কী উত্তেজনা, আনন্দ, আকাশে বাতাসে! আমাদের থাকার দালানটিতে ঢুকলে মাঝখানে একটা গলি। তার দুই দিকে ছোট ছোট ঘর। বিল্ঢিংটার মাঝামাঝি জায়গায় টয়লেট-গোসলখানা ভেতরে আঙ্গিনার দিকে। তার বিপরীতে রাস্তার দিকে মুখ করে পাশাপাশি দুটো রান্নাঘর। তিনতলার রান্নাঘর থেকে নীচের রাস্তাটা বেশ ভাল করে দেখা যায়। প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে কখনো চা বানাতে বা কখনো পানি আনতে বার বার রান্নাঘরে যাচ্ছি আর উঁকি দিয়ে নীচের রাস্তায় সোনিয়ার গাড়ি খুঁজছি। অপেক্ষার মতো কঠিন কাজও আনন্দের হতে পারে এই প্রথম টের পেলাম। রাস্তার বিপরীত দিকে থামল এক সময় সোনিয়ার গাড়ি।
সিঁড়ি গুলো নামার জন্য বেশ সুবিধা জনক। রেলিং ধরে দ্রুত পা চালিয়ে সোনিয়া গাড়ি থেকে নামার আগেই পৌঁছে গেলাম গাড়ির কাছে। বুঝতে পারছি; আমাদের এই দালানের অনেক জানালায় জোড়া-জোড়া চোখ এখন আমাদের দিকে তাক করা। আমি ব্যাপারটা বেশ উপভোগ করছি। হয়তো অন্যের কাছে নিজের বিশেষ কোন গুনের বাহাদুরি দেখানোর জন্যই; সোনিয়াকে খুব কায়দা করে চুমো খেলাম। ঝলমলে রোদ নীল আকাশ। হয়তো তারও কিছু প্রভাবে বেচারি লাল হয়ে গেল।
আমার ইচ্ছে, সে এখানেই অপেক্ষা করুক। আমি উপরে গিয়ে কাপড়টা পাল্টে আসব। তাই তাকে কিছু না বলে; অপেক্ষা করতে লাগলাম। কিন্তু লাভ তেমন হল না। সে নিজে থেকেই বলল; কৈ তোমার সেই বিখ্যাত ২০৩ নম্বর ঘরটা দেখাবে না আমাকে?
উপায় নেই। আমাদের ঘর-বাড়ি সুন্দর ছিল না। তাই খুব নিকটের বন্ধু-বান্ধব না হলে কখনো স্বপ্রোণোদিত হয়ে বাড়ি আসতে বলতাম না। এখানে ব্যাপারটা তার চেয়ে কঠিন। একটা ঘরে চারজন মানুষ থাকি। এত অল্প জায়গা যে; প্রত্যেকের আলাদা খাট নেই। একটা খাটের উপর আরেকটা খাট রেখে চারজন মানুষ ঘুমাই। ঘরের মাঝখানে একটা টেবিল, তার চারদিকে চারটা চেয়ার। এখন সবাই কাজের বিরতিতে ঘরে এসেছে একটু জিরিয়ে নিয়ে আবার কাজে যাবে। সোনিয়াকে বসতে দেয়ার চেয়ারটা আনতে হবে প্রতিবেশী কোন ঘর থেকে। তাই নিয়ে একটু বিব্রত বা লজ্জিত ছিলাম।
কিন্তু এখন সোনিয়া নিজে থেকেই আগ্রহ প্রকাশ করেছে, ঘরে না নিয়ে উপায় নেই। ধীরে ধীরে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে গলিটার রান্না এবং টয়লেটের মাঝখানের জায়গায় এসে সে নাক চেপে ধরল। সব সময় এর ভেতরে থাকি বলে কখনো গন্ধটা এমন করে খেয়াল করিনি। শ’খানেক মানুষ টেলিফোন বুথের মতো একটা জায়গায় প্রস্রাব-পায়খানা করলে যেমন হওয়ার কথা, তেমনই। ইসজমায়িলী সম্পত্তির মতো; কেউ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কথাও ভাবে না। ময়লা এবং পচা ডিমের মতো দুর্গন্ধ। বেচারি নাকে হাত না দিয়ে করবেটা কী।
