সফটওয়ার, বুদবুদ আর আয়-বৈষম্য

দিগন্ত এর ছবি
লিখেছেন দিগন্ত (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৭/০১/২০০৮ - ২:১৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সফটওয়ারের বুদবুদ নিয়ে লেখার সময় এর একটা দিক নিয়ে আর লেখা হয় নি - সেটা হল আয়-বৈষম্য। এটা শুধু সফটওয়ারেরই নয়, সমগ্র গ্লোবালাইজেশনের ফল হিসাবেই দেখা যেতে পারে, কিন্তু আমার আলোচনা আমি শুধু ভারতেই সীমাবদ্ধ রাখব।

সফটওয়ার নিয়ে আলোচনার আগে একটা ব্যাপার বুঝে নেওয়া দরকার। সেটা হল - পণ্য বা গুডস (Goods) আর সেবা বা সার্ভিসের (Service) মধ্যে তফাত। পণ্য একই জায়গায় উতপাদিত হয়, আর তারপরে পরিবাহিত হয় অন্য জায়গায়। সুতরাং এক্ষেত্রে খরচা দুরকম - উতপাদন আর পরিবহন। সেবার আলাদা করে এরকম কিছু থাকে না, তবে সেবাকে আবার দুভাগে ভাগ করা যায়। একটা কায়িক সেবা, যেখানে সেবক (service provider) সশরীরে উপস্থিত থাকতে হয় - যেমন নাপিতের চুল কাটার কাজ। আরেকটা হল যেখানে সেবকের উপস্থিতি একান্ত কাম্য নয় - যেমন কলসেন্টার। বিশ শতকের শেষ থেকেই যোগাযোগ ব্যবস্থা, টেলিকম আর ইন্টারনেটের কল্যাণে এই শেষোক্ত শ্রেণীর উত্থান।

বাস্তবে, আমাদের দেশে যতদিন না পণ্য উতপাদন বড়সড় ভাবে শুরু হচ্ছে, ততদিন অবধি কায়িক শ্রম-ওয়ালাদের জন্য ওপরে ওঠার কোনো সিঁড়ি নেই। সহজ কথায় বললে, রামচন্দ্র নামে একজন সফটওয়ার সার্ভিস প্রোভাইডার হিসাবে দেশে বসে সারা বিশ্বে আমার সার্ভিস দিতে পারে অথচ পাশের ফুটপাথে বসা রামু নাপিত কিন্তু চাইলেই অস্ট্রেলিয়ানদের চুল কেটে টাকা উপার্জন করতে পারে না বা শত বিশ্বস্ত হলেও হাবিলদার হুকুম সিং আমেরিকায় বোয়িং-এর কারখানা পাহারা দিতে পারে না। এর কারণ হল, গ্লোবালাইজেসন হয়েছে পণ্যের ক্ষেত্রে, অশরীরী সার্ভিসের ক্ষেত্রে, কিন্তু কোনো সশরীরী সার্ভিসের ক্ষেত্রে নয়। এখনো যে কোনো দেশে ভিসা পেতে গেলে রীতিমত কাঠখড় পোড়াতে হয়। তাই লেবার মোবিলিটি ব্যাপারটা এখনো সহজ হয় নি, অথচ গ্লোবালাইজেশন কিছুতেই সম্পূর্ণ হয় না এটা ছাড়া।

এবারে আসা যাক একটা ভারতীয় সফটওয়ার ফার্মের কথায়। আগের লেখাতেই জানিয়েছি, দেশে এখন চাকরি মূলত এরাই তৈরী করে। হাজারে হাজারে ছেলে পিলপিল করে একের পরে এক চাকরিতে এসে ভিড় করছে। কোনো ফার্ম ছেলে পাচ্ছেনা বলে অদক্ষ ফ্রেশ কলেজ পাস করা ছেলেদের ট্রেনিং দিয়ে কাজ করাচ্ছে। কিন্তু ঘটনা হল একটা সফটওয়ার কোম্পানী যদি ১০০টা চাকরি তৈরী করে তবে তার ৯০টা হবে তথাকথিত রামচন্দ্রদের জন্যই, রামু চাকরদের জন্য পড়ে থাকে কয়েকটা হাতে গোনা বিল্ডিং পরিষ্কার করা বা পাহারাদারের চাকরি। মজার কথা, সেই দশটা চাকরিও কোম্পানী আজকাল নিজের ঘাড়ে নিচ্ছে না, আউটসোর্স করে দিচ্ছে। মানে, ধরা যাক পাহারাদারের কাজ করবে অমুক কোম্পানী - সেই অমুক কোম্পানী তখন দশজন গোর্খা সিপাহীকে এনে পাহারার ব্যবস্থা করবে। সিকিউরিটির জন্য বরাদ্দ টাকার সিংহভাগ করায়ত্ত হবে এই মধ্যসত্ত্বভোগী "ম্যানেজার" কোম্পানীর - আর হাবিলদার হুকুম সিং-দের পকেটে জোটে ফুটো কড়ি।

