(McClatchy থেকে সংগৃহীত)
প্রথম পর্ব
এর পর থেকে----------
----- এখন প্রশ্ন এই "বেইল আউট" কর্মসূচি কি উদ্দেশ্যে এবং কেন নেয়া হচ্ছে? তাদের কাদের স্বার্থ সংরক্ষণ করছে, এবং প্রকৃত সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র এক্ষেত্রে কি ভূমিকা রাখতো? এখানে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য আরেকটি প্রশ্ন আসা দরকার, সেটা হচ্ছে: এই দেশগুলোর মাস জনগণ কেমন আছে, সেখানকার ওয়ার্কিং ক্লাসের বর্তমান অবস্থা কেমন? অর্থাৎ যে ট্যাক্সপেয়ারদের অর্থে "বেইল আউট" সেই ট্যাক্সপেয়াররা কেমন আছে? কিছু তথ্য দেখা যাক:
"The rapid rise in unemployment points to a U.S. recession."- Peter Kretzmer , Economist, Bank of America:
প্রথমে গৃহায়ণ খাতের দিকেই দৃষ্টি দেয়া যাক--
অক্টোবর ২৩ এ RealtyTrac প্রকাশিত এক সার্ভেতে দেখা যায় যে, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডিফল্টার নোটিশ, অকশন সেলস নোটিশ ও ব্যাংক রিপজেশন নোটিশপ্রাপ্ত আশুবন্ধের উদ্দেশ্যে ফাইলের সংখ্যা ৭ লক্ষ ৬৫ হাজার। যার ৭১% ই ফাইলবন্দী হয়েছে ২০০৭ এর থার্ড কোয়ার্টারে। এসবের মধ্যে ৬০% ই অবস্থান করছে ছয়টি স্টেটে- নেভাদা, ক্যালিফোর্নিয়া, ফ্লোরিডা, মিশিগান ও আরিজোনা। নেভাদায় এই হার সবচেয়ে বেশী- যেখানে প্রতি ৮২ টি হাউজিং প্রোপার্টির মধ্যে ১টি আশুবন্ধের জন্য ফাইলবন্দী হয়েছে।
RealtyTrac জানায় যে, সেপ্টেম্বর নাগাদ ৮১,৩০০ বাড়ি নিলামে তোলা হয়েছে, আগস্ট ২০০৭ হতে এ পর্যন্ত মোট ৮,৫১০০০ বাড়ি ঋণদাতারা অধিগ্রহণ করার জন্য অগ্রসর হয়েছে।
Credit Suisse এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর Rod Dubitsky বিজনেস উইককে জানিয়েছেন, ২০১২ সাল নাগাদ ৫০ লাখেরও বেশী আমেরিকান পরিবার তাদের বাড়ি হারাবে, আর ২০০৮ সালেই বাড়ি হারানো পরিবারের সংখ্যা এসে দাঁড়াবে প্রায় ১৬ লাখ ৯০ হাজার।
পরিষ্কারভাবে, যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীন গৃহায়ন বাজার মন্দার ভিতর দিয়ে যাচ্ছে, একইভাবে যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য উন্নত দেশসমূহও গৃহায়ণ খাতে মন্দার সম্মুখীন। ফলে, রেসিডেন্সিয়াল বা কমার্সিয়াল কনস্ট্রাকশনের সাথে যুক্ত সমস্ত সেক্টরই নিম্নগামী। চীনের পিভিসি পাইপ ম্যানুফ্যাকচারিং এরমধ্যেই ৩০% কমেছে, চীনের বৃহত্তম চারটি ইস্পাত কোম্পানী ২০% উৎপাদন কমিয়েছে। একইভাবে ইউরোপিয়ান গৃহ-নির্মাণ সামগ্রী প্রস্তুতকারকদের (যেমন CHR ও Michelmersh) ফ্যাক্টরী বন্ধ বা উৎপাদন কমাতে হচ্ছে।