গলির শেষে আমাদের ঘরের দরজা খুলে দেখেও না দেখার ভাণ করে নিজেদের ভেতর গল্প করছে সবাই। প্রায় সাত-আট জন। আমি আরো একটু বিব্রত হলাম। বলা ভাল ভীতই হলাম। কিন্তু সবাই আমাদের দেশের মানুষ। হাইস্কুলে যাওয়ার সময় ক্ষেতে কাজ করার চাষিরা আমাকে দেখে গর্ব করে বলতো; যাও বাবা লেখা পড়া শিক্ষা মানুষ হও। আমরা তো চোখ থাকতেও আন্ধাই রইলাম। তাদের সেই কথায় আমার প্রতি তাদের শুভ কামনা যেমন ছিল, তেমনি গর্বও ছিল। নিজেদের একজন শিক্ষিত হচ্ছে, এই গর্ব।
আমাদের ঘরে জড়ো হওয়া মানুষগুলো হয়তো এমনই শুভ কামনা আর এক ধরণের গর্ব করছে আমাকে নিয়ে। এই আস্তানায় আমি আসার পর, এই প্রথম কোন নীল নয়না যুবতী আসল। সোনিয়া দেখি খুব একটা বিব্রত হচ্ছে না। কেমন একটা রাজ হংসীর মতো ভাব নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে আমার পাশাপাশি। সোনিয়েকে ঘরের কাছে আসতে দেখে সবাই চেয়ার ছেড়ে উঠে গেল! কয়েকজন নিজেদের ঘরে যাওয়ার জন্য পা বাড়িয়েছে।
সোনিয়া বলল; ওরা চলে যাচ্ছে কেন! আমার সাথে পরিচয় করিয়ে দাও তোমার বন্ধুদের। সবার সাথে হাত মেলাল সোনিয়া। সবাই বেশ খুসী মনে হয়। কিন্তু আমাদেরকে একটু নিরিবিলি প্রেম করতে দিয়ে কেটে পরতে চাইছে। সোনিয়া বলল; আমি এসে তোমাকে বেশ বেকায়দায় ফেলে দিলাম মনে হয়?
না সে রকম কিছু না। ওরা আমাদেরকে একটু নিরিবিলিতে অন্তরঙ্গ হতে দিতে চায়। সে বলল; তার দরকার নেই। আমি সবার সাথে কথা বলতে চাই। অন্তরঙ্গ হওয়ার বহু জায়গা এবং সময় আছে।
সেইটা বলাতে সবাই আরো খুসী হল কিন্তু কেউ আর কথা বলতে আগ্রহী হল না। সোনিয়াকে বললাম; কেউ তেমন ভাল জার্মান বা ইংরেজী জানে না। ও বলল; তাতে কী, তুমি অনুবাদ করে দেবে। সেটাই বললাম সবার উদ্দেশ্যে।
তোমরা কয় ভাই-বোন? সব চেয়ে যে পড়া-লেখা কম জানে, সেই জসিম খুব সরল প্রশ্ন করলো সোনিয়াকে।
আমার কোন বোন নেই। দুই ভাই আছে।
নে, তোর কয়াল (কপাল, ভাগ্য) খারাপ। কোন শালী নাই।
জসিমের আক্ষেপ সোনিয়াকে অনুবাদ করে দিতে হল। সোনিয়া হাসছে। এর মধ্যে ভাঙ্গা ভাঙ্গা জার্মানে সবাই সোনিয়াকে এটা ওটা জিজ্ঞেস করছে। কিছু বুঝতে না পারলে উভয় পক্ষই আমার মুখের দিকে তাকাচ্ছে। প্রম্ট মাষ্টারের মতো আমি ওদের কথায় সম্ভাব্য না বোঝা শব্দ বা বাক্যের অনুবাদ করে দিচ্ছি। সোনিয়া এবার আমার কান ঠোঁটের কাছে নিয়ে ফিসফিস করে বলল; সবার জন্য একটু চা-টা কিছু করা না।
