ভাইভা দেয়ার পর, সব প্রশ্নের উত্তর দেয়ার পর, হটাৎ একটা প্রশ্ন না পারলে তারা যারপর নাই বিস্মিত হয়ে বলবেন , "নাহ, পোলাপান তো কিছুই পারে না, এরা করে কি", তারপর হতাশ ভঙ্গীতে বড় বড় দীর্ঘশ্বাস ছাড়বে। মনে মনে ভাবি, কিছুই যদি না পারি এতক্ষণ তাইলে আমি এখানে কি করলাম, গান গেলাম ? মনের কথা মনেই থাকে, আমরাও বড় করেই দীর্ঘশ্বাস ছাড়ি।
আমাদের ২য় প্রফের ফরেনসিকের এক স্যার ছিল যিনি সেক্সুয়াল অফেন্স ছাড়া আর কোন চ্যাপ্টার পড়াতে পারতেন না মনে হয় । ক্লাসে যেটাই পড়াতে আসতেন একটু পরই ওইদিকে চলে যেতেন। পরীক্ষাতেও তাই। যেই যেত ওখান থেকেই ধরতেন , আর মেয়ে হলে তো কথাই নেই।
ফাইনাল প্রফের সময় মেডিসিন ভাইভাতে আমাদের ইন্টারনাল চন্দন স্যারের সহজ একটা প্রশ্নের উত্তর দিতে কেন আমার একটু দেরি হল সেজন্য সে চেয়ার ছেড়ে উঠে আমার দিকে তেড়ে এসেছিলেন , আর একটু হলেই আমাকে কাচাই খেয়ে ফেলতেন লবণ টবন ছাড়াই। এক্সটারনাল এম এ গনি স্যার চন্দন স্যার কে চা খেতে বাইরে পাঠিয়ে আমার পরীক্ষা নিয়েছিলেন । গনি স্যার না থাকলে আমি ওইদিনই লাশ হয়ে যেতাম, জাহান্নামের ব্লগে বসে স্মৃতিচারণমূলক লেখা লিখতাম।
সার্জারির পরীক্ষা দিতে গিয়েও এক স্যারের রোষানলে পড়েছিলাম, একটা প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলাম অ্যান্টিবায়োটিক দিবো, স্যারের রাগ আর দেখে কে, ফাজলামি, মেডিসিনের চিকিৎসা শুনাস আমাকে, ওরা কিছু পারে নাকি? ইত্যাদি ইত্যাদি। ধমক খেয়ে যা পারতাম তাও সব ভুলে গিয়েছিলাম।
ক্লাস উপস্থিতির হার নিয়ে ক্যাচাল ছিল আর একটা বিরাট যন্ত্রণা। ৭৫% এর নিচে থাকলে পরীক্ষায় বসা যেত না । আর আমিতো আমিই,সচলে ঢুকেই যেমন ফাঁকিবাজের তালিকায় নাম উঠে গিয়েছিল , ওখানেও তাই। একবার ফিজিওলজির ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষার ভাইভা দিচ্ছি, ম্যাডাম খুব ভেরি গুড ভেরি গুড করে ভাইভা নিয়েছেন । এরপর উপস্থিতির খাতাটা খুলেই ম্যাডামের চোখে রক্ত উঠে গেল। আমি বসে বসে ভাবছি কি কি রোগে হটাৎ মানুষের চোখে রক্ত উঠে যেতে পারে,এর মধ্যে ম্যাডাম একটা বিকট চিৎকার দিয়ে আমাকে বলল “ আমিতো তোমাকে ভাল মেয়ে ভেবেছিলাম, সবগুলো মেয়ের উপস্থিতির হার ৯০% এর উপর , আর তোমার ৭৮% , তুমি তো মেয়ে জাতির কলঙ্ক”। ব্যাপার না এই কথাটা আমি আমার লাইফে সবচেয়ে বেশীবার শুনেছি ।
মেডিকেলে স্যারদের সবচেয়ে প্রচলিত হুমকি হল ফেল করানোর হুমকি। বিরোধীদল যেমন কিছু হলেই হরতাল আর সংসদ বর্জনের হুমকি দেয় স্যাররাও সেরকম কিছু হলেই ফেল করানোর হুমকি দিত। পড়া না পারলে, ফেল করিয়ে দিবো। লেকচার ক্লাসে মনোযোগ না দিলে, মুখে মুখে কথা বললে, ক্লাস মিস করলে, আড্ডা দিতে দেখলে, ফেল করিয়ে দিবো । চটি বই পড়লে ফেল করিয়ে দিবো ( খবরদার কেউ মনে পাপ চিন্তা আনবেন না, এই চটি সেই চটি না, মেডিকেলে গাইড বইগুলোকে স্যাররা চটি বই বলে, এবং একটা ৭ বছরের বাচ্চার হাতে চটি বই দেখলে তার মা যেমন আঁতকে উঠবে,আমাদের হাতে গাইড দেখলে স্যাররা সেরকম আঁতকে উঠত ) , এমন কি প্রেম করলেও ফেল করার হুমকি শুনতে হত। আমাদের এক কপোত কপোতী এগ্রি ইউনিভার্সিটিতে হাওয়া খেতে গিয়ে এক স্যারের হাতে ধরা খায়, এবং তাদের জীবন কয়েকদিন পর্যন্ত যে হারে ভাঁজা ভাঁজা করা হয় তাতে কিছুদিনের জন্য আমাদের মন থেকে প্রেম ভাবই উবে গিয়েছিল। ফেল করার এই হুমকি শুনতে শুনতে একসময় আমরা নিজেরাই বলা শুরু করি, কি আর করবে, ফেল করাবে, মেরে তো আর ফেলবে না।
