সিপাহী বিদ্রোহ কখনো সফল হয়নি!

পুতুল এর ছবি
লিখেছেন পুতুল (তারিখ: শনি, ২৮/০২/২০০৯ - ৮:২৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মহারাজ: যদি আমি কোন জেনারেলকে প্রজাপতির মত ফুলে ফুলে উড়ে বেড়াতে বলি বা একটা বিয়োগান্তক নাট্য রচনা করতে বলি অথবা গাংচিল হতে বলি, এবং সে জেনারেল যদি তা না পারে, তবে সেটা কার দোষ? আমার না জেনারেলের?
খোকাবাবু: আপনার দোষ মহারাজ। সুনিশ্চিৎ জবাব খোকার।
মহারাজ: উত্তর সঠিক। কারো কাছ থেকে শুধু ততটুকুই চাইতে হয় যতটুকু তার দেয়ার ক্ষমতা আছে।

দ্যা লিটল প্রিন্স (খোকাবাবু) বইটা লেখার সময় লেখক বাংলাদেশের জেনারেলদের প্রতিভার পরিচয় পাননি। তাই উপরের সংলাপটি এমন হয়েছে। আজকাল জেনারেলরা গান, কবিতা ছাড়িয়ে বইও লিখছেন! এত প্রতিভাধর জেনারেলরা একটা জায়গায় শুধু ভুল করেন; “কারো কাছ থেকে শুধু ততটুকুই চাইতে হয় যতটুকু তার দেয়ার ক্ষমতা আছে।“ এই ছোট্ট বাণীটি তাদের মনে থাকে না। আর এখান থেকেই সব সিপাহী বোদ্রোহের শুরু।

১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহ ভারতের স্বাধীনতার জন্য হয়নি। সিপাহীরা ইংরেজ সরকারের কাছে ভারতের স্বাধীনতা দাবী করেনি। শুকরের চর্বিমাখা গুল্লি দাঁত দিয়ে খুলে বন্দুকে ভরতে হতো, যা ধর্মীয় কারণে অনেকের পক্ষেই মানা সম্ভব ছিল না। আরো অনেক করাণ আছে। সে কথা এখানে আলোচনার প্রয়োজন নেই।
তাদের পরিনতি আমরা জানি। ইংরেজরা চলেগেছে কিন্তু সিপাহীদের অবস্থার কতটুকু পরিবর্তণ হয়েছে!

জনৈক জেনারেলের ভাতিজা সর্বশেষ পরিক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অবজারবার্ব পড়েন। জেনারেল হতে হলে ইংরেজী জানা খুব জরুরী। কারণ এখন উর্দুতে বাইনচোদ চলে না, ইংরেজীতে বস্টার্ড বলতে হয়। তো সেই জেনারেল ভাতিজা রিকসাওয়ালা ফারুককে সদরে পাঠিয়েছে ইংরেজী পত্রিকা আনতে। রিক্সা রাস্তার ঢালুতে নামার সময় ফারুক ব্রেক কসে রিক্সা থামাতে গিয়ে হাত থেকে পত্রিকা পড়ে যায়। ভু এবং ধুলুন্ঠিত পত্রিকার দিকে তাকিয়ে জেনারেল ভাতিজার মেজাজ প্রাক- থেকে পোষ্ট জেনারেলে উন্নিত হয়। থাপ্পর দিতে হাত তোলতেই, ফারুক চেহারাটা এমন করল যাতে জেনারেল ভাতিজা চড়টা খুব সহজে দিতে পারে।

বরাগ বাঁশের গোড়ায় বরাগ বাঁশ গজানোর মত, জেনারেল ভাতিজা কমিশনের ট্রেনিং শেষে, বিশেষ ভংগিতে সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়ে আর ইংরেজীতে বক্তৃতা দেয়। অনেক ভাড়ী কথার ফাঁকে জানালেন যে, এমনকি ছুটিতে এসেও একজন সাধারণ সিপাহীর সাথে কথা বলা সদ্য কমিশন প্রাপ্ত একজন অফিসারের নিষেধ!

কোন রকম দস্তখত দিতে পারে, এই বিদ্যা নিয়া, কখনো রিক্সাচালক কখনো ক্ষেতমজুর ফারুক একটা স্থায়ী সরকারী চাকরীর আশায় টাউন হল ময়দানে লাইনে দাড়িয়ে গেল।
রিক্সাচালক ফারুক অনেকদিন পরে রেসনের মালপত্র নিয়ে বাড়ি এল। বিডিআর ফারুকের মায়ের অহংকার দেখে কে! বাড়িতে একটা উৎসব হয়ে গেল।

সিপাহী আর জেনারেলরা এমনই হয়। তাদের সামাজিক এবং আর্থিক অবস্থান ধর্মে “ভাগ্যের ভাল-মন্দে বিশ্বাসের মত”।
সেনাবাহীনিতে ধর্মকে খুব গুরুত্ব দেয়া হয়। সে জন্যই কোন হিন্দু জেনারেল আমাদের সেনাবাহীনিতে নেই।
ভাগ্য নিয়ে মানুষকে জন্মাতে হয়। সেটা অর্জনের বিষয় নয়। কিন্তু যে কারণে বা শিক্ষার গুনে জেনারেল হওয়া যায়, সে গুনাবলী ফারুকের চেয়ে অনেক শিক্ষিত বিডিআর সেলিম ভাই বহু পড়ালেখা করেও অর্জন করতে পারেন নাই। অভিজাত্য রক্ষার কারনেই সাধারন সৈনিকদের উচ্চপদে আরোহনের বিধান রাখা হয় নাই। ব্রিটিশ আমলে অফিসার ছিল ইংরেজ, পাকিস্তান আমলে ফাকি, স্বাদীন দেশে একটা বিশেষ সম্ভ্রান্ত শ্রেণী বিডিআর-এর অফিসার। প্রভু-ভৃত্তের সম্পর্ক আর কাকে বলে! ধর্মে পাপের প্রয়শ্চিত্ত আছে, সেনাবাহীনিতে অফিসারের ছেলে-মেয়ের ফুট-ফর্মাশে পান থেকে চুন খশলেও সিপাহীদের প্রয়শ্চিত্ত নেই। বিদ্রোহতো বিডিআর করেছে, সেনাবাহীনির সদস্য কেন বলে: “এদের (অফিসারদের) তামুক কাটা করা দরকার!

বিশেষ প্রয়োজনে সব রাজারাই নিজস্ব লাঠিয়াল বাহিনী তৈরী করে। আহাম্মক রাজা-রাণীরা একটা নতুন বাহিনী গঠনের ঝামেলা পোহাবে, কিন্তু বিডিআরদের কোন কাজে লাগাবে না। তাদের সমস্যা শোনা বা সমাধান করাতো পরের কথা। এদের উন্নতি বা উচ্চতর প্রশিক্ষনের কথা না হয় বাদই দিলাম। ডাল-ভাতের অভাবেই যেখানে ভিক্ষা চাইতে হয়। অথচ বিএসেফ এর গুলিতে এই বিডিআররাই মরে।

সেনাবাহীনির কাছে আমাদের ঋণ অপরিসীম। যা কখনো শেষ হবার নয়। গান, কবিতা এবং বই লিখে তারা আমাদের সাহিত্যকে সবুজ করে চলেছেন। বিদেশী শত্রুর আক্রম থেকে দেশকে রক্ষার জন্য প্রতিদিন কাতারে কাতারে সৈন্য শহীদ হয়েছেন। এবং এরা সবাই অফিসার। ১৯৭১ থেকে পৃথিবীর পথে পথে তারা আমাদের দেশের স্বাধীনতা রক্ষা করে চলেছেন। এমনকি তারা শান্তি পর্যন্ত বজায় রাখতে পারে। আভ্যন্তরিন বিষয়ে যখন জাতি সংকটে পড়ে, সেনাবাহিনী তাতে ঝাপ দেয়। তাতে জাতিরপিতার প্রাণনাশ হলেও তারা পিছপা হয় না। জনগনের মুল্যবান অর্থ বাচাতে তারা নির্বাচনের মত একটা ব্যায়বহুল ব্যাবস্থা ফরমান ঝাড়ি করে বাতিল করে দেয়। সময় এবং পরিস্থিতির কারনে রাজনৈতিক দল গঠন করে। সেনাবাহীনি এমন দুটি দল আমাদের উপহার দিয়েছে। সেনাবাহিনী আমাদের ৩৭ বছরের স্বাধীনতায় প্রায় ৩০ বছর ক্ষমতায় থেকে দেশ ও জাতির গনতান্ত্রিক অধিকারকে ব্যারাকে জমা রেখেছেন। সময় মত তা শুধে-আসলে ফেরৎ দেবেন। কাজেই আমি একজন কৃতজ্ঞ বাঙ্গালী হিসাবে সেনা বাহীনিকে খুব দরকারী মনে করি। আমাদের থালায় খেয়ে কান্দায় হাগে এমন একটা সেনাবাহিনী না থাকলে আমাদের রক্তচুসে উচ্চরক্তচাপ থেকে রক্ষা করবে কে!

