বড় অক্ষরে সেক্স সপ লেখাটা দেখেছি অনেকবার। আগ্রহ বা কৌতূহল যাই বলি না কেন সেটা আমার ছিল। কিন্তু কখনো যাওয়ার সুযোগ হয়ে উঠেনি। যখন সময় ছিল তখন পয়সা ছিল না। এই কাজে ব্যয় করার মত পয়সা এখনোও নাই, সময় তো নাইই। কিন্তু সোনিয়ার সাথে পরিচয়টা যদি কখনো হৃদয়কে উরুর ফাঁকে নামিয়ে আনে! তার প্রস্তুতি হিসাবেই আজ সোমবারের ছুটিটা এই মহৎ কাজে ব্যায় করার সিন্ধান্ত নিলাম। দরজা ফাঁক করে ভেতরে উঁকি দিতেই বেশ হাঁসি খুশী মুখ নিয়ে সাদর অভ্যর্থনা জানাল, মাঝ বয়সী দোকানদার। জার্মানিতে এমন করে এই ভদ্রলোকই প্রথম এমন সাদর অভ্যর্থনা জানাল। সোমবার দুপুর, দোকান একদম ফাঁকা। এই অবেলায় একজন খরিদ্দার এসেছে, বনির ক্রেতা বলে একটু অতিরিক্ত খাতির হতেও পারে। ভিডিও কিনে বাসায় নিয়ে দেখার কোন সুযোগ নেই। পাঁচ মার্ক দিয়ে পর্ণগ্রাফি দেখার হলে ঢুকে গেলাম।
ছাত্র শিক্ষিকাকে প্রেম নিবেদন করছে। যৌনাবেদনময়ী শিক্ষিকাকে কাল ফ্রেমের চশমা পরিয়ে একটু সিরিয়াস ভাব আনারন চেষ্টা মাঠে মারা গেল। সার্টের বোতম ফেটে স্তনযুগল বের হয়ে যেতে পারে এমন অবস্থায় চোখে কী আছে সেটা সুঠাম দেহী ছাত্রের আগ্রহের বিষয় না। শুরুটা তার পরেও ভালই লাগল। কোন প্রকার রোমান্সের সুযোগ না দিয়ে একশন শুরু হয়ে গেল অপ্রত্যাশিত ভাবে অতিদ্রুত। দেহ পসরাণিদের প্রতি এক ধরণের সহানূভূতি আমার সব সময়ই ছিল। হয়তো তাদের পরিস্থিতি এমন যে; দেহ বিক্রি ছাড়া তাদের সামনে জিবীকার্যনের আর কোন উপায় নেই। হয়তো সে জন্যই পায়ূ কামের দৃশ্যটা উপভোগ্য হল না। হয়তো মেয়েটার কষ্ট হচ্ছিল, কিন্তু আমরা দেখতে চাই বলে; সে পায়ূকামে বাধ্য হয়েছে। সব চেয়ে বিরক্তিকর হচ্ছে বীর্য স্খলনটা। মেয়েটির হা করা মূখে প্রস্রাবের মতো ছড়িয়ে গেল ছেলেটির স্খলিত বীর্য।
সত্যি বলতে কী; সোনিয়ার সাথে আমার যৌন সম্পর্ক কল্পনা করে ভালই লাগছিল। অস্বস্তি হচ্ছিল পায়ূ কাম আর বীর্যস্খলনের দৃশ্যে। ভয় হচ্ছিল ঐ ছাত্রের শারিরীক কাঠামো দেখে। ঐ ছেলেরমতো পেশী বহুল শরীর সারা জীবন সাধনা করেও বানাতে পারব না। আর ঐ শিক্ষিকার মতো শরীরও সোনিয়ার কখনো হবে না। সব চেয়ে ভয় পেয়েছি; সঙ্গমের সময়টা দেখে। এতক্ষণ, এত আসনে সঙ্গম করা আমার পক্ষে কখনো সম্ভব হবে না। বের হলাম একটা অদ্ভূত অনুভূতি নিয়ে। সময় এবং টাকা তো গেলই, উপরি পাওনা হল ভয়টা। প্রায় ৪৫ মিনিট সঙ্গম করেছে ঐ যুগল। এইটা যদি ইউরূপে রমনের ষ্ট্যাণ্ডারড স্থায়ীত্ব হয়; তা হলে সোনিয়া প্রথম বারেই আমাকে ধজভঙ্গ বলে ঝাটিয়ে বিদেয় করবে। যন্ত্রপাতির আকার আয়তনের কথা বাদই দিলাম।