যতটা খারাপ বলছি হয়ত ব্যবস্থাটা ততটা খারাপ চলছে না, তারও কয়েকটা উদাহরণ আছে। সফটওয়ার শিল্পের ঘাড়ে বসে চলে আমাদের দেশে পর্যটণ আর বিমান পরিবহন শিল্প। এই চাকরিগুলো রামু নাপিত বা হুকুম সিং-দের জন্য তুলনামূলক ভাবে অনেকটা ভাল - মানে চেষ্টা করলে এই চাকরিগুলো তারা পেতেও পারে, কারণ এতে তুলনামূলক সরাসরি শ্রমের চাকরি বেশী। তবে, সেই একই কথা, যেহেতু, তাদের সার্ভিস গ্লোবাল নয়, তাই তাদের আয়ও গ্লোবাল স্কেলে হয় না - ভারতীয় স্কেলেই আটকে থাকে। তাই এক বিমান নিরাপত্তারক্ষীর আয় কয়েক শতাংশ বাড়ার তুলনায় একজন বিমান পাইলটের আয় কয়েকশ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

ব্যাপারটা শুধু লেবার মবিলিটির সমস্যাই নয়, টেকনলজি আয়ত্তে আনার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। টেকনলজি যে দ্রুত আয়ত্তে আনতে পারবে, সেই বেশী বেশী উতপাদনক্ষম হবে - এ বিষয়ে কারো কোনো সন্দেহ নেই এই যুগে। এখন, একবার নতুন টেকনলজি যে আয়ত্তে এনে ফেলেছে, সে সবসময়েই আয়ত্তে না আনা ব্যক্তির চেয়ে এগিয়ে থাকবে। আর গ্লোবাল কমপিটিশনের যুগে যে কোম্পানীর কর্মীরা বেশী উতপাদনক্ষম তাই বেশী লাভ করবে। এটা ঠিকই, গ্লোবালাইজেশনের ফলে উন্নত বিশ্ব থেকে আসা নতুন টেকনলজি তৃতীয় বিশ্বের সাথে টেকনলজির গ্যাপ অনেকটা দূর করেছে, কিন্তু বাড়িয়ে দিয়েছে তৃতীয় বিশ্বের আভ্যন্তরীণ গ্যাপ। কারণ, গ্লোবালাইজেশনের ফলে শুধুমাত্র হাতে গোণা দক্ষ কিছু ব্যক্তির কাছেই টেকনলজি যাচ্ছে - বাকিরা যেমন তেমনই রয়ে যাচ্ছে। না বাড়ছে আয়, না দক্ষতা। আমাদের এখানে তাই সফটওয়ার শিল্পে অধিকাংশ কর্মীর আগের প্রজন্ম হল সরকারী চাকুরে - চাষা বা মুচি সংখ্যায় নগণ্য।