আমি হন্তদন্ত হয়ে ছুটলাম রান্না ঘরের দিকে। জসিম ব্যস্ত হয়ে গেল আমাকে ঠেকাতে। চা আমিই কইরা আনি, তুই বয় (বস)। চা খেতে খেতে সবার কাজে যাওয়ার সময় হয়ে গেল। বিদায় নিয়ে চলেও গেল।
সোনিয়া বলল; চারজন থাক এই ঘরে! এটা তো একজনের থাকার মতোও নয়। তারপর নিজে থেকেই ফয়সালা করে দিল; বিনে পয়সায় হলে ক্ষতি নেই। এখানে বাসা ভাড়া অনেক। এভাবে কিছু দিন থেকে কিছু পয়সা কড়ি জমানো মন্দ না।
বল কী! বিনে পয়সায়? তিনশ মার্ক দিতে হচ্ছে প্রতি মাসে।
হ্যাঁ, পানি-বিদ্যুৎ-ময়লা ফেলার পয়সা নিচ্ছে হয়তো। মাথাপিছু পঁচাত্তর মার্ক যদিও একটু বেশীই মনে হয় আমার কাছে। তবে এই রকম একটা ঘরের ভাড়া এমনই, এই শহরে।
তিনশ মার্ক মাথাপিছু। সেই হিসাবে এই ঘরের ভাড়া বার’শ মার্ক।
বল কী? ভীষণ অবাক হল সোনিয়া।
তা হলে তো তোমরা জনপ্রতি একটা ঘর হবে এমন চার-পাঁচ রুমের একটা ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকতে পার।
সেই অনুমতি আমাদের নেই। অবশ্য এই ব্যবস্থার সুবিধা হল; কাজ না থাকলে ভাড়া দিতে হয় না।
তারপরও! সোনিয়া ব্যাপারটা মানতে পারছে না।
বিড় বিড় করে বলল; এ বড় অন্যায়। মানুষকে এ ভাবে রাখা ঠিক না।
আমি সোনিয়ার পেছনে দাঁড়িয়ে কালো প্যান্ট সাদা সার্ট পরলাম। সাদা সার্টে সুতো দিয় কালো রং-এর ফুল, লতা, পাতা আঁকা। সার্টটা দেখে সবাই আমার পছন্দের খুব তারিফ করেছিল। আমার সব চেয়ে সুন্দর কাপড়টা পরে ওর সামনে যেতেই, ও একটু বিরক্ত ভাবে বলল; কালো কাপড় কেন পরেছ! এখন বাইরে বেশ গরম। তুমি হাফপ্যান্ট পরতে পার। সাথে একটা তোয়ালে নিলেই চলবে। এখন এতো কাপড়ের দরকার নেই।
ওর পরনে সাদার উপর হাল্কা সবুজ লালের ছাপা ম্যাক্সির মতো একটা লম্বা কামিজ পা পর্যন্ত। সেটার সাথে মিল রাখতে অন্তত সাদা সার্টটা পরেছিলাম। আর এই দেশে কমপক্ষে নব্বই ভাগ মানুষ কালো পোশাক পরে। কিছু করার নেই। সাদা টিশার্ট আর খাকী হাফপ্যান্ট পরলাম। বক পাখির পায়ের মতো আমার চিকন ঠ্যাং লুকিয়ে রাখা আর হলো না।
সোনিয়ার পাশে বসলাম। গাড়ি চলল। কথাবার্তা বা চুমোচুমি তেমন হল না। কোথায় কোন দিকে যাচ্ছে কিছুই বুঝতে পারলাম না। এক সময় গোবরের গন্ধ আসল নাকে। সামনের কালো পীচ থেকে চোখ ডানে বামে ঘুরিয়ে একটা বেড়া দেয়া জায়গায় কয়েটা ঘোড়া আবিষ্কার করলাম। দূরে দূরে কাঠের খুঁটির উপর কাঠ রেখে অনেকটা সীমানা নির্ধারণের মতো। ভেতরে ঘোড়াদের ঘাস খাওয়া বা চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকা দেখতে কোন অসুবিধা হচ্ছে না সে বেড়ার ফাঁক দিয়ে।
