গ্রামীনফোন তার ১০% দেশের পুঁজিবাজারে বিক্রির ছাড়পত্র পেয়েছে। এক খেপে ৪৮৬ কোটি টাকা বা ৭৫-৮০ মিলিয়ন ডলারের মত উঠে আসবে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের টেলেকমশিল্পের তোলা টাকার তুলনায় এটা নিতান্তই বড় কিছু না। তবে এটা বাংলাদেশের টেলেকমশিল্পের জন্য ও ঢাকার পুঁজিবাজারের জন্য এটি একটা বড় ঘটনা।
২০০৮ সালে গ্রামীন আয় করেছে ৬১৪০ কোটি, বিনীয়োগ করেছে ২৭৫০, আর বাজার থেকে ধার করেছে ৪২৫ কোটি। টেলেনর বলেছে যে তাদের বিশ্বব্যাপী কর্মকান্ড থেকে লাভ হয়েছে ৩৫%, ধরে নেই এটা গ্রামীনফোনের ক্ষেত্রেও খাটে। তাহলে তো দিয়ে থুয়ে শুধু লভ্যাংশ থেকেই গ্রামীনের বিনীয়োগ বর্তমান হারে চালিয়ে যাওয়া সম্ভব।
তাহলে এই বাড়তি টাকাগুলো দিয়ে কি হবে?
আরেকটি খবর । প্রথমে ভাবলাম বুঝি গুলতানি। বেক্সিমকো তার ঋনগুলোকে একসাথে করে শেয়ার আকারে বাজারে ছাড়ার প্রস্তাব পুজি বাজারের হর্তাকর্তাদের কাছে পেশ করেছে। খেলটা ভালই। ডুমো ডুমো সব ঋন কর, তারপর বছরের পর বছর তা ফেরত দিও না। তারপর একসময় সেই ঋনগুলোকে কুচিকুচি করে কেটে জনগনের কাছে দু-দশ টাকা করে বেচে দাও।
কিম্ সুন্দরম। না?
(ছবিসত্ব ঃ eb.com)
মন্তব্য
গ্রামীন ফোন সেবা দিয়ে মুনাফা কামাই করতেছে, কিন্তু বেক্সিমকো তো একটা পরিকল্পিত পুকুর চুরি। হায়রে পোড়ার দেশ!
একটা ছোট তথ্য দিই, গ্রামীনফোন বা যেকোন টেলিকম কোম্পানী একটাকা আয়ের বিপরীতে কর দেয় পঞ্চাশ পয়সা, অর্থ্যাৎ সম্পূর্ণ অর্ধেক। সুতরাং এরা যদি ব্যবসা বেশি করে, তার সাথে বাংলাদেশও লাভবান হচ্ছে। এটা শুধু সরাসরি আর্থিক লাভের কথা বললাম, গোটা দেশব্যাপী একটা যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকার ফলে যে লাভ হচ্ছে সেটা এর চেয়ে কয়েক গুণ বেশি।
কর দেয়ার পর যা আয়, তারও প্রায় অর্ধেক বিনিয়োগ করা হচ্ছে বাংলাদেশেই। বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে, অনেক দেশে চতুর্থ প্রজন্ম নেটওয়ার্ক চলছে, সেখানে বাংলাদেশে এখনো দ্বিতীয়। ইন্টারনেটের স্পীড বাড়ুক সবাই চান, তার জন্য চাই ইনফ্রাস্ট্রাকচার সাপোর্ট এবং ব্যান্ডউইডথ, সেটার জন্যও পয়সা লাগে। তার ওপর গ্রামীনফোন দেশের সবচেয়ে বড় হোয়াইট কলার নিয়োগকারী, এদের জন্যও খরচটা নেহায়েত কম নয়।
তবে গ্রামীনফোন কোন দাতব্য প্রতিষ্ঠান না, শেষ পর্যন্ত এদের কাজ ব্যবসা করা। দেখার বিষয় হচ্ছে এই ব্যবসা করতে গিয়ে লোক ঠকানো কিছু করা হচ্ছে কী না। দেশে এরকম একটা শেয়ার আসলে একটা ঝুঁকি থাকে, এত টাকা সামলানোর ক্ষমতা আছে কিনা পুঁজিবাজারের। সিটিব্যাংক এনএ এই বিষয়টা নিয়ে গবেষনা করেছে এবং তাদের গবেষনা অনুযায়ীই স্টক এক্সচেন্জ অনুমোদন এসেছে। কাজেই এরকম শেয়ার আসলে দেশের ক্ষতি তো দেখি না, বরং বাজারে লিকুইড মানি বাড়বে, যেটা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।