মজার কথা হল, উন্নত বিশ্বে সমস্যাটা অন্যরকম। আর দুয়ে মিলে আয়ের ব্যবধানটা আরো বেড়েই চলে। ধরা যাক, জি-ই(GE) একটা কলসেন্টার আমেরিকা থেকে সরিয়ে ভারতে আনার সিদ্ধান্ত নিল। এর ফলে, আমেরিকায় কিছু সাধারণ মানুষের চাকরি গেল। কলসেন্টারে কাজ করাটা উন্নত বিশ্বে সাধারণ চাকরি। আবার অন্যদিকে, ভারতে সেই চাকরি হস্তগত করল ইংরেজী জানা একদল উচ্চশ্রেণীর কর্মী। তাই চাকরি হস্তান্তরের সাথে সাথে উভয় দেশেরই আয়-বৈষম্য বাড়ল বই কমল না। পণ্য-ভিত্তিক শিল্পের ক্ষেত্রে কিন্তু এই সমস্যা নেই, উভয় প্রান্তেই দেশের সব থেকে নিচের শ্রেণীর লোকেই এই কাজে জীবিকা-নির্বাহ করে। তাই একদেশে গরিবের চাকরি গেলেও অন্যদেশে গরিবের চাকরি হচ্ছে।

এখানে একদল অ্যান্টি-গ্লোবালাইজেশন-পন্থী হয়ত বলবেন গ্লোবালাইজেশন ব্যাপারটাই ভুল। চাকরি একদেশ থেকে আরেক দেশে যাবার কোনো দরকারই নেই। কিন্তু এটাও ভেবে দেখতে হবে যে চাকরি উন্নত বিশ্ব থেকে তৃতীয় বিশ্বে না এলে কি ভাবে এই টেকনলজি গ্যাপ কমবে? আর কিছু না হোক, আমাদের দেশে উন্নত বিশ্বের হাত ধরে আজ কাটিং-এজ টেকনলজি আসছে, কাল যে এখান থেকে কাটিং-এজ টেকনলজি বেরোবে না তা কে বলতে পারে?

তাহলে সমাধান কোথায়? সমাধান করার কথা বলা হয় সেই প্রাচীনপন্থীদের হাত ধরেই। শিক্ষা-ক্ষেত্রে আরো বিনিয়োগ করতে হবে আর সবার জন্য সমমানের মিনিমাম শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে সবাই অন্তত দক্ষতা দেখানোর সুযোগ পায় আর দক্ষ শ্রমিক শুধু উচ্চশ্রেণীর ঘরেই না তৈরী হয়। কথায় কথায় বলতে হয় যে এখানেও সেই গ্লোবালাইজেশন তার সিঁধ কেটে ঢুকে পড়েছে। সরকারী স্কুলের সাথে বেসরকারী স্কুলের তফাত দিনে দিনে ক্রমবর্ধমান। সরকারী স্কুলে শিক্ষকদের মূল্যায়ণের কোনো ব্যবস্থা নেই - তাই যে শিক্ষক মাসে শুধু বেতনের দিনে স্কুলে আসেন তার সাথে নিয়মিত ক্লাস নেওয়া শিক্ষকের আয়ের কোনো তারতম্য নেই। অন্যদিকে, কলেজ-ইউনিভার্সিটি স্তরেও বৈষম্য চূড়ান্ত। যেখানে আই-আই-টি, আই-আই-এম বা অন্যান্য আই-এন-আইদের জন্য ভুরিভুরি টাকার সরকারী অনুদান আসে, সেখানে ধুবুলিয়া গ্রামের কলেজে ছোটো একটা ল্যাবরেটরী বানাতে গ্রামের লোকের কাছেই হাত পাততে হয়। আগে হলে আই-আই-টির পাশ করা ইঞ্জিনিয়ার কাজের সন্ধানে চলে যেত বিদেশে আর ধুবুলিয়ার স্নাতক দেশে কোনোরকম সরকারি চাকরি করত। গ্লোবালাইজেশনের যুগে আই-আই-টির স্নাতক আর বাইরে যাচ্ছে না, তাই প্রকট হয়ে দেখা যাচ্ছে দেশের আভ্যন্তরীণ বৈষম্য। শিক্ষার সিস্টেমে যে বৈষম্য স্কুল-কলেজ স্তরে থাকে, তাই প্রতিফলিত হচ্ছে সমাজে চাকরি, সফটওয়ার বুদবুদ আর দক্ষতাভিত্তিক কাজে।

আগের লেখায় লিখেছিলাম টাটা ন্যানোর কথা। তখন অনেকেই বলেছিলেন এর জায়গায় পাবলিক ট্রান্সপোর্টের উন্নতি করা দরকার, কারণ তাতে ট্রাফিক সমস্যার সাশ্রয় যেমন হতে পারে, তেমনই পরিবেশও বাঁচতে পারে দূষণের হাত থেকে। কিন্তু প্রশ্ন হল, এই ক্রমবর্ধমান আয়-বৈষম্যের মধ্যে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট কি খাপ খাইয়ে নিতে পারবে? রামু নাপিত আর রামচন্দ্র সফটওয়ার কর্মী কি একই বাসে স্বচ্ছন্দে যাতায়াত করতে পারবেন?

