ছোটবেলা থেকেই স্কুল-কলেজের বদৌলতে কিছু কিছু অতিপরিচিত প্রবাদ-প্রবচন মস্তিস্ককুঠরিতে খাট-পালংক নিয়ে স্থায়ীভাবে ঘরবসতি জমিয়ে বসে কম বেশী সবার মাঝেয়, যেমন ধরা যাক "স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল", "নাচ না জানলে উঠান বাঁকা ", "time and tide wait for none"... এভাবে আঙ্গুল গুনে গুনে খোঁজ করতে গেলে স্মৃতি নামক বাক্স-পেটেরা থেকে আমারই অন্তত শ'খানেক (এইটা চাপা...পঞ্চাশের বেশী চিপাচুপা দিয়াও বাইর হইব না) শুদ্ধ কিংবা আঞ্চলিক প্রবাদ বেরিয়ে আসবে। অন্যরা তাদের জীবনে এর কতখানি বাস্তবিক প্রমান পেয়েছেন তা অনুধাবন করতে ব্যর্থ হলেও নিজের জীবনে এদের খুব একটা আনাগোনা দেখিনি, পরীক্ষার খাতায় উগড়ে দিয়ে আসা পর্যন্তই ছিল এদের প্রয়োগ।
স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল হলেও সাস্থ্য ব্যতীত অন্যান্য যাবতীয় সুখ আয়ত্বে আনাই হল যেন আমার জীবনের মূল লক্ষ্য। যেমন ধরা যাক, প্রচন্ড বদহজমির বিপাকে পরে রুহ যখন ক্ষনে ক্ষনে আসে কি যায় অবস্থা, এরমধ্যেও বিরানী দেখলেই আমার মাথা আউলায়ে যায় তা ভোগ করার সাহসী সুখে...মাথা থেকে তখন এই বিষয় একদমই হাপিস হয়ে যায় যে ভক্ষনের পর রুহ একবার গেলে কি আর ফিরে আসবে নাকি না !?!
বর্তমান অবস্থা দেখার পর এটাও বিশেষভাবে মনে হয় আজকাল উঠান বাঁকা না সোজা এগুলো তুচ্ছ বিষয়। উঠান যদি বাঁকাও হয় তিশমা তার মৃগী নাচ এবং মিলা তার তান্ডব নৃত্য দ্বারা তা পাড়িয়ে মাড়িয়ে দাপিয়ে সোজা করে ফেলতে সক্ষম। নাচ জানা কিংবা উঠান বাঁকা-তেরা থাকাটা একটি আপেক্ষিক ব্যাপার, যেই ব্যাপারটা আমাদের জ্ঞানীগুনী মুরুব্বিরা আগে বুঝতে পারেননি। শুধু নাচার সময় দরকার কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস কাছে থাকার...মৃগী ড্যান্সারদের জন্য একজোড়া যেকোন গোত্র কিংবা বর্ণের চামড়ার চপ্পল, আর যারা কাইকাল(কাঁকাল-রুপবানে নাচে কোমর দুলাইয়া) ড্যান্সার অর্থাৎ তান্ডব ড্যান্সার তাদের জন্য একটি ব্যাঙ্গাই অথবা মুভ মালিশের কৌট ।
প্রশ্নটা মাঝে মাঝে বেকার মনে প্রায় উদয় হয় সময় কিংবা স্রোত আমার জন্য থেমে নেই?...নাকি আমি তাদের জন্য থেমে নেই? যে কাজ এই সময় হয়নি অন্য সময় হবে, যে ঢেউকে আজ ছুঁইনি তাকে অন্য কোন এক জায়গায় অন্য এক সময়ে ছুঁয়ে যাব, হয়তো ধরা দেবে ভিন্ন এক রুপে , কিন্তু রবে তো সেই একই ঢেউ ভিন্ন আঙ্গিকে। আমার অপেক্ষা সময়ের জন্য ক্ষনিকের, কিন্তু সময়ের অপেক্ষা আমার তরে অনন্তের, আমি না বরং হারিয়ে যাওয়া প্রতিটা ঢেউ অপেক্ষায় রবে আমার কাছে একবারের জন্য হলেও ধরা দেবার। একেই কি বলে নির্বোধের আস্ফলন? তবে ভাবতে কিন্তু বেশ লাগে।
কথিত আছে অলস মস্তিস্ক শয়তানের কারখানা, অর্থহীন কথাবার্তা। এই যে আমার মস্তিস্ক এখন অলস অবস্থায় আছে সে কি তাহলে শয়তানের ফ্যাক্টরি... সাহিত্য চর্চা করা কি শয়তানের কেরামতি? জাতির বিবেকের কাছে প্রশ্ন রইল( তিনি কে জানলে কেউ আমারেও জানায়েন) । সাহিত্য আদৌপে হল কি হল না সেটা অন্য ব্যাপার। যেমন পরীক্ষায় অংশগ্রহন করাটাই জরুরী...পাস ফেল নয়, ঠিক তেমনি সাহিত্য চর্চা করাটাই প্রথম কথা... হল কি হল না তা নয়।
সবকিছুর পরও মাঝে মাঝে এই নির্বোধ মন হাহাকার করে উঠে। স্বাস্থ্যের অবনতি তাকে ভাবিয়ে তোলে... নাচতে গেলে মনে হয় উঠোনখানি আসলেই বাঁকা... বিগত সময়ের দিকে ফিরে তাকিয়ে বিষন্ন মনে ভাবে, ইস! সচল আড্ডায় গিয়ে সচল লেখকদের বইয়ে সাক্ষর নেওয়া হল না। এর সবই হয়তো ঠিকই একসময় সঞ্চয়ের থলিতে জমা করে নিতে পারব...শুধু পারব না ঐ সময়ের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্মৃতিগুলোকে খাঁচায় পুড়তে। কিছু লিখতে বসলে শব্দগুলো চোখের সামনে এলোমেলোভাবে ঘুরতে থাকে...পাশাপাশি বসে কোন আকার নেয় না... সাহিত্য চর্চা তো দূরে থাক, একটা বাক্য সুন্দর করে গুছিয়ে লেখবার অক্ষমতায় এই অপদার্থ মন আসলেই হাহাকার করে।
