বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র টিফাচুক্তি কিংবা দিন বদলের পয়লা গান

দিনমজুর এর ছবি
লিখেছেন দিনমজুর [অতিথি] (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৫/০২/২০০৯ - ৩:৫১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

Trade and Investment Framework Agreement বা TIFA চুক্তি বিষয়ে বেশ অনেকদিন ধরেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের শাসক শ্রেণীর কথা-বার্তা চলছে। প্রথমে ২০০৩ সালের অগাষ্ট মাসে, এর পর ২০০৪ সালের মার্চ মাসে এবং সর্বশেষ ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে টিফা চুক্তির খসড়া নিয়ে আলোচনা চলে। আওয়ামী সরকার সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই টিফা চুক্তি নিয়ে আবারও নতুন করে কথা বার্তা শুরু হয়। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারী মার্কিন এসিস্টেন্ট সেক্রেটারী অব স্টেট রিচার্ড বাউচার বাংলাদেশে আসবে। বাংলাদেশে বাউচারের অন্যতম এজেন্ডা হলো এই টিফা চুক্তি। এর আগে বাণিজ্য মন্ত্রী ফারুক খান মার্কিন রাষ্ট্রদূত মরিয়ার্টির কাছে টিফা চুক্তির বিষয়ে বর্তমান সরকারের আগ্রহের কথা জানিয়ে দিয়েছেন। সর্বশেষ, ৪ ফেব্রুয়ারী তিনি আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশ(অ্যামচেম) এর মাসিক মধ্যাহ্নভোজ সভায় বলেছেনঃ “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংগে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ রূপরেখা চুক্তি (টিফা) হওয়ার বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত। এখন মন্ত্রীসভার অনুমোদনের অপেক্ষায়। টিফা হলে বাংলাদেশী জনগণ উপকৃত হবে ···”। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের এরকম একট চুক্তি হতে যাচ্ছে জনগণকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে, জাতীয় সংসদকে পাশ কাটিয়ে। বলা হচ্ছে চুক্তি হলে দেশের জনগণ উপকৃত হবে কিন্তু খসড়া যেটার উপর ভিত্তি করে আলোচনা শুরু হবে, সেটাই প্রকাশ করা হচ্ছে না। আমরা মনে করি এ ধরনের একটা চুক্তি হওয়ার আগে জাতীয় সংসদে বিতর্ক হওয়া প্রয়োজন, জনগণের মতামত গ্রহণ প্রয়োজন, প্রয়োজন ব্যপক ভিত্তিতে তা আলোচনা হওয়ার। অথচ সেটা না করে সরকার যেনতেনভাবে আমাদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিচ্ছে সম্পূণ অগণতান্তিক একটা চুক্তি। কে জানে এটাই হয়ত এদের দিন বদলের নমুনা !

এটা ২০০৫ সালে তৈরীকৃত TIFA Draft। এইবার তাতে আরো কিছু আর্টিকেল যুক্ত কিংবা বিযুক্ত হয়েছে কিনা তা আমরা এখন পর্যন্ত জানি না। জানি না আমাদের প্রতি সেই কৃপা এই মহাপরাক্রমশালী ডিজিটাল সরকার করবে কিনা। অথচ এই চুক্তির ডিজিটাল কপি প্রকাশ করে ডিজিটাল আলোচনার মাধ্যমে একটা ডিজিটাল সিদ্ধান্ত নেয়া কতই না সহজ ছিল ! ২০০৫ সালের জানুয়ারী মাসে চুক্তির সর্বশেষ যে খসড়াটি করা হয়েছিল ফেব্রুয়ারী মাসের আলোচনার জন্য, সেটি ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করে আমরা এখানে অনুবাদ করছি।

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ টিফা চুক্তি(খসড়া)

(৩০ জানুয়ারী ২০০৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যকার সম্ভাব্য Trade and Investment Framework Agreement
বা TIFA চুক্তির খসড়া)

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার-
১) দুই দেশের মধ্যকার বন্ধুত্বের বন্ধন ও সহযোগিতার চেতনা উন্নত করার আকাঙ্খা পোষণ করে;
২) ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য ও বিনিয়োগ এর মাধ্যমে উভয় দেশের জনগণের বৃহত্তর কল্যানের জন্য কাজ করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ;
৩) উভয় দেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক আন্ত:সম্পর্ক আরো এগিয়ে নেয়ার আকাঙ্খা পোষণ করে;
৪) আন্তর্জতিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগে স্বচ্ছতা বৃদ্ধির আকাঙ্খা পোষণ করে;
৫) আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের অবাধ পরিবেশ তৈরীর গুরুত্বকে স্বীকৃতি প্রদান করে;
৬) উভয় পক্ষের জন্যই আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কার্যক্রম বৃদ্ধি লাভজনক এবং সংরক্ষণবাদী বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা উভয় পক্ষকেই এইসব সুফল থেকে বঞ্চিত করে- এই বিষয়টিকে স্বীকৃতি প্রদান করে;
৭) বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায়(WTO) উভয় দেশের সদস্য পদের বিষয়টিকে বিবেচনায় রেখে এবং WTO এর প্রতিষ্ঠাতা চুক্তি Marrakesh Agreement এবং অন্যান্য চুক্তি ও সমোঝাতা এবং এর সাথে সম্পর্কিত ও এর পৃষ্ঠপোষকতার আওতায় থাকা অন্যান্য ইন্সট্রুমেন্ট ইত্যাদির আওতার মাঝে প্রত্যেক পক্ষের নিজস্ব অধিকার ও বাধ্যবাধকতার বিষয়গুলোকে লক্ষ্য রেখে;
৮)প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বাণিজ্য বিকাশ, প্রযুক্তি উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন তরান্বিত করা ইত্যাদির জন্য দেশী এবং বিদেশী ঊভয় ধরণের বেসরকারী বিনিয়োগের আবশ্যিক ভূমিকার বিষয়টিকে স্বীকৃতি প্রদান করে;
৯) দুই দেশের মধ্যকার বেসরকারী খাতের কণ্ট্রাক্ট কে উৎসাহিত করা এবং সুবিধাদি দেয়ার ইচ্ছা পোষণ করে;
১০) বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ক সমস্যাগুলোর যত দ্রুত সম্ভব সমাধানের আকাঙ্খাকে স্বীকৃতি প্রদান করে;
১১) বিনিয়োগ বিষয়ে পারস্পরিক অনুপ্রেরণা এবং সংরক্ষণের বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মাঝে মার্চ ১২, ১৯৮৬ সালে স্বাক্ষরকৃত চুক্তির (Bilateral Investment Treaty) স্বীকৃতি প্রদান করে;
১২) এই চুক্তি প্যারাগ্রাফ ১১ তে উল্লেখিত চুক্তির আওতায় উভয় পক্ষের অধিকার ও বাধ্যবাধকতাগুলোকে অস্বীকার করে না;
১৩) দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক ও উভয়ের অর্থনীতিতে সেবা খাতের বাণিজ্য বৃদ্ধির গুরুত্ব বেড়ে যাওয়ার বিষয়টিকে স্বীকৃতি প্রদান করে;
১৪) উভয় দেশের বাজারে প্রবেশের সুবিধাদি বৃদ্ধি করার জন্য অ-শুল্ক বাধা দূর করার প্রয়োজনীয়তা এবং এর ফলে পারস্পরিক সুফল পাওয়ার বিষয়টিকে বিবেচনায় রাখে;
১৫) বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তির অধিকার বা intellectual property rights (Trade-Related Aspects of Intellectual (Trade-Related Aspects of Intellectual Property Rights (TRIPS) বিষয়ক চুক্তি বা অন্যান্য বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তি রক্ষার প্রচলিত নীতি ) এর পর্যাপ্ত এবং কার্যকর প্রয়োগ এবং সুরক্ষার গুরুত্ব স্বীকার করে।
১৬) প্রত্যেক দেশের নিজ নিজ শ্রম আইনের পর্যাপ্ত ও কার্যকর প্রয়োগ এবং সুরক্ষা এবং আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত শ্রমিক ব্যবস্থাপনা (labor standards) আরও ভাল ভাবে মেনে চলা গুরুত্ব স্বীকার করে;
১৭) টেকসই উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় বাণিজ্যিক এবং পরিবেশবিষয়ক নীতি মালা নিশ্চিত করতে ইচ্ছা পোষণ করে;
১৮) আকাঙ্খাকা পোষণ করে যে এই কাঠামোগত চুক্তি (Framework Agreement ) দোহা উন্নয়ন এজেন্ডা সফলভাবে পরিপূর্ণ করার লক্ষে যৌথ প্রচেষ্টা জোরদার করার মাধ্যমে বহুপাক্ষিক বাণিজ্যকে আরও শক্তিশালী করবে; এবং
১৯) উভয় দেশের বাণিজ্য উদারীকরণ ও নিজেদের মধ্যকার বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য দ্বি-পাক্ষিক প্রকৃয়া প্রতিষ্ঠা উভয় দেশের জন্য লাভজনক- এই বিষয়টিকে বিবেচনায় রাখে।