পড়ে দেখবেন - দক্ষতাভিত্তিক শিল্প আর আয়-বৈষম্য নিয়ে লেখা


মন্তব্য

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

জম্পেশ লিখেছেন, দিগন্ত। ভারত নিয়ে তো বেশ কয়েকটাই লিখলেন, এবার একটা সিরিজ নামিয়ে ফেলুন!

এই প্রসঙ্গে দুইখান মন্তব্য। যা বোঝা যাচ্ছে, গত ১৫ বছর ধরে ভারত অর্থনৈতিক উন্নতির ক্লাসিকাল মডেল ফেলে একটা ভিন্ন মডেল বেছে নিয়েছে। খুব সহজ়ে বলতে গেলে এই মডেল হলো - services, not industry.

ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় যে সেই আদ্যিকালে ইউরোপে শিল্প বিপ্লব থেকে শুরু করে কমিউনিস্ট শাসনামলে রাশিয়া বা যুদ্ধের পরে জাপান বা ইদানীংকালে চীন - এরা সব্বাই উন্নয়নের জন্যে ব্যাপক হারে শিল্পায়নের পন্থা অবলম্বন করেছে। গ্রাম থেকে উঠে আসা মানুষদের জন্যে শহুরে শিল্পব্যবস্থায় একটা স্থান হয়েছে - ফ্যাক্টরিতে চাকরি হয়েছে, আয় উপার্জন হয়েছে। একেবারে অদক্ষ অজ্ঞ শ্রমিকও কাজ করতে করতে দক্ষ হয়ে গিয়েছে। অত্যাধুনিক যেই জাপান, সেই জাপানও যুদ্ধের পরে আমাদের মত গার্মেন্টস দিয়েই শুরু করেছিল। আজকে তারা বানায় রোবট। তারা যেটা করেছে, একে উন্নয়ন অর্থনীতিবিদরা বলেন climbing up the value chain. কম দামের জিনিস দিয়ে শুরু, বেশী দামের জিনিস দিয়ে শেষ। কিন্তু উন্নয়নের প্রথম ধাপটা সব ক্ষেত্রেই ছিল শিল্প - এবং তার অনেক পরেই services। অর্থনীতির সনাতনী হিসাব অনুযায়ী একটা অপরিপক্ক, জনবহুল, উন্নয়নশীল দেশে শিল্প-কারখানাই বেশী গুরুত্বপূর্ণ হওয়া উচিৎ। আর services বেশী গুরুত্বপূর্ণ হবে শিক্ষিত পরিপক্ক উন্নত দেশে।

কিন্তু ভারত এই পুরা মডেলটাকেই উল্টিয়ে দিয়েছে। সরকার সেখানে ঢালাও হারে শিল্পায়নের রাস্তায় যাচ্ছে না। বরং তারা আইটি সেক্টরের ঘাড়ে চেপেই দেশকে উন্নত করতে ব্যস্ত। কিন্তু অশিক্ষিত যেই জনগণ, গ্রামে থাকে যেই ৭০ বা ৮০ ভাগ লোক, তাদের এই আইটি প্রাচুর্য্যে ঢোকার কোন রাস্তা নেই। এটা কেন বিভিন্ন সরকারের পলিসি হয়েছে, তার উত্তর হয়তো দিগন্ত বলতে পারবেন। তবে এই রকম উদ্ভট পলিসির কারনেই (India Shining মনে আছে নিশ্চয়ই!) গত ইলেকশনে বিজ়েপি সরকার ধরা খেয়েছিলো।