“কারো কাছ থেকে শুধু ততটুকুই চাইতে হয় যতটুকু তার দেয়ার ক্ষমতা আছে।“
কাজেই উপরের কথাটা ভুলে গিয়ে সেনা বাহিনী যদি সিপাহী এবং বিডিআরদের মানুষ মনে না করে তাহলে সেটারও ফজিলত আছে। কারণ পৃথিবীর অন্যসব প্রণী তৈরী হয়েছে সেনা বাহিনীর সেবার জন্য। এই কথা ভুলে গেলে চলবে না।

ক্ষমতা নির্ভর করে বিচক্ষনতার উপর। ক্ষমতায় থাকতে হলে সিপাহী বিদ্রোহের (তাও আবার বিডিআরদের) কথা ভাবলে চলে না। সেনা অফিসারদের কথা ভাবতে হবে। সেটা ক্ষমতাশীনদের সমস্যা। এ দেশে উৎপাদনমুখী সেনা বাহিনী গঠন করতে গিয়ে কোন এক কর্নেল প্রাণ দিয়েছেন। তার বিচারের কথা কেউ বলে না। হাতেগোনা কিছুলোক গোটা দেশের সব সুবিধা ভোগ করবে, আর রাইফেল্স স্কোয়ারে হতদরিদ্র বিডিআর ডাল-ভাতের দাবী নিয়ে তাকিয়ে দেখবে; কেমন করে অফিসারের বিবিরা ভোগের বিলাসে ভেসে যাচ্ছে। কে কাকে করুণা করছে! এমন করুনা ৬০ ভাগ ভূমিহীন লোক আর কতদিন করবে! এবার তাও বিশেষ একটা সংগঠনের কয়েকজনের বলিদানেই শাপ গর্তে আশ্রয় নিয়েছে। অবস্থার আশু পরিবর্তন না হলে, গর্ত থেকে শাপ আবার বের হবে।

কম ক্ষোভে বিডিআর এমন রক্তপিপাশু হয়নি। নিঃশেসে প্রাণ দান করতে যে সাহস লাগে, সেটা তাদের আছে। এর পেছনে অন্য কোন শক্তি বা উৎস খুজতে যাওয়া মানে তাদের এই সাহসটুকুকে অপমান করা। আর উদ্ভূত পরিস্থিতি অনুধাবন করে তা সমাধানে নিজেদের অযোগ্যতাকে কাপুরুষের মত আড়াল করতে চাওয়া।
কোন বিদ্রোহ কখনো বলি ছাড়া হয়না
এ বিদ্রোহের বলি যেন বৃথা না যায়।
মানুষ মানুষকে শিক্ষা জ্ঞান পদবী বংশ পরিচয় পেশা বা আর্থিক সংগতি দিয়ে বিচার না করে মানুষ হিসাবে দেখতে শেখুক।


মন্তব্য

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

চলুক
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

সবুজ বাঘ এর ছবি

ঠিকাছে

একজন [অতিথি] এর ছবি

কোন কিছুতেই এই গণহত্যাকে সমর্থন করতে পারছি না।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

চুপপপপপপ! বাতাসেরও কান আছে।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

পুতুল এর ছবি

জোর করেই লিখেছিলাম, অশংলগ্নতো বটেই।
বানান প্রমাদটা নিয়ে নিজেই খুব বিব্রত। আমার এক পরিচিত ব্যাক্তি শিক্ষার কোন সুজোগ পায়নি অথচ অনেক কিছুর হিসাব লিখে রাখতে হয়! সে নিজেই এক রকমের চিন্হ খুঁজে নিয়েছে। তারটা সেই বোঝে। কাগজ কলম সব সময় পকেটে রাখে। লোকে দেখলে মনে করবে সত্যিই পড়া-লেখা জানা মানুষ। আমার অবস্থা অনেকটা তার মতই। একই গাঁয়ের বাসিন্দা কিনা!

নিজের একক চেষ্টায় আর কতটুকু। তবুও জা হোক ভাবটা প্রকাশ করতে পারি আপনাদের লেখা পড়তে পারি। এই বা কম কী!
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

আপনার এই পোস্টটা দেখলাম, এইটাও দেখলাম ... মেলাতে পারলাম না ...

হিসাব করে দেখলাম আপনার মেয়ের বয়স এক মাসের মত ... আজকে আমার এক পরিচিত বড়ভাইয়ের পচাগলা লাশ বের করা হয়েছে যার মেয়ের বয়স তিন মাস হয়নি এখনো ...

মেয়েকে নিয়ে নিশ্চই অনেক সময় কাটান, কখনো সময় পেলে মনে করে দেখেন আরো কিছু মানুষ আছে যারা এই সৌভাগ্যটা থেকে বঞ্চিত হল ...

নিজের উপরে না পড়লে আমরা কেউ কিছু বুঝতে পারি না ... তাও প্রার্থনা করি আপনাকে যেন সেটা বুঝতে না হয় ...

সেনাবাহিনীর অনেক দোষ জানি, কিন্তু সেটা আলোচনা করার জন্য এটাই কি একমাত্র সময়? আমার চরম শত্রুরও যদি কোন পরিবারের সদস্য মারা যায় আমি মনে হয় অন্তত কিছুদিন মুখবন্ধ রাখব, সে সামলে ওঠার পরে আবার শুরু করতে পারি ... এই পোস্টটা তো কয়দিন পরেও দিতে পারতেন, নাকি?

আমার মনে পড়ে না আপনি বা অন্য আরও কিছু মানুষ গত কয়েক মাসে সেনাবাহিনী নিয়ে কোন পোস্ট দিয়েছেন ... তেমনি আমি এটাও মনে করি না যে একমাস পরেই আপনি এইটা নিয়ে আর কোন পোস্ট দিবেন ... এত সময় আমাদের নাই ...

................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...

পুতুল এর ছবি

ভাই আপনার বড় ভাইয়ের এবং আরো নিহত সেনা সদস্যদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।
এতগুলো মানুষ মরল, আর তার সমালোচনা করতেও আমাদের সঠিক সময়ের অপেক্ষা করতে হবে? সামরিক বাহিনীর সমালোচনা করার সুযোগ আমরা পেলাম কোথায়? স্বাধীনতার পর থেকে তো তারা আমাদের কথা বলাও নিয়ন্ত্রন করেছে। ভাই আপনাকেও অনুরোধ করি ব্যাক্তিগত ভাবে না ভেবে, কথা বলুন।
আপনার প্রর্থনার জন্য ধন্যবাদ, কার উপর কখন কি বিপদ আসে সেটা বলা কঠিন। তবে সামরিক বাহীনির সদস্যদের ঝুকি একটু বেশী। অবশ্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সে আশংকা না করলেও চলে। আমাদের যুদ্ধে অংশগ্রহনের সম্ভবনা নাই বললেই চলে। সেনা বিদ্রোহও প্রতিদিন ঘটে না। কিন্তু যা ঘটেছে তাই যথেষ্ট মর্মান্তিক। আশা করি আমরা এই বিদ্রহ থেকে সঠিক শিক্ষা নেব। প্রতিশোধ নয়।
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

সমালোচনা করতে অপেক্ষা করতে হবে কেন? সমালোচনা করুন, প্রশ্ন করুন, প্রশ্নের জবাব দেয়ার জন্য থিওরীও বের করুন ... বিডিআরের উপরে যেন কোন নিষ্ঠুর প্রতিশোধ নেয়া না হয় সেটা নিশ্চিত করুন, বিডিআরের যে জওয়ানরা নিখোঁজ সেটা নিয়ে লিখুন, তাদের পরিবারের কথা যদি কিছু জেনে থাকেন সেটা নিয়ে লিখুন ... লিখতে তো কেউ মানা করে নাই ...

কিন্তু "কোন বিদ্রোহ কখনো বলি ছাড়া হয়না" এই লাইনগুলি পারলে পরিহার করে লিখুন ... আমাকে বললেন ব্যক্তিগত শোক কাটিয়ে কথা বলতে, আপনি নিজে তো ব্যক্তিগত ঘৃণা থেকে বের হতে পারছেন না ...

আপনাকেও বলি, "মানুষ মানুষকে শিক্ষা জ্ঞান পদবী বংশ পরিচয় পেশা বা আর্থিক সংগতি দিয়ে বিচার না করে মানুষ হিসাবে দেখতে শেখুক।"

ভালো থাকুন ...
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...

পুতুল এর ছবি

আপনি নিজে তো ব্যক্তিগত ঘৃণা থেকে বের হতে পারছেন না ...

