বাচ্চাকালে আমি খুবই পরিশ্রমী ছিলাম। মানে দুষ্টামি, বাঁদরামি, বড়দের প্রশ্নের পর প্রশ্ন দিয়ে ঘায়েল করা, মাঝে মাঝে বিদঘুটে কথা বলে সবাইকে বিব্রত করা ইত্যাদি ইত্যাদি নানা ধরনের নিত্যনৈমিত্তিক কাজ আমি প্রবল উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে কোন রকম অলসতা ছাড়াই করে যেতাম। কিন্তু বড় হওয়ার সাথে সাথে আমার অলসতা চক্রবৃদ্ধি হারে বেড়েছে, এখনও বাড়ছে। এজন্য বড় হওয়ার পর আমি এমনকি ভদ্রও হয়ে গেছি, মানে দুষ্টামি করতেও এখন আলসেমি লাগে আর কি । তবে একটা কাজে আমার এখন পর্যন্ত কখনও আলসেমি লাগেনি , সেটা হল দূরে কোথাও ঘুরতে যাওয়া। এমনিতে আমি বাসা থেকে বের হই না, কিন্তু দূরে যাওয়ার যখন যেখানে সুযোগ পেয়েছি লুফে নিয়েছি কোন কিছু না ভেবেই। যখনই বন্ধুরা কেউ বলত চল অমুক যায়গায় যাই, জায়গার নাম ভাল করে শুনার আগে আমি রাজি হয়ে যেতাম। মাঝে মাঝে আবার অন্যদের দূর থেকে প্লান করতে শুনেই আমি লাফিয়ে উঠতাম। এরকমভাবেই একবার চলে গিয়েছিলাম কুয়াকাটা। আজকে সেই গল্পই বলব।
আমরা তখন মেডিকেল দ্বিতীয় বর্ষে সদ্য পা দিয়েছি। মেডিসিন ক্লাব করার সূত্রে বরিশাল মেডিকেলে কনফারেন্সে যোগ দিতে বরিশাল রওয়ানা হলাম। এ পর্যন্ত সব কিছু খুবই স্বাভাবিক, কারণ আমার দাদাবাড়ি যেহেতু বরিশাল আর সেখানে আমার ফুফু থাকে একজন তাই আমার বাসা থেকে কোন আপত্তি করার প্রশ্নই উঠে না। আমার অন্য যাত্রাসঙ্গীদের ভিতর কেউ কেউ বাসার অনুমতি নিলো আর কেউ বাসায় জানানোর ঝামেলাতেই গেল না, বিশেষ করে মেয়েরা । লঞ্চভ্রমন এমনিতেই সবচেয়ে রোমান্টিক ভ্রমণ , সারারাত পানির উপর ভাসতে ভাসতে আকাশের তারা দেখতে দেখতে যাওয়ার অনুভূতি স্বর্গীয়। যেহেতু আমি কখনও জাহাজে উঠিনি আমার কাছে লঞ্চই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে প্রিয় বাহন। তার উপর সাথে প্রায় ৪০ জনের একটা দল। সারারাত লঞ্চের ছাদে চিৎকার চেঁচামেচি করে পুরো লঞ্চের লোকজনের ঘুমের বারোটা বাজিয়েছিলাম আমরা। ভোরবেলা নামার সময় দেখলাম লোকজন জানি কেমন কেমন করে খালি তাকায়!
