স্মৃতিতে যে স্বপ্নময় শহর-১

দৃশা এর ছবি
লিখেছেন দৃশা (তারিখ: রবি, ০৬/০৭/২০০৮ - ৫:৪৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বেশ অনেক অনেক আগে আমার একটা ঘর ছিল খুব সুন্দর ছোট্ট একটা ছিমছাম শহরে... যেখানে আমার জন্ম... ধুপধাপ করে বেড়ে ওঠা... প্রথম হাতে খড়ি নেওয়া... বন্ধু কি জিনিস বুঝতে শেখা... বাদঁরামী কতপ্রকার তাতে দীক্ষা নেওয়া। খুব বেশী আগের কথা কি! হয়তো না তবুও যেন এক একটা যুগ সমান। সেই ঘরটা এখনও আছে... সেই শহরটা এখনও বিদ্যমান... শুধু আমি যেন নিজেকে আর আগের জায়গাটায় পাই না। ঘরটা যেন আমার হয়েও আমার না... শহরটা যেন ধরা দিয়েও ধরা দেয় না। পড়াশোনার কারনে (হুদাহুদি ভেজাল) যখন ঢাকায় চলে আসলাম মনটা সারাক্ষন বিষিয়ে থাকত, কেউ প্রয়োজনের চেয়ে বেশী কথা জিজ্ঞেস করলেই থাবড়া দিতে মন চাইত। কেউ যদি বলত 'তোমাদের বাড়িতে যাব একদিন', আমার উত্তর হত 'শুনেন আমার বাড়ি বহুতদূর, বরং আমার বাসায় আইসেন'। অবাক হয়ে পার্থক্য বুঝতে চাইলে জিজ্ঞেস করতাম ‘পাখির নিজের তৈরি ঝোপেরপট্টি আর পাখির খাঁচা কি এক জিনিস?’ কেউ যদি জানতে চাইত 'তোমার বাড়ি কই' গর্বে কলিজা যেন গলায় উঠে এসেছে এমন ভাব নিয়ে বলতাম চিটাগাং, মাহাত্ম্যটা বোঝানর জন্যই ভাবের পরিমান আরোখানিকটা বাড়িয়ে বলতাম বন্দর নগরী চট্টগ্রাম। ব্যাপারটা আমার জন্য বলাটা যত আনন্দের যারা শুনছে তাদের জন্যতো আর অতটা না, সুতরাং তাদের প্রতিক্রিয়াও হত নিরামিষ মার্কা, মুখে খানিকটা তাচ্ছিল্যের মুচকি হাসি (মনটা কইত মারি একটা চটকনা)।

সময়ের সাথে সাথে অনুভূতিগুলোও মনে হয় ভোঁতা হয়ে যাচ্ছে। সব কিছুই সয়ে গেছে...কিছুতেই কোন বিকার নেই। আগের মত মন বিষিয়ে থাকে না, বাড়ির কথা জানতে চাইলে বলি ওইতো ঢাকার অমুক জায়গায়, বন্ধের দিনগুলোতে নিজ বাড়ি যাওয়ার সেই তাগাদা নেই, সারাক্ষন মন পরে থাকে না গাছ-গাছালিতে ভরা আমার একসময়ের খুব চেনা বাড়িটায়। হঠাৎ কোন এক ফাঁকে চলমান সময়ের গতিটা হয়তো কিছু মুহুর্তের জন্য থমকে দাড়ায়... ঘড়ির কাঁটাটা হয়তো থেমে যায়...বালি ঘড়িটা কিভাবে যেন উল্টে পড়ে থাকে অবহেলায়। ঝাপসা ভাবে হোঁচট খেয়ে অতীতের স্মৃতিগুলো কড়া নাড়ে বর্তমানের ভারীপাল্লার দরজায় ক্ষনিকের তরে। তারপর? তার আর কোন পর নেই... যেই লাউ সেই কদু। একটা ঝাঁকি খেয়ে অতীত স্মৃতি হারিয়ে যায় বর্তমানের ব্যস্ততায়... নতুন জীবনীশক্তি পেয়ে ঘড়ির কাঁটা চলতে থাকে স্বনিয়মে... কেউ একজন বালি ঘড়িখানা পরম যত্নে সাজিয়ে রাখে তার নিজ জায়গায়।

