|| কালকুঠুরির স্বপ্নকথন ||

দৃশা এর ছবি
লিখেছেন দৃশা (তারিখ: রবি, ০৯/১২/২০০৭ - ১:৫১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

হ্যালো হ্যালো মাইক্রফোন টেস্টিং...ওয়ান...ঠু...থিরি(ফাইলাম একটা বিড়ি).....।।
"আমা-র-র-র প্রান অতধিক(ধিক তোদের...ধিক...ধিক) প্রিয় ভাই ও ভাইদের বোনেরা, পিতা এবং পিতাদের ইস্ত্রীরা... আজ এ দুর্যোগপূর্ণ মুহুর্তে আমার হৃদয় দুঃখে ভারাক্রান্ত। প্রকৃতির এই ভয়াবহ তান্ডবলীলায় জর্জরিত আমাদের এই সুজলা সুফলা শস্য-শ্যামলা দেশ আজ যে বিপদের সম্মুখীন হয়েছে তা থেকে একে উদ্ধার করা আপ-না-র-র এবং...আমা-আ-আ-র অত্যন্ত কর্তব্য। আপনাদের মা-বোনদের অনাহারী মুখ দেখিলে আমার দুঃখে ছাতু ফাটি যায়... এমতাবস্থায় আমি অত্র এলাকায় জরুরীভিত্তিতে ত্রানতহবিল গঠনের নির্দেশ জারি করিতেছে। এ বিষয়ে কারো কোন শলাপরামর্শ থাইকলে অধিকরাতে আমার সাথে দেখা কইরবার ফরমান জারি করা হইতেছে।“ ঠিক এই সময় হঠাৎ কইরাই চারিদিক থেইক্কা জলপাই মানবরা সুপারমানের মত প্যান্টের উপর হাফপ্যান্ট( বুইঝা লন) পিন্ধা আমার উপর ঝাপাইয়া পড়ল মনে হইল।

স্বপ্নের এই পর্যায় ধরফরাইয়া উইঠা বসলাম...ধুর হালার হোমন্ধীর ভায়েরা... এমন যুগান্তকারী এক মুহুর্তে কি না আইসা হালারা ঘাড়ে চাপল আর স্বপ্ন দুঃস্বপ্ন বানাইয়া ছাড়ল...শান্তিতে সুখ স্বপ্নও দেখতে দেয় না। আহা ! কি ছিল সেই সব স্বর্নালী দিনরাত্রি!! এক একটা দুর্যোগ আইতো আর মনে হইত দিবানিশি ঈদ-ই-ঈদ ।

ত্রানের কতশত পণ্য ব্যবহার কইরা হইছি মোরা ধন্য, কতরকমের স্বদুপয়োগ ঘটাইছিলাম তাদের। ত্রানের টিন দিয়া নিজেগো ফ্যাক্টরীর চালা বানাইছি... ঘোড়ার আস্তাবল বানাইছি...বাকী যা ছিল সময়ে স্বদব্যবহারের লাইগা মাটির তলে থুইয়া রাখছি... শালার এলাকাবাসী তোগরে কি ত্রানের বিস্কুট খাওয়াইয়া আপ্যায়ন করি নাই? ...তোগো বিষফোড়াতে কি ঘা দিছিলাম নাকি যে তোরা এমুন জালিমগো হাতে তুইলা দিলি মোরে! কই গেল আমার টাকায়মোড়া বালিশ যার চরণে মাথা দিয়া সুখনিদ্রা দিতাম...কই গেল মোর বাগানবাড়ি লগে হরিণের পাল...কই গেল সেই উইন্ডমিল যার ছায়া সুশীতল তলে বসে বান্ধবীদের(শুধুই বান্ধবী কইলাম...দুষ্ট মানুষগো কথায় কান দিবেন না)ঐকতান শুনতাম... কই গেল মোর বেগম যার কোমরে পরাইছিলাম ২৫ ভরি ওজনের বিছা (তাইলে কোমরের ওজন কত ভাইবা চান দেহি) । আহা... হিংসুকদের বিষজ্বালায় আজ আমার জীবন রিমান্ডময়...বিচার হবে রোজহাশরে সব জাহিল জালিমদের, তারাতো জানে না ধর্মের কল বাতাসে নড়ে।

আমি ভাবি আর ভাবি...ভাইবা মন উচাটন হয়...কত সিডর আইলো গেল...কত নার্গিস বিলকিস আইবো আইবো করে... আর এমুন মাহেন্দ্রক্ষনে আমি কালকুঠুরির অধিবাসী!! তো কি হইছে আমি অন্যের হক মাইরা খাইছি ...যা খাইছি দেশের সম্পদইতো...মায়ের অন্ন পুত্রের পেটে গেছে...এইটাতে এমুন হাউকাউয়ের কি আছে। আমার শূণ্যস্থানও আইজকা তেনাদের মইধ্যে কেউ না কেউ পূরণ ঠিকই করতাছে...মাগার যত দোষ বেচারা এই নন্দঘোষের।
“বারো ভূতে লুইটা খায়
আর আমি খাইলেই পাবলিকে ফিট যায়”

যাউকগা গভীর রাতে দুঃখবিলাসে ফায়দা নাই এর থেইকা নিদ্রাযাপন ভালো...আমারও দিন আবার আইব ততদিন পর্যন্ত তোমাদের জন্য উত্তম জাঝা স্বরুপ রইল এক অতৃপ্ত হৃদয়ের ঠাডা...অর্থাৎ গায়েবি গজব।

অতঃপর একযুগের এক প্রতাপশালী অর্ধশিক্ষিত জননেতা আবারও সুখনিদ্রায় পতিত(কই থেইকা পতিত বলা দায়) হলেন ......................................................................
“হ্যালো হ্যালো মাইক্রফোন টেস্টিং ..ওয়ান...ঠু...থিরি... ভাইসব এবং তাদের বোনসব...আজ আমার চক্ষু আনন্দ অশ্রুতে অভিসিক্ত। আপনারা আবারও আমাকে আপনাদের একজন প্রতিনিধি হিসাবে নির্বাচিত করে যে ভালবাসার বহিপ্রকাশ দেখিয়েছেন সেই গর্বে আমি গর্ভবতী ...থুক্কু.....গর্বিত......আপনার...........................”

[এরে-ই কয় পাগলের সুখ মনে মনে আর তেনাগো সুখ মনেরও অগোচরে]


মন্তব্য

লুৎফুল আরেফীন এর ছবি

জবর হয়েছে!
আরেফীন

হাসান মোরশেদ এর ছবি

ঠিকোই!
-----------------------------------------
মৃত্যুতে ও থামেনা উৎসব
জীবন এমনই প্রকান্ড প্রচুর ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

ধুসর গোধূলি এর ছবি
আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

কালকুঠুরি কি?

দৃশা এর ছবি

আরেফীন ভাইসাব ধন্যবাদ।
মোরশেদ ভাই কত পারসেন্ট ঠিক?
চাঁন্দের থুন আইলাম ধুগো...শালীগো ঠিকঠাক সন্ধান পাইছুন?
সেন্টু সাদাত এইটাতো উদাহারন সহ আপনারে এই মুহুর্তে বিশিষ্ট ভাষাবিদ প্রাক্তন সেমি যুবরাজ বাবর বুঝাইতে পারব। ট্রাই কইরা দেখবেন?

দৃশা

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।