বের হয়ে একটু আগালেই হাতের বাঁয়ে বিশাল একটা পার্ক। লাল নূড়ি পাথর বেছানো পায়ে চলার পথে। সবুজ ঘাসের গলিচায় সাদা রঙ্গের ফুল বড় বড় বৃক্ষের নীচে। গাছের পাতা গুলো লালচে কুড়িঁর মত প্যাচানো মোচর থেকে বের হচ্ছে কেবল। কিছু পাতা এরই মধ্যে হল্কা সবুজ। যার জন্য ভেতরের ছোটপাতা গুলো ফুল মনে হয়। ইচ্ছে করে কোন প্রিয় মানুষের হাত ধরে হাঁটি এই পথে। হাঁটতে হাঁটতে একটু ঢালু রাস্তা ধরে নীচে নেমে দেখি গাড়ি চলার পাঁকা রাস্তায় চলে এসেছি। এঁকে বেঁকে আর একটু গেলেই বিশাল বিশাল গোলাপ ফুল আঁকা বাড়িটা। সেখানেই মাহবুব ভাইয়ের বাসা। যেতে ইচ্ছে করে। কিন্তু সময় হয় না, সময় মতো। মাহবুব ভাই ছুটি কাটান শনি রবি। সে দু’দিন আমার কাজ সব চেয়ে বেশী। অনেক দিন হল দেখা হয় না।
যাদের সাথে কাজের জন্য সব চেয়ে বেশী যোগাযোগ তারা সবাই খুব খাঁটি মুসলমান। মাহবুব ভাই নাস্তিক। নাস্তিক হলেও হয়তো এত বেশী সমস্যা হতনা, যতটা হয় মাহবুব ভাই হালাল হারাম বাছেন না বলে। হালাল হারামও হয়তো মেনে নেয়া যায়। কারণ এখানে ইসলামী তরিকায় পশু-পাখি জবাই করা হয় না। নিজে জিবীত পশু কিনে এনে জবাই করার পারমিশন নাই। কাজেই সবাই ফ্রোজেন মুরগী জার্মান সুপার মার্কেট থেকেই কিনে খায়। মাহবুব ভাই শুকরের মাংসও খায়। এটাই বোধ হয় তাঁর বিরোদ্ধে অন্যসব বাঙ্গালীদের সব চেয়ে জোড়ালো অভিযোগ। চুনু ভাই, লিচু ভাই, তাওহীদ ভাই সহ লণ্ডন থেকে আত্মীয় বা পরিচিত কারো কন্যা এখানে আনিয়ে বিয়ে করে জার্মানে স্থায়ি হয়েছেন। লণ্ডনী বিয়ে করেছেন; এই ধরণের একটু গর্ব তাদের আছে। আর আছে ঈমানের জোর।
এখন মানুষ কী শুনলে খুসী হবে; সেটা মাহবুব ভাই বুঝতে পারেন না। তাঁর গল্পে-কথায় প্রায় সব সময় মুক্তিযুদ্ধ আর রাজনীতি এসে পরে মুদ্রা দোষের মতো। মুক্তিযুদ্ধ প্রসঙ্গে আমার অভিজ্ঞতায় বিরক্ত হয় দুই ধরণের মানুষ। প্রথম দলে রাজাকার বংশীয়। দ্বিতীয় দলে ঐ সময় যুদ্ধে যাওয়ার বয়স হয়েও পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন ব্যাথিত-ক্ষুব্ধ-বিরক্ত হতে পারেন এই ভয়ে যুদ্ধে না যাওয়া যুবক শ্রেনী।
