“মানুষের সবচাইতে মূল্যবান অঙ্গের নাম পাসপোর্ট” কথাটা বলেছিলেন গুরু বার্থল্ড ব্রেখ্ট। জন্মের মতো খুব সহজ ও স্বাভাবিক পদ্ধতিতে পাসপোর্ট নামের অঙ্গ গজায়ও না। কিন্তু সেই বন্দরবৈতরণীর বাহক, পাসপোর্টের কল্যানে অনেক সুবিধা/অসুবিধা ভোগ করেন। কিছু মানুষ একটা বিশেষ পাসপোর্টর কল্যানে ব্রাহ্মণ্ডের প্রায় সব জায়গায় যাতায়ত, কাজকর্ম, বা বসবাস করতে পারেন নির্দিধায়। আবার পাসপোর্ট নিয়েও অনেকের কাছে বিশ্বের বিশাল অংশ থেকে যায় অধরা। অথচ সেই কাঙ্খিত/অনাকাঙ্খিত পাসপোর্ট অর্জনের জন্য কাউকে বিশেষ কিছু করতে হয় না, একটা বিশেষ ভৈগোলিক সীমায় জন্মানো ছাড়া।
দেশ ছেড়ে আসার সময় অপর প্রান্তের স্বর্গীয় শান্তির মোহে মানুষ এতো মগ্ন থাকে যে, কী ছেড়ে যাচ্ছে তা ভাবারই সময় পায় না। সীমানা পেরিয়ে গেলে যখন ফেরার পথ থাকে না তখন উপলব্দি হয়, কী ছেড়ে আসলাম! কিন্তু তখন আফসোস ছাড়া আর কিছু করার থাকে না। সেই আফসোসটা আমার ভেতরে অত গভীর ভাবে নেই। কারণ আমি আবার চাইলে ফিরেও যেতে পারি। কেউ আমাকে বাঁধা দেবে না। কিন্তু চাইলেই আর পারা যায় না।
সবাই টাকার জন্য দেশ ছাড়ে, কথাটা সত্য। এই নিয়ে আমার পক্ষে কোন তর্কে যাওয়া সম্ভব না। সম্ভব না এই দাবী করাও যে, এসাইলাম প্রর্থীদের মধ্যে কোন রাজাকার নাই। বড় বড় রাজাকারদের নামধাম আমরা জানি। কিন্তু অনেক চুনপুটি রাজাকারও আছে। আন্তত আমি একজন রাজাকার দেখেছি।
স্বাধীনতার অল্প কিছু দিনের মধ্যে বাকশাল গঠনের কারণে শেখ মুজিবকে স্বপরিবারে খুন করেছি। শিশুটিও রক্ষা পায়নি। বিনা বিচারে ক্ষুনের শুরুটা তার আগেই হয়েছিল সিরাজ শিকদার হত্যার মাধ্যমে। অবুত্থান পাল্টা অবুত্থান করে এলো জেনারেল জিয়া। প্রহসনে ক্ষিপ্ত হয়ে কর্ণেল তাহের নিজের গলায় নিজে দড়ি দিতে বাধ্য হলেন। কিন্তু জিয়াও বেশী দিন বাঁচলেন না। শেখ মুজিব ছাড়া আর কোন রাজনৈতিক হত্যার বিচার দেশে হয় নি। হয়তো হবে কোন দিন। আমরা আশা করতেই পারি।
রাজাকার সংসদ, মন্ত্রী, প্রেসিডেন্ট হয়েছেন। বহু রাজাকার খোদ আওয়ামী লিগেই আছে। আমাদের কেপি টেষ্টে আমরা ৫ জন রাজাকারের নাম জানতে চাই। সেই বিক্ষ্যাত রাজাকার ছাড়া আমাদের দেশে আর কোন রাজাকার যেন ছিল না! ৫ জনের নাম জানলেই যথেষ্ট। আমাদের পাড়া/গ্রাম/মহল্লা/ইউনিয়ন/থানায় আর কোন রাজাকারের অস্তিত্ব নেই।পাঁচজন রাজাকারের নাম বলা খুব সহজ। নিজের আশে-পাশের রাজাকারদের নাম বলা তত সহজ নয়। অবশ্য এটাও সত্য যে অনেকে এই ৫ জনের নামই বলতে পারে না।
ভাত দে হারামজাদা, নইলে মানচিত্র খাব টাইপের কবিতা লেখা এখন আর বিপ্লব নয়। দেশে ভাতের অভাব নেই। কবিতা লেখার খেসারত দিতে দাউদ হায়দার এখন বার্লিনে বরফ ঠেলে। তসলিমা নাসরিন কোথায় আছে, তার খবর আমরা জানিনা। কবিতা লেখাও বিপ্লব না।
বাংলাদেশে সাংবাদিকতা এখন বিপ্লব। সাংবাদিক মারলে শুধু বাংলাদেশের সরকার প্রধান বলতে পারে; কার বেডরুম পাহারা দেবার দায়ীত্ব সরকারের না। প্রেসিডেন্টের বিশেষ ক্ষমতায় হত্যা মামলার আসামী মাফ পায়। তাদের মধ্যে সব চেয়ে ধনী বসুন্ধরা গ্রুপের মালিক। ভদ্রলোক কালের কণ্ঠ দৈনিক পত্রিকা বের করেছেন। খূনী বলে তাঁর পত্রিকা কেউ বর্জন করেছে এমনটা শুনিনি। দশ ট্রাক অস্ত্র অবৈধ ভাবে কী করে দেশে ঢুকল? আমরা জানতে চাইনি। নিজের ভিটামাটি আকড়ে ধরে রাখা পাহাড়ী মেয়ে বিউটি-র নিখোঁজ হওয়া নিয়ে আমরা উদ্ভিগ্ন নই।
আমাদের দেশে দিনে-দুপুরে মানুষ মারলে তার বিচার হয় না। র্যাব-এর হাতে এখনো মানুষ মরছে। এখনো প্রতি পাঁচজনে একজন শিশু মারা যায় পাঁচ বছর বয়স হওয়ার আগেই না খেতে পেয়ে বীনা চিকিৎসায়। আমাদের দেশে শিক্ষা কোন অধিকার নয়। হিন্দু ধর্মের বর্ণ প্রথার মতো; গরীবরা জন্মেছে গরীব হয়ে, মরবেও গরীব হয়ে। আইনের চোখে, রাষ্ট্রের চোখে সব মানুষ সমান নয়।
আমারও ইচ্ছে ছিল আমি পড়ালেখা করব। বিদেশে পড়তে আসব। শ্রমিক হতে নয়। সে সুবিধা প্রিয় দেশ আমাকে দিয়েছে? আমরা শিক্ষাটা এমন কঠোর ভাবে শুধু মাত্র বিশেষ কিছু মানুষের জন্য নিয়ন্ত্রিত রেখেছি। দেশে শিক্ষার এতো সংকট পড়ালেখার সুযোগ এতো কম তার দায় কী আমাদের নয়? দেশ যে ভাবে চলছে অন্তত বেশীর ভাগ মানুষ তা মেনে নিয়েছি বলেই তো চলছে।
এইসব নৈরাজ্য মোকাবেলার জন্য রাজনৈতিক ভাবে চেষ্টাও করেছি। কিন্তু লাভ কিছু হয়নি। মানুষ নিজেকে নিয়ে এতো ব্যস্ত যে; সমষ্টিগত ভাবে কোন মৌলিক পরিবর্তনের পক্ষে সংগঠিত করা প্রায় অসম্ভব। ছাত্রজীবন কাটল এভাবেই। কিন্তু কী করে খাব! আমিতো মনি শিং নই। আমাকে কাজ করে খেতে হবে।
কর্ম সংস্থানের আশায় এসেছি ধনি দেশে। ধনি দেশের যে কোন নাগরিক কোন রকমের কারণ ছাড়াই আরেক ধনী দেশে গিয়ে বসবাস করতে পারে। গরীবের সেই সুবিধা নাই।একমাত্র পথ এসাইলাম।তার জন্য অন্তত নব্বই জন দেশে বিরজামন কোন রাজনৈতিক ঘটনার সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত করে। এখানে মিথ্যা হচ্ছে আমার বা অন্য কোন এসাইলাম প্রার্থীর ঘটে যাওয়া ঘটনার সাথে নিজের সংশ্লিষ্টতা। মিথ্যা অবশ্যই, কিন্তু ঘটনাতো মিথ্যা নয়। অবশ্য নিজের ঘরের বদনাম বাইরে ছড়ানো অনৈতিক বৈকী।
পশ্চিমের সাদা চামড়ার মানুষ নির্লজ্ব ভাবে সারা দুনিয়া শোষণ করে আপনাকে আমাকে বলে আমরা গরীব! এখন আমার বেতন আপনার স্কলারশিপের টাকা ঐ গরীব মানুষদের শোষণ এবং রক্ত চোষণ করা টাকা। তথাকথিত ধনী দেশের নাগরিকদের বেকার ভাতা থেকে শুরু করে প্রধান মন্ত্রীর সম্মানী পর্যন্ত পৃথিবীর তথাকথিত তৃতীয় বিশ্বের আশি ভাগ মানুষের সম্পদ। খাদ্যশষ্য এমন ভাবে নিয়ন্ত্রিত যে, এক সের চালের মিউনিখে যা দাম, ঢাকায়ও তা। নিজের দেশের কৃষিতে শতভাগ ভর্তুকী দিয়ে এখানে কৃত্রিমভাবে খাদ্যশষ্যের দাম নামমাত্র মূল্যে নিজের দেশের নাগরিকের হাতে তুলে দিচ্ছে। আর আমাদের গরীব দেশের ততোধিক গরীব কৃষকদের উৎপাদিত শষ্যে সাহাজ্যের সর্ত হিসাবে নিষিদ্ধ করে রেখেছে ভর্তুকী। ফলে দুনিয়ার সব জায়গায় খাদ্যশষ্যের একই দাম।
আবার সস্তায় উৎপাদনের জন্য সস্তা শ্রমিকের যোগানও দিচ্ছি আমরাই! মিউনিখের দামে চাল কিনে ভাত খেয়ে যে শ্রমিক মিউনিখে বসবাসকারী ধনী লোকদের জামা-কাপড় সেলাই করে ঢাকায় বসে; তার মজুরী হচ্ছে যিনি কাপড়টা কিনবেন তার মজুরীর হাজার ভাগের একভাগ। গরীবের পক্ষ হয়ে প্রতিবাদ করার মানুষ বেশী নেই।
৪৭ বিলিয়ন ডলারের বাস্তব লেনদেন ওয়াল ষ্ট্রিটের সেয়ার ব্রকারদের হাত ঘুরে ৭৫০ বিলিয়ন ডলার হয়ে গেছে। এই যে ভার্চুয়াল মূল্যস্ফীতি তার করণে অনেক মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সহায়-সম্বল-কাজ সব হারিয়ে পথে বসেছে দুনিয়ার অনেক মানুষ। যারা জানেই না কী অপরাধে তাকে চাকুরীচূত করা হচ্ছে। অথচ এর জন্য কাউকে কৈফিয়ৎ পর্যন্ত দিতে হয় নি। তার ক্ষতিপূরণ দিয়েছে দুনিয়ার সব মানুষ। কয়েকটা ওয়াল ষ্ট্রিটের ঈশারায় পৃথিবীর রাজা-বাদশাহ উঠ-বস করছে। আমরা একেই গনতন্ত্র বলে হাত তালি দিচ্ছি। আমাদের মেধাবী মানুষগুলোও ঐ হাততালি দেয়া লোকের দলে। যাদের ধারণা অলস বলেই গরীবরা গরীব। অথচ গরীব মানুষ দৈনিক ১২ ঘন্টা কাজ করে শুধু পেটের ভাত যোগাতে।
পড়ালেখা করার আর্থিক সচ্ছলতা নিয়ে অনেকেই জন্মায়। কিন্তু সবাই বুয়েটে বা নামকরা সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার মতো চরম অধ্যবসায় নিয়ে সে সুযোগ কাজে লাগায় না বা লাগাতে পারে না। যারা সে শ্রম এবং সাধনাটুকু করেন, তাঁরা আমাদের সীমিত সম্পদের মধ্যে আমাদের জন্য সব চেয়ে মূল্যবান একেকটা হীরের টুকরো। তথাকথিত ধনি দেশগুলো বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দিয়ে তাদের মেধা কিনে নিচ্ছে। আর তা কাজে লাগাচ্ছে তাদের (ধনীদের) শোষণযন্ত্র আরো নিখুঁত ও নির্ভূল করতে। দেশে যারা থেকে যাচ্ছে তাঁরা তাদের মেধা দিয়ে চালু রাখছে চলমান নৈরাজ্য যা তথাকথিত ধনি দেশগুলোর শোষণে কাজে লাগছে। সবচেয়ে ভঙ্কর হচ্ছে শোষকের মতো চিন্তা করতে শেখানোটা। আর ধনি দেশগুলো সেই চিন্তাকে পুরস্কৃত করছে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দিয়ে।
জর্মান সরকার বিদেশ থেকে বিশেষজ্ঞ আমদানী করতে বুদ্ধিবৃত্তিক অভিবাসন আইন আরো শিথিল করার ঘোষণা দিয়েছে। এতে লাভ কার সেই আলোচনায় থাক। এর মধ্যে যারা এখানে এসেছেন, তাদের নিয়ে বড় আশাবাদী ছিলাম। টয়লেট আর রাস্তা পরিস্কার করার মানুষই শুধু আমাদের দেশে জন্মায়নি। অনেক মেধাবী মানুষও জন্মেছে। এই নিয়ে গর্ব করতে পারব জার্মানদের কাছে। আর আমাদের প্রতি জার্মানদের অবজ্ঞা কিছুটা কমবে। কিন্তু বিধি বাম। তাঁরা প্রথমে আমাদের সাথে মিশেছে কিছু বাস্তব অসুবিধার কারণে। সাহাজ্যের জন্য আমরা এগিয়ে গিয়েছি অনেক উৎসাহ নিয়ে। কিন্তু দেখলাম ধীরে ধীরে তাঁরা একটা পার্থক্যের দেয়াল তুলে ফেলেছে। আমাদের মিউনিখ শহরে তথাকথিত একটা ইঞ্জিনিয়ার গ্রুপ হয়ে গেছে।
এবং জার্মানদের মতোই তাদের আচরণ আমাদের বিপরীতে। তারা এসাইলাম প্রার্থী নয়। বরং একটা শিক্ষিত এলিট শ্রেনী। যদিও জার্মানের বেশীর ভাগ মানুষের কাছে আসলে আমাদের এই এলিট শ্রেণী শুধুই বিদেশী। যা জার্মানরা গালি অর্থে ব্যবহার করে। স্বীকার করছি, আমরা তাদের চিন্তা-চেতনার লেবেল থেকে অনেক নীচে, তবুও বড় মাপের মানুষেরা হয়ত দেশের কুকুর ধরবেন বিদেশের ঠাকুর ফেলে।তা আমাদের কৃতি সন্তানেরা করেননি। আমার ধারণা তাদের না মেশার পেছনে এক ধরণের অভিজাত্যের অহংকার কাজ করে। তা করুক। অহংকার করার অধিকার মানুষের নিশ্চই আছে। তা ছাড়া যদি বলা হয়; দুনিয়ার মুসলিম, হিন্দু,বৈদ্য, খৃষ্টান এক; তাহলে দুনিয়ায় একটা গৃহযুদ্ধ লেগে যাবে। সব মানুষ এক, সে কথা বলার পরিণাম নিশ্চই আরো ভয়ঙ্কর।
দেশে যাই মেহমান হয়ে। বিদেশে থাকি বেহায়া হয়ে। কোথাও আমাদের ঠিক নিজের দেশ বা জায়গা নেই।
মন্তব্য
অনেক আবেগে পড়ে লিখেছেন সেটা বুঝতেই পারছি, কারণ বক্তব্য যেমন অগোছালো বানানের অবস্থাও তেমনই কষ্টদায়ক। কিন্তু সেগুলো বাদ দিলেও, আপনার মূল যুক্তিগুলো পরিষ্কার হল না।
"সবাই টাকার জন্য দেশ ছাড়ে, কথাটা সত্য।"
এইটা যে সত্যি নয়, আপনিও জানেন। আমার-আপনার মত অনেকেই পড়ালেখা করতে বিদেশে আসছে, যে বিষয়টা নিয়ে ভালো শিক্ষা পাওয়ার সুযোগ হয়ত দেশে নেই-ই। আর তার পরের ধাপ যেটা, অর্থাৎ দীর্ঘদিন বিদেশে থাকতে থাকতে একসময় কাগজপত্র করিয়ে স্থায়ী বাসিন্দা এবং তারপর নাগরিক হয়ে যাওয়া, সেটার মধ্যে তো অস্বস্তিকর কিছু নেই। আপনি কি সেটাকে অ্যাসাইলামের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলছেন? অ্যাসাইলাম বিশেষ রাজনৈতিক কারণ দেখিয়ে চাওয়া হয়, যেগুলো নিয়ে আরিফুর ভাই তাঁর পোস্টে বলেছেন, এবং মিথ্যা 'ফিয়ার অফ প্রসিকিউশন' দেখিয়ে অ্যাসাইলাম চাওয়ার বিষয়টায় অনার্য্য ভাই উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু আপনি দুটোকে মিশিয়ে ফেলছেন কেন বারেবার? ওখানেও আপনাকে কয়েকজন ব্যাপারটার তফাত ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছিল।
জার্মানিতে কিছু দিন ছিলাম, বেশ কিছু জার্মানের সঙ্গে সখ্যতা হয়েছিল। ইংল্যান্ডে বর্তমানে আছি, তার আগে আমেরিকাতেও অনেক দিন ছিলাম। কখনওই বিদেশাগত বলে রেসিজমের মুখে পড়তে হয়নি। রেসিজম আছে সর্বত্রই, কিন্তু সেটা এতটা সর্বত্রব্যাপীও নয় যতটা হীনমন্যতা থেকে অনেকে মনে করে। আমেরিকাতে অনেক ভারতীয়রা এসে ভাষা, খাওয়াদাওয়া, সস্তা জিনিসের হদিশহিসাব সব মিলিয়ে 'দেশোয়ালি পরিবেশ'-এর লোভে জটলা করে থাকে, বাকিদের সঙ্গে মেশেনা, বরং তাদেরকে সন্দেহের চোখে দেখে - "হয়ত আমাদের এই জটলা করে থাকাটা ওই 'গোরা'রা সন্দেহ/অপছন্দের দৃষ্টিতে দেখছে? রেসিস্ট ব্যাটারা!" এই চক্রে পড়ে গেলে আর কী হবে।
"বিদেশে থাকতে থাকতে একসময় কাগজপত্র করিয়ে স্থায়ী বাসিন্দা এবং তারপর নাগরিক হয়ে যাওয়া, সেটার মধ্যে তো অস্বস্তিকর কিছু নেই।"
সত্যিই কি তাই?