বছরে এখন মাত্র দু’বার যাওয়া পরে নিজ বাড়ি... এক ঈদের সময়, আর এক পরীক্ষা শেষে। এবারও গেলাম পরীক্ষা শেষে লম্বা সফরে। আমার খুব চেনা শহরটাকে এখন দেখলে প্রচন্ড মন খারাপ হয়ে যায়। রাস্তাগুলো দেখলে মনে হয় গ্রামের মাটির রাস্তা এর থেক্বে ঢের ভালো, রাস্তাগুলো এতো মসৃন (!!) যে ঝাঁকি খেতে খেতে নাড়িভুরি মুখ কান দিয়ে বের হয়ে যাওয়ার যোগাড়। এতো সুন্দর শহরটা এতো অল্প সময়ে কি করে যে এতোটা নোংড়া হয়ে গেল চিন্তা করলেও ধাক্কা লাগে। যেখানে পাহাড় ছিল এখন সেখানে আছে কিছু ভগ্নাবশেষ, যেখানে সবুজ ছিল সেখানে আজ উদ্ভটভাবে গজিয়ে ওঠা ঘরবাড়ি অথবা বিপদজনক ভাবে বেড়ে ওঠা বস্তি। যখন টানা ২,৩ দিন বৃষ্টি হয় তখন মানুষের সমুদ্র দেখার জন্য পতেঙ্গা যাওয়ারও প্রয়োজন পরে না, নিজ বাড়ির বারান্দা থেকে কিংবা ছাদ থেকে দাড়িয়েয় মিনি সাইজ সমুদ্র দেখা যায়, কারন পুরো শহর তখন এক কোমর পানির নীচে। ব্যাপারটা আরো রোমান্টিক বানাবার জন্যই পাওয়ার সাপ্লাই বন্ধ করে দেওয়া হয় পানি না নেমে যাওয়া পর্যন্ত, যেন যাদের এখনও ক্যান্ডেল লাইট ডিনার করার সুযোগ হয়ে উঠেনি তারা যেন এর মাজেজাটা বুঝতে পারেন। আর যাদের ক্যান্ডেল কেনারও ক্ষমতা নেই তারা যেন একটু বুঝতে শিখে মোমবাতি না কিনতে পারার অক্ষমতা কি জিনিস। চিঠির পর চিঠি, আবেদনপত্র...কাকুতি মিনতি সবই আছে ফাইলবন্দি হয়ে হয়তো কোন অফিসারের টেবিলের চিপাচুপায়। কর্তৃপক্ষ যেমন এলাকাবাসীদের ধৃষ্টতায় ত্যক্ত-বিরক্ত, এলাকাবাসীরাও তেমন কর্তৃপক্ষের উসদাসীনতায় অভ্যস্ত হয়ে প্রতিকূলতাকেই বন্ধু বানিয়ে সমুদ্র আর অন্ধাকারের সমন্বয়ে দিন কাটিয়ে দিচ্ছে।

