হোমিওপ্যাথির ফিলোসফিতে দুটো এমন জিনিস আছে যেগুলো মেনে নেওয়া বর্তমান বিজ্ঞানের পক্ষে সম্ভব নয়। প্রথমত, "like cures like" - মানে, যে বস্তু বা রাসায়নিক আপনার অসুখের কারণ, সেই কারণ দিয়েই তৈরী হবে অসুধ। যেমন, বিছুটি পাতা দিয়ে তৈরী করা যেতে পারে চুলকানির অসুধ।
আরেকটি সমস্যা হল ডাইলুশন। হোমিওপ্যাথির ফিলোসফিতে, অসুধ যত বেশী দ্রবণে মেশানো হবে, তত তার শক্তি বাড়বে। অন্য ভাবে, দ্রবণে মূল উপাদানের ঘনত্ব কমলে, অসুধের শক্তিও বাড়বে!!
ভেবে দেখা যাক ঠিক কতটা ডাইলুশনের কথা বলা হচ্ছে। সাধারণভাবে, ১০ এর মাত্রায় ঘনত্ব প্রকাশ করা হয় আর তা বোঝাতে রোমান হরফ X ব্যবহৃত হয়। তার মানে দাঁড়ায়, 1X হল 1/10, 2X হল 1/100 আর 3X হল 1/1000 এরকম। সাধারণভাবে, 30X অসুধ বাজারজাত হয়, যাতে ১-এর পিঠে ৩০টা শূন্য পরিমাণ জলে এক পরিমাণ অসুধ মেশানো হয়। অতি উত্তম!!
তাও নাহয় মেনে নেওয়া যায়, কিন্তু কিভাবে বাজারে 30C অসুধ পাওয়া যায়? X যেমন 10 গুণ করে বাড়ে, C বাড়ে 100 গুণ করে। মানে, 1C হল 1/100, 2C হল 1/10000 আর 3C হল 1/1000000 এরকম। এবার ভেবে দেখুন 30C মানে কি দাঁড়ায়। ১ এর পিঠে ৬০টা শূন্য পরিমাণ জলে এক পরিমাণ অসুধ। যদি অসুধের পরিমাণ ১ অণূ ধরে নিই, তাহলে আমার ১ এর পিঠে ৬০টা শূন্য অণূর জল লাগবে সেটা মেশানোর জন্য। কতটা জল? পৃথিবীর ৩০ বিলিয়ন গুণ আকারের একটা পাত্র লাগে সেই জল রাখতে।
তার মানে, আপনি 30C Nux vomica অসুধ খেলে তাতে ১টি Nux অণুও না থাকার সম্ভাবনা খুবই বেশী। হোমিওপ্যাথির বিজ্ঞানীরা আবার নতুন একধরনের থিয়োরী আমদানি করেছেন - জল নাকি "মনে রাখতে" পারে তাতে কি মেশানো হয়েছিল। বলাই বাহুল্য, এরকম কোনো memory এখনো অবধি খুঁজে পাওয়া যায় নি। আর ঘনত্ব কমলে সেই মনে রাখার ক্ষমতা বেড়ে যায় - এমন ভাবাটাও অবাস্তব।
ভাবতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি আর এই চিকিৎসা ব্যবস্থা আমাদের দেশে ক্রমাগত জনপ্রিয় হয়ে চলেছে - শুধুমাত্র বিশ্বাসের ওপর ভর করে।
হোমিওপ্যাথি নিয়ে রিচার্ড ডকিন্সের এই ভিডিওটা না দেখলেই নয়। যারা হোমিওপ্যাথিতে বিশ্বাস করেন তারা অতি অবশ্যই দেখবেন ...
আরো সূত্র -
Qackwatch
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন