'বাংলা' জিনিসটা কি?

দুর্দান্ত এর ছবি
লিখেছেন দুর্দান্ত (তারিখ: সোম, ২০/০২/২০১২ - ৬:৪৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আইচ্চা কয়েন তো দেহি, বাংলা খাওন কুন্ডা?

আমি জানি, আফনে কইবেন ভাত আর মাছের ঝাল।

আইচ্চা, এইবার বলেন, মাছের ঝাল কি দিয়া বানায়?

আফনে বলবেন, কেন? মাছ তো থাকেই, সাথে থাকে হলুদ মরিচ পিয়াজ আর তেল, এসব। তবে আর কিছু না থাক, বেশ করে কাঁচা লংকা নাইলে সে আবার কেমনধারা মাছের ঝাল?

বেশ, তাইলে এইবার বলেন ঝাল কিসে হয়? মরিচে, রাইট? মরিচের মাদারল্যান্ড তো আম্রিকা। তার মানে হইল গিয়া কলম্বাস আম্রিকা যাবার আগে আমাগোর মাছের ঝালে ঝাল ছিলনা। মরিচের ঝাল হইল গিয়া একটা ফরেন জিনিস।

তাহলে আর একটা কথা জিগাই। বলেন চাই, বাংলা পুশাক কুন্ডা?

আফনে বলবেন মহিলার জইন্য শাড়ি আর পুরুষের জইন্য লুঙ্গি।

মানলাম। তয় কিনা আফনেও জানেন যে নিতান্ত যার উফায় নাই, সেই মহিলা ব্যতিরেকে খালি শাড়ি আইজকাইল আর কেউ গতরে দেয় না। আমাগোর মা-খালারা যেইভাবে শাড়ি ও আনুষাংগিক পূশাক গায় দেয়, সেই ইস্টাইলডা নাকি ঠাকুরবাড়ির জেনানারা কিছুডা উত্তর, কিছুডা পশ্চিম আর কিছুডা দক্ষিণ থাইকা আমদানি কইরা আনছিল। তা যেখান থাইকাই আহুক, শাড়িপরিহিতা কইলে যেইডা চক্ষে ভাসে, তার সবডা খুব বেশীদিন ধইরা 'বাংলা' না। এইডা কি মানেন?

এই কথায় আফনে চুউপ কইরা যাইবেন।

কি জানি চিন্তা করবেন।

আঙ্গুলের ডগা দিয়া দাড়ি খেলাল করতে করতে আফনের চক্ষু বুইজা আইব।

কথা আগাইতে গিয়া আমি বলবো, তয় ভাইজান, লুঙ্গির ঘটনা কিঞ্চিত ঘুলা। শহুইরা বাংলাদেশী লুঙ্গিরে ঘরের অন্দরে পাঠাইয়া দিলেও আমাগো বর্মি দুস্তরা কিন্তু লুঙ্গিরে এখনো ফর্মাল রাখতে পারছে। তারাও নলাকৃতি লুঙ্গিই পিন্দে, কিন্তু ১৮০০ সালের দিকে হেরা যেইডারে লুঙ্গি কইতো, হেইডার লগে ছিটকাপড়ের ধুতির ফারাক বাইর করা মুশকিল। ফটু দেহেন। বর্মার মত আমাগো দেশেও ধুতি-লুঙ্গির এইরকম কাছাকাছি মাখামাখি সাথে সাথে থাকার কোন বাধা আছিল, হেইডা কেমনে কই?