অটো-ইণ্ডাস্ট্রিতে ডাউন-টার্ণ পরিষ্কারভাবেই এখন বিশেষ বিবেচনা ও আলোচনার বিষয়- বিশেষ করে জি৭ ভূক্ত দেশসমূহে এই ডাউন-টার্ণ উল্লেখযোগ্য। GM, Ford, Toyota, BMW, Daimler, Volkswagen, Audi, Porsche এবং GM ও Ford এর ইউরোপিয়ান subsidiary কোম্পানিসমূহ সকলেই তাদের কার্যক্রম সংকুচিত করা আরম্ভ করেছে। এই সংকোচন কেবল ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিটসমূহকে প্রভাবিত করছে না; বরং এটা ইস্পাত, গ্লাস, রাবার, ইলেকট্রনিক পার্টস সহ আরো অসংখ্য খাতের উপরেই তার প্রভাব ফেলছে। তাৎক্ষণিক ফল হচ্ছে বিভিন্ন প্ল্যান্ট ও ফ্যাক্টরী বন্ধ এবং লে-অফ। General Motors এর মধ্যেই তার ছয়টি ফ্যাক্টরী বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে যার পাঁচটি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত (জর্জিয়া, মিশিগান, নিউ ইয়র্ক, ওহিও, উইসকনসিন), সেই সাথে মেক্সিকোর Toluca এবং কানাডার Ontarioতেও প্ল্যান্ট বন্ধের ঘোষণা এসেছে। শুধু তাই নয়, GM জার্মানী, স্পেন, বৃটেন, পোল্যাণ্ড, সুইডেন এবং বেলজিয়ামেও ফ্যাক্টরী সাময়িক বন্ধ করছে।
প্রতিটি বৃহৎ প্ল্যান্ট বন্ধই আঞ্চলিক অর্থনীতিতেও 'ডাউন-টার্ণ'কেই প্রতিধ্বনিত করছে। এসেম্বলি প্ল্যান্ট বন্ধের সাথে সাথে পার্টস সরবরাহকারী ও পার্টস প্রস্তুতকারক কোম্পানী 'ডাউন-টার্ণ' হচ্ছে। GM Moraine ফ্যাক্টরীর সরবরাহকারী ফার্মের সংখ্যা ১০৩ টি, আবার অন্যদিকে GM ও অন্য ফার্ম তথা প্রতিষ্ঠানের সরবরাহকারী কোম্পানী। যুক্তরাষ্ট্রের National Automobile Dealers Association আশংকা করছে যে, আগামী বছর ৪০% এর বেশী ডিলারশিপ বন্ধ হয়ে যাবে। আর এসমস্ত কিছুর সরাসরি প্রভাব এসে পড়ছে শ্রমিকদের উপর, প্রতিটি 'ডাউন-টার্ণ' বা প্ল্যান্টের বন্ধ হওয়া মানেই হাজার হাজার শ্রমিকের বেকার হয়ে যাওয়া এবং টিকে যাওয়াদের মজুরী উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাওয়া। নিউ ইয়র্কের পূর্ব Syracuse অবস্থিত New Process Gear শ্রমিকদের আলটিমেটাম জানিয়েছে: "take a 45% wage cut or find the plant shuttered"। উল্টোদিকে বেকারের সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে আঞ্চলিক সরকারসমূহ ট্যাক্স ভিত্তি হারাচ্ছে এবং ছোট শহরসমূহ ধ্বংসের দাড়প্রান্তে।
হংকং এর শিল্পসমূহের ফেডারেশন ধারণা করছে চলমান সংকটের দরুন পরবর্তী ২৪ মাসে পার্ল রিভার ডেল্টা অঞ্চলের ২০% (১৪০০০) ম্যানুফেকচারার বন্ধ হয়ে যাবে। রাষ্ট্রীয় অর্থনীতিবিদদের হিসাব মতে বেকার শ্রমিকের সংখ্যা ৫২ থেকে ১৫০ মিলিয়নের মধ্যে উঠানামা করছে। গত এক বছরে সাংহাই স্টক মার্কেট ৬০% নেমেছে।