বরিশাল গিয়ে ৩ দিন কনফারেন্স নামের গম্ভীর ব্যাপারটা উপভোগ করলাম। উপভোগ করলাম বললাম এই কারণে যে আমরা তো আসলে গম্ভীর কথাবার্তা শুনিনি, আমরা কে কিভাবে কথা বলে, কে কার দিকে তাকিয়ে থাকে, কে কিভাবে দাড়ায় এসবে মন দিয়েছি । আমাদের তখন অনন্ত জলিলের ভক্ত দর্শকদের মত অবস্থা, কে কি ভাল কথা বলল সেটা বিষয় না, কার কার কথা এবং কাণ্ডকারখানা দেখে শুনে হাসি পেল সেটাই জরুরী। তো এভাবে ৩ দিন পার করে যখন আমাদের ফেরার ঘণ্টা বাজছে, হটাৎ টের পেলাম বড়রা সবাই কুয়াকাটা যাওয়ার প্লান করছে। তখন বাজে রাত ৪ টা। অন্য সব মেডিকেলের মত বরিশালেও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলো সারারাত ধরে হয়। কনফারেন্স উপলক্ষে করা ওদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান তখনও চলছিল, এর মধ্যেই ক্যান্টিনে চা খেতে গিয়ে আমরা বড়দের গোপন বৈঠক আবিষ্কার করে ফেললাম।
ব্যাস, আর যায় কোথায়। আমি প্রায় একা লাফিয়েই আমার বাকি বন্ধুদের রাজি করিয়ে ফেললাম। ঝামেলা একটাই কুয়াকাটা যাওয়ার বাস ছাড়বে ভোর ৬ টায়। এখন বাসার অনুমতি কিভাবে নিব ? বাকি বন্ধুরা বলল বাসায় কিছুই জানাবে না( ছেলেরাও)। কিন্তু আমার পক্ষে সেটা সম্ভব না। কারণ আমার বাসা থেকে স্পষ্ট বলা আছে, আমি যত বড় পাগলামিই করি, বাসায় জানিয়ে করলে শাস্তি হবে প্রাপ্যের কয়েক ভাগ। আর না জানালে কয়েক গুন। কিন্তু অত রাতে ফোন করি কি করে? তো বন্ধুরা পরামর্শ দিল সকালে ফোন করে হালকা মিথ্যে বলতে হবে যে , আমরা দুপুরে রওয়ানা দিবো । জীবনে প্রথম ঘাড়ের উপর গার্জিয়ান ছাড়া কোথাও ঘুরতে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছি, আমি তখন হালকা কেন , যে কোন ভারী মিথ্যে বলতেও রাজি। আর পরকাল নিয়ে আমার কোনকালেই বিশেষ দুশ্চিন্তা ছিল না, আমি সবসময়ই ইহকালের ভোগ বিলাসে মগ্ন থাকা পাপী বান্দা।
অতএব আমরা রওয়ানা হয়ে গেলাম। যদিও সিনিয়ররা আমাদের প্রথমে নিতে চায় নি,কারণ গ্রুপে আমরা শুধু দুইটা মেয়ে , আমাদের সাথে আসা আপুরা কেউই যাবে না। কিন্তু আমাদের করুন মুখ দেখে একটু পরই তারা সাথে নিতে রাজি হয়ে গেছে । ঝামেলা আরও একটা ছিল, আমরা টাকা পয়সা যা নিয়ে গিয়েছিলাম সব তখন খরচ করে ফেলেছি । টাকা পয়সার মত তুচ্ছ একটা জিনিসের অভাবে আমাদের যাওয়া আটকে থাকবে, তা কি কখনও হয় ? তাইতো শেষে দয়াপরবশ হয়ে আমাদের সাথে আসা আপুরা যার কাছে যা বাড়তি ছিল সব আমাদের দুই বান্ধবীকে দিয়ে দিল। জ্ঞানী লোকেরা কি আর এমনি এমনি বলেছেন “ইচ্ছে থাকিলে উপায় হয়”।