বেক্সিমকোর কথা অবশ্য আলাদা। তাহারা পুরাই চুরি করেছে।
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
হিসাব তো তাহলে মেলে না।
২০০৮ এর কথাই হোক। মোট আয় ৬১৪০ কোটি, এর ৫০% শুক্ল দেয়া হল। যা বাকী থাকে তার অর্ধেক মানে ২৫%, তোমার কথায়, বিনীয়োগ করা হয়েছে। এদিকে শুল্কোত্তর মুনাফা বলা হচ্ছে মোট আয়ের ৩৫%। তাহলে কি তোমাদের বেতন দিতেই গ্রামীন কে ধার কর্য আই পি ও এসব করতে হচ্ছে? নিশ্চই না।
এটা শুধু গত বছরের হিসাব। প্রথম দিককার বছরগুলোতে শুল্কোত্তর সম্পূর্ণ আয় তো বটেই, তার ওপরও অনেক বেশি বিনিয়োগ করা হয়েছিলো। বর্তমানে অবশ্যই তার তুলনায় কমেছে। সব মিলিয়ে হিসাব করলে ৯৭ থেকে গ্রামীনের আজ পর্যন্ত যা শুল্কোত্তর আয়, তার এক-চতুর্থাংশের বেশ খানিকটা বেশিই বিনিয়োগ করা হয়েছে।
সংশোধন, আমি গ্রামীনফোনের কর্মচারী নই। ছিলাম একসময়, এখন আর নেই।
আর ধার করাটা খারাপ কিছু না, ধার আছে বলেই বাজারে টাকা চলমান, এবং সময়ের সাথে সেই টাকার মূল্য বাড়ে। খারাপ হলো ধার করে শোধ না দেয়া। গ্রামীনের সাথে সংশ্লিষ্টতার সময় যা দেখেছি, তাতে শোধ না দেয়ার ভয় অন্তত আমার বিন্দুমাত্র নেই।
----------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
" প্রথম দিককার বছরগুলোতে শুল্কোত্তর সম্পূর্ণ আয় তো বটেই, তার ওপরও অনেক বেশি বিনিয়োগ করা হয়েছিলো। বর্তমানে অবশ্যই তার তুলনায় কমেছে। সব মিলিয়ে হিসাব করলে ৯৭ থেকে গ্রামীনের আজ পর্যন্ত যা শুল্কোত্তর আয়, তার এক-চতুর্থাংশের বেশ খানিকটা বেশিই বিনিয়োগ করা হয়েছে।"
" ধার করাটা খারাপ কিছু না, ধার আছে বলেই বাজারে টাকা চলমান, এবং সময়ের সাথে সেই টাকার মূল্য বাড়ে। খারাপ হলো ধার করে শোধ না দেয়া। "
মেনে নিলাম। আগের মন্তব্যে করা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গ্রামীনের অবদানের কথাও না মেনে উপায় নেই। পোস্ট টি ছিল এখনকার আই পি ও নিয়ে। অতীতে বড় বিনীয়োগ হয়েছে, আয় ব্যায়ের তুলনায় কম ছিল, মুনাফা কম ছিল, তাই ধার কর্য করা হয়েছে - যুক্তিযুক্ত। এখন শুক্লোত্তর মুনাফা বেড়েছে - যা বলছে সুদ খরচ, বিনীয়োগ ইত্যাদির খরচ মেটানোর পরেও ভাল লাভ থাকে। এই অবস্থায় লাভ থেকে দেনা শোধ করেই মূলধন বাড়ানো উচিত। এটা না করে বাইরে থেকে মূলধন যোগাড় করলে একটাই লাভ হয়, সেটা হল ক্যাশ বৃদ্ধি। কিন্তু গ্রামীনের মনে হয় ক্যাশ তারল্যের সমস্যা নেই। আর সেখানেই আমার প্রশ্ন। এই আই পি ও এর টাকা দিয়ে গ্রামীন কি করবে? বর্তমান ধারায় অব্যাহত থাকলে বিনীয়োগে এই টাকা যাবার প্রয়োজন নেই। তাহলে কি আগে যারা ধার দিয়েছিল, তাদের টাকা ফেরত দিতেই গ্রামীনকে বাজার থেকে টাকা তুলতে হচ্ছে? এটাই যদি হয়, তাহলে কি বেক্সিমকোর সাথে গ্রামীনের নীতিগত দূরত্ব কমে গেল না?
