http://www.sachalayatan.com/juliansiddiqi/17827
সাগরের মা সমাজের স্বীকৃতি না নিয়েই সাগরকে পেটে ধরেন। সাগরের বাপ কোন প্রকার ঝামেলায় না গিয়ে কেটে পরেন। জন্মের পর, মা ও জীবন বাঁচাতে সাগরকে একা রেখে পালিয়ে যান। সাগর একা বস্তিতে বড় হয়। টুনি গ্রাম থেকে বস্তিতে বাল্য কালে বাবার সাথে আসে। টুনি সাগরের বাল্য প্রেম। রোমান্টিকতা বজায় রাখতে তাদের বাল্য প্রেম/কাল দেখানো হয় না।
টাকার জোরে আসগর টুনিকে বিয়ে করে। কিন্তু আসগর দুই নম্বর লোক। বউ বাজি রেখে জুয়ায় হেরে গিয়ে আসগর পালিয়ে যায় আরেক বস্তিতে।। বিজয়ী দল খেলার সর্ত মত বস্তি থেকে টুনিকে ধরে নিয়ে যেতে আসে।
বস্তির ভেতর সাগরই একমাত্র মানুষ যে এসব ঝামেলা মেটাতে পারে। অবধারিত ভাবে ঝামেলা তার ঘাড়ে পরে, আর এখান থেকেই "নষ্ট সময়" উপন্যাস শুরু হয়।
সাগর বস্তিতে থেকেও টোকাই হয়নি। চায়ের দোকানে কাজ করতে গিয়ে মোটোর ওয়ার্ক সপের মালিকের নজরে পরে চৌকোশ মেস্তুরী হয়ে উঠে। কাজের দক্ষতার সাথে সততা যোগ হয়ে সাগর মালিকের চোখের মনি হয়ে উঠে। টুনিকে বিপদ থেকে উদ্ধারের পাশা-পাশি সাগর নিজের কাজের সাফল্যে আরো এগিয়ে যায়। উদ্ধার করতে গিয়ে সাগর আর টুনির প্রেম দুজনের কাছেই প্রতিষ্ঠত হয়। সাগর অনেক টাকার মালিক হয়। নিজে কারখানা খোলে। তাই নিয়ে চাঁদাবাজদের কারো সাথে ব্যাক্তিগত দন্ধে জড়িয়ে পরে। চাঁদাকে খুন করে গল্পের সমাপ্তি ঘটে।
অন্যের সমালোচনা করার মত সহজ কাজ পৃথিবীতে আর নেই। এখন আমার কাছে সেই সহজ কাজটা বেশ কঠিন মনে হচ্ছে!
উপন্যাস শুরু হয় সাগরকে হিরু ধরে। তার জন্মবৃতান্ত কথায় কথায় উঠে আসে। কিন্তু এর জন্য একটু বেশী কথা লিখলে তেমন ক্ষতি হত না। টুনির ব্যাপারটাও তেমন। এদের বস্তিতে আশ্রয় নেয়ার কথা অসমচীন মনে হত না। কথা না বাড়িয়ে লেখক, সাগর আর টুনির বস্তির লোকদের রোদ-বৃষ্টিতে, শীত-বসন্তে কেমন করে দিন যায় তা না বলে মুল ঘটনায় স্থির থেকেছেন। সেরাকম আমাদের অনুমান করে নিতে হয় সাগর পাঁচ লাখ টাকায় উত্তরায় জায়গা কিনতে অনেক মাস বা বছর কাজ করেছে।
এত বুঝ মাথায় রেখে সাগর কমলার সাথে তার বাসায় চলে যায়, অথচ সাগর জানে টুনি তার জন্য রাত যেগে অপেক্ষা করবে। এই দৃশ্যর বদলে দৈবাত সাগরের বাপ বা মায়ের সাথে দেখা হতে পারতো। বিল্টুর মত কমলা চরিত্রটি এখানে না এলেও হতো। মোটার ওয়ার্ক সপের কর্মচারীরা প্রাইভেট কারের মালিকের গাড়ীর কোন যন্ত্র কিনতে যায়, সাধারণত মালিককে সাথে নিয়েই। তার পর দুই বা তিনটি আঙ্গুল তুলে মোটর পার্টসের দোকানদার কে সংকেতে জানিয়ে দেয়; মুল দামের সাথে এই টাকা যোগ করে যেন দাম রাখা হয়। কমিশনের সাথে এই টাকাও ওয়র্কসপের সে সব কর্মচারীরা পায়। এমন দু একটি অসাধু কর্মচারী নষ্ট সময়ে নেই। সাগরের কাজের সময় কারেন্ট যায় না। কোন কর্মচারী কাজের সময় আঘাত পায় না। শুধু একবার একজন কর্মচারী একটা রড ভূল কাঁটে। খুব বেশী নিখুত প্রায় অবিশ্বাস্য নিখুত মনে হয় নষ্ট সময়ের পাত্র-পাত্রীদের। সব চেয়ে কঠিন লাগে সাগরের কারখানা খোলার ব্যাপরটি। চাঁদা নিতে আসা গুন্ডাদের সাথে ব্যাক্তিগত শত্রুতার ঘটনাটাও তেমন জোরালো মনে হয়নি। যেমন ঈশ্বরের অস্তিত্ব নিয়ে সাগর টুনির সংলাপও একটু অতিরঞ্জিত লেগেছে। অবাক লেগেছে চাঁদা বাজকে খুন করতে সাগরের স্পট নির্বাচণ।
ভাল ছিল খুনের ঘটনাটা। পিস্তল ফেলে দিয়ে সগর তখনো ম্যেনহোলের গর্ত থেকে ঊঠে দাড়ায়নি। পেছন থেকে পুলিশ এসে কলার ধরে টান দিল। দারুন লেগেছে। এই বুঝি সাগর ধরা পড়ল! এখানেই জুলিয়ান সিদ্দিকী খুব সার্থক। সার্থককতা ছিল টুনির লিপষ্টিক কেনার দৃশ্যটাও। টুনিরা এমনই হয়। টুনিরা এভাবেই বাঁচে। টুনি আর সাগরের রোমান্টিকতাও খুব ভাল লেগেছে। কিন্তু সব কিছুর পেছনে কেমন যেন একটা তাড়া ছিল। অতি সংক্ষেপে সব লিখতে হবে। হতে পারে এ কারনেই অনেকের কাছে উপন্যাসটি ভাল লাগবে।
কথায় বলে; বানে বন্যায় বৃষ্টি
দোষে গুনে সৃষ্টি।
এ কথা মনে রেখে লিখতে থাকেন। একটা বিষয়ের তারিফ না করে পারছি না। সেটা "নষ্ট সময়" নামেই অনুমান করছি। আমাদের দেশটা এখন মধ্যযুগীয় সময় দিয়ে যাচ্ছে। সেটা আপনি ধরার চেষ্টা করেছেন এখানে। অনেক প্রতিষ্ঠিত লেখক অবলীলায় এই সময়টা লাফদিয়ে পর হয়ে যান। কামনা করি এমন দিন যেন আমাদের দেশের শিশুরা দেখে, যে দিন আপনার এই উপন্যাস পড়ে তারা শিহরিত হবে, আর ভাববে এও কী সম্ভব! অথচ আপনি কত নিষ্ঠুরতা গোপন রেখে দিলেন!
মন্তব্য
আহা! সমালোচনা দেয়ার আমার ইচ্ছেটার ভাটা পড়ে গেলো।
ধন্যবাদ পুতুল।
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
শেখ জলিল ভাই আপনার সমালোচনাটা শুনার দাবী রইল। এটা আমার একটা ব্যাক্তিগত অনুরোধ।
**********************
কাঁশ বনের বাঘ
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
খুব ভালো লিখছেন।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
ধন্যবাদ ভাই পরির্বতনশিল।
**********************
কাঁশ বনের বাঘ
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
উপন্যাসটা পড়বো পড়বো করেও দৌড়ে কুলাতে পারলাম না
দেখি
মূল উপন্যাসটা পড়তে পারলে তারপর আপনার সমালোচানার সমালোচনা করব
হ গুরু, কতা মন থাহে যেন!
**********************
কাঁশ বনের বাঘ
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
আমি শুনছি আর দেখছি।
হ, ওস্তাদের মাইর শেষ রাইত।
অহন দেহেন আর হাসেন!
**********************
কাঁশ বনের বাঘ
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
নতুন মন্তব্য করুন