জেলার নাম লালকুপি - ৬

দুর্দান্ত এর ছবি
লিখেছেন দুর্দান্ত (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৮/০৯/২০০৮ - ৩:০৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ঢাকার একমাসের স্মৃতি অনেকটাই ঝাপসা হয়ে গেছে। অনেকদিন পর ইয়ার-দোস্তদের নিয়ে হৈ-হল্লা, বাসায় বাইরে দেদারসে খাওয়াদাওয়ার পাশাপাশি ভেপ্সা গরম, নিম-ডেঙ্গু, লোডশাডিং এই চলল। ফিরে এসে এই কয়েকসপ্তাহ চর্কিগিরি ; বাসা-অফিস-বাসা। সপ্তাহান্তগুলোও ঝিরঝির বৃষ্টি আর ঠান্ডায় কুপোকাত। হাজারটা কাজ বাকি, ফর্দ বেড়েই চলেছে।

--
সপ্তাহে দুই তিন দিন এক্টূ দৌড়ে নেই, ভুড়ি বাগে রাখার তাগিদ। ঢাকার লাগাতার যিয়াফত, তাই মনস্থ ছিল দৌড়ানোটা ঢাকায় গিয়েও চালিয়ে যাব। আগে ধানমন্ডির রাস্তায়-লেকের পাড়ে, আবাহনি মাঠে, আর বেশী গিয়ার থাকলে সংসদ ভবন তক দৈড়ে আসা হত। ভেবেছিলাম একটু ভোরে বেরোলে স্কুলের ভিড় আমাকে পাবে না। বেরোলাম এবং ধরা খেলাম। লেকের পাড়ে সে এক বিশা-ল জনসভা। কাতারে কাতারে আঙ্কেল আন্টির দল হেঁটে দৌড়ে বেড়াচ্ছেন, দশ গজ পর পর শতায়ু, দশায়ু, সহশ্রায়ু ধরনের ক্লাবের আঙ্কেল আন্টিরা হুহ হাহ করছেন আর খামাখাই একটু পর পর হা হা হা করে ভিলেন হাসি হেসে যাচ্ছেন। এর সাথে আছে বাদাম, পানি, ওজন/প্রেসার মাপার ফেরিওয়ালা। হাঁটতে গিয়েই এর ওর গায়ে ধাক্কা, দৌড়ানো কোথায়?

একদিন ভাবলাম সংসদ ভবনের দিকে যাই। অতশত ভাবি নাই। বয়েজ হাইস্কুলের কোনা থেকে সংসদ এলাকাটা বেশ শান্তি শান্তি নিরিবিলি মনে হয়েছিল। মানিকমিয়া পেরিয়েই এই শান্তি শান্তির শান এ নুজুল বুঝে গেলাম। সংসদ ভবনের হাওয়া খাওয়া কপালে নেউ। ঐখানে সর্বসাধারনের প্রবেশ নিষেধ।

শেষরক্ষা আবাহনী মাঠ। উন্মুক্ত ফুটবল, আট দশ বছর থেকে সফেদ চুলের দাদু, সবাই একসাথে ফুর্তি। কি সুন্দর। অন্তত এটা শিঘ্রি দখল হয়ে যাবে না।

--

অগাস্টের প্রথমদিকের এক ভোরে হাঁটতে হাঁটতে ধানমন্ডি থেকে কাওরান বাজারে মাছের আড়তে চলে গেলাম। জামাই বাড়ী পাঠানোর বড় মাছ মেলে মেঘ্না ঘাট বা সোয়ারিঘাটে – কাওরানবাজার মুলত কমডিটি স্তরের চাষের কৈ, পাঙ্গাস, চিংড়ির বিশাল আয়োজন, কিন্তু অবাক করা বৈচিত্র আর সজীবতা। বেশকিছু আড়তদার আবার নিশ্ স্পেসালিস্ট, একজন শুধুই কাঁচকি মাছ নিয়ে বসেছেন - নানা ধরনের রঙ ও আকারের কাঁচকি মাছ । এর পাশেই দেখি আরেকজন বিঘত সমানগুতুম মাছ নিয়ে বসেছেন। বরফ ভাঙ্গা হচ্ছে, টোল তোলা হচ্ছে, বড় ভ্যান এ করে মাছ আসছে যাচ্ছে। আসল টাস্কি লাগল দামের দিক থেকে। ধানমন্ডির সুপারমার্কেটগুলোতে কেজিতে ২০-২৫টা ওঠে এমন চিংড়ির দাম লেখা দেখলাম আটশো টাকা – আড়তে গিয়ে দেখি এখানে ১০-১৫ সাইজের চিংড়ি বিকোচ্ছে পাঁচশোয়। ক্যামারাটা সংগে নিলে ভাল হত।

--

কিছুদিন আগে এই গানটা শুনেছিলাম। বিবিসির ‘আলো আলো’ র ফ্যানদের ভাল লাগবেই।

Get this widget | Track details | eSnips Social DNA


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

গুতুম মাছ......................ভাই এইটা কি মাছ ? এছাড়া কি মাছ টার অন্য কোন নাম আছে ?
নিবিড়

দুর্দান্ত এর ছবি

পুইয়া মাছ আর রানী হল আমার জানা গুতুমের অন্য নাম। লিঙ্ক দিয়েছিলাম, ছবি দেখে বলুন আপনি একে কি নামে চেনেন।

তানবীরা এর ছবি

হুমম, খানা - পিনা তাহলে ভালোই হয়েছে।

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

তাও তো ভালো। আমার এক কলিগ আছে, তার একদিন খায়েশ হইলো মাছ কিনবে। কাওরান বাজারে গেলো... বড় সাইজের একটা মাছ কিনলো... তারপর ভাবলো একজাতের মাছ নিয়া যাবো? বড়মাছ তো হইলো... একজাত ছোটমাছ নিয়া যাই। তাই গেলো আরেক খাচির সামনে... সেখান থেকে ছোট সাইজের কিছু মাছ কিনে বাড়িতে গেলো গর্বভরে। কিন্তু বাড়ি গিয়েই মুখ চুন... মাছ যে মোটেও দুই জাতের না... একই জাতের দুই সাইজ।

তার আরও ভয়াবহ সব ঘটনা আছে... তারে নিয়াই একটা আস্ত ব্লগ লেখা যাবে... আরেকটা বলি- একবার তার বউ বললো সাগর কলা খাবে। সে গেলো সাগর কলা কিনতে। কিন্তু ঝামেলা হইলো সে কলা চেনে, কিন্তু কোনটা সাগর কলা কোনটা নদী কলা তা চেনে না। কিন্তু নতুন বউ, বলাও যায় না। সে রিক্সা নিয়া গেলো দোকানে। রিক্সাওয়ালারে
-বললো ভাই আপনে সাগর কলা চিনেন?
-সাগর কলা আবার চিনেনা কেম্নে?
-তাইলে আমি দোকানে নামবো... কলা ধরবো... সেইটা যদি সাগর কলা হয় তাইলে আপনে মাথা নাইড়া হ্যাঁ কইবেন, তখন আমি কিনবো।

শেষপর্যন্ত সে সহি সালামতে সাগর কলা কিনেই বাড়িতে ফিরেছিলো অবশ্য।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।