স্যারদের কীর্তিকলাপের কথা বলে শেষ করা যাবে না। প্রত্যেককে নিয়ে একটা করে ব্লগ লিখতে হবে। তবে এর মধ্যে এমন কিছু অসাধারণ স্যার ম্যাডাম ছিলেন , আমাকে আমি বানাতে যাদের ভূমিকা অনেক। বিনয়, মনুষ্যত্ব, সততা, খুব সাধারণ একটা মানুষ হতে চাওয়ার প্রেরণা, বাস্তবতা মেনে নেয়ার ধৈর্য , এরকম আরও হাজারও জিনিস আমি তাদের কাছ থেকে শেখার সুযোগ পেয়েছিলাম, শিখতে কতোটুকু পেরেছি জানিনা । প্রথম প্রফে অ্যানাটমি হার্ড পার্টের ভাইভাতে ঢুকার পরই মনসুর স্যারের প্রথম প্রশ্ন ছিল “তুমি কি প্রেম কর? ” আমি তো থ । এই প্রশ্ন কোন বইয়ে আছে ? চোখ মুখ শক্ত করে উত্তর দিলাম “না”। এরপর ৩০ মিনিট বসে স্যার আমার যে পরীক্ষাটা নিয়েছে, এত অসাধারণ পরীক্ষা একজন মানুষ কিভাবে নেয় আমি এখনও সেটা ভাবি। আমি যা পারি না সেসব উত্তরও কিভাবে কিভাবে যেন স্যার আমার ভিতর থেকে বের করে এনেছিল। আর একবার ঠিক এরকম পরীক্ষা দিয়েছি মেডিসিন, গনি স্যারের কাছে । চন্দন স্যারকে চা খেতে পাঠিয়ে উনি প্রথমে আমার সদ্য পাওয়া ভয় ভাঙ্গান, এরপর একটা অসাধারণ পরীক্ষা নেন। যে সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলাম আমার মত ছাত্রীর সেসব প্রশ্ন পারার কথা না।
লেখাটা শেষ করি ইন্টার্ন সময়ের একটা ঘটনা দিয়ে। আমার এক বন্ধু সার্জারি ওয়ার্ডে এক স্যারের কিছু একটা প্রশ্নের উত্তর না দিতে পারায় স্যার ভয়ানক খেপে যান , রাগে কাঁপতে কাঁপতে বলেন “ তুই কিভাবে পাস করলি,কে তোকে পাস করাল, তোর মত মহা গর্দভ কে যে পাস করিয়েছে সে তো তোর চেয়েও বড় গর্দভ”। আমার বন্ধুটি মিন মিন করে উত্তর দিয়েছিল "স্যার আমার ভাইবা বোর্ডে আপনিই ইন্টারনাল ছিলেন".
( এই লেখাটা সদ্য পাশ করা ডাক্তারগুলোর জন্য।সচলেরও একজন আছেন । তারা পুলসিরাত পাড়ি দিয়েছে। সবাইকে এবার নরকে স্বাগতম )
মন্তব্য
ভাল লাগলো ।
মেডিকেল থেকে এগ্রি ইউনিতে প্রেম করতে যাওয়া!! মোমেসিং মুনে অয়?
-----------------------------
পথেই আমার পথ হারিয়ে
চালচুলোহীন ছন্নছাড়া ঘুরছি ভীষণ---
হ, মোমেনসিং ।
আহারে-- দুই ক্লাসের একটা বাচ্চা বালক মিশন স্কুল থেকে ফেরার পথে ভুল করে মেডিকেলের ভেতর হাঁটতে হাঁটতে পথ হারাইছিল।
মেডিকেলের ভেতর কোন কপালকুন্ডলা নাইক্কা------ আমারে কেউ পথ হারানোর কথা জিগায় নাই--
এরকম মার-মার-কাট-কাট কালচার কি শুধু বাংলাদেশের মেডিকেলে নাকি সারা বিশ্বেই? স্ক্রাবস দেখছেন? ওখানে তো এরকম অবস্থাই দেখায়। লেখা চমৎকার।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
কি জানি, সারা দুনিয়াতেই মনে হয়। স্ক্রাবস, গ্রেইস অ্যানাটমি সব জায়গাতেই তো তাই দেখায়।
ভালো লিখেছেন!
কত স্মৃতি!
যকৃতের আকার বৃদ্ধি পরীক্ষা করতে গিয়ে 'পেটে মোচড় দিচ্ছ কেন?' থেকে 'কিভাবে পিত্তথলি অপসারণ করলে fatty - fair - fertile - female - of - forty 'র শাড়ি পড়তে / নাভি দেখাতে সমস্যা হবে না?' - প্রশ্নের কি শেষ আছে!!!
Those were the days !!!