কালো পীচটা সাপের শরীরের মতো এঁকে বেঁকে নেমে গেছে একটা খাদের দিকে। এক সময় কালো পীচ শেষ করে ধূসর নুড়ি পাথরের উপর ধূলি উড়িয়ে জমি থেকে উঁচু দ্বীপের মতো একটা সবুজ চত্বরের সামনে থামল গাড়ি। এই উঁচু জায়গাটায় অপরিকল্পিত ভাবে কয়েকটা বড় বড় গাছ। গাছের নীচে সবুজ ঘাসের গালিচা।
ধীর পায়ে সবুজ দ্বীপে উঠে এলাম। সূর্য হেলে পরেছে পশ্চিমে। যতদূর চোখ যায় শুধু সবুজ মাঠ। গম ক্ষেত। ঘন সবুজের উঁচু গাছের সাড়ির পেছনে হয়তো কোন গৃহস্থের বাড়ি অথবা নতুন আরেক সবুজের সমুদ্র। নাম না জানা পাখির কিচির-মিচির ছাপিয়ে কানে আসছে ঘুঘু পাখির ডাক। আমাদের গ্রামের সাথে এই জায়গাটার পার্থক্য হচ্ছে; ক্ষেতের কোন আইল নেই। আর আশে-পাশে ক্ষেতে কাজ করা কোন কৃষাণ-কৃষাণী নেই। সূর্য মাথার উপড়ে থাকলে ক্ষেতের কামলারা গাছের নীচে বসে বিশ্রাম নেয়। ক্ষেত তখন একেবারে জনমানব শূন্য। সেই রকম সভ্যতা থেকে অনেক দূরে জন-মানবের কোলাহল হীন এক আদিম প্রান্তরে নিয়ে এসেছে আমাকে সোনিয়া।
গাছের নীচে কম্বল পেতে কিছু অতি প্রয়োজনীয় মালপত্রের ঝুড়িটা নামিয়ে রেখেছে কম্বলের পাশে। সোনিয়ার শরীরে একটা সূতাও নেই। একদম উলঙ্গ সে। অবশ্য কাপড় রাখার কোন প্রয়োজনও নেই। খালি গায়ে থাকলে যেটুকু গরম লাগে, কাপড় পরনে থাকলে গরম তার চেয়ে বেশী। গাড়িতে আসার সময় জানালা খোলা ছিল বলে একটু বাতাস লেগেছে গায়ে। কিন্তু এখন বাতাস নেই।
একটু হাল্কা থতমত খেলাম পর্দা হীন সোনিয়াকে আবিষ্কার করে। কিন্তু ভালও লাগল। কেমন যেন চাপা উত্তেজনা আর কৌতূহলে তন্ময় হয়ে গেলাম। জানিনা স্বর্গের হুর দেখতে কেমন হবে, কিন্তু এই স্বর্গে সোনিয়ার সোনালী চূলে ঝলমলে সূর্যের আলো তাকে সত্যিই বেশ রহস্যময়ী করে তুললো। সাত সমুদ্রের নীল যেন আরো গভীর এবং দুর্বোধ্য করে তুলেছে তার মায়াভরা দৃষ্টি। যে সম্মোহনে আগুনে ঝাপ দেয় পতঙ্গ, সেভাবেই এগিয়ে গেলাম তার কাছে। ফ্রি সেক্সের ইউরূপে সেক্স কতটা ফ্রি? কত উলঙ্গ মানুষ সাড় বেঁধে শুয়ে থাকতে দেখেছি দিঘীর কিনারে! কেউ তো অন্য কারো ভোগের উদ্দেশ্য শরীর মেলে ধরেনি। এ কী মায়ার খেলা? এই সব ভাবনা ঝড়ের সময় বিদ্যুৎ চমকানোর মতো চিন্তার আকাশে ঝিলিক দিয়ে গেলেও মরিবার তরে পাখা গজানো পিপীলিকাকে থামাতে পারল না। লোভ কিংবা ভোগের কিংবা আত্মাহুতি দেবার জন্য ব্যকুল হৃদয় ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে সোনিয়ার অথৈই অতল গভীর নীল সমুদ্র চোখের দিকে। নীপ বনের ছায়া বীথী তলে বনো ফুলের পাপড়ির ভেতর হারানোর মতো বন্দি হল আমার ঠোট সোনিয়ার সর্বগ্রাসী ঠৌঁটের ভেতর। কী এক অজানা কারণে মাঘ মাসের শিতে কেঁপে উঠল আমার শরীর।