অ্যাসাইলাম পেতে গেলে দেশের সম্বন্ধে মিথ্যা কাহিনী বলতে হয় এই নিয়ে আগের পোস্টে বা এখানে কেউ কেউ অস্বস্তি/বিরক্তি/আপত্তি প্রকাশ করেছেন। এইভাবে যাঁরা বিদেশবাসী হয়েছেন তাঁদের সম্পর্কে ওইধরনের কোনো কথা ওঠার কারণ দেখি না। আপনার যদি মনে হয় আছে, কী অস্বস্তি+কাদের অস্বস্তি একটু খুলে বলুন।
১ সবাই টাকার জন্য আসে, যারা এসাইলাম। তাদের কথাই বলেছি। আমি পড়ালেখার জন্য আসি নাই। এসাইলাম হয়েই এসেছি। যারা পড়তে এসে স্থায়ী হয়ে যান তাদের ব্যাপারে বোধ হয় কিছু বলিনি। বলেছি তাদের স্থায়ী ভাবে থেকে যাওয়াটা হোম কান্ট্রির জন্য ক্ষতিকর।
২ এসাইলামদের সম্পর্কে কঠোর মনোভাবটা কেন, সেটা বোঝার চেষ্টা বলতে পারেন।
৩ আমাদের ভেতরে জটলা করে থাকার প্রবনতা আছে নিশ্চই, কিন্তু বিশেষ করে জার্মানে "আমাদেরকে সেই জটলার ভেতর ঠেলেও দেয়া হয়"। আপনি যেমন বললেন; জার্মানে রিসিজম এমন সর্ব্যপীও নয়। ঠিক। কিন্তু সেটা টের পাওয়া যায়, ঠিক জায়গামতো গেলে।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
১. আচ্ছা, জানতাম না।
২. এই পোস্টে সেটা তেমন সফল হয়েছে/হচ্ছে বলে মনে হল না।
৩. এ বিষয়ে বিস্তারিত লিখুন না।
দেখুন, সরকার এতো টেক্স নিয়েছে যে, টেক্সের টাকা কোথায় খরচ করবে বুঝতে পারছে না। ভাল আইডিয়া এলো একজনের মাথা থেকে। বলা হলো বাচ্চাদের ডে কেয়ার (কিণ্ডারগার্টের) ফ্রি করে দেবে।
অন্যদল বলে ডে কেয়ার ফ্রি করে দিলে যারা বাচ্চাকে ঘরে রাখে তারা বঞ্চিত হচ্ছে। কাজেই যারা বাচ্চাকে ঘরে রাখে টাকা তাদের (শুধু) দেয়ে হবে।
বাচ্চা ঘরে রাখে যারা একজনের আয়ে সংসার চালাতে পারে, আর অভিবাসীরা। অভিবাসী অনেক মহিলা ভাষা খুব ভাল না জানার কারণে কাজকর্ম পায়না। আবার অনেকে দুটো বাচ্চা হয়ে গেলে কাজ করে বাচ্চা সামলাতে পারে না। বেকার ভাতার চেয়ে ১০ টাকা বেশী বেতন পেলেই ডে কেয়ারের পুরো টাকাটা দিতে হয় বাবা মাকে। আমার বেগম ডে কেয়ারে মেয়েকে দিতে এখানকার মেয়রের কাছে পর্যন্ত গিয়েছে। এখন আমরা ২০০ ইউরো দিচ্ছি মাসে।
মেয়েটা বাংলা ছাড়া আর কোন ভাষা জানে না। জার্মান না জানলে অন্য বেশীর ভাগ অভিবাসি বাচ্চাদের মতো বাধ্যতামূলক অস্টম শ্রেণী পাস করতেই হিমসিম খাবে। কাজেই আমাদের যত কষ্টই হোক, মেয়েটাকে ডে কেয়ারে দিচ্ছি। ডে কেয়ার ফ্রি হলে বেশীর ভাগ অভিবাসী বাচ্চারা লাভবান হতো। কারণ তাদের অভিবাবকদের অনেকেই জার্মান অতো ভাল জানে না। একটা জার্মান বাচ্চার কিন্তু ভাষাটা নিয়ে কোন সমস্যা হচ্ছে না। হচ্ছে অভিবাসী বাচ্চার। আমরা আমাদের বাচ্চাকে ডে কেয়ারে দেবই, খরচ যাই হোক। অয় অতো বেশী না, কিন্তু আমরা অন্য অনেক খর্র কমিয়ে, এদিকে খরচ করব। কিন্তু একটা বাচ্চা বলে আমরা লোডটা নিতে পারছি। যাদের দুটো আ্যে তারা কী করবে_ যদিও ২য় বাচ্চার খরচ ১ম বাচ্চার অর্ধেক। তাও তো অনেক টাকা। ইনিভার্সিটির ডিগ্রী না থাকলে সেটা এফোর্ড করা সম্ভব না। এখন সরকার যদি বাচ্চা বাড়ি রাখলে উল্টো আরো টাকা দেয়, তা হলে কোন অল্প আয়ের মানুষ আয়ের বদলে ব্যয়টা করবে। ক্ষতিগ্রস্থ হবে বাচ্চাগুলো। এই যে আইন বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে যা গরীব এবং অভীবাসীর বিরোদ্ধে যাচ্ছে সেটা রেসিষ্ট বলতে পারেন না। কিন্তু সরকার তার আইনের এফেক্ট এবং কার কেমন লাভ ক্ষতি তা ভাল করে জানে।
আরো ঝামেলা হলো গরীব এলাকায় বাসা ভাড়া কম বলে থাকে বেশী গরীব লোক। দেখা যায় বাসা ভাড়া কম বলে বার্লিনের অনেক এলাকায় স্কুল ডে কেয়ারে কেবল তুর্তী বাচ্চা। যেখানে বেশী তুর্কী বাচ্চা সেখানে আবার জার্মান অভিবাবকরা বাচ্চা দেয় না। ফলে তুর্কী বাচ্চারা জার্মানের চেয়ে তুর্কী ভাষায় কথা বলে বেশী। জার্মানদের সাথে যোগাযোগ হচ্ছে না। তৈরী হচ্ছে গেটো।
অথচ একে বর্ণবাদ বলার কোন সুযোগ নেই। এই হল জার্মানের অবস্থা।
আঁচল যেখানে যাচ্ছে, সেখানে আর একটি ভারতীয় বাচ্চা আছে। কিন্তু হিন্দী ভাষী। আর সবাই জার্মান। এখন কষ্ট হচ্ছে ওর ঘরে এসে বাংলা আর বাইরে গেলে জার্মান বলার অভ্যাসটা করাতে। বলতে গেলে অনেক কথা বলতে হয়। তবুও মাথায় রইল। এক সময় অল্প কথায় ব্যাপারটা বলার চেষ্টা করবো।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
১) কোনোভাবেই ঠিক না। একটা উদাহরণ দিই - ইউরোপ আমেরিকায় যত বাহাই ধর্মাবলম্বী আছেন তাদের অধিকাংশই রিফিউজি - তার মানে এই না যে তারা সবাই টাকার জন্য দেশ ছেড়েছেন।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
-- এখানে অস্বস্তিকর কিছু নেই মানে? বুঝলাম না -- একটু আলোকিত করুন।
অ্যাসাইলাম পেতে গেলে দেশের সম্বন্ধে মিথ্যা কাহিনী বলতে হয় এই নিয়ে আগের পোস্টে বা এখানে কেউ কেউ অস্বস্তি/বিরক্তি/আপত্তি প্রকাশ করেছেন। এইভাবে যাঁরা বিদেশবাসী হয়েছেন তাঁদের সম্পর্কে ওইধরনের কোনো কথা ওঠার কারণ দেখি না। আপনার যদি মনে হয় আছে, কী অস্বস্তি+কাদের অস্বস্তি একটু খুলে বলুন।
শিরোনামের সাথে দ্বিমত পোষন করলাম। আমি স্বেচ্ছায় দেশ ছেড়েছি এক মেঘলা সকালে, ইচ্ছে রাখি একদিন স্বেচ্ছায় আবার ফেরত যাবো। আমি অনেককেই চিনি আমার মতন এরকম, কেউ তাদের দেশ ছাড়তে বাধ্য করেনি। বাংলাদেশ বার্মা নয়।
প্রথম লাইনটির সাথেও দ্বিমত। সবচাইতে মূল্যবান হল মাথার ঘিলু, ঐটা না থাকলে পাসপোর্টে কোন লাভ নাই।
তাই কি? ঠিক কোন পর্যায়ের শিক্ষার কথা বলছেন পুতুল ভাই? উচ্চশিক্ষা? উত্তর আমেরিকার ক্ষেত্রেই বরং কথাটা প্রযোজ্য যেখানে ইউনিভার্সিটিগুলো হাজার হাজার ক্ষেত্রবিশেষে লক্ষ ডলার টিউশন ফি কেটে রাখে, পকেটে পয়সা না থাকলে গরীব লোকের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ার একমাত্র উপায় সীমিত স্কলারশীপ। সুতরাং তারা বলতে পারে যে শিক্ষাকে একদন লোকের হাতে কুক্ষিগত করে রাখা। বাংলাদেশে তো সরকার কোটি কোটি টাকা ভর্তুকি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে আর ছাত্ররা একশ দুইশ টাকা মাসে দিয়ে পড়ে। শিক্ষা কিছু মানুষের জন্য নিয়ন্ত্রিত হইল কিভাবে?
অফ-টপিকঃ আপনি যে পোস্ট পড়ে মন খারাপ করেছেন তা কিন্তু স্যাটায়ার ছিল, হতে পারে লিখক ঠিকমত ফুটিয়ে তুলতে পারেননি বা জেনারেলাইজেশন হয়েছে, কিন্তু সেজন্য পোস্টটাকে এত সিরিয়াসলি নেবার কিছু নাই ভাই।
..................................................................
#Banshibir.
১ আপনার জন্য কথাটা খাটে না। দ্বিমত পোষণ ঠিক আছে। শীরনাম শুধু এসাইলামদের ওদ্দেশ্যে।
২ এখানে ঘিলু একমাত্র পুঁজি নয়। জাপান, জার্মান বা অন্য যেকোন ধনি দেশের যেকোন নাগরিক বাংলাদেশে যেতে ভিসা পাবে, আপনার মতো এতো বেশী ঘিলুর বোঝা মাথায় না নিয়েও।
৩ শিক্ষা আমাদের দেশে সবার জন্য উম্মুক্ত, কথাটা যদি ঠিক হয়, তাহলে নিরক্ষর জনসংক্ষ্যার হার এত বেশী কেন?
৪ পোস্টটা সত্যিই প্রয়োজনের চেয়ে বেশী সিরিয়াসলী নিয়েছি, কথাটার সাথে একমত। স্যাটায়ার এখানে দেখেছি; ইরাক যুদ্ধে জার্মান সরকার আমেরিকার বিপক্ষে। তখন আঞ্জিলা মার্কেল বিরোধী দলে। বুশ-কে শান্তনা দিতে ওয়াশিংটনে গিয়েছেন। ভদ্রমহিলা অর্ধমুঠো ডান হাত উপড় নীচ করে জ্বালাময়ী বকৃতা দিচ্ছেন। এখানকার এক স্যাটায়ার আর্টিষ্ট তার (মার্কেলের) ডান হাত বুশের একমাত্র কামানের নলে বসিয়ে বুশকে তেলমারার (পড়ুন হস্তমৈথুন করার) ভঙ্গিতে ভিডিও বানিয়ে দেখিয়েছে একটা বানিজ্যিক চ্যানেলে। খুব সাহসী সাটুরিকার বলে তার প্রমোশন হয়ে গেল সরকারী টিভি চ্যানেলে। এখানে স্যাটায়ার করা হয় সব চেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের নিয়ে।
আমরা কী তা করছি? কিছু কথা তো মূল পোষ্টেই আছে। যে সব অন্যায়ের বিরোদ্ধে আমরা প্রতিবাদ পর্যন্ত করছি না!
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
পোস্টের মতই আপনার ৪ নম্বর পয়েন্টটি ঘোলাটে। ১ এবং ৩ নম্বর পয়েন্ট নিয়ে বিতর্ক চালিয়ে যাবার ইচ্ছে ছিল, কিন্তু আপনি ২ নম্বরে বলছেনঃ
এইখানে আপনি আমার কথাটিকে টুইস্ট করে বললেন আমি বুঝিয়েছি যে আমার মাথায় ঘিলু আছে আর অ্যাসাইলামপ্রার্থীদের ঘিলু নাই। এখানেই তাহলে থামা যাক, আপনার সাথে তর্কবিতর্ক সময়ের অপচয় মনে হচ্ছে। আমি কি লিখব আর আপনি কি ভাববেন কে জানে।
ভালো থাকুন। বিদায়।
..................................................................
#Banshibir.
আপনার সবচাইতে মূল্যবান হলো মাথার ঘিলু কথাটা পছন্দ হয়নি। আমার মনে হয় আপনার মতো বুদ্ধিমান মানুষের এইটি জানা উচিৎ যে, তথাকথিত মেধা ( এখানে কবিতা লেখা বা গান গাওয়া সুর করা এসব বাদ দিয়ে) পরিবেশ নির্ভর। মস্তিকের পরিমান একজন রিক্সাওয়ালার যা আপনার আমারও তা। আমি আপনি লিখতে পড়তে পারছি আমাদের এই পারার মতো পরিবেশে জন্ম হয়েছে বলে। কাজেই এই নিয়ে বাহাদুরীর কিছু আমি দেখি না।
এই কারণে কিছুটা খোঁচা মেরেই বেশী ঘিলুর কথা বলেছিলাম। তার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। আপনি চাইলে বাক্যটি সংশোধনও করে দিতে পারি। আপনিও ভাল থাকবেন।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
ঠিক আছে।
..................................................................
#Banshibir.
২. পাসপোর্টের বিষয়ে আমিও আপনার মতই ওই উদ্ধৃতির সঙ্গে একমত, তবে "আপনার মতো এতো বেশী ঘিলুর বোঝা মাথায় না নিয়েও" কথাটা ভালো লাগল না।
৩. আপনি মুর্শেদভাইয়ের ওই পোস্টের মত কার্যকারণ গুলিয়ে ফেলছেন। ভারতেও প্রাথমিক শিক্ষা ফ্রি, এবং ভারতেও অনেক নিরক্ষর শিশু আছে। তার বেশ কিছু কারণ আছে, যেমন বাবামায়ের শিশুকে স্কুলে পাঠাতে অনাগ্রহ, অথবা অর্থের প্রয়োজনে শিশুশ্রম, ইত্যাদি।
কৌস্তুবদা,
দরিদ্র একটা সামগ্রিক অবস্থা। টিম ওযার্ক বা সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা না করে তা দূর করা সম্ভব না। দেখুন আমি কার্যটা বলছি, আপনি কারণটা জানেন। জেনেও সমস্যা দূর হবে এমন পদক্ষেপ কেন নিচ্ছেন না। সেটাই বলতে চেয়েছি।
যেসব দেশ আমাদের মতো গরীব নয়, তাদের দেশে কিন্তু স্কুলে যাওয়া বাধ্যতামূলক। না গেলে সে বাচ্চার অভিবাকদের বিরোদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়। যে বাবা মা বাচ্চাকে স্কুলে পাঠাতে অনাগ্রহী দেখবেন তারা নিজেরা লিখতে পড়তে পারে না। তাদের সেই সচেতনতা নেই যে, গোলা ভরা ধান, আর পুকুর ভরা মাছের দিন শেষ। এখন সি প্লাস প্লাসের সাথে আরো অনেক কিছু লাগে। শিশুশ্রমটা ভুক্তভোগী শিশু বা তার পরিবারের চেয়ে বেশী কাজে এখানে যারা সস্তায় হাতের তৈরী ভারতীয় রেশমী কার্পেট কিনেন তাদের। শিশুশ্রম বন্ধ করা আমাদের কাজ। সেটা কী আমরা করছি! হিন্দু ধর্মের বর্ণ প্রথার কথা ছেড়েই দিলাম। আমাদের দেশের মতো ধনী দরিদ্রের এত বিশাল ব্যবধানও মনে হয় দুনিয়াতে খুব বেশী নাই।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
আজকের যুগে প্রথম লাইনটা ঠিকই বলে গো দাদা। এই বুশকেই দেখেন না।
শিরোনাম তো আমার কাছে ঠিকই মনে হচ্ছে। যেমন ধরুন কেউ লিখলো "বাংলাদেশ গরীব দেশ"; তার অর্থ কি এই বাংলাদেশ ধনী মানুষ নাই।অবশ্যই আছে; অনেক ধনী মানুষই আছেন।তেমনি অনেকেই স্বেচ্ছায় দেশ ছেড়ে যায় এটাও ঠিক।বাংলাদেশ অনেক ধনী মানুষ থাকলে "বাংলাদেশ গরীব দেশ" এইটা যেমন অশুদ্ধ না, তেমনি অনেকেই স্বেচ্ছায় গেলে "স্বেচ্ছায় কেউ নিজের জন্মভূমি ছেড়ে যায় না" ভুল হয়ে যায়না।
দেশ ছাড়া পিছনে যেমন প্রকাশ্য বা প্রত্যক্ষ কারন থাকে, তেমনি অপ্রকাশ্য বা অপ্রত্যক্ষ কারনও থাকে।
আপনার প্রোফাইলে লেখা "অর্থনীতিতে স্নাতক, কাজ করি ইনকাম ট্যাক্সে। ডলারের লোভে এদেশে পড়ে আছি"।
এটাকে অন্যভাবে বলা যায় দেশে সৎ পথে যথেষ্ট উপার্জনের (কানাডার স্কেলে) সুযোগ থাকলে আপনি ওদেশে পড়ে থাকতেন না।এইটা দেশ ছাড়া অপ্রকাশ্য কারন।স্ব-ইচ্ছার পিছনেও কারন থাকে।
সবচাইতে মূল্যবান হল মাথার ঘিলু, ঐটা না থাকলে পাসপোর্টে কোন লাভ নাই।
ঘিলু অবশ্যই মূল্যবান বস্তু তবে সেটা থাকলেও পাসপোর্টের অভাবে অনেকেই কাজে লাগাতে পারেনা।আবার শুধু পাসপোর্টের জোরেই অনেকে দিব্যি করে খাচ্ছে।দুটোই একেবারে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতালব্ধ। শুনে বলা নয়।
বাংলাদেশে তো সরকার কোটি কোটি টাকা ভর্তুকি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে আর ছাত্ররা একশ দুইশ টাকা মাসে দিয়ে পড়ে। শিক্ষা কিছু মানুষের জন্য নিয়ন্ত্রিত হইল কিভাবে?