সবকিছুর পরও চট্টগ্রাম এখনও আমার স্বপ্নের শহর... এইটুকুন বিলাসিতা এখনও রয়ে গেছে এই অকৃতজ্ঞ অস্থি-মজ্জায়। আমার বাড়ির ২,৩ টা রোড পরেই ছিল আমার জীবনের প্রথম স্কুল...জীবনের মূল্যবান ৬'টি বছর যেখানে কাটিয়েছি রীতিমত মাস্তানী করে। দজ্জালনী প্রিন্সিপালের সাথে টেক্কা দিয়ে বাঁদরামী করতাম... শাস্তির পরিমান যত বাড়ে বাঁদরামীও তত বাড়ে। ভাগ্যিস আমার বাবা মা শুধু একবারই যেতেন স্কুলে, তাও সারা বছরের বেতন একসাথে দিতে বছরের একদম শুরুতে... যারফলে বছর ঘুরে আসতে আসতে টিচাররা আমার বাঁদরামীর ইতিহাস প্রায় ভুলেই যেতেন নালিশ করার বেলায়। বহুবছর পর এবার দেখতে গেলাম ক্বেমন আছে আমার 'হাতে খড়ি'। ছোট্ট স্কুলটা আজ কত বিশাল জায়গা করে নিয়েছে। করিডোর দিয়ে হাটার সময় খুব নাসদুনুদুস ধবধবে ফর্সা একটা বাচ্চার চেহারা মনে পড়ছিল। ক্লাস থ্রির কোন এক ক্লাস টেস্টে ওই গাপ্পুস ছেলেটাকে আমি একটা ঠাসিয়ে চড় মেরেছিলাম। কাহিনি ছিল খানিকটা এরকম, আমরা সবাই পরীক্ষা দিচ্ছি আর গাপ্পুসটা পিছে বসে গান গাচ্ছে নইলে চিৎকার করে বাকীদের জ্বালাচ্ছে। একেতো খুব একটা কিছু পারি না তার উপর এমন জ্বালাতন আর কাহাতক সহ্য করা যায়, উঠে গিয়ে কথাবার্তা ছাড়া ঠাস ঠাস! পোলাতো বেক্কলের মত গালে হাত দিয়ে বসে আছে আর আমি কোমড়ে হাত দিয়ে তারে হুমকি ধামকি দিয়েই যাচ্ছি। কিছুক্ষন পর হুঁশ হলে গাপ্পুস তেড়েফুড়ে দাড়িয়ে তোতলাতে তোতলাতে বলতে থাকল 'থুমি থুমি...বেদ্দপ...মাইয়া...থুমি...'। আমি বেচারাকে থামিয়ে বললাম... 'এই পোলা থুথু ফালানি বন্ধ কর... পরীক্ষা দে... আওয়াজ বাইর করলে বুঝিস কিন্তু'। বেচারা এতোই ফর্সা ছিল যে পাঁচ আঙ্গুলের দাগ বসে গিয়েছিল গালে, দুঃখে ২ দিন স্কুলেই আসেনি। এখন কোথায় আছে কে জানে... যদি দেখা হত বেশ হত...খুব করে মাফ চেয়ে নিতাম পিচ্চিটা থেকে।

আহা কিভাবে ভুলি!! ক্লাস থ্রিতেই তো প্রথম প্রেমের আহবান পেয়েছিলুমগো দাদা-দিদিরা। একদিন ক্লাস শেষে বের হচ্ছি দেখি বড় ক্লাসের এক ছেলে আমার দিকে এগিয়ে আসছে হাতে রজনীগন্ধা নিয়ে। আমার হাতে রজনীগন্ধা দিয়ে ছেলে হাসতে হাসতে বলতে থাকল “শুনো আমার এক ফ্রেন্ড তোমাকে পছন্দ করে, ও বলতে লজ্জা পাচ্ছে তাই আমাকে পাঠাইছে এগুলা দিয়ে, ও তোমার জন্য গেইটে আমড়া নিয়ে ওয়েট করতেছে”। একেতো এতোগুলা পোলাপাইনের সামনে এমন অপমানজনক ব্যাপার ( বুকা আছিলাম তাই মনে করছিলাম কাউরে না দিয়া আমারে দিতাছে এইটা একটা বেইজ্জইত্তা কারবার), তার উপর রজনীগন্ধা (কেন জানি আমার অপছন্দের একটা ফুল) দেখে আমারতো পুরা চান্দি গরম। ওই স্টিক দিয়েই পোলাটারে এমন মাইরটা দিলাম যে এরপর বহুদিন ওই ছেলেকে আর সামনে আসতে দেখিনি। গেইটে যায়ে কোন আমড়া বালককেও আর পাইনি, সে হয়তো তার বন্ধুর অবস্থা দেখে আমড়া নিয়ে পগাড়পার হয়ে গিয়েছিল ততক্ষনে। আহা দেখা হল না চক্ষু মেলিয়া সেই আমড়াওয়ালা বালককে, আফসোস! রজনীগন্ধার মর্ম বুঝিতে পারি নাই বলিয়ায় আজ এই করুন দশা, রজনীগন্ধাতো দূরে থাক এখন কোন গাঁদা ফুল দেনেওয়ালাও নাই। মন খারাপ
যেখানেই থাকি যতদূরেই থাকি

[পরবর্তীতে চলিলেও চলিতে পারে...]


মন্তব্য

সৌরভ এর ছবি

এই মাইয়া তো দেখি ছোটবেলা থাইকাই বেদ্দপ ছিলো।
গুরুজন তো বটেই, বড় ক্লাসের ছেলেদেরও মান সম্মান ডুবাইসে।

অফটপিক:
ভালা আছো নি? দিরিশাপু?