এ লক্ষ্যে উভয় পক্ষ নিম্নোক্ত বিষয়ে একমত পোষণ করছেঃ

আর্টিকেল একঃ
চুক্তিকারী পক্ষদ্বয় এই চুক্তির আওতায় নিজ নিজ দেশের বিনিয়োগ পরিস্থিতি উন্নয়নের মাধ্যমে পণ্য ও সেবা খাত সম্প্রসারিত করবে। তারা নিজেদের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও চাহিদা মোতাবেক সুদূরপ্রসারী উন্নয়নের লক্ষ্যে পণ্য ও সেবা খাত অধিকতর নিরাপদ ও দ্বি-পাক্ষীয় বাণিজ্য সহজতর করার উদ্দেশ্যে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

আর্টিকেল দুইঃ
চুক্তিকারী পক্ষদ্বয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত একটি ‘কাউন্সিল’ গঠন করবে। কাউন্সিলে দুই দেশেরই প্রতিনিধিত্ব থাকবে। বাংলাদেশ পক্ষের সভাপতি থাকবেন বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্বকারী হবে United States Trade Represntative (USTR)। দুই পক্ষই তাদের যথাযথ পরিস্থিতি ও প্রয়োজনানুযায়ী সরকারের অন্যান্য অঙ্গ-সংগঠনগুলো থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা গ্রহণ করতে পারবে। কাউন্সিল নিজ কাজের সুবিধার্থে ঐকমত্য সহকারে অথবা আলাদাভাবে Joint Working Group প্রতিষ্ঠা করতে পারবে।

আর্টিকেল তিনঃ
কাউন্সিলের উদ্দেশ্যাবলী হবে নিম্নরূপঃ
১· বাণিজ্য ও বিনিয়োগ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ, বাণিজ্য সম্প্রসারণের ক্ষেত্র সনাক্তকরণ এবং যথাযথ ফোরামে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ।
২· চুক্তির আওতার বাইরে বিশেষ বাণিজ্য কিংবা বিনিয়োগ ক্ষেত্রে পক্ষদ্বয়কে চুক্তির নিয়মাবলী অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণে সাহায্য করা।
৩· দ্বি-পাক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে বাধাসমূহ চিহ্নিতকরণ ও অপসারণ
৪· কাউন্সিলের সাথে যুক্ত বিষয়ে চুক্তিকারী পক্ষদ্বয়কে যথাযথ ক্ষেত্রে প্রাইভেট সেক্টর থেকে প্রয়োজনীয় উপদেশ গ্রহণে সাহায্য করা।

আর্টিকেল চারঃ
দ্বি-পাক্ষীয় এই চুক্তির আওতার বাইরে কোন পরিস্থিতির উদ্‌ভব হলে কাউন্সিল পক্ষদ্বয়ের যে কোন একটির অনুরোধে সুবিধাজনক সময়ে ও স্থানে আলোচনায় বসতে পারে। কোন অবস্থাতেই কোন পক্ষ এককভাবে এমন কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না যা দ্বি-পাক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।

আর্টিকেল পাঁচঃ
এই চুক্তি অভ্যন্তরীণ যে কোন অধিকার ও দায়বদ্ধতা সম্পর্কিত যে কোন এক পক্ষের পূর্বনির্ধারিত কোন আইনের কিংবা তৃতীয় কোন এক পক্ষের সাথে করা চুক্তির সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হতে পারবে না।

আর্টিকেল ছয়ঃ
চুক্তি স্বাক্ষরের দিন থেকেই এটা দুই দেশে কার্যকর বলে গণ্য করা হবে।

আর্টিকেল সাতঃ
এই চুক্তি দ্বি-পাক্ষীয় সম্মতিতে বাতিল না হওয়া পর্যন্ত কিংবা এক পক্ষ দ্বারা অপর পক্ষকে ছয় মাসের পূর্ব নির্ধারিত নোটিশ ব্যতিরেকে, য়থাশক্তিতে বলবৎ থাকবে।

সূত্রঃ
http://www.bilaterals.org/article.php3?id_article=1361


মন্তব্য

হাসিব এর ছবি

১৫ নাম্বারে এসেই তব্ধা খাই বারে বারে ।

দিগন্ত এর ছবি

১৫ নম্বরটাই একমাত্র গলার কাঁটা বলে মনে হয়। কিন্তু পৃথিবী এদিকেই এগোচ্ছে। কিছু করার নেই, তবে এরকম হলে নীলক্ষেত উঠে যাবে মন খারাপ । এটা আমেরিকার সাথে না চুক্তি করলেও পরে আন্তর্জাতিক চুক্তি মাধ্যমে ঘাড়ে চাপবেই।


হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

জিজ্ঞাসু এর ছবি

intellectual property rights যত কার্যকর হবে ততই আমাদের মত দুর্বল অর্থনীতির দেশের সমস্যা। তাতে উপকার বেশি পাবে যুক্তরাষ্ট্রই। এ বিষয়ে কঠোর হলে আমাদের সমস্যা আছে। এমনকি আমরা নিজেদের indigenous অনেক কিছুর ব্যাপারেও দ্বিতীয় পক্ষের আপত্তির মধ্যে পড়তে পারি। নীলক্ষেত উঠে গেলে ব্যাপক সমস্যা দেখা দিবে। শুধু যারা সেখানে ব্যবসা করে খায় তাদেরই না, তাদের খরিদ্দাররাও অসুবিধায় পড়বে।

___________________
সহজ কথা যায়না বলা সহজে

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

পত্রিকায় পড়লাম যে সংসদে আলোচনা হবে। দেখি, কী হয়।

প্রফাইল [অতিথি] এর ছবি

২০০৫ সালে কমার্স মিনিস্ট্রি-তে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে টিফা আলোচনায় ছিলাম। হোমড়াচোমড়া বিশেষ-অজ্ঞরা ১৫ নম্বরকে গলার কাঁটা মনে করেননি। তারা বলেছেন এলডিসি হিসেবে আমরা আরো ক'বছর পাইরেটেট সফটয়্যারগুলো নাকি ব্যবহার করতে পারব ইত্যাদি ইত্যাদি। তাঁদের একজন বেশ নড়ে চড়ে বসলেন এটা দেখে:

বাংলাদেশ পক্ষের সভাপতি থাকবেন বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্বকারী হবে United States Trade Represntative (USTR)।

কি, এত্ত বড় অসম্মান! আমাদের মন্ত্রী বসলে বসবেন ওদের মন্ত্রী/সহকারী মন্ত্রী অথবা নিদেনপক্ষে একজন সচিবের সাথে।

পিঠের চামড়া যাক, গলায় টাইখানা থাকলেই হল।

ড. অর্ডিনারি রায়হান "আন্তর্জতিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগে স্বচ্ছতা বৃদ্ধির আকাঙ্খা পোষণ করে" -এর "স্বচ্ছতা" নিয়ে প্রশ্ন তুলে পরে পত্রিকায় নানা কথা বলেছিলেন।

চুক্তিটা ওই বছরই হয়ে যেত কারণ এই ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্টে অন্যান্য এগ্রিমেন্টের মত ঝামেলা ছিলনা, মানে আলোচনার সময় বিভিন্ন মহল থেকে অন্যান্য সময় যেরকম আপত্তি আসে তেমনটি আসেনি। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহে ভাটা পড়লে বিষয়টি তখন থেমে যায়।

আর আমি ব্যক্তিগতভাবে চুক্তিটির পক্ষে। কারণ ওরকম চুক্তি আরো কিছু স্পেসিফিক ফৃ ট্রেড ও বিনিয়োগ চুক্তির পথ তৈরি করবে যাতে আখেরে, যদি মাথামোটা নেতৃত্ব গোলমাল না পাকায় তাহলে, বাংলাদেশের সার্বিকভাবে লাভ। ভেবে দেখুন, বছর বছর আমরা শুধু ট্রেড লবির জন্যই সিনেটরদের কত্ত পয়সা দিই।

পজিটিভলি নিলে আর সুবিধে আদায় করার মত বুদ্ধিমত্তা এবং মানসিকতা থাকলে এ চুক্তি আমাদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে আসতে পারে।

ফুটনোট: অনেককে দেখেছি মুখে মুখে মার্কিনের চোদ্দপুরুষ উদ্ধার করতে কিন্তু ডলার হাতে পেলে সব চুপচাপ। সিটিজেনশিপ ভিসা নিয়ে বিপ্লবী ঠিকই মার্কিন মুলকে পাড়ি জমাতে দ্বিধা করেন না।

দিনমজুর এর ছবি

আর আমি ব্যক্তিগতভাবে চুক্তিটির পক্ষে। কারণ ওরকম চুক্তি আরো কিছু স্পেসিফিক ফৃ ট্রেড ও বিনিয়োগ চুক্তির পথ তৈরি করবে যাতে আখেরে, যদি মাথামোটা নেতৃত্ব গোলমাল না পাকায় তাহলে, বাংলাদেশের সার্বিকভাবে লাভ।