শিক্ষা নিয়ন্ত্রিত কারন আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় গরীবদের প্রবেশাধিকার সীমিত।আমাদের শিক্ষা অবকাঠামো ব্যাপকভাবে অপর্যাপ্ত।উদাহরণ: বাংলাদেশে উচ্চমাধ্যমিকে যতজন ছাত্রছাত্রী পাস করে, বাংলাদেশের সরকারি-বেসরকারি-জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সব মিলিয়েই সেই ধারণক্ষমতা নাই।
আর একেক দেশের শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে ওঠেছে একেকভাবে।উত্তর আমেরিকায় যেমন উচ্চশিক্ষাটা মূলত বেসরকারি, তেমনি ইউরোপে এখন পর্যন্ত মূলত ফ্রি।অন্যদেশের শিক্ষাব্যবস্থার কপিক্যাট অনেকাংশেই বেমানান।
"অনিশ্চিত"
আপনি কি এই যুক্তি দেয়ার পর নিজে একবার পড়ে দেখেছেন? কষ্ট করে আরেকবার পড়ে দেখে জানাবেন ঠিক আছে কিনা?
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
দেখেই মন্তব্য করেছি, আপনি বলার পর আবারও দেখলাম।আমার কাছে তো বেঠিক মনে হচ্ছেনা।ভুলটা কোথায় যদি ধরিয়ে দিতেন, তাইলে হয়তো শোধরানোর চেষ্টা করতাম।
"অনিশ্চিত"
বাংলাদেশে কোন পুরুষ নেই। (যেহেতু এদেশে নারী থাকলেও পুরুষও আছে)।
বাংলাদেশ একটি নারী দেশ। (যেহেতু পুরুষ থাকলেও নারীও আছে)।
বাংলাদেশ বনভূমিঅধ্যুষিত দেশ। (যেহেতু সুন্দরবন আছে)।
বাংলাদেশ একটি পোষাক শিল্প শ্রমিকের দেশ।
বাংলাদেশ একটি শিক্ষার্থী দেশ।
বাংলাদেশের সবাই ট্রাক ড্রাইভার।
বাংলাদেশের সবাই ব্লগ লেখেন।
বাংলাদেশের সবাই সিঙ্গাড়া খান।
বাংলাদেশের কেউ কনডম ব্যবহার করেন না।
বাংলাদেশের কেউ দাড়ি কাটেন না।
বাংলাদেশের কেউ প্যান্ট পরেন না।
ঠিকাছে? এরকমই তো বলতে চাইলেন, নাকি?
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
উহু ভুল হচ্ছে ব্রো।আপনি বেশি উত্তেজিত বোঝা যাচ্ছে।ঠান্ডা মাথায় নিচের টুকু পড়ুন নিজেই বুঝতে পারবেন।
বাংলাদেশের ভাষা বাংলা(তারমানে এই না যে সবাই বাংলায় কথা বলে;অনেকেই(যেমন আদিবাসীরা আছেন যারা বাংলায় কথা বলেনা)
বাংলা যৌথপরিবার ভিত্তিক সমাজ( তার মানে এই না যে সবাই যৌথ পরিবারে বাস করে; অনেকেই একক পরিবারে বাস করেন)
বাংলাদেশ তৈরি পোষাক রপ্তানীকারক (তার মানে এই না যে, বাংলাদেশ শুধু তৈরি পোষাক রপ্তানী করে)
বাংলাদেশ গরীব দেশ(তার মানে এই না যে, বাংলাদেশের সবাই গরীব; অনেক ধনী, সম্পদশালী লোকও বাংলাদেশে বসবাস করে)
বাংলাদেশ কৃষিভিত্তিক দেশ( তার মানে এই না যে, সবাই কৃষিকাজ করেন; কৃষিকাজের বাইরে প্রচুর জনগোষ্ঠি কর্মরত)
বাংলাদেশ গ্রামীন সমাজ( তার মানেই এই না, সব মানুষ গ্রামে বাস করে; অনেক লোক শহরে বাস করেন)
এরকমই বলতে চাইছিলাম।
মোক্ষম। আপনি যা বলেছেন ঠিক। কিন্তু আমার মন্তব্যটাও তো ঠিক হওয়ার কথা। আগের মন্তব্যে আপনি 'এই' রকমের সঙ্গে 'ওই' রকম মিলিয়ে গুলিয়ে নিয়ে যা বোঝাতে চাইছিলেন সেটার আলোকেই নিজের বক্তব্য দিয়েছিলাম।
আপনি বলেছেন, যেহেতু বাংলাদেশে অনেক ধনী মানুষ থাকলেও গরীবও আছে। তাই "বাংলাদেশ গরীব দেশ" এইটা অশুদ্ধ না। তেমনি অনেকেই স্বেচ্ছায় গেলেও "স্বেচ্ছায় কেউ নিজের জন্মভূমি ছেড়ে যায় না" কথাটা ভুল হয়ে যায়না।
আপনার যুক্তি মেনেই তো আমি বললাম,
বাংলাদেশে কোন পুরুষ নেই। (যেহেতু এদেশে নারী থাকলেও পুরুষও আছে)।
বাংলাদেশ একটি নারী দেশ। (যেহেতু পুরুষ থাকলেও নারীও আছে)।
বাংলাদেশ বনভূমিঅধ্যুষিত দেশ। (যেহেতু এখানে ফাঁকা জায়গা থাকলেও সুন্দরবন আছে)।
বাংলাদেশের সবাই ট্রাক ড্রাইভার। (যেহেতু সবাই না চালালেও কেউ কেউ ট্রাক চালায়)।
বাংলাদেশের সবাই ব্লগ লেখেন। (সবাই না লিখলেও কেউ কেউ লেখেন)।
বাংলাদেশের কেউ কনডম ব্যবহার করেন না। (অনেকেই ব্যবহার না করলেও কেউ কেউ করেন)।
বাংলাদেশের কেউ দাড়ি কাটেন না। (অনেকেই সেইভ করলেই কেউ কেউ করেন না)।
বাংলাদেশের কেউ প্যান্ট পরেন না। (অনেকেই শাড়ি পরলেও কেউ কেউ প্যান্ট পরেন)।
আমি যে উত্তেজিত সেটা আপনি বুঝতে পেরেছেন দাবী করলেন। আমার মাথা গরম বলেও দাবী করলেন। নবুয়ত পাওয়ার জন্য আপনাকে অভিনন্দন জানালাম। এখন কেবল আমার ভুল হচ্ছে কোথায় বলুন তো? আমার এই কথাগুলো সত্যি নয় কেন? আপনার যুক্তি মেনেই বললাম।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
বাংলাদেশের ভাষা বাংলা বলা যায় কারন বাংলাদেশের ৯৭-৯৮% মানুষ বাংলায় কথা বলে।
বাংলাদেশ গরীবদেশ কারন এদেশের ৭০-৮০ ভাগ মানুষ গরীব।
বাংলাদেশ তৈরি পোষাকরপ্তানীকারক কারন এদেশের ৭৫ থেকে ৮০ ভাগ রপ্তানী আয় আসে তৈরি পোষাক থেকে।
বাংলাদেশ গ্রামীন সমাজ কারন বেশিরভাগ মানুষ গ্রামে বাস করে(যদি পরিসংখ্যানে এখন শহরে মানুষ বেশি হয়ে যায়, তাইলে এইটা বলা ভুল হবেনা)
বাংলাদেশে কোন পুরুষ নেই(এইটা ভুল কারন নারী-পুরুষের অনুপাত প্রায় সমান)।
বাংলাদেশের সবাই ব্লগ লেখেন(ভুল; বাংলাদেশ শুন্য দশমিক এক ভাগ মানুষও ব্লগ লিখেনা)।
কেউ স্বেচ্ছায় দেশ ছাড়েনা অর্থ বেশিরভাগ একটা চাকরির খোঁজে, উন্নতজীবনের লোভে,
অধিক-উপার্জনে, দেশে টিকে থাকার জন্য দেশ ছাড়ে।বেশির দেশছাড়ার পিছনে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কারন থাকে।
আপনাদের মতো ঘিলুওয়ালা অল্প কিছু সংখ্যাক হয়তো স্বেচ্ছায়(!) পড়তে এসে চাকরির লোভকে অগ্রাহ্য করে দেশে ফেরত যাবেন।।আপনাদের স্যালুট।কিন্তু এই সংখ্যা অল্প।
"তাই স্বেচ্ছায় কেউ দেশ ছাড়ে না" এইটা ভুল মনে হয় নাই।
এবার আমার যুক্তি মেনে কথা বলুন।
এইতো লাইনে আসছেন। অভিনন্দন।
তবে আপনার যুক্তি এখনো সংহত নয়। যেমন ধরুন, শেষ নির্বাচনের হিসেবে বাংলাদেশের বেশীরভাগ লোক আওয়ামীলীগ সমর্থক। তার মানে এই নয় যে বাংলাদেশে কেউ বিএনপি সমর্থন করে না। বাংলাদেশের ৮০ ভাগ লোক ভাত খায় তারমানে এই নয় যে বাংলাদেশে কেউ রুটি খায়না। এরকম কেন হয় বলুন তো? কারণ একটি রাষ্ট্রের বেশিষ্ঠ্য কী, সেই হিসেব একভাবে হয়, একটি জনগোষ্ঠীর বৈশিষ্ঠ্য কী সেই হিসেবেরও নিয়মকানুন রয়েছে। রাষ্ট্র একক। জনগোষ্ঠী একক। কিন্তু এই যে দেশ ছেড়ে যারা যাচ্ছে তারা 'একক' নয়। একটু ভাবলেই বুঝতে পারবেন, বাংলাদেশে কেউ ধনী কেউ গরীব হলেও একে যেহেতু গরীব রাষ্ট্র বলা যায় সেই যুক্তিতে সচলদের কেউ নারী কেউ পুরুষ হিসেব করে সচলায়তনের সবাইকে পুরুষ অথবা নারী বলা যায় না। এই সহজ হিসেবটা আপনাকে বোঝাতে দীর্ঘ সময় আর শক্তি খরচ হল। তীব্র বিরক্তি নিয়ে জবাব দিলাম। পুরোটাই জলে গেছে যদিও।
এবার আসি প্রসঙ্গে। যেটি নিয়ে সত্যি কথা বলা যেতে পারত।
আপনি বলতে চাইছেন সংখ্যায় বেশি লোক স্বেচ্ছায় দেশ ছাড়েনা বলে সবাই স্বেচ্ছায় দেশ ছাড়েনা তা বলা যাবে। সহজ করে বললে, বেশি লোক অনিচ্ছায় দেশ ছাড়ে বলে সবাই অনিচ্ছায় দেশ ছাড়ে তা বলা যাবে।
সংখ্যার হিসেব দিয়ে যে এইখানে বিচার করা যাবেনা সেটা তো আপনাকে কয়েকটি মন্তব্য ধরে বোঝানোর চেষ্টা করলাম।
এবার আসি 'স্বেচ্ছা' প্রসঙ্গে।
এই সহজ বাংলা শব্দটির মানে 'নিজের ইচ্ছায়'। চাকরি, উন্নত জীবনের লোভ, অধিক-উপার্জন ইত্যাদি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কারণে কেউ কিছু করলে যে সেটা আর 'নিজের ইচ্ছে' থাকেনা তা পড়ে হেসে ফেললাম । মানুষ ক্ষুধা লাগলে ভাত খায়, আপনি নিশ্চয়ই বলবেন মানুষ স্বেচ্ছায় ভাত খায়না। খাওয়ার পেছনে প্রত্যক্ষ কারণ আছে, ক্ষুধা! তাহলে পড়াশোনার জন্য দেশে ছাড়াকে স্বেচ্ছায় আসা বলছেন কেন? পড়াশোনা তো খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ!
জটিলতায় না যাই। বাংলায় বলছি, জেনে রাখুন। ইচ্ছে না থাকলেও কিছু করতে বাধ্য হলে সেটাকে অনিচ্ছায় কিছু করা বলে। নিজের ইচ্ছেয় যে যা-ই করুক সেটাকে স্বেচ্ছায় করা বলে
সরকার যদি কাউকে দেশ থেকে বের করে দেয়, সেটা স্বেচ্ছায় দেশ ছাড়া নয়! যে প্রাণ বাঁচাতে দেশ ছাড়ে সে অনিচ্ছায় দেশ ছাড়ে।
যারা উন্নত জীবন, চাকরি, প্রেম, ভ্রমণ, পড়াশোনা, কাজ, ইত্যাদির জন্যে দেশ ছাড়ে তারা স্বেচ্ছাতেই ছাড়ে।
বাংলাদেশ থেকে যারা বিদেশে যায় তারা বেশিরভাগই স্বেচ্ছায় যায়। সত্যিকারের বাধ্য হয়ে যারা যায় তাদের সংখ্যা হাতেগোনা।
পুনশ্চ,
আমি কোন ঘরানার সেই হিসেব করা থেকে বিরত থাকুন। এইটা দ্বিতীয়বার বললাম।
কেউ চাকরির লোভে বিদেশে গেলে সেটা মন্দ তা কিন্তু আমি বলিনি। উল্লেখ করে রাখলাম।
এবং, আপনার যুক্তি মেনে আগের মন্তব্যটি করেছিলাম আপনার তৈরি যুক্তিতে যে ফাঁক রয়েছে সেটা বোঝাতে। এমনিতে আপনার যুক্তি খোঁড়া। এইটা মেনে কথা বললে আমার সর্বনাশ হয়ে যাবে।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
এইতো লাইনে আসছেন। অভিনন্দন।
আগে থেকেই লাইনে ছিলাম।আপনার বুঝতে সমস্যা হচ্ছিলো।অভিন্দনের জবাবে অভিনন্দন।
তবে আপনার যুক্তি এখনো সংহত নয়। যেমন ধরুন, শেষ নির্বাচনের হিসেবে বাংলাদেশের বেশীরভাগ লোক আওয়ামীলীগ সমর্থক। তার মানে এই নয় যে বাংলাদেশে কেউ বিএনপি সমর্থন করে না।
বাংলাদেশে এখন আ'লীগ সরকার।আপনি যেটা বললেন সেটা একবাক্যে প্রকাশ করলে এটা দাঁড়ায়। এবং আমি এই কথাটায় বলছিলাম।
বাংলাদেশের ৮০ ভাগ লোক ভাত খায় তারমানে এই নয় যে বাংলাদেশে কেউ রুটি খায়না।
"ভেতো বাংগালী" কথাটাও উপরের বাক্যের অর্থ ধারণ করেই প্রযোজ্য।আপনি তো আমার যুক্তিকেই ভ্যালিড করে দিচ্ছেন ভায়া।
"বাংলাদেশে কেউ ধনী কেউ গরীব হলেও একে যেহেতু গরীব রাষ্ট্র বলা যায়"
বাংলাদেশকে গরীব রাষ্ট বলা হয় কারন বাংলাদেশে কেউ ধনী( খুব অল্পসংখ্যাক) কেউ গরীব( বেশিরভাগ মানুষ) এক কারনে।
তাইলে বাংলাদেশের যে পরিচিতি গরীবদেশ হিসেবে সেটা ভুল!!
"এই যে দেশ ছেড়ে যারা যাচ্ছে তারা 'একক' নয়।"
তারা একক নয় কিসের ভিত্তিতে? প্রবাসী বাংলাদেশি, বাংলাদেশি আমেরিকান, ব্রিটিশ বাংলাদেশি এরা বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা তুলনায় খুব ছোট অংশ, তাই বলে তাদের একক জনগোষ্ঠি বলা ভুল!
ইংল্যান্ডের রোঁস্তোরা ব্যবসা ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের হাতে একথাটা তো তাইলে ভুল!
মানুষ ক্ষুধা লাগলে ভাত খায়, আপনি নিশ্চয়ই বলবেন মানুষ স্বেচ্ছায় ভাত খায়না।
মানুষ কি ভাত খাবে না রুটি খাবে- এইটা তার ইচ্ছা।কিন্তু ক্ষুধা লাগলে মানুষকে খাইতে হবে, এইটা তার "বায়োলজিক্যাল নীড"।
মানুষ ক্ষুধা লাগলে খাবে কি খাবেনা- এইটাও তার ইচ্ছা! এবার মন খুলে হাসতে থাকুন।
পড়াশুনারকে অনেক ইচ্ছার ব্যাপার বলেছি কারন দেশে লেখাপড়ার চান্সই নাই, তাই ইউরোপ-আমেরিকায় পড়তে গেছে।এমনটা ঘটে কম।বরং দেশে যারা ভালো পড়াশুনাই করে তারাই মূলত বাইরে পড়েতে যায়।
অ্যাসাইলামদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা এমন না।তাদের দেশে কিছু করতে পারেনা, কাজকামে সুবিধা করতে পারেনা বলেই বিদেশ পাড়ি জমায়-এইটা মোটাদাগের সত্য।এর সাথে ব্যক্তি মানুষের লোভ, আকাংখা এসবও আছে।
অবশ্যই আমার যুক্তি খোঁড়া। আপনার ধারালো যুক্তি থেকে কিছু শেখার আশায়
লেগে আছি যদি কিছু শেখা যায়
"অনিশ্চিত"
মোটেও একমত না। কি দেইখা কি বললেন বুঝা গেল না!