আহ ঈশ্বর, আমাদের ক্ষোভ কি তোমাকে স্পর্শ করে?


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

দৃশা এর ছবি

মানী রাখিতে না জানে নিজের মান.. তাহইলে কিভাবে হয় তার অপমান?
ভালা আছি। খোকা তুমি ভালো? তোমার মেট্রিক ফেইল হনুফা বিবি ভালা?

দৃশা

সৌরভ এর ছবি

আল্লার কাছে হাজার শোকর, এই মাইয়ার সাথে এক স্কুলে পড়ি নাই। কিংবা এক শহরে থাকি নাই।
দেখা যাইতো কাছের কে না কে প্রেস্টিজ হারাইছে।


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

দৃশা এর ছবি

কাছের কারো কথা বাদ দাও... নিজের কথা চিন্তা কইরা কইছ হেইডা কও।

দৃশা

আহমেদুর রশীদ এর ছবি

গম অইছে।

---------------------------------------------------------
আমাকে ডাকে আকাশ, বোঝে মাটি হাওয়া জল
বোঝে না মানুষ আর বিনাশী মুদ্রার ছল

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.

দৃশা এর ছবি

গম দি এবার এব্বারে আডা বানায় হেলযুম।

দৃশা

ফেরারী ফেরদৌস এর ছবি

বিপদজনক মানুষ তো আপনি! যাই হোক, ভাল লিখেছেন। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

দৃশা এর ছবি

ভাল লাগল জেনে খুশি হলাম। হাসি

দৃশা

shurovee এর ছবি

আপনার অতীত স্মৃতি হারিয়ে যায়নি বোঝা যাচ্ছে।
সুরভি.

দৃশা এর ছবি

যেদিন হারাইয়া যাইব সেদিন যে কোন অমানুষটা হমু কে জানে!

দৃশা

মাহবুব লীলেন এর ছবি

সিলেট ছেড়ে আসার সময় একজনের কাছে ১০০ টাকায় পুরো শহর বিক্রি করে দাবি ছেড়ে চলে এসছিলাম

এখন আবার দিলেন তো মগজের কামড়ানি বাড়িয়ে

দৃশা এর ছবি

মস্তিষ্ক একখান জলজ্যান্ত আপদ... মাঝে মাঝে বশে থাকে না আপদটা। তখন মাইরের উপর ঔষধ নাই।

দৃশা

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

আমি উদার মানুষ, আমি স্বত্ব ত্যাগ করে দিয়ে এসেছি একজনকে। এখন তার শহরে গেলে কেমন কেমন লাগে। সে যাই হোক, সচলে দেখি আরেকজন দস্যি এল।
লীলেন ভাই আমার কমেন্টটা আপনার কেয়ারঅফে দিলাম। মাইয়া যা ব্যাদ্দপ।

চট্টগ্রাম আমারও প্রিয় শহর। তবে পরকিয়া টাইপ প্রিয়, আপনটা উত্তরে।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

দৃশা এর ছবি

দস্যি !! ব্যাদ্দপ !! তওবাস্তাকফিরুল্লাহ মিনযাল্লেক !!
আপনে এইভাবে একজন নিরীহ মানুষের নামে কুকথা কইতে পারলেন !! আপনার ল্যারিংক্সে কথাগুলা আটকাইলো না?... দুঃখজনক !! খুবই দুঃখজনক !!

দৃশা

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

খাইছে... ভালো লাগলো... চলতেই হবে...
আমার ভাই ইঁট কাঠ বালি ধুলি আর ছিনতাইঅলা ঢাকা শহরটাই সম্বল... এরে ছাইড়া থাকা আমার জন্য টাফ...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

দৃশা এর ছবি

কে কারে কখন কেমনে খাইল টেরও পাইলাম না !
ভাল লাগছে জাইনা তো দিল গার্ডেন গার্ডেন হো গ্যায়া।
থ্যাংকুলা।

দৃশা

৯৯০৩ এর ছবি

খারাপ না .....আমি লিখলে আরও খারাপ হতো ..... আশা করি পরবর্তি পর্ব আরও করুন হবে........321

321

দৃশা এর ছবি

আপনার দোয়ায় (বদদোয়ায়) নিশ্চয় তেমনি হবে। ভাল মানুষের কথা তিনি আবার খুবই রাখেন। দেঁতো হাসি

দৃশা

ধ্রুব হাসান এর ছবি

তো অনে হাতে খড়ি স্কুলের মাই-ফুয়া? পুরা সিডিএ এলাকায় পরিচিত জনের সংখ্যা কতজনে দাড়ালো আপনিসহ (যদিও ইহা ভার্সুয়াল)?