মুক্তিযুদ্ধের মতো একটা বিরাট অর্জন আসলে জাতি হিসাবে আমাদের বীরত্বের সবশ্রেষ্ঠ অহংকার। ধর্মে মতিগতি আমার কখনো ছিল না। অনেকটা স্বাধীন ভাবেই চিন্তা করে বুঝতে পেরেছি যে; ধর্মে সব কিছু যে ভাবে লেখা আছে, সব কিছু ঠিক সে ভাবে ঘটা বা হওয়া সম্ভব না। তাই গাঁজা খাওয়ার চেয়ে ঘুস খাওয়া আমার কাছে বেশী অন্যায়। গাঁজা খেয়ে যদি কেউ শান্তি পায়, পাক না। সে তো অন্যের কোন পাঁকা ধানে মই দিচ্ছে না। কিন্তু ঘুস খেয়ে একটা সরকারী আমলা দিনকে রাত এবং রাতকে দিন করে দিচ্ছে। অথচ অবৈধ সম্পদের মালিক, যে কোন ঘুসখোর ধনি সমাজে সম্মানিত হচ্ছে। একই সাথে একজন গাঁজা খায় বলে নিন্দিত হচ্ছে।
ইসলাম ধর্মের এতো এতো ভাল কথা মেনে চললে আমাদের দেশে অত অন্যায় ঘটে কী করে! আমার মতে আমাদের দেশের সব মুসলমান ইসলামের ভাষায় মুনাফেক। বেশ-বাশে মুসলমান, কিন্তু কাজেকর্মে শয়তানকে হার মানায়। কাজেই ধর্মের মাপকাঠিতে মানুষের গুনাগুন নির্ধারণ করা একটা হাস্যকর ব্যাপার। শুধু শুকরের মাংস খায় বলে মাহবুব ভাইকে খারিজ করতে পারি না। তাঁর দোষও নিশ্চই আছে। হয়তো আমি জানিনা বলেই তাঁর প্রতি এক ধরণের আগ্রহ অনুভব করি। সমুদ্রের তীরে দাঁড়াইয়া সমুদ্রকে যতটুকু দেখা যায়; অনেকটা সে ভাবেই দেশে থাকতে কোন মুক্তিযোদ্ধাকে ডেকে তাদের অভিজ্ঞতার কথা জানার আগ্রহ কখনো হয় নি। কাজটা তখন অনেক সহজ ছিল। দেশে থাকতে ভাতকে মনে হতো একটা ছোট লোকের খাদ্য। অনেকদিন হয়ে গেল ভাত খাই না। দেশটাকেও খুব বিচ্ছিরি একটা জায়গা মনে হতো। অথচ এখন মনে হয় জন্মভূমিই মানের স্বর্গ। সেখানে থেকে কেউ আমাকে দেশ ছাড় কথাটা বলতে পারবে না। সেই স্বর্গেই কেবল মায়েরা সন্তানের জন্য ভাত রেধে অপেক্ষা করে। মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে মাহবুব ভাইকে আমার কাছে সেই স্বর্গের একজন দেবদূত মনে হয়।
কী করে, কী পরিস্থিতিতে যুদ্ধে যাওয়ার সিদ্ধন্ত নিল মাহবুব ভাই? বিষয়টা নিয়ে আমার যথেষ্ট কৌতূহল। কিন্তু অনেক মানুষের সামনে জানতে চাইলে ঐ প্রসংগ মাহবুব ভাই এড়িয়ে যান। জাসদ আওয়ামী লিগ বিএনপি এমন কী এরশাদ সরকার নিয়েও অনেক আলোচনা হয়। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ আসে উপমার মতো। এরশাদের দলো যোগ দেয়া এক সময়ের জাসদ নেতা আমাদের চান্দিনার এমপি রেদওয়া এবং রেদোয়ানের শালা আমাদের দাউদকান্দি জাতীয় পার্টির শাহজাহান চৌধুরী মাহবুব ভাইয়ের বন্ধু। বিষ্ময় নিয়ে তাকিয়ে থাকি, কী করে সম্ভব! তারাও মুক্তিযোদ্ধা এবং এক সময়ের জাসদ কর্মী। মাহবুব ভাইয়ের সহ পাঠী। তার পরেই কথা ঘুরে যায়। চলে আসে বর্তমানের রাজনীতি।