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে
আচ্ছা উত্তর আমেরিকায় কি গরিব লোকজনে ইউনিভার্সিটিতে পড়তে পারে না?
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
পারে। দুইভাবে, স্কলারশীপ অথবা স্টুডেন্ট লোন। স্কলারশীপ সীমিত, আজকালকার দিনে আরো কমে গেছে। স্টুডেন্ট লোন চড়া ইন্টারেস্টসহ ফিরত দিতে হয় বছর বছর (পাস করার পরে)। এই আর কি।
..................................................................
#Banshibir.
উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা ফ্রী। পাব্লিক বিশ্ববিদ্যালয়ে খরচ তো নাই'ই উলটা বেশিরভাগ ছাত্রই সরকারী বৃত্তি পায়। বাংলাদেশে শিক্ষা কীভাবে অল্প কিছু মানুষের জন্য হলো? আপনি কি আশা করেন দেশের নাগরিক হয়ে জন্মালেই তাকে উচ্চশিক্ষার ডিগ্রী দেয়া হবে, সম্মানসূচক?
মাঝখানে হুট করে রাজাকার প্রসঙ্গটা কেন আসলো, কোত্থেকে আসলো বুঝা গেলো না।
দেশে কুটোটি নাড়িয়ে খেতে অনিচ্ছুক, আর মুখে মুখে রাজাউজির মারতে ইচ্ছুক এই ধরণের মানুষকেই সবচেয়ে বেশি দেখেছি এসাইলাম প্রার্থী হয়ে বিদেশে যেতে। গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে প্রচুর বিম্পিলীগের নেতাকর্মীদের রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করে বিদেশে যেতে দেখেছি। দেশে চুরিচামারি করে অথবা ঠ্যাঙের উপর ঠ্যাং তুলে খাওয়ায় সমস্যা হয়ে গেলেই রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করে বিদেশে যায় বেশিরভাগ মানুষ। আপনি আপনার অভিজ্ঞতা থেকে বললেন, আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে বললাম।
১ সম্মানসূচক উচ্চশিক্ষার ডিগ্রি দিতে হবে সে দাবী করছি বলে মনে হয় না। তবে অক্ষর জ্ঞান দান করা যেতে পারে। নাকী আমাদের দেশের সব মানুষ লিখতে পড়তে শিখে গেছে ইতিমধ্যে? হয়ে থাকলে সুখের কথা।
২ রাজাকার প্রসংগ অতি অবশ্যই আপ্রাসংগিক।
৩ আমি নিজেই চুরিচামারি করে এবং কিছু সময় ঠেঙের উপর ঠ্যাং তুলে খাওয়ার সমস্যায় রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করতে চলে এসেছি, আমার কথায় কী আর আপনারা মনোভাব বদলাবে?
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
এবং স্বেচ্ছায় নিজের দেশ ছেড়ে অনেকেই যায়, যারা ফিরে এসে দেশের কাজে লাগবে এই চিন্তাটা মাথায় রাখে।
হ্যাঁ ওই চিন্তাটা মাথায় রেখে যায়, যে দেশ ছেড়ে যাচ্ছে, আবার দেশের কোলে ফিরবে। যারা এই চিন্তাটা করে যায়, তাদের কয়জন দেশে ফিরে?
কিছুদিন আগেও এখানেই কোন এক পোষ্টে কোন এক ব্লগার (সচল, বা হাচল)কোন এক লেখায় মন্তব্য করেছিল অন্য এক ব্লগারের উদ্দেশ্যে যে, অনেক ঠাকা না থাকলে দেশে যাবেন না, মধ্যবিত্তের আয় দিয়ে দেশে থাকার অবস্থা নাই আর। যারা দেশে ফিরবো বলিয়া বাইরে যায়, তারা ফিরে দেশে, তবে সেটা অল্প কদিনের জন্যে ছুটিতে, আর ছুটিটা কাটায় দেশের গরম, জ্যাম, রাস্তাঘাট এর সমালোচনা করতে করতে। দেন এগেইন বিদেশ। কি জানি তখন যাবার টাইমে তাদের মাথায় "আবার আসিবো ফিরে" কথাটা থাকে নাকি বিদেশে যাবার মূহুর্তে "হোম সুইট হোম" কথাটা থাকে।
__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;
বাকসো পেটরা বেঁধে ফিরে এসেছি, সে তো অনেকদিনই হয়ে গেল! অনেক প্রাচুর্য নেই তবু ভালই আছি!
আপনাদের মতো কেউ কেউ অবশ্যই আছে। সবাই তো এক না।
__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;
কালো কাক,
অনিচ্ছায় দেশ ছেড়ে এসেও চিন্তাটা আমার মাথায়ও ছিল।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
অনেকগুলো কথা মনে এলো। যতটাসম্ভব ছোট করে বলি।
যায়। বেশিরভাগেই স্বেচ্ছায় যায়। বাধ্য হয়ে যারা যায় তারা নিতান্তই হাতেগোনা।
উপরে দুয়েকটি মন্তব্যের জবাবে আপনি বলেছেন এই বক্তব্য কেবল অ্যাসাইলাম প্রার্থীদের জন্য প্রযোজ্য। কিন্তু সেটিও সত্যি বলে মানছি না। বেশীরভাগ অ্যাসাইলাম প্রার্থীই স্বেচ্ছায় দেশ ছাড়ে।
আবেগী হয়ে লিখেছেন সম্ভবত। টাকার জন্য সবাই দেশ ছাড়ে না। একটি বিশেষ শ্রেণী ছাড়ে। তবে সেটি অপরাধ বা অন্যায় নয়।
একটি মন্তব্যের জবাবে বলেছেন অ্যাসাইলাম প্রার্থীরা সবাই টাকার জন্য আসে। এটি সত্যি বলে মানলাম। কিন্তু যেখানে বলতে চেয়েছেন অ্যাসাইলাম প্রার্থীরা 'বাধ্য হয়ে' দেশ ছাড়ে সেই কথাটি মানছি না। দুটো মিলিয়ে কি ধরে নিতে পারি অ্যাসাইলাম প্রার্থীদের টাকা নাই, তাই তারা দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়?
আপনার লেখায় অনেকটা জুড়ে দেশের পরিস্থিতি কীরকম ভয়াবহ সেটি বর্ণনা করেছেন। আমার দেশের ভয়াবহ পরিস্থিতি কতটা কীরকম সেটি নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গির প্রেক্ষিতে মনোভাব বদলাতে পারে। সেদিকে না যাই। কেবল বলে রাখি, আপনার বর্ণিত বাংলাদেশের এই মধ্যযুগীয় পরিস্থিতি আমলে নিলে অন্ততপক্ষে (আবার বলছি, অন্ততপক্ষে) দেশের ১৫ কোটি মানুষ ন্যায্যত ভিনদেশে রাজনৈতিক আশ্রয় চাইতে পারে।
লেখার বিশেষত শেষাংশে ধনী দেশগুলোর মন্দ চরিত্র খানিকটা বর্ণনা করেছেন। আমার দেশের অবস্থা খারাপ। ধনী দেশের চরিত্র খারাপ। সবমিলিয়ে খানিকটা গোলমেলে লেগেছে।
সাধারণ হিসেবে এই সময়ে বাংলাদেশ থেকে যারা ইউরোপে আসে তাদের খরচ হয় অন্তত ১০ লক্ষ টাকা। সেই টাকা খরচ করে এখানে এসে তারপর তারা উদ্বাস্তু হয়ে ঘোরে। অথচ বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে পড়াশোনার জন্য আসতে শুধুমাত্র প্লেন ভাড়া প্রয়োজন হয়। আর সেই আসাটাও আইনত সিদ্ধ এবং সম্ভাবণাময়।
মানছি না। ভিনদেশের নাগরিকত্ব গ্রহনের স্বাভাবিক পথ রয়েছে। তবে সেখানে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করতে হয়।
সাধারণত সত্যি নয়। বাংলাদেশে রাজনৈতি ঝড়ঝাপটা সাধারণত রাজনীতি সংশ্লিষ্টদের উপর দিয়েই যায়। এবারে একপক্ষ একে মারে তো পরেরবার আরেকপক্ষ ওকে মারে। এর পরে আইনশৃংখলা পরিস্থিতির জন্যে নিরাপত্তার যে অভাব সেটি আমলে নিলে বাংলাদেশের ১৫ কোটি লোকের ভিনদেশে আশ্রয় চাওয়া উচিত।
প্রসঙ্গত, অ্যাসাইলাম নেয়া বিষয়টির একটি নিয়মতান্ত্রিক ব্যবসায়িক পদ্ধতিও রয়েছে। আপনার জানা নেই নাকি এড়িয়ে গিয়েছেন তা জানিনা। দেশে পয়সা দিয়ে নির্যাতন, নির্যাতনের খবর ইত্যাদি বিক্রি হয়। ফুলপ্রুফ নির্যাতন এবং সে সম্পর্কিত প্রকাশিত সংবাদ অ্যাসাইলাম প্রার্থীদের খুব কাজে লাগে।
কোন ব্যক্তি বিশেষকে উদ্দেশ্য করে বলছি না। কিন্তু যাঁরা অকারণে* অ্যাসাইলাম নিয়ে ভিনদেশী হয়েছেন, তাঁরা তাঁদের নিজেদের পছন্দেই হয়েছেন। তাঁরা স্বজ্ঞানে স্বদেশকে ত্যাগ করেছেন তার মান ভালো নয় বলে! দেশকে 'ঝুটা' বলে থুক দিয়ে আসলে সে নিয়ে আর কী বলবার থাকতে পারে!
যাঁরা সত্যিকারের নির্যাতিত হয়ে দেশ ছেড়েছেন তাঁদের জন্য সমবেদনা। আমিও বাংলাদেশের একজন। আমি আমার স্বজনদের নিরাপত্তা দিতে পারিনি সেজন্য আমি লজ্জিত। তাঁদের জন্য আমিও কষ্ট পাই। এবং এটি সত্যিকারের আমার দেশের ব্যর্থতা, লজ্জা।
যে হাজারে হাজার শ্রমিক দেশের বাইরে লাঞ্ছনা, যন্ত্রণা সহ্য করে কাজ করছেন। সুশীলদের চোখে নিন্মশ্রেণীর হয়ে থেকেও উদয়াস্ত পরিশ্রম করছেন। আমি খুব ভালো করেই জানি তাঁরা বাংলাদেশকে বস্তুত বাঁচিয়ে রেখেছেন। তাঁরা আমাদের অর্থনীতির কৃষক। তাঁদের জন্য অপরিসীম শ্রদ্ধা। তাঁরা বিদেশে কষ্টে থাকতে পারেন কিন্তু দেশে তাঁরা সোনার ছেলে। তাঁরা দেশের মেহমান নন।
( * সবচে যুক্তিসঙ্গত কারণ হতে পারে উন্নত জীবনযাত্রার লোভ।)
মন্তব্য বড় হয়ে গেল। যতটা সম্ভব ছোট রাখঅর চেষ্টা করেছি।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
প্রিয় অনার্য সংগীত,
খেয়াল করে পড়লে বুঝতেন যে কারণে এই লেখাটা লিখতে হল সেখানে আমি আপনাকে আর্য সংগীত বলে সম্বোধন করেছি। ক্ষিপ্ত ছিলাম এবং এখনও হয়তো কিছুটা আছি। আপনার কঠিন কথাগুলো কিছুটা ব্যক্তিগত ভাবে নিয়েছিলাম। হয়তো আপনি সে ভাবে বলেন নি। আমি দুঃখ প্রকাশ করছি, কারণ আমার আবস্থানও কঠিন ছিল, যা যে কোন আলোচনার পরিপন্থী।
এবার আমাদের দৃষ্টিভঙ্গীর পার্থক্য গুলো নিয়ে আলোচনা করি।
আপনি বেশী সংক্ষিপ্ত করতে গিয়ে অনেক বিষয় আমার বোঝার জনছ জটিল করে ফেলেছেন। আমি যে ভাবে বুঝেছি সে ভাবে বলার চেষ্টা করি-
আমি দেশ ছেড়ে এসেছি ১৯৯১ সালে। সে বছর বাংলাদেশী জার্মানে এসেছে ১২০০। আমি যে শহরে ছিলাম সেখানে বাংলাদেশী এসাইলেমের সংখ্যা ছিল প্রায় দেড়শ। তাদের কমপক্ষে অর্ধেকের সংগে আমাকে উকিল, ডাক্তার, ভিসা অফিস , এমন কী জেল খানায় পর্যন্ত যেতে হয়েছে বিনে পয়সায় দোভাষীর কাজ করতে। কাজেই তাদের অনেক ব্যক্তিগত এবং এসাইলাম সম্পর্কিত ব্যাপার আমি জানি। ৭৮ থেকেই ঐ শহরে বাংলাদেশী এসাইলাম ছিল। তাদের কাহিনীও শুনেছি। সেই ভয়াবহ অবিজ্ঞতা আর কোন মানুষের না হোক। আমাদের সচল আনিস ভাই (তীরন্দাজ) দোভাষীর পেশাদারী লাইসেন্স ফেরতৎ দিয়ে দিয়েছিলেন। অন্যের এমন একান্ত অপ্রীতিকর কথা সহ্য করা তার পক্ষে সম্ভব হয়নি।
আমার এবং আনিস ভাইয়ের অভিজ্ঞতায় আমরা সেই এসাইলাম প্রার্থীদের কোন অবস্থায় দোষ দিতে পারিনি। আমি নিজেই এসাইলাম প্রার্থী এবং আপনি বিশ্বাস করতে পারেন যে, আমি এই জন্য লজ্জিত যে আমাদের দেশটা কেন এমন হল না, যাতে আমি দেশে থাকতে পারি। অথচ আমাকে দেশে গেলে কেউ মেরে ফেলবে না। হয় তো না খেয়েও মরব না বা মরতাম না। আমি এসাইলাম পাই নি। আমার মিথ্যা জার্মানরা বিশ্বাস করেনি।
আপনার কী মনে হয় এসাইলাম প্রার্থীদের মধ্যে দেশ প্রেম আপনার চেয়ে কম! কন অংশেই না। অনেকে বর্মীজ কেইস করে, যাতে নিজের দেশ অন্যের চোখে খাটো না হয়। দেশে ফেরার সময় শুরু হয় জটিলতা। বলাই বাহুল্য ৯১ সালের ১২শ বাংলাদেশীর মধ্যে কেউ এসাইলাম পায় নি। ১ জনের কথাও জার্মানরা বিশ্বাস করেনি। বিয়ে করে (প্রায় ৯৯,৯৯ পার্সেন্ট) থাকতে পেরেছে বড়জোড় ১ পার্সেন্ট। যদিও আমি যে শহরে থাকতাম সেখানে দেড় শ তে ৬ জন বিয়ে করেছিল। কিছু লিগ্যাল হয়েছে ইটালীতে। বাকীরা সবাই দেশে গেছে। এই ধনী দেশে কী মানবেতর জীবন আমরা কাটিয়েছি, সেটা বিলাসিতা নয়। এখানে এতো বিস্তারিত বলা সম্ভবও না। তীর্থের কাক উপন্যাসে কিছুটা ছোঁয়া দেয়ার চেষ্টা করব। একেকজনের কাহিনী একেকটা বিসাদ সিন্দু। একটা উপন্যাস লিখেও শুধু আমার অভিজ্ঞতাই শেষ হবে না।
কমপক্ষে ৯০ ভাগ এসাইলাম (আমার দেখা) এসেছে শুধু আর্থিক ভাবে কিছুটা স্বচ্ছল হওয়ার জন্য।
এখানে কাজ করে সেই টাকায় কেউ দেশে গিয়ে রেষ্টুরেন্ট খুলেছে, কেউ ব্যাটারীর কারখানা খুলেছে, কেউ একটা ট্রাক কিনেছে। একজন গার্মমেন্টস দিয়েছে। আমার জন্য কেউ আবার উপহার পাঠিয়েছে। তাদের কারো সাথেই এখর আমার আর কোন যোগাযোগ নেই। আশাকরি সবাই ভাল আছেন।
সে জন্যই আপনার মন্তব্যে ক্ষুব্দ হয়েছিলাম। কজন এসাইলামের সংগে কথা বলে আপনি সিদ্ধান্তটা নিলেন। এবং আপনার মন্তব্যটা এখানকার কঠিন কর্জাবেটিবদের মতো লাগেছিল। ক্ষুব্দতার সেটাও একটা কারণ।
একজন সময় মতো দেশ ছাড়ার চরমপত্র পায়নি। সত্যিই তার হাতে সেই লাল চিঠি পৌঁছে নি। সে জন্য মানুষটাকে ধরে জেলে রাখতে হবে! এখানকার প্রগতিশীল মানুষ বিনে পয়সায় উকিল যোগাড় করে এদের সাহাজ্যে এগিয়ে আসে। আর আমাদের দেশের আপনারমতো অগ্রগামী মানুষ এদের গালি দেন!