এতে কি ধর্মবর্ণের কোন প্রভাব আছে বলে মনে হয়? আইটি কি উচ্চবর্ণের আখড়া? জানি না আসলে, আন্দাজেই জিজ্ঞেস করলাম। তবে ভবিষ্যতে কৃষি ও শিল্পের দিকে কংগ্রেসের বেশী করে মনোযোগ দেওয়া উচিত বলেই মনে করি। এই দিকে কি কোন অগ্রগতি দেখছেন দিগন্ত? চমৎকার পোস্টের জন্যে আবারো ধন্যবাদ। এই নিয়ে চলুক আলোচনা দেঁতো হাসি
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

দিগন্ত এর ছবি

আপনার শিল্প-বিকাশের ইতিহাস বর্ণনা ভাল হয়েছে, আমারই ব্যাপারটা লেখা উচিত ছিল। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

http://www.voxeu.org/index.php?q=node/868

কলাম্বিয়ার প্রফেসর আরভিন্দ পানাগারিয়া ঠিক এই বিষয়টা নিয়েই লিখেছেন - চীন আর ভারতের উন্নয়নের পার্থক্য। ইন্টারেস্টিং।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

দিগন্ত এর ছবি

"এতে কি ধর্মবর্ণের কোন প্রভাব আছে বলে মনে হয়?"
- পশ্চিমবঙ্গের আর দশটা মানুষের মত আমিও ধর্মবর্ণের রাজনীতি বুঝিনা, তবে শুধু আই-টি নয়, যে কোনো হাই-এন্ড সার্ভিস সেক্টরে উচ্চবর্ণের রমরমা। নিম্নবর্ণের লোকজন পাওয়া যায় শুধু সরকারি চাকরিতেই, কারণ সেখানে ২২% সংরক্ষণ আছে নিম্নবর্ণীয়দের জন্য। এটা নিয়ে আরো একটা লেখা যায়।
যাহোক, ব্যাপারটা আপনি ঠিকই ধরেছেন - বটম আপের জায়গায় টপ ডাউন অ্যাপ্রোচ - সমাজের ওপরকে আগে চাকরি দিয়ে তারপরেই নিচের চাকরি। তার ফলেই এই অসাম্য। আসলে আমার মনে হয় ব্যাপারটার দুটো কারণ হতে পারে -
১) চিন আগেই ম্যানুফাকচারিং ইন্ডাস্ট্রি ধরে ফেলায় আর ভারতে শ্রমিক-দরদী লেবার আইন থাকায় লেবার-ইন্টেনসিভ কোনো শিল্প তেমনভাবে হচ্ছে না।
২) সমাজ আগে থেকেই হায়ারার্কিতে বসে ছিল, উদারিকরণের পরে সমাজের দক্ষ অংশ বেশী সুফল পেয়েছে। এই ধারা প্রকট হয় রাজ্য-ভিত্তিক অসাম্য দেখলেও। যে যে রাজ্যের লোকজনে বেশী হারে আমেরিকা আর ইউরোপে মাইগ্রেট করেছে তাদের লাভ বেশিই হয়েছে তুলনামূলকভাবে। তাই দক্ষিণ ভারতই এই সফটওয়ার বুদবুদের সিংহভাগ দখল করেছে।
সমাধান কি ভাবে আসতে পারে সে নিয়ে আমি খুব একটা নিশ্চিত নই - হয়ত পণ্যভিত্তিক শিল্পকে এবার সরকার কিছুটা হলেও অগ্রাধিকার দেবেন।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

রাতুল এর ছবি

আন্চলিক ঐতিহ্য (যাকে আমরা বলি আরে "ওদের ট্রেডিশন")আর নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান/বিশ্ববিদ্যালয়/কলেজ নির্দিষ্ট বিষয়ে পড়তে এছাএীদের পড়তে উতসাহিত করে। ব্যাপারটা এরকম যে "আরে অমুক তো অমুক বিশ্ববিদ্যালয়য়ের অমুক বিষয়ে পড়ে এখন অমুক জায়গায় এত বেতনে চাকরী করে"।
আবার এটাও ব্যাতিক্রম নয় যে "আরে ঐ চাকরী ক্ইরা আর কত কামায়,আমার পোলা আমরা ব্যাবসা দেখব"

আন্চলিক ঐতিহ্য বিশাল ব্যাপার।

দিগন্ত এর ছবি

ঠিক।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।