আফনে বলবেন, তাহলে বলা যায়, আজকের যে লুঙ্গিকে আমরা দেশী পোশাক বলে জানি, হেইডা আসলে স্থানীয়ভাবেই উদ্ভাবিত নতুন কিছু।

এরপর আমি কথা ঘুরামু। কমু, তাহইলে বড় ভাই পালা পরবনের কথায় আসি। আপনে হয়তো এতক্ষণে চায়ের তিয়াস পাইছে। চায়ের পানি গরম দিয়া আমি কমু, শুনেন, মাত্র কয়েকশ বছরে হিন্দু-বৌদ্ধ অধ্যুষিত একটা আস্তা জাতি চক্ষের সামনে কেমন মুসলমান হইয়া গেলগা,দেখছেন? গত মিলেনিয়ামের গুড়ায় যে মাইনরিটি সুফি-কাম-ডাকাইতের দল স্থানীয় পাবলিকের প্যাঁদানি খাইয়া কুল পায়নাই, আজকে সেই খেলা ঘুইরা গিয়া দেখেন মডারেট মুসলমান মেজরিটি তাবৎ মাইনরিটির হাতে হারিকেন ধরাইয়া নাস্তানাবুদ করতাছে।

আপনে গজ গজ কইরা বলবেন, হুম, অত্র অঞ্চলের এছ্লাম ও এছলামী চিন্তাধারার কিছুটা সরাসরি বিদেশি আর কিছুটা স্থানীয় শঙ্কর প্রজাতির আচরণ। হাতে চায়ের পেয়ালা নিতে নিতে আপনে বলবেন, আসলে কি জান, টাইম পেলে মোটামুটি কোন কিছুরই 'বাংলা' হতে বাধা নাই। এই যেমন তুমি বললে, খাদ্যয়-বস্ত্র-বিশ্বাসের মত 'বাংলা' ধারনার অনেকগুলা শক্ত বাহকের উৎপত্তি 'বাংলা'র বাইরে অথবা আমরা নিজেরাই নতুন কিছু একটা বানিয়ে নিয়ে সেটাকে 'বাংলা'র অন্তর্গত করে নিয়েছি।

আমি আমোদ পাইয়া কমু, তাইলে-তো হইয়াই গেল। এই কিসিমের টাইম পাইলে হিন্দিও দেখবেন একদিন 'বাংলা' হইয়া যাইবো। আমরা হেইডারে ঝাল-ঝুল, শাড়ি-লুঙ্গি আর ঈদের মত নিজের মতন কইরা নিমু। এতে তো দোষের কিছুই নাই। কিন্তু পাবলিক এত ভুদাই কেন? কেন তাহইলে সবাই জাত গেল জাত গেল আওয়াজ তুলতাছে?

আপনি তখন চশমা খুইলা কোয়েশ্চান্মার্কওলা চোখ দুইডা গোল গোল কইরা আমার দিকে চাইয়া কইবেন, এ তুমি কি বললে মফিজ? মাছের ঝাল, শাড়ি-লুঙ্গি আর ঈদ দিয়ে 'বাংলা' ডিফাইন করা যায়, নাকি করা উচিত?

তখন আমি পিরিচের চায়ে ফুড়ুৎ কইরা একটা চুমুক দিয়া জিগামু - বড় ভাই, ঝাল ঝুল, শাড়ি-লুঙ্গি আর ঈদ যদি 'বাংলা' না হয়, তাহইলে 'বাংলা' জিনিসটা আসলে কি?


মন্তব্য

সত্যপীর এর ছবি

ভাইজানের পোজটা সিরাম।
মরিচের ঝাল জিনিষটা ফরেন দেইখা দুঃখ পাইলাম।

..................................................................
#Banshibir.

তারেক অণু এর ছবি

দুঃখের কিছু নাই। মরিচের উদ্ভব মেক্সিকোতে, যদি আসলেই ঝাল খাইতে চান, কেবল একবার হ্যাভেনেরো মরিচের গোটা দুই বিচি সবুজ অংশ সহ খেতে পারেন। তবে বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ঝাল মরিচ হয় বান্দরবানে, ন্যাশনাল জিওগ্রাফিতে এসেছিল।

উদ্ভট রাকিব এর ছবি

উফফ, অণুদা, কি মনে করিয়ে দিলেন! পাহাড়ী আলু ভর্তা ঐ মরিচ দিয়ে একবার-ই পেটে গেছে, কিন্তু স্বাদ আর ঝাল এখনো টের পাই!