আপনার এই অভিযোগটি অস্বীকার করতে পারছি না। তবে এই ঘৃণাটা কোন ব্যাক্তির বিরোদ্ধে নয়। পদ্ধতি বা সিষ্টেমের বিরোদ্ধে। তবে এই ঘটনায় নিহতদের জন্য সত্যিই খুব খারাপ লাগছে। আবেগের বিশেষণ গুলো বাদ দিয়ে বললাম।
কিন্তু আরো জারা মারা যাবে তাদের জন্যও খারাপ লাগে। অথচ পদ্ধতিগত ভুলের জন্য এত মানুষ মরল! আগেও মরেছে ভবিষ্যতেও মরবে।

আপনাকেও বলি, "মানুষ মানুষকে শিক্ষা জ্ঞান পদবী বংশ পরিচয় পেশা বা আর্থিক সংগতি দিয়ে বিচার না করে মানুষ হিসাবে দেখতে শেখুক।"

এই কথাটা আমি অনেক কিছু থেকে বঞ্চিত হয়ে বলতে পারি (বলতে পারেন শান্তি প্রচেষ্টা) , যারা আমার মত অনেককে বঞ্চিত করে শিক্ষা, জ্ঞান, পদবী, পেশা বা আর্থিক সংগতি-র অধীকারী হয়েছে, তারা বলতে হলে" সবার জন্য সমান সুযোগ দিয়ে তারপর বলতে পারে।

কিন্তু "কোন বিদ্রোহ কখনো বলি ছাড়া হয়না" এই লাইনগুলি পারলে পরিহার করে লিখুন ...

কথাটা খুব ডিপ্লমেটিক হয়নি। সেটা মানি। অনেক পাঠকের কাছেই খুব অমানবিক মনে হবে, হয়তো অকারণে আহত বোধ করবেন। হয়তো এর অন্য প্রতিশব্দ ব্যবহার করতে পারতাম। কিন্তু আমি এইসব সভ্যতার বইরেই না হয় থাকি! তবে ভবিষ্যতে পরিহারের চেষ্টা করব। তবে শব্দটা ব্যবহারের সময় "সিষ্টেম লস" এর প্রতি ক্ষেপে গিয়েই বলে থাকব। প্রাণ নিয়ে এমন ছিনিমিনি খেলা হয়তো অনন্তকাল চলবে!
মানুষকে যদি বলি; কাঁচ একটা তরল পদার্থ, মানুষ আমাকে পাগল বলবে, অথচ কথাটা সত্য। তেম্নি আক্রমন ঠেকানোর প্রস্তুতি নিয়ে, প্রতিবেশীর সাথে বন্ধুত্বে যাওয়াও ভুল। এই কথাও সত্য। তবু দেখুন পৃথিবীর প্রতিরক্ষা কত কলাকৌশলে পরিপূর্ণ! অনেকে আবার আরেক দেশে গিয়ে নিজেকে প্রতিরক্ষা করে! প্রতিরক্ষার এই প্রতিযোগিটা আজকাল একটা ফ্যাশন হয়েগেছে। আমরা সেই ফ্যাশন রক্ষা করতে গিয়ে কলাবাগান ছাড়াই হাতি কিনেছি। সে কথা আলাদা পোষ্টে লিখব।

মাথায় গত দশ বছর যাবৎ চারটা উপন্যাস নিয়ে ঘুরছি, তার একটার (শেরালী) দুই তৃতীয়াংশ শেষ করে বসে আছি ছ'মাস। অথচ গত পাঁছ বছর ধরে লিখছি। ফাঁকে ফাঁকে বউকে কথা দিয়ে ফেঁসে গেছি বলে অনুবাদ করতে হল খোকা বাবু। তাই লিখব এমন কথা দিতে পারি না। কিন্তু এ লেখাটা দেয়ার পরে একরকম "কৈফিত" হিসাবে হলেও লিখতে হবে। তবে তার আগে বিডিআর-দের নিয়ে একটা ছোট্ট লেখা দিয়ে, তারপর আমাদের সভ্য সমাজ আরেক সভ্য সমাজের আক্রমন থেকে রক্ষা করতে কেন একটা বিশাল বাহিনী দরকার হয়, আমার পক্ষপাতদুষ্ট-দৃষ্টি তা দেখানোর চেষ্টা করব।

**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

তীরন্দাজ এর ছবি

ঘটনা যখন শুরু হলো, অন্যান্য অনেকের মতোই বিডিআর এর খেটে খাওয়া জোয়ানদের প্রতিই আমার সহানুভুতি ছিল বেশী। কারণ, দেখেছি ও জানি, আমাদের দেশের সেনাবাহিনী কতোটা প্রিভিলাইজড । ওরা নিজেরাও নিজেদেরকে বড় বেশী এলিট মনে করে ও তার প্রকাশ তাদের প্রতিটি পদক্ষপেই ঘটায়। আর্মি আর সিভিলিয়ানের পার্থক্য ওদের কাছে বিরাট।

কিন্তু বিডিআর এর আত্মসমর্পনের পর মৃত্যুর সংখ্যা, ও নিশৃংসতা দেখে আমার এই সহানুভুটি প্রচন্ড এক ধাক্কায় শুন্যে নেমে এলো। যে কোন অবস্থায়, যে কোন পরিস্থিতিতে একে কোনভাবেই সমর্থন করা যায়না। কিন্তু তারপরও এই মৃত্যকে আমার কাছে অস্বাভাবিক বলে মনে হয়নি। অস্ত্রধারীরা তো এমনই হয়! ভেতরে যখন উন্মাদনা আসে, হাতে যখন অস্ত্র থাকে, তখন মানুষ আর মানুষ থাকে কি? বিডিআর না হয়ে আর্মির সাধারণ সৈনিকদের মাঝে যদি এই বিদ্রোহ হতো, তাহলে ওরা ওদের অফিসারদেরকে ছেড়ে দিতো? বর্বরতার ভাষা সবখানেই এক।

কমান্ডিং চেইনের বাইরেও, আর্মি অফিসার ও সাধারন সৈনিকের যে পার্থক্য, তা আমাদের উপনিবেশিক ইতিহাসকে মনে করিয়ে দেয়ার জন্যে যথেষ্ট। আমাদের সাধারণ সমাজেও এই প্রভাবে প্লেগ হয়ে আছে। একটি স্বাধীন দেশে তার যতোটা পরিবর্তন হওয়া দরকার ছিল, তা হয়নি। রাগিব এটাকে পাকি বর্বরতার সাথে তুলনা করেছেন। তাঁর তুলনা যথার্থ। শুধু একটাই কথা, যেখানে আমরা আমাদের ঔপনিবেশিক শিক্ষা আর মনোভাবকেই ছাড়তে পারিনি আজ অবধি, পাকি শিক্ষাকে ছাড়বো কি করে? এটা আমাদের জাতীয় চরিত্রের সাথে অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িত হয়ে আছে। এমনিতে আমরা শান্ত জাতি। কিন্তু আমাদের ভেতরে যদি নিশৃংসতা ভর করে, তখন তা লাগামহীন হিংস্র পশুত্বের পর্যায়ে চলে যেতে মামান্যও দেরী হয়না। এখানে সেটাই হয়েছে ও সামনেও হবে। অনেক আগে মিউনিখে এক বাংলাদেশীর দল একজন বাঙলাদেশীকে পিটিয়ে খুন করে। আমাকে পুলিশের বাছে যেতে হয় দোভাষী হিসেবে। পলিশ জানতে চাইল, "কিভাবে মারে তোমাদের দেশের লোক, একটা হাড্ডিও আস্তো রাখেনি! এতোটা পরিকল্পনা করেই মারলো?"

তাই পুতুলের মতানুযায়ীও ভাবার প্রয়োজন এখনই, কেনো এরকম একটি ঘটনা ঘটলো। এর পেছনের কারণ কি। সময় পেরিয়ে গেলে, শোক কিছুটা স্তিমিত হলে, এ ভাবনাগুলোও সরে যাবে পেছনে। তাই এখনই ভাবা দরকার। যদি না ভাবা হয়, এমনি ঘটনা আবারো ঘটবে, হয়তো দেখা যাবে সেনাবাহিনীর সাধারণ সৈনিকের গুলিতে আবারো মারা পড়বেন তাদের অফিসারের কয়েকজন, বা আবারো বিড়িআর এ বা পুলিশে এমনি কোন ঘটনা।

প্রমানিত হবার আগ অবধি বাইরের সরাসরি কোন প্রভাবের কথা বিশ্বাস করতে চাইনা। হয়তো উস্কানী থাকতে পারে। কিন্তু ভেতরে অসন্তোষ আর হতাশার ভার যথেষ্ট উজনদার না হলে কোন উস্কানীতেই এতোটা বর্বর হয় না মানুষ। সে অসন্তোষ আর হতাশা খুজে না বের করতে পারলে এমনি ঘটনা আবারো ঘটবে। তাই শোক আর ঘুণা যতোটা জরুরী, কারণ খুজে সমাধানের পথ বের করা তার চেয়ে কখনোই কম জরুরী নয়।

**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

একমত।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

তীরুদা, ভীষন সহমত আপনার সাথে

শুধু এই অংশের ব্যাপারে কিছু কথা

রাগিব এটাকে পাকি বর্বরতার সাথে তুলনা করেছেন। তাঁর তুলনা যথার্থ। শুধু একটাই কথা, যেখানে আমরা আমাদের ঔপনিবেশিক শিক্ষা আর মনোভাবকেই ছাড়তে পারিনি আজ অবধি, পাকি শিক্ষাকে ছাড়বো কি করে?