এরা যে শোষণ করে এব্যাপারে নমনে হয় আমরা একমত। কলোনিজমের কথা বাদই দিলাম। যেহেতু কায়ীক শ্রমিকের বৈধ ভাবে আসার কোন উপায় নেই, সেই মানুষগুলো মিথ্যা বলে নিজের শ্রমদিয়ে কিছু অর্থ অর্যন করে দেশে গিয়ে যদি একটা স্বচ্ছল জীবন যাপন করতে পারে, আমি এতে দোষের কিছু দেখি না।
এসাইলাম যারা জার্মানিতে পেয়েছে তাদের না পেলেও চলত। পেয়েছে দেশে পার্টির সাথে ভাল যোগাযোগ ছিল বলে। এসাইলাম পাওয়ার কারণ আমার চেয়ে তাদের বেশী ছিল না।
অনেক গল্প জানি। কিন্তু বলা ঠিক হবে না বলে নিজের একটা কথা দিয়েই শেষ করি।
ছোটবোনের জড়ায়ূতে টিউমার। আমি বিএ পাস করেছি কেবল। কোন একটা কিছু (ব্যবসা) করার জন্য ৮০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন বাবা তার কেবল মাত্র আবাদযোগ্য ৮০ শতাংশ জমি বিক্রি করে। একটা দোকানও নেয়ার জন্য ঠিক করেছিলাম। এর মধ্য বিবাহ যোগ্য ছোট বোনটির এই অবস্থা। তার আবার জড়ায়ূ কেটে ফেলতে হবে। যে চাষীর মাত্র ৮০ শতাংশ আবাদযোগ্য জমি তার মেয়ের এমনিই বিয়ে হওয়া অসম্ভব। আমরা ভাল করে জানার আগেই গ্রামের মানুষ গেছে আমার বোনের পেটে অবৈধ বাচ্চা হয়ে গেছে, সেটা ফেলতে এখন ঢাকা নিয়ে গেছে।
আমার বোন বেঁচে আছে। তার বিয়ে হয়েছে। এক ছেলের মা এখন সে। তখন মনের অবস্থা এমনছিল যে, যদি সাকসেস হওয়ার সম্ভবনা থাকতো তাহলে একটা ব্যাংক ডাকাতি করতে পারব। ৮০ হাজার টাকায় তার চিকিৎসাই সম্ভব ছিল না।
চাষের জমি নেই এমন একটা পরিবারের দশজন মানুষকে খাওয়াতেও হবে। মঞ্চ নাটকের মিনিট পাঁচেকের একটা চরিত্রের জন্য টিকি রেখে মাথার চুলটা কামিয়ে ফেলেছিলাম। এতো ভালবাসতাম নাটক করতে।
সব ফেলে ৮০ হাজার টাকা দালারকে দিয়ে আরো ৪৫ হাজার টাকা ৬ মাসের মধ্যে দেব এই কথা দশ টাকার ষ্ট্যাম্পে লিখে সই করে এসেছি। এসে মিথ্যা কথা বলে এসাইলাম চেয়েছি। ঐ সময় কোন মানুষকে খুন করলে যদি টাকা পেতাম। আমি হয়তো তাই করতাম। কিডনী বা কোন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রি করা সম্ভব হলে, সেটাই আগে চেষ্টা করতাম অবশ্য।
আপনাদের এই উগ্রদেশ প্রেম যদি সব মানুষকে পেটভরে খেতে দিতে না পারে তার মূল্যটা কী আমাকে বলুতো।
আমি জীবন দেখেছি। উত্থান পতন দেখেছি। অনেক ঘাটের জল খেয়েছি। নিজের অভিজ্ঞতায় জাচাই না করে কথা বলার চেষ্টা কমই করি। অনেক ক্ষমতাশীল এবং অনেক উচ্চ শিক্ষিত মানুষের সঙ্গে মেশার সুযোগ পেয়েছি। কিন্তু আমাদের দেশের মানুষের মতো এমন অদ্ভূত মরালের মানুষ দেখিনি। অপরিকল্পিত ভাবে শেষটা একটু কঠিন হয়ে গেল। কিছু মনে করবেন না। এবং ব্যাক্তিগত ভাবে নেবেন না। আপনি ভাল থাকবেন।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
দেশপ্রেম মানুষকে খেতে দেয় এই অনুমান কেন?
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
আমার প্রশ্নের উত্তর কেউ দিলো না তো। দেশপ্রেম মানুষকে খেতে দেয় এই অনুমান কেন?
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
এটার উত্তর নাই। কিছু মানুষ মনে করে দেশে জন্ম নিয়ে দেশকে ধন্য করে ফেলেছে। এরাই হয়তো মনে করে দেশপ্রেম মানুষকে খেতে দেয়। আমিও প্রশ্নটার উত্তরের অপেক্ষায় আছি।
ধন্যবাদ। তাও কেউ কিছু একটা কইল। সঠিক উত্তরের অপেক্ষায়। প্রশ্নটা পুনরায় : দেশপ্রেম মানুষকে খেতে দেয় এই অনুমান কেন?
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
দেশপ্রেমের সংজ্ঞাটা একটু বলবেন? কি কি শর্ত পূরণ করলে একজন দেশপ্রেমিক হয়? হালের দু'একজন দেশপ্রেমিকের নাম দিলে বিষয়টা আরো পরিস্কার হৈতো?
তাইলে প্রশ্নটার উত্তর দেয়ার একটা চেষ্টা করা যেতো।
"অনিশ্চিত"
দেশপ্রেমের যেকোনো সংজ্ঞা দেন, কোনো সমস্যা নাই। যেকোনো সংজ্ঞার সাথে খেতে দেয়ার বিষয়ের সংযোগ স্থাপন করতে পারলেই হবে ভায়া। পছন্দ মতন সংজ্ঞা নেন, খেতে দেয়ার সাথে কানেক্ট করেন। সিম্পল।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
দেশপ্রেম মানুষকে খেতে দেয় এই অনুমান কেন?
এই অনুমানের জন্য দুঃখিত। দেশপ্রেম মানুষকে খেতে দেয় না।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
সহমত ও সহানুভূতি জানিয়ে গেলাম
এখানে যারা লেখে বেশিরভাগই জানেনা অর্থনৈতিক অসুবিধার বিস্তৃতি কতটা হতে পারে, আপনার explanation এ কাজ হবে আশা করি
খেয়াল করে পড়েছি। এই প্রসঙ্গে মন্তব্য করছি না। ওই লেখাটি সরিয়ে দেয়া হয়েছে। দাপ্তরিকভাবে, ওই লেখাটি কখনো প্রকাশিত হয়নি বলে ধরে নিয়েছি।
আপনার সঙ্গে আমার কখনো কোনোভাবেই কোন ব্যক্তিগত বিদ্বেষ ছিল না। এখনো নেই। ভবিষ্যতেও সৃষ্টি করতে চাই না।
কোন বিষয়গুলো জটিল করে ফেলেছি তা উল্লেখ করে দিলে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করতে পারি।
এইখানে আপনি আমার মন্তব্য পড়ে কী বুঝেছেন তা বলার চেষ্টা করেন নি। বরং আপনি নিজের এবং আরো অনেক অ্যাসাইলাম প্রার্থীর জীবনের কিছু ঘটনার উল্লেখ করেছেন। দুঃখ দূর্দশার বর্ণনা দিয়েছেন।
একটি কথা স্পষ্টত বলে রাখি, আমার দেশে মানুষের দুঃখ রয়েছে সে বিষয়ে আমার দ্বিমত নেই। যাঁদের কথা বললেন তাঁদের দুঃখ এবং দূর্দশার কথা শুনে খারাপ লাগল। সমবেদনা জানাচ্ছি। আপনি কিছুটা ব্যক্তিগত আলোচনা করেছেন। সেসব সুখের গল্প নয়। আপনার পরিবারের প্রতিও শুভেচ্ছা জানিয়ে রাখলাম। শুভেচ্ছাজ্ঞাপন ছাড়া এই প্রসঙ্গে আর যে কিছু বলার নেই সেটা নিশ্চয়ই আপনিও জানেন।
কিন্তু মূলত যে প্রসঙ্গে কথা বলতে চাই, সেই প্রসঙ্গে আপনার বক্তব্য স্পষ্ট হয়নি আমার কাছে। আপনার এই দীর্ঘ বক্তব্য আমার মন্তব্যের স্পষ্ট জবাব দেয়না।
প্রথমত, যেসব প্রগতিশীল মানুষ বিনে পয়সায় ভিনদেশী এক দূর্ভাগার সাহায্যে এগিয়ে এসেছে তাঁদের জন্য শ্রদ্ধা রইল। কিন্তু একটি বিষয় কিন্তু আপনি জানেন, ওই ভিনদেশী দেবদূতেরা এগিয়ে এসেছে এমন ব্যক্তিকে সাহায্যের জন্য যে তার নিজের দেশে থাকতে পারেনি। দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে! তারপর ভীনদেশে এসে বিপদে পড়েছে!
অন্যদিকে আমার মতো মানুষ (অগ্রগামী বলতে কী বুঝিয়েছেন জানিনা!) জানে একটি ভিন্ন সত্য! যেই সত্যটি বলে যে, ওই ব্যক্তি আসলে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়নি। সে উন্নত জীবযাত্রার লোভে একটি উন্নত দেশে এসে দাবী করেছে যে তার স্বদেশ তার নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ! তার স্বদেশ একটি মধ্যযুগীয় জল্লাদখানা! এবং সেই কথাটি সে ভিনদেশী আদালতে প্রমাণ করার চেষ্টাও করেছে যুক্তিপ্রমাণ সহ! এই ব্যক্তিকে ভালোবাসতে পারছি না বলে আমি একটুও দুঃখিত নই।
জ্বি, এদের কথাই বলছি। বছর বছর দেশ ছেড়ে এরকম হাজারে হাজার মানুষ ইউরোপে এসে চিৎকার করতে থাকে, "বাংলাদেশ আমাকে মেরে ফেলতে চায়! আমাকে তোমরা সভ্য লোকেরা ওই অসভ্য দেশ থেকে বাঁচাও!"
এরপর আপনি আশা করতে পারেন এই দেশ সম্পর্কে কেউ ভালো কিছু ভাববে! সেই আশা করাটা হাস্যকর হয়ে যায় না?
আর আপনি এও আশা করেন দেশে দেশে গিয়ে আমার দেশের বুকে পাড়া দিয়ে বেড়ানো এইসব লোকেদের আমি সহজভাবে নেব?
এই প্রসঙ্গে কথা না বাড়ানোই ভালো। কেবল বলে রাখি, আমি সেরকম দেশপ্রমিক নই। আর হলেও দেশপ্রেমে উগ্রতার কিছু নেই। সহজ সত্য কারো স্বার্থ হাসিলের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ালে সেটা উগ্র হয়ে যায়না!
নিচ্ছি না।
কিছু কথার পুনরাবৃত্তি করি, মানুষের দুঃখ সম্পর্কে আমি জানি। আমার সমবেদনা রইল। আমি নিজেই দরিদ্রদের কাতারে পড়ি। বিদেশে যাওয়া, কাজ করা (ছোট, বড় মাঝারি যা-ই হোক), নাগরিকত্ব নেয়া, দেশে না ফেরা ইত্যাদিতে আমার প্রকাশ্য কোন আপত্তি নেই। কিছু বলারও নেই। কারো বাংলাদেশ ভালো না লাগলে তিনি চলে যেতেই পারেন। এই প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য নেই। কিন্তু অকারণে কেবল নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য যিনি বিদেশে গিয়ে বাংলাদেশের 'বদনাম' করছেন তার প্রতি আমার মনোভাব খুবই খারাপ। সেই মনোভাব ভাষায় প্রকাশ করার চেষ্টা না করাই ভালো।
মন্তব্যের পরিসর যতটা সম্ভব ছোট রাখার চেষ্টা করলাম।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
"এইখানে আপনি আমার মন্তব্য পড়ে কী বুঝেছেন তা বলার চেষ্টা করেন নি। বরং আপনি নিজের এবং আরো অনেক অ্যাসাইলাম প্রার্থীর জীবনের কিছু ঘটনার উল্লেখ করেছেন। দুঃখ দূর্দশার বর্ণনা দিয়েছেন।
একটি কথা স্পষ্টত বলে রাখি, আমার দেশে মানুষের দুঃখ রয়েছে সে বিষয়ে আমার দ্বিমত নেই। যাঁদের কথা বললেন তাঁদের দুঃখ এবং দূর্দশার কথা শুনে খারাপ লাগল। সমবেদনা জানাচ্ছি। আপনি কিছুটা ব্যক্তিগত আলোচনা করেছেন। সেসব সুখের গল্প নয়। আপনার পরিবারের প্রতিও শুভেচ্ছা জানিয়ে রাখলাম। শুভেচ্ছাজ্ঞাপন ছাড়া এই প্রসঙ্গে আর যে কিছু বলার নেই সেটা নিশ্চয়ই আপনিও জানেন।"
খুসী হতাম যদি আমি যাদের কথা বলেছি তাদেরকে আপনার কঠোর মনোভাব থেকে বাদ দিয়েছেন কীনা, তা স্পষ্ট করতেন। শুভেচ্ছা যখন জানাচ্ছেন সেই জন্য ধরে নিচ্ছি মিথ্যা বলে এসাইলাম চাওয়ার জন্য তাদের আপনি ক্ষমা করছেন।
আমার ধারণা ঠিক হলে, আমার বলা গল্পের কারণে আপনার মনোভাব কিছুটা আমার পক্ষে এলো।
সেই ১২শ এসাইলাম প্রার্থীর অংশ কিন্তু আমি সহ আমার গল্পের বর্ণিত এসাইলামরা। এভাবে এগুলে আরো কিছু মানুষ হয়তো পাওয়া যাবে যাদের মিথ্যা ক্ষমার অযোগ্য নয়।
এবার আর দুটো ঘটনা বলছি সংক্ষেপে
১ এক আ, লীগ সমর্থক বিএনপির সমর্থককে হত্যা করে এখানে এসেছে। অবশ্যই হত্যার কথা অস্বীকার করেছে। তার ঘটনা কিন্তু সত্য। বাংলাদেশে গেলে তার মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত। মৃত্যুদণ্ড আছে এমন দেশে জার্মানরা কাউকে ফেরৎ পাঠায় না। ও কে পাঠায় নি। সত্য বলেও কিন্তু সে একটা মার্ডার করে এসেছে। এবং এখানে এসে আরেকটা করেছে। তারপরেও তাকে দেশে ফেরৎ যেতে হয়নি। সত্য ঘটনা তার পরেও তাকে আমি ঠিক সমর্থন করতে পারি না।
২ দেশে এক লোকের বড় ভাই এবং বাপকে মেরে ফেলেছে। তাকেও মেরেফেলতে পারে। সে সত্যঘটনা বলে এসাইলাম পেল। কয়েক বছর পর সে অন্য এক বাংলাদেশীকে মেরে ফেললো। সত্য বলে এসাইলাম পেয়েছে। তাকেও ভাল বলতে পারছি না।
এই দুই সত্যবাদী আশাকরি আপনার বিবেচনায় খারাপ মানুষই।
আর ঐ ১২শ এসাইলামের কয়েকজনের গল্প শুনে তাদের প্রতি আপনার কিছুটা সহানুভূতি হয়েছে বলে আমার ধারণা। হয়তো আরো বেশী মানুষের কথা শুনলে আরো কিছু মানুষের প্রতি আপনার মনোভাব শিথিল হতো। এখানে কার অপরাধ বেশী? দেশের বদনামটা কে বেশী করছে? ঐ দুই হত্যাকারী কিন্তু খুনের দায়ে এখানে দণ্ডিত হয়েছে। সুদ ডয়েচে সাইতুং বিরাট আর্টিকেল লিখেছে, এই হত্যা মামলা নিয়ে।
"বছর বছর দেশ ছেড়ে এরকম হাজারে হাজার মানুষ ইউরোপে এসে চিৎকার করতে থাকে, "বাংলাদেশ আমাকে মেরে ফেলতে চায়! আমাকে তোমরা সভ্য লোকেরা ওই অসভ্য দেশ থেকে বাঁচাও!"
আমি এরকম দুইজনকে চিনি। দেশে থাকলে তাদের বাঁচার উপায় ছিল না। আমি তাদের মিথ্যাকে যায়েজ মনে করি।
"ওই ভিনদেশী দেবদূতেরা এগিয়ে এসেছে এমন ব্যক্তিকে সাহায্যের জন্য যে তার নিজের দেশে থাকতে পারেনি। দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে! তারপর ভীনদেশে এসে বিপদে পড়েছে!"
না। কে কেন এসেছে, এই সব বিষয় খুব একটা জানতে চায় না। তারা সাহাজ্য করে একজন মানুষের সাহাজ্য দরকার শুধু এই জন্য। বাকীটা (মিথ্যা অবশ্যই) উকিলকে আমি বা অন্য দোভাষী অনুবাদ করি মাত্র। যারা উকিল যোগার করে, তারা তখন সামনে থাকে না।
আমার মনে হয়, আর একটি মৌলিক বিষয় আমি বলিনি, তা হল; এসাইলাম দেয়ার অনেক কঠোর পদ্ধতি আছে কিন্তু। সেই পদ্ধতিতে একজনের ঘটনা সত্য হলেও তাকে এসাইলাম নাও দিতে পারে। যত কম মানুষকে এসাইলম দেয়া যায়, সেই চিন্তা থেকে আইনটা তৈরী। তাও আবার একই থানায় দুই রকম হতে পারে সে আইন। ভীষণ জটিল জার্মান এসাইলাম আইন। যা এখানে আলোচনা অসম্ভব।
এবার বলুন ঐ ১২শ এসাইলামের সবাই ঘৃনিত হওয়া উচিৎ? মিথ্যা বলে এসাইলাম চেয়েছে বলে?
আর ঐ ২জন যাদের ঘটনা আসলেই সত্যি আপনি তাদের খারাপ মনে করেণ না?
আমার একটা অবস্থান আছে, সেটা জানিয়ে রাখি; আমাদের একটাই বসবাস যোগ্য প্লেনেট, তার যেখানে খুসী সেখানেই যেকোন মানুষের বসবাস করতে পারার অধিকার থাকা উচিৎ।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
আলোচনা মন্তব্য বক্তব্যের পরিধি কম থাকলে ভালো লাগতো। এইখানে অনেক আপাত অপ্রাসঙ্গিক কথা না থাকলেও চলত। কয়েকবার মনে হয়েছে আমরা দু'জন ভিন্ন পাতায় কথা বলছি! তাছাড়া আমার যা বলার তা একাধিকবার স্পষ্ট করে বলেছি। এই আলোচনা বস্তুত এখন ভবিষ্যৎ শূন্য। সেইজন্য এই মন্তব্যটির পর আর আলোচনা এগোনোর ইচ্ছা রাখি না।
দুটি প্রশ্নের জবাব একসঙ্গে দেই।
না। অ্যাসাইলামপ্রার্থীদের ক্ষমা করিনি। তাদের প্রতি মনোভাবও বদলায়নি। আগের মন্তব্যেই এই প্রসঙ্গে বলেছি। আপনার নজর এড়িয়ে গেছে সম্ভবত।
আপনি কিছু ব্যক্তির গল্প বলে প্রসঙ্গটিকে ব্যক্তিগত পর্যায়ে নিয়ে গেছেন অনেকখানি। সেটার প্রয়োজন ছিল না। আমি কোন ব্যক্তিকে নিয়ে কথা বলছি না। আমি বলছি একটি বিশেষ শ্রেণীকে নিয়ে। যারা সংখ্যায় দিন দিন বাড়ছে। এবং যারা নিয়মকরে আমার দেশের মুখে শকুনের সিল লাগাচ্ছে।
অ্যাসাইলাম চাওয়াটাকে আপনি 'মিথ্যা বলার' মতো সহজ বিষয় হিসেবে দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছেন। আপনি ভুলে যাচ্ছেন এই মিথ্যাটা স্কুল পালিয়ে মায়ের কাছে মিথ্যা বলার মতো কোন বিষয় নয়। এটা আমার দেশকে মধ্যযুগীয় বলা এবং তা প্রমাণ করার চেষ্টা করা। সেটিও ভিনদেশী আদালতে, সবাইকে জানিয়ে। আর তাও একজন দুজন নয়, হাজার হাজার মানুষের!