দ্রোহী এর ছবি

"বাংলা" হইলো কেরু অ‌্যাণ্ড কোং। জিনিস ভালোই তবে দিন সাতেক ধরে পচুর র্দুগন্ধ ছড়ায় । দেঁতো হাসি

সজল এর ছবি

আমারও ঠিক এইটাই মনে হইছিলো। জীবনে একবার মাত্র খাইছিলাম, তাতেই কিছু পাপিষ্ঠ আমার নাম দিয়ে দিয়েছিলো বাংলা সজল মন খারাপ

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

কুমার. এর ছবি

সজলদা আপনার নামডা ভালু পাইলাম, একটা ভাব আছে। দেঁতো হাসি

তারেক অণু এর ছবি
দুর্দান্ত এর ছবি

অব্জেক্সান মিলড।

কেরুর জরিনারে বড়জোর অভিবাসী "বাংলা" কওন যায়, স্থানীয় "বাংলা" বলতে আমি বুঝি দুচুয়ানি অথবা ভাতপচা।

(নজু ভাই, ভুল কইরা মিস্টেক হইয়া গেলে জায়গায় বইসা আওয়াজ দিয়েন জনাব।)

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

ধাঙড়পট্টির গুরুমূর্তির চোলাই আছিল আসল 'বাংলা'।

তাসনীম এর ছবি

ইয়েপ। কেরুর "রোজা রাম" খেতাম ছোটবেলাতে। কেরু হচ্ছে বিদেশি মদ্যের লোকাল এডিশন। কেরুর উপর একটা লেখা পেলাম।

ভালো খবর হচ্ছে কেরুর বিয়ার আসবে ভবিষ্যতে।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

উদ্ভট রাকিব এর ছবি

'বাংলা' হইলো মারামারি করনের জিনিষ, যহন কাম ধাম কিছু না পাওন যায় কালছার শেষ হইয়া গেছে বইলা দেদারসে চিল্লানি যায়।

কাজি মামুন (অতিথি লেখক) এর ছবি

হাতে চায়ের পেয়ালা নিতে নিতে আপনে বলবেন, আসলে কি জান, টাইম পেলে মোটামুটি কোন কিছুরই 'বাংলা' হতে বাধা নাই। এই যেমন তুমি বললে, খাদ্য়-বস্ত্র-বিশ্বাসের মত 'বাংলা' ধারনার অনেকগুলা শক্ত বাহকের উতপত্তি 'বাংলা'র বাইরে অথবা আমরা নিজেরাই নতুন কিছু একটা বানিয়ে নিয়ে সেটাকে 'বাংলা'র অন্তরগত করে নিয়েছি।

চরম সত্য কথা! সংস্কৃতি এভাবেই বিবর্তিত হয়। আমাদের দেশের ইসলাম কিন্তু আর আরবের ইসলাম নেই; বা তাকে তা বানানোর চেষ্টা করাটাও চরম বোকামী এবং অবাস্তব কাজ। কারন আমাদের নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য, আবহাওয়া, জলবায়ু, পোশাক-পরিচ্ছদ, খাবার-দাবার প্রভৃতির সাথে মিথস্ক্রিয়া করে আমাদের দেশের মুসলিমদের ইসলাম হয়ে গেছে ''বাংলিস্লাম''। এবং এমনটাই স্বাভাবিক। আজকের চেনা বাঙালি সংস্কৃতিও এভাবে বদলাবে সময়ের সাথে সাথে।
একুশের রাতে আপনার এই লেখা চরম ভাল লেগেছে।

দুর্দান্ত এর ছবি

"আজকের চেনা বাঙালি সংস্কৃতিও এভাবে বদলাবে সময়ের সাথে সাথে।"

ঠিক আছে। কিন্তু বদলে যাওয়া সেই বাঙালি সংস্কৃতির চেহারা যদি আফ্রিদি বা শাহরুখ খানের মত হয়, তাইলে সেই বদলের খেতা পুড়ি।

কাজি মামুন (অতিথি লেখক) এর ছবি

কিন্তু বদলে যাওয়া সেই বাঙালি সংস্কৃতির চেহারা যদি আফ্রিদি বা শাহরুখ খানের মত হয়, তাইলে সেই বদলের খেতা পুড়ি।

ওরকম বদল ঠেকানোর জন্য একুশ একটা বড় অস্ত্র আমাদের হাতে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, পহেলা বৈশাখও এসব বিজাতীয় সংস্কৃতির পথে বড় দেয়াল হয়ে দাঁড়ায় আর আমাদের শেল্টার দেয়। আপনার স্পিরিট ভাল লেগেছে!