বাসে রওয়ানা দেয়ার কিছুক্ষণ পরই বাস ফেরিতে উঠল, ফেরিতে নেমে আমরা চারপাশ দেখে বিমুগ্ধ। সবাই মিলে যখন বিভিন্ন ভঙ্গীতে ছবি তুলচ্ছি তখন এক সিনিয়র ভাইয়া বলল যার যার ফোনে কথা বলার এখনই বলে নাও, একটু পরই আর নেটওয়ার্ক পাওয়া যাবে না ঠিকমতো। আমার তো মাথায় বাড়ি। তাহলে ? বাসায় কিভাবে কি বলব? বুকে সাহস সঞ্চয় করে আব্বুকে ফোন দিলাম। এবং ফোন ধরার পর আমার বাবাকে হরবর করে জানালাম, আমি কুয়াকাটা যাওয়ার বাসে উঠে পড়েছি, এখন ফেরিতে, যেহেতু অনেক রাতে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তাই তাকে ফোন দিইনি,এবং একটু পরে ফোন দিয়ে আর আমাকে তারা নাও পেতে পারে। আমার বাবার চেহারাটা নিশ্চয়ই দেখার মত হয়েছিল। আমি জানিনা বাংলাদেশের অন্য সব বাবারা কি করত , কিন্তু আমার বাবার থতমত গলায় প্রথম প্রশ্ন ছিল তোমার কাছে টাকা আছে তো ? এবং আরও অদ্ভুত , সে আমাকে একটা বকাও দেয়নি। বাসায় আসার পর অবশ্য বুঝিয়েছিল , এরপর যেন এরকম হুট হাট করে কিছু আর না করি। এজন্যই বোধকরি কখনও বাবার কাছে আমার লুকোতে ইচ্ছে হয়নি কিছুই।
কুয়াকাটা নেমে একটা ছোট হোটেলে উঠলাম আমরা। আমাদের দুই বান্ধবীর আনন্দ আর দেখে কে। নাচতে নাচতে গিয়ে সাগরে ঝাপ দিলাম। এবং এরপর দুই দিন শুধু দাপিয়েছি। সব জায়গাতেই তখন পাখির মত স্বাধীনতা ছড়িয়ে ছিল আমাদের জন্য। ভোর বেলায় উঠে সৈকতে গিয়েছি আর ফিরেছি সন্ধ্যারও অনেক পরে, সৈকত ধরে হেটে বেড়িয়েছি, ঝাউবনের পেতে রাখা চেয়ারগুলোতে উদাস হয়ে বসে থেকেছি। অন্যদের চোখে কুয়াকাটা কত সুন্দর জানিনা কিন্তু আমার কাছে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে প্রিয় সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটা। আমরা যখন যাই সেরকম কোন পর্যটক ছিল না সেখানে, পুরো সমুদ্রটাই ছিল আমাদের। চারপাশের হিমহিম নির্জনতা, সাগরের একটানা গর্জন আর মাথার ভিতরে স্বাধীনতার বোধ, এই তিনটা জিনিস মিলে মিশে একাকার ছিল বলেই হয়ত বেশী সুন্দর লেগেছে সব কিছুই, যা দেখেছি তাই, আকাশ , সমুদ্র, সূর্যোদয়, সূর্যাস্ত, জেলেরা, রাখাইন মেয়েরা, কাঁকড়ার গর্ত, শামুক, ঝিনুকের মালা, ঝাউ-বন, নোনাপানি, বালুকাবেলায় আছড়ে পরা নুরি-পাথর, দূরের দিগন্তরেখা যেখানে অনেকক্ষণ তাকিয়ে থাকলে মনে হয় পানিগুলো গড়িয়ে গড়িয়ে নিচে পরে যাচ্ছে।
