মেধা ও তার প্রকাশ কি আদৌ চুরি করা সম্ভব?

দুর্দান্ত এর ছবি
লিখেছেন দুর্দান্ত (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৫/০৪/২০১২ - ৭:৩১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মেধা-সত্ত্ব নিয়ে একটি সুন্দর আলোচনা হচ্ছে প্রকৃতিপ্রেমিকের সাম্প্রতিক পোস্টে। সচলায়তনের সাথে সম্পৃক্ত অনেকেই (সকলেও হতে পারে) নিশ্চিত যে অন্যের লেখা বা ছবি নিজের লেখায় ব্যাবহার করার সময়ে সেখানে রেফারেন্স ব্যাবহার করলে লেখার মান উন্নত হয়। এর সাথে বিমত প্রকাশ করার মত যথেষ্ট কারণ ও উপাত্ত আমার হাতে নেই। তাই আমিও আপাতত যেখান ক্রেডিট প্রযোজ্য, সেখানে ক্রেডিট দেবার পক্ষে।

প্রচলিত মেধা-সত্ত্ব রক্ষা আইনগুলো মূলত (ক) মেধা-সম্পদের মালিককে সেই সম্পদ প্রকাশের অধিকার দেয় (খ) সেইসাথে অন্য সবার কাছ থেকে সেই মেধা-সম্পদ ব্যাবহার বা বিতরণ করার অধিকার রহিত/সীমিত করে। যে প্রথম-জন প্রকাশ করল, সেই আইনগত মালিক, সে ছাড়া বাকি সব প্রকাশক, শর্তসাপেক্ষে, চোর। এই কাঠামোতে সাধারনত (খ) এর প্রায়োগিক উপযোগিতার ভিত্তিতে (ক) কে হালাল করা হয়। উদাহরন হিসাবে বলা যায়, জাফর ইকবালের এক কপি উপন্যাস কিনে যদি আমি সেটাকে নিজের বলে চালিয়ে দেই, তাহলে সেটা চুরির পর্যায়ে পড়বে, তদুপরি আমি যদি নিজের হিসাবে সেই বই বিক্রি করতে শুরু করি, তাহলে জাফর ইকবালের কিছু আর্থিক ক্ষতি হতে পারে। যেহেতু আমি জাফর ইকবাল নই, যেহেতু আমার অননুমদিত প্রকাশে জাফর ইকবালের ক্ষতি হচ্ছে, সেহেতু (খ) মানে আমার প্রকাশ অধিকার রহিত করা যুক্তিযুক্ত, আর যেহেতু আমার ও আমার মত অন্যান্য অ-জাফর ইকবালের প্রকাশ অধিকার রহিত, তাই নিশ্চই উপন্যাস নামক সেই মেধাসম্পদের সত্ত্বাধিকারি জাফর ইকবাল।

কিন্তু পথিকবর, তিষ্ঠ ক্ষণকাল।

মালিকানা তো সেখানেই খাটে যেখানে সম্পদটির প্রাপ্যতার সীমাবদ্ধতা (স্কারসিটি) আছে। চুরি করা তো তখনই হয়, যখন চুরির পরে আলোচ্য সম্পদ আর মালিকের কাছে থাকেনা। জাফর ইকবালের উপন্যাস তো স্কার্স কোন সম্পদ নয়, মানে সেটাকে তো ব্যাবহার করে করে নিঃশেষ করে ফেলা যায়না। আবার আমি যদি জাফর ইকবালের উপন্যাস নিজের বলে চালিয়ে দেই, তাতে তো জাফর ইকবালের মালিকানাধীন উপন্যাসটা গায়েব হয়ে যাবে না।

প্রথম প্রকাশকই যে মেধা-সম্পদের আইনসিদ্ধ মালিক, সেটার নীতিগত ভিত্তি কোথায়? ভাস্কো-ডা-গামা তো ইউরোপ-ভারত রুট প্রথম প্রকাশ করেছিল, পর্তুগিজরা গায়ের জোরে ও আইন করে সেই রুটের তাদের দেশের একটি মুষ্ঠিমেয় দলের একচেটিয়া ব্যাবহার নিশ্চিত করেছিল। কিন্তু তারা কি সেই রুটের নীতিগত মালিক?

তাহলে বিষয়টা খাড়াইল কি? মেধা ও তার প্রকাশ কি তাহলে আদৌ চুরি করা সম্ভব? আপনার কি মনে হয়? যদি আপনার ক্ষমতা থাকতো মেধাসত্তব্যাবস্থাকে ঢেলে সাজানোর, তাহলে আপনিও কি শুধু প্রথম প্রকাশকের অধিকার রক্ষায় ব্যস্ত হতেন?