হাসিব এর ছবি

রেফারেন্স দিতে পারবো না হাতের কাছে মাসমসলার অভাবে। কিছু পয়েন্ট তুলি

১। বাংলায় লুঙ্গির প্রচলন মুসলমানদের হাতে। স্মৃতি হাতড়িয়ে আবুল মনসুর আহমেদের লেখা মনে পড়লো। লুঙ্গি পরা শুরু হয় হিন্দুদের থেকে মুসলমানরা যে আলাদা সেটা প্রমান করতে। কাকাকে চাচা বলা, হাত জোড় করে নমস্কার পরিহার করা, জলকে পানি বলা অভ্যাস এরকমই বিষয়।
২। পোশাকের সাথে খাদ্যাভ্যাসেও মুসলিম জনগোষ্ঠির প্রভাব আছে ব্যাপকভাবে। একসময় মাটির নিচে হয় এরকম কিছু মানুষে খেত না। পিয়াজ রসুন মুরগী এগুলো বাদ খাবার তালিকা থেকে। এখন হিন্দুরাও ওগুলো খেতে গা করে না। একটু চিন্তা করে দেখেন মাটির নিচে জন্মানো সব বাদ দিয়ে আপনি কী কী রান্নার কথা চিন্তা করতে পারেন। আমি খুব বেশি আগাতে পারি নাই। আমাদের বেশিরভাগ খাবার মুসলিম রসুইদের মারফত আসা।
৩। মুঘলদের সময়ে বাংলায় ব্যাপক অভিবাসন হয়েছে। জঙ্গল কেটে সাফ করে বসবাসউপযোগী স্থান তৈরী করার সময়টাও তখনকার। বর্তমান বাংলাদেশের জনগোষ্ঠির একটা বিরাট উল্লেখযোগ্য অংশের পূর্বপুরুষ তাই অন্য কোথাও থেকে আসা।

[শেষ বাক্যটা আমার মত]

আসিফ হাসান এর ছবি

লুঙ্গি পরা শুরু হয় হিন্দুদের থেকে মুসলমানরা যে আলাদা সেটা প্রমান করতে। কাকাকে চাচা বলা, হাত জোড় করে নমস্কার পরিহার করা, জলকে পানি বলা অভ্যাস এরকমই বিষয়।

ঠিক বুঝলাম না। যাদের সালাম করার রীতি তারা হাত জোড় করে নমষ্কার না করা নিজেদের আলাদা করার প্রয়াস কি করে হয়? নমষ্কার করা কি অন্য কোন রীতি থেকে নিজেকে আলাদা দেখাবার প্রয়াস? চাচা এবং পানি দুটোই উর্দু থেকে আসা যা বনেদী মুসলমানদের প্রিয় ভাষা ছিল এবং মুসলমানদের মধ্যে ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পরে। উর্দু রীতি ফলো করার সংগে নিজেকে আলাদা করার কি সম্পর্ক? মুসলমানরা নিজেদের পছন্দ মত ভাষা কপি করতে করতে এটা তাদের সংস্কৃতির অংশ হয়ে যাওয়ার সংগে নিজেকে আলাদা প্রমানের কোন সম্পর্ক দেখিনা। একই ভাবে লুঙ্গির মধ্যে আলাদা প্রমানের কিছু ছিল বলে মনে হয় না। পড়ার স্টাইলের পার্থক্যটা এলাকাভিত্তিক হবার সম্ভাবনাই কি বেশি নয়? বার্মিজরা বেল্ট দিয়ে লুঙ্গি পরার পেছনে আলাদা হবার কিছু নেই বলেই তো জানতাম। তামিলনাড়ুতেও কিন্তু লুঙ্গি মুসলমান ছাড়াই জনপ্রিয়। মহাভারতে পান্ডবদের শাড়ি কেঁটে লুঙ্গি হিসেবে পরার উদাহরন আছে শুনেছিলাম, লুঙ্গির আবির্ভাব সেখান থেকেই এমন দাবী করা হয় নেটে অনেক সাইটেই।
আলাদা প্রমান করার চেষ্টা কথাটি একটু অন্যরকম ঠেকলো বলেই বললাম, ভুল বুঝে থাকলে স্যরি।