ধন্যবাদ। ঠিক কথা বলেছেন প্রশ্নের কি শেষ আছে কোন ? আসলেই দিন কাটিয়েছি কিছু , যদিও নষ্টালজিক আমার এখন ওইগুলোকেও চমৎকার দিন মনে হয়। কেন কে জানে
লেখাপড়া করে যে
গাড়ি ঘোড়া চড়ে সে
লেখাপড়া করে যে
অনাহারে মরে সে
পড়ার কোন শেষ নাই,
পড়ার চেষ্টা বৃথা তাই
চমৎকার
টাইম টার্নার ডাম্বলডোর নয়, ম্যাকগনাগ্যাল দিয়েছিল হারমায়োনিকে
হতে পারে। লেখার সময়ই একবার মনে হচ্ছিল হয়ত ম্যকগনাগ্যাল দিয়েছিল, বইটা পড়েছি অনেকদিন আগে, খুঁটি নাটি মনে নেই। তবে এটা নিয়ে আসলে তখন মাথা ঘামাই নি। শুধরে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।
আপনার লেখার শেষের প্যারাটা পড়ে ফেসবুকে চিকা মারা আমার ছোট বোনের স্ট্যাটাসের কথা মনে পড়লো। কী কী সব নরক, গুলজার, পুসিরাত, আন্ধা ফিরিস্তার মুগুরের পিডা ইত্যাদি জাতীয় শব্দসম্ভার ব্যবহার করে অবেশেষে লিখলো যে কবিরাজ হয়ে গেছে! আমি তারে অভিনন্দন দিয়ে আসলাম। কিন্তু এখন আপনার লেখা পড়ে মনে হচ্ছে, তারে মোটেও শুকনা অভিনন্দন দেয়াটা ঠিক হয় নাই। তারে রীতিমতো একটা নুবেল (অনাদায়ে, কৎবেল) দিয়ে আসা উচিৎ আমার।
আপনে মোমেনশাহীর কোন ব্যাচ, কন্দেহি। আমার একটা স্কুলের বান্ধব আরেকটা কলেজের বান্ধব ঐ জায়গার আউটপুট। জুনিয়রও আছে, তবে সেইটা বান্ধব না। এক বান্ধবের কাজিন, মহিলা। নাম জিগায়েন না, মনে নাই। কিন্তু তার বান্ধবীর নাম মনে আছে!
কোনো একটা প্রোগ্রামে গেছিলাম ২০০২-২০০৩ এর দিকে। অডিটরিয়ামের বাইরে আমার বন্ধুবান্ধববৃন্দ, বান্ধবের কাজিন এবং তার সখীকূলসহ ব্যাপক আড্ডাবাজী করছিলাম, এইটা মনে আছে। বাদ বাকী সব ভুলে গেছি।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
তাড়াতাড়ি নুবেল দেন ছোট বোনটারে
আপনি ২০০২-২০০৩ এ গেছিলেন কন কি? আমিতো ওই বছরই ঢুকেছি ,অবশ্য তখন নাদান ছিলাম । তয় আপনারে দেখছি, একগাদা মেয়ে নিয়া দাড়ায় ছিলেন । দাড়ায় ছিলেন এইটা মনে আছে আর বাকি কি কি করছেন সব ভুলে গেছি।
বান্ধবের কাজিন মানে এইক্ষেত্রে হোস্টের নাম মুনে নাই, মাগার হের বান্ধবীর নাম মুনে আছে!!
ধূসর দা (ধুসর দি এইদিকে তাকাইয়েন না), এইটা কি নাসিকার কিঞ্চিৎ উপ্রে চক্ষুবাহিনীর স্খলনজনীত কর্মকান্ডর আউটপুট!!
( আমি কিন্তু তাকাই নি, চোখ বন্ধ করে দেখছি )
আমার এই আকিকা দেয়া নাম নিয়ে যে কি ঝামেলাতেই না পড়লাম! হাইকোর্টে রিট করে দিবো কিনা ভাবছি।
আর মিয়া, নাম মুনে রাখার সিস্টেম তো মস্তিষ্কের, চোখের না। মস্তিষ্ক নামক জিনিসটার আমার বরাবরই অভাব। কিন্তু চোক্ষে কম দেখলেও যা দেখার দরকার সেইটা কইলাম ঠিকই দেখি!
আমার ধারণা, এই গল্পের লেখিকারেও দেখছি। যেহেতু টাইমলাইন সেইরকমই ইঙ্গিত দিতাছে। আমি গেছিলাম ঐ সময়ের নবীন বরণ অনুষ্ঠানেই। একটা ছোট্ট অডিটরিয়াম মতো ঘরে সেইটা হয়েছিলো। সন্ধানী (সম্ভবত) সেইটার আয়োজন করছিলো। জানিনা লেখিকা জনাবা ধুসর সেইটা মনে করতে পারতেছেন কিনা! অডিটরিয়ামটা ছিলো নিচতলায়, ঢুকলে হাতের ডানদিকে পড়ে স্টেজ/ডায়াস। আর বাম দিকে বগের ঠ্যাঙের মতো লম্বা লম্বা পায়ার বেঞ্চি ছিলো সেখানে।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
হাইকোর্টে রিট উকিল জজদের আমি অনেক ডরাই। এমনকি সচলের মডুদেরও।
আমারে দেখা বিচিত্র না। ছিলাম ওখানেই। তবে আপনার তো দেখি মেমোরির অবস্থা মারাত্মক। ডান বাম কোথায় কি ছিল হুবুহু মনে আছে। মাথাটা আমারে ধার দেন কয়েকদিনের জন্য । আমার এফসিপিএস টার জন্য কাজে লাগত। আবার বইলেন না , নাম ধার দিছি আবার মাথাও।
অফ টপিক-নাম বদলানের উপায় খুজছিলাম প্রথম হাচল হওয়ার পর। আগে তো বুঝিনি আমি হাচল হব কোনদিন, যা মনে আসছে একটা নাম দিয়া দিছি।
হ, একখান রিট করেন দেহি। -- কোন ব্যারিস্টার কি সচল আছে (নাকি সব অচল)?