আঠারো শতকে প্রথম যখন রাখাইনরা মুঘলদের দ্বারা আরাকান থেকে বিতাড়িত হয়ে কুয়াকাটা আসে তখন এরা বিশুদ্ধ পানির জন্য সমুদ্রপকুল অঞ্চলে কুয়া কাটা শুরু করে, সেখান থেকেই এই সাগরকন্যার নামকরণ হয়েছে কুয়াকাটা। কুয়াকাটায় একটা বৌদ্ধ মন্দির আছে যেটার গেটে আছে এরকম একটা কুয়া, ওটাই নাকি ওই অঞ্চলের সবচেয়ে গভীর কুয়া। কুয়াকাটা থেকে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দুটোই পূর্ণভাবে দেখা যায়, যার সৌন্দর্য না দেখলে ব্যাখ্যা করে ঠিক বুঝান সম্ভব না। আমি ভবিষ্যতে কুয়াকাটাতে এসে ঘরবাড়ি বানিয়ে থেকে যাব এরকম সিদ্ধান্ত পাকাপাকি ভাবে নিয়ে নিয়েছিলাম তখন। বলাই বাহুল্য পাকাপাকি ভাবে নেয়া সিদ্ধান্ত গুলো আমার কখনই পূর্ণ হয় না।
স্বপ্নের মত দুটো দিন পার করেছি আমরা , এর মধ্যে অবশ্য বাসাতে ফোন দিয়েছি বিভিন্নভাবে কয়েকবার, আমি যে বেচে আছি সেটা জানাতে। বেচেই তো ছিলাম, এত প্রবলভাবে বেঁচে থাকার অনুভূতি এর আগে আমার খুব কম হয়েছে। দ্বিতীয় রাতে হটাত করেই ঝড় শুরু হয়েছিল আমার আনন্দকে পূর্ণ মাত্রা দিতে। ঝড় আমার সবসময়ের প্রিয় জিনিস, কেন যেন বাইরে প্রবল ঝড় উঠলেই আমার মাথার ভিতরের ঝড়গুলো সব শান্ত হয়ে যায় । কিন্তু তবুও ইট কাঠের জঞ্জালে ভর্তি আর কালো ধোয়ায় ঢাকা দুষিত ঢাকায় বড় হওয়া আমি আসলে ঝড় কি জিনিস জানতামই না, সেদিন প্রথম বুঝেছিলাম ঝড় আসলে কত অদ্ভুত সুন্দর হতে পারে।
দুদিন পরে সকালে বাসে ফিরতি পথ ধরি আমরা, বরিশাল এসে আবার সন্ধ্যার লঞ্চে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিবো। পকেটে টাকা যা ছিল সব শেষ, শেষ সম্বল দিয়েই বাসের টিকিট কাটা হয়েছে, আর লঞ্চের টিকিট কেটে দিবে আমার ফুপা। আসার পথে এক ভিখারিনী ফেরিতে আমাদের কাছে বার বার ভিক্ষা চাচ্ছিল, আমার এক বিটকেল বন্ধু তাকে বলল “ওদের কাছে কিছু নেই, উল্টো আপনি ওদের কিছু দিয়ে যান পারলে” , মহিলা সাথে সাথে ঝোলার ভিতর থেকে একটা ৫০ পয়সার কয়েন বের করে আমার হাতে দিয়ে দেয়, সেই ছিল আমার জীবনের প্রথম ইনকাম !
