আইপিএলের খেলা এবছর আর দেখতে পাচ্ছিনা। তবে তা নিয়ে খুব কিছু আক্ষেপ নেই। বছরের শেষ দিকে ২০-২০ বিশ্বকাপটা বরং দেখব। অফিসে খেলা লাইভ দেখানোর ব্যবস্থা হয়েছে। আমাদের লাঞ্চ সার্ভ করে যে কোম্পানী, তারাই উদ্যোগ নিয়ে আমাদের খেলা দেখার ব্যবস্থা করছে। আশা করছে এই মন্দার বাজারে বেশী কিছু লোক সকালে ব্রেকফাস্ট করতে আসবে আর সেই সাথে খেলা খাবে। বা উল্টোটা ... খেলা খেতে এসে কিছু ব্রেকফাস্টও খাবে। ২০০৭ এর বিশ্বকাপ ক্রিকেটের সময়ে এই পরিকল্পনা ভেস্তে গিয়েছিল ভারত প্রথম রাউন্ডেই বিদায় নেওয়ায়। পরের ম্যাচগুলো থেকে আর লোক হয়নি। যেই আই-পি-এল এর পরিকল্পনাটা করে থাক না কেন, ব্যবসা হিসাবে এর জুড়ি নেই। ভারত হেরে গেলে লোক হবে না – এই সম্ভাবনাটাও নেই। যাহোক, হুজুগে পড়ে কালকে আমিও ম্যাচ আর ব্রেকফাস্ট দুটো একসাথেই খাব। সকাল সাড়ে সাতটায় যেতে হবে সেজন্য।
আই-পি-এল এ এবারের কেচ্ছা সৌরভের ক্যাপ্টেনসি যাওয়া থেকে শুরু। তবে আরেকটা মজার ব্যাপার ক্রিকেটজগতকে মাতিয়ে দিয়েছে। বিশেষত আমরা যারা গসিপ পড়তে ও ছড়াতে ভালবাসি তাদের জন্য বাজারে এসেছেন এক “ফেক আই-পি-এল প্লেয়ার”। ইনি হলেন এক ব্লগার – যিনি নিজেকে দাবী করেন কোলকাতা নাইট রাইডার্স দলের এক তরুণ প্লেয়ার হিসাবে। ইনি টিমের আলাপ-আলোচনা সব ফাঁস করে দেন তার ব্লগে। শুধু টিম নয়, আশেপাশের অন্যান্য টিমেও কি আলোচনা চলছে, এমনকি কমেন্ট্রি টিমের কে কি করছে – সবই পাওয়া যায় মশালাদার আকারে। আমার খুব পছন্দের হলেও টিম ম্যানাজমেন্ট বেজায় খাপ্পা এই রহস্যময় ব্লগারের ওপর। কারণ তাদের স্ট্র্যাটেজি আগেভাগে ফাঁস হয়ে যাচ্ছে।
এতক্ষণ আমি এই ব্লগারের ব্লগ পড়ে উঠলাম। আমি নিজে মনে হয়না এত ভাল ব্লগ লিখতে পারব। “আকর্ষণীয়” ইংরেজীতে লেখা আর ঝরঝরে ঘটনাপ্রবাহ বর্ণনা – টিম মিটিং-এ কিভাবে কে কথা বলছে, কে হাসছে না, কে জোকস বলছে, কে চিয়ারলিডারদের ড্রেস নিয়ে কমেন্ট করছে, কে নাইটক্লাবে “শিকার” খুঁজে বেড়াচ্ছে, কোন কমেন্টেটরা নিজেদের মধ্যে বাজী ধরছে কোনো মেয়েকে পটানোর জন্য, আর কে পেডোফাইল অথচ সামনে সাধু সেজে থাকে – সব গসিপই আছে এতে। খেলার কিছু আগে-পিছে বর্ণনাও আছে। আগরকারকে বাদ দেবার সময় কোচ তাকে ডেকে কি বলেছে তা-ও আছে। সব মিলিয়ে জমজমাট। তবে এই ব্লগারের একটা বিশেষ ক্ষমতার কথা না বললেই নয় – নামকরণের ক্ষমতা।