গ্রামীন ( বা যেকোন সক্রিয় ও বর্ধনশীল কোম্পানী) সবসময়ই চায় হাতে ক্যাশ রিজার্ভ যতদূর সম্ভব বাড়াতে। বর্তমানের বাজার ব্যবস্থায় যেকোন কোম্পানীই একটা অব্যাহত ঋণ প্রক্রিয়ার মধ্যেই থাকে। যদুর থেকে দশটাকা ধার নিলে তা শুধতে মধু আর শ্যামের কাছ থেকে পাঁচ পাঁচ টাকা নেয়া হচ্ছে অহরহ। কিন্তু গ্রামীন একদম তাই করছে না বলে আমার মনে হয়। আমি সঠিক বলতে পারবো না ঠিক কি করা হবে এই আইপিও এর টাকা দিয়ে, তবে অনেকদিন ধরেই কানে আসছে থ্রিজি নেটওয়ার্কে উন্নীত হবার কথা, হতে পারে সেখানে বিনিয়োগ করা হবে। হয়তো ভয়েস মার্কেটের পর এবার ডাটা মার্কেটটা ধরার পেছনে ফোকাস করা হবে। হয়তো এর একটা অংশ ঋণ শুধতেই দেয়া হবে। কিন্তু আইপিওতে যারা গ্রামীনফোনের শেয়ারহোল্ডার হিসেবে আসবেন, তাদের কাছেও গ্রামীনের ঋণ থাকবে, যেটা নিয়মিত হারেই তারা শুধবে আশা করতে পারি। মোদ্দা কথা হচ্ছে, গ্রামীনের ঋণখেলাপী হবার সম্ভাবনা কতটুকু। আমি বলবো, খুব খুব কম।
গ্রামীন যদি চায় তাদের ঋণটা ব্যান্কিং ফান্ড থেকে না এসে জনগনের পকেট থেকে আসুক, আর তার ফলে যদি দেশে বিনিয়োগ পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটে, সাধারণ মানুষ টাকা অলস না রেখে বিনিয়োগে আগ্রহী হয়, তাহলে বেশ ভালোই হবে এ দেশের জন্য। খারাপ লাগতো তখন যদি গ্রামীন বেক্সিমকোর মতো বছরের পর বছর ঋণ জমিয়ে এমনটা করতো। আমি যতদূর জানি গ্রামীনের আজ পর্যন্ত একটা মাসও নেই যেখানে প্রদেয় টাকা পরের মাসে ক্যারিওভার করেছে। কাজেই তাদের এখনো অবিশ্বাস করছি না আর কি....
----------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
এই থ্রেডটা পইড়া মজা পাইছি।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
আইপিওতে যারা গ্রামীনফোনের শেয়ারহোল্ডার হিসেবে আসবেন, তাদের কাছেও গ্রামীনের ঋণ থাকবে, যেটা নিয়মিত হারেই তারা শুধবে আশা করতে পারি।
শেয়ার বিক্রেতা শেয়ারহোল্ডারের কাছে ঋনী থাকে, তারপর সেই ঋন নিয়মিত হারে শোধ দেয়া হয় - এই থিওরীটা কার লেখা?