পরাণদা, আপনিও আমার বিপক্ষে গেলেন বনবাসি হব নাকি ভাবতেছি।
ইয়া মাবুদ! মেডিকাল লাইফ তো দেখি পুরাই তামা তামা অবস্থা:।
আল্লাহ বাঁচাইসে যে ডাকতার সাব হওয়া লাগেনি(মানে আঙুর ফল টক আরকি, চান্স পাইনি)
বাইচা গেছেন। মুরগি ছদকা দেন একটা।
ধূসর, লেখাটি পড়ে আপনার কাছে প্রত্যাশা আরো বেড়ে গেলো।
হায় হায়। এসব কি কথা । আমার কাছে প্রত্যাশা বাড়াইলে সমস্যা, আমার মাথার ঠিক নাই।
যে সব ডাক্তাররা পেশেন্টদের প্রশ্ন শুনলেই খ্যাক করে ওঠে, তাঁদের খ্যাক করার সঙ্গত কারন আছে বলছেন?
পুলসিরাত পার হওয়ায় অভিনন্দন।
আমি পাড় হয়েছি আরও আগেই। তবে কিনা এই পুলসিরাতে কোন শেষ নেই।
নাহ। নাই। দুনিয়া উল্টে গেলেও রোগীর সাথে খ্যাক করে উঠার কোন অধিকার নেই ডাক্তারদের।
হম, ভর্তি পরীক্ষা (তে কিছু ২ নাম্বারী) বাদে মেডিক্যাল কলেজ ভালোই মনে হচ্ছে
হ, আপনার মাথা। ভালর কি দেখলেন আপনি এখানে। নাহ ।।দুঃখের কথা বলেও কাউরে বুঝাতে পারলাম না। (কপাল চাপড়ানোর ইমো হবে। )
আপনার কাছ থেকে এইরকম একটা পোস্টের জন্য শুরু থেকেই অপেক্ষায় ছিলাম। ভালো হয়েছে। আমার ফ্রেন্ডদের বেশিরভাগই ডাক্তার। হলে সিট না পেয়ে ডিএমসির হলে বন্ধুদের সাথে কিছুদিন ছিলাম। কাজেই ডাক্তারী পড়ুয়াদের জীবন খুব চেনা। তখন যে কত কত রাত কেটেছে এইসব চুরমুরে গল্প করে করে। আরও আরও লিখুন।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
ধন্যবাদ আশাদি।
আমাদের রাজনীতির একজন বিশিষ্ঠজন কিন্তু ঠিকই সুন্দরী টিচারের হৃদয় হরণ করে ছেড়েছিলো- ডাক্তার এইচএমবি ইকবাল। তার স্ত্রী মেডিক্যালে তার টিচার ছিলো।
আমার আড্ডাবাজীর একটা বিরাট সময় কাটে ডাক্তারদের সাথে এবং পরিবারেও অনেক ডাক্তার আছে। তাই এইসব ইন্টরেস্টিং গল্পগুলো মোটামুটি পরিচিত। আমি বর্তমানে ঢাকায় যে আপার বাসায় থাকি তার ছেলে মেডিক্যাল পড়ছে, থার্ড ইয়ার পাশ করলো। কিছুদিন আগে পরীক্ষার সময় সে একদিন দেখি দুলাভাইয়ের কাছে টাকা চাচ্ছে। সে দুলাভাইকে বলছে যে যার বুকে স্টেথো ধরবে, তাকে বখশীশ দিতে হবে; যার বিপি মাপবে, তাকে; যার রক্ত নেবে, তাকে; যাকে রক্ত দেবে, তাকে; এভাবে সবাইকে। বখশীশ না দিলে তারা পরীক্ষকের কাছে উল্টাপাল্ট বলে দিতে পারে।
গত পরশু রাতে এক ডাক্তার বন্ধুর ডাক্তার ছোটভাই এফসিপিএস পাশ উপলক্ষে খাওয়া দিলো। সেখানে ভাগ্নের এই কাহিনী ঝেড়ে দিলাম। তো সেখানে উপস্থিত ডাক্তারমহল জানতে চাইলো বর্তমানে এইসব বখশীশের রেট কতো চলছে? ওরা বললো এই সিস্টেম আবহমান কাল ধরে চলে আসছে।
লেখায়
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
ডাক্তার এইচএমবি ইকবালের ঘটনা তো জানতাম না।
খালি বখশিস, আমার পরীক্ষার সময় আমি আমাকে যে লাঞ্চ আর জুস দেয়া হত সেটাও দিয়ে দিতাম রোগীকে খুশি রাখতে । তবে রোগীরা সবাই এমন না। কিছু রোগী পরীক্ষার সময় অনেক হেল্পফুল আচরন করত। কেউ কেউ তো একটু বেশীই করে। আমার সার্জারি পরীক্ষার সময় যে কেস টা পড়েছে , তাকে গিয়ে আমি প্রশ্ন করলাম ,আপনার কি সমস্যা, কথায় সমস্যা? সে আমাকে বলে আমার বিনাইন এনলারজমেন্ট অফ প্রস্টেট সাথে এক্সরে তে একটা কনসলিডেশন আছে,তাই আপাতত অপারেশন হচ্ছে না। ডায়াগনোসিস আমি আর কি করব?