পিছলে যাওয়ার রেশমি কোমল ত্বক তার নয়। অমসৃণ এবারো থেবড়ো নুড়ি পাথরের পথের মতোও নয়। সেখানে চাইলে আঁকড়ে ধরা যায় এমন ভরসা আছে। সোনিয়া ধীরে ধীরে বসল বিছানো কম্বলে। প্রাণের উদ্ভব যেখানে ঘটেছিল সেই ঝর্ণার উৎসমুখে এখন আমার গন্তব্য। ফ্যন্টাসীপূর্ণ হিন্দু ধর্মও দেখি লিঙ্গ পূজার বিধান রাখলেও যোনী পূজার কোন বিধান রাখে নাই। তাতে কী; প্রাণের প্রস্রবণী মা গঙ্গাকে আমার প্রণতি জানাই। সব সৃষ্টির এই পথটিকে একমাত্র তীর্থস্থান জ্ঞানে সব প্রাণীর পূজা করা উচিৎ।
সোনিয়া বলল; ধীরে বৎস ধীরে। এখনো পূজার সময় হয়নি। কী আর করা, ধৈর্যকেই ধর্ম মেনে নিলাম।
মন্তব্য
গত উইকেন্ডে আপনার পুরো সিরিজটা পড়লাম। চালিয়ে যান, সাথে আছি।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
ধন্যবাদ দিগন্তদা।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
মারাত্মক......
টানা পড়ে যাচ্ছি। এবং আশা রাখছি বইটা পড়ব আগামী বছরই
ডাকঘর | ছবিঘর
আপনার মুখে ফুলচন্দ।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
চলুক পুতুল ভাই। আপনার বর্ণনা দুর্দান্ত।
ফারাসাত
ধন্যবাদ ফারাসাত।
ইয়ে, মানে, অতিথি হিসাবে নিবন্ধন করা যায় না?
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
প্রশ্নটা বুঝিনাই পুতুল ভাই। আমিতো অতিথি হিসেবেই নিবন্ধন করেছি।
ফারাসাত
যা করলে আপনার নামের সাথে অতিথি লেখক "অতিথি লেখক ফারাসাত" আসবে। সেটা মন্তব্য করলে বা লিখলে
অটোমেটিক ভাবে আসবে। হাচল বা অতিথি যা দেরকে বলা হয় আর কী।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
আমার ধারণা একটা নির্দিষ্ট সংখ্যক পোস্ট দেয়ার পরই অতিথিরা হাচল হতে পারেন, তার আগ পর্যন্ত "অতিথি লেখক" নামেই সকল মন্তব্য আর পোস্ট দিতে হয়।
আচ্ছা আপনার এই আত্মজীবনী কোন সময়কালের?
ফারাসাত
কিছু মনে করবেন না, না জেনেই পরামর্শ দিতে গিয়েছিম
১৯৯১-১৯৯২ এর ঘটনা।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
কিছুই মনে করিনাই ভাই।
ফারাসাত
চরম ভাই চরম , অফিস এর কাজের ফাকে আপনার লেখা পরি ...আপনার লেখার এই দিকটাই সব চেয়ে ভালো লাগে যে আপনি যা লেখতে চান তা সাবলীল ভাবে কোনো ভনিতা ছাড়াই লেখেন, সামনের বই মেলার সময় দেশে যাব ভাবছি তখন কি এটা বই আকারে বেরুবার কোনো সভাবনা আছে? থাকলে বলবেন, কিনে নিয়ে আসব। এই গল্পের পটভূমি জার্মানইর কোন শহরে একটু বলবেন কি?