আপনি ব্যাক্তিগত ভাবে টিফা চুক্তির পক্ষে অবস্থান নিতেই পারেন, অনেকেই অনেক কারণে অনেক কিছুর পক্ষাবলম্বন করে। কিন্তু ঠিক কি কারণে আপনি মনে করছেন টিফা চুক্তির মাধ্যমে ‍"আরো কিছু স্পেসিফিক ফৃ ট্রেড ও বিনিয়োগ চুক্তির পথ তৈরি " র মাধ্যমে বাংলাদেশ 'সার্বিকভাবে' লাভবান হবে বিষয়টা একটু পরিস্কার করলে বুঝতে সুবিধা হতো। আমি তো মনে করি টিফা চুক্তিকে সামনে রেখে বেশ কিছু বিষয়ে কিছু প্রশ্ন তোলা প্রয়োজন যেমনঃ বাংলাদেশের মত একটি দেশ বহুপাক্ষিক চুক্তির বদলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রর মত একটি পরাশক্তির সাথে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি করতে যাবে কি যাবে না, যদি যায় তাহলে তার মূল উদ্দেশ্য ও ভিত্তি কি হবে, সে সব চুক্তি করার প্রক্রিয়া কি হবে, জনগণের মতামত কিভাবে মূল্যায়িত হবে ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হওয়া প্রয়োজন। আপাতত আপনার অবস্থানের সাথে দ্বিমত পোষণ করে চুক্তির খসড়া বিষয়ে কয়েকটি কথা বলে রাখা জরুরী মনে করছি:

১) আর্টিক্যাল ৮, ৯ ও ১৩ মিলিয়ে পড়লে বোঝা যায় বাংলাদেশের সেবা খাত মার্কিন বেসরকারী পুজির বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবহন, জ্বালানী, বন্দর, ডাক ও যোগাযোগ খাত এমন শক্তিশালী হয়ে যায়নি যে মার্কিন বিনিয়োগকারীদের সাথে প্রতিযোগীতায় টিকতে পারবে। এই সব সেবা খাতে আমাদের মোট শ্রম শক্তির ২১.৪০ ভাগ নিয়োজিত এবং মোট দেশজ উতপাদনের ৪১.৩৭ ভাগ আসে এখাত থেকে। টিফা চুক্তি হলে এসবই চলে যাবে মার্কিন পুজি-বিনিয়োগ কারীদের হাতে, এদের মুনাফার স্বার্থে কাজ হারাবে বিপুল সংখ্যক শ্রমিক।

২) ১৪ নং পয়েন্ট এর মানে হলো বাংলাদেশ এবং আমেরিকার বাজার পরস্পরের কাছে উন্মুক্ত করে দেয়া। এর আগের বিশ্ব বানিজ্য সংস্থার চুক্তি অনুসারে আমেরিকার মত উন্নত দেশগুলো বাংলাদেশের মতো স্বল্পন্নুত দেশ গুলোকে বিশেষ ব্যাবস্থায় ৯৭% বাজার উন্মুক্ত করে দেয়ার কথা। কিন্তু আমেরিকা ৩% এর সুযোগ গ্রহণ করে বাংলাদেশের রপ্তানী পণ্যের উপর বিভিন্ন অ-শুল্ক বাধা আরোপ করে রেখেছে। এখন এই ৩% বাজার সুবিধার বিনিময়ে বাংলাদেশকে ১০০% বাজার খুলে দিতে হবে। এখন বাংলাদেশের মত একটি দেশ তার উদীয়মান শিল্পগুলোকে রক্ষা করার জন্য বিভিন্ন অ-শুল্ক বাধা আরোপ করবে এটাই স্বাভাবিক। আজকের শিল্পন্নোত দেশগুলো এ অবস্থানে এসেছে কিন্তু বাজার সংরক্ষণের নীতির মাধ্যমেই।নিজেরা যে পথ অবলম্বন করেছে, বাংলাদেশের মত দেশকে তারা তার উল্টোটি করতে বাধ্য করছে।আমরা মনে করি বাজার উন্মুক্ত করে দেযার কোন চুক্তি বাংলাদেশের করা মানে হলো নিজের পায়ে কুড়াল মারা।

৩) ১৫ নং পয়েন্ট হলো টিফা চুক্তির মধ্যে ট্রিপস চুক্তির কাজ আদায় করে নেয়া। অথচ বাংলাদেশ সহ অন্যান্য এলডিসি দেশগুলো ডব্লিউ টি ও এর আওতায় ২০১৩ সাল পর্যন্ত ট্রেডমার্ক, কপিরাইট, পেটেন্ট ও বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তি সম্পর্ক আইনের আওতার বাইরে থাকার সুযোগ পেয়েছে। আর ফার্মাসিউটিক্যালসগুলো পেয়েছে ২০১৬ সাল পর্যন্ত। টিফা চুক্তি সেই সব বহুপাক্ষিক চুক্তির তুলনায় অগ্রাধিকার পাওয়ার ফলে বাংলাদেশ বরং আরো ক্ষতিগ্রস্থ হবে। পরিস্কার বলে দেয়া যায় টিফা চুক্তি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের ফার্মাসিউটিক্যালস, কম্পিউটার-সফ্টওয়ার খাত সহ( নীল ক্ষেত তো বটেই) বিভিন্ন শিল্প আমেরিকার কম্পানিগুলোর পেটেন্ট, কপিরাইট, ট্রেডমার্ক ইত্যাদির বহন করতে করতে দেউলিয়া হয়ে যাবে।

৪) ১৬ এবং ১৭ নং পয়েন্টের শ্রম আইন এবং পরিবেশ বিষয়ক নীতিমালা আপাত দৃষ্টিতে ভালো মনে হলেও এগুলোর মাধ্যমে মূলত নীতিগত ভাবে আমেরিকা তার বাজার যেসব ক্ষেত্রে খুলে দেবে, কার্যক্ষেত্রে সে সব খাতে বাংলাদেশের পণ্য প্রবেশে বাধা আরোপে বিভিন্ন ধরনের অজুহাত তৈরী করবে। যে দেশ একবছরের মধ্যে বিনা নোটিশে লাখ লাখ শ্রমিক ছাটাই করাটা ব্যাবসায়ির স্বাধীনতা বলে গণ্য হয় এবং যে দেশ কোন বহুপাক্ষিক পরিবেশ চুক্তি মেনে নেয় না, সেই আমেরিকার মুখে শ্রম আইন ও পরিবেশ বিষয়ক নীতি মালার কথা ভুতের মুখে রাম নাম এর মতই শোনায়।

ফুটনোট: অনেককে দেখেছি মুখে মুখে মার্কিনের চোদ্দপুরুষ উদ্ধার করতে কিন্তু ডলার হাতে পেলে সব চুপচাপ। সিটিজেনশিপ ভিসা নিয়ে বিপ্লবী ঠিকই মার্কিন মুলকে পাড়ি জমাতে দ্বিধা করেন না।

বুঝলাম না, আমেরিকার সাথে টিফা চুক্তির পক্ষাবলম্বন করতে করতে কেন আপনি ফুটনোটে হঠাত এই বিষয়টির অবতারণা করলেন? ধরে নিলাম কোন কোন বিপ্লবী মুখে মার্কিন বিরোধীতার কথা বলে পরে ডলার পেয়ে চুপ মেরে গেল, তাতে কি হলো-- মুখে এবং কাজে উভয় উপায়েই মার্কিন স্বার্থের পক্ষাবলম্বনের অযুহাত পাওয়া গেল?

দিগন্ত এর ছবি

সবই তো বুঝলাম কিন্তু এই চুক্তি তো আজ বললেই আজ কার্যকর হবে না, ট্রিপসের মত এটা থেকেও কিছু সময় কেনা যেতে পারে। ধরুন ১০ বছর নিলেন আই পি আর এর জন্য। তারপরে? তারপরেও তো ক্ষতি কিছু কমে না। আজ থেকে যদি একটু একটু করে ব্যবস্থা নেন, তবে দশ বছর পরে ধাক্কা কম খাবেন।

ডাব্লিউ টি ও র খসড়া নীতি অনুসারে পালটা ব্যবস্থা নেওয়া জায়েজ। মানে ধরুন আমেরিকা বলল যে বাংলাদেশ আই পি আর কার্যকর না করলে বাংলাদেশের গারমেন্টসের ওপর ৩০% হারে অতিরিক্ত শুল্ক চাপানো হবে। সেক্ষেত্রে কি করার থাকবে? নীলক্ষেতের পক্ষে টিঁকে থাকা এমনিতেই সমস্যার হবে, আগে থেকে ব্যবস্থা নিলে ধীরে ধীরে ব্যবসা পথে আসবে, একদিনে ব্যবস্থা নিলে নীলক্ষেতও যাবে গারমেন্টসও ধাক্কা খাবে। এখনই ভাবার সময় ...


হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

প্রফাইল [অতিথি] এর ছবি

অপ্রয়োজনীয় বিতর্কে যেতে চাই না। টিফা কোন সুনির্দিষ্ট চুক্তি নয়, এটি সাধারণ চুক্তি। এ ধরনের কাঠামোগত চুক্তি অন্যান্য চুক্তির পথ উন্মুক্ত করে। টিফা করলেই আপনি যে ফলাফলগুলোর কথা বলছেন সেগুলো শান্তিনগরের জ্যোতিষীর ভবিষ্যদ্বাণীর মত শোনায়। সুনির্দিষ্ট কোন ভবিষ্যত দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ চুক্তির আওতায় যে ধারাগুলো থাকবে সেগুলোর ভিত্তিতে কি কি ফলাফল আসবে তা টিফা থেকেই বলা যায় না। একটা উদাহরণ দিই। বাংলাদেশ ২০০৪ সালে তার পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গে মুক্তবাজার অঞ্চল গঠনের জন্য ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট করে। এর ফলে কিন্তু দেশগুলো সত্যি সত্যি বাজার খুলে দেয় নি। এর জন্য সুনির্দিষ্ট ফৃ ট্রেড এগ্রিমেন্ট করতে হচ্ছে। অনেক খাটুনি যাচ্ছে সব পক্ষের। আছে অনেক শর্ত, নেগেটিভ লিস্ট, কমপেনসেশন ইত্যাদি।

আর অবস্থা সুবিধের নয় দেখলে কিন্তু বাংলাদেশ ছ'মাসের নোটিশেই চুক্তিটি রদ করতে পারে। আর বাংলাদেশের জন্য সুবিধে আদায় করতে চাইলে চাই মেধা, সদিচ্ছা, আন্তরিকতা আর দেশপ্রেম।

"... মুখে এবং কাজে উভয় উপায়েই মার্কিন স্বার্থের পক্ষাবলম্বনের অযুহাত পাওয়া গেল?" ইত্যাদি

মানুষ আজকাল মরুতে শস্য ফলাচ্ছে। চুরি করে নীলক্ষেত বানিয়ে আর কদিন? নিজেরা ত দেশের প্রেমে মজে মজে দেশকে বিষাক্ত আর অনুপযোগী করে তুলেছি। আমাদের যে ভৌগোলিক অবস্থান আর মাটি, তাতে ত' দেশটির এদ্দিনে সিঙ্গাপুরের চাইতে উন্নত হবার কথা। দেশের স্বার্থ কে কবে কিভাবে উদ্ধার করেছে তা জানার জন্য মনে হয় গবেষণা প্রকল্প হাতে নিতে হবে।

দিনমজুর এর ছবি

টিফা কোন সুনির্দিষ্ট চুক্তি নয়, এটি সাধারণ চুক্তি। এ ধরনের কাঠামোগত চুক্তি অন্যান্য চুক্তির পথ উন্মুক্ত করে।

ঠিকই বলেছেন, টিফা অন্যান্য চুক্তির পথ উন্মুক্ত করে আর সেটা টিফার থেকেও ভয়ংকর- Free Trade Agreement (FTA).
টিফা করলেই আপনি যে ফলাফলগুলোর কথা বলছেন সেগুলো শান্তিনগরের জ্যোতিষীর ভবিষ্যদ্বাণীর মত শোনায়।

আপনি কোথায় কোন মরুতে শস্য ফলানো হচ্ছে সে খবর রাখেন কিন্তু খবর রাখেন না বা রাখতে চাননা টিফা চুক্তি ব্যবহার করে কোথায় কোন দেশকে কি করতে বাধ্য করা হচ্ছে- আপনার কাছে তো স্রেফ ভবিষ্যত বাণী মনে হতে ই পারে। থাইল্যান্ড টিফা চুক্তি করে ২০০২ সালের অক্টোবরে। চুক্তি স্বাক্ষরের পর থেকেই থাইল্যান্ডকে বাধ্য করা হতে থাকে আমেরিকার কর্পোরেট মনোপলির স্বার্থে এর বিভিন্ন সেবা খাত বেসরকারী করে দিতে।Electricity Generating Authority of Thailand (EGAT) বেসরকারী করণের উদ্যোগ নেয়া হয়। শুধু তাই নয়, EGAT বিক্রির পরমর্শক দের মধ্যে অন্যতম কর্পোরেশন Morgan Stanley, Citigroup and JP Morgan Chase and Co. অন্যান্য রাষ্ট্রায়াত্ব প্রতিষ্ঠান যেমন Metropolitan Waterworks Authority, Provincial Waterworks Authority, the Government Pharmaceutical Organization, the Port Authority of Thailand, the Expressway and Rapid Transit Authority of Thailand ইত্যাদি বিক্রি করে দেয়ার উদ্যোগ নেয়। জনগণের তীব্য আন্দলন সংগ্রাম এর কারণে এগুলো এখন্ও বাস্তবায়ন করতে পারেনি। শুধু তাই নয়, ১৯৯৯ সাল থেকে থাইল্যান্ড জেনিটিক্যালী ইঞ্জিনিয়ারড বীজ আমদানীর উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মুক্ত বাণিজ্যের নামে মনসান্টোর বিটি কটন আর রাউন্ড আপ রেডি কর্ন থাইল্যান্ডের বাজারে ঢুকানোর জন্য আমেরিকা ব্যাপক চাপ প্রয়োগ করছে। আবার ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি রাইটস এর আওতায় থাইল্যান্ডের সুগন্ধি চাল জেসমিন এর ও পেটেন্ট করার চেষ্টা চলে। আবার শ্রীলঙ্কার সাথে ২০০২ সালে টিফা চুক্তির সময় আমেরিকা গার্মেন্টস পণ্যের কোটা মুক্ত সুবিধার কথা বললেও বাস্তবে তা না দেয়ার জন্য নানান শর্ত চাপিয়ে দেয়-যেমন রুলস অব অরিজিনের এমন শর্ত যে শ্রীলঙ্কার উৎপাদিত গার্মেন্টস পন্য তেরী হতে হবে আমেরিকান ফ্যাব্রিক্স ব্যবহার করে, ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি রাইটস বাস্তবায়ন ইত্যাদি। ২০০৩ সালে পার্লামেন্ট এ ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি রাইটস সম্পর্কিত আইন পাশ করতে গেলে তীব্র বাধার সম্মুখীন হয় এবং এক পর্যায়ে আদালতে মামলা পর্যন্ত হয় এবং আদালত মামলা কারীর পক্ষেই রায় দেন। এরকম উদাহরণের শেষ নেই, যেখানেই টিফা স্বাক্ষরতি হয়েছে সেখানেই এই ধরণের ঘটনা ঘটছে, বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম হওয়ার কোন কারণ দেখছিনা।
চুরি করে নীলক্ষেত বানিয়ে আর কদিন?

চুরি দেখলেন কিন্তু তার চেয়ে ভয়ংকর ডাকাতিটা দেখতে পাচ্ছেননা- ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি রাইটস এর ধারনাটাই তো বিরাট এক ডাকাতির পরিকল্পনা। কে কবে কোন জিনিস নিজের একক জ্ঞানে আবিস্কার করেছে? আজকে কোন একটা যন্ত্র বা কৌশল যে কোম্পানী আবিস্কার করছে তার পেছনে আছে হাজার বছরের মানুষের নানা আবিস্কারের অবদান- বিজ্ঞানের যে সূত্র, যে প্রকৃয়া তারা ব্যবহার করছে,তা নিউটন, আইনস্টাইন, গ্যালিলিও তো বটেই, অসংখ্য সাধারণ মানুষের এবং গোষ্ঠীর দৈনন্দিন জীবনের চর্চা এবং অভিজ্ঞতার ফলস্বরুপ পাওয়া জ্ঞান- তাহলে এগুলো কিভাবে কারও ব্যাক্তিগত ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি হিসেবে বিবেচিত হতে পারে? যারা একদিকে এই সব বুদ্ধিবৃত্তিগত সাধারণ সম্পদ ব্যবহার করবে, নিমগাছের প্যাটেন্ট করবে, বাসমতি চালের পেটেন্ট করবে, আদিবাসীদের ব্যবহ্রত তুলার প্রজাতি ব্যাবহার করে বিটি কটন নাম দেবে, মানুষের যুগ যুগের ভেষজ ও আয়ুর্বেদীয় জ্ঞান কাজে লাগিয়ে ওষুধ তেরী করবে আর আমরা এসব আমাদের মত করে ব্যবহার করতে গেলেই বলবে চুরি হয়ে গেল বুদ্ধি বৃত্তিক সম্পদ এর চেয়ে অদ্ভুদ ও হাস্যকর কথা আর কিছু হয়না।

মাল্যবান এর ছবি

উদ্ধৃতি: " সিটিজেনশিপ ভিসা নিয়ে বিপ্লবী ঠিকই মার্কিন মুলকে পাড়ি জমাতে দ্বিধা করেন না।"
--সম্পূর্ণ একমত। এধরনের কয়েকজন বিপ্লবীকেই দেখেছি। শুধু তাই নয়, সিপিবির কার্ডধারীকেও চিনি, বিশ্বব্যংকে কেরাণীগিরি করে।

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

আমিও এরকম চিনি দুই-একজন। বিপ্লবী কমরেডরা কেন চীন বা কিউবা বা নিদেনপক্ষে নর্থ কোরিয়াতে পাড়ি জমান না, সেইটা বুঝে উঠতে পারি না।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

সবজান্তা এর ছবি

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ কৌশল বিভাগের একজন শিক্ষক দীর্ঘদিন পি এইচ ডি করেন নি, কারণ তিনি পুঁজিবাদী কোন দেশে পি এইচ ডি করতে যেতে চান নি, এদিকে সমাজতান্ত্রিক দেশগুলিতেও সাম্প্রতিক সময়ে পি এইচ ডির অফার আসে নি। দীর্ঘদিন পর্যন্ত উনার পদোন্নতি আটকে ছিলো এ কারণে। তবে সম্প্রতি স্যার মনে হয় দেশেই পি এইচ ডি করেছেন।

সবাই আসলে একরকম নয়, সংখ্যায় কমে হলেও ব্যতিক্রম আছে।


অলমিতি বিস্তারেণ

হিমু এর ছবি

তিনি আমার থিসিস সুপারভাইজার ছিলেন, আমার দেখা সেরা শিক্ষকদের একজন। হ্যাটস অফ টু আব্দুল হাসিব চৌধুরী।


হাঁটুপানির জলদস্যু

পুরুজিত এর ছবি

উনি কি পুঁজিবাদী দেশে তৈরি প্রযুক্তিও ব্যবহার করেন না (যেমন কম্পিউটার...)?