স্টকহোল্ডাররা তাদের স্টকের বিপরীতে ডিভিডেন্ড পান, যেটা শেয়ার বিক্রেতা কোম্পানিই দেন। স্টককে একধরনের Debt ই বলা হয়। বিস্তারিত জানার জন্য http://en.wikipedia.org/wiki/Stock দেখে নিন।
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
"স্টককে একধরনের Debt ই বলা হয়। "
এই বাক্যের পরে মনে হয়না এখানে একটি সাবলীল আলোচনা সম্ভব। অংশীদারিত্ব আর দেনা যদি একই হয়, তাহলে তো একটি ব্যাঙ্কে টাকা জমা রাখা আর সেই ব্যাঙ্কের শেয়ার কেনা একই কথা।
যে লিঙ্ক দিয়েছেন তাতে বলছে
" Financing a company through the sale of stock in a company is known as equity financing. Alternatively, debt financing (for example issuing bonds) can be done to avoid giving up shares of ownership of the company."
আপনি আরো কিছুটা পড়াশুনো করে আলোচনায় ফিরে আসুন।
এই জন্যই মুরুব্বীরা বলেন ঘুমাতে যাবার আগে তাড়াহুড়ায় কমেন্ট করতে নাই। বলতে চাইছিলাম, স্টকেও প্রদেয় থাকে। গ্রামীনের মতো লাভজনক কোম্পানী থেকে সব স্টকহোল্ডাররাই ডিভিডেন্ড আশা করবেন, আর গ্রামীন সেটা মেটাবে বলে আশা করি।
ভুলটা জানার ভুল না, তাড়াহুড়া করে লেখার কারণে ভুল। তবে এর কারণে কিন্তু মূল আলোচনাটা ভুল হয়ে যায়নি।
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
কর থেকে বাংলাদেশের লাভের হিসাবটা পুরো বুঝতে পারলাম না। কারণ, আয়কৃত ১ টাকা তো বাংলাদেশের পাবলিকের পকেট থেকেই যাচ্ছে। তা থেকে ৫০ পয়সা সরকার তথা পাবলিককে ফেরত দিলে লাভটা হয় কোথায়? কনফিউজড।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
১ টাকার সার্ভিস কিনলেন আপনি, এরপর গ্রামীনকে সেই ১ টাকা দিলেন। ১ টাকার অর্ধেক আবার গ্রামীন দিলো সরকারকে। সার্ভিসটা কিন্তু এক টাকারই থাকলো, কিন্তু অর্ধেক টাকা পরোক্ষভাবে আপনার কাছেই ফেরত আসলো। লাভ হইলো না?
---------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
বাংলাদেশ লাভবান হবে কিভাবে ঠিক বুঝলাম না, টেলেনর টাকা বিনিয়োগ করে লাভ করলে তা কী বাংলাদেশের সম্পত্তি হয়? আর সেই লাভের থেকে কিছু ফেরত দিলে কী তারা সাধু হয়ে যায়? আমার স্বল্প বুদ্ধিতে যা বুঝলাম, আমাদের টাকা বাইরে যাচ্ছে, ভুল বুঝে থাকলে ক্ষমাপ্রার্থী। অংকে আজীবন কাঁচা ছিলাম, ২+২ আমার কখনই ৪ হইত না, হয় ৩ নাহলে ৫। আর বেক্সিমকো তো বাটপারী করবেই, চাচা ভাতিজা এমন এক জোড়া
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
সাধুর কথা বলতেছি না, কিন্তু বাইরের একটা কোম্পানী এসে আমার দেশে ইনফ্রাস্টাকচার বানালো, একটা খুব উপকারী সার্ভিস দিলো, এরপর দেশের ট্যাক্সেও কন্ট্রিবিউট করলো, আর এটা যেহেতু তার ব্যবসা, সেই ব্যবসা করে নিজেও কিছু কামায়ে নিজের দেশে নিয়ে গেলো, এর মধ্যে শয়তানীটা কোথায়?
টেলিকমিউনিকেশন একটা সার্ভিস ইন্ডাস্ট্রি। টেলিনর যা বিনিয়োগ করছে সেটা বাংলাদেশের সম্পত্তি হয় নাই ঠিকই, কিন্তু সার্ভিসটা বাংলাদেশের লোকজনের জন্যই। আর গ্রামীন আসার ফলে তথ্যপ্রযুক্তিতে যে একটা বড় ধাপ বাংলাদেশ আগাইছে, সেটা অস্বীকার করার তো জো নাই, নাকি আছে?
---------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
নতুন মন্তব্য করুন