রজনীগন্ধা আসলেই একটা বাজে টাইপের ফুল, এর সবচেয়ে বড় ফজিলত হলো পিটানোতে এবং আপনি তার যথার্ত ব্যবহারই করেছেন মাশাল্লাহ্‌।

আমার মনে আছে, এই শহর প্রথম আমি ছেড়ে যাই হঠাত করে প্রচন্ড যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি ও শব্দ দূষনের কারণে (যুক্তিটা ছিলো এরকম এই শহর যদি এইভাবে বলতকার হতে থাকে নিয়ত নগর পরিকল্পকদের হাতে, তো ঢাকা কি দোষ করলো? বন্ধুদের বললাম, চল ঢাকায় যায়। চলে গেলাম)।
দুঃখটা অন্য জায়গায়। ব্যক্তিগতভাবে মীর নাছির বা আমাদের জনপ্রিয় মেয়র মহিউদ্দিন সাহেবকে চেনা-জানার পরও বলতে বাধ্য হয়েছিলাম, আজ আবারো বলি, এসব নেতারা দেশের ১০ বছর পরের ভবিষ্যতও ঠিক ঠাহর করে উঠতে পারেন না। যা পারেন তা হলো দ্রুততম সময়ে কি করে জনপ্রিয় হওয়া যায়, কি করে মাল বানানো যায় নিজে এবং পার্টির নমস্য লোকজন নিয়ে সিন্ডিকেট বানিয়ে। তা না হলে এত বড় চাক্তাই খালটাকে এভাবে কেউ মেরে ফেলে! কর্ণফুলিটাকে এভাবে ভরাট করে! শহরের প্রায় প্রতিটা বড় নর্দমা বা খালের উপর এভাবে একের পর এক মার্কেট বা স্থাপত্য বানায়! আজ থেকে ১২ বছর আগেও কখনও শহরে এভাবে পানি জমতে দেখিনি। দেখিনি আজকের মতো করে পাহাড় ঢেকে বিজ্ঞাপনের সাইন বসাতে। আজকের চাটগাঁকে দেখলে মনে হয়, একসময়ের অসম্ভব রুপসী কোন নারীকে আমরা সবাই মিলে সুযোগে (চ বর্গীয় গালি) ____ রাস্তার অচ্যুত মাল বানিয়ে দিয়েছি!
এখন একমাত্র সম্বল অকর্মন্য লোকের মত বসে বসে পুরোনো প্রেম হাতিয়ে সুখ লাভ!

কি আর খইতাম, গোস্‌সাই মনে খয়যে এক একগুরে জিশুর মতো জীবন্ত বাধিঁ বেক রাস্তার মোড়ত লেম ফোষ্ট-র লগে লটকায় দিতাম রেগে টং

দৃশা এর ছবি

আপনেও কি সিডিএবাসী ছিলেন নাকি?
কি আর খইতাম, গোস্‌সাই মনে খয়যে এক একগুরে জিশুর মতো জীবন্ত বাধিঁ বেক রাস্তার মোড়ত লেম ফোষ্ট-র লগে লটকায় দিতাম ...... আগাইয়া যান লগে আছি।

দৃশা

তারেক এর ছবি

আপনেও হাতে খড়ির? আমি ক্লাস সেভেন-এইট দুই বছর পড়ছিলাম ঐ স্কুলে। আমার ছোটাপুর বাসা সিডিএতে, ও আগ্রাবাদ গার্লসে পড়ায়। আমাদের বাসাও সিডিএর কাছেই, শন্তিবাগে।
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

দৃশা এর ছবি

ওরে আপনে তো শুধু আমার জ্ঞাতি ভাই না বরং প্রতিবেশীও।
--------------------------------------------------------
দুঃখ তোমায় দিলেম ছুটি...
বুক পাঁজর আজ ফাঁকা।
দুঃখ বিদায় নিলেও সেথায়...
দুঃখের ছবি আঁকা।

দৃশা

তিথীডোর এর ছবি

ওরে, শান্তিবাগ তো আমাদের ছাদে দাঁড়িয়ে দেখা যায়! (তালিয়া)

আমার এক খালা হাতে- খড়িতে পড়ান, আরেক খালাও একসময় পড়াতেন আগ্রাবাদ গার্লসে...