হাসিব এর ছবি

ফুটনোট: অনেককে দেখেছি মুখে মুখে মার্কিনের চোদ্দপুরুষ উদ্ধার করতে কিন্তু ডলার হাতে পেলে সব চুপচাপ। সিটিজেনশিপ ভিসা নিয়ে বিপ্লবী ঠিকই মার্কিন মুলকে পাড়ি জমাতে দ্বিধা করেন না।

উদ্ধৃতি: " সিটিজেনশিপ ভিসা নিয়ে বিপ্লবী ঠিকই মার্কিন মুলকে পাড়ি জমাতে দ্বিধা করেন না।"
--সম্পূর্ণ একমত। এধরনের কয়েকজন বিপ্লবীকেই দেখেছি। শুধু তাই নয়, সিপিবির কার্ডধারীকেও চিনি, বিশ্বব্যংকে কেরাণীগিরি করে।

টিফা চুক্তি হালাল-হারাম প্রশ্নে কে কোথায় কবে ডলার দেখলো বা সিপিবির কে বিশ্বব্যাংকের কেরানি এই প্রশ্ন অপ্রাসঙ্গিক মনে হলো ।

প্রফাইল [অতিথি] এর ছবি

"টিফা চুক্তি হালাল-হারাম প্রশ্নে" "ডলার" "কেরানিগিরি" ইত্যাদি বিষয়গুলো সম্পূর্ণ প্রাসঙ্গিক। এ প্রাসঙ্গিকতা অনুধাবনে শুধুমাত্র চোখ-কান খোলা রাখাই যথেষ্ট বলে মনে করি।

দিনমজুর এর ছবি

সংশোধনীঃ

আর্টিকেল পাঁচঃ
এই চুক্তি অভ্যন্তরীণ যে কোন অধিকার ও দায়বদ্ধতা সম্পর্কিত যে কোন এক পক্ষের পূর্বনির্ধারিত কোন আইনের কিংবা তৃতীয় কোন এক পক্ষের সাথে করা চুক্তির সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ কিংবা সাংঘর্ষিক হলে TIFA’র শর্ত এক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে

এইটা একটু বিশ্লেষণ করলে এর মানে দাঁড়ায়- যেহেতু এই চুক্তিটা দ্বি-পাক্ষিক সেহেতু বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত অন্য কোন তৃতীয় পক্ষ কিংবা বহুজাতিক চুক্তিগুলোর সাথে যদি এই চুক্তির কোন ধারা অসঙ্গতিপূর্ণ হয় সেক্ষেত্রে TIFA’র শর্ত কার্য়কর হবে।
অনুবাদে ঝামেলাটা হয়েছিল মূলত ‘Without any prejudice’ phrase এর প্রয়োগটা ঠিকঠাক না বোঝাতে। পাঠকের নিকট আমরা এ ব্যাপারে
সহৃদয় ক্ষমা প্রত্যাশা করছি।

দিনমজুর এর ছবি

পুনঃ সংশোধনী :

৭ নং ধারাটি এরকম এসেছে-

৭) বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায়(WTO) উভয় দেশের সদস্য পদের বিষয়টিকে বিবেচনায় রেখে এবং WTO এর প্রতিষ্ঠাতা চুক্তি Marrakesh Agreement এবং অন্যান্য চুক্তি ও সমোঝাতা এবং এর সাথে সম্পর্কিত ও এর পৃষ্ঠপোষকতার আওতায় থাকা অন্যান্য ইন্সট্রুমেন্ট ইত্যাদির আওতার মাঝে প্রত্যেক পক্ষের নিজস্ব অধিকার ও বাধ্যবাধকতার বিষয়গুলোকে লক্ষ্য রেখে;

এটা আসলে হবে-

৭) বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায়(WTO) উভয় দেশের সদস্য পদের বিষয়টিকে বিবেচনায় রেখে বলা হচ্ছে যে এই চুক্তি, WTO এর প্রতিষ্ঠাতা চুক্তি Marrakesh Agreement এবং অন্যান্য চুক্তি ও সমোঝতা এবং এর সাথে সম্পর্কিত ও এর পৃষ্ঠপোষকতার আওতায় থাকা অন্যান্য ইন্সট্রুমেন্ট ইত্যাদির আওতার মাঝে প্রত্যেক পক্ষের নিজস্ব অধিকার ও বাধ্যবাধকতার বিষয়গুলো থেকে অগ্রাধিকার পাবে;

দুঃখিত পাঠক। এবারও সেই ‌without prejudice to এর ভূত।

xeta naught এর ছবি

যারা ডলার এবং কেরানিগিরিকে প্রাসঙ্গিক মনে করছেন, তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই আপনাদের অবস্থান এ দেশের সার্বভৌমত্বের পরিপন্থী। ব্যক্তিগত আক্রোশ পুষে রাখবেন কি রাখবেন না, তা আপনার বিষয়, কিন্তু পন্ডিতি ফলায়েএবং ফপর দালালি করে আপামর জনসাধারণের অধিকার ক্ষুণ্ণ করার যৌক্তিকতা কোথায়? একটু ভেবে দেখবেন আশা করি।

প্রফাইল [অতিথি] এর ছবি

... তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই আপনাদের অবস্থান এ দেশের সার্বভৌমত্বের পরিপন্থী ...

সার্বভৌমত্বের কতগুলো সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞা আছে। যেমন, "Sovereignty is the exclusive right to control a government, a country, a people, or oneself"; "A Sovereign is the supreme lawmaking authority", ইত্যাদি। পরিষ্কারভাবেই, টিফা এ দেশের সার্বভৌমত্বের পরিপন্থী নয়। এটা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ চুক্তির শুরু মাত্র। গলার জোরে জাহির করলেও মিথ্যে সত্যি হয়না।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর অর্থনৈতিক-বাণিজ্যিক যুক্তরাষ্ট্র লকমটিভ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে, তাই ওদেশে মন্দা এলে সারা দুনিয়ায় তা ছড়িয়ে পড়ে। আর সামরিক যুক্তরাষ্ট্র একটি দানব, মানবতা-সভ্যতার ভয়ঙ্কর শত্রু। টিফা কোন সামরিক চুক্তি হলে আপনার আগেই হয়ত আমি একে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের পরিপন্থী বলতাম।

... কিন্তু পন্ডিতি ফলায়েএবং ফপর দালালি করে আপামর জনসাধারণের অধিকার ক্ষুণ্ণ করার যৌক্তিকতা কোথায়?

দেখুন আমি কোন "পন্ডিতি" করছি না। করলে বেশকিছু কাউন্টার স্ট্যাটিস্টিকস আর জেনারেল ইক্যুলিব্রিয়াম আউটপুট দিতে পারতাম। "ফপর দালালি" নয়, আমি শুধু একটি লাভজনক সম্ভাবনার কথা বলছিলাম। সেইসঙ্গে নেতৃত্বকে মাথামোটা, গোলানো এসবও বলেছি। নিশ্চিত জেতা যুদ্ধে হার উপহার দেয়া নেতৃত্ব শুধু বাংলাদেশেই পয়দা হয়। এদের কাছ আপামর জনগণের অধিকার যদি সুরক্ষিত থাকে বলে মনে করেন তাহলে আপনি বোকার স্বর্গে বাস করছেন।

তনময় এর ছবি

১৪) উভয় দেশের বাজারে প্রবেশের সুবিধাদি বৃদ্ধি করার জন্য অ-শুল্ক বাধা দূর করার প্রয়োজনীয়তা এবং এর ফলে পারস্পরিক সুফল পাওয়ার বিষয়টিকে বিবেচনায় রাখে

১৪ নং পয়েন্ট এর মানে হলো বাংলাদেশ এবং আমেরিকার বাজার পরস্পরের কাছে উন্মুক্ত করে দেয়া। এর আগের বিশ্ব বানিজ্য সংস্থার চুক্তি অনুসারে আমেরিকার মত উন্নত দেশগুলো বাংলাদেশের মতো স্বল্পন্নুত দেশ গুলোকে বিশেষ ব্যাবস্থায় ৯৭% বাজার উন্মুক্ত করে দেয়ার কথা। কিন্তু আমেরিকা ৩% এর সুযোগ গ্রহণ করে বাংলাদেশের রপ্তানী পণ্যের উপর বিভিন্ন অ-শুল্ক বাধা আরোপ করে রেখেছে। এখন এই ৩% বাজার সুবিধার বিনিময়ে বাংলাদেশকে ১০০% বাজার খুলে দিতে হবে। এখন বাংলাদেশের মত একটি দেশ তার উদীয়মান শিল্পগুলোকে রক্ষা করার জন্য বিভিন্ন অ-শুল্ক বাধা আরোপ করবে এটাই স্বাভাবিক। আজকের শিল্পন্নোত দেশগুলো এ অবস্থানে এসেছে কিন্তু বাজার সংরক্ষণের নীতির মাধ্যমেই।নিজেরা যে পথ অবলম্বন করেছে, বাংলাদেশের মত দেশকে তারা তার উল্টোটি করতে বাধ্য করছে।আমরা মনে করি বাজার উন্মুক্ত করে দেযার কোন চুক্তি বাংলাদেশের করা মানে হলো নিজের পায়ে কুড়াল মারা।
---------------------