একসময় মাটির নিচে হয় এরকম কিছু মানুষে খেত না। পিয়াজ রসুন মুরগী এগুলো বাদ খাবার তালিকা থেকে। এখন হিন্দুরাও ওগুলো খেতে গা করে না।

মুরগী এর মধ্যে এলো কি করে?! অ্যাঁ আপনি কি নিরামিশাষী মীন করছেন? হিন্দুদের সবাইতো নিরামিশাষী ছিল না।

মুঘলদের সময়ে বাংলায় ব্যাপক অভিবাসন হয়েছে। জঙ্গল কেটে সাফ করে বসবাসউপযোগী স্থান তৈরী করার সময়টাও তখনকার। বর্তমান বাংলাদেশের জনগোষ্ঠির একটা বিরাট উল্লেখযোগ্য অংশের পূর্বপুরুষ তাই অন্য কোথাও থেকে আসা।

ইংরেজ আমলেও কম হয়নি। সুতানটী থেকে কলকাতা কিন্তু ওদের হাত ধরেই আর তখনকার বাঙালীরা কিন্তু খাস দিশি লোক ছিল কারন তাদের বিবরনীতে দুরকম জাতের বাঙালীর উদাহরন খুব একটা পাইনি। বিরাট একটা অংশ অন্য কোথাও থেকে আসাটাও খুব একটা নির্ভরযোগ্য থিওরী বলে মানতে পারছি না। আপনি কিছু রেফারেন্স বের করে শেয়ার করলে জানবার সুযোগ হত। হাসি

হাসিব এর ছবি

প্রথমে বলি। কথাগুলো আমার আর্গুমেন্ট না। আবুল মনসুর আহমেদ বা তার পরিবারের কারো লেখায় পড়েছিলাম সেই স্মৃতি থেকে বলা। ওখানে গত শতাব্দির প্রথমদিকে "সভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের" কিছু কথাবার্তা ছিলো। লুঙ্গির ইতিহাস সেটা পড়ার স্মৃতি থেকে বলা। বনেদি মুসলমানেরা "হিন্দুয়ানি" জিনিস বর্জনের কথা বলতেন। এই সেদিনও হিন্দুয়ানি ভাষা ত্যাগ করে আরবি হরফে বাংলা লেখার কথা শোনা গেছে। এগুলো যদি কেউ বলে হিন্দু থেকে মুসলমানি জিনিস আলাদা করার জন্য তাহলে আমি একমত হবো।

মুরগী মাটির নিচে জন্মায় একথা বলিনি।

রেফারেন্সের বিষয়ে আগে বলেছি। দিতে পারবো না এই মুহুর্তে। আর বাঙ্গালির চেহারা দেখলেই বুঝবেন এদের অরিজিন এক না। হেটেরোজেনাস অরিজিন আমাদের। মঙ্গল-দ্রাবিড় সংমিশ্রনের থিওরীটা একটা ব্যাখ্যা হতে পারে বলে আমার মনে হয়েছে। জঙ্গল কেটে সাফ করে বসতির বিষয়টা ব্রিটিশ আমলেই আমলেও ঘটেছে। তবে শুরুটা মুঘল আমলে এবং সেটার জন্য আর্থিক ইনসেনটিভ ছিলো। শুরুটা তখনই।

মিলু এর ছবি

চলুক

নুসায়ের এর ছবি

মরিচের মাদার ল্যান্ড আম্রিকা হইলে, আম্রিকায় দেশি মরিচ পাইনা ক্যান। ঝাতি ঝান্তে ছায়।

শিশিরকণা এর ছবি

উত্তম প্রশ্ন?