এই লোকদের প্রতি আমার মনোভাব একটুও বদলায়নি। মানুষের দুর্দশার কথা শুনে খারাপ লেগেছে, সত্য। আমি চাইনা কেউ খারাপ থাকুন। সে স্বদেশে হোক অথবা বিদেশে। মানুষে খারাপ থাকার খবর ব্যথিত করে সত্যি কিন্তু সেই খারাপ থাকাটা কাউকে দেশের বুকে লাথি দেয়ার অধিকার দেয়না। বিন্দুমাত্রও না।
এই প্রসঙ্গে আমি কয়েকবার বলেছি, যারা সত্যিই প্রাণের ভয়ে, নির্যাতনের ভয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে তাদের প্রতি আমার মনোভাব অন্যরকম। দেশে যাদের সত্যিই বাঁচার উপায় ছিলা না তারা ভিনদেশে রাজনৈতিক আশ্রয় চাইতেই পারেন।
এই প্রসঙ্গে কোন মন্তব্য নেই।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
১
“কেবল বলে রাখি, আপনার বর্ণিত বাংলাদেশের এই মধ্যযুগীয় পরিস্থিতি আমলে নিলে অন্ততপক্ষে (আবার বলছি, অন্ততপক্ষে) দেশের ১৫ কোটি মানুষ ন্যায্যত ভিনদেশে রাজনৈতিক আশ্রয় চাইতে পারে”।
আপনার সুবিধার জন্য আমার বর্ণিত বাংলাদেশের অবস্থাটা এখানে আবার তুলে দিলাম।
“স্বাধীনতার অল্প কিছু দিনের মধ্যে বাকশাল গঠনের কারণে শেখ মুজিবকে স্বপরিবারে খুন করেছি। শিশুটিও রক্ষা পায়নি। বিনা বিচারে ক্ষুনের শুরুটা তার আগেই হয়েছিল সিরাজ শিকদার হত্যার মাধ্যমে। অবুত্থান পাল্টা অবুত্থান করে এলো জেনারেল জিয়া। প্রহসনে ক্ষিপ্ত হয়ে কর্ণেল তাহের নিজের গলায় নিজে দড়ি দিতে বাধ্য হলেন। কিন্তু জিয়াও বেশী দিন বাঁচলেন না। শেখ মুজিব ছাড়া আর কোন রাজনৈতিক হত্যার বিচার দেশে হয় নি। হয়তো হবে কোন দিন। আমরা আশা করতেই পারি।
রাজাকার সংসদ, মন্ত্রী, প্রেসিডেন্ট হয়েছেন। বহু রাজাকার খোদ আওয়ামী লিগেই আছে। আমাদের কেপি টেষ্টে আমরা ৫ জন রাজাকারের নাম জানতে চাই। সেই বিক্ষ্যাত রাজাকার ছাড়া আমাদের দেশে আর কোন রাজাকার যেন ছিল না! ৫ জনের নাম জানলেই যথেষ্ট। আমাদের পাড়া/গ্রাম/মহল্লা/ইউনিয়ন/থানায় আর কোন রাজাকারের অস্তিত্ব নেই।পাঁচজন রাজাকারের নাম বলা খুব সহজ। নিজের আশে-পাশের রাজাকারদের নাম বলা তত সহজ নয়। অবশ্য এটাও সত্য যে অনেকে এই ৫ জনের নামই বলতে পারে না।
ভাত দে হারামজাদা, নইলে মানচিত্র খাব টাইপের কবিতা লেখা এখন আর বিপ্লব নয়। দেশে ভাতের অভাব নেই। কবিতা লেখার খেসারত দিতে দাউদ হায়দার এখন বার্লিনে বরফ ঠেলে। তসলিমা নাসরিন কোথায় আছে, তার খবর আমরা জানিনা। কবিতা লেখাও বিপ্লব না।
বাংলাদেশে সাংবাদিকতা এখন বিপ্লব। সাংবাদিক মারলে শুধু বাংলাদেশের সরকার প্রধান বলতে পারে; কার বেডরুম পাহারা দেবার দায়ীত্ব সরকারের না। প্রেসিডেন্টের বিশেষ ক্ষমতায় হত্যা মামলার আসামী মাফ পায়। তাদের মধ্যে সব চেয়ে ধনী বসুন্ধরা গ্রুপের মালিক। ভদ্রলোক কালের কণ্ঠ দৈনিক পত্রিকা বের করেছেন। খূনী বলে তাঁর পত্রিকা কেউ বর্জন করেছে এমনটা শুনিনি। দশ ট্রাক অস্ত্র অবৈধ ভাবে কী করে দেশে ঢুকল? আমরা জানতে চাইনি। নিজের ভিটামাটি আকড়ে ধরে রাখা পাহাড়ী মেয়ে বিউটি-র নিখোঁজ হওয়া নিয়ে আমরা উদ্ভিগ্ন নই।
আমাদের দেশে দিনে-দুপুরে মানুষ মারলে তার বিচার হয় না। র্যাব-এর হাতে এখনো মানুষ মরছে। এখনো প্রতি পাঁচজনে একজন শিশু মারা যায় পাঁচ বছর বয়স হওয়ার আগেই না খেতে পেয়ে বীনা চিকিৎসায়। আমাদের দেশে শিক্ষা কোন অধিকার নয়। হিন্দু ধর্মের বর্ণ প্রথার মতো; গরীবরা জন্মেছে গরীব হয়ে, মরবেও গরীব হয়ে। আইনের চোখে, রাষ্ট্রের চোখে সব মানুষ সমান নয়”।
আমাদের দেশের পরিস্থিতি তুলে ধরতে আমি এই বর্ণনাটুকু দিয়েছি। এর মধ্যে কোন কথাটি আপনি আমার ভূল ধারণা বা ভূল পর্যবেক্ষণ বলে মনে করছেন, তা বলেননি কিন্তু।আমি কিন্তু আবিস্কার করে বলিনি। যা সত্য তাই বলেছি।
২
দেখুন আপনি কী বলেছেন;
“বাংলাদেশে রাজনৈতি ঝড়ঝাপটা সাধারণত রাজনীতি সংশ্লিষ্টদের উপর দিয়েই যায়। এবারে একপক্ষ একে মারে তো পরেরবার আরেকপক্ষ ওকে মারে। এর পরে আইনশৃংখলা পরিস্থিতির জন্যে নিরাপত্তার যে অভাব সেটি আমলে নিলে বাংলাদেশের ১৫ কোটি লোকের ভিনদেশে আশ্রয় চাওয়া উচিত”।
একমত।
৩
তার পরে বলেছেন;
“প্রসঙ্গত, অ্যাসাইলাম নেয়া বিষয়টির একটি নিয়মতান্ত্রিক ব্যবসায়িক পদ্ধতিও রয়েছে। আপনার জানা নেই নাকি এড়িয়ে গিয়েছেন তা জানিনা”।
আমি বলার চেষ্টা করেছি;
“সব ফেলে ৮০ হাজার টাকা দালালকে দিয়ে আরো ৪৫ হাজার টাকা ৬ মাসের মধ্যে দেব এই কথা দশ টাকার ষ্ট্যাম্পে লিখে সই করে এসেছি”।
অনেক কাহিনী বলেছি এই প্রসংগে আর একটি বলি;
এক দালালের ১০ আদম ইউরুপে আসার পথে পানিতে ডুবে মারা গেছে। ঐ আদমদের অভিবাবকরা মামলা করেছে বাংলাদেশের আদালতে। দালাল পালিয়ে এসে এসাইলাম চেয়েছে। যেহেতু দেশে তার বিরোদ্ধে সত্যিই ১০টি হত্যা মামলা আছে। তিনি এসাইলাম পেয়েছেন, সত্য কথা বলে।
আশা করি উপরের দালাল ভদ্রলোকের জন্য আপনার নীচের সমবেদনা আপনি জানাননি।
“যাঁরা সত্যিকারের নির্যাতিত হয়ে দেশ ছেড়েছেন তাঁদের জন্য সমবেদনা। আমিও বাংলাদেশের একজন। আমি আমার স্বজনদের নিরাপত্তা দিতে পারিনি সেজন্য আমি লজ্জিত। তাঁদের জন্য আমিও কষ্ট পাই। এবং এটি সত্যিকারের আমার দেশের ব্যর্থতা, লজ্জা”।
৪
“না। অ্যাসাইলামপ্রার্থীদের ক্ষমা করিনি। তাদের প্রতি মনোভাবও বদলায়নি। আগের মন্তব্যেই এই প্রসঙ্গে বলেছি। আপনার নজর এড়িয়ে গেছে সম্ভবত।
আপনি কিছু ব্যক্তির গল্প বলে প্রসঙ্গটিকে ব্যক্তিগত পর্যায়ে নিয়ে গেছেন অনেকখানি। সেটার প্রয়োজন ছিল না। আমি কোন ব্যক্তিকে নিয়ে কথা বলছি না। আমি বলছি একটি বিশেষ শ্রেণীকে নিয়ে। যারা সংখ্যায় দিন দিন বাড়ছে। এবং যারা নিয়মকরে আমার দেশের মুখে শকুনের সিল লাগাচ্ছে”।
আমি বলেছি যাতে ঐ ১২শ লোকের কিছু মানুষ আপনার কঠোর মনোভাব থেকে রক্ষা পায়। ঘটনাক্রমে আমিও তাদের দলে। আপনি কোন ব্যক্তিকে বলেন নি। কিন্তু ঐ ১২শ মানুষের সবাই এক একজন ব্যাক্তি। একেকজন ব্যক্তিকে বললে বরং সুবিধা। তাতে একটা শ্রেণী তৈরীর দায়ীত্ব থাকে না।
৫
“অ্যাসাইলাম চাওয়াটাকে আপনি 'মিথ্যা বলার' মতো সহজ বিষয় হিসেবে দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছেন। আপনি ভুলে যাচ্ছেন এই মিথ্যাটা স্কুল পালিয়ে মায়ের কাছে মিথ্যা বলার মতো কোন বিষয় নয়। এটা আমার দেশকে মধ্যযুগীয় বলা এবং তা প্রমাণ করার চেষ্টা করা। সেটিও ভিনদেশী আদালতে, সবাইকে জানিয়ে। আর তাও একজন দুজন নয়, হাজার হাজার মানুষের”!
হাজার হাজার মানুষ মিথ্যা বলে এসাইলাম চাচ্ছে, ভেবে দেখেন, কেন?
মন মাঝি ভাই বলার চেষ্টা করেছেন;
একটা রাজনৈতিক বা ধর্মীয় আদর্শে অনুপ্রানিত হয়ে রাজাকাররা আমাদের দেশের মা-বোনকে ধর্ষণের জন্য পাক সেনাদের হাতে তুলে দিয়েছে। সংখ্যালঘু বিশেষ করে হিন্দুদেরে লুটপাট করে নেয়ার পরে বাড়ি-ঘরে আগুন দিয়েছে। অনেক মুক্তিযোদ্ধার পিতিকে হত্যা করেছে, বোন-বুকে ধর্ষণ করেছে। বাড়ি-ঘের জ্বালিয়ে দিয়েছে।
মিথ্যা বলে এসাইলাম প্রার্থীরা দেশের কোন মানুষের এমন ক্ষতি করেছে? এই দুটি অপরাধের সাজা এক হওয়া উচিৎ?
আপনি একটি শ্রেণীকে রাজাকার বলেছেন। যা আমার বিবেচনায় ঠিক নয়।আপনার কথা আপনি যুক্তিদিয়ে প্রতিষ্ঠিত করলেন। আমার বক্তব্য বেঠিক বা মিথ্যা প্রমানিত হল।এই বলা মিথ্যা আর মানুষকে হত্যা করা একই রকমের অপরাধ?
৬
“কয়েকবার মনে হয়েছে আমরা দু'জন ভিন্ন পাতায় কথা বলছি! তাছাড়া আমার যা বলার তা একাধিকবার স্পষ্ট করে বলেছি। এই আলোচনা বস্তুত এখন ভবিষ্যৎ শূন্য। সেইজন্য এই মন্তব্যটির পর আর আলোচনা এগোনোর ইচ্ছা রাখি না”।
আমারও মনে হচ্ছে, আমরা সত্যিই ভিন্ন পাতায় কথা বলছি। কারণ আমি যাই বলিনা কেন, আপনার অবস্থান থেকে আপনাকে এক চুলও নাড়াতে পারব না।আমি কিন্তু চেষ্টা করেছি অন্তত কিছু মানুষকে আপনি ক্ষমা করুণ। কিন্তু পারলাম না। মিথ্যা বলে এসাইলাম চাওয়ার অপরাধে আপনি রাজাকার শব্দটা তার সব ব্যাখ্যা (মন মাঝি ভাইয়ের মন্তব্য দ্রষ্টব্য) সহ এসাইলামদের উপড় চাপিয়ে দিলেন। কোন করুণ কাহিনী, ব্যাক্তির আর্থ সামাজিক অবস্থা কিছুই বিবেচনায় নিলেন না!
এই যে ফাণ্ডামেন্টাল মনোভাব, রাজাকাদের সাথে তার যথেষ্ট মিল আছে। তারাও যে কোন মূল্যে পাকিস্তান (তাদের মত/আদর্শ) টিকিয়ে রাখতে চেষ্টা করেছে। তারাও চায়নি মানুষ ভারতে পালিয় যাক। যেকোন ভাবে মাটি কামড়ে পাকিস্তানের পাক মাটিতে থাকতে হবে।এবং এখনও তারা ৭১এ তাদের ভূমিকা ভুল মনে করে না।
১৫ কোটি মানুষ! তাদের ভাত-কাপড় যোগার করা সহজ নয়। শিক্ষার কথা ছেড়েই দিলাম। গ্লোবাল ওয়ার্মীং পানির স্তর বাড়িয়েই চলেছে। বাংলাদেশের দক্ষিনাঞ্চল তলিয়ে যাবে। ভূমি কমছে। আপনি এই মানুষগুলো কোথায় রাখবেন? আপনার স্বপ্নের দেশে এতোগুলো মানুষের জায়গা আছে? না করা সম্ভব? মানুষকে যারা বৈধ অথবা অবৈধ, যোগ্য বা অযোগ্যের মাপকাঠি দিয়ে মাপতে আপনাকে শিখিয়েছে; গ্লোবাল ওয়ার্মিং তারাই করছে। তাদের কারণে ডুবে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের কিছু মানুষ মিথ্যাবলে এসাইলাম চেয়ে আপনার পড়ালেখার খরচ যোগাচ্ছে। বাংলাদেশের বাজেটের ৪০ ভাগের ভেতরে ঐ মিথ্যাবাদী এসাইলামদের টাকাও আছে।ধনীদেশের বেশীরভাগ প্রবাসী মিথ্যা এসাইলাম সিকার। আপনার বিবেচনায় তারা রাজাকার।
আপনার প্রতি সববেদনা রইল। কারণ; ঘৃনা করার মতো চরম সিদ্ধান্তও কখনো পাল্টায়। কিন্তু রাজাকারকে ঘৃনা করার মতো সিদ্ধান্ত কখনো পাল্টায় না। অন্তত আমার পাল্টায় নি। এবং ঘৃনিত কোন মানুষের সংসর্গ অভাবনীয় রকম অস্বস্তি কর।ভার্চুয়াল হলেও যতদিন সচলায়তনে থাকেন বা আমি থাকি আমার এক্টিভিটিজ আপনাকে দেখতে হবে। এবং ঐ ১২শ রাজাকারের ভেতর তিনজন মুক্তিযোদ্ধাও আছে।আমি এই বিষয় নিয়ে আপনার আর কোন মন্তব্যের জবাব দেব না। আপনার অনেক সময় অপচয় করলাম বলে দুঃখিত। ভাল থাকবেন।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
১। আপনার বর্ণিত ঘটনাসমূহ সঠিক। আমার বক্তব্য হচ্ছে এইসব ঘটনা বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণকে দেশের বদনাম করে বিদেশে রাজনৈতিক আশ্রয় চাওয়ার বৈধতা দেয়না।
২। আপনি সত্যিই তাই মনে করেন? ১৫ কোটি লোকের বিদেশে রাজনৈতিক আশ্রয় চাওয়া উচিত?