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

তিথীডোর এর ছবি

দৃশা আফামনি,
সিডিএ'র জলাবদ্ধতার সমস্যা ইহজীবনে মিটবে বলে মনে হয়না... একটু বৃষ্টিতেই নিচু রাস্তাগুলো ডুবে যাবে, সঙ্গে এসে মিশবে সাগরের জোয়ারের পানি! মন খারাপ
তবু চাঁটগাঁর মতো সুন্দর শহর আছে নাকি আর কোথাও?
কাভি নেহি!

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

খেকশিয়াল এর ছবি

দৃশা, আমড়া খাবি? গড়াগড়ি দিয়া হাসি
না থাক এম্নেই কইসি, আমারে আবার মারিস না ইয়ে, মানে...

-----------------------------------------
রাজামশাই বলে উঠলেন, 'পক্ষীরাজ যদি হবে, তা হলে ন্যাজ নেই কেন?'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

দৃশা এর ছবি

বন্ধু এখন সময় খারাপ। মানুষ মাগনা বিষ দিলে খাইয়া ফেলাই আর তুই তো ভালা জিনিস সাধছস। শুকরিয়া।

দৃশা

অতিথি লেখক এর ছবি

বাপরে বাপ, যে কাহিনী তুমি শুনাইলা !!!
ভাল কথা বলে রাখি, কেউ যদি তোমাকে ফুল দিয়েই ফেলে তাহলে প্রেম গভীর না হওয়া পর্যন্ত এই ছেলেদের পিটানোর কাহিনী বলতে যেওনা। বেচারির সহ্য করতে পারবেনা।

[ভূঁতেঁরঁ বাঁচ্চাঁ]

দৃশা এর ছবি

আচ্ছা আপনারে চিফ এডভাইসার হিসাবে নিয়োগ করা হইল এ বিষয়ে। তুমি হেফি?

দৃশা

কীর্তিনাশা এর ছবি

আমিও ঢাকার শহরে বড় হইছি। তাই ঢাকাই আমার সব। তবে আমার একটা গ্রামও আছে, বরিশালে। সেই গ্রামও আমার সব। চট্টগ্রামও আমার খুব ভালো লাগে। ভালো লাগে - বান্দরবন, কক্মবাজার, রংপুর, রাজশাহী, পটুয়াখালি, ঝালকাঠি। মোদ্দাকথা পুরা বাংলাদেশটাই আমার ভালো লাগে। তাই পুরা বাংলাদেশই আমার বাড়ি।
আপনার লেখা ভালো হইছে।
-----------------------------------
সোনার স্বপ্নের সাধ পৃথিবীতে কবে আর ঝরে !

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

দৃশা এর ছবি

ধন্যবাদ। হাসি

দৃশা

নিরিবিলি এর ছবি

আরে বাপরে...... এই কাহিনী তাইলে...সাংঘাতিক লিখছেন।

দৃশা এর ছবি

ছুটুদের ব্যাপার স্যাপারে আবার আংকেলরে ডাকাডাকি কেন...মুশকিল!!
পড়ার লাইগা সাংঘাতিক রকমের ধন্যবাদ।

দৃশা

নিঘাত তিথি এর ছবি

দৃশা আফারে বহুদিন পরে দেখলাম মনে কয়। আপনার থেকে মন খারাপ কথা আশা করি নাই, তাই শুরুর দিকের কথা পড়ে মন খারাপ শুরু হইতেই শুরু হইলো আপনার দুঃখের মধ্যের হাসির খোরাক হাসি । আপনে হইলে জন্ম সেন্স অফ হিউমারওয়ালা মানুষ, এই না হইলে হয়?
গানের জন্য ধন্যবাদ। অতি পছন্দের একটা গান আমার। অনেক কথা বুঝি না, কিন্তু উদাস করা সুরটাই যথেষ্ট...
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

