অঝোর ধারায় বৃষ্টি পরেই যাচ্ছে, একমূহুর্তও দম নেওয়ার যেন বিরাম নেই। এতো এতো জল আকাশ যেন তার দু'বাহু দিয়ে লুকিয়ে রাখে কোন এক সুন্দর মূহুর্তে ঝরিয়ে দেবার জন্যে। আজ কি তেমনি একটা মূহুর্ত?
চুপচাপ দাঁড়িয়ে তাই ভাবছিল দু'বান্ধবীর একজন......ও ওদের সাথে যে পরিচয়ই করিয়ে দেওয়া হলো না এখনো।
কলেজ পড়ুয়া দু'বান্ধবী ,ধরে নিই এদের একজনের নাম মেঘ অন্যজনের নাম বৃষ্টি।
হঠাৎ করে বলে কয়ে না আসা বৃষ্টির মাঝে আটকা পড়ে ঠাই হল দু'জনের কলেজের নামকাওয়াস্তের ঝুপড়িওয়ালা ক্যান্টিনের ছোট্ট একচিলতে ফাঁকা জায়গায়। জুবুথুবু হয়ে দাঁড়িয়ে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছিল পাহাড়ের ঢল বেয়ে নামা বৃষ্টির স্রোতধারা। এরমাঝেই "বৃষ্টি" পায়তারা করছিল একটা রিক্সা ঠিক করবার বৃথা চেষ্টায় আর "মেঘ" দাঁড়িয়ে ফেঁদে বসেছিল আকাশ আর বৃষ্টিকে নিয়ে এক আকাশ-পাতাল সমীকরণ।
"মেঘের" সমীকরণ মিলুক আর নাই বা মিলুক "বৃষ্টির" ভাগ্যে দেখা গেল একটা রিক্সা জুটেই গেল। আর কি চটজলদি দু'জনে মিলে আর কেউ রিক্সার মালিকানা দখন করার আগেই উঠে পড়ল। উঠার সাথেই সাথেই বৃষ্টি চিৎকার করে বলে উঠল, "আরে চাচামিয়া হুড ফেলান ...বৃষ্টিতে ভিজবতো"। চাচামিয়া অনিচ্ছাসত্তেও হুড ফেলে দিয়ে গজগজ করতে লাগলেন ,সন্দেহ নাই যে বাংলার বুকে যত গালি আছে তা তিনি এই দুই অর্ধেক তারছিড়া মেয়ের উপর বর্ষন করে দিয়েছেন। এতেও যদি মেয়ে দু'টো ক্ষান্ত হত তাও চলত, না এতো অল্পতে কি আর হয়?
এখানে ওখানে ঘুরতে ঘুরতে হঠাত "মেঘ" এক আইস্ক্রিমওয়ালা দেখে আকাশ ফাটানো চিত্তকার দিয়ে গর্জে উঠল "চাচামিয়া দাড়ান দাড়ান আইস্ক্রিম কিনব"। বেচারা রিক্সাওয়ালার বোধহয় ততক্ষনে গালির কোটাও শেষ, একবার শুধু মাথা ঘুরিয়ে তাকিয়ে বললো "ইতারা এব্বারে পল হইয়ের বাজি"। কে শোনে কার কথা,আনন্দকে কথার বেড়াজালে যে আটকাতে নেই। দু'বান্ধবী মনের সুখে বৃষ্টির মাঝে ভিজতে ভিজতে প্রায় গলে যাওয়া আইস্ক্রিম খেতে খেতে গুনগুন করে বেসুরা সুরে গান গাইতে লাগল...তাতে কি বেসুরা! ...আনন্দের কি কোন তাল লয় আছে ,না থাকতে হয়?
"শূণ্য যেখানে শব্দ নয় সেখানে তুমি
নিয়ন আলোর জলে পরে থাকা এ কেমন জানি
বৃষ্টি ভেজা এ বেলায় আমিতো স্বাধীন
রংধনুর রঙের মেলায় এলো নতুন দিন”
নানা মানুষের নানা ধরনের মন্তব্য নানা ধরনের দৃষ্টি সবকিছুই যেন বরো ফিকে হয়ে যায় তাদের এই বাঁধভাঙ্গা আনন্দের কাছে । দূর থেকে মন্দ লোকে নিন্দে করে যা সে করতে পারেনি বা পারেনা তা চোখের সামনে দেখতে পাওয়ার ক্ষোভে । যাদের সামান্য ঠাই নেই মাথা গোঁজবার জন্য বৃষ্টির ষড়যন্ত্র থেকে তারা কটাক্ষ করে উঠে তাদের হুড ফেলে বৃষ্টিতে বেজার আদিখ্যেতা দেখে। কেউবা অতৃপ্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে ওই এক ফোটা আনন্দ পাওয়ার আক্ষেপে। কেউবা মুচকি হাসি দিয়ে দেখে মেয়ে দু'টোর ছেলেমানুষী পাগলামি আর হইতো রোমন্থন করে ফেলে আসা এমনি এক ছোট্ট কিন্তু মিষ্টি অনুভূতির জলছাপ।
বিঃদ্রঃ দেড় বছর আগে লেখা একখান পুরানো আপঝাপ, যখন সুন্দরকে সুন্দর বলার ক্ষমতা ছিল। এখন সুন্দর কিছু দেখলে নিজেকেই আগে একবার জিজ্ঞেস করে নিই আসলেই সুন্দরতো?জটিল সমীকরণে আটকে গেল জীবন তাও মাঝে মাঝে এখনও বৃষ্টি দেখলে মাথাটা পুরা আউলিয়ে যায়।
মন্তব্য
Oshomvob Shundor ekta lekha ... ....