৩। না। দালাল ভদ্রলোকের জন্য সমবেদনা জানাইনি। আরো দুয়েকটি অপরাধীর কথা আগে বলেছেন। সমবেদনা তাদের জন্য নয়। যারা সাধারণত রাজনৈতিক আশ্রয় চান, এরা তাদের ব্যতিক্রম বলেই জানি।
৪। ব্যক্তির অপরাধ এড়িয়ে যাওয়া যায়। গোষ্ঠীর অপরাধ এড়িয়ে যাওয়া যায় না। এইজন্যেই আমি কথা বলেছি একটি গোষ্ঠীকে উদ্দেশ্য করে। বিচ্ছিন্ন একজন দুজন ব্যক্তি বিদেশে মিথ্যে বলে রাজনৈতিক আশ্রয় চাইলে তাদের প্রসঙ্গে সম্ভবত আমি আলোচনাতেই যেতাম না। বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে এড়িয়ে যেতাম।
৫। আমি কাউকে 'রাজাকার' বলিনি। আমি 'রাজাকারের বাচ্চা' শব্দবন্ধ একটি গালি হিসেবে ব্যবহার করেছিলাম। এবং পরবর্তীতে বলেছিলাম, বাংলাদেশকে যারা বিনাকারণে বিদেশের আদালতে বর্বর প্রমাণ করতে চায় তাদের অসন্মান করে আমি অনুতপ্ত নই।
'রাজাকারের বাচ্চা' শব্দবন্ধটি উচ্চারণ করেছিলাম দেশের সঙ্গে বেঈমানী করার বিষয়টিকে মাথায় রেখে। মন মাঝি রাজাকারের যে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন সেই হিসেবে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী এবং রাজাকার এক নয়। আমি তা মনেও করি না। কিন্তু আমি মনে করি বাংলাদেশ একটি বর্বর রাষ্ট্র তা যখন কেউ ভিনদেশী আদালতে প্রমাণ করার চেষ্টা করে তখন সে দেশকে অপমান করে। বিশ্বাসঘাতকতা করে।
রাজাকার শব্দের আভিধানিক সংগা মেনে যে আমি এইখানে কথা বলিনি সেটা স্পষ্ট করলাম। 'রাজাকারের বাচ্চা' শব্দবন্ধটি যে গালি হিসেবে ব্যাবহার করেছি সেটিও উল্লেখ। সেই জন্যেই মন মাঝির মন্তব্যের জবাবে আমি শুয়োর শব্দ কেন ব্যবহার করা যাবেনা ইত্যাদি বৈজ্ঞানিক কথা টেনে খানিকটা শ্লেষ প্রকাশ করেছি। উনি হয়তো বুঝতে চাননি, ওই শব্দটিও গালি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কাউকে আক্ষরিক অর্থে একটি চতুস্পদী প্রাণি বলার জন্য নয়!
৬।
এইটা আপনার আরোপিত। আমার নয়।
মন্তব্য করছি না। আবেগী হয়ে বলেছেন ধরে নিলাম। নয়ত মডুদের দৃষ্টি আকর্ষন করতাম।
আগের বাক্যটিকে যুক্তি দিয়ে শক্ত করতে এই বাক্যটি লিখেছেন বলে মনে হয়। এমনিতে এই বাক্যটি খুবই দূর্বল।
সেইজন্য বাংলাদেশ আমাকে মেরে ফেলছে আমাকে বাঁচাও বলে বিদেশে রাজনৈতিক আশ্রয় চাওয়া বৈধ?
এই জন্যে রাজনৈতিক আশ্রয় চাওয়া বৈধ?
এইজন্য বৈধ?
আপনি অনেক ঘটনা গল্প ইত্যাদি বলেছেন। আমার কাছে অপ্রাসঙ্গিক লেগেছে এইজন্যে যে, এইসব কারণ আছে সত্যি। বাংলাদেশের মানুষের দূর্দশা রয়েছে ঠিক। কিন্তু সে কাউকে দেশের দূর্ণাম করে বিদেশে আশ্রয় চাওয়ার ন্যায্যতা দেয়না।
এই কথাটি বিকৃত। এবং অনেকবার বলেছেন। আপনি বলতে চাইলে বলতে পারেন, আমি বাংলাদেশের দূর্ণাম করে বিদেশে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের 'রাজাকারের বাচ্চা' বলে গালি দিয়েছি। যেটা বলেছি সেটা বলুন।
আপনার জন্যেও শুভেচ্ছা রইল। আমি হয়তো বদলাবো না। আমাদের সামাজিক পরিস্থিতিতে দেখছি বদলে যাওয়াটা এইখানে ঠিক ভালো কিছু নয়! আশাকরে থাকলাম আপনি কখনো বুঝতে পারবেন, আমার দেশ মধ্যযুগীয় শ্মশান সেই ঘোষণা দিয়ে দেশ ছাড়া সহজ কোন বিষয় নয়।
আমি জানি দেশে সমস্যা আছে। ভিনদেশে চাইলে যে কেউ যাক। থাকুক। ফিরে না আসুক। সবার জন্য শুভকামনা। কিন্তু সে দেশের দূর্ণাম করে নয়।
দেশপ্রেম যেমন বাধ্যতামূলক নয়। তেমনি নিজের স্বার্থোদ্ধারে কেউ দেশের মুখে বর্বরতার উল্কিও আঁকতে পারেনা।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
দেশ থেকে যারা ফান্ডিং নিয়ে বিদেশে লেখাপড়া করতে আসে, তারপর পাশ করে চাকরি-বাকরিতে ঢুকে বিদেশে স্থায়ী হয়ে যায়, তাদের পক্ষে অন্য অভিবাসীদের প্রকৃত অবস্থাটা আসলে একটু বোঝা কঠিন। কারণ দু’টো জগত পুরোপুরি ভিন্ন। এদের অনেককে আমি দেখেছি অন্যদের হেয় করতে, আম্রিকার একটু বড় শহরগুলিতে পেশাজীবি-ননপেশাজীবি-ছাত্র এরা আলাদা গ্রুপে চলাফেরা করে, যেমনটা আপনি জার্মানির কথা বলেছেন। অথচ এই নাক-উঁচু ভাবের কী কারণ আমি সেটা নিজেও বুঝতে পারি না।
মানুষকে অবজ্ঞার চোখে দেখাটা মনে হয় আমাদের জাতিগত স্বভাব। একটা মজার ঘটনা বলি। গতবার দেশে আমার মেয়ে একটু অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে এক ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়েছিলাম। সে আমি বিদেশে স্থায়ীভাবে থাকি শুনে নানাভাবে বোঝানোর চেষ্টা করলো যে আমি সেখানকার একজন থার্ড ক্লাস সিটিজেন । ডাক্তারের চেম্বারে যাওয়ার সময় কোন সিএঞ্জি পাচ্ছিলাম না, অনেক কষ্টে একটা পাবার পর দেখি যে রাস্তা দিয়ে যাবার কথা সে রাস্তা আজাইরা কী এক কারণে বন্ধ করে রাখা হয়েছে (মনে হয় কোন মন্ত্রী-মিনিস্টার যাবে তাই)। তারপর নানা ঘুরপথে অনেক সময় নষ্ট করে যখন পৌঁছালাম তখন মেজাজ বেশ খারাপ। ডাক্তার সাহেব যখন জিজ্ঞেস করলেন, দেশে এতদিন পর এসে কেমন লাগছে ব্লা ব্লা তখন এই অসন্তোষের কথা একটু বলেছিলাম। ডাক্তার শুনে ঠা ঠা করে হেসে বললেন, আসলে আমরা দেশের ফার্স্ট ক্লাস সিটিজেন তো, তাই অন্য দেশের মতো আইন-কানুন বেশি মেনে চলি না! গেছি তার কাছে বিপদে পড়ে, তাই হজম করলাম এই আচরণ। কিন্তু আমার কাছে এটা খুব বিচ্ছিন্ন ঘটনা বা মনোভাব মনে হয় নি। এই ডাক্তারের মতো লোকেরাই যখন বিদেশে এসে চাকরি-বাকরি করে স্থায়ী হয়, তখন হয়ত নিজেকে ফার্স্ট ক্লাস সিটিজেন ভাবে আর অন্যদের ভাবে থার্ড ক্লাস (সিটিজেনশিপের যে এইরকম ক্লাসিফিকেশন হয় এটাও মনে হয় আমাদের বাংলাদেশিদের ইউনিক চিন্তাভাবনাপ্রসূত একটা ব্যাপার )।
এই ডাক্তারের মতো লোকেরাই যখন বিদেশে এসে চাকরি-বাকরি করে স্থায়ী হয়, তখন হয়ত নিজেকে ফার্স্ট ক্লাস সিটিজেন ভাবে আর অন্যদের ভাবে থার্ড ক্লাস।
এইটা যাকে বলে একেবারে "দেখে শেখা"।
"অনিশ্চিত"
পোস্ট ভাল্লাগছে। সোজাসাপটা সত্যকথন।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
ঠিক কথা, আমি একমত হই বা না হই, সৎসাহসের প্রশংসা করি।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
পোস্ট অগোছালো হলেও আপনার কষ্ট ও যুক্তির জায়গাটা ধরতে পেরেছি। কিছু কিছু জায়গায় দ্বিমত থাকলে মোটাদাগে লেখাটা ভালো লাগলো।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
গৌতম'দা, বস, যুক্তির জায়গাটা কোনটা সেটি আমিও বুঝতে চাই। এখানে আসলে অনেকগুলো বিষয়ে আপাত অপ্রাসঙ্গিক অনেক কথা হয়েছে। মূল যুক্তিটি কী তা আপনি বুঝে থাকলে আমাকেও বুঝিয়ে বলুন।
অনেক মানুষের প্রতি আমার বিরূপ ভাবনা যদি অসঙ্গত হয়ে থাতে তাহলে ক্ষমাপ্রার্থনা করে সেই পাপ থেকে মুক্ত হওয়া উচিত আমার!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
দেশে জীবন বিপন্ন বা দেশ সম্পর্কে অন্যান্য মানহানিকর মিথ্যা কথা বলে এসাইলামপ্রার্থী=শুয়ার+রাজাকার?
এটাই তো মনে হচ্ছে আসল বোন অফ কন্টেনশন। পুতুল ভাইকে এটাই মনে হয় সবচেয়ে আহত করেছে।
আমার জানা মতে উপরোক্ত ধরণের এসাইলামপ্রার্থীদের জন্য বাংলায় কোন প্রচলিত বিশেষন নেই যা তাদের যথাযথভাবে বর্ণনা/মূল্যায়ন করে। কিন্তু 'রাজাকার' শব্দটার, আমার জানামতে, একটা প্রতিষ্ঠিত ডেফিনিশন আছে। এর একটা ব্রড সংস্করন (অর্থাৎ যারা সুনির্দিষ্টভাবে অফিশিয়ালি 'রাজাকার' নামধারী সংগঠনের বাইরে ছিল কিন্তু একই ধরণের কাজ করেছিল তাদেরও এতে অন্তর্ভূক্ত করা হচ্ছে) এরকম হতে পারে - রাজাকার সেইসব বাংলাদেশিদের বলা হয়, যারা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানী সামরিক বাহিনি কর্তৃক মানবাতিহাসের অন্যতম নৃশংসতম ও বীভৎসতম গণহত্যায় - ৩০ লক্ষ স্বদেশবাসীর হত্যাকাণ্ডে - অংশগ্রহণ বা সহযোগিতা করেছিল বা নৈতিক/রাজনৈতিক সমর্থন যুগিয়েছিল। ইষৎ এক্সটেনশনের মাধ্যমে এই সংজ্ঞার সাথে বর্তমানকালে আরেক শ্রেণীর (যারা ঐ সময়ে ঐসব কাজে নিজেরা প্রত্যক্ষভাবে জড়িত বলে অভিযুক্ত নয় বা জড়িত হওয়ার সুযোগ ছিল না) মানুষকে অনেকে যোগ করেন - যারা বর্তমানেও '৭১-এ পাকবাহিনির গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ডকে বা তখনকার রাজাকারদের কর্মকাণ্ডকে নৈতিক/রাজনৈতিক সমর্থন যোগায় বা তাদের পাপস্খালন করার চেষ্টা করে বা তাদের অপরাধকে লঘু করার চেষ্টা বা উপেক্ষা করতে চায় বা কোনভাবে ক্ষমা করে দিতে চায় বা তাদের ভাল মানুষ বলে প্রতিপন্ন করতে চায় বা সমাজে/রাষ্ট্রে পুনর্বাসন করতে চায়, ইত্যাদি। এরচেয়ে বৃহত্তর কোন ডেফিনিশন আমার মাথায় আসছে না এইমুহূর্তে এবং আপাতত বাস্তবসম্মতও মনে হচ্ছে না।
পৃথিবীতে অনেক ধরণের অপরাধ ও অনৈতিক আচরণ আছে, যার সবকিছুকে একটিমাত্র সংজ্ঞার ছাতাতলে আনা যায় না, বা এক শব্দে বিশেষনায়িত করা যায় না। সেরকম চেষ্টা করলে, অনেক গুরুতর অপরাধ ও অনৈতিক আচরণকে লঘু করে ফেলা হয়, আবার অনেক অপেক্ষাকৃত লঘুতর অপরাধ ও অনৈতিক আচরণকে নাহক গুরুতর করে ফেলা হয়।
এখানে লক্ষণীয় যে, রাজাকারের উপরোক্ত সংজ্ঞার মধ্যে (এক্সটেন্ডেড ভার্শানসহ) একটা অনিবার্য, অপরিহার্য ও অবিচ্ছেদ্য কী-ওয়ার্ড বা বৈশিষ্ট্য বিরাজমান। আর সেটা হল - 'গণহত্যা'! মনে রাখা দরকার '৭১ কেবল আমাদের গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধেরই ইতিহাস নয়, এটা পাকবাহিনিকৃত ৩০ লক্ষ বাঙালি হত্যা, তথা 'গণহত্যা' (genocide) ও তাতে 'রাজাকারদের' সহযোগিতারও ইতিহাস বটে। অর্থাৎ, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ শুধু 'মুক্তিযুদ্ধ'ই নয়, এটা 'গণহত্যার' (genocide) বিরুদ্ধেও যুদ্ধ। এই সম্পর্ক বা যোগসূত্রটা ঐতিহাসিক কারনে অবিচ্ছেদ্য। তেমনি ঐ গণহত্যায় সহযোগিতার কারনে, রাজাকারদের সাথেও ঐ গণহত্যাটার সম্পর্কটাও অবিচ্ছেদ্য। একই কারনে, 'রাজাকার' শব্দটা বা বিশেষণটার সাথে 'গণহত্যার' কনোটেশনটাও অবিচ্ছেদ্য ও চিরস্থায়ী। তাই, এই রাজাকারিত্ব বা 'রাজাকার' শব্দটা স্রেফ আর দশটা 'দেশদ্রোহী', 'বেইমান', বা 'মীর জাফর'-এর সমতুল্য নয় বা সেসবের দ্বারা প্রতিস্থাপনযোগ্য নয়, তাদের থেকে এদের অপরাধের গুণগত, গুরুত্বগত, ও পরিমানগত মাত্রা অকল্পনীয় ও অবিশ্বাস্যরকম বেশি।
'গণহত্যা' (genocide) কোন সাধারণ অপরাধ, হত্যা, বা এমনকি কোন ম্যাসাকার বা মাস-কিলিং-ও নয়! এটাকে সাধারণত (আমার জানামতে) মানব-ইতিহাসে সবচেয়ে ঘৃন্যতম, জঘন্যতম, ভয়াবহতম, বীভৎসতম, নিষ্ঠুরতম, নৃশংসতম, ও পৈশাচিকতম অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যার কাছে অন্য সব অপরাধ তুলনায় নেহাতই শিশুতোষ হয়ে যায়।
শব্দটা খুব সম্ভবত ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলারকৃত হলোকস্ট নামক সেই অতুলনীয় বর্বরতা অর্থাৎ ৬০ লক্ষ ইহুদী-নিধনযজ্ঞকে বর্ননা করার জন্য প্রথম কয়েন করা হয় (যদিও ইদাহরণ হিসেবে আর্মেনীয় গণহত্যা ব্যবহৃত হয়েছিল)। আমরাও মনে হয় শব্দটা সেখান থেকেই ধার করে '৭১-এর ক্ষেত্রে প্রয়োগ করছি (প্রথমে মনে হয় 'জেনোসাইড' শব্দটাই ব্যবহৃত হত, পরে 'গণহত্যা' অনুবাদ হিসেবে এসেছে) - '৭১-এ আমাদের ক্ষেত্রে যা ঘটেছে সেটাকে হিটলারি গণহত্যার সমপর্যায়ের অপরাধ হিসেবে গণ্য করে।
এই গণহত্যার সংজ্ঞা কি? উইকিপিডিয়া লিখছে -
"Genocide is defined as "the deliberate and systematic destruction, in whole or in part, of an ethnic, racial, religious, or national group"
১৯৪৮-এ জাতিসঙ্ঘের Convention on the Prevention and Punishment of the Crime of Genocide (CPPCG)- এর আরটিকল-২ অনুযায়ী 'গণহত্যা'-র একটা আইনি সংজ্ঞা হল এরকম -
[সূত্রঃ উইকি। আন্ডারলাইন ও ফন্টকালার আমার।]
তো 'রাজাকার' কথাটা যখন উঠে বা উচ্চারিত হয়, তখন গণহত্যার এই চিত্রটা অবধারিত ও অবিচ্ছেদ্যভাবে কনোটেশন বা অনুসঙ্গ হিসেবে চলে আসে। এই অনুষঙ্গটা মনে হয়ে চিরস্থায়ী ও অনপনেয়। অন্তত যতদিন বাংলাদেশ থাকবে।
তো, আমার মনে হয় প্রশ্নটা শেষমেশ এই দাঁড়ায় যে - বাংলাদেশ থেকে বিদেশে এসাইলামপ্রার্থীরা, তারা যাইই করে থাকুক না কেন, তাদের অপরাধ কি সত্যিই এতবড় অকল্পনীয় পিশাচযজ্ঞের সাথে তুলনীয়? ৩০ লক্ষ বাঙালি হত্যার সাথে - calculated to bring about its physical destruction in whole or in part ? আদৌ কি কোন সুদূরতম তুলনাও সম্ভব?