একদিন নিরালায় তাঁর কাছে মুক্তি যুদ্ধের কথা জানতে চাইব। সোমবার দিনটা শুভ নয় মোটেই। কাজের শুরু। পরের দিনের কাজের জন্য নিজেকে তৈরী করতে হবে। মাহবুব ভাইকে কাজে যেতে হয় কোর্ট-টাই পরে। কাজেই তারও একটা প্রস্তুতি লাগে। কাপড়-চোপড় ইস্ত্রি করতে হয়। সময় মত খাইয়ে-দাইয়ে বাচ্চাদের বিছানায় দিতে হয়। সকালে ঘুম থেকে উঠতে হয় কমপক্ষে ছ’টায়। কিণ্ডার গার্টেনে যায় পার্থ। কিন্তু ভাবী পার্বনীকে রেখে যাবেন কার কাছে? তাকেও সাথে নিতে হয়। এবং তা সকাল আটটায়। চার জন মানুষের স্নান, নাস্তা, দুটো বাচ্চার কাপড় পরানো। শুনতে সহজ লাগলেও অত সহজ নয়। সাহাজ্য করার কেউ নেই। শনি রবি ভাবী কাজ করে। মাহবুব ভাই থাকেন বাচ্চাদের নিয়ে। মনে সংসারে মেয়েদের কোন ছুটি নেই।
এই সব ভাবতে ভাবতে গোলাপ ফুল আঁকা বাড়ির সামনে চলে এসেছি। বাংলা ভাষায় গালি শুনে ডান দিকে চোখ গেল। পার্থ একটা বলের পেছনে দৌড়াচ্ছে। ভাবী পেছন থেকে বকছেন। গাড়ী আসতে পারে যখন তখন। সেই জন্যই ভাবীর ব্যাকুল কণ্ঠ “বাঁদর, গাড়ী চাপা পরে মরলে, বুঝবি রাস্তায় বল নিয়ে খেলা কত ভয়ঙ্কর”। গালি শুনে হাসি এসে গেল। বাসার সামনের রাস্তা। গাড়ি-ঘোড়া তেমন একটা চলে না। চললেও আবাসিক এলাকায় সর্বোচ্চ গতিসীমা ৩০ কিমি। মেয়েদের মন একটু বেশী সাবধানী। সে জন্যই এত ব্যস্ততা। আমাকে দেখে দৌড়ে পার্থ আমার পেছনে লুকাল। বাচ্চাদের ট্রলি ঠেলতে ঠেলতে ভাবীও আমার সামনে চলে এসেছেন। হাতে মনে হয় কোন পত্রিকা। সেটাই হাতিয়ার হিসাবে উদ্যত, পার্থকে মারতে। আমাকে দেখে বা আমি ভাবীর রণরঙ্গিনী মূর্তি দেখে ফেলেছি সেই লজ্জায় বা কষ্টে তিনি হেঁসে ফেললেন।
এত চেতেন ক্যান? পুলা-পাইন একটু ছুটো-ছুটি তো করেই।
আর বইলে না, ভাই; একদম কথা শোনে না। রাস্তা-ঘাটের ব্যাপর, কখন গাড়ি আসে তার ঠিক আছে? কয়েকদিন আগে টিভিতে দেখাল; একটা বাচ্চার উপর দিয়ে তিনটা গাড়ি চলে গেছে। চতুর্থ জন ব্রেক করেছে। পুলিশ এ্যম্বুলেন্স সব এসেছে। বাচ্চাটা বেঁচে গেছে। জরিমানা হয়েছে ঐ চতুর্থ ব্যক্তির। কারণ সে নিয়ম বর্হভূত ভাবে গাড়ি থামিয়েছে। তার পেছনের গাড়ি এসে তাকে ধাক্কা দিয়েছে। এখন ঐ দূর্ঘটনার মানে গাড়ি সারানোর সব খরচ দিতে হবে যে গাড়ি থামিয়েছে তাকে। কোর্ট থেকে রায় হয়ে গেছে। তারপর সেই ভদ্রলোক সাংবাদিকদের ডেকে বলেছে; এই ঘটনা। মানুষ মরলে ক্ষতি নেই, কিন্তু আইন মানতে হবে। এই হল আইনের দেশ। বলুন, এই সব শুনে ভয় লাগে না! সারাদিন কিণ্ডার গার্টেনে খেলেছে, তার পরেও খেলার সাধ মেটেনি, রাস্তায় শুরু করেছে বল নিয়ে ছুটো ছুটি। কির্ণ্ডার ভাগেন (বাচ্চাদের শুইয়ে বা বসিয়ে ঠেলে নিয়ে যাওয়ার গাড়ি) নিয়ে ওর পেছনে দৌড়াতে পারি আমি!
