নোয়াহ্'কে সকলেই অতিশয় সজ্জন ব্যক্তি হিসাবে পছন্দ করিত। গঞ্জে যে বড় মাছ বাজারটি ছিল, নোয়াহ্ সেইখানে বসিয়া ঝালমুড়ি বিক্রয় করিয়া জীবিকা নির্বাহ করিত। তাহার ঝালমুড়ির সুখ্যাতি সুদূর চীনদেশ পর্যন্ত পৌঁছিয়া গিয়াছিল। কথিত আছে, চীনদেশের রাজকন্যা প্রতিনিয়ত ঝালমুড়ি খাইবার লোভে নোয়াহ্ কে বিবাহ করিতে উদ্যত হইয়াছিল। নোয়াহ্'র প্রথম পক্ষের বিবি ছিল অতিশয় দজ্জাল প্রকৃতির। অত্যাচারিত নোয়াহ্'র সংসার জীবন সম্পর্কে বেশ তিক্ত অভিজ্ঞতা হইয়া গিয়াছিল। তাই রাজকন্যার প্রস্তাবে রাজী হওয়ার কথা দুর্জনের কল্পনাতেও ঠাঁই পায়নি।
সেইবার খুব গরম পড়িল। নোয়াহ্'র ঝালমুড়ি ব্যবসায় ধস নামিল। বণিকেরা আশংকা গরমের দিন- জল ব্যতীত ঝালমুড়ি খাইয়া কোন বিপদ হয়! শেষে বরফ লইয়া হাগনকুঠিতে ঢুকিতে হইবে জ্বলুনি বন্ধ করিবার নিমিত্তে।
হঠাৎ একদিন নোয়াহ্'র মাথা বিগড়াইয়া গেল। সে বাজারের এমাথা-ওমাথা দৌড়া দৌড়ি করিতে লাগিল এবং বণিকদের গালমন্দ করিতে লাগিল, "তোমরা সবাই আমার সাথে ফাইজলামী কর, আমার কথা অমান্য কর, তোমরা ধ্বংস হইবে। তোমাদিগকে ধ্বংস করিবার নিমিত্তে শীঘ্রই একটি মহাপ্লাবন আসিবে। আমি একটি জাহাজ তৈরি করিব। যাহারা আমা হইতে ঝালমুড়ি কিনিয়া খাইবে, কেবলমাত্র তাহাদিগকেই উক্ত জাহাজে উঠিতে দিব। বাকীরা ডুবিয়া মরিবে।"
সবাই ভাবিল, নোয়াহ্ ঝালমুড়ির বিক্রয় বাড়াইবার উদ্দেশ্যে বিজ্ঞাপনী ফন্দি আঁটিয়াছে! তাহারা সিটি বাজাইয়া নোয়াহ্'কে উৎসাহ দিতে লাগিল। কতিপয় দুষ্টুলোক নোয়াহ্'র বউকেও বিজ্ঞাপনী প্রচারণায় ব্যবহার করিবার পরামর্শ দান করিল।
দুইদিন যাইতে না যাইতেই নোয়াহ্ এলাকার সবচাইতে বড় কড়ই গাছটা কিনিয়া ফেলিল। গঞ্জের বণিকেরা তাহার পাগলামিতে ক্রমান্বয়ে বিরক্ত হইয়া উঠিতে লাগিল। নোয়াহ্ তাহাতে বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ না করিয়া জাহাজ তৈরিতে উঠিয়া পড়িয়া লাগিল। কিয়দ্দিন বাদেই গঞ্জের অদূরবর্তী খালে একটি জাহাজের কাঠামো ভাসিয়া থাকিতে দেখা গেল।
যতই দিন যাইতে লাগিল, নোয়াহ্'র অভিসম্পাতের পরিমানও কড়ায়-গন্ডায় বাড়িতে লাগিল। বণিকেরা অত্যাচার সহ্য করিতে না পারিয়া নোয়াহ্'র বিরুদ্ধে শালিস বসাইল। সাব্যস্ত হইলো, নোয়াহ যদি নিজেকে না শুধরাইয়া লয়, তাহা হইলে তাহার জাহাজ ধ্বংস করিয়া দেওয়া হইবে, এবং তাহাকে মাথা মুড়াইয়া, ঘোল ঢালিয়া তাড়াইয়া দেওয়া হইবে।