বাসায় আসার পর আম্মুর কাছে কিছুটা বকা খাওয়া ছাড়া পুরো ভ্রমণে বাকি সবই আনন্দের স্মৃতি । অনেক বান্ধবীরা পরে বলেছে এরকম হুট করে চলে যাওয়া বোকামি হয়েছে , এসব পাগলামো করলে যে কোন দিন বিপদে পড়তে পারি, এটা বাংলাদেশ অ্যামেরিকা না, ইত্যাদি ইত্যাদি। কৈশোর, যৌবনকালে করা আমার হরেক রকম ( প্রায়ই সবকিছু থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা, কথা না বলার রোগের জন্য অসামাজিক হিসেবে সুনাম কুড়ানো, আবার ক্লাস ফাকি দিয়ে ব্লাড ডোনেসন প্রোগ্রাম করা, শীতবস্ত্র বিতরণের জন্য চাঁদাবাজি করতে গিয়ে স্যারদের হাতে ঝাড়ি খাওয়া তারপর আবার করা, যখন ইচ্ছে ঘুরতে বের হওয়া, ইত্যাদি ইত্যাদি ) পাগলামি দেখে দেখে বান্ধবীরা এতই ত্যক্ত ছিল যে এ বছরের জানুয়ারিতে আমার খুব প্রিয় এক বান্ধবীর মেয়ে হওয়ার পর সে চিন্তায় পরে গেছে তার মেয়েও না পাগল হয়, আমাকে দেখে দেখে তার ধারনা হয়েছে জানুয়ারি মাস পাগলদের জন্মমাস । আমারও এখন মনে হয় আসলেই আমি পাগলামি করেছি । কিন্তু ভাগ্যিস আমি পাগল , নয়ত এরকম অসম্ভব চমৎকার ভ্রমণটা কখনও করা হত না আমার। ভাগ্যিস আমার মাথায় ঘামানর মত গ্রে ম্যাটারের অভাব তাই যা ইচ্ছে হুট-হাট করে ফেলি, নয়ত এত এত ভাল লাগার স্মৃতিগুলো জমত কি করে ?
এখন যখন বড় হয়ে দিনকে দিন বুদ্ধিমান হয়ে যেতে হচ্ছে, পায়ে হাজারও শিকল জমছে প্রতিদিন একটা একটা করে ,মাথা ভারী হচ্ছে শত ব্যস্ততার বোঝা আর ক্যারিয়ারের কুকুর বেড়াল দৌড়ে , যখনই চারপাশের কোন কিছুর সাথে খাপ খাওয়াতে না পেরে নড়বড়ে লাগে নিজের অস্তিত্বকে , তখন আমি আমার এই পাগলামো করে কাটান দিনগুলি নিয়ে ভাবি। সারাজীবন ধরে যত ভাল রেজাল্ট করি, যত বড় ক্যারিয়ার গড়ি , যা কিছু আয় করি, যত সম্পদের পাহাড়ই জমাই না কেন এই দিনগুলিই থাকবে আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জন। আমাকে যদি আরেকবার সুযোগ দেয়া হয় আমি সেবারও এরকম বোকা ,ছন্নছাড়া , পাগল হয়েই জন্মাতে চাই।
( ছবিটা ধার করা। তখন সাথে ক্যামেরা ছিল না আমার )
মন্তব্য
ভালো লেগেছে লেখা
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
অনেক ধন্যবাদ ।
আপনার লেখা আমার বরাবরের মত খুব ভাল লাগে।
--- ঠুটা বাইগা
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ।
ভাল লাগল। মাঝে মাঝে এমন কিছু পাগলামির স্মুতি আছে আমারও। ৩০-এর কোঠায় এসে আবারও পাগলামি করতে ইচ্ছে করে, কিন্তু বাস্তবতা দেয়াল হয়ে দাঁড়ায়।
শুভ কামনা রইল। ভাল থাকবেন।
আসলে হটাত হটাত কিছু পাগলামো না করলে বাকি সময়গুলোতে জীবনটাকে খুব সুস্থির রাখা যায় না,পাগলামি টা হল আমার জন্য ব্যালান্স । অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
ভাল্লাগছে।
ধন্যবাদ ।