আমার অভিযোগের জবাবে ভাবীর কৈফিয়ৎ। যত দরিদ্রই হোক, শিশুকালটা দেশে মন্দ ছিল না। গাড়ি-ঘোড়ার ভয় ছিল না। ছিল না নিয়ম নীতির শ্বাসন। প্রসারিত সবুজ মাঠে ছুটে বেড়িয়েছি। পানিতে ডুবে যাওয়া বা ক্ষেতের নাড়া পোড়ানোর আগুনে পরে যাওয়ার বিপদ দেখলে তা করা থেকে বিরত থাকার শ্বাসন এবং পরে গেলে উদ্ধারের জন্য পাড়ার ফুপু-খালা-চাচা-চাচীরা যথেষ্ট ছিল। কিন্তু এখানে এই সর্বাধুনিক নগরিক সভ্যতায় সে সুযোগ নেই। পার্থ-পার্বনীদের বাপ-মা ছাড়া আর কোন আত্মীয় নেই। বাচ্চা গুলো কয়েক সেকেণ্ডের জন্য কারো জিম্মায় রেখে কোথাও যাওয়ার সুযোগ নেই। তবুও পার্থ-পার্বনীর সৌভাগ্য যে; এই বাড়িতে সব প্রতেবেশী বিদেশীদের প্রতি সহানূভূতিশীল। আমাদের শহর প্রদক্ষিণের পথ প্রদর্শক টমিও এই বাড়ীতে থাকে। এবং বাড়ির গোলাপ ফুলগুলো ও এঁকেছে। ইয়াকুব নামে ওর একটি ছেলে আছে পার্বনীর বয়সী। উপরে থাকে মার্টিনা। তারও পার্বনীর বয়সী একটি ছেলে আছে। ছেলেটির নাম ফেলিক্স। কিন্তু দেখতে যে কোন বাঙ্গালী শিশুর মতো। আমাদের আগে জার্মানে আসা কিছু বাঙ্গালী সরকারের কাছ থেকে দেশ ছাড়ার নির্দেশ পত্র পেয়ে, আশ্রয় নিয়ে ছিল চার্চে। সেখানেই শামীম নামে এক বাঙ্গালীর সাথে পরিচয় হয় মার্টিনার। সন্তান সম্ভবা হওয়ার পর তাদের প্রেম আর আগায় নি। কিন্তু বাচ্চাটা নষ্ট করেনি মার্টি না। শামীম ভাইও জার্মানে থাকার ভিসা পেয়েছেন ছেলেটির কারণেই। কিন্তু ছেলেটির সাথে কোন যোগাযোগ করেন না তিনি। জন্মের পরে একবার দেখতেও আসেন নি। এই সব কথা প্রথম কয়েকদিনে শুনেছি। ছেলেটার জন্য মনে মনে এক ধরণের মমতা হয়। হয় তো শিশুটি কখনো জানতেও পারবে না কে তার পিতা। তো এই সব কাচ্চা-বাচ্চা নিয়ে বাড়িটি একটু সরগরমই থাকে। অভিযোগ আসে পাশের বাড়ি থেকে।
বাড়িটার পেছনে একটা ছোট বাগানের মতো আছে। আমি সেখানেই পার্থকে নিয়ে একটু খেলব। প্রস্তাবটা শুনে ভাবী খুশিই হলেন মনে হয়। আসলে আসতে চাইনি বা এদিক দিয়েই যাচ্ছিলাম, দেখা হয়ে গেল এই জাতীয় ভদ্রতাটা করা হল না।এক সময় ভাবী ডাকল। বাসায় ঢুকে দেখি মাহবুব ভাই ফিরেছেন অফিস থেকে। খাওয়া-দাওয়ার পর মাহবুব ভাই জিজ্ঞেস করলেন; বিয়ার খাবেন, না ওয়াইন? বিয়ার তো প্রতিদিনই খাই। আজ একটু ওয়াইনই চলুক। বাঙ্গালী কায়দায় চিয়ার্স করলাম। দিনকাল কেমন চলছে? জিজ্ঞেস করলেন মাহবুব ভাই। এর মধ্যে বাচ্চারা ঘুমিয়ে পরেছে। ভাবী এসে বসেছেন পাসে।
মাহবুব ভাই, একটা কথা সব সময় জানতে চাই আপনার কাছে, কিন্তু কখনো ঠিক সুযোগ হয়ে উঠে না। কী ভাবে মুক্তিযুদ্ধে গেলেন, এই গল্পটাপ শুনতে চাই আজকে।
প্রশ্ন শুনে মাহবুব হা হা করে হেঁসে উঠলৈন। যেন এর চেয়ে হাস্যকর আর কিছুই হতে পারে না। একটু পরে শান্ত হয়ে বললেন; শুনেন কায়সার, আমরা মুক্তিযুদ্ধে কী করেছি কেন করেছি, সেটা আজকের মানুষ কেন শুনতে চাইবে, বলুন।
দেশে থাকতে আমিও কখনো শুনতে চাইনি। মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে আমরা স্বাধীন হয়েছি সেটাই যথেষ্ট। উপরি গালিও দিয়েছি তথা কথিত স্বাশীনতার পক্ষের শক্তিকে। দেশ স্বাধীন করে, স্বাধীন ভাবে বাঁচার উপায় রাখলে না কেন? সেটাই মাহবুব ভাইকে বললাম অকপটে।
আমি আপনার কথা বেশ ভাল ভাবেই বুঝতে পারি। মানুষ এখন বাঁচতে চায়। একদিন আমাদের গোলা ভরা ধান, পুকুর ভরা মাছ ছিল। এই গল্প শুনে এখন যে ক্ষুধার্থ তার পেট ভরবে?