ইউএস গাড়ি-প্রস্তুতকারকেরা দেউলিয়াত্বের কিনারে এসে অটোশ্রমিকদের চাকুরীর উপর খড়গহস্ত হচ্ছে। জেনারেল মোটর (GM) গত ১৬ অক্টোবর তাদের তিনটি প্ল্যান্টে (একটি দেলাওয়ার ও বাকি দুটিমিশিগানে- পনটিয়াক ও ডেট্রোইট) ১৬০০ জন কর্মীর লে-অফ ঘোষণা করেছে। সাথে সাথে GM এও জানিয়েছে এই লে-অফের মধ্য দিয়ে Janesville, Wisconsin, Grand Rapids, Michigan এবং Moraine, Ohio এ প্ল্যান্ট বন্ধ করার ব্যাপারে তাদের ইতোমধ্যে নেয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন আরম্ভ হবে।
সাবেক এই industrial giant ২০০০ সাল থেকে এ পর্যন্ত তার অর্ধেক লোকবলকে ছাটাই করেছে, শ্রমিকের সংখ্যা ১,৩৩০০০ থেকে এখন ৭২,০০০ এ এসে দাঁড়িয়েছে। আগামী অল্প কিছু মাসের মধ্যে আরো লে-অফের ঘোষণা আসার কথা আশা করা যায়।
Chrysler এবং GM ফাইনান্সিয়াল সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে মার্জারের জন্য ধারাবাহিক আলোচনা শুরু করেছে। Chrysler অবশ্য Renault-Nissan এর সাথেও মার্জার তথা পার্টনারশিপ অপশন বিবেচনা করছে বা খতিয়ে দেখছে। এটি ২০০৭ এর শুরু থেকে এর মধ্যেই ২২,০০০ শ্রমিক ছাটাই করেছে, আগামী বছরে আরো কমপক্ষে ৪০০০ ছাটাই করবে।
এ বছর ইউএস অটো-কোম্পানীসমূহ থেকে বিতাড়িত শ্রমিকের সাংখ্যা এখন ৬০,০০০ পেরিয়েছে।
Chrysler এবং GM এর একীভূত হওয়া মানেই নিম্নে আরো ২০/৩০ হাজার শ্রমিকের চাকুরী হারানো। University of Michigan এর ব্যবস্থাপনা বিষয়ের অধ্যাপক Gerald Myers এর মতে: "It would be a bloodbath, Chrysler would be cut up into small pieces. GM would spit out the things it doesn’t want and hang onto the things it does want."
এরকম ছাটাই শুধু যুক্তরাষ্ট্রে নয়- অন্যান্য শিল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশসমূহেও শুরু হয়েছে। ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ জার্মানীর দুই বৃহৎ অটো-পার্টস প্রস্তুতকারক কোম্পানী "উল্লেখযোগ্য" সংখ্যায় লে-অফের ঘোষণা দিয়েছে। জার্মান অটো-জায়ান্ট Daimler এর স্টার্লিং ট্রাক ডিভিশন বন্ধ এবং অন্টারিও, কানাডা ও অরেগন রিজিয়নে প্ল্যান্ট বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে, যাতে ৩৫০০ শ্রমিক কাজ হারাবে। এক জরিপে দেখা গিয়েছে যে, ২০০৯ নাগাদ জার্মানীতে ৪ লাখের বেশী শ্রমিক ছাটাই হবে।