দৃশা এর ছবি

বুঝলেন বেহেন, বহুত সিরিকাস টাইপের পোস্ট করতে চাই... মাগার কোন চিপা দিয়া জানি কি হইয়া যায়। মন খারাপ
মাথা ভর্তি গোবর... ভারী কিছু চিন্তা করতে গেলেই নিউরোনগুলা আবুল হইয়া যায়...বেশীদূর তেনারা আগাইতে দেয় না। তারপর যেই লাউ সেই কদু... পুরানো তেনাই প্যাঁচাইতে থাকি।

দৃশা

কনফুসিয়াস এর ছবি

ডর খাইছি!
লেখা চলুক।

-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

দৃশা এর ছবি

হুদাই ডর খাইলেন? আমারে কইতেন লগে রুডি নইলে ভাত দিতাম। পেটটা তো ভরতো তাইলে। আরে আগে কইবেন তো ভাই। হুরররররররররররর।

দৃশা

স্বপ্নাহত এর ছবি

হ, আমিও ডরাইসি। তাই ম্যালা আগে পইড়াও আইলাম সবার শেষে কমেন্টাইতে।

আবারো বলি, আমার হাতে আমড়া বা রজনীগন্ধা কোনটাই নাই কিন্তু হাসি

চট্টগ্রাম আমার নিজের শহর না। তবু নামটা শুনলেই ম্যালা স্মৃতি মনে পড়ে যায়। সেসব স্মৃতির শুরুটা হয় মুগ্ধতাবোধ নিয়ে আর একটা সময় বিষণ্নতায় এসে থামে ...

যাইহোক, লেখা ব্যাপক হইসে। নেক্সট...

---------------------------

থাকে শুধু অন্ধকার,মুখোমুখি বসিবার...

---------------------------------

বাঁইচ্যা আছি

দৃশা এর ছবি

আমার গতি এখন কচ্ছপ থেইকাও খারাপ... নেক্সট যে কবে আইবো কইতে পারি না... আর হুদা খালি খালি যে কেন ডর খাইতাসেন... আমারে কইলেও তো আমি লগে আরো কিছু দিতে পারি রে ভাই পেট ভরনের লাইগা। আমার ঘরে আইলেন হুদা ডর খাইয়া যাইবেন গা, এটা কুনু কথা হইল। লগে পিলে চমকানি, ছ্যাবড়া খাওয়া, ধাতানি, আতকা খাওয়া, কত কিছুই তো আমি দিতে পারি। ধূর ভাই আপনেরা অতিথি সেবার সুযোগই দিতাছেন না। গুনাহ হইব তো আমার।

দৃশা

ilajar islam এর ছবি

" রজনীগন্ধার মর্ম বুঝিতে পারি নাই বলিয়ায় আজ এই করুন দশা, রজনীগন্ধাতো দূরে থাক এখন কোন গাঁদা ফুল দেনেওয়ালাও নাই। "

kotha sotto. shunen mormo bujhilei apni shesh, koto rojoni , golab , kodom ashbe .... thik toto din e ashbe joto din apni na nen . jedin niben oi din e shesh . so don be sad . be single & b rude to the world and the world will offer u more .

দৃশা এর ছবি

বুঝলাম অভিজ্ঞতা থেকে বলেছেন।
---------------------------------------------------------
দুঃখ তোমায় দিলেম ছুটি...
বুক পাঁজর আজ ফাঁকা।
দুঃখ বিদায় নিলেও সেথায়...
দুঃখের ছবি আঁকা।