আমি কোনভাবেই এটার সাথে পাকি বর্বরতার সাদৃশ্য পাইনা ... এটা নৃসংশ সন্দেহ নেই ... তবে একটা বেসিক ডিফারেন্স আছে
আপনি যে ঔপনিবেশিক শিক্ষার প্রসঙ্গটা আনলেন সেটার সূত্র ধরেই বলছি, বিডিআরদের এই হত্যায় ঔপনিবেশিক সিস্টেমের দলিতদের ক্ষোভজাত নৃশংসতা দেখা গেছে, যেখানে খুনী হয়তো খুন করতে করতে বলেছে,"দেখ্ মজা!" ... এটা সংঘটিত হয়েছে ক্ষমতাহীনদের দ্বারা
আর ৭১ এ পাকিদের নৃশংসতা ছিলো ঔপনিবেশিক সিস্টেমের শোষকের উন্নাসিকতাজাত নৃশংসতা যেখানে খুনী খুন করতে করতে ভেবেছে, "এগুলো বাঁচলেই কি, মরলেই কি!" ...এটা সংঘটিত হয়েছে ক্ষমতাবানদের দ্বারা
ক্ষমতার সমীকরণটা এখানে খুব গুরুত্বপূর্ণ .... দার্শনিক বিচারে দ্বিতীয়টি অনেক বেশী ভয়াবহ!!!
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

পুতুল এর ছবি

তীরুদা শুধু পাকি বর্বরতার সাথে তুলনাটা মানতে পারলাম না।
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

তীরন্দাজ এর ছবি

আমার কাছে বর্বরতার শ্রেনী বা জাতি নেই। আমি বর্বরতাকে তার প্রত্যক্ষ চেহারায় বিচার করি। সবার আগে শ্রেনী জাতি নির্বিশেষ সেই প্রত্যক্ষ নির্মম চেহারার প্রতি ঘৃণা ও নিন্দা জানিয়ে পরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কারণ খোঁজার চেষ্টা করি।
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

মানুষ এর ছবি

সম্মানিত লেখক,

আপনার এই লেখাটা পড়ে আর চুপ থাকতে পারলাম না। আপনার বিবেকের কাছে কিছু প্রশ্ন করি। আশা করি উত্তর দিবেনঃ

১। সিপাহী বিদ্রোহের জন্য যে ধরনের কারন এবং যৌক্তিকতা প্রয়োজন, এই গনহত্যার পেছনে সে ধরনের কারন এবং যথেষ্ঠ যৌক্তিকতা আছে বলে কি আপনি মনে করেন? এই বিডিআর বিদ্রোহের যে কারনগুলো জানা গিয়েছে তার জন্য শতাধিক মেধাবী অফিসারকে স্বপরিবারে হত্যা করা সমর্থন করেন?

২। দাবী আদায়ের অন্যতম উপায় হলো আন্দোলন। আন্দোলন করার জন্য অনেক উপায়ই তো রয়েছে। হত্যা না করে এই অফিসার ও পরিবারবর্গকে জিম্মি করে দাবী আদায় করাটা অপেক্ষাকৃত সহজতর এবং যুক্তিসংগত নয় কি? একবিংশ শতাব্দীর এই সময়ে এসে দাবী আদায়ের জন্য এমন নিকৃষ্ট এবং ঘৃন্যতম উপায় কি আপনি সমর্থন করেন?

৩। যেভাবে এই নৃশংস হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে তা অবশ্যই পূর্ব পরিকল্পিত এবং কোন তৃতীয়পক্ষের এতে মদদ থাকার সম্ভাবনা অত্যন্ত বেশি। শুধুমাত্র দাবী আদায়ের জন্য এরকম বৃহৎ ও পরিকল্পিত হত্যাকান্ড কখনোই হতে পারেনা। এই সাধারণ উপলব্ধিটুকু কি একবারও আপনার মধ্যে আসেনি?

৪। আপনি কি এভাবে গনহত্যা সমর্থন করেন? যদি এর উত্তর হ্যা বোধক হয়, তারমানে আপনি কি ৭১ এর গনহত্যাও সমর্থন করবেন?

৫। যে শতাধিক মেধাবী অফিসারদেরকে আমরা হারালাম তা পূরণ হতে কতদিন লাগতে পারে বলে আপনি মনে করেন? ৭২ এর ১৪ই ডিসেম্বর আমাদের সব বুদ্ধিজীবিদের পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছিল যাতে এই জাতি আর মাথা তুলে দাড়াতে না পারে। এই মেধাবী অফিসারগুলো প্রতিরক্ষাবাহিনীর জন্য বুদ্ধিজীবির পর্যায়ে পড়ে। এই হত্যার ফলে যে আমাদের প্রতিরক্ষাবাহিনী তথা সমগ্র জাতির এক বিরাট ক্ষতি হয়ে গেল তা কি আপনি উপলব্ধি করেন?

৬। দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী ও নির্ভরযোগ্য দুটি বাহিনীর মধ্যে চিরতরে যে সম্পর্কের অবনতি ঘটল তাকি দেশের জন্য প্রচন্ড হুমকিস্বরূপ নয়? এর ফলে কে বা কারা সবচেয়ে বেশি লাভবান হতে পারে একটু চিন্তা করেছেন? আর এই অবস্থার মধ্যেও আপনার এই ধরনের পোষ্ট কতটুকু সময়োপযোগী?

৭। সেনাবাহিনী কি তাদের ধৈর্য্যের যথেষ্ঠ পরিচয় দেয়নি? তাদের কি ক্ষমতা ছিলনা ট্যাংক ও অন্যান্য যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে পিলখানা গুড়িয়ে দেয়ার? জাতির বৃহত্তর স্বার্থে এবং আপনার আমার কথা চিন্তা করে তারা কি পারতনা খুনের বদলে খুন করতে? আপনার আপন ভাই, বোন, মা-বাবা যদি থাকত এই শহীদদের তালিকায় তাহলে এসময় এভাবে, এই সূরে কথা বলতে পারতেন?

৮। সেনাবাহিনীর অনেক খারাপ দিক থাকতে পারে কিন্তু তাদের ভাল দিকগুলো কি ফেলে দিতে পারবেন? আপনারা শুধু খারাপ দিকের সমালোচনা করেন, ভাল দিকগুলো দেখার চোখ কি আপনার নেই? দেশের জন্য সেনাবাহিনী ভাল কিছুই করেনি? আজকে আপনি যেই গনতন্ত্র ভোগ করছেন তার একটি অংশ কি এই সেনাবাহিনী না? তারা কি আপনার, আমার জন্য ভোটার আই-ডি কার্ড তৈরী করে দেয়নি? এতটা অকৃতজ্ঞ জাতি আমরা? আপনার মধ্যে কি কোন কৃতজ্ঞতাবোধ নেই?

৯। আমরা সবাই চাই এখন নির্বিচারে সব বিডিআর সদস্যকে শাস্তি না দিয়ে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আসল দোষীদের সনাক্ত করে তাদের উপযুক্ত বিচার ও সাজা হোক। একই সাথে বিডিআর এর সবার সুযোগ সুবিধাগুলো পর্যবেক্ষন করে তাদেরকে তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী সুযোগসুবিধা দেয়া হোক। ভবিষ্যতে যেন এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয় সেজন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হোক। আপনি কি তার চেয়ে বেশি কিছু চাচ্ছেন, সিপাহী বিদ্রোহকে সমর্থনের মাধ্যমে ভবিষ্যতে আরো সিপাহী বিদ্রোহ ও আরো হত্যাযজ্ঞ চাচ্ছেন???