নিশান গত সপ্তাহে স্পেনের বার্সেলোনায় অবস্থিত প্ল্যান্টে ১৬৮০ চাকুরী ছাটাই এর কথা জানিয়েছে। গার্ডিয়ান পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ি স্প্যানিশ গাড়ি-প্রস্তুতকারক 'সিট' (এর মালিকানা Volkswagen এর) তার অন্যতম প্ল্যান্ট বার্সেলোনা থেকে আপাতত ৪৭০০ লে-অফ করবে। সাথে সাথে স্পেনের টায়ার-প্রস্তুতকারক কোম্পানী 'ব্রিজস্টোন' তাদের দুটি প্ল্যান্টের ৩৩০০ লোকবলের মধ্যে ২৮০০ কেই ছাটাই করার পরিকল্পনা করছে।
৫ সেপ্টম্বরে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ি যুক্তরাষ্ট্রে সরকারীভাবে স্বীকৃত বেকারত্বের হার আগস্টে বেড়ে হয়েছে ৬.১%, এই হার বিগত পরপর আট মাস ধরেই উর্ধমুখী। আগস্ট মাসে ৮৪,০০০ এরও বেশী লোক কাজ হারিয়েছে, যার মধ্যে ম্যানুফ্যাকচারিং থেকে শুরু করে রিটেইল ও কনস্ট্রাকশন সেক্টর আছে। অবশ্য এক অটো-প্রস্তুতকারক ও অটো-পার্টস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানই ৩৮,০০০ ছাটাই করেছে।
লেবার ডিপার্টমেন্টের রিপোর্ট হতে জানা যায়, গত ১২ মাসে ২.২ মিলিয়নেরও বেশী লোক কাজ হারিয়েছে এবং ৩১ আগস্ট, ২০০৮ এ যুক্তরাষ্ট্রের মোট বেকারের সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে ৯.৪ মিলিয়ন। গত ১২ মাসে লম্বা সময়ের বেকারের সংখ্যা (যারা ২৭ সপ্তাহ বা তার বেশী সময়ের জন্য কর্মহীন) ৫,৮৯০০০ বেড়েছে। কিন্তু সরকারী তথ্য আমাদের সম্পূর্ণ চিত্র দেয় না। লেবার ডিপার্টমেন্ট "ইনভলান্টিয়ার" পার্ট-টাইম জবকেও ফুল-টাইম কাজ হিসাবে গণনায় নিয়েছে। এই রিপোর্টে ফার্মের শ্রমিকেরা গণনায় বাদ পড়েছে, বাদ পড়েছে অলিপিবদ্ধ ইমিগ্রান্ট শ্রমিকেরা এবং সেই সাথে বাদ পড়েছে কমপক্ষে ১.৬ মিলিয়ন "ডিসকারেজড শ্রমিক" এবং ২.৩ মিলিয়ন কয়েদী।
উপরন্তু বেকারত্বের হার ৬.১% হচ্ছে জাতীয় গড়- কিন্তু ল্যাটিন ও আফ্রো-অ্যামেরিকান শ্রমিকদের ক্ষেত্রে এই হার আরো বেশী। কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে এই হার আগস্টে ১০.৬% পেরিয়েছে, গতবছরের তুলনায় অর্ধ মিলিয়ন কৃষ্ণাঙ্গ নতুন করে কর্মহীন হয়েছে। ল্যাটিন শ্রমিকদের মধ্যে এই হার ৮%।
কলেজ গ্রাজুয়েটদের মধ্যে বেকারত্বের হার গিয়ে দাঁড়িয়েছে ২.৭% এবং একটিও হাইস্কুল ডিপ্লোমা নেই এমন প্রাপ্তবয়স্ক লোকের ক্ষেত্রে এই হার ৯.৬% যা ১৯৯৬ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ। আর সিঙ্গেল মা যারা একই সাথে বেকার ও কোনরূপ সরকারের ওয়েলফেয়ার এসিসটেন্স থেকে বঞ্চিত- তাদের হার ৩৩% এ পৌঁচেছে।
• Chrysler গত ২৩ অক্টোবর ১৮২৫ জন লে-অফের ঘোষণা দিয়েছে।
