[কৈফিয়ত : কহলিল জিব্রানের লেখা ভাল পাই। শুরু বেশ আগে 'The Prophet' দিয়ে। গতকাল আজিজে গিয়ে কহলিল জিব্রানের সংকলনটা চোখে পড়ল। কিনে ফেললাম। চৌদ্দটা বইয়ের সংকলন।
...
যদি আপনাদের ভাল লাগে চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে আছে। তবে এও জেনে রাখবেন অলস মানুষ প্রতিশ্রুতি দেয়ার ক্ষেত্রে উদার এবং বলাই বাহুল্য অধিকাংশই পুরন না করার অধিকার তারা আলস্যপদবলে সংরক্ষন করে। হিমু ভাই মাঝে মাঝেই ব্লগে হাক দিয়ে তার কিংবদন্তিতুল্য আলস্যের কথা জানিয়ে যান; আমি হাসি। স্বীকার করি রোনালদো ভাল প্লেয়ার, কিন্তু জানবেন একজন মেসিও আছে যে আরও ভাল খেলে। হেহে।
শুরু করলাম তাহলে "The Wanderer - His Parables and His Sayings" এর অনুবাদ "পরিব্রাজক" নাম দিয়ে। নামটা নিজেরই খুব পছন্দ হচ্ছে না, কাজেই পরামর্শ সাদরে গৃহীত হবে।]
তাঁর সাথে পরিচয় হয়েছিল চাররাস্তার মোড়ে। মুখমণ্ডলে অন্তর্গত বেদনার ছাপ স্পষ্ট, পার্থিব বিষয় বলতে গায়ে এক আলখাল্লা এবং হাতে একটি ছড়ি। জানলাম তিনি এক পরিব্রাজক। আমার আতিথ্য গ্রহন করতে তিনি আপত্তি করেননি। আমার স্ত্রী এবং ছেলেমেয়েরাও তাঁকে দেখে খুশিই হয়েছিল কেননা তাঁর উপস্থিতির মধ্যেই এমন এক মহত্ত্ব ও দৃঢ়তা ছিল যা মানুষকে আশ্বস্ত করে।
নৈশভোজ শেষে আমরা সবাই বসেছিলাম গোল হ'য়ে। এই নীরব অদ্ভুত মানুষটিকে ঘিরে আমাদের কৌতুহলের অন্ত ছিলনা। আমাদেরকে অনেক গল্পই তিনি শুনিয়েছিলেন সে রাতে- পথ চলার গল্প, দেখা, না দেখা ও উপলব্ধির গল্প। পরদিনও তিনি থেকে গিয়েছিলেন। সেই সব গল্প আজ আর সব মনে নেই। যদিও ছিলেন তিনি দয়ালু ও সহনশীল, অনেক তিক্ত অভিজ্ঞতার সাক্ষী তাকেও হতে হয়েছিল দীর্ঘ পথ ভ্রমনে এবং কি আশ্চর্য, বলতে গেলে শুধুমাত্র ওই গল্পগুলোই আজো আমার মনে আছে। তাই আজ আমি আপনাদের যে গল্পগুলো শোনাব সেগুলো মূলতঃ এই আশ্চর্য পরিব্রাজকের পথের বেদনার গল্প; পথের ধূলো আর নুড়ির গল্প, ঘাম ও অশ্রুর গল্প, তিক্ত অভিজ্ঞতা ও নিদারুণ উপলব্ধির গল্প।
তিনদিন ছিলেন তিনি আমাদের সাথে। এক অতিথি এসেছিলেন এবং তিনি বিদায় নিয়ে চলে গেছেন, এমনটি কখনও মনে হয়নি আমাদের। বরং মনে হয়েছে আমাদেরই কেউ বাইরে গেছে যে এখনও ফিরে আসেনি।
সৌন্দর্য ও বিকৃতি। পরস্পরের দেখা হয়েছিল এক সাগরের পারে। "একসাথে স্নান করা যাক " বলল তারা।
সময় তাদের ভালই কাটছিল সাঁতার কেটে। দুজনেরই পোশাক খুলে রাখা ছিল পারে বালির উপরে। সৌন্দর্য ভাবছিল- এই দিগন্ত বিস্তৃত সুনীল জলরাশি কতই না সুন্দর। ইতিমধ্যে বিকৃতি পাড়ে উঠে গিয়ে সৌন্দর্যের পোষাক প'রে নিজের পথ ধরেছে।
সৌন্দর্য পারে এসে দেখে পড়ে আছে শুধুই বিকৃতির পোষাক। সে ছিল লাজুক, নগ্নদেহে পথ চলার কথা ভেবে শিউরে উঠল সে।
তাই বাধ্য হয়ে বিকৃতির পোষাক প'রে সেও চলল নিজের পথে।
এবং এমনকি আজও পর্যন্ত মানুষ তাদের চিনতে ভুল করে।
তবে কিছু মানুষ এখনো আছে যারা সৌন্দর্যকে ঠিক চিনে নেয়। কিছু মানুষ আছে যাদের কাছে বিকৃতি পোষাক দেখিয়ে পার পায় না।
মন্তব্য
চমৎকার লাগল। দারুণ অনুবাদ। 'পরিব্রাজক' - নামটা ভালো লাগল।
শুরুর অংশ ইটালিক করায় পড়তে খুব চোখে লাগল।
ভাল লাগল আপনার অনুবাদ।
চলুক।
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
আরো আশা করছি। ভালো লাগলো।
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
প্রিয় লেখকের রচনার দারুণ অনুবাদের জন্য -
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
বেশ ভাল লেগেছে । অপেক্ষায় রইলাম ।
বেশ লাগলো।
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
যদি আপনি জিব্রানের একটা সংক্ষিপ্ত জীবনী দিয়ে শুরু করতেন হয়তো অনেকের পক্ষে তাঁর রচনার প্রেক্ষিত বুঝতে সহজ হতো। আমার এক সময় ধারণা ছিল তিনি মধ্যযুগের এক মুসলিম দার্শনিক। পরে জানতে পারি তিনি আসলে একালের মানুষ (১৮৮৩-১৯৩১) এবং ক্যাথলিক পরিবারের, যদিও তাঁর ও পরিবারের অনেকের আরবি/তুর্কী নাম দেখে বোঝার উপায় নেই -- মায়ের নাম কামিলা, এক বোনের সুলতানা। তাঁর নামও আসলে জিব্রান খলীল জিব্রান বিন মিখাইল বিন সাদ। খলীল কিভাবে কাহ্লিল হলো বুঝলাম না।
মা আমেরিকায় চলে আসেন যখন তাঁর বয়স মাত্র ১২, কিন্তু পরে আবার লেবানন গিয়েছেন শিক্ষার জন্য । 'দ্য প্রফেট' মূল ইংরেজীতেই লেখা।
আমার এ-সব জ্ঞান উইকি থেকে। বহুদিন ধরেই এই বইটি পড়ার আগ্রহ ছিল, কিন্তু সংগ্রহ করতে পারি নি সময়াভাবে। ভালোই হলো , আপনার অনুবাদ এত ভালো যে, মনে হচ্ছে মূলটা না [ অথবা পরে] পড়লেও চলবে।
নতুন মন্তব্য করুন