১০। আপনার প্রতি সম্মান রেখেই বলছি এই সময়ে আপনার এই ধরনের নেতিবাচক মনোভাবসম্পন্ন লেখা অনেক দেশপ্রেমিকের মনেই বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে এবং সেই সাথে আক্ষেপ এবং ক্ষতিকারক জনরোষের বৃদ্ধি ঘটাতে পারে যা সর্বোপরি আমাদের দেশ ও জাতির জন্য অত্যন্ত অকল্যানকর। আপনি কি দেশকে ভালবাসেন না? আপনি কি চান এদেশের প্রতিরোধ ব্যবস্থা আরো নাজুক হয়ে পড়ুক? আপনার বিবেক কি দেশের এই সংকটময় মূহূর্তেও বিদ্ধেষ আর হিংসা আরো বাড়াতে চাচ্ছে? আর এত সব প্রশ্নের পরও আপনি কি এই লেখাটা এখানে রাখতে চান???

এসব প্রশ্নের উত্তর যদি হ্যা-বোধক হয় তাহলে আমার আর কিছুই বলার নেই। আমি নিজেকে মানুষ মনে করি, অমানুষ নয়। তাই একজন সচেতন নাগরিক ও মানুষ হিসেবে "মানুষ" নামেই আপনার লেখায় এই ব্লগে আমার প্রথম কমেন্ট করলাম। আমার বিবেক আমাকে বাধ্য করল আপনার লেখায় এই কমেন্ট করতে। আপনাকে কষ্ট দিয়ে থাকলে দুঃখিত। কষ্ট করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ। আশা করি আমার প্রশ্নগুলোর উত্তর দিবেন।

পুতুল এর ছবি

মানুষ ভাই,
প্রশ্নের তালিকা দেখে সত্যিই ভয় পেয়েছি। যেন সামরিক ট্রাইবুনালের সামনে অপরাধীর কাঠগড়ায় দাড়িয়ে আছি। বুঝতে পারছি স্রোতের অনুকূলে থাকা কত আরামের। ভিন্নমত প্রকাশ করা বেশ ঝুকি পূর্ণ। আহারে বিডিআর পরিবারের লোকদের জনসম্মুখে শোক করার অধিকারও নাই।
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

মানুষ এর ছবি

হুমম... ভয় পাওয়ার মতো কাজ করলে ভয় লাগাটাই স্বাভাবিক।

স্রোতের অনুকূলে থাকা অবশ্যই আরামের কিন্তু যারা সবসময় স্রোতের প্রতিকূলে থাকাটাকে বীরত্ব ও বাহাদুরী মনে করে তাদের বোধ হয় স্রোতে ভেসে যাওয়ার ভয়ই বেশি থাকে, আর ভিত্তি বা গোড়া মজবুত না হলে ভেসে যাওয়াটাই কিন্তু স্বাভাবিক।

ভিন্নমত প্রকাশ করা তখনই ঝুকিপূর্ণ যখন তা গ্রহণযোগ্যতা হারায়। আপনার এই লেখায় অধিকাংশ পাঠকদের প্রতিক্রিয়া কেমন, একটু দেখেন তো। কতজন আপনার বক্তব্যকে সাদরে গ্রহণ করছে? আপনার বক্তব্য ঝুকিপূর্ণ হচ্ছে কারন আপনি সময়োপযোগী লেখা লিখেননি।

আপনি যে বিডিআর পরিবারের লোক তা আগে জানলে আপনাকে উপরের প্রশ্নগুলোই করতাম না।

ভেবেছিলাম অন্তঃত একটা প্রশ্নের উত্তর দিবেন... যাই হোক ধরে নিলাম আপনার কাছে কোন সদুত্তর নেই। বিরক্ত করার জন্য আবারো দুঃখিত

পুতুল এর ছবি

মানুষ ভাই,
মানুষের সভ্যতার ইতিহাস খুব গর্বের নয়। আপনাকে তা আর বলতে হবে না। আপনি জানেন।
সত্যিই বলতে কী, আপনার প্রশ্নগুলো পড়ে একটু বিরক্তই হয়েছিলাম। কিছু মনে করবেন না।
ভিন্ন মতের কউকে পেলেই আপনাদের প্রশ্নের তালিকায় রাজাকারদের আমরা যেভাবে ধরি, সেই শ্রেনীর কিছু প্রশ্ন যোগ হয়ে যায়। ব্যপারটায় খুব আহত বোধ করি। সে জন্যই আপনার সাথে আলোচনায় আগ্রহ পাইনি।

দেখুন ভাই,
আমরা যা কিছু যে ভাবেই বলি না কেন; বিডিআর দের অসন্তোস ছাড়া এমন ঘটনা ঘটা সম্ভব নয়। ধরে নিন এটা আমার বিপদ ডেকে আনার মতই একটা বিপদ জনক "ধারনা"।
আর যারা এ বিদ্রোহে নিহত হয়েছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি; তাদেরকে ৭২ এর নয ৭১ এর ১৪ ডিসেম্বরের (আপনি হয়তো এই কথায় বোঝাতে চেয়েছেন) শহীদ বুদ্ধি জিবীদের সাথে অনুগ্রহ করে তুলনা করবেন না।

আমি বিডিআর পরিবারের সদস্য নই। বলতে চেয়েছি তাদের অবস্থার কথা!
আমরা সব ধরনের সরকারী প্রতিষ্ঠান পরিহার করে চলি। সেখানে গেলেই সরকারের সত্যিকারের প্রজা মনে হয় নিজেদের। মাননীয় সরকার বাহাদুরের পাইক পেয়াদারা আমাদের কাছে প্রজা পীড়নের হাতিয়ার মাত্র!

মানুষের পৃথিবীতে প্রতিরক্ষা বাহিনী তাদের সভ্য হয়ে উঠার মান দন্ড। এমন সভ্য সমাজের দেশ প্রেমিক নাগরিকরা আমার উপর ক্ষেপে যেতেই পারে। সেটাই স্বাভাবিক। এমন কথা লিখব আর তার নিন্দার ভার নেবনা সেটা কি করে সম্ভব! তবে ভয়টা কেঁটে গেছে।

আমরা সুরমা নদীর শীতল স্রোতে ডুব দিয়ে বালি তুলি
তখন চোখ খুব লাল হয়, সে রক্তদৃষ্টির ডরে সূর্য্য পালায় মেঘের কোলে।
আবার ডুব দিতে যে বাতাস টানি, তাতে তুফান বয়।

আমাদের ঘাম বাষ্প হয়ে জমাট বাঁধে আকাশে
তাতে মৌসুমী বৃষ্টি হয়, ধরণী শীতল হয়

আমরা থাকি আটষট্টি হাজার গেরামে
আমাগরে কেউ কয় দিনমজুর কেউ কৃষান
নতুন করে নতুন নামে কয় প্রান্তিক।

সভ্য সমাজ, মানবতা বন্দী আছে নগরে,
তাদের ভয় সব সময় করি।
না জানি কখন কোন গোল বাধিয়ে, মানুষ মারে কারণে কী অকারনে।

প্রিয় মানুষ ভাই মানুষের চেয়ে ভয়ংকর প্রাণী আর নাই। তাদেরকে আমার মত নাদানেও ভয় পায়।

দয়া করে বাংলাদেশ সেনা বাহিনীর ইতিহাসটা আবার পড়েন। তখন বুঝবেন কে বেশী জঘণ্য খুনী? আমাদের ইতিহাস রক্তে লেখা। এখন বিডিআর খুন করছে। গনহত্যা। সেনাবাহিনী খুন করছে, অভুথ্যান। এখন প্রাণ খুলে নিন্দা জানাইতে পারি। তখন টু শব্দটিও করতে পারতাম না। এই হল তফাৎ। এতগুলো অফিসার মারা গেল, কবে তা পুরণ হবে? সে জবাবটা সেনা বাহিনী বা বিএনপি কে একবার করুন। কারণ তারা নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারবে।
গোলাম আজমকে আমরা দেশে আনি নাই।
এরশাদের আমলে ফ্রিডম পার্টি কইছে শেখ মুজিবের মরনোত্তোর বিচার করবে তারা।
জামাতে ইসলামী বিএনপির সরকার শহীদ মাতা জাহানারা ইমামকে বলেছে দেশদ্রোহী।
এই সব তো আপনি জানেনই, নতুন আর কী বলব?
ধন্যবাদ মানুষ ভাই।
সচলায়তনে স্বাগতম!

**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

বকলম এর ছবি

১। আর্মি সংক্রান্ত আপনার অনেক কথাই হয়ত ঠিক। তবে তা নিয়ে কথা বলার সময় এটা না। ব্রেজনেভ যখন মারা যায়, তখন আমেরিকার প্রেসিডেন্টও শোকবার্তা পাঠায়। এটাই সভ্য সমাজের নিয়ম। আর এখানে নির্মমভাবে খুন হয়েছে আমারই ভাইয়েরা। ভায়ে ভায়ে মারামারি থাকতে পারে, তাই বলে উল্লাস করা!