দেশে থাকতে সমুদ্র দেখা কপালে জুটেনি যদি ও পাহাড়ে বেড়াতে যাওয়া হয়েছিল। পরে যেবার সিংগাপুরে পড়তে আসলাম, এক বড় ভাই নিয়ে গেল সমুদ্র দেখাতে। সমুদ্রের কাছে গিয়ে আমার চোখে পানি চলে এসছিল, বাসায় ফোন করে বাবাকে বললাম, আমি জীবনের প্রথম সমুদ্র দেখছি বাবা, দেশে ফিরেই সবাই মিলে একসাথে গিয়ে সমুদ্র দেখে আসবো এইবার, প্রিয় মানুষজন ছাড়া সমুদ্র দেখতে ভালো না বাবা। সেবার দেশে ফিরে আমরা সবাই মিলে কক্সবাজার আর সেন্টমার্টিন ঘুরে এলাম। কুয়াকাটা যাবার প্লান করেছিলাম কিন্তু যাওয়া হয়নি, দেখি এরপরেরবার কখনো গেলে ঘুরে আসবো। আপনার লিখায় পারিবারিক বন্ধনের যে টানটা দেখতে পাই, খুব ভালো লাগে আমার।
কিছুদিন পর পর সমুদ্র দেখতে না পারলে আমার অস্থির লাগে। এজন্য আমার সমুদ্রে যাওয়া হয়েছে অনেকবার।
আমার আসলে ভাল লাগানোর মত এই একটা জিনিসই আছে, আমার পরিবার আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, শুভকামনা রইল।
সিঙ্গাপুর এ সমুদ্র দেখে আমার খুব গর্ব হয়েছিল আমাদের কক্সবাজার আছে দেখে। কক্সবাজারের সৈকতের তুলনায় সেটা প্রায় পুকুর বা নদী মনে হয়েছিল
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
আপনি অনেক সাহসী মেয়ে এবং আপনার লেখার মধ্যে সেটা প্রকাশ পায়। অসাধারণ ব্যপার একটা।
লেখা বরাবরের মতই (গুড়)
ধন্যবাদ। অতিথির নামটা জানলে আরও ভাল লাগত।
একজন মেয়ে বলেই ব্যাপারটা আমার কাছে বেশি ভাল লাগে।
ইমা
কুয়াকাটা যাইনাইক্কা এহনো!!
যাইতে হৈব---
পরাণদা , তাড়াতাড়ি যান। সৈকত ভেঙ্গে যাচ্ছে ক্রমশ, এখনই নাকি অনেক কমে এসেছে শুনলাম।
কুয়াকাটা যাওয়া হয়নি এখনো!
আর এখন তো সময় বের করাই সবচেয়ে কঠিন কাজ; আর সময় পেলে গেলেই বা কী- তখন মনে হয় বিশ্রাম হয়ে যাক একটু!
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
ঘুরে আসেন, চমৎকার লাগবে। আমার অভিজ্ঞতা মতে কক্সবাজারের তুলনায় কুয়াকাটা বেশ নির্জন , এটাই সবচেয়ে ভাল লেগেছিল।
এ ধরণের পাগালামোগুলো মাঝে মাঝে করতে হয় আর এ স্মৃতিগুলোই জীবনকে বহন করে অনেকটাই। নিজেও অনেক করেছি। এখনও ভুলিনি সেসব।
এখন জীবন অন্যরকম। অনেকটাই পরিকল্পিত। তবে আমার জায়গায় আমি না হলে আরো অনেক অনেক বেশী পরিকল্পিত হতো। কোনো দু:খ নেই সেজন্যে।
আপনার লেখাটি খুব ভালো লেগেছে, সাবলীল লেগেছে।
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
অনেক ধন্যবাদ তীরন্দাজদা, আপনার আগের লেখাগুলো পড়েছি, সচলদের অনেকের লেখায়, মন্তব্যে আপনার কথা আলোচনা হতে দেখেছি, কিন্তু আমি সচলে লেখা শুরুর পর আপনাকে দেখতাম না। খুব ভাল লাগল আপনার কাছ থেকে মন্তব্য পেয়ে, উৎসাহিত হলাম অনেক। ধন্যবাদ।
আপু দারুণ লাগল।
চমৎকার স্মৃতিচারণ। দারুণ, ছুঁয়ে গেল---
এমন লিখুন আরও--- , আর উপলব্ধি বজায় থাকুক-
facebook
অনেক ধন্যবাদ অণুদা।
ভালো লাগলো। লেখা জারি থাকুক।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ধন্যবাদ।
আমিও তাই করে এসেছি চিরকাল! যেতে পারি আর না পারি, যাবো-যাবো করে চিল্লাইতে খুব ভাল্লাগে!