কিছুদিন আগে আমার এক বন্ধু একটা গান লিখে এনে আমাকে পড়তে দিল , আমি পড়ার আগেই তিনি আনন্দের আতিশয্যে বললো... “দোস্ত তোফা জিনিস লিখছি...একদম কাঁপাইয়া ফেলামু”। তার নিজের প্রতি উচ্চধারনা দেখে বললাম... “সবে মূলার নাই এক পাতা, মূলায় কয় কত কথা”। সে সমপরিমান দাপটে উত্তর দিল ... “ ফাজিল কোথাকার...না পইড়া তুই মূলা, গাজর আনছ কেন?” লেখাটা পড়ার পর কিছুক্ষন টাশকি খাওয়া অবস্থায় থেকে বললাম ... “দোস্ত একটা সিগুলি শুনছস? ছড় নাই কুত্তার নাম মীর বাঘা?” কিছুক্ষন চিন্তা করার পর সে উত্তর দিল... “শুনছিতো...এর মাজেদা খালা (মাজেজা) কি?... আমারতো ছড় ও আছে আবার আমার নাম মীর বাঘাও না?” আমিও ত্যক্ত বিরক্ত হয়ে বললাম... “দূর হালা আদু ভাই”। সেও মুখচোখ খিঁচিয়ে চিক্কুর দিল... “কিসের লগে কি মিলাছ...বন্দী সৈনিকের গানের মইধ্যে আদু কাকু আসে কেমনে?” হাল ছেড়ে দিয়ে বললাম “ আদু ভাইতো তাও ছয়বারের (সংখ্যা ভুলও হতে পারে) চেষ্টায় হইলেও পাস করছিল...তোরে আমি ৬০ বার বিভিন্ন ভাবে কইলেও তুই বুঝবি না যে তুই একটা শিক্ষিত বলদ !” আসলেই আমার জীবনে প্রবাদ প্রবচনের উপয়োগ চরমভাবেই ব্যর্থ ।
বিঃদ্রঃ বহুদিন পর বাংলায় লেখার কারনে কিছু বানানের চরম নাজেহাল অবস্থা থাকতে পারে। এরজন্য লেখক চরমভাবে দুঃখিত তবে দায়ী নয়।
মন্তব্য
- শেষের লাইনটা উলটা হয়ে গেলো, চরম ভাবে দায়ী মাগার দুঃখিত নয়, হলেই বুঝি ভালো শোনায়
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
উলটা হয় নাই...মিয়া গাঞ্জা সেবন কইরা আপনার বুদ্ধি লোপ পাইছে।
দুঃখিত ১০০ বার হইতে পারুম মাগার দায়ভার নেওয়াটা কি বুদ্ধিমানের কাজ, কন?
মিলার পিছে কেন কেউ লাগব... উনি আমাদের ফিউচার ভাবি না?
আজিব !!
দৃশা
ভাল হইয়াছে। কিন্তু আমি ভাবছিলাম বইমেলার বিষয় থাকবে, তা নেই।
...............................
খাল কেটে বসে আছি কুমিরের অপেক্ষায়...
দুঃখিত ভাইসাব বইমেলার বিষয় ছিল না বইলা... আপনার সাথে তো দেখি ধোকা হইছে রীতিমত। তবে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
দার্শনিকরা কি আমার মত বেকার এবং অপদার্থ ছিল নাকি?
আমি যেভাবে ভাবলাম সেভাবে হয়তো ভাবেন নি... আর যেভাবে ভেবেছেন আমি সেটা জানি না... কখন হয়তো জানবো।
দৃশা
আমাগো তিশমা আপা এই কথা শুনলে আপনারে নোবেল প্রাইজ দিয়া অপমান করবেন।
সময় নিয়া দার্শনিক কথাবার্তায় রিসেন্টলি ছ্যাঁকাশিকার হওয়ার ক্ষীণ হইতে স্থূলতর সন্দেহ হইতেছে। ঘটনা কি?
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
নোবেল প্রাইজ পাওয়া যে এতো সহজ আগে কইবেন না?
আর কি কন না কন মিয়া... সঠিক বয়সে বিবাহ হইলে আইজকা আমার মাইয়া ছেকা খাইত। আর আপনে কন আমার কথা।
দৃশা
- সবাই খালি মিলা'র পিছে লাগে ক্যা?
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
লেখাটা ভালো হইছে। মাগার আদু ভাই ছয়বারেও ক্লাশ সেভেনে উঠবার পারে নাই। পরে সে শাহদাত বরন করিলে তাহাকে সম্মানসূচকভাবে ক্লাশ সেভেনে উত্তীর্ণ বলিয়া ঘোষণা করা হয়।
রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।
বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।
ধন্যবাদ ঝরাপাতা। লেখার পড়ার লাইগা না...ভুল ঠিক কইরা দেওনের লাইগা।
দৃশা
নতুন মন্তব্য করুন