২। যেকোন ধরণের collective punishment মানবাধিকারের পরিপন্থী। গণহত্যা গণহত্যাই।

৩। BDR ডালভাতের কষ্টে আছে (এই দেশের মাপে , এবং তাদের নিজেদের যোগ্যতার বিচারে), এই কথা বিশ্বাস করতে বলার আগে আমাকে 'গাধা' নাম দিলে আমি বেশী খুশী হব।

৪। আমার ধারণা, এর পেছনে আরো কেউ আছে। আর্মির বিষোদগার গাওয়া অনেক সোজা, এটাকে সফলভাবে ব্যব‌হার করা হয়েছে এবং আপনার মত আনেকেই ধরা খেয়েছে।

৫। তবে হ্যা, আর্মি সম্পর্কে গত ২ বছরের অনেক কথাই শুনি। সময়ে এগুলোর তদন্ত করে হয় দোষীদের শাস্তি দিতে হবে, অথবা মিথ্যা প্রমান করতে হবে। তাতে যদি আর্মির হৃত গৌরব কিছুটা ফিরে আসে। তবে এই ঘটনায় আর্মি যে ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে, তাতেই বোঝা যায় যে আর্মিতে অনেক গুণ‌গত পরিবর্তণ এসেছে।

পুতুল এর ছবি

সময় হলে আর্মি সংক্রান্ত আপনার মতামতের আশায় রইলাম।
ডালভাতের কথাটা আমি আবিস্কার করিনি।
আশা করি আপনার মতে এর পেছনের কেউ-কে এক সময় জনতার সামনে হাজির করা হবে।

যেকোন ধরণের collective punishment মানবাধিকারের পরিপন্থী। গণহত্যা গণহত্যাই।

সে কারণেই বিদ্রোহী বিডিআরদের বিচার হত্যা না হয়ে হবে অপরাধের কঠোর শাস্তি।
আপনার মতামতের জন্য ধন্যবাদ।

**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

পরিবর্তনশীল এর ছবি

ভাই, একটা লেখা পড়ে কী পরিমাণ মেজাজ খারাপ হইতে পারে আপনার এই লেখা পড়ে বুঝলাম। মাইনাস দেওয়ার কোন উপায় নাই দেখে আপাতত এক দিলাম।
দু:খিত।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

পুতুল এর ছবি

পরিবর্তনশীলেরও মেজাজ খারাপ হয়!
তবুও আপনাকে ১ দেয়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

সৌরভ এর ছবি

এই পোস্টটিতে আপত্তি জানাতে গিয়েও থেমে গেলাম।
এইরকম অনুমানভিত্তিক বিশ্লেষন না করলে হয় না?

এবারের ঘটনাকে অন্য কোন বিদ্রোহ বা স্বাধীনতা আন্দোলনের সাথে এক করে না দেখার অনুরোধ জানাই।


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

পুতুল এর ছবি

ভাই থেমে গিয়ে আমার বিরাট উপকার করলেন। আপনাকে ধন্যবাদ।
আশা করি আপনি একটা অনুমান ভিত্তিক নয় প্রমান ভিত্তিক পোষ্ট দেবেন।
স্বাধীনতা আন্দোলনের সাথে এক করে কোন লেখা লিখেছি বলে মনে হচ্ছে না।
অন্য কোন বিদ্রোহের সাথে এক করে লিখিনি, হয়ত তুলনা করে লিখেছি।
মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

শিক্ষানবিস এর ছবি

এই লেখায় একটা পূর্বপরিকল্পিত গণহত্যাকে ছলে-বলে মহিমান্বিত বিদ্রোহ আখ্যা দেয়ার অপচেষ্টা করা হয়েছে- ধিক্কার জানাই এই মনোভাব এবং এ ধরণের লেখাগুলোকে...

পুতুল এর ছবি

সেটাই, এই ঘটনাকে কোন অবস্থাতেই বিদ্রোহ বলা যাবে না। আপনার নিন্দাই শীরোর্ধায।

**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

হিমু এর ছবি

আমাদের মধ্যে যারা এই পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকান্ডের সাথে ইতিহাসের অন্যান্য বিদ্রোহকে এক করে ফেলে দেখতে চাচ্ছি, তাদের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি,

১. বিপুল সংখ্যক জওয়ান এই বিদ্রোহে অংশগ্রহণ করেনি। তারা পালিয়েছে, কিংবা নিহত হয়েছে সহজওয়ানদের হাতে। তাদের সাথে ঘটনার সময় ও ঘটনার পরে যোগাযোগ করা হয়েছে।

২. প্রচুর টাকা খরচ করা হয়েছে এই ঘটনার পেছনে। কারা কিভাবে করেছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

বিদ্রোহ না কচু।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

তীরন্দাজ এর ছবি

হিমু, আজ অবধি আপনার উপরের বক্তব্যের কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সেরকম ভাবে প্রমানিত হলে আমিও বিশ্বাস করবো।

তবে আপনি যেভাবে বললেন, তাতে মনে হলো, সুবিধাবাদী আর সুবিধাভোগীদের পক্ষে কথা বলতে অন্য সুবিধাবাদী আর সুবিধাভোগীদের কোন প্রমানের দরকার পড়ে না।
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

হিমু এর ছবি

এর অসত্যতা কি প্রমাণিত হয়েছে? পলাতক জওয়ানদের কাছ থেকে বিপুল ক্যাশ উদ্ধার করা হচ্ছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী এমনই বক্তব্য দিয়েছেন। আর বিপুল সংখ্যক জওয়ান যে পলাতক ছিলো, তা তো খবরের কাগজেও এসেছে। দরবারে তিন হাজার জওয়ান উপস্থিত ছিলো, তিন হাজার জওয়ান কি আত্মসমর্পণ করেছে?

জওয়ানদের ভাষ্য যদি আমাদের বিশ্বাস করতে বলেন, তাহলে ভেবে দেখুন, তারা মাত্র একজন অফিসারের মৃত্যুর কথা জানিয়েছে সবাইকে। তাদের বাকি বক্তব্য বিশ্বাস করলে তো এটাও মানতে হয়?

আপনি যদি আমাকে সুবিধাভোগী বলেন, আপত্তি করবো না, সমাজের বিপুল সংখ্যক মানুষের চেয়ে আমি পর্যায়ক্রমে বেশি সুবিধা ভোগ করেছি। সুবিধাবাদী বললে আমি আপত্তি করবো এবং ব্যথিত হবো। আপনি যদি শব্দটি পুনর্বিবেচনা না করেন, অনুগ্রহ করে উদাহরণসহ বলুন আমি কোথায় কিভাবে সুবিধাবাদের চর্চা করলাম।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

তীরন্দাজ এর ছবি

সত্যতা প্রমানের চেয়ে অসত্যতা প্রমান অনেক বেশী সহজসাধ্য।

এখন অবধি কোন ধৃত জওয়ানের কোন বক্তব্য প্রমান হিসেবে জানানো হয়নি। এখন অবধি বলা হয়নি, কাদের ইশারায় এই নারকীয় ঘটনাটি ঘটলো। অথচ আমরা আমাদের নিজেদের অবস্থানে এতো বেশী নিশ্চিত যে, অন্যের বক্তব্যকে খুব সহজেই 'কচু' বলে আখ্যা দিতে পারি। কেউ কেউ তো ভারতকেও জড়াতে চাইছে এর সাথে। আমাকে কি প্রমান ছাড়াই সেটাও বিশ্বাস করতে হবে?

এই নারকীয় ঘটনার হোতাদের কঠিনতম বিচার চাই। সেই সাথে আরো চাই যে, সে হোতাদের চিহ্নিতকরণ নিরপেক্ষ ও সঠিক হয়। পেছনের কারণ খুজে বের করা হয়। যেখানে গোয়েন্দারা ঘটনার আগে সামান্য ধারণাও করতে পারলো না, ঘটনার দু'দিন পরই তা হোতা সম্পর্কে এতোটা নিশ্চিত কি করে হওয়া যায়?

সুবিধাবাদী শব্দটি দু:খপ্রকাশ করে সানন্দে ফিরিয়ে নিলাম।
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

হিমু এর ছবি

আমিও কচু শব্দটি ব্যবহারের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। আমার বক্তব্যের সমর্থনে আমি উৎস উল্লেখ করতে পারছি না বলে দুঃখিত, এবং একই কারণে আমার বক্তব্যের সপক্ষে খুব বেশি জোর দিয়ে আমি এখন দাঁড়াবো না। শুধু জানাই, বিডিআর জওয়ানদের দু'টি মোবাইল নাম্বার মাইকে অ্যানাউন্স করে জানানো হয়েছিলো যোগাযোগের জন্য। সেটিতে বিপুল সংখ্যক কল এসেছে ভেতর থেকে। ভেতরের চিত্র সেখান থেকে অনেকখানি পরিষ্কার হয়েছে। কে তাদের মদদ দিয়েছে, তা পরিষ্কার না হলেও, এ ঘটনায় মোট জওয়ানদের সবার সংশ্লিষ্টতা যে ছিলো না, তা মুক্তি পাওয়া অফিসাররাও বলছেন। তারা বলেছেন যে অনেক জওয়ানের মৃতদেহও তাদের চোখে পড়েছে। স্বতস্ফূর্ত বিদ্রোহে কি এমনটা হয়?