আমাদের সময় তো এমন ছিল না। আমি ত সেদিন পাশ করলাম ২০০৭ এ। এ যদি সত্যি হয় তাহলে খুবি দুঃখজনক। আমি মিটফোর্ড থেকে পাশ করেছি
আমার বন্ধুদের আবার অধিকাংশই আপনার সতীর্থ, এসএমসি-র। ওরা আমার থেকে বয়সে একটু সিনিয়র, সবাই ৮৫'র ভর্তি। ওদের সময় কিন্তু এগুলো একটা 'সিস্টেম' ছিলো বলেই ওরা বললো। যার এফসিপিএসের খাওয়া খাচ্ছিলাম, সেও এমএমসি। ধন্যবাদ।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
ওওহ। আপনে তাইলে ডাগতর ?
এবং আপনি-আমি-ময়ূখ আমরা সবাই ইয়ারমেট ।
আমি অবশ্য ছুরি চালাই না, ইঞ্জিন চালাই। গ্র্যাজুয়েশন শেষ হইল এই এপ্রিলে, বুয়েট, ইইই
ওরে আইটেম রে! ভাগ্য ভালো, ঐ তল্লাটে পড়িনাই।
হ, আমি কবিরাজ
তবে আমি আপনাদের ইয়ারমেট না। আমি বের হয়েছি আগেই। আপনি কম করেও আমার চেয়ে চার বছরের ছোট হবেন।
বেশ মজা লাগলো লেখাটা পড়ে।
মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় ফেল মেরে কতদিন যে বিরসবদনে ছিলাম! তবে এখন মনে হয়, বড় বাঁচা বেঁচে গেছি...।
সত্যি বেঁচেছেন
মেডিকেল কলেজের শিক্ষকরা তুই-তোকারি করেন নাকি?
জি, করেন, ভালোভাবেই করেন।(সবাই অবশ্যই না) আমি তুই শব্দটাতে অভ্যস্ত ছিলাম না আগে , বন্ধুরা ছাড়া অন্য কেউ ডাকলে তার খবর থাকত, কিন্তু মেডিকেলে ঢুকে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। কিছু স্যারদের এই একটা আচরন আমার কাছে ব্যক্তিগত ভাবে অসহ্য লাগত।
তুই কইলে সহ্য করা যায়, কিন্তু চিবিয়ে চিবিয়ে 'আফনে' কইলে সহ্য করা মুশকিল
আমি তো আপনাকে ভালো ভাবসিলাম। আপনি তো মেয়েজাতির কলঙ্ক দেখি!
আপনার বলার ধরনে মজা পেলাম খুব।
মেডিকেলে না টেকার পর যখন চউক্ষের সামনে শুধুই অন্ধকার, আঙ্গুর ফল টক-টারেই ঘুরায়ে আমার বাপজান বললো, "তুমি তো বেঁচে গেছো। কারো পায়ে ঘা-টা হইলে সেই পা মুখের কাছে এনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হইতো, সেটা কি খুব সুখের ব্যাপার হতো?" ভাইবা দেখলাম, কথাটা ঠিক। তারপর থিকা মনে আর কোনো দুষ্ক থাকলো না।
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
দুস্ক না থাকাই হল আসল কথা।
আমারে কলঙ্কিনী বলল আর আপনি মজা পেলেন, নাহ ,মনের দুস্ক কেউ বুঝল না ( গভীর দীর্ঘশ্বাসের ইমো হবে )
লেখাটা খুব ভাল লাগল। সত্যি অনেক কিছু উঠে এসেছে, আপনি লিখেছেনও বেশ মজার ভঙ্গীতে। আরও লিখুন।
(গুড়)
facebook
কুহেরিন ম্যাডাম না কোহিনূর ম্যাডাম? আমার তো কোহিনূর ম্যাডাম কে পছন্দ ছিলো।
নাহ, কোহিনূর ম্যাডাম না, কুহেরিন বাসার। উনি কিছুদিন পরই চলে যান । ছেলেরা বড়ই বেদনা পেয়েছিল মনে।
লেখাটা অসম্ভব ভাল লাগল। এক্কেবারে মনের কথা। স্যারদেরকে এই লেখাটা দেখানো দরকার।
দেখান সমস্যা নাই, খালি আমার নাম না বললেই হবে।
হ। এই অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়েই আমার ডাগদর বন্ধুরা সব টুকলিমারা শ্রেণীর প্রাণী হয়েছিল। ওইগুলো যে কি চিক্কিচ্চা করবে, ভাবতেই... হে হে । ভুলেও ঐগুলার ওষুধ আমি খাই না। আমার ডিস্পেনসারি আলাদা।
যদিও আমার আরও কিছু বন্ধু আছে, কিন্তু ওরা আমার চেয়ে ২০-২৫ কিংবা তার অধিক বছরের বড়। ওদের সময়ের গল্প শুনতেও বেশ লাগে!