এই মন্তব্যের সাথে পুরোপুরি একমত এবং আমি এই 'মহাপরাক্রমশালী ডিজিটাল সরকার'কে এ ধরনের গনবিরোধী কাজ থেকে বিরত রাখতে শুধু ডিজিটালি নয়, দরকার হলে রাজপথে নেমে প্রতিবাদ করবো ।

ভ্যানগার্ড [অতিথি] এর ছবি

টিফা নিয়ে আলোচনায় তৎকালীণ মার্কিন রাষ্ট্রদূত হ্যারি কে টমাস ২০০৪ সালের মে মাসে বলেছিলেন : " under our trade laws, countries must ensure internationally recognized labor rights and adequate protection of intellectual property rights if they wish to take advantage of our GSP program.
.... As I said we are committed to seeing Bangladesh impপove its investment climate. But please understand-Bangladesh will have to implement significant political reforms as well if our economic ties are to deepen considerably. Improving the rule of law, tackling corruption and establishing an independent judiciary to protect property and sanctity of contracts are essential if Bangladesh is to reach economic growth levels. I know it is capable of achieving. As the Bangladeshi economy grows, so will trade and investment with the United States.
I want to stress that the climate in Bangladesh for U.S. exports and investments will only improve with the support of vibrant and active chambers of commerce. The Embassy cannot do this alone."
অর্থাৎ বাংলাদেশের সাথে মার্কিন বাণিজ্য শুধু বাণিজ্য নয়, বাণিজ্যের স্বার্থে আমাদের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করাও তাদের লক্ষ্য।

দিনমজুর এর ছবি

হ রে ভাই, বহুত পন্ডিতি দেখানোর খায়েশ হইছিল। হের লাইগাই তো কষ্টে-মষ্টে এইটা অনুবাদ করলাম। ভাবছিলাম বেশ পিঠ চাপড়ানি পাব, এবং সেইসাথে কিছু প্রশংসাও। কিন্তু দেখেন কান্ড, আপনার কাছে ঠিক ধরা পইড়া গেলাম। তা কি জানি বলছিলেন আপনি? শান্তিনগরের জ্যোতিষীর কথা। তা ভাইজানের কথা শুইনা মনে হইতাছে চুক্তি কইরা, হেরপর ঠ্যালা খাইয়াই আমরা কেবল ঐটা নিয়া কথা কইতে পারুম। তার আগে কেবল থাকবে প্যান্ট খুলে দেয়ার নানান বৃত্তান্ত।

আপনি ভাই পন্ডিতি ফলান নাই, কিন্তু কি জানি কিসব শক্ত শক্ত কথা কইলেন- Sovereignty, সংজ্ঞা ও দিয়া দিলেন না চাইতেই, তাও আবার ইংরেজীতে!!! আমি কুদ্দুইচ্ছারে আগেই কইছিলাম- দ্যাখ কুদ্দুস এইসব ব্লগ-টগ লেখাইয়া আমারে বিপদে ফালাইস না বাপ। কিন্তু কুদ্দুস আমারে জানাইলো যে এই পোষ্টের কোথাও ঐ Sovereignty বা সার্বভৌমত্ব শব্দটাই নাই!

না না,আপনি ফপর দালাল হইবেন ক্যান। আপনি খালি লাভ দেখেন। খালি আফসোস আমাগোরে দেখাইলেন না। কি জানি কি সব কাউন্টার টেটেসটিকস, ইক্যুইলিব্রিয়াম আটফুট আমাগোরে দেখাইবার চাইলেন না ! দয়া কইরা একটু ব্লগে প্রকাশ করেন না, আমরা সবাই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলি, আপামর জনগণও বুইঝ্যা নিক তার লাভের ভাগ। আমাগোর লক্ষ্যও ছিল তাই যে আলোচনার মাধ্যমে আগে এটা দেখা হোক যে এই চুক্তির মাধ্যমে আমরা সত্যিকার অর্থে কিছু পেতে পারি কিনা এবং এই চুক্তিতে আমাদের ঝুঁকির জায়গাগুলো কোথায়। আপনি যদি এরই মধ্যে সেগুলো চিহ্নিত করে ফেলে থাকেন, তাহলে তো খুবই ভালো কথা। সেগুলো বলেন এইখানে, কিন্তু তা না, আপনি বাণিজ্যমন্ত্রী স্টাইলে বলা শুরু করলেন যে এই চুক্তি করলে আখেরে আমাদের বহুত ফায়দা হবে। কিন্তু সেই ফায়দাটার কথাই আর কইলেন না। কইলেন না আমেরিকার মতন একখানা ভয়াবহ দানব, মানব সভ্যতার এক ভয়াবহ শত্রুর (আপনার নিজের ভাষায়) সাথে এক কাতারে দাঁডিয়ে আপনি ঠিক কিভাবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে একসাথে এগুবেন?

আপনি আবার কইলেন যে বাংলাদেশ চাইলে ছয়মাসের নোটিশে চুক্তি বাতিল করতে পারবে। এইটা শুইনা হাঁসমু না কাঁনমু ঠিক বুঝতে পারতেছিলাম না। যে দেশের সরকার এতদিন হয়ে গেল অথচ আজ পর্যন্ত ‘শেভরন’ এর কাছ থাইকা ক্ষতিপূরণের একটা টাকা আদায় করতে পারল না সে কিনা ছয়মাসের নোটিশে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে করা চুক্তি বাতিল করে ফেলবে!!! বোকার স্বর্গে আমরা আছি না আপনি? এতেও যদি বুঝবার না পারেন তবে আরেকটা তথ্য দেই-
১৯৯৬ সালে গঠিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তারা সামরিক চুক্তি ‘হানা’ স্বাক্ষর করেছিল বাংলাদেশের পররাষ্দ্ব্র দফতরে গিয়ে নয়, গুলশানে আমেরিকান ক্লাবে। সেখানে বাংলাদেশের পররাষ্দ্ব্র প্রতিমন্পীকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল তার এবং এক মার্কিন জেনারেলের মধ্যে। (সূত্রঃ http://www.shamokal.com/archive.details.php?nd=2009-02-03&nid=101241, বদরুদ্দীন উমরের লেখা উপসম্পাদকীয়)[/i]
তাছাড়া ইতিহাসে সেইরকম নজির দুই এটা থাকলে আমাগোরে দিয়েন, আমরা আননদিত হব।

নিশ্চিত জেতা যুদ্ধ!!! খাইছে আপনি দেখা যায় পুরা ছক কাইটা রাখছেন। তা ভাই TIFA চুক্তিতে আপনি কোথায় কোথায় বিজয় নিশানাগুলা দেখছেন দয়া কইরা আমাদের সেগুলা জানান, তাহলে আর কষ্ট করে শান্তিনগরে অফিস খুঁজুম না, TIFAচুক্তি করার লাইগা কালকেই একখান পোষ্ট দিমু!!!

আপনি সবশেষে নসিহত দিলেন-
এদের কাছে আপামর জনগণের অধিকার যদি সুরক্ষিত থাকে বলে মনে করেন তাহলে আপনি বোকার স্বর্গে বাস করছেন।
আমরা তো কোথাও এরকম আশা পোষণ করি নাই। আশা তো পোষণ করলেন আপনি-
আর অবস্থা সুবিধের নয় দেখলে কিন্তু বাংলাদেশ ছ’মাসের নোটিশেই চুক্তিটি রদ করতে পারে।

সবশেষে আপামর জনসাধারণের অধিকার সংরক্ষণে দেশের স্বার্থ উদ্ধার সংক্রান্ত আপনার গবেষণা আশা করি আপনি হাতে নিবেন সেই প্রত্যাশা রইল। ও ভালো কথা বাংলাদেশ আমেরিকার লগে সামরিক চুক্তি করলে আপনি যদি ভাই আমার আগে মাঠে নাইমা পড়েন তয় কিন্তু রাগ করুম না, খালি আফসোস হইব একটু এই ভাইবা যে ইস্‌ পন্ডিতিটা দেখাইবার পারলাম না, মিস হইয়া গেল !!!

xeta_naught এর ছবি

ভাই, সার্বভৌমত্ব এমন বিষয় যেটা অনুধাবন করার জন্য আপামর জনসাধারণ, তাত্ত্বিকদের সংজ্ঞার উপর নির্ভর করেনা। এটা যে আপনার ও বোধগম্য নয় তা সুনিশ্চিত। তা না হলে এই technocrat jargon জাহিরের লোভ টা সামলে সত্যের কাছাকাছি পৌছানোর প্রয়াস থাকতো।

আপাত দৃষ্টিতে যা আপনার ফলপ্রসূ মনে হচ্ছে সেটি কি আদতে জনগণের স্বাধীনতার বিনিময়ে খুব ছোট কিছু নয়? নেতৃত্বকে অস্বীকার করার মানে তো জনগণকে বিসর্জন দেয়া নয়।

আর যখন statistics এর কথা বললেন, তখন আরিস্টটল এর উদ্ধৃতি শুনে থাকবেন হয়তো...পৃথিবীতে তিন রকম মিথ্যা হয়...মিথ্যা, ডাহা মিথ্যা এবং পরিসংখ্যান।