জাইনা প্রীত হইলাম। তয় ইংলিশ পড়তে কষ্ট হয়।
দৃশা
বৃষ্টি- ভালো লাগে!
----------------------------------------------
আমাকে নিঃশব্দে অনুসরণ করে একটা নদী-
সাথে নিয়ে একটা পাহাড় আর একটা নিঃসঙ্গ মেঘ।
এইটা আবার কইতে...!!
দৃশা
বৃষ্টি এলো কাশবনে
জাগলো সাড়া ঘাস বনে
বকের সারি কোথায় রে
লুকিয়ে গেল পাশ-বনে
নদীতে নাই খেয়া যে
ডাকলো দূরে দেয়া যে
কোন সে বনের আড়ালে
ফুটলো আবার কেয়া যে...
ছোটকালে 'আমার বই'-এ পড়া আমার খুব প্রিয় একটি কবিতা, মনে পড়ে গেল ।
- খেকশিয়াল
কবিতাখান আমার মনপসন্দ হইছে।
দৃশা
দৃশাফার বারি সিটাং ফাল্লার? বৃষ্টি বাজি আঁত্তেও বউত বালো লাগে।
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
হয় হয়...তয় চাটগাইয়া ভাষা পারিনা রে ভাই...চরম ব্যার্থতা...
দৃশা
বৃষ্টি আসলেই মাথা আওলা কইরা দেয়।কেন যেন নিজেকে তখন সবচেয়ে স্বাধীন মনে হয়।
-নিরিবিলি
আগামী কিছু মাস আমরা তবে স্বাধীনই থাকব...অনেক তিক্ততার মাঝেও কিছু শান্তির প্রলেপ।
দৃশা
তবুও তো হাজার ব্যস্ততার মাঝে একটু খানি ফোকর পেলেই রোমন্থন করি ফেলে আসা এমনি এক ছোট্ট কিন্তু মিষ্টি অনুভূতির জলছাপ। অদ্ভুত এ অনুভূতি! সুন্দরকে সুন্দর বলার ক্ষমতা শুধুই অতীত। তবুও তার প্রাণান্তকর চেষ্টা।
---------------
কুচ্ছিত হাঁসের ছানা
চেষ্টাটা আছে বলেই হয়তো এখনও বেঁচে থাকাটা অতোটা নিরানন্দময় নয়।
দৃশা
আহারে আবারো আনিলা। তা আপনি মেঘ না বৃষ্টি কইলেন না কিন্তু!
রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।
বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।
আনিলা নাকি এলিটা??
=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=
LoVe is like heaven but it hurts like HeLL
---------------------------------
বাঁইচ্যা আছি
হই মিয়া এইটা আনিলা না, অবশ্য উনার সম্প্রদায়েরই...ইনি হলেন এলিটা।
দৃশা
- চলে এসো আজ আমার কাছে,
চলে এসো আজ মায়াবী এই রাতে...
আগ্গুন ব্যাপার স্যাপার।
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
কারে ডাকেন?
মেঘ না বৃষ্টি?
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
- দুইটারেই, তবে দুই জায়গায় ডেটিঙ
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
গুরু,দুই জায়গায় তো একলগে ডিউটি দিতে পারবেন না।
এক জায়গায় না হয় আমি প্রক্সিটা দিয়ে দিবোনে...
=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=
LoVe is like heaven but it hurts like HeLL
---------------------------------
বাঁইচ্যা আছি
ধূগো বাবা এরা কার শালী জানো?
কত নাম্বার সেক্টরের র্যাব কমান্ডারের জানি...
সাধু সাবধান।
দৃশা
- কার শালী সেইটা দিয়া কাম কি আমার?
ঐ কমান্ডাররে কইয়েন, ব্যাটা সো জা বারনা ধুগো আ যায়েগা!
দেইখেন হালায় কী করে! _________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
হই মিয়া এইটা কি রুপংকরের গানটা নাকি? যদি তাই হয় তাইলেতো কথা উলট পালট কইরা ফেলাইছেন।
দৃশা
এইসব ছোট ছোট মিষ্টি অনুভূতিগুলো নিয়েই তো আমরা বাঁচি।
আর বৃষ্টি ...
বলতে যা পারবো না বৃষ্টি তা বলে দেবে...
.....................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
জনাবা শিমুল আর স্বপ্নাহতের বৃষ্টিবিলাস দেইখা আসলেই খুব আনন্দ হইতাছে...
দৃশা
শিমুল আপুর সাথে সহমত।
ছোট ছোট এসব অনুভূতি আছে বলেই বেঁচে থাকার আনন্দটা অনেক বড় মনে হয়।
লেখা ভাল লেগেছে।মাঝে মাঝে এইসব টক ঝাল পড়তে খারাপ লাগবেনা
=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=
LoVe is like heaven but it hurts like HeLL
---------------------------------
বাঁইচ্যা আছি
শুদ্ধ হয় নাই। অবশ্য বড় ভুল না।
অভিবাসীরা ভাষাকে সম্পূর্ণ আয়ত্ব করতে সময় নেয়, এটা আমরা জানি।
আপনার কথা ঠিক মাইনা নিলাম...আমি ভুল তাও মানলাম।।
মাগার ঠিক কথাটাতো আপনেও জানাইয়া গেলেন না।
দৃশা
নতুন মন্তব্য করুন