এই ব্লগার সব কুশীলবকেই একেক নামে ডাকে। যেমন –
শাহরুখ খান – বাদশা ডিলডো, সৌরভ গাঙ্গুলী – লর্ড অলমাইটি/লর্ডি, বুকানন – কোচি, আগরকর – কান মোলো (লম্বা কান বলে), প্রিন্স অব পাতিয়ালা – যুবরাজ সিং, বাবলি – প্রিতী জিন্টা, জন রাইট – জন রং, গ্রেগ চ্যাপেল – হাওয়াই চপ্পল, কিষেন কানহাইয়া – রবি শাস্ত্রী, বেঙ্গল টাইগার – মাশরাফি, ক্যালিপ্সো কিং – ক্রিস গেল, পেডোফাইল প্রিস্ট – অ্যাডাম গিলক্রিস্ট (ব্লগারের দাবী ইনি সত্যি পেডোফাইল এবং তিনি নিজের চোখে তা দেখেছেন)।
আর কিছু না হোক, এই ব্লগার এখন প্রচন্ড জনপ্রিয়। প্রতি ব্লগেই প্রায় পঞ্চাশ-ষাটটা করে কমেন্ট। তবে তার দেওয়া সব তথ্য সঠিক নয় বলে টিমের দাবী। তার মানে নিজের পরিচিতি গোপন করার জন্য সত্যের সাথে কিছু মিথ্যাও লুকিয়ে দিচ্ছে ব্লগার। টিমের অনেকেই মনে করেছে সৌরভ নিজেই নাকি এই ব্লগার – এই মর্মে নাকি তাকে কোচ আর ক্যাপ্টেন একলা ঘরে ডেকেও ছিলেন। ব্লগারের দাবী মত এখন নাকি টিমে ল্যাপটপ ব্যানড – তাই উনি ভাইকে দিয়ে লেখাচ্ছেন সব। ব্যাপার রহস্যময়, কিন্তু আমি দারুণ মজা পেলাম ব্লগ পড়ে।
মন্তব্য
নামকরণগুলো মারাত্মক। তার বর্ণনাও অনেক রসালো। তবে সে নিশ্চিতভাবেই শুধু ব্লগার। কারণ, টিম সম্পর্কে যে তথ্যগুলো সে দেয়, তার জন্য টিম মেম্বার হওয়ার দরকার নেই। একটু ক্রিকেট জানলে আর একটু কমনসেন্স থাকলেই যথেষ্ট। যেমন, গত ম্যাচে তার 'ভবিষ্যতবাণী'/বক্তব্য ছিলো মেন্ডিস বা মাশরাফি খেলবে। এটা খুবই যৌক্তিক একটা ভবিষ্যতবাণী, যদিও কোচি তাকে বোকা বানিয়ে দেয়।
টিম ম্যানেজমেন্ট একজন ব্লগারের ওপর খাপ্পা হওয়াটা সম্ভবত গুজব। কে কোথায় কি লিখলো তা ট্রেস করার চাইতে তাদের আরো গুরুত্বপূর্ণ কাজ থাকার কথা। দলের কোনো খেলোয়াড় এভাবে ব্লগ লেখার পক্ষে টেমন কোনো যুক্তি খুঁজে পাই না। আর সে যতোই ইন্টেলিজেন্ট হোক, ঘটনার বর্ণনা ও লেখার ধরণ থেকে একজন পরিচিতকে সনাক্ত করা অতো কঠিন কাজ নয়।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
কিন্তু আগরকরের বাদ যাবার খবর আগে থেকেই ঠিকঠাক ফাঁস করে দিয়েছে। সেটা খুবই অস্বাভাবিক ...