বাবার ইচ্ছে ছিল আমি ডাগদর হৈ, আর মায়ের ইচ্ছে ছিল ইঞ্জিন। আর আমি হালায় দুইজনের মাথায় বারি দিয়া হৈলাম...... হে হে ঐটা থাক। আমি যে আন্ডার-গ্রেজুয়েট তা আর না বললেই নয়।
আর বলতে তো হপেই আপনার লেখাটাও জব্বর-গব্বর হৈছে।
ডাকঘর | ছবিঘর
আপনি বড়ই বুদ্ধিমান, ঠিক সময়ে বারিটা দিছেন। আমি বারি দিতে পারি নাই। নিজেই এখন তাই খালি বারি খাই। লেখা জব্বর কইছেন নেন (গুড়) খান।
আমি কিছু দুঃখের কথা বললাম, সবাই দেখি হাসে। মানুষ বড়ই বিচিত্র।
আমার মেডিকেলে পড়ার ইচ্ছা ছিল, চমেক এ অ্যাডমিশন পেয়েছিলাম; কিন্তু এখন আপনার দুঃখের কথা পড়ে মনে হল শেষপর্যন্ত মেডিকেলে না পড়ার সিদ্ধান্ত টা ঠিক আছে
একদম ঠিক আছে।
আমার একটা বোন ও দুলাভাই এমএমসি থেকে পাশ করা। তাঁরা পরবর্তীতে বড় স্যার হয়েছেন। আমার আরও বোন, ভাইপো-ভাগনীও ডাক্তার। পুরনোদের কাছ থেকে তেমন কোন অভিযোগ শুনিনি। তবে ভাইপো-ভাগনিদের অনেক অভিযোগ। আর অভিজ্ঞতা থেকে জেনেছি, মোটামুটি একটা পর্যায়ের ডাক্তার হতেই জীবনের প্রায় চল্লিশটা বছর পার হয়ে যায়, বড় স্যার তো আরও পরের কথা।
লেখাটা ভালো লেগেছে।
আপনি পড়েছেন এবং মন্তব্য করেছেন ,অনেক ধন্যবাদ।
খুবই ঠিক কথা।
লেখা ভালো লাগলো। মেডিকেলে যারা পড়ে তারা নাকি শুধু পড়তেই থাকে, শেষ নাই, এতো পড়ে কেমনে মানুষ!
জানিনা। এই প্রশ্নের উত্তর আমিও খুজছি।
ঢাকা মেডিক্যালে মাঝামাঝি ছিলাম। সারা জীবন স্কুলের খাতায় লেখছি বড় হয়ে ডাক্তার হবো, দেশের সেবা করবো (সত্যি সত্যি মন থেকেই ভাবতাম!)। ইন্টারের পর মেডিক্যালের লাইফ স্টাইল আর ক্যাম্পাস পছন্দ হয় নাই। তাই আর পড়ি নাই। মায়ের খুব ইচ্ছা ছিল ডাক্তার হই তবে কলেজের সব ক্লোজ বন্ধুবান্ধবীরা মেডিক্যালে পড়তো। তাই রেগুলার যাওয়া-আসা ছিল আর প্যারানয়েড মুখস্থবিদ্যা-আইটেম-ফাইনাল এগুলার অনেক কিছুই জানা। কয়েকজনকে ছেড়ে দিতে অথবা আদু ভাই হয়ে যেতে দেখেছি। বন্ধুদের সুবাদে অনেক এনাটমি-ফিজিওলজি শিখতাম এ দেখে আমার এক বন্ধু অভিশাপ দিয়েছিল, তুই পড়তেছিস ইঞ্জিনিয়ারিং (পড়ালেখা না করে গুলতানি মেরে বেড়াতাম), কিন্তু বাইর হবি ডাক্তার হয়ে
মোমেনশাহী আমার খুব প্রিয় শহর, খুব প্রিয় কাছের অনেক বন্ধুদের সুবাদে প্রতি মাসেই প্রায় একবার এম,এম,সি তে যেতাম। এগ্রিভার্সিটি আর শহরটার অনেক কিছু আমার খুব প্রিয়।
লেখা খুব ভাল হয়েছে।
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
আমি কখনই কোথাও লিখিনি ডাক্তার হব। শেষ পর্যন্ত তাই হয়েছি। তবে এটা সত্যি মেডিকেলের সব খারাপ শুধু যখন কোন রোগী সুস্থ হয়ে হাসিমুখে ফেরত যায়, সেই সময়কার অনুভূতিটা ছাড়া, ওটা অসাধারন। আমার অন্তত তাই মনে হয়েছে।
মোমেনশাহী আমারও প্রিয় শহর যদিও প্রথম গিয়ে খুব মন খারাপ করেছিলাম এখানে থাকতে হবে ভেবে। পরে খুব আপন হয়ে গিয়েছিল । বিশেষ করে ব্রহ্মপুত্র নদ টা।
আপনাকে ধন্যবাদ ।
হ্যাঁ ঐ নদটা, সাঁতার না জানলেও পানি ভয় পাইনা। সাগরেও ঝড়ে পরার অভিজ্ঞতা আছে। কিন্তু এই নদে বর্ষাকালের ভয়ংকর রূপ প্রায় কাঁদিয়ে দিয়েছিল! আর অন্যসময় পাড়ে পাড়ে বড় বড় ছাতার ভিড়ও মজা পেয়েছিলাম
একবার বিরিশিরি গিয়েছিলাম। রাতে ফিরে মুন্নার চপ, কী একটা চা (খুব করে চিনি লেবু দিয়ে) খাওয়া হয়েছিল। এরপর ২১ প্লেট ভাত ও ১৭টা পরোটা খেয়েছিলাম ৭ জনে মিলে- যাদের ৩ জন ছিল মেয়ে (হোটেলের নামটা ভুলে গেছি, "ম" দিয়ে কিছু মনে হয়)। চরপাড়া মোড়ের দোকানের খাবারো বেশ লাগতো!