ধন্যবাদ জীবনযুদ্ধ।
বই বের করার ইচ্ছে আছে, এই বইমেলাই, হলে জানাব নিশ্চই।
গল্পের পটভূমি জার্মানের সর্ব দক্ষিণের ভাবারিয়া প্রদেশের ছোটাট শহর "আইগসবুর্গ"। মিউনিখে থেকে ৭০ কিলিমিটার পর্ব দক্ষিণে।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
পুতুল ভাই , আউগসবুর্গ শহর তা মনে হয় মিউনিখ এর ৭৯ কিমি উত্তর-পূর্বে, দক্ষিন-পূর্বে নয়।
সেটাই হবে বোধ হয়। জার্মানে এসে দিশা হারিয়ে ফেলেছি। এখনো উত্তর-দক্ষিন-পূর্ব-পশ্চিম চিনি না। আগে-পিছে-ডানে-বামে বলে দিশা ঠিক করি। সেটা আসবে কোন এক পর্বে। ধন্যবাদ।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
আমিও গত সপ্তাহ থেকে নতুন করে পড়া শুরু করেছি। দারুণ হচ্ছে।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
থেংকু বস।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
সুন্দর করে লিখলেন তো!!!
সবাই যদি এভাবে ভাবত!!!
--বেচারাথেরিয়াম
(নাম লিখতে ভুলে গেছিলাম আগের কমেন্টে)
থেংকু বস।
সবাই এভাবে ভাবলে দুনিয়া বেহেস্ত হয়ে যেত হয়তো। নারী নির্যাতন আর থাকতনা।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
বস বইলা লজ্জা দিয়েন না ভাই, অভিজ্ঞতা আর বয়সের মূল্য থাকবে না তাইলে।
--বেচারাথেরিয়াম
ওকে, কথার কথা আর কী, ওটা এসে পড়ে, কোলকাটার লোকেরা যেমন বলে গুরু, সে ভাবে।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
ঠিকাছে, কোলাকুলি করলাম। ধন্যবাদ সজ।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
ভালো লাগছে। লিখে যান।
ধন্যবাদ নিলয় নন্দী।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
পুরো সিরিজটা পড়লাম। অসাধারণ !!!! ^_^ চলুক।
ধন্যবাদ।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
পড়ে যাচ্ছি।
সরাসরি পূজার বিধান হয়ত নাই তবে লোকবিশ্বাসে কিছু কিছু নিদর্শন আছে। যেমন কোমরে কড়ি বাঁধা।
অজ্ঞাতবাস
কাল সুতা (দাগা) দিয়ে কোমড়ে কড়ি কিন্তু আমিও পড়েছি। ছোট বেলায় পড়া কড়ি (কোন অলোকিক ক্ষমতা সম্পন্ন লোকের কাছ থেকে জোগাড় করেছিলন মা) পরাপর চল অন্ত আমি দেখেছি। এর সঙ্গে পুজার কোন যোগ বিয়োগ আমনার কাছে শুনলাম।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
শিবলিঙ্গে পুরুষ ও নারী উভয় অঙ্গই বিদ্য়মান নয় কি?
ঠিক ওরকম না। শিবলিঙ্গ পুংলিঙ্গই। বিগ্রহ তৈরির সময় কখনো কখনো যোনি-চিহ্নসহ তৈরি করা হয়।
অজ্ঞাতবাস
পড়ছি; আগের গুলো আমার পড়া হয় নাই, একটু সময় পেলে সব পড়ে নেব।
পুতুল ভাই@ অন্য একটা প্রসঙ্গে কথা বলি। কৌতুহুল বলতে পারেন। টাইটেল "তীর্থের কাক" রাখার কারন কি? আমি কালকে ভাবতে ছিলাম ব্যাপারটা .. মূলতঃ কাক/ পাখি এখানে তো একটা ওয়াচার.. ত্ইনা? অথবা তার রূপক অর্থে আপনি ওয়াচার একজন/ বা আপনার চোখ .. যে মগডালে বসে সব কিছুই দেখে যাচ্ছে আর কলমে অনুবাদ করছে সেই দৃশ্যপট ..