বিক্ষোভের অনেক কারণ জওয়ানদের ছিলো বলেই প্রতীয়মান হয়, কিন্তু তারা যা করেছে, সেটি পরিষ্কারভাবেই বিডিআর এর স্বার্থবিরোধী একটি হঠকারী কাজ, যার মাশুল আমাদের সবাইকে গুণতে হচ্ছে। এই বিদ্রোহ যদি সমর্থন বা সহানুভূতির যোগ্য হয়, তাহলে ক্লাস থ্রি এর শিশুরা মাস্টারদের খুন করে নিজেদের ভেতর থেকে মাস্টার নিয়োগের দাবি জানালে সেটাকেও আমরা একই কারণে সমর্থন দিতে বাধ্য থাকবো না কি?

জওয়ানদের কি ধরার আগে বক্তব্য নেয়া হয়নি? সেখানে কি তারা আমাদের জানায়নি যে তারা মোটে একজন অফিসারকে হত্যা করেছে?



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

তীরন্দাজ এর ছবি

সব জওয়ানরা যে এতে সংশ্লিষ্ট ছিল না, সেটা আমিও বিশ্বাস করি। এতোগুলো খুন করার পর খুনীরা যে ঘোষিত সাধারণ ক্ষমার আওতায় পড়ে না বা পড়বে না, সেটা আমারও দাবী বা চাওয়া। এর শাস্তি অবশ্যই হওয়া দরকার।

কিন্তু এই নারকীয় উস্মত্ততা নতুন কি? আমাদের উপনিবেশিক মানসিকতার কথা তো অজানা নয়। আমরা তো স্বাধীনতার পরপরই পিটিয়ে পকেটমার খুন করতে শিখেছি। সেনানিবাস থেকে হাজার হাজার সেনা গায়েব করতে শিখেছি। আমরা শিখেছি, মানুষ খুন করে লাশ টুকরো টুকরো করে কি ভাবে সারা শহরে ছড়িয়ে দিতে হয়। সঙ্গত কারণেই আমরা র্যাব নামক একটি খুনী সংস্থাকে প্রতিদিন বাহবা দিতে বাধ্য হই, যারা আন্তর্জাতিক মানবিধাকের তোয়াক্কা না করে সান্তাসী খুন করে যখন তখন।

এর জন্যে কি বাইরে উস্কানীর দরকার পড়ে? আমার এখনও বিশ্বাস, বিডিআর এর সাদস্যরা এই নারকীয় খুনের হত্যাজজ্ঞের কারণে (এই খুনেও প্রতিটি বিদ্রোহী জওয়ানও সংশ্লিষ্ট ছিলনা) তাদের একটি ন্যায্য দাবীআদায়ের সঙগ্রামকে নষ্ট করলো। সেজন্যেও আমার দু:খ হয়।

**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

রানা মেহের এর ছবি

কমান্ডো অপারেশন চালিয়ে জঙ্গী গ্রেফতারের নেতৃত্বে ছিলেন যিনি,
প্রান বাচানোর জন্য লুকিয়ে ছিলেন ম্যানহোলে।
মোবাইলে ফোন আসে। ধরা পড়ে যান।

মারা গেছেন একদিন আগে যোগদান করা যুবক।

আমার কৈশোরের বন্ধু। সারাজীবনের বন্ধু।
যার সাথে ভাগ করা কত কত অন্ধকার সময়।
জানি যে দেশের প্রয়োজনে নিজের পরিবারকে হত্য়া করতে পারে
কিন্তু দেশের গায়ে আঁচড় লাগতে দেবেনা
তার আগামী মাসে বিডিআরে কাজ করার কথা।

যদি একমাস আগে জয়েন করতো সে
হয়তো আজ এইসব লেখা এইসব কথা বলার জন্য
আপনাকে সবুজ বাঘকে অচ্ছুত বলাইকে
কুতসিত কিছু কথা বলতাম পুতুল।

এখন কিছুই বলতে ভালো লাগছে না
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

প্রিয় রানা মেহের,

আমার কোনো কথায় আপনি কষ্ট পেয়ে থাকলে আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আপনার আত্মীয়ের শোক আমি একই মাত্রায় অনুভব করতে পারবো - এমনটা বললে মিথ্যে বলা হবে, তবে আপনার কষ্ট এবং অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধা আছে জানবেন। সমস্যা হলো, যেটা আপনার কাছে ব্যক্তিগত কষ্টের স্থান, সেটা আমার কাছে একটা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনামাত্র। আমি ঘটনাকে ঘটনা হিসেবেই দেখছি। এরকম পরিস্থিতিতে ব্যক্তিগত আবেগের স্থান থেকে যতোটা সম্ভব বাইরে এসে প্রত্যেকে ঘটনার বিশ্লেষণ করে। কারোটা ঠিক হয় বা কারোটা বেঠিক - সেটা ভিন্ন প্রশ্ন। তবে বিগ পিকচারের দিকে তাকালে ঘটনাকে ঘটনা হিসেবে দেখার বাইরে কিছু করার থাকে না। অন্তত একটা বিষয় তো স্পষ্ট, আমরা প্রত্যেকেই চাই বর্তমান সংকট থেকে শান্তিপূর্ণ উত্তোরণ। ভালো থাকবেন।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

পুতুল এর ছবি

দুঃখিত প্রিয় রানা মেহের,
এই মন্তব্যটি আগে দেখিনি।
আমার প্রিয় সচলদের প্রথম সারির একজন আপনি।
এই লেখার মাধ্যমে আপনাকে কোন ভাবে আহত করে থাকলে আমি ব্যক্তিগত ভাবে আপনার কাছে ক্ষমা প্রার্থী। আপনার আপন জনদের হারানোর বেদনায় সান্তনা দেয়ার সাম্যর্থ আমার নেই। কিন্তু নিশ্চিৎ জানবেন আমি তাদের জন্য গভীর ভাবে মর্মাহত।
এই প্রাণপাত আমাদের কারোই কাম্য ছিল না।

**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

বটগাছ এর ছবি

আমরা সবসময় আবেগকে প্রাধান্য দেই। এ গণহত্যা কোনভাবেই কাম্য নয় আমাদের। তাই আপনার লেখাটি ভুল সময়ের লেখা, স্রোতের বিপরীতে লেখা বলেই মনে করি। এই মন্তব্যটি প্রকাশ করা হবে কিনা সন্দেহ আছে। তবু কিছু কথা বলতে চাই। এই লেখাটি একমাস আগে বা পরে লেখা হলে এর মূল্যায়ন অন্যরকম হতো বলে মনে করি।
সেনাবাহিনীদের একটি বড় অংশ সাধারন মানুষকে ব্লাডি সিভিলিয়ান ছাড়া কিছু ভাবে না, ভাববেও না। আপনাকে যদি সম্মানের সাথে ১ দিন বেঁচে থাকা আর অসম্মানের সাথে ১০০ দিন বেঁচে থাকার যুযোগ দেয়া হয় তাহলে আপনি কোনটি বেছে নেবেন? আমাদের সেনাবাহিনী বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মানুষের এতোটা অসম্মান করেছে যে তা এই গণহত্যার সমান না হলেও কোন অংশে কম হবে না। তাদের অতীত ইতিহাসটা এমন যে তাদের সম্মান করতে বড় কষ্ট হয়, তাদেরকে আপন ভাবতে বড় কষ্ট হয় আমাদের। অসম্মানের সাথে বেঁচে থাকবার চেয়ে মৃত্যুই শ্রেয় মনে করি আমরা। অপারেশন ক্লিনহার্টের সময় ওরা কোন কোন এলাকায় সম্মানিত ব্যাক্তিকেও কান ধরে উঠবস করিয়েছে। ওদের সাধারন মানুষের সম্মান বোঝার মতো ক্ষমতা নেই। আর্মিদের কাছে সাধারন মানুষের এই অসম্মানের এরকম উদাহরন হাজারখানেক দেয়া যাবে। এই বিডিআর বিদ্রোহের পেছনে কি আছে আমরা জানি না। না জানা পর্যন্ত কোন ধরনের মন্তব্য করতে চাই না। তবে আর্মির মাঝে দুর্নীতি হয় এইটা কেউ বললে বিশ্বাস করবো না। প্রতিরক্ষাখাতে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ থাকে প্রতিবছর। তবে এবারের বিদ্রোহে সবচেয়ে বড় ক্ষতিটা আর্মি কিংবা বিডিআরের হয়নি, হয়েছে দেশেরই।

পুতুল এর ছবি

তবে এবারের বিদ্রোহে সবচেয়ে বড় ক্ষতিটা আর্মি কিংবা বিডিআরের হয়নি, হয়েছে দেশেরই।

সম্পূর্ণ ভাবে একমত।
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

সাইফুল আকবর খান এর ছবি

হুম। আমিও মিলাতে পারলাম না। হতাশ হ'লাম। আমারই সমস্যা হয়তো। মন খারাপ
আপনার কথাই মনে ক'রে একটু সান্ত্বনা নিয়ে যাবার চেষ্টা করছি শেষে।

“কারো কাছ থেকে শুধু ততটুকুই চাইতে হয় যতটুকু তার দেয়ার ক্ষমতা আছে।"

ভালো থাকেন।

০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০
"আমার চতুর্পাশে সবকিছু যায় আসে-
আমি শুধু তুষারিত গতিহীন ধারা!"