দৃশা

ILAJAR ISLAM এর ছবি

সৃতি ব্যাপারটা সব সময় এই মিশ্র অনুভুতি জন্ম দেয়| আমার নিজের সৃতি শক্তি বেশ দুরবল , তাও কিছু কিছু সৃতি আছচন্ন করে ফেলে সময় সময়, সৃতি প্রতারনা করে বইকি| আপনার লেখাটা পরে খুব ভাল লাগলো, চমৎকার একটা সহজ ব্যপার আছে আপনার লেখায় ,Intellectual না বলেই বোধয় আমার কাছে আপনার এলেবেলে লেখাগুলো খুব চমৎকার লাগে |
প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ব্যবধান থাকবেই | পরিবর্তন ও আসবে | হয়ত নগর আরও বেশি সবুজ হারাবে, আকাশ এর গায়ে লেপটে উঠবে রঙ্গিন সব বিলবোর্ড, শিল্পির শিল্প নিয়েও বানিজ্জ্য হবে আগেরচে বেশি, চির প্রতিজগিতাময় এই দুনিয়া তে ডিজ্যুস , সাইবারজ্যুস আরও অনেক নাম না জানা জ্যুস প্রজন্ম আসবে হয়ত ! বিষন্ন কবিদের বিষন্নতা বিলাস এর সুজগ কমেযআচ্চে সত্যি, কি আর করা!
কিছু মানুষ দিন এ কিছু মানুষ হয়ত রাত এ ঘুমাবে , নয়ত সবাই একসাথে রাজপথ এ নামলে রাজপথ র কি হাল্ হবে বলেন!? পরিবরতন যখন প্রয়োজন এর তাগিদে, টিকে থাকার তাগিদে, গতিময়তার তাগিদে তখন আসলে খুব বেশি দোষ দেয়াযায় না পরিবরতন কে | আপনি অবস্য অভিযোগ ও করেননি প্রজন্ম নিয়ে, অবেবস্থাপনার ভারে কম বেশি আমরা সবাই ক্লান্ত |
এবস্থার অবসান হবে নিশ্চই!

আমাদের ঘুনে ধরাকিছুটা বিভ্রান্ত প্রজন্ম মাঝে মাঝে চমকে উঠে, চমকে উঠি আমি নিজেও !
অপ্রাসঙ্গিক হলেও আপনার '৪ঠা সেপ্টেম্বর ১৯৭১ থেকে ২০০৭ ' লেখাটা আমাকে আর আমাদের ছোট্ট দল টাকে বিশেষ ভাবে অনুপ্রানিত করেছে ! অসংখ ধন্ন্যবাদ সেজন্য |

“ ফিরে দেখো আজ আমাদের চোখে অশ্রু নেই ... রয়েছে তোমাদের তরে নিরলোভ ভালোবাসা আর বুক ভরা অহংকার ! “

প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে যত পরিবরতন এ আসুক বুকের গভীর এ ধরে রাখে কিছু সত্য! আপনার লেখা তার প্রমান

ভাল থাকুন
ফুল আর ফল এ ভরে উঠুক , , , জীবন
__________________________________________________________________“Paris, London , New York , Tokyo, Dhaka “ এমন কেন না !! কেন ভাবতে পারি না !!!

দৃশা এর ছবি

বিশেষভাবে অনুপ্রানিত হয়েছেন জেনে আমিও অনুপ্রানিত হলাম।
---------------------------------------------------
দুঃখ তোমায় দিলেম ছুটি...
বুক পাঁজর আজ ফাঁকা।
দুঃখ বিদায় নিলেও সেথায়...
দুঃখের ছবি আঁকা।

দৃশা

অবাঞ্ছিত এর ছবি

আরি খাইছে। তিন কেলাশে প্রেম পাইছেন , মাইরো দিছেন আবার কমপেলেন?

কি আর কমু দুঃখের কথা রাখতে না পারি মনের ব্যাথা..... এই যুগে গোলাপ গ্যান্দা পাইবেন না... ওইগুলান এন্টিক। এইটা হইল ডিগ্রি চাকরি আর বাপের টাকার যুগ....... টাকা থাকলে গাড়ি আছে গাড়ি থাকলে বাড়ি আছে বাড়ি থাকলে সাথে নারীও আছে। ভুল জিনিস খুজতাসেন গো আফামণি.... যুগের সাথে তাল মিলায়ে ইংরেজীতে যারে কিসের ছিদ্র জানি বলে তাই খুজেন দেখবেন জীবন ঝরঝরা ।

নাইলে তামা তামা... হাতে কলম ধরা কবিরা আইসা কইবে -

"বাগানেতে চরিতেছে খাসী
আমি তোমায় বড় ভালোবাসি"

আর রজনীগন্ধার বাড়ি খাইবে ওই দিন আর নাই।

I think , therefore i am - Descartes

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

দৃশা এর ছবি

হুম... যাহা বলিয়াছেন সত্য বলিয়াছেন।
------------------------------------------------------------
দুঃখ তোমায় দিলেম ছুটি...
বুক পাঁজর আজ ফাঁকা।
দুঃখ বিদায় নিলেও সেথায়...
দুঃখের ছবি আঁকা।

দৃশা

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।