• Goldman Sachs জানিয়েছে এটি তার লোকবল ১০% কমাবে, অর্থাৎ চাকুরী হারাবে ৩৩০০ জন।
• ফার্মাসিটিক্যল জায়ান্ট Merck তার লোকবলের ১২% ছাটাই এর ঘোষণা দিয়েছে।
• বায়োটেকনলজি কোম্পানী Maxygen তার লোকবলের প্রায় ৩০% ছাটাই করার ঘোষণা দিয়েছে।
• মানি ম্যানেজার Janus ক্যাপিটাল গ্রুপ তার লোকবলের ৯% ছাটাই করছে।
• Xerox গত ২৩ অক্টোবর তার লোকবলের ৫% (অর্থাৎ ৩০০০ জন) ছাটাই এর ঘোষণা দিয়েছে।
• মাইনিং যন্ত্রপাতি প্রস্তুতকারক Terex Corporation কয়েকশ' শ্রমিক ছাটাই করছে।
• United Parcel Service পরবর্তী বছরে উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় লে-অফের পরিকল্পনা করছে।
• Fidelity National Financial Inc. ১০০০ জন ছাটাই এবং ১০% এর বেতন-ভাতা কমানোর এর ঘোষণা দিয়েছে।
• ফাইনান্সিয়াল সারভিসেস গ্রুপ Popular Inc. ৬০০ লোকবল ছাটাই এবং যুক্তরাষ্ট্রের কমপক্ষে এক চতুর্থাংশ শাখা বন্ধ করছে।
• পেপসি কোম্পানীও ৩৩০০ শ্রমিক ছাটাই এর ঘোষণা দিয়েছে।
• গতবছরে কলসেন্টার চাকুরীতে ঘন্টা প্রতি মজুরী ছিল যেখানে ৯ ডলার, সেখানে এখন তা ঘন্টা প্রতি ৮.৫ ডলার।
• সুইডেনের Volvo AB অক্টোবরে ৮৫০ শ্রমিক ছাটাই এর কথা জানিয়েছে। সুইডেন ও বেলজিয়ামের ট্রাক ফ্যাক্টরী থেকে আরো ১৪০০ লে-অফের ঘোষণাও এসেছে।
• জার্মানীর Volkswagen তার ২৫০০০ অস্থায়ী শ্রমিকের প্রায় সবাইকে ছাটাই এর পরিকল্পনা করেছে।
• পোলিশ সরকারের হিসাব মতে তাদের ১২ লক্ষ শ্রমিক যারা বৃটেন ও আয়ারল্যাণ্ডে কাজ করে, তাদের প্রায় এক তৃতীয়াংশ (৪ লক্ষ) এবারে কাজ হারিয়ে হয় পোল্যাণ্ডে ফিরে আসবে নতুবা অন্য দেশসমূহে কাজের খোঁজে বেরুবে।
যুক্তরাষ্ট্রের লেবার ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে গত ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত 'unemployment insurance' এর জন্য জমা পড়া দরখাস্তের সংখ্যা মাত্র এক সপ্তাহেই ১৫,০০০ থেকে বেড়ে হয়েছে ৪,৭৮০০০। লেবার ডিপার্টমেন্ট এও জানিয়েছে যে, নন-ম্যানেজেরিয়াল কর্মীদের মজুরি একবছরে ১.৯% কমেছে। সাম্প্রতিক চিত্র এটাই প্রকাশ করে যে, শ্রমিক শ্রেণীর অবস্থা আগামীতে আরো করুণ হতে যাচ্ছে।
এবারে তাহলে দেখি, "বেইল আউট" কর্মসূচি কি কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে, এবং বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণে তা আদৌ কতোখানি ভূমিকা রাখতে পারছে বা আগামীতে আদৌ কোন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে কি না----------
(চলবে)