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

দুর্দান্ত এর ছবি

স্থানীয় চীনা/ভিয়েতামিজ/কোরিয়ান/থাই দোকানে খোঁজ নিয়েছেন?

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

কোন জাতিই আসলে ইউনিক না। নানান সভ্যতা-সংস্কৃতির মাঝে আন্ত:মিল থাকবেই। সভ্যতা-সংস্কৃতি বিবর্তিত হবেই। তবে, এই পরিবর্তনটা খারাপ না হলেই হলো।

তানভীর এর ছবি

বস, সবকিছু 'ফরেন' কইলে দুষ্কু পাই মন খারাপ মরিচের ঝাল একান্তই আমাদের নিজস্ব জিনিস। আম্রিকানরা তো এখনো ঝাল খাইতেই শিখে নাই। আর আমরা কমসে কম চার হাজার বছর ধরে ঝাল খাই!! উইকি থেকে-
Pepper has been used as a spice in India since prehistoric times. Pepper is native to India and has been known to Indian cooking since at least 2000 BCE

মাত্র কয়েকশ বছরে হিন্দু-বৌদ্ধ অধ্য়ুষিত একটা আস্তা জাতি চক্ষের সামনে কেমন মুসলমান হইয়া গেলগা,দেখছেন?

এতে কোনো সমিস্যা দেখি না। আর্য ধর্মও এ অঞ্চলে বহিরাগত, তার আগে আমরা অন্য কিছু ছিলাম, মুসলমানের পরেও হয়তো অন্য কিছু হবো। এটাই স্বাভাবিক।

বাঙালি একটা এথনিক জনগোষ্ঠী, কোনো রেইস না। নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি, ধর্ম, আচার-আচরণ বিবর্তন হয়- তাতে নৃতাত্ত্বিক পরিচয় লুপ্ত হয় না।

তানভীর এর ছবি

আর ওহ আপনি যেটাকে আম্রিকান জিনিস বলছেন, সেটা হচ্ছে আসলে 'ক্যাপসিকাম'। তা ক্যাপসিকাম তো এখনো বাংলাদেশে ফরেনই। দেশে থাকতে আমি মনে হয় হাতে গোনা কয়বার খাইসিলাম।
http://www.hort.purdue.edu/newcrop/proceedings1993/v2-132.html

দুর্দান্ত এর ছবি

নৃতাত্বিক জাতির পরিচিতি নিয়া আপনার সাথে একমত। সেকারনেই 'বাংলা' বাঁচানোর অতিচেষ্টা মাঝে মাঝে বুঝতে পারিনা।

****

যুক্তরাষ্ট্রের ইংরেজীর এই এক সমইস্যা। সেইখানে কাঁচামরিচ ও (চিলি)পেপার, ক্যাপসিকাম ও (বেল)পেপার আবার গোলমরিচও (ব্ল্যাক)পেপার।

আমাদের মাছের সাথে চলে কাচামরিচ (ক্যাপসিকাম) এই গোত্র নিঃসন্দেহে আমেরিকান।

ঐতিহাসিক যে 'পেপার' এর কথা বললেন, সেটা তো গুলমরিচ (প্যাপেরেসি)। কলম্বাসের আমলে যার দাম সোনার চাইতেও বেশী ছিল। এইটা দক্ষিন ভারতীয় মাল এবং আমার জানা মতে দেশী মাছের রেসিপিতে এর শুকনা বা ছিলকা ছাড়া (হোয়াইট পেপার) কোনটাই খুব একটা খাটেনা। তবে চাইনিজ দোকানে সবুজ রঙ্গের কাঁচা গোলমরিচ পাওয়া যায়। এইটা আস্ত আস্ত মাগুর মাছ রান্নার শেষে ধইন্নাপাতার সাথে ঝোলে ছাইড়া দেখতে পারেন। নিদারুন।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।