অনেক ভাল ডাক্তার হোন, শুভ কামনা রইলো!
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
আহ, মুন্নার চপ, আর মুকুলের চা। আর মনে করাইয়েন না। ২১ প্লেট ভাত আর ১৭ টা পরোটা ৭ জনে
আমি অবশ্য সাতার না জানলেও পানি ভয় পেতাম না। ব্রহ্মপুত্র হলে তো আরও না। অনেকবারই বর্ষার সময় বৃষ্টির মধ্যে নৌভ্রমণে বের হয়েছিলাম। বর্ষায় নদ টার যা চেহারা হয় দেখার মত। মজার ব্যপার হল শীতের সময় পানি এত কমে যায় আমরা নৌকা থামিয়ে নদের ভিতর হাঁটতাম।
আপনাকে
আহা আমরা তাহলে ভালই সুখে ছিলাম। মাধ্যমিকে বায়োলজি ঝেড়ে ফেলার সিদ্ধান্তটাও বুদ্ধিমানের মতনই নিয়েছিলাম দেখা যায়। এবার মোমেনশাহী মেডিকেলের একটা বাস্তব অভিজ্ঞতা বলি। অভিজ্ঞতা যাকে নিয়ে সে আপনার সমসাময়িক যা বুজ্ছি। ধরা যাক তার নাম সমুদ্র। সে আমাদের ইস্কুলে পড়ত। খুব ভাল ছাত্র ছিল। এরপর এক প্রেম ঘটিত ঘটনায় সে একটু আউলে যায়। যাই হোক, তার বাবা খুব নামকরা, মস্তবড় প্রফেসর দেশের অন্যতম সেরা এক মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের। গঠনা হলো মোমেনশাহীতে পড়া বেশকিছু মানুষের মতে, আমার সেই বন্ধু তার বাবার পরিচয়ে পরীক্ষার বৈতরণী পার হত। এমনও হয়েছে, মেডিকেলের এক শিক্ষক তাকে গাড়ি দিয়ে নিয়ে এসেছে পরীক্ষা দিতে, আবার গাড়ি দিয়ে বাসায় পৌছে দিয়েছে পরীক্ষার পরে। এমনটা কি হওয়া সম্ভব?
হ্যাঁ সম্ভব! আমিও শুনেছি এবং দেখেছি আমারো এক বন্ধু আছে, অমুক স্যারের ছেলে সুবাদে বেশ নাকি সুবিধা পেত!
আমার এক বন্ধু ডিএমসিতে কিছু না পড়েই আইটেমে পাশ করতো রাজনীতি করার সুবাদে। এবং তার সুপারিশে আরও অনেকের নাকি পাশ হতো। : সেই ছেলে ডাক্তারি করে এখন রেগুলার!