নোয়াহ্ উক্ত শালিসের সিদ্ধান্ত মানিয়া লইলো না। বরঞ্চ সে বলিয়া বেড়াইতে লাগিল, সবাই তাহার বিরুদ্ধে ভিলেজ-পলিটিক্স করিতেছে। তাহাকে সকলে মিলিয়া ছাগুরাম বানাইতে চেষ্টা করিতেছে।
পরদিন প্রাতঃভ্রমনে বাহির হইয়া নোয়াহ্ আবিষ্কার করিল, কে যেন তাহার সাধের জাহাজে হাগিয়া রাখিয়াছে! সেইদিন গঞ্জবাসী সকলের ঘুম ভাঙ্গিল নোয়াহ্'র তীব্র গালাগালিতে। তাহারা সবিস্ময়ে আবিষ্কার করিল নোয়াহ্ সভ্যতা-ভব্যতা ভুলিয়া মোড়ল হইতে শুরু করিয়া চামারের মা-বাপ তুলিয়া গালমন্দ করিতেছে। কিয়ৎকাল বাদে মোড়ল আসিয়া উপস্থিত হইল। তখনো নোয়াহ্'র গালাগালি বন্ধ হয় নাই।
নোয়াহ'র মুখে অতিশয় কুৎসিত গালাগালি শুনিয়া মোড়ল শুধাইলো, "উচিৎ কাজ হইয়াছে।" মোড়লের কথা শুনিয়া গঞ্জের সকলের হৃদয়ে আনন্দের ফোয়ারা বহিতে লাগিল। নোয়াহ্'র অত্যাচারে সকলের নাভিশ্বাস উঠিয়া গিয়াছিল।
গঞ্জের আবালবৃদ্ধবনিতা নোয়াহ্'র জাহাজে হাগিয়া বেড়াইতে লাগিল। কিয়দ্দিনের মধ্যেই জাহাজ পুরীষে পরিপূর্ণ হইয়া উঠিল এবং তাহার সুগন্ধ চতুর্দিকে ছড়াইয়া পড়িল। নোয়াহ্ অসহায় হইয়া ঘুরিয়া বেড়ায় এবং গঞ্জবাসীদের উপর অভিসম্পাত বর্ষণ করিতে থাকে।
গঞ্জের পাশ্ববর্তী গাঁয়ে বাস করিত এক বুড়ি। বার্ধক্যজনিত কারণে সে চোখে খুব একটা দেখিত পাইতো না। লোকজনের কানাঘুষা শুনিয়া বুড়িও একদিন উৎসাহী হইয়া নোয়াহ্'র জাহাজে হাগিবার নিমিত্তে বাহির হইল। লাঠি ঠুক-ঠুক করিয়া, প্রচুর সময় ব্যয় করিয়া, বুড়ি একসময় গিয়া নোয়াহ্'র জাহাজের সম্মুখে উপস্থিত হইল। ততক্ষণে জনে জনে বার্তা পৌঁছাইয়া গিয়াছে। প্রচুর লোক উপস্থিত হইয়াছে বুড়িকে উৎসাহ দেয়ার জন্যে। প্রবল করতালির মধ্য দিয়া বুড়ি হাগিতে বসিল।
বলা নেই কওয়া নেই হঠাৎ কি হইতে কি হইয়া গেল! বুড়ি টুপ করিয়া পুরীষের মধ্যে পতিত হইল। চারিদিকে গেল গেল রব উঠিল! কিয়ৎকাল বাদে সকলে সবিস্ময়ে লক্ষ্য করিল, বুড়ি যে স্থানে পতিত হইয়াছে সেই স্থান হইতে এক অপরূপ সুন্দরী, উদ্ভিন্নযৌবনা নারী উঠিয়া আসিতেছে।
বাতাসের অধিক দ্রুত গতিতে এই খবর চতুর্দিকে ছড়াইয়া পড়িল। আশেপাশের দশ গাঁয়ের সব বুড়ো-বুড়ী আসিয়া নোয়াহ্'র হাগু ভর্তি জাহাজে স্নান করিতে আরম্ভ করিল সুন্দর হইবার দুরাশায়। কালক্রমে লোকসমাগম এতই বাড়িয়া গেল যে তাহারা জাহাজের কাষ্ঠ পৃষ্ঠ হইতে হাগু কাঁচাইয়া লইয়া যাইতে শুরু করিয়া দিল।