( নোট: আমি নামকরনটা ঠিক না সেটা বুঝাতে চাইনি,, শুধু আপনার মনোভাব বুঝতে বা নিজের কৌতুহুল মেটাতে চাচ্ছি; আশা করি আপনি বিরক্ত কোধ করবেন না এরকম অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্নে। )
__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;
তীর্থের কাক একটি বাংলা বাগধারা। এর অর্থ "প্রতীক্ষারত"
আক্ষরিক অর্থ মেলাতে গেলে এমন অনেক শব্দ নিয়েই ঝামেলায় পড়বেন
আপনার মন্তব্য এর অর্থ আমি বৃঝলাম না। প্রশ্ন ছিল লেখকের কাছে। আর "আক্ষরিক অর্থ মেলাতে গেলে এমন অনেক শব্দ নিয়েই ঝামেলায় পড়বেন" - কোথাও আক্ষরিক অর্থ মেলাতে যাবার প্রবনতা দেখাইনি বোধহয়; আমি জাষ্ট লেখক কোন কারনে নামকরন এমন রাখলো, বা আলোচনায় এটা না হলে আর কি হতে পারতো নামকরন , সেটাই উদ্দেশ্য ছিল। এটা ভুল নামকরন, বা ঠিক হয় নাই.. সেটা আমার মন্তব্যে কোথাও ছিল না.. সেরকম উদ্দেশ্য তো দূরের করা! শুধু শুধু আলোচনা অন্য খাতে না নেয়াই শ্রেয়।
__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;
ক্রসিডা, তীর্থের কাক হচ্ছে তীর্থস্থানে যে সব কাক পূজার প্রসাদের জন্য অপেক্ষা করে। কিন্তু প্রসাদ তো আর কাককে দেয়া হয় না। দেয়া হয় মানুষকে যারা পূজায় যোগ দিয়েছে। কলা পাতায় কোন খিচুরী জাতীয় খাদ্য তার রকম ফের আছে। সাধারণত কাকগুলো ঐ সময়ে মন্দিরের আসে পাশে বেশী ভীর জমায়। কারণ; ঐ সময়ে ছোঁ মেরে অসাবধানী পূজারী বা তীর্থযাত্রীর হাত থেকে খাবারটা ছিনিয়ে নেয়ার সুযোগ থাকে কাকের।
সেই যজ্ঞে-পূজায়-প্রর্থনায় এ ছাড়া কাকের আর কোন ভূমিকা নেই।
কাক যে প্রসাদের অংশ বিশেষ ছিনিয়ে নেয়, তাতে কিন্তু যজ্ঞের তেমন কিছু আসে যায় না। তার পরেও সব অনিষ্টের মূল হচ্ছে কাক। আমার মতো অবৈধ অভিবাসীকে এমনই আপদম মনে করে তথাকথিত উন্নত তীর্থ (পশ্চিমের ধনীদেশের মানুষ) সে জন্যই তীর্থের কাক মাথায় এসেছিল। পাখির চোখে দেখা বা পর্যবেক্ষণ তো আছেই। আরো কিছু ব্যাপার আছে শেষ পর্বে পুরোটা ব্যাপার চিন্তা করে বলতে পারবেন, তীর্থের কাক শীরনাম কতটা যৌক্তিক কিংবা অযৌক্তিক হলো।
শেরালীর সঠিক নামের জন্য অনেক ভেবে চিন্তে কোন উপায় না পেয়ে শেরালীই রেখেছিলাম। কিন্তু সেই সিদ্ধানের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে অনেক দিন। তাই আপনাকে অনুরোধ করবো যদি আপনার কাছে এর চেয়ে যুতসই বা যৌক্তিক কিছু মনে আসে দয়া করে জানাতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ আপনার কৌতূহলের জন্য।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
