শুরু থেকে শুরু বা পুনর্বার শুরুঃ
মানুষ সসীম। সে সীমাবদ্ধ দেহের আদলে। সে সীমিত মস্তিষ্কের কোষে, চেতনা ও চিন্তার কলায়। অসীম ধারণে তার অক্ষমতা বিদিত সর্বজনে। ধারণার অতীতকে বস্তুত: সে ধরতে চায় করতলগত আধারে।
ব্লগজগত অবাস্তব-অধিবাস্তব-পরাবাস্তব-যাদুবাস্তব। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি। এখানে যারা আসে যারা লেখে তাদের পরিচয়কে ছাড়িয়ে নিয়েছে শরীরের ত্বক থেকে। পতিত খোলস থেকে নাম-ধাম খুঁজবার পুলিশী তদন্ত এখানে অর্থহীন। কেউ স্বনামে, কেউ বেনামে, আর কেউ বা দু্যতি ছড়ায় ছদ্মনামে। বিশ্বজুড়ে মাকড়ার জালের নানা বিন্দুতে এরা যেন অশরীরি আত্মা। প্রকৃত অর্থে কোনো পরিচয়ের প্রয়োজন এদের করে না। এরা কেউ রত নয় ঐতিহাসিক দ্বন্দ্বে, তার বা বেতার বেয়ে শব্দ ছুঁড়ে কোনো ক্ষমতায় ভাগ বসাতে এরা বাক্য গাঁথে না ।
তবু চেনাজগতের ব্যাকরণে অভ্যস্ত মুখস্ত মানুষেরাও ভিড় বাড়ায় এমত বাজারে। এই অসীমতা এই পরিচয়হীনতা এই ভাচর্ুয়াল রিয়েলিটি তাদের ত্বকে ধরিয়ে দেয় পাঁচড়ার জ্বালা । তারা আঁচড়াতে থাকে উপায়হীন। তারা চেনা জগতের পরিধির জাল আঁকড়ে ধরে ছুঁড়ে মারে আকাশজলে নি:সহায় ধীবর। তারা বিপন্ন বোধ করে। তারা শবদেহ ঝাঁকিয়ে জানতে চায় জাতের নাম।
এখানে নাম নেই। পরিচয় ফেলে গেছে মানুষের আদি খোলস। তার-জাল ছড়িয়ে আছে পৃথিবীর অচেনা সব অন্ধগলিতে। আইপি ট্র্যাকার দিয়ে কোনো এক কম্পিউটারের ঠিকানা মিলে যেতে পারে। যন্ত্রের ঠিকানা কখনই নয় মানুষের স্বত্ত্বা । এখানে রইসুদ্দিন আর ব্রাত্য রাইসু ভীষণ আলাদা মানুষ। অথবা রইসুদ্দিন আর ব্রাত্য রাইসু মিলে গড়ে তোলে তৃতীয় মানুষ। কিংবা রইসুদ্দিনের কনিষ্ঠা, মধ্যমা, তর্জনী, একেক আঙুল হয়ে ওঠে একেকটি স্বত্ত্বা। সবই হঠযোগ। অথবা পারষ্পরিক সংযোগ। উত্তর-আধুনিকতায় সত্য হয়ে উঠে প্রতিটি প্রতিচ্ছায়া। আর সবক'টি ছায়াই স্বতন্ত্র হয়ে বেঁচে থাকতে চায় নিজস্ব চারিত্রে।
এখানে নির্বোধেরা খুঁজে ফিরে সসীম মানুষকে। পাঁচড়া আঁচড়াতে আঁচড়াতে প্রশ্ন তোলে, কে এই দীক্ষক দ্রাবিড়? দ্রাবিড়ের ডাক তার শোনা হয় নাই। দীক্ষা সে পায়নি বোধিসত্ত্ব প্রজন্মের। জাহেলিয়াত তার ক্বলবে বেঁধে আছে হাবিয়ার অন্ধকার। দুরাসদ দু্যলোকের সে রাখে না খবর।
নাদান সেসব সার-বাঁধা মেষদলের জন্য শুরু হোক শুরু থেকে। পুনর্বার নতুন করে। শ্লোগানের আচমকা হরি-বোল নৃত্য ছেড়ে রিব্র্যান্ডিং। দুরাসদ দু্যলোকের দীক্ষক দ্রাবিড়।
কে হয় দীক্ষক, কে হয় দ্রাবিড়? কেন ডাকে দ্রাবিড় দীক্ষক?
কী হয় দু্যলোক, কী হয় দুরাসদ? কেন বা দু্যলোক দুরাসদ।
পাঠেই উত্তর আসে। পাঠক হোক পুনর্বার।
বোধের ভেতরে যতক্ষণ খেলা না করে দীক্ষা। পাঠ হোক বারংবার।
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন