আমি অধম

পুতুল এর ছবি
লিখেছেন পুতুল (তারিখ: রবি, ২৩/০১/২০১১ - ৭:১৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কেন জানি আমি আড্ডা খুব পছন্দ করি!‍
অথচ আড্ডা আমাকে একেবারেই পছন্দ করে না।

আড্ডার খবর পেলেই আমি লাফিয়ে ঊঠি। আসলে আড্ডা মারার বিলাসিতা আমার একেবারেই মানায় না। ছোটলোক, বড়লোক সেজে যেভাবে জাতে উঠতে চায়, অনেকটা সে ভাবেই আমি আড্ডা মেরে প্রমান করতে চাই, যে আড্ডা মারার মতো সময় আমার আছে।

সমস্যা হয় আড্ডার উপযোগী কথা নিয়ে। পূঁজির প্রভাব, মানুষের সঙ্গমে কতটা ক্রিয়াশীল? সে ব্যাপারে আমার কোন ধারণা নেই। কাজেই চুপ থাকি। সে জন্যই আমি আড্ডার ঠিক উপযোগী নই।

কথাটা ফেলে দেয়ার মতো নয়। আমাকে সত্যিই কেউ পছন্দ করে না। কি আর করা‌‌‍, আড্ডায় গিয়ে চুপচাপ কোণায় বসে থাকি। সবার মতের সাথে মিলেনা বলে গনতান্ত্রিকও নই। স্বৈরাচার আমি একা বসে সবার মত শুনি।

প্রটোকল ভেঙ্গে চেঁচিয়ে উঠি; আমাদের শহরে ২১শে ফেব্রুয়ারী কিংবা ১৬ ডিসেম্বরের অনুষ্ঠান নিয়ে পরিকল্পনা শুনে। আহা, যদি সুন্দর একটা অনুষ্ঠান হয়! প্রাণ ভরে উপভোগ করবো।

স্বাধীনতা কিংবা শহীদ দিবসের প্রশ্নে বোকা বলে আমি কেন যেন কোন আপোষ করতে পারি না! কত খেলা, কত গান, কত কবিতা! আহা কি মজা! এর মাঝে আমিই কেবল আলাভোলা, কেষ্ট। কষ্ট সত্যিই পাই। যতো আনন্দেরই হোক, এই সব দিনে মরা মানুষ গুলো তো আমাদেরই বোন, আমাদের ভাই।

ওমা! তার থেকে তুমি এখনো বের হতে পারো নি! কি লজ্জা!
লজ্জা আমি সত্যিই পাই। বড্ড সেকেলে বলে। নিরপেক্ষতা এখানে আমি ভুলে যাই।

বন্ধুরা বলে ওমা সেকি কথা! নয় মাসের যুদ্ধে তোমার ভাইবোন মরল তিরিশ লাখ! এ যে মিথ্যা! মানতে পারছি না! আচ্ছা দেখাওতো প্রমান একখানা।

বোকার মতো আমিতো লিখে রাখি নি। দেখাবো কোত্থেকে! ওরা বলে- সেকেণ্ডে সাত খানা! শত্তুর বলে মিথ্যে অভিযোগ করবে! এ যে ভারি অন্যায়! ন'মাসে তিরিশ লাখ মারে এমন শক্তিধর ছিলনা পাকিস্তানীরা। আর দু'লাখ ধর্ষণ! সে তো কল্পনায়ও সম্ভব না।

হিসাবযন্ত্র, যুক্তির পাহাড়, আমি থই পাইনা। যুক্তিহীন মানুষ আমি আবেগে এগিয়ে ধরি বিয়ারের গ্লাস ঠোঁটের কম্পন ঠেকাতে। চুপ করে থাকি। কিন্তু কারো কোন কথা, যুক্তি, আমি কিছুই শুনি না।

যুবতীর সম্ভ্রম, মায়ের হারানো সন্তান; হোক তারা তুচ্ছ অতি নগন্য সংখ্যার, আমারই ভাই তারা আমারই বোন। এ দিনে আমি থাকি দুঃখী, আবেগী, সেকেলে, যুক্তিহীন, আপোষ-অক্ষম হয়ে।


মন্তব্য

রানা মেহের এর ছবি

কী যে বলেন না আপনি এইসব?