ধন্যবাদ পুতুল ভাই।যৌক্তিক বা অযৌক্তিক নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি না, নামকরনের পেছনে লেখকের চিন্তা-ভাবনা জানার কৌতুহুল ছিল; সেটা মিটলো - এইতো। আমি শুধূ ওই ওয়চার হিসেবে ব্যাপারটা দেখায় ভাবলাম .. কাক কেন সেটা যেকোন পাখিই হতে পারতো। তাই আপনার কাছে জানতে চাওয়া - এবং - সময় করে গুছিয়ে জানাবার জন্যে ধন্যবাদ।
__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;
অলসো, এই নামকরন-ই ভালো লাগছে.. তবে কোথাও কেন যেন মাঝে মাঝে মনে হয় .. " কোন এক বৃদ্ধের / বা বয়সের ভাবে অবসন্ন কেউ বসে দেখছে.. " কে জানে তীর্থের শব্দটার জন্যে হয়তো.. সিরিয়াস কিছু না.. শুধু বল্লাম আর কি..
__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;
বলতে ভুলে গিয়েছিলাম, (১৩নং প্যারায়) - "তারপরও! সোনিয়া ব্যাপারটা মানতে পারছে।" বোধহয় একটা "না" হবে..? তাইনা?
__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;
ঠিক করে দিলাম। ধন্যবাদ ক্রসিডা।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
সচলায়তনে প্রথম যখন আসি, সে সময় আপনার 'শেরালী' উপন্যাসটা পর্ব আকারে আসছিল নিয়মিত। আর আমিও দারুণ আগ্রহ নিয়ে পড়তাম আর অপেক্ষায় থাকতাম পরবর্তি পর্বের। দারুণ এক সময় ছিল সেটা।
আপনার এই সিরিজটা পড়া হয়নি এখনও। একটু সময় করে পড়ে ফেলবো সবগুলো।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
হ্যাঁ, সময়টা বেশ উপভোগ্য ছিল শেরালীকে নিয়ে। শেরালী কিন্তু বই হয়ে গেছে, নজু ভাইয়ের কাছে পাওয়া যেতে পারে।
ঠিকাছে, পড়ে জানান কেমন হচ্ছে। ধন্যবাদ।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
২য় পর্ব থেকে একটানা সবগুলো পড়ে ফেললাম ভাইয়া! আপনার এই লেখার সবচেয়ে বড় ব্যাপারটি হলো,
লেখক হিসেবে আপনার সততা! শ্রদ্ধা জানাই সে সততার প্রতি। খুব ভালো লাগছে পড়তে। একবারের জন্যও বিরক্ত হইনি
টানা পড়তে গিয়ে। তীর্সুথের কাকের' সুন্দর সমাপ্তি কামনা করছি। তবে, ১ম পর্বের মত ২য় এবং ৩য় পর্বের প্রথম প্যারা কেন জানি দু'বার করে এসেছে। ঠিক করে নিবেন ভাইয়া। বাকীপর্ব গুলো পড়বার অপেক্ষায় থাকলাম।
ধন্যবাদ আয়নামতি। ঠিক করে দিয়েছি।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
দারুণ লাগলো!
আগেরগুলো পড়া হয়নি। সময় করে পড়ে ফেলতে হবে।
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
ধন্যবাদ, কিন্তু আপনার লেখা কৈ? ফাকিবাজের তালিকায় দেখলাম নাম। ফাঁকিবাজী বাদ দিয়ে লেখা শুরু করেন।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
পরের লেখা কবে পাবো ?
একটু দেরী হয়ে গেল! আপনার নামটা বলতে আপত্তি আছে? নাকী মন্তব্য করার সময় ভূলে গেছেন?
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
-আলিফ অরণ্য
নতুন মন্তব্য করুন