ভাবী একটু বিরত্কই হচ্ছিলেন মাহবুব ভাইয়ের তাচ্ছিল্যে। হয়তহো সেটাই প্রকাশ করতে বললেন; এত কথা না বলে বল না, ও শুনতে চাইছে। আমার দিকে ফিরে ভাবী বললেন জানেন; আমিও কখনো ভাল করে শুনিনি।
বাবা গিয়েছিলেন আমার হয়ে আমার জন্য প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট আনতে। ফিরে এসে আমাকে ফোন করে বলেছেন; বাবু (মাহবুব ভাইয়ের ডাক নাম) ওরা তো পঞ্চাশ হাজার টাকা চাইছে, তোর মুক্তিযোদ্ধার সার্টফিকেটের জন্য।
আমি বলেছি বাবা; আমি যুদ্ধে গেসলাম কোন সার্টফিকেটের জন্য না। দেশে থাকতে পারি নি বলে। গিয়েছিলাম দেশ স্বাধীন হয়ে গেছে। ভাল লাগে, ঠিক সময়ে ঠিক কাজ করেছিলম বলে। বাবাকে বলে দিলাম; তুমি আর এদের কাছে যাবে না। আমার সার্টিফিকেট লাগবে না।
এরশাদের পরে তখন বিএনপি ক্ষমতায়। যারা এদেশে রাজাকারদের প্রতিষ্ঠত করেছে তারাই মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত সনদ পত্র দিচ্ছে। সত্যিই বিচিত্র আমাদের দেশ।
এরপরে আসলে কথা বলা কঠিন। চুপ করে রইলাম। একটু পরে মাহবুব নিজেই বলতে লাগলেন;
কারমাইকেল কলেজে পরি ইন্টারম্যাটিয়েট সেকেণ্ড ইয়ারে উঠেছি। মুক্তির সংগ্রাম শুরু হয়ে গেছে আসলে ৭ই মার্চের ভাষণের পরেই। মিটিং-মিছিল একদিকে, ধর-পকর, গোলাগুলি অন্যদিকে। দেশের পরিস্থিতি খারাপ দেখে বাবা টেলিগ্রাম করেছে মার শরীর খারাপ এই খবর দিয়ে। আন্দাজ করছিলাম যে, আমাকে বাড়ি নিয়ে নিরাপদে রাখাই এই টেলিগ্রামের উদ্দেশ্য। কিন্তু মার কথা শুনে কী আর থাকা যায়। আমি রংপুর থেকে বাড়ি গেলাম। ২৬ মার্চের আগেই। মার শরীর ভাল দেখে বাবার উপর বিরক্ত হলাম।
এর মাঝে খবর পেলাম আমাদের একটা দল ব্যাংক ডাকাতি করে সব টাকা পয়সা নিয়ে ইণ্ডিয়া চলে গেছে। আমি যুদ্ধে যাব, সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম। মা মনে হয় টের পেয়ে গেছে; কাপড়-চোপড় মানে প্যান্ট-শার্ট সরিয়ে কোথায় যেন রেখেছে। যাতে বাইরে যেতে না পারি। একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে বাড়ির সামনে নদীর দিকে যাচ্ছি, দেখি মা আমার আগেই ওখানে।এক টুকরো পিঁড়ির মত কাঠ, ছিদ্র করে বাঁশের হাতল লাগিয়ে ধান ছড়ায় এবং শুকিয়ে গেলে স্তুপ করে জানিনা আপনাদের এলাকায় কি বলে, আমাদের দেশে বলে পাওড়া; ওটা দিয়ে মা নদীর পানিতে কী যেন ঠেলছে। আমি এগিয়ে আসছি দেখে মা চীৎকার করছে; বাবু তুই আসিস না এখানে। না শুনে আমার কৌতুহল আরো বেড়ে গেল। গিয়ে দেখি মেয়েদের লাশ সরিয়ে গভীর পানিতে ভাসিয়ে দিচ্ছেন মা। কয়টা লাশ ঠিক মনে নেই; কিন্তু আট-দশটা হবে হয়তো। মা বিব্রত হচ্ছিলেন পানিতে চীৎ হয়ে ভেসে থাকা মেয়েদের নগ্ন মর দেহ গুলো আমি দেখে ফেলেছি বলে।