তথ্যসূত্র পরে সংযুক্ত করা হবে--------
মন্তব্য
আপনার লেখা প্রথম পেইজে খানিক অসুবিধা করছিল বিধায় ছবিটা সামনে এনে দিয়েছি। পোস্ট এডিট করতে হল বলে দুঃখিত।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
বাধ্য হয়ে লিংকটাকে ছোট করতে হল। দুঃখিত।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
আমার মনে হয় না এই 'বেইল আউট' আমেরিকাকে সমাজতন্ত্রের দিকে নিয়ে যাবে। এই দুরবস্থার কারণ পুঁজিবাদের কোন তাত্ত্বিক ত্রুটি নয়, বরং কিছু উল্লুকের অতিলোভ।
হাউজিং ক্রাইসিস হয়েছে ঋণ পাবার অযোগ্য লোকেদের ঋণ দেবার কারণে। অটো ইন্ডাস্ট্র ধ্বংস হয়েছে ফুয়েল এফিশিয়েন্ট গাড়ির বদলে বড় বড় ট্রাক-এসইউভি বানানোর ফলে। এগুলো দুর্বল, অদূরদর্শী ব্যবস্থাপনার ফল।
@ ইশতিয়াক ভাই
আমার তো মনে হয় বাজারকে তার নিজের নিয়তি নিজেই নির্ধারনের জন্য ছেড়ে দেয়ার যে ধারনা তাই পুঁজিবাদের মূলমন্ত্র। এবং বাজারের ক্রাইটেরিয়াই হল লোভ (speculation) এবং ঝুঁকি। তাহলে পুঁজিবাদের তাত্ত্বিক ত্রুটি না বলে কী বলবেন।
লেখা যেহেতু উপসংহারে আসেনি সেহেতু এখনই মন্তব্যেরও উপসংহার দেয়া যাচ্ছে না। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে পুঁজিবাদ বা সমাজতন্ত্র নয়, অন্য কোন নতুন তত্ত্ব হয়তো পরিচালিত করবে ভবিষ্যৎ বিশ্বব্যবস্থাকে।
___________________
সহজ কথা যায়না বলা সহজে
স্পেকুলেশন, লোভ, বেশি বেশি মুনাফার খোঁজ, ইত্যাদি সবই বাজার অর্থনীতির অনুষঙ্গ। তবে আমেরিকার অর্থনৈতিক ব্যবস্থা পরিবর্তণের কথা এল দেখে বলছিলাম। আমিও উপসংহারের অপেক্ষায় আছি। একটা উদাহরণ দেই।
একবার একটা খেলায় এক বন্ধু ভুল করেছিল। সেই ভুলের জন্য খেলায়ও হেরেছিল। হারার পর তার এক টিমমেটকে বলেছিল, "ব্যাপার না, পার্ট অফ দ্য গেম!"
জবাবে সেই টিমমেট বন্ধু বলেছিল, "বোকামি ইজ নট আ পার্ট অফ দ্য গেম!"
বিশেষ করে অটো ইন্ডাস্ট্রি ও হাউজিং ক্রাইসিস নিয়ে আমার ধারণা তেমনটাই। হাতে গোণা জনা বিশেক মানুষ একটু হুঁশবোধ কাজে লাগিয়ে ব্যবসা করলেই এগুলো হত না। একই কথা সোভিয়েত রাশিয়ার বেলায়ও প্রযোজ্য। আমি সেই দিকটায়ই ইঙ্গিত করছিলাম। সোভিয়েত রাশিয়ার পতনকে যেমন আমি সমাজতন্ত্রের ব্যর্থতা মনে করি না, তেমনি আমি এই মন্দাকে পুঁজিবাদের ব্যর্থতা মনে করি না। অতি-সরলীকরণের দোষে দুষ্ট দুটোই।
চিত্রটা ভয়াবহ।
এখন হয়তো আমরা সরাসরি এর আঁচ টের পাচ্ছি না, তবে যখন বেকারদের হাতে থাকা সঞ্চয় শেষ হয়ে যাবে, তখন তারা কি করবে?
আগামী ছ'মাসে পৃথিবীর অবস্থাটা দেখতে কেমন হতে পারে?
নতুন মন্তব্য করুন