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
আগারকারকে প্রথম ম্যাচে বল করতে দেয়া হয়েছিলো মাত্র ১ ওভার। আগারকার সাধারণত বোলিং ওপেন করে বা ওয়ান চেঞ্জে আসে। ওই ম্যাচে ৫ নম্বরে, এমনকি দাদারও পরে, বল করতে এসে ১ ওভারে ১৭ রান দেয়। বোঝাই যায়, কোচ বা ক্যাপ্টেনের প্ল্যানে সে নেই বললেই চলে। শুক্লা, আগারকার এরা বলা যায় দাদা ঘরানার খেলোয়াড়। সুতরাং বুকানন পারলে প্রথম চান্সেই এদেরকে বাদ দিবে। ওয়াসিম আকরামের ক্যাপ্টেন্সির সময় ওয়াকারকে এভাবেই বাদ দেয়া হতো। ব্যাটসম্যান যখন তুমুল পিটাচ্ছে তখন ২ ওভার বল করতে দিয়ে আর না ফেরানো।
আরেকটা জিনিস, খেলার একাদশ সম্ভবত টসের সময় নির্ধারিত হয় আবহাওয়া ও পিচের পরিস্থিতি দেখে। আগের দিনের/রাতের টিম মিটিংয়ে তাই একাদশ নিশ্চিত করার কথা না।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
ঠিক কথা। তবে উপস্থাপনা মজাদার ...
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
- হেহ হেহ হেহ
চটকদার খবর।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আমিও আসলে বলাইদার সহমত ব্যক্ত করলাম। কেউ একজন খুব ভালো অভিনয় করার চেষ্টা করে যাচ্ছে... একজন খেলোয়াড় এতোটা সময় কি পাচ্ছে যে সে ব্লগ তো লিখছেই সেই সাথে কমেন্টের উত্তরও দিচ্ছে ? কিংবা নিজের ভাইকে দিয়েই ব্লগ লেখানোটা কতোটা বিশ্বাসযোগ্য ?
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
আমার কাছে যেই ব্যাপারটা মিলছে না তা হলো এই ব্লগারের এন্টারটেইনমেইন্ট জগতের হালের খবরও নখদর্পণে থাকা। পড়লে বোঝা যায় এই লোক ব্র্যাড পিটের সর্বশেষ মুভি দেখেছে (কিউরিয়াস কেস অফ বেনজামিন বাটন), আমেরিকান টিভির লেটেস্ট শো'তে (আর ইউ স্মার্টার দ্যন এ ফিফথ গ্রেডার)কি হয় তাও জানে । কেকেআর টিমে সেইরকম সবজান্তা কেউ আছে বলে মনে হয় না। এত খোজখবর রাখলে সে লোক খেলে কখন?
একমাত্র সম্ভাবনা হলো খেলায়াড় নয়, সে একজন স্টাফ কিংবা বড়জোড় একই হোটেলে থাকা কোনো অতীব বুদ্ধিমান ব্লগারাজ্জি (পাপারাজ্জির ব্লগীয় ভার্সন)।
এই লোকের আইপি সহ ব্যান করা হোক
হা হা হা ! ব্যান করবে কেন ? চলছে চলুক ! যে ক'দিন আইপিএল, সে ক'দিনই তো ! ব্লগ জগতে না হয় একটু ব্যতিক্রমী ঢেউ ওঠলো, মন্দ কী !!
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
আমিও এই ব্লগারের ব্লগ কালকেই পড়লাম৷ টোটাল মস্তির
-------------------------------------------
"নিভন্ত এই চুল্লিতে মা
একটু আগুন দে
আরেকটু কাল বেঁচেই থাকি
বাঁচার আনন্দে৷'
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
ব্লগীয় এফেক্ট কিনা জানি না, আজকে টিম থেকে সৌরভ ছাড়া সব বাঙালীই বাদ ...
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
সৌরভকেও বাদ দিয়ে দিত সাহস থাকলে। ক্রিকেটের নামে এই নির্লজ্জ বেসাতি আর অস্ট্রেলিয়ান চামারদের ছড়ি ঘোরানো দেখে বমি আসতেছে।
ব্লগার বাবা এগিয়ে চল।
আসল বা নকল - যা-ই হোক, ব্যাটার ব্লগ পড়ে মজা লাগলো
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
নতুন মন্তব্য করুন