১৯৭১ এ আবার যুদ্ধ হয়েছিল নাকি?
প্রেমের বছর ছিল সেটা।
বাঙালি মেয়েরা প্রেমে পড়তো পাকিস্তানি সৈন্যের ।
তারা সেই প্রেম এখনো ধরে রাখে।
আর বলিউডের তারকারা এসে সেই সাক্ষ্য দিয়ে যান

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

পুতুল এর ছবি

প্রেমের বছর ছিল সেটা।

কথা কিন্তু ঠিক। তবে কাদের জন্য-

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

অতিথি লেখক এর ছবি

কথা কিন্তু ঠিক। তবে কাদের জন্য-

ভেবেছিলাম মেহেরজান আপনার দেখা হয়ে গেছে।

- জীবনতরী

মণিকা রশিদ এর ছবি

একদম ঠিক! একাত্তরে পাকিস্তানী সৈন্যদের বিলানো প্রেম পৃথিবীর ইতিহাসে সত্যই দুর্লভ!

----------------------------------------------
We all have reason
for moving
I move
to keep things whole.
-Mark Strand

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

বস্‌, বানান ভুলগুলো বড্ড চোখে পড়ছে। এটা লেখার স্পীড কমিয়ে দিচ্ছে আর লেখার স্পিরিটের সাথেতো একেবারেই যায়না।

*****************************************************

আপনি বস্‌ সেকেলে লোক। আপনি আধুনিক হতে পারবেন না। যতই বিয়ার খান সারাজীবন "ক্ষ্যাত" থেকে যাবেন। চারদিকে কত্তো উন্নতি হচ্ছে, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, আমরা সবাই আধুনিক হচ্ছি, দেশ-সংস্কৃতির সীমানা ভেঙে ফেলছি, নতুন ইতিহাস নির্মাণ করছি আর আপনি খালি পিছন দিক দিয়ে টেনে ধরেন। চার দশক আগের পাইন্যা প্যাঁচাল ছাড়া আপনার মুখ দিয়ে আর কিছু বের হয়না। জানেন না সময়ের চাকা কেবল সামনের দিকে ঘোরে!

*****************************************************

অটঃ "শেরালী" নামের যে একটা পাইন্যা প্যাঁচাল ছিল তাকে কি ডীপ ফ্রিজে ঢুকিয়ে রেখেছেন নাকি?


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

পুতুল এর ছবি

খুব আবেগ থেকে লেখিই, পোস্ট করে দিয়েছি। এই সব সস্তা আবেগ সচলায়তন ছাড়া আর কোথায় প্রকাশ করবো! ভুল বানান গুলি আমার চোখে যে কয়টা পড়ল ঠিক করলাম।

ঠিকই বলেছেন বস; সময়ের চাকা সত্যিই সামনের দিকে আগাচ্ছে। পিছনে থেকে আমিই কেবল কষ্ট পাই।

শেরালীর সাজগোজ চলছে আপনার পরামর্শ অনুযায়ী। শেষ হলে আর এবকার শেষ দেখাটা দেখে দেওয়ার জন্য পাঠাব।

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

অতিথি লেখক এর ছবি

সেকেণ্ডে সাত খানা! এজে ভারি অন্যায়, শত্তুর বলে মিথ্যে অভিযোগ করবে! এ যে ভারি অন্যায়! ন'মাসে তিরিশ লাখ মারে এমন শক্তিধর ছিলনা পাকিস্তানীরা। আর দু'লাখ ধর্ষণ! সে তো কল্পনায়ও সম্ভব না।

আসলেই কল্পনায় আনা যায় না। -রু
("সেকেণ্ডে সাত খানা!", এটা কি মিনিটে সাত খানা হবে?)

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রেমের বছর ছিল সেটা।

আসলেই।

-----------------------------
তৌফিক, চিলেকোঠা

বইখাতা এর ছবি

হুম, এ জাতীয় কথা শুনতে হয়। মাঝে মাঝে ভয়ানক উত্তেজিত হয় তর্ক করতে থাকি, তবে সব সময় পারিনা। ভীষণ রাগ লাগে।

অতিথি লেখক এর ছবি

ভয়ানক একটা লেখা। এরকম অধমই দরকার আমাদের এখন। শুধু তাকে উদ্যোগী হতে হবে তাদেরকে চুপ করানোর জন্যে।

-অতীত

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।