অসাধারণ!
ধন্যবাদ আপু। কেমন আছেন আপনি ? অনেকদিন পর দেখলাম সচলে।
আমারও ভার্সিটির ২য় বর্ষে কুয়াকাটা যাওয়া হয় বন্ধুরা মিলে, সেটা ছিল বন্ধুদের সাথে দ্বিতীয় ট্রিপ। তখন কুয়াকাটায় মোবাইল নেট ওয়ার্ক নেই, ইলেক্ট্রিসিটি থাকে ৬/৮ ঘন্টা, সংবাদপত্র আসে দুইদিন পর। তাও ফুর্তি আর আনন্দের কোন কমতি ছিল না।
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
ভাল্লাগছে-
পরিকল্পনার খেতা-পুড়ি...
কতদিন পুড়তে পারবো জানি না...
ধন্যবাদ । খেতা পুড়তে থাকেন, কি আছে জীবনে।
আহা, কুয়াকাটা! লেখা ভাল লেগেছে।
অনেক ধন্যবাদ।
এত ভাল লাগল পড়ে,ভাব্লাম ভাল লাগাটা জানিয়ে যাই
অনেক ধন্যবাদ।
আমার বোন আমাকে খুব বাজে একটা কথা বলে। বলে, খাবারের গন্ধ পেলে কুত্তা তবু একটু পরে লাফ দেয়, বেড়ানোর গন্ধ পেলে তুই তার আগে লাফ দিস।
হোক বা না হোক, লাফালাফিতে কখনো ক্লান্তি নাই।
সামনের ছুটিতে কুয়াকাটা যাওয়ার উদ্দেশ্যে লোকজনকে পটানোর চেষ্টায় আপাতত জান-প্রাণ দিয়ে নিয়োজিত।
লেখা পড়িয়া বিমলানন্দ উপভোগ করিলাম। মাঝেমাঝেই এইরকম পাগলামি জারি থাকুক।
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
আপনার জান-প্রান নিয়োজিত প্রচেষ্টা সফল হোক।
অনেক ধন্যবাদ। এরকম উৎসাহ পেলে পাগলামি কি আর বন্ধ হয়
আফসোস ক্যারিয়ার ক্যারিয়ার করে পাগল হওয়া, একটাও ছুটি না কাটানো, এবং জীবনের যাবতীয় সুন্দরের প্রতি আগ্রহ হারানো সহকর্মীদের মধ্যে যদি এই জিনিসটা পেতাম!
মেডিসিন ক্লাবের বার্ষিক কনফারেন্স রীতিমতো ভয়াবহ ব্যাপার। এখানে যে পরিমাণ অদরকারী প্যাচাল হয় তা ক্লাবের ইতিহাসে নজিরবিহীন। ২০০৯-১০ এর ময়মনসিংহ কনফারেন্সে প্যাডের ছাপা কোয়ার্টার ইঞ্চি ওপর-নীচে নিয়ে তুমুল তক্কো বেঁধেছিল। উপদেষ্টারা উপদেশ দিলেন প্যাড নতুন করে ছাপতে হবে। তখন অত্যন্ত ছোটখাটো একটি জুনিয়র মেয়ে দাঁড়িয়ে তাবড়-তাবড় সিনিয়রের সামনে বলল, "আর প্যাড ছাপা সম্ভব না, পছন্দ না হলে কিছু করার নেই।" - এই ছোট বোনটি সব বাতুল বুরবকের গালে কষে একটা চড় হাঁকিয়েছিল দেখে যারপরনাই আনন্দিত হয়েছিলাম।
কুয়াকাটা ভ্রমণ ভালো লাগল।
নতুন মন্তব্য করুন