___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি

পুতুল এর ছবি

আর কোন লাশ নয়, পর্বত প্রমান অপরাধীদের অপরাধকে আকাশ সমান ক্ষমা দিয়ে মৃত্যুদন্ডের বদলে জাবৎজীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করা হোক।

জানি আপনার বা আপনাদের দেবার ক্ষমতা অসীম, কী পারবেন (জাবৎজীবন স্বশ্রম কারা দন্ড দিয়ে) ক্ষমা করতে?
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

স্নিগ্ধা এর ছবি

পুতুল,

আমার মন্তব্য আপনার ভালো লাগবে না, যেমন আপনার পোস্ট আমার ভালো লাগে নি। এই ঘটনা নিয়ে অনেককিছুই লেখা হয়ে গেছে। নিজ নিজ মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সকলেরই আছে, আপনারও আছে। কিন্তু, যে ভঙ্গিতে আপনি এই পোস্টটা লিখেছেন সেটা আমার ভালো যে শুধু লাগে নি তাই নয়, আপনার বিভিন্ন লেখা পড়ে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি বা জীবনদর্শন সম্বন্ধে আমার যে ধারনা হয়েছিলো সেটাই খুব নাড়া খেয়ে গেছে।

সেনাবাহিনী কী করে বা কতটুকু কী করতে পারে সে সম্পর্কে আমার খুব ভালো ধারনা আছে। কেন আছে জানেন? কারণ, আমার সারাজীবন ঘুষ না নেয়া, টেনেটুনে সংসার চালানো সৎ সরকারী কর্মচারী বাবাকে এরশাদের মার্শাল ল'র সময়ে এক কর্ণেলের কোপানলে পড়তে হয় (বি ডি আর এরই এক কর্ণেল) তার বহু লক্ষ টাকার একটা জিনিষ (আব্বার মতে তা 'সরকারী প্রয়োজন' কোনভাবেই ছিলো না) কেনার জন্য অনুমোদনকারী কাগজে সই করেনি বলে। আমি তখন স্কুলে পড়ি, কিন্তু সুদীর্ঘ সেই দুঃস্বপ্নের স্মৃতি আমার খুব ভালোই মনে আছে!!!

শুধু আমার বাবাই কেন, এরকম আরো বহুজনের বহু কিছুই আমার জানা আছে বা শোনা আছে। এবং তারপরও, তারপরও এই 'হত্যাকান্ড' কে মন থেকে ঘৃণা করি ......!

বি ডি আর জওয়ানদের ক্ষোভের কারণ হয়তো খুবই যুক্তিসঙ্গত, কিন্তু তাই বলে এই পথ??!! তাই বলে, এভাবে??!! আমাদের দেশে আমরা কাজের লোকদের সাথে তো এর চাইতেও খারাপ ব্যবহার করি। আজকে সেরকম কোন এক নির্যাতিত গৃহসহকারী আপনার চেনা কাউকে খুন করলে আপনি তখনও যদি সেই গৃহসহকারীর দৃষ্টিকোণ থেকে এরকম ব্যঙ্গাত্মকভাবে আপনার পরিচিত ব্যক্তির দোষ ধরতে পারেন, তাহলে আমি আমার কথা ফিরিয়ে নেবো, কিন্তু এখন না বলে পারছি না। সবচাইতে দুঃখজনক আপনার বক্তব্যের শ্লেষাত্মক সুর! অবশ্যই ব্যক্তিগত সংশ্লিষ্টতা ছাড়িয়ে আমাদের যে কোন ঘটনা বিশ্লেষণ করার অধিকার আছে। আপনিও আপনার যুক্তি অনুযায়ী ঘটনাটা ব্যাখ্যা বা বর্ণনা করতে পারতেন, আরেকটু নৈর্ব্যক্তিকভাবে। তাতে করে আপনার সাথে দ্বিমত পোষণ করলেও অন্তঃত এটা ভাবতে পারতাম যে আমরা সবাই তো ভিন্নমত পোষণ ও প্রকাশের অধিকারী, মানবিকতাকে উপেক্ষা না করেও।

আমিও নিরপরাধ বিডিআর জওয়ানদের জন্য চিন্তিত। তাদের ভাগ্যে কী অপেক্ষা করছে ভাবতে গেলেও থেমে যাই।

মানুষের লোভের কেন যে সীমা থাকে না, কী দিয়ে যে আমরা তৈরী - সেটাও ভাবছি। চারপাশটা দিন দিন বড়ই অচেনা হয়ে যাচ্ছে।

পুতুল এর ছবি

প্রিয় স্নিগ্ধা,
এত গুলো মানুষের মৃত্যুতে সবাই মর্মাহত। এবং আমিও।
কিন্তু আমার পক্ষে এর আগে সেনাবাহিনীর যত লোক (অফিসার) বিভিন্ন সময় নিহত হয়েছেন তাদের শোককে ছোট করে দেখা সম্ভব হয়নি। এবং তাদের সর্বমোট সংখ্যা এর চেয়ে আরো অনেক বেশী।
তখন আমাদের শোক করার, নিন্দা জানানোর অধিকার ছিল না। এখন আমাদের মিডিয়ার শক্তি বেড়েছে, জনমত গঠনে তা কাজে লাগছে। আমরা শিউড়ে উঠছি এমন পৈশাচিক হত্যাকান্ডে।
আমার ধারনা আমাদের সকলের বাধভাঙ্গা নিন্দা-ঘৃণা মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর সাধারণ ক্ষমা তুলে নিয়েছেন।
জানিনা বিচার কেমন হবে, কিন্তু আমাদেরকে শান্ত করতে হলে বিদ্রোহী বিডিআরদের অনেককেই সর্বোচ্চ শাস্তি (মৃত্যুদন্ড) পেতে হবে।
সেখানে কোন বর্বরতা থাকবে না। কৃত অপরাধের যোগ্য শাস্তি হবে। বিদ্রোহে থাকবে বাইরের ইন্দন।
তাদেরও সন্তান স্ত্রী কন্যা আছে। যেমন আছে এর আগের ক্যূ-গুলিতে নিহত সৈন্যদের। তাদের কথা বলা হয়তো আমার ভুলই হয়েছে। কি দৃষ্টি থেকে আমি ঘটনাটা দেখেছি, সেটা অন্য কোনদিন বলব।
আমাদের মত দেশে সেনা বাহিনী একটা সমস্যা, কোন সমাধান নয়।
আপনাকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা।

**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

আয়েশা আখতার এর ছবি

আপনার লেখা পড়লাম এবং খুবই আহত হলাম , কেমন করে আপনি এ ধরনের একটি জঘন্য কাজকে সিপাহী বিদ্রোহের সাথে তুলনা করলেন। যাই হোক মত প্রকাশের অধিকার সবারই আছে। আপনারও আছে । তবে আমরা যারা একটু আধটু লেখি এবং দশজনে যা পড়ে, তার ক্ষেত্রে আরেকটু দায়িত্বশীল হওয়া উচিত নয় কি?

পুতুল এর ছবি

তবে আমরা যারা একটু আধটু লেখি এবং দশজনে যা পড়ে, তার ক্ষেত্রে আরেকটু দায়িত্বশীল হওয়া উচিত নয় কি?

শ্রদ্দেয় আয়েশা আখতার,
দায়ীত্বশীল হয়ে সবাইতো ঘৃণা-নিন্দা, দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি চাইছেই।
আমার মত একজন দায়ীত্বহীন নাদান থাকুক না, মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত বিডিআরদের পরিবারের পক্ষ হয়ে। তারাওতো স্বজন হারাবে। তাদের তো কেউ নেই। ভেবে দেখেনতো একবার এ কথা ভেবে আমাকে ক্ষমা করা যায় কিনা।
অপনাকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা।

**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।