কিম্বা সংক্ষেপে আবারওঃ দেশে জীবন বিপন্ন বা দেশ সম্পর্কে অন্যান্য মানহানিকর মিথ্যা কথা বলে এসাইলামপ্রার্থী = রাজাকার? (শুয়ারটা নাহয় বাদই দিলাম এই দফা)।
আমি আমার বুঝমত লিখলাম ও। ভুলও হতে পারে। বাকিটা আপনার বিবেচ্য।
ধন্যবাদ।
****************************************
হতাশ হলাম। আলোচনাটা তো অর্ধেক করলেন। শুয়োর সম্পর্কে কিছু বললে আলোচনাটা শেষ হতো।
আপনার বক্তব্যটা হয়ত এরকম হতো অনেকটা:
শুয়োর স্তন্যপায়ী প্রাণি হলেও চতুস্পদী। এরা Suidae পরিবার এবং Sus জেনাসের অন্তর্গত। নিউক্লিয়িক এসিড বিশ্লেষণে (বিশেষত ১৬এস রাইবোজোমিক ডিঅক্সিরাইবো নিউক্লিয়িক এসিড) প্রমাণিত হয় যে এরা মানুষের মত নয়। সুতরাং মানুষ যত-যাই করুক শুয়োরের সঙ্গে তুলনীয় নয় কখনোই। শুয়োরের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক কেবল শ্রেণী পর্যায়ে। দুজনের শ্রেণীই mammalia। তুলনা চলে না। ...ইত্যাদি।
আপনার এই আলোচনায় অংশ নিচ্ছি না। কেবল একটি সংশোধনী দিয়ে যাই, যারা সত্যিই জীবনের ভয়ে দেশ ছাড়েন তাদের প্রতি আমার বিদ্বেষ নেই।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ঠিকাছে।
সামান্য দ্বিমত থাকলেও পোস্টের মূল বক্তব্য নিয়ে পুরোপুরি সহমত।
[ কিছু বানান ভুল আছে! সিরিয়াস টপিক এটা। একটু দেখে ঠিক করে দিয়েন ]
ডাকঘর | ছবিঘর
এই পোস্টের মন্তব্য হিসেবে অপ্রাসঙ্গিক মনে হতে পারে, তবু একটা জিনিস জানতে চাই মেধাবী বাঙ্গালীদের কাছ থেকে। মেধা বিক্রি হয়ে যাচ্ছে বাইরে এরকম কথা আমরা সবাই অনেক আগে থেকে শুনে আসছি। মেধাবীরা দেশে থাকলে দেশের কতটুকু লাভ হত? নাকি তা হত মেধার নির্ভেজাল অপচয়? আমি মেধাবী না, দেশপ্রেমিক ও না সে অর্থে। প্রবাসী মেধাবী লোকজন যাদের দেশ নিয়ে আন্তরিকতা বুঝতে পারি তাদের কাছে জানতে ইচ্ছা হয়, আসলে তাঁরা কি ভাবছেন? দেশে থেকে দেশের জন্য করতে না পারাটা তাঁদের কি পোড়ায়? বেশ কিছুদিন যারা দেশের বাইরে আছেন এতদিনে নিশ্চয়ই একটা স্বচ্ছ ধারণা জন্মে গেছে। কেউ যদি পোস্ট পাঠান এ বিষয়ে খুশি হব।
অনেকবার ইচ্ছে হয়েছিল, মন্তব্য করা হয়ে উঠেনি। শেষ পর্যন্ত মন্তব্য করলাম।
মুল লেখা নিয়ে কোন মন্তব্য করব না, কারণ স্বেচ্ছায় জন্মভূমি ছাড়ার মত পরিস্থিতিতে কখনও বা এখনও পড়েনি – পড়লে লেখাটার ‘মেরিট’ নিয়ে চিন্তা ভাবনা করা যাবে। তবে আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধুটি, যে হয়ত দেশে সুবিধাভুগীদের টপ ১% মধ্যে আছে, সে যখন সব ছেড়েছুড়ে বিদেশের অনিশ্চিত জীবনের দিকে পা বাড়াচ্ছে, তখন মনে হয় জন্মভূমি ছাড়ার সিদ্ধান্তটা ‘পরিস্থিতির’ মত সরল সমকরণ না।
তবে কয়টা ব্যাপার ক্লিয়ার করা উচিত – আমাদের দেশে সবার জন্য সরকারি প্রাথমিক শিক্ষা বিনামূল্যে নিশ্চিতকরণের ব্যবস্থা আছে। সবার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না, সেটা সব সময় সিস্টেমের দোষ না, পিতা-মাতার ইচ্ছা/অনিচ্ছা অনেকাংশে দায়ী। তবে যেটা বড় কথা ‘আনলাইক ডেভেলপড কান্ট্রিজ’ আমাদের দেশে ন্যূনতম মূল্যে উচ্চ শিক্ষারও ব্যবস্থা আছে, এবং দেশের ট্যাক্স-পেয়াররা এর জন্য মূল্য দিতে প্রস্তুত। হ্যা, জনবহুল এই দেশে সবার জন্য উচ্চতর শিক্ষা এই ন্যূনতম মূল্যে দেয়া সম্ভব না।
স্বীকার করি, আমাদের দেশে বাক-স্বাধীনতা মাঝেই মাঝেই হাস্যকর ভাবে দমনের চেষ্টা হয়। তবে স্বপ্নের দেশ সিংগাপুর/মালয়শিয়ার বাক-স্বাধীনতা নিয়ে কখনও কিছু আলোচনা দেখলাম না। নাকি ‘অদৃশ্য সরকার’ সুবিধাদি নিশ্চিত করলে ‘বাক-স্বাধীনতার’ কনসেপ্টটা গৌণ হয়ে যায়। কী জানি।
যেহেতু ‘লাইক’ বাটন নেই, এই মন্তব্যের মাধ্যমে অনার্য সঙ্গীতকে তার চমৎকার, ম্যাচিওর এবং আর্টিক্যুলেট চিন্তাভাবনার জন্য ধন্যবাদ জনিয়ে গেলাম।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
সবার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না, সেটা সব সময় সিস্টেমের দোষ না, পিতা-মাতার ইচ্ছা/অনিচ্ছা অনেকাংশে দায়ী
বাংলাদেশের কতভাগ শিশু পিতামাতার ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যলয়ে পড়তে পারেনা আর কতভাগ পিতা-মাতার অনিচ্ছার জন্য দায়ী, একটু বলবেন কি? পিতামাতার অনিচ্ছা কি শুধুই অনিচ্ছা! "আমাদের পোলা-মাইয়ারে পড়ামু না; কোন কারন নাই", না এই "না"র পেছনেও অনেক কারন লুকিয়ে আছে?
আমি তো দেখি প্রথম-ভাগের সংখ্যা দ্বিতীয় অংশের চেয়ে অনেক বেশি।আপনার হাতে প্রমান থাকলে দাখিল করতে পারেন।
তবে স্বপ্নের দেশ সিংগাপুর/মালয়শিয়ার বাক-স্বাধীনতা নিয়ে কখনও কিছু আলোচনা দেখলাম না।
স্বপ্নের দেশ মালয়েশিয়ার (সিংগাপুর বলতে পারবোনা) বাক-স্বাধিনতা অনেক আলোচনা হয়।সেটা সেদেশের নাগরিকরা করে।আমার মালয়েশিয়ান কলিগ আছে।মালয়েশিয়ার সরকারের বৈষম্যমূলক নীতি, দূর্ণীতি সব নিয়াই আলোচনা করে।আপনি শুনতে চাইলে রেকর্ড করে পাঠাতে পারি।
"অনিশ্চিত"
অনেকেই আপনার লেখার বিভিন্ন প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলেছেন আপনার আপত্তি না থাকলে উপরের কথা গুলো একটু বিস্তারিত জানতে চাচ্ছি, যেমন:
১. এখানে "তাঁরা" আসলে কারা? কি ধরনের বাস্তব অসুবিধার কারণে আগে মিশেছে কিন্তু এখন আর মিশছেন না?
২. কি ধরনের সাহায্যের জন্য আপনারা এগিয়ে গিয়েছেন? আর এখানে "আমরা" বলতে আসলে কারা?
৩. পার্থক্যের দেয়াল তোলার কি কি কারণ আপনার কাছে মনে হয়েছে?
৪. এখানে তথাকথিত ইঞ্জিনিয়ার গ্রুপ কি ধরনের বিপরীত আচরণ সাধারণত করে?
এটা অনস্বীকার্য প্রবাসে বাঙালিদের অনেক গাল-গপ্প শোনা যায়, জোর যার মুল্লুক তার... তাই প্রায় সময়ই একধরনের কথাই বাজারে বেশি প্রচারিত হয়। তাই প্রসঙ্গ যেহেতু উঠেছে আপনার কাছ থেকে আরেকটু বিস্তারিত কিন্তু সত্যই সত ভাষণ শুনতে চাচ্ছি!
১
এখানে তাঁরা হচ্ছে যারা উচ্চ শিক্ষিত বা সে উদ্দেশ্য জার্মানিতে এসেছেন। অসুবিধা বহু বিধ। ধরেন কেউ দেশে ফোন করবে। মোবাইল থেকে সস্তায় করা যাচ্ছে না। ল্যান্ড ফোন দরকার। বাংলা খাবার কোথায় পাওয়া যায়। প্রথম দিকে যারা এসেছেন, তাদের এ ধরণের সমস্যা ছিল। সাময়ীক ভাবে কারো আবাশিক সমস্যা ছিল। এধরণের আরো কিছু থাকতে পারে এখন মাথায় আসছে না।
২
আমরা হচ্ছি ইউরোপে এসাইলাম সীকার। সমস্যা যা বলেছি, তার সমাধানে আমরা এগিয়ে গিয়েছি। একটা ফোন ব্যাবহার করতে দিলে তো জ্ঞতি নেই। কাউকে সাময়িক ভাবে থাকতে দিয়েছি। থাকতে দিলে তো খেতে দিতেই হয়। অবশ্য সময়টা মন্দ কাটে নি।
৩
সব কারণ আমার পক্ষে বলা কঠিন। একই ঘটনা বা সমস্যা একেক জনের কাছে একেক রকম। শুধু মোটা দাগে বলতে পারি> তাদের (যারা উচ্চ শিক্ষিত) শিক্ষা এবং আমাদের অশিক্ষা বা কুশিক্ষা একটা বড় ব্যবধান এম্নিতেই তৈরী করে ফেলে।
৪
বিস্তারিত বলা কঠিন, সাফল্য বা বিরাট অর্জন মানুষের কাছে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস আনার সাথে, পার্শ প্রতিক্রিয়ার মতো কিছু আহংকারও এনে দেয়। সেটা সবাই ম্যানেজ করতে পারে না। অনেক বুদ্ধিমান মানুষ যা করে আর কী, হাই হ্যালোর বাইরে কথাবার্তা এগোয় না।
একজন জার্মান অনেক সময় তাদের থেকে বেশী আন্তরিক এবং বিনয়ী হয়।
আপনার আগ্রহের জন্য ধন্যবাদ। আসলে এই পোস্টটা লেখাই আমার উচিত হয়নি। তারপর কথার পিঠে কথা বলে তর্ক করা আমি পারিও না পছন্দও করি না। এধরণের আলোচনায় সত্যের চেয়ে তর্কটা বেশী গুরুত্ব পায়। সেই জন্যেই এই পোস্টে কোন মন্তব্য করতে উৎসাহ পাই নি। যার জন্য আপনার প্রশ্নগুলোর উত্তরও দেয়া হয়নি।
ভাল থাকবেন সব সময়।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
পশ্চিমা দেশ নিজেদের কৃষিতে ভর্তুকি দেয় আর আমদের হাত-পা বেধে দেয় ঋণ দেয়ার সময়, কথাটা সত্য তবে এই কারনেই যে পৃথিবীতে খাদ্যের দাম সব যায়গায় সমান এই সরলীকরণ, আপনার ফ্রাস্টেশনের প্রতি সন্মান রেখেও বলতে হচ্ছে, হাস্যকর!
আমাদের দেশে খাদ্যের দাম কিন্তু উৎসে এখনো কম, অনেক-অনেক কম। ৮০ টাকা মনের বেগুন ঢাকায় আসতে- আসতে ১০০ টাকা কেজি হয়ে যায়, এখানে কিন্তু আম্রিকা আর ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি পথে-পথে ট্যাক্স নিচ্ছে না। নির্বাচিত এবং মিলিটারি সরকার স্বীকার করে নিয়েও গুটিকয় মজুতদারকে কিছুই করতে পারেনি, এইটা কি বিশ্বাসযোগ্য? যদি বিশ্বাস করতেই হয় তবে চলে আসে দ্বিতীয় প্রশ্ন, এই গুটিকয় মজুতদারদের হাত তবে কত লম্বা? নিঃশ্চই এত লম্বা হবে না যে বরিশাল থেকে ধান নিয়ে রওনা দেবার সময় ওবামাকে ফোন করে পাচ টাকা দামের চাল ৪৫ টাকা ক রিয়ে নেবে। ইয়োরোপ-আমেরিকা কিংবা জাপানে কৃষককে কি কখনো ঘুষ দিতে হয় শুনেছেন? গত তিরিশ-চল্লিশ বছরে এইসব দেশে এমন কোন সরকার কি নির্বাচিত হয়েছে যারা কৃষক অবান্ধব কোন বিল পাস করিয়েছে বা করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে পেরেছে?
পশ্চিমা দেশ নিজেদের কৃষিতে ভর্তুকি আর আমদের হাত-পা বেধে দেয় ঋণ দেয়ার সময়, এই কথা ধ্রব সত্য। ভর্তুকি লাগবে না রে ভাই, খালি সূদ-মহাজন, জোতদার, মজুতদার আর কিছু-কিছু পলিটিশিয়ানদের থেকে কৃষককে বাচাতে পারলেই খাদ্যের দাম অনেকটাই কমে যাবে।
ইংলন্ডে নিয়মিত একটা কথা শুনতাম কেন বেনিফট ফ্রড আর ব্রিটিশ ব্যাঙ্কের টাকা মেরে দেয়া যায়েজ; এদের “অকাট্য” যুক্তি আপনার দেয়া যুক্তির হুবুহু কপি- এরা আমদের শোষন করেছে এই টাকা সেই টাকা; এদের ঐশ্বর্য্য আমাদের ঐশ্বর্য্য কারন এরা এখনো আমাদের শোষন করে, ইত্যাদি-ইত্যাদি। এই তর্কে যেতে চাইনা, কিন্তু একটা যুক্তি তর্কে যেতে চাইছি ভাই আর সেটা হল বেকার ভাতা, মন্ত্রীর বেতন কতটা উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে আসে আমি জানি না, তবে বিনয়ের সাথে আপনার কাছ থেকে জানতে চাইছি (আপনার জ্ঞান পরীক্ষা করতে চাইছি না, প্লিজ ভুল বুঝবেন না) আপনি কি আসলেই জানেন বেকার ভাতা-গরীবভাতা আর পেনশনের টাকা উন্নত দেশগুলো কোথা থেকে আসে? আমার মত ফুডবারের ওয়েটারও মাস গেলে শত-শত পাউন্ড ডিয়ারেক্ট ট্যাক্স হিসেবে দিয়েছি; পেনশনের জন্যে প্রতিমাসে কন্ট্রিবিউট করেছি; আমাদের পেনশনের টাকা আইসল্যান্ড ব্যাঙ্ক লোকসান করার পর চোখে-মুখে অন্ধকার দেখেছি কিছুদিন। সুতরাং এই বিষয়ে জানার আমার আগ্রহটা একটু বেশিই বলতে পারেন।
মালয়শিয়া-ইন্দোনেশিয়া, এমনকি মরিশাসের মত চোখে দেখা যায়না দেশও এগিয়ে যাচ্ছে আর আমরা নিজেরা-নিজেরা মারামারি করে তিনশ টাকা করে চা আর ৭৫ টাকা করে চুইংগাম খেয়ে-খেয়ে দেশকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছি? বিদেশে থাকি সেই সঙ্কোচে যেচে অনেক সময় কিছু বলতে পারিনা কারন জানি প্রথম গালিটাই হবে “বিদেশ থেকে এমন ডায়লগ অনেকেই দিতে পারে, দেশে আয় ব্যাটা দেশে এসে ডায়লগ দে”-তাই চুপ করে থাকি। কিন্তু বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি গত প্রায় ১২ বছরে যতটা বাঙালি এবং অবাঙ্গালি অনুষ্ঠানে গিয়েছি নিজের দেশকে প্রোমোট করেছি, দেখানে যতদিন বাংলাদেশকে কেউ “গরীব দেশ” বলেছে বিনয়ের সাথে তাদেরকে শুধরে দিয়ে বলেছি আমার দেশ “Economically poor” or “economically poorly performing country” আর সব কিছুতেই আমরা ধনী। আমার মধ্যে স্যু ডেভিস নামে এক ইংলিশ মহিলা এই গর্বের বীজ ঢুকিয়েছিলেন ক্লাস সেভেন-এ পড়ার সময়-“ Bangladesh is not a poor country my friend, never say this again; Bangladesh might be an economically poor country but in every other respect you’re more resourceful than most of the European countries”. জীবনে এক মুহুর্তের জন্যেও ভুলিনি স্যু’র কথাগুল্ম।
বাধ্য না হলে দেশ ছেড়ে আসতাম না আমিও আর যারা সত্যিকারের বিপদে পরে এ্যাসাইলাম চায় তাদের ব্যাপারে আমার কিছুই বলার নেই। তবে যারা “better life”-এর লোভে দেশকে বেচে তাদেরকে আমি বলব শুয়োরটইপ নব্য রাজাকার! চাকরীর আইনি চুক্তির কারনে লিখতে পারছি না , কিন্তু বাংলাদেশের নামে যে জঘন্য কথাগুলো কিছু-কিছু এ্যাসাইলামসিকার আর মিথ্যা রেসিডেন্সি এ্যাপ্লিকেন্টরা কাগজে লিখে দেয় সেটা নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করতে পারবেন না। দিনে-দুপুরে দেশকে ধর্ষন করার মত জঘন্য। এদের মধ্যে দেশের প্রতি কোনরকম শ্রদ্ধাতো দুরের কথা বিন্দুমাত্র কোন মমতা থাকলেও অন্তত এধরনের কথা বলতে পারত না। এই টাইপের এক এ্যাসাইলাম সিকারকে একবার প্রশ্র করেছিলাম দেশের প্রতি এতগুলো খারাপ কথা প্রমান (?) সহ দেয়ার কি আসলেই দরকার ছিল? বিজ্ঞ ব্যাক্তিটি জবাব দিয়েছিলেন তিনি কোন রিস্ক দিতে চাননি তাই একবারেই বেশি করে লিখে দিয়েছেন কারন ঐসব (!) লেখা থাকার পরও ব্রিটিশ জাজ রিফিউজ করলেও ইয়োরোপিয়ান হিউমেন রাইটস ল’তে তিনি জিতে যাবেনই এই মামলা!!!
আপনি রেগুলার পোস্ট দেন না কেন?
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
শহুরে আলস্যতা আমাকে সব সময় ব্যাস্ত রাখে হয়ত তাই............তার উপর আপনাদের মত স্বতঃফুর্তভাবে লিখতে পারি না, অনেক ধাক্কাতে হয় নিজেকে সেটাও একটা অযুহাত।
@মির্জা
নতুন মন্তব্য করুন