এমনি করিয়া ঈশ্বর সীমালঙ্ঘনকারীদের জন্য নিদর্শন রাখিয়া দিল যাহাতে তাহারা হাউকাউ চেঁচামেচি ফেলিয়া রাখিয়া সময় থাকিতে বাঁচিবার আশায় জাহাজ বানাইতে সক্ষম হয়।
লেখাটি ইতিপূর্বে সামহোয়্যারইন ব্লগে প্রকাশিত হয়েছিল
মন্তব্য
জানা কাহানি...তাও পইড়া মজা পাইলাম...সেইরকম।।
কিন্তু একটা ব্যপার...মানুষের পশ্চাতদার(ব লিখতে পারি না)দিয়া নির্গত বর্জ্যপদার্থের জৈবক্রিয়া আপনার লেখাই এতোবেশী কেন প্রতিফলিত হয়?মাজেজা কি?
দৃশা
আগেই পড়িয়াছিলাম।
আর কি বলিব, নুতন সুধার অপেক্ষায় রহিলাম!
আমার বেলা যে যায় সাঁঝ-বেলাতে
তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে
ইহা পড়িয়া আগেই পৃত হইয়াছি। এইমত আরও চাই
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
জটিল।
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
নতুন শরাবন তহুরা চাই!!
পঠিত সীল মারা হইল ।
মাইচ্চে আমারে!
আমার মত নির্বিরোধী মানুষ আপনার কী ক্ষতি করেছে?
কি মাঝি? ডরাইলা?
আপনি নতুন পোস্ট না দিলে, এরকম পুরানা গুলায় গুতাগুতি করবো।
আমার স্পীড কচ্ছপের মত। গত দুই বছরে আমি সর্বমোট ৩০/৪০ টা পোষ্ট করেছি।
এই স্পীড কেমনে বাড়াই?
কি মাঝি? ডরাইলা?
শেষের লাইনের কথাটা এইরম হৈলে কেমন হয়, বাকিরা ুদাইয়া মুড়ি খাইবে!
ইভান অলমাইটি নামে অনুরুপ কাহিনীর একটা সিনেমা আছে জাহাজ বানাননো নিয়ে।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
হুম। এই লাইনটা যোগ করতে পারলে ভাল হইতো। কিন্তু মডু শালায় যদি বলে আমি গাইল দেই তাইলে তো বিপদ।
আমার সিনেমাটা মনে হয় ইভান অলমাইটির আগেই মু্ক্তি পাইছিল।
কি মাঝি? ডরাইলা?
- কিন্তু ইভানের জাহাজে তো লোকজন হাগে না।
আফটার অল আম্রিকার লোকজনতো!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
এইটা ছিল "ছাগল অলমাইটি"। মনে হয় এই কারনেই লোকজন হাগছিল!
কি মাঝি? ডরাইলা?
জটিল হাসির গল্প! ছাগুকোও ধরলেন অবশেষে!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
ছাগুকে খুব মিস করি।
কি মাঝি? ডরাইলা?
আমি একেবারেই করিনা। বড্ডো বেঁচে গিয়েছি।
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
ছাগুর অনেক অবদান আছে। ছাগু না থাকলে মুখফোড়ের প্রতিভা থেকে আমরা বঞ্চিত হতাম।
তাছাড়াও ছাগল পিটিয়ে মাঝে মাঝে আনন্দ পেতাম।
কি মাঝি? ডরাইলা?
নতুন মন্তব্য করুন