এই হত্যার এই অণ্যায়ের প্রতিবাদ করা কোন বীরত্ব নয়, কোন কিছু বদলানোর মতো বিপ্লব নয়, এইটা হচ্ছে মানুষ হিসাবে মানুষের সর্ব নিম্ন প্রতিক্রিয়া। প্রতিপক্ষ এত নিষ্ঠুর হলে আপনি ঠিক এতটাই নিষ্ঠুর হবেন। মিটিং, মিছিল, শ্রোগানের মতো সভ্য প্রতিবাদের প্রতিদান হল, এতগুলো নীরিহ মানুষের লাশ। তাদের মধ্যে আবার মেয়েও আছে। এই দৃশ্য দেখে যার মাথা ঠাণ্ডা থাকে তিনি মহা মানব। আমি মহা মানব ছিলাম না। বাবার লুঙ্গি আর পুরানো পাঞ্জবী পরে মা-র মুরগীর ঠিম আর বাগানের ফল বিক্রির পয়সার মাটির ব্যাংক নিয়ে সে রাতেই পালিয়ে গেছি।
শুনেছি পরের দিন বাবা আমার চাচাকে রামদা নিয়ে মারতে গেসে। তুই বাবুকে যুদ্ধে পাঠিয়েছিস। আমার ছেলেকে এনে দে নাইলে এই দা দিয়ে তোকে টুকরো টুকরো করে ফেলব। পরের দিন চাচার সাথে রানা ঘাটে দেখা। তোর বাপ আমাকে পাঠিয়েছে; বাড়ি চল বাবু। নইলে তোর বাপ আমাকে মেরে ফেলেবে। আমি বললাম; প্রাণে বাঁচতে চাইলে আমার সাথে যুদ্ধে চল।
ট্রেনিং নিয়ে দেশে এসে বাড়ি আর গেলাম না। গেলাম মামার বাড়ি। যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে পর্ণূ উদ্যমে। মামাও মুক্তিযোদ্ধা। নিরাপদ ভেবে বাড়ি গিয়েছেন। আমি আছি সাথে। মামাদের যথেষ্ট প্রভাব প্রতিপত্তি এলাকায়। অন্তত প্রকাশ্য কোন শত্রু নেই। রাত্রে রাজাকাররা ঠিকই বাড়ি রেড দিয়েছে। মামা মৃত্যু ভয়ে থরথর করে কাঁপছে। আমি বললাম মামা তুমি পেছনে থাক। আমাকে এলাকার লোক তোমাদের ভাগ্নে হিসাবেই চেনে। আমি বেড়াতে মামার বাড়ি আসতেই পারি। তুমি অত ভয় পেওনা মামা।
বীরত্ব-টিরত্ব কিছু নারে ভাই। আফসোস হচ্ছিল শত্রুকে কোন আঘাত করার আগেই মরব। মনে হচ্ছিল জীবনের শেষ দিন। যমদূত দরজায়। মেহমান হিসাবে আমাকে ছেড়ে দিয়েছে, কিন্তু মামাকে ছাড়েনি। আমার নানা বলেছে; এক পাল্লায় আমার ছেলেকে রাখ আরেক পাল্লায় টাকা রেখে আমি দাড়ি সমান করে দেব। আমার ছেলেকে ছেড়ে দাও। কিছুতেই যখন ছাড়ল না, রাজাকাররা মামাকে জবাই করে ফেলেছে। তখন বলেছে; এক লাখ টাকা দেব আমার ছেলের লাশটা দিয়ে দাও, আমি আমার ছেলেটাকে মাটি দিতে চাই। তাও দেয় নি। মামার লাশ কুপিয়ে টুকরো টুকরো করে নদীতে ফেলে দিয়েছে রাজাকাররা।
তারাই এখন প্রকৃত মুক্তিযুদ্ধের সার্টিফিকেট দিচ্ছে। তাও আবার বিনে পয়সায় নয়। আমার বাবার কাছে পঞ্চাশ হাজার টাকা চেয়েছে।
হয়তো এই জন্যই মাহবুব ভাই মুক্তিযুদ্ধের গল্প করতে পারেন না। আবেগ, ক্ষোভ এক সাথে হয়ে বাক রোধ করে দেয়। রাত অনেক হয়েছে। আমি কিছু বলার চেষ্টা করতে সাহস পেলাম না। এখন চলে যাওয়াই ভাল মনে হল। উঠে দাঁড়াম যাওয়ার জন্য। মাহবুব ভাই বললেন; আরে এখনই যাবে নাকী, ওয়াইন শেষ করে যান। তারপর গলা একটু স্বাভাবিক করে শান্ত ভাবেই বললেন; আজ রাতে আমি আর ঘুমোতে পারব না।
মন্তব্য