প্রফাইল [অতিথি] এর ছবি

আপনাদের ভাষার ব্যবহার দেখে মনে হচ্ছে ভদ্রভাবে জবাব দেয়াটা সত্যি ভুল হয়ে গেছে, চুপ থাকলেই বরং ভাল ছিল। দেখুন পরিষ্কারভাবেই সচলায়তন পণ্ডিতি দেখানোর জায়গা নয়। পণ্ডিতি দেখাতে হয় জার্নালে তা আপনারা ভালভাবেই জানেন আশাকরি। ওরানি, জিট্যাপ আর উইটস ব্যবহার করে অল্প সময়ের মধ্যেই টিফার বাইলেটারেল গেইনের কোয়ান্টিটেটিভ ভ্যালু বের করা সম্ভব। আর গ্যামস-জেমপ্যাক ব্যবহার করে টু-কান্ট্রি ডাইনামিক জেনারেল ইক্যুলিব্রিয়াম মডেলে প্রায় নিখুঁতভাবে বাইলেটারেল গেইনকে কোয়ান্টিফাই করা যায়, একেবারে ইনভেস্টমেন্টের সাব-সেক্টর লেভেল-এ এবং ট্রেডের ট্যারিফ সাব-হেডিং অনুযায়ী। আর ১৯৯৬-এর একটি ফ্র্যাজাইল গভর্নমেন্ট আর ইকনমি'র রেফারেন্স দেবেন না। এরপর তের বছর চলে গেছে আর বাংলাদেশের ইকনমিও অনেকদূর এগিয়েছে।

আর যখন statistics এর কথা বললেন, তখন আরিস্টটল এর উদ্ধৃতি শুনে থাকবেন হয়তো...পৃথিবীতে তিন রকম মিথ্যা হয়...মিথ্যা, ডাহা মিথ্যা এবং পরিসংখ্যান।

কথাটি বলেছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন ডিসরেইলি এবং কথাসাহিত্যিক মার্ক টয়েন। আরিস্টটল নয়। আরিস্টটল অন্য কিছু বলেছেন। যেমন কিছু মানুষ দাস হয়ে জন্মায়। তাঁর কথা অবশ্য কোন ঐশ্বরিক বাণী নয়, যদি ঈশ্বর থেকেও থাকেন। আরো পরিষ্কারভাবে, তাঁর আমলে মডার্ন স্ট্যাটিস্টিকস জন্মই নেয়নি। তাই ভুল রেফারেন্স দিয়ে বিরক্ত করবেন না।

... কইলেন না আমেরিকার মতন একখানা ভয়াবহ দানব ...

আমি বলেছি সামরিক যুক্তরাষ্ট্রের কথা। দয়া করে এরকম আরো অনেককিছু গুলিয়ে ফেলবেন না। বিরক্ত লাগে।

দিনমজুর এর ছবি

@ অতিথি

বুঝলাম জার্নাল ছাড়া কোথাও পন্ডিতি দেখানো আপনি সমীচীন মনে করেন না, আমরাও করি না। কিন্তু সেটা শুধু জার্নালে না, অন্য যে কোন স্থানেও পন্ডিতি ফলানোকে আমরা কাজের কাজ মনে করি না। তয় ওরানি, জিট্যাপ আর উইটস এই শব্দগুলা কিন্তু আপনার আগের অবস্থানকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে বলে আমরা মনে করি। আশা করি এ ব্যাপারে আপনি আরো বিস্তারিত বলবেন। আপনি এইসব জিনিসপাতি ব্যবহার করে কিভাবে TIFA চুক্তি বিশ্লেষণ করলেন সেটাই প্রকাশ করুন না! তবেই তো ল্যাঠা চুইকা যায়। বিরক্তি আমাদেরও লাগে। যখন পরের লাইনেই আবার দেখি সেই একই প্যাঁচাল-

আর গ্যামস-জেমপ্যাক ব্যবহার করে টু-কান্ট্রি ডাইনামিক জেনারেল ইক্যুলিব্রিয়াম মডেলে প্রায় নিখুঁতভাবে বাইলেটারেল গেইনকে কোয়ান্টিফাই করা যায়, একেবারে ইনভেস্টমেন্টের সাব-সেক্টর লেভেল-এ এবং ট্রেডের ট্যারিফ সাব-হেডিং অনুযায়ী।[i]

তো সেটাই আপনি করে দেখান না। New Age এবং অন্যান্য যেসব পত্রিকা ক্রমাগত এ ব্যাপারে লিখে চলেছে তাদেরকে আপনার বিশ্লেষণ দিয়ে বলেন- ‘বাপ এই দ্যাখ মডেল, খামাখা ক্যান চিল্লাপাল্লা করতাছস!’ তা না আপনি শুধু এই দিয়ে করা যায়, ওই দিয়ে করা যায়। কোন মানে হয়?

সামরিক যুক্তরাষ্ট্র !!! এইটাও কি ওইরকম ওরানি কিংবা জিট্যাপ মার্কা কিছু দিয়া বের করছেন নাকি? ওইটা দিয়া নিশ্চয় মানবিক, দানবিক, অর্থনৈতিক ইত্যাদি যুক্তরাষ্ট্রও বের হয়। হয় না? হইলে আবারও অনুরোধ রইল আমাদেরকে সেই ভিন্ন ভিন্ন যুক্তরাষ্ট্রের আদলগুলো চিনতে যাতে তিনি আমাদেরকে সাহায্য করেন।

আরিফ জেবতিক এর ছবি

ধন্যবাদ দিনমজুর । লেখাটি গুরুত্বপূর্ণ । ব্লগে এ বিষয়ে আলোকপাত করায় আপনাকে ধন্যবাদ ।

পরে এসে মতামত যোগ করব ।

xeta_naught এর ছবি

হাসি থামানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে.....সত্যিটাকে overlook করে আজাইরা কথা বাড়ানো বিশেষ দক্ষতা বটে। যদি NGO কর্মী হয়ে থাকেন, তাহলে এইরকম বোলচাল পাড়া হালাল। এককালে ( ভালো!!!) বিতার্কিক ও ছিলেন নাকি?

ভুল জানা তো আর দোষের না। জানতে না চাওয়া অপরাধ। ডিসরেইলি এবং টোয়েন এর উদ্ধৃতির Reference Link টা দিলে উপকৃত হইতাম।

আশা করি "বিরক্ত" করি নাই।

হিমু এর ছবি

ব্যক্তিগত খোঁচাখুঁচি বাদ দিয়ে তর্কের মূল কাঠামোয় থাকলে ব্যাপারটা অযথা তিক্ততার দিকে গড়ায় না। লেবুকচলানো মন্তব্য বেশির ভাগ সময় আটকে দেয়া হয়। এটা প্রকাশিত হলো আপনাকে স্মরণ করিয়ে দেয়ার জন্য। নাহক কলহ কাম্য নয়। ধন্যবাদ।


হাঁটুপানির জলদস্যু

xeta naught এর ছবি

ধন্যবাদ হিমু ভাই। স্মরণে থাকবে....

রায়হান রশিদ এর ছবি

@ দিনমজুর

অনুবাদ প্রচেষ্টার জন্য সাধুবাদ। TIFA'র কিছু বিষয় (যেমন: মেধাস্বত্ত্ব) নিয়ে কমবেশী আশংকিত আমরা বেশীর ভাগ মানুষই তবে সেইসাথে এও মনে করি যে সুনির্দিষ্টভাবে সমালোচনার জন্য বিষয়টি এখনো বেশ প্রি-ম্যাচিউর। আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক চুক্তি আইনের আওতাধীন একটি বিষয় হওয়ায় TIFA'র ভাষাগত অনুবাদের (literary translation) চেয়েও আইনগত পরিভাষার "সঠিক" অনুবাদ মনে হয় বেশী জরুরী। তা নাহলে আলোচনাটা ভুল ভিত্তির ওপর গজিয়ে ওঠার আশংকা থেকে যায়। আর ভুল ভিত্তির উপর আলোচনা সবচাইতে বেশী ক্ষতি করে গ্রহণযোগ্যতার (credibility)। কারণ, সেটি যদি একবার ঘটে, তাহলে যাঁরা ভবিষ্যতে সত্যিকারের বিপদের দিনে এ বিষয়গুলো নিয়ে জনগণকে আন্দোলনে একত্রিত করার চেষ্টা করবেন, তখন তাদের সেই ডাক "বাঘ এলো, বাঘ এলো" গল্পের দায়িত্বহীন রাখালের চিৎকারের মতো শোনাবে। তাতে সবার চাইতে বেশী ক্ষতি হবে এ দেশের সাধারণ মানুষের। যাই হোক, অনুবাদের প্রসঙ্গে ফিরে আসি।