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
ঐ ডাগতরের নামটা দরকার, ১০০ হাত দূরে থাকতে হবে।
সম্ভব। এরকম হয়ও । তবে আমার ধারনা আপনি যার কথা বলছেন তাকে আমি চিনেছি।
চেনাটাই স্বাভাবিক, এই কারণে নাম হিসেবে সমুদ্র ধরেছি
সমুদ্র কেন ধরছেন সেটা আমি বুঝছি সে তো কবিতাও লিখত । যাই হোক। বেচারা ভাল থাকুক।
মেডিকেলের পোলাপানের মুখে আইটেম আছে শুনলে কেমন যেন আইটেম গান আইটেম গান মনে হত। এসব আইটেম আর বাঁশ খাবার গল্প করলেই আমার বন্ধুদের বলতাম, কইছিলাম না যাইস্না, গেলি কেন এইবার ভালো মত আইটেমের বাঁশ খা।
আপনার লিখা ব্যাপুক হয়েছে, অনেক কিছুর সাথেই যদি ও ডাক্তার বন্ধুদের সুবাদে অল্রেডি পরিচিত, তবু ও খুব ভালো লেগেছে।
আপনাকেও ব্যাপুক ধন্যবাদ।
কত পুরানো কথা মনে পড়ে যায় । কোন এক কুক্ষনে কিছু চটি নোট লিখেছিলাম সার্জারী ক্লাশে বসে , যা পরবর্তীকালে জুনিওর ব্যাচে আমার নামে নোট হিসাবে চলত । বাংলাদেশে যে কয়দিন ছিলাম , সার্জারীর প্রফেসররা আমাকে যেখানেই দেখতেন একপ্রকার আরম ধোলাই দিয়ে মনের সাধ মিটিয়েছেন ।
আর একবার স্ট্রাইকে স্লোগান দিয়েছিলাম বলে , এক স্যার বাসায় ফোন দিয়ে আমার আম্মাজানের হাই প্রেশারের কারন হয়েছিলেন ।
বিলাতী ভাষায় " দোজ ওয়ার ডেজ" ।
আমি একবার শীতবস্ত্র বিতরনের জন্য সবার কাছ থেকে চাদা তুলছি,তখন এক স্যার আমাকে বাসায় জানানোর হুমকি দেয়। আমি অবশ্য গা করিনি। আমার বাবা জানে আমি ঘরের খেয়ে বনের মোষ তারাই। স্যারদের মতির ঠিক আছে নাকি? ঠিক কথা বলেছেন "দোজ ওয়ার ডেজ"।
আমিতো আপনার লেখার মহা ভক্ত। পাঁড় পাঠক। আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবন কেটেছে একদম নিয়ম ধরে, নিয়ম ভাঙ্গার আনন্দ বা নিয়ম না মানার শাস্তি কোন কিছুর মধ্য দিয়েই যেতে হয়নি। এখন মনে হচ্ছে ছাত্রজীবনের সবচেয়ে চমৎকার সময়টাই আমার চলে গেছে কোনরকম বৈচিত্র ছাড়া।
লেখা ভালো লেগেছে
আপনি আমারে খালি লজ্জায় ফেলেন
সর্ষের মধ্যে ভুত থাকার সিস্টেম মেনে আমি যাবতীয় অনিয়ম করেছি। ঘুরাঘুরি, ক্লাস ফাকি দিয়ে সমাজ সেবা, ব্লাড ডোনেসন প্রোগ্রামে দৌড়াদৌড়ি, বাচ্চাদের স্কুলে গিয়ে ভ্যাক্সিনেশন করান, শীত বস্ত্র বিতরন কর্মসূচি, নদের পাড়ে গিয়ে উদাস হয়ে বসে থাকা, ইত্যাদি ইত্যাদি হাবিজাবি যত কাজ আছে সবই বেশী বেশী করেছি।
লেখা ভালও বলছেন
ডরাইলাম। থার্ড ইয়ারে পড়ি মাত্র। প্যাথলজির ঠ্যালা সামলাইতেই জান শেষ। প্রফের কথা মনে হইলেই মনে হয় অবস্থা খারাপ।
মেডিকেলে পড়েন। আসেন ।
থুক্কু, আপ্নেতো আবার দিদি, দাদা নন। আসেন হাত মিলাই।
লেখায়
ব্যাপার না। দেখতে দেখতেই কেটে যাবে বাকি দু বছর।
আজ চিটাগাং এ এসে ইন্টার্নের জন্য যাবতীয় কাগজপত্র জমা দেয়ার সময় একজন কে বলতে শুনলাম এই পোস্টের কথা। তাড়াতাড়ি এসেই দেখলাম। অনেক অনেক ধন্যবাদ আমাকে স্মরণ করার জন্য।
এমন কত অজস্র ঘটনা দিয়ে সাজানো আমাদের এই পাঁচ বছর। পাত্র-পাত্রী ভিন্ন, ঘটনাগুলো মিলে যায় অনেকাংশেই।
------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
একদম সত্যি কথা।
শুভকামনা রইল নতুন দিনের জন্য।
আসলেই, কত স্মৃতি বয়ে বেড়াই নিরন্তর।
মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হওয়া, পাঁচ বছরের প্রতিটি দিন; কত অম্ল-মধুর স্মৃতি।
সেটাই, রাঙা ভাইয়া।
আপু'ণি, আপনি কি ৪০'র? না হলে অবশ্যই ৪১ ?
যাক গে আমি কিন্তু ৪২'র ।।।
পড়ে খুব মজা পেলাম, আমরা মনসুর স্যারকে খুব একটা পাই নি, বাকিদের পেয়েছি ভালোমতোই
ভালো থাকুন সবসময়
না,৩৯। মনসুর স্যার কে আমরাও পাইনি। স্যার এসেছিলেন অ্যানাটমির এক্সটারনাল হয়ে।
তুমিও ভাল থেক।
ভালো লেগেছে।
__________
সুপ্রিয় দেব শান্ত
ধন্যবাদ।
আহেম!
কি আর কমু।
থাক। কিচ্ছু কমু না। কি সব দিনই না ছিলো। আসলেই- দোজ ওয়ার দ্য ডেইজ
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
কি আর কবেন,কিচ্ছু কওয়ার নাই।
মজার লেখা। আমি অচল থাকতে পড়েছিলাম আপু তাই কমেন্ট করা হয় নাই । স্কুল কলেজ ভার্সিটি যাই হোক পার হতে পারলেই মনে হয় স্মৃতি খুব ভালো জিনিস, দিনগুলো খারাপ ছিলো না। কিন্তু যতদিন পার না হয় ততদিন বড়ই বেদনা আমার কবে পার হবে সেই চিন্তায় আছি
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
পার হওয়ার পর মনে হবে কেন পার হল। ধন্যবাদ।
নতুন মন্তব্য করুন