ইণ্ডাস্ট্রিতে তৈরি পর্ণো ছবিগুলি বড় একটা ক্ষতি করছে যৌনচেতনার। লিঙ্গের আকৃতি, দীর্ঘস্থায়ী সঙ্গম, অস্বাভাবিক সুঠাম শারীরিক গঠন এই ব্যাপারগুলি যৌনতার জৈবিক চরিত্রকে আড়াল করে ফেলে। সঙ্গম তখন প্রাকৃতিক ঘটনার চাইতে অনেক বেশিকিছু হয়ে দাঁড়ায়। যৌনতা উপভোগ করতে গেলে অস্বাভাবিক "শারীরিক ক্ষমতা" থাকা অপরিহার্য এবং সেইকারণেই যৌনতা একটা এলিট বিষয়, শিক্ষিত নারীপুরুষ সবাই মিলেই বিষয়টাকে এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। এর কারণ শুধুমাত্র পর্ণো সিনেমা না হলেও অন্যতম তো বটেই। পুরুষদের আড্ডায় দেখা যায় আক্রমণাত্মক ঠাট্টা বা তাচ্ছিল্য অর্থে "তোর ধোন ছোট, তোর বউ যাইবোগা" কিংবা মেয়েদের আড্ডায় "তোর বুনি ছোট তোর বিয়া হইবো না " জাতীয় অনুশীলন। পর্ণো ছবিতে অস্বাভাবিক সঙ্গমদৃশ্য দেখে এই পুরুষতান্ত্রিক বিশ্বাসগুলি শক্তিশালী হয়। ইদানিং ইণ্ডাস্ট্রিতে বানানো পর্ণের চাইতে দৈনন্দিন জীবনের আটপৌরে যৌনদৃশ্যের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। আমার ধারণা লোকে এখন কীড বেঙ্গালার চাইতে হরিপদ কেরানির যৌনজীবনে বেশি আগ্রহী।
অজ্ঞাতবাস
মন্তব্যে উত্তম
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
'তীর্থের কাক'-এর সবগুলো পর্ব পড়া হয়নি। কিন্তু এই পর্বটা স্বয়ংসম্পূর্ণ। খুব ভাল লাগল, শেষ অংশটা মন খারাপ করা যদিও। আর পর্নের ব্যাপারে আপনার অব্জার্ভেশান/উপলব্ধি আমার সাথে মিলে গেল :D। পাঁচতারা।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
ধন্যবাদ কবি।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
আজ রাতে আমিও ঘুমোতে পারবোন, নিষ্ফলা এক আক্রোশে।
নিষ্ফল আক্রোশে!
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
"তীর্থের কাক" সিরিজটা ভালো লাগে।
...........................
Every Picture Tells a Story
আপনিও তীর্থের কাক পড়েন! শুনে ভাল লাগল।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
ডিসেম্বরে বই'টা ফাইন্যাল করে ফেলেন
আর প্রুফটা খুব ভালো করে অবশ্যই চেক করবেন
ডাকঘর | ছবিঘর
বানানের ব্যপারে আমি ভীষণ দুর্বল। ডিসেম্বরে হবে কীনা জানি না। তবে যখনই হোক বানান নিশ্চই দেখে দেবেন কেউ। থেংকু বস।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
ধন্যবাদ, ইয়ে আপনার নামটা জানালে ভাল হতো।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
পুতুল ভাই , পরলাম লেখাটা, ভালো লাগলো সাথে নিষ্ফল আক্রোশ
ধন্যবাদ বস।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
আপনার এই সিরিজটার জন্য সবসময় অপেক্ষায় থাকা হয়। পড়ি কিন্তু কমেন্ট করা হয়না, এবার করতে বাধ্য হলাম। ছুঁয়ে যাওয়া স্মৃতিচারণ, ভীষণ ভীষণ ভাবে ছুঁয়ে যাওয়া। আপনার লেখার অপেক্ষায় থাকবো তা বোধহয় না বল্লেও চলবে।
ধন্যবাদ ফারাসাত মাহমুদ আপনাকে। ভাল থাকবেন।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
সত্যিই আসাধারণ।
ধন্যবাদ পড়পর জন্য।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
নতুন মন্তব্য করুন