প্রস্তাবনার ধারা#৭ এবং অনুচ্ছেদ#৫ এ "without prejudice" এর যে সংশোধিত অনুবাদ আপনি দিয়েছেন (আপনার মন্তব্য থ্রেড#৭, ৮: "অন্য কোন তৃতীয় পক্ষ কিংবা বহুজাতিক চুক্তিগুলোর সাথে যদি এই চুক্তির কোন ধারা অসঙ্গতিপূর্ণ হয় সেক্ষেত্রে TIFA’র শর্ত কার্য়কর হবে"), তাতে বিভ্রান্তির অবকাশ রয়েছে। এই ভুলটি মৌলিক। এখানে "without prejudice" পরিভাষাটির বঙ্গানুবাদকে "notwithstanding" (কিংবা saver clause) এর সাথে গুলিয়ে ফেলা হয়েছে। বিধি নির্দেশিত "অগ্রাধিকার" নিশ্চিত করার কাজ দ্বিতীয়টির এবং প্রথমটির (without prejudice-"wp") সাথে অগ্রাধিকারের বিষয়টির তেমন একটা সম্পর্ক নেই। আইনে "without prejudice" টার্মটি একটি বিশেষ অর্থ বহন করে এবং বিশেষ একধরণের চুক্তির ফ্রেমওয়ার্ককেই নির্দেশ করে। বলাই বাহুল্য, এটি একটি সুপ্রতিষ্ঠিত এবং বহুল ব্যবহৃত নীতি। নীতিটি মূলত: নোগোশিয়েশনে "গোপনীয়তা" (confidentiality) বিধান সংক্রান্ত। একটু ব্যাখ্যা করি। কোন নেগোশিয়েশন যখন পক্ষদ্বয়ের ভেতর Without Prejudice ফ্রেমওয়ার্কের আওতায় হয়ে থাকে, তখন তার মানে হল:

নেগোশিয়েশন চলাকালীন সময়ে পক্ষগণের ভেতর যে সব আলোচনা এবং তথ্য আদান প্রদান হচ্ছে, তা পরবর্তীতে কোন বিচারিক (adjudicatory) কর্মকান্ডে উত্থাপন করা যাবেনা (ie, indadmissible), যদি না:
(ক) পক্ষগণ এ সংক্রান্ত বাধাটি স্বেচ্ছায় এবং প্রকাশ্যে (expressly) তুলে নেন (যেমন: waiver), কিংবা,
(খ) পরবর্তীতে কোন এক পক্ষের চুক্তির শর্ত মানায় ব্যর্থতার ফলে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়।
এটিই হল সাধারণ নিয়ম, তবে এর ব্যতিক্রমের সুযোগও রয়েছে। ঠিক কোন্ কোন্ পরিস্থিতিতে "without prejudice" সংক্রান্ত চুক্তিবদ্ধ বাধানিষেধকে অতিক্রম/অগ্রাহ্য করা যাবে, তার বিস্তারিত দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছিল লর্ড হফম্যানের একটি মামলায় ১৯৯২ সালে (Forster v. Friedland, Court of Appeal)। লেক্সিস-নেক্সিস ডাটাবেজ থেকে দেখে নিতে পারেন।

Without prejudice টার্মটির লক্ষ্যই হল নেগেশিয়েশনে এমন পরিবেশ সৃষ্টি করা যাতে পক্ষগণ তাদের যাবতীয় বিরোধ তৃতীয় কোন পক্ষকে না জড়িয়ে নিজেরাই নিজেদের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে অধিক উৎসাহী হন। আর এই confidentiality নীতির লক্ষ্য হল নেগোশিয়েশনকালীন আলাপ আলোচনাকে ভবিষ্যত মামলার ভয়-ভীতি থেকে মুক্ত রাখা, সেটিও পক্ষগণকে মুক্ত আলোচনায় এবং দরকষাকষিতে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যেই।

তাই অনুচ্ছেদ ৫ (এবং প্রস্তাবনা#৭) এ যে "অগ্রাধিকার" এর কথা আপনি বলতে চাচ্ছেন সেটি কেবলই "without prejudice" টার্মের অগ্রাধিকার। এর সাথে বাংলাদেশের করা অন্যান্য চুক্তি বা আইনে সৃষ্ট substantive right এর কোন সম্পর্ক নেই, অগ্রাধিকারের তো নেই-ই। এটি কিছুটা কমনসেন্স এরও ব্যাপার। ভেবে দেখুন, কেবল TIFA স্বাক্ষর করলেই যদি অন্যান্য সব bilateral আর multilateral চুক্তি এবং প্রচলিত আইন অর্থহীন হয়ে যায়, তাহলে অন্যান্য সে সব পক্ষ-রাষ্ট্ররা কি করবে বলে মনে করেন? কিংবা সে সব চুক্তিসৃষ্ট অধিকার বা দায়দায়িত্বেরই বা কি হবে?

আবারো ধন্যবাদ আপনাকে TIFA'র বিষয়টিকে সামনে নিয়ে আসার জন্য। এ বিষয়ে মুক্তাঙ্গনেও কিছু আলোচনার সূত্রপাত হয়েছে।

===================
মুক্তাঙ্গন: নির্মাণ ব্লগ
===================

দিনমজুর এর ছবি

@ রায়হান রশীদ

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার জন্য। তবে টিফা চুক্তিকে সুনির্দিষ্টভাবে সমালোচনা করার সময় এখনও আসেনি বলে যে কথাটি বললেন সে বিষয়ে একমত হতে পারলাম না। চুক্তির খসড়া নিয়ে ২০০৩ সাল থেকে আলোচনা চলছে, আরও বিভিন্ন দেশের সাথে এই চুক্তিটি আমেরিকা স্বাক্ষরও করেছে।ফলে এখানে প্রিম্যাচিউ এর কি দেখলেন বুঝলাম না। চুক্তি স্বাক্ষর হয়ে তার ক্ষতিকর প্রভাব চোখে পড়া শুরু করলেই কি তবে তা ম্যাচিউর হবে?

আর without prejudice নিয়ে আমরাও একটু ঘাটাঘাটি করেছি| আপনি without prejudice এর যে ব্যবহারের কথা বলেছেন তা হলো without prejudice এর একটা ব্যবহার যেটা negotiations এর সময় ব্যবহ্রত হয়। কিন্তু এখানে কোন নেগোসিয়েশন হচ্ছে না, এটা সরাসরি একটা চুক্তির ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে যেখানে বর্তমান চুক্তির সাথে অতীতের চুক্তিগুলোর সম্পর্ক নির্দেশ করা হচ্ছে। এই খানে বরং এর without prejudice এর নিম্নোক্ত ব্যাবহারটিই প্রযোজ্য বলে মনে হচ্ছে।

Within legal civil procedure, prejudice refers to a loss or injury.Thus, in a civil case, dismissal without prejudice is a dismissal that allows for re-filing of the case in the future. The present action is dismissed but the possibility remains open that the claimant may file another suit on the same claim.
সূত্র: উইকিপিডিয়া (http://en.wikipedia.org/wiki/Without_prejudice)

সেই অর্থে এর মানে হলো - বর্তমান কোন অধিকার পূর্ব থেকে ক্ষুন্ন না করে(oxford advance learner dictionary)। এ হিসেবে সংশোধনী দেয়ার আগে আমরা প্রথমে যে অনুবাদটি করেছিলাম সেটিই ঠিক আছে বলে এখন মনে করছি। অর্থাৎ আমেরিকা বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করছে, এই চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে তুমি ইতোমধ্যেই যেসব সুযোগ সুবিধা ভোগ করছ সেগুলো থেকে তোমাকে বঞ্চিত করছি না আমি।

নেগোসিয়েশান এর সময় without prejudice এর ব্যবহার নিয়ে দেখুন কি বলা হচ্ছে:

In many common law jurisdictions such as the United States, the U.K., Ireland, Canada, Australia, New Zealand and Singapore, the term "without prejudice" is also used in the course of negotiations to indicate that a particular conversation or letter is not to be tendered as evidence in court; it can be considered a form of privilege.
সূত্র: উইকিপিডিয়া (http://en.wikipedia.org/wiki/Without_prejudice)

আর আপনি কমনসেন্স এর প্রশ্ন তুলেছেন দেখছি। বিষয়টি শুধু কমনসেন্সের সাথে যুক্ত নয়। আমেরিকার রাজনীতির সাথে যারা পরিচিত তারা বুঝবেন আমেরিকার দ্বারা এধরনের একটি চুক্তির প্রস্তাব তোলা অসম্ভব কিছু নয়! তাছাড়া টিফা চুক্তি নিয়ে পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত লেখালিখিতেও বিষয়টি এভাবেই এসেছিল।সেকারেণই আমরা সংশোধনী দিয়েছিলাম। এ প্রসঙ্গে আবু আহমেদের লেখাটি দেখুন যেখানে আবু আহমেদ বলছেন-

অন্য কথায়, যেহেতু এই চুক্তি হবে দ্বিপক্ষীয়, বিনিয়োগ ও ট্রেডের ক্ষেত্রে বহুজাতিক বা আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলোর বিভিন্ন উপাদান যদি এই চুক্তির উপদানগুলোর সাথে সাংঘর্ষিক হয় তাহলে টিফা’র শর্তই এ ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।

সূত্র: http://www.somewhereinblog.net/blog/adnanuk/28906765

যাই হোক without prejudice এর মানে "বর্তমান কোন অধিকার পূর্ব থেকে ক্ষুন্ন না করে" এই অনুবাদের প্রায়োগিকতা বিষয়ে আপনার মতামত পেলে ভাল লাগবে।

রায়হান রশিদ এর ছবি

@ দিনমজুর
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। প্রত্যুত্তরটি অনেক দীর্ঘ হয়ে যাওয়ায় এখানে দিচ্ছি না। এই লিন্কটিতে দেখুন

===================
মুক্তাঙ্গন: নির্মাণ ব্লগ
===================

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।