যে আলোচনাটি এখানে শুরু করতে চাই, সেটা ক্রেডিট দেবার সিদ্ধান্তের সাথে ভিন্নমত পোষনের জন্য নয়। এটা মূলত ক্রেডিট দেবার পেছনের নীতি ও যদি সাহস দেন, তাহলে আরেক ধাপ পিছিয়ে মেধাসত্ত্বরক্ষা আইনের নীতিগত ভিত্তিকে আরো ভাল করে বুঝে নিতে। নিতান্ত ভদ্রতা-শালীনতা ছাড়া অন্যের তোলা ছবি বা লেখার ক্রেডিট দেবার আর কি ভিত্তি থাকতে পারে - সেটার ব্যাখ্যা আমাদের জানতে হবে।
আজকে একটি আইন প্রচলিত আছে বলেই তো সেটা নীতিগত ভাবে গ্রহনযোগ্য হতে বাধ্য নয়।

একসময় তো দাসপ্রথাও আইনসিদ্ধ ছিল।


মন্তব্য

হিমু এর ছবি

১. এই আলোচনা পিপিদার পোস্টেই তো হতে পারতো। এটা কি মেটাব্লগিঙের পর্যায়ে পড়ে?

২. মেধাসম্পদের মালিকানা আপনি যেভাবে সংজ্ঞায়িত করলেন, তাতে সমস্যা আছে। চুরির যে সংজ্ঞা দিলেন, তাতেও। সম্পদের মালিকানা হরণ চুরি, কিন্তু সম্পদের অননুমোদিত ব্যবহারকেও মেধাসত্ত্ব আইনে ঠেকানো হয়। উদাহরণ, আপনার টুথব্রাশটা খুব ভোরে আপনার বাথরুম থেকে হাওলাত করে আমি আমার কমোড সাফ করে আবার একটু ধুয়ে আপনার বাথরুমে রেখে দিতে পারি। এতে করে আপনার টুথব্রাশের মালিকানা আপনারই থাকছে, সে গায়েবও হয়ে যাচ্ছে না। কিন্তু আপনি, কেন যেন আমার মনে হচ্ছে, ব্যাপারটা পছন্দ করবেন না।

মেধাসম্পদের অর্থ হচ্ছে, জাফর ইকবালের লেখা উপন্যাসের প্রতিটি কপির মালিকানার একটি অংশ (১০০% পর্যন্ত) তার। তাই সেই কপির এমন কোনো ব্যবহার করা যাবে না যেখানে তার অনুমোদন ব্যতিরেকে সেই কপিটি তাকে লাভ না দিয়ে ব্যবহৃত হবে।

দুর্দান্ত এর ছবি

টুথব্রাশের উদাহরনটা ভাল লেগেছে। কিন্তু দেখ, টুথব্রাশ কেউ বানায়, সেটা কিনে মালিক হওয়া যায়, ক্রমে টুথব্রাশ ক্ষয়ে আসে, আর যে কয়'মিনিট তুমি আমার টুথব্রাশ দিয়ে কমোড মাজছিলে, সেটা আমার কাছে ছিল না - সুতরাং মালিকানা আর চুরিকে আমি যেভাবে সংজ্ঞায়িত করেছি, সেটা তো টুথপেস্টের উদাহরনে ঠিক বসে যাচ্ছে। কিন্তু জাফর ইকবালের উপন্যাসে কি সেটা এভাবে খাটছে? না। আমার প্রশ্নটা সেখানেই। উপন্যাস তো টুথব্রাশ নয়, যার অননুমোদিত ব্যবহার প্রথমপ্রকাশকের জন্য আর্থিক ব্যাতিরেকে অন্যকোনভাবে ক্ষতি করা সম্ভব নয়।

মেধাসম্পদের আইনে কি বলে, সেটা আমরা আরো জানতে পারি। প্রকৃতিপ্রেমিকের পোস্টে সে বিষয়ে আলোচনা চলছেও। কিন্তু যেমনটা পোস্টেই বলেছি, এখানে আমি জানতে চাইছি সে আইনগুলোর ভিত্তি কোথায়?

হিমু এর ছবি

ক্ষতি তো বোঝা যাবে ব্যবহারের ধরনের ওপর। আপনি একটা উপন্যাস নিয়ে যদি সেটাকে অননুমোদিত কপি করে বিক্রি করেন, সেটা আর্থিক ক্ষতি। যদি নিম্নমানের ছাপা হয়, তাহলে প্রকাশকের গুডউইলের ক্ষতি। যদি কনটেন্ট মডারেট করেন, তাহলে লেখকের ইমেজের ক্ষতি।

টুথব্রাশ কপি করা যায় না বলে এর শারীরিক মালিকানার প্রশ্ন উঠছে। মেধাসম্পদ তো শারীরিক মালিকানার জিনিস নয়, সে কারণেই সে মেধাসম্পদ। একটা আইডিয়ার মালিকানা থাকতে পারে কি পারে না, এই প্রশ্নের সুরাহা করতে গেলে আইডিয়াকে প্রথমে ‌স্পর্শ্য বস্তুর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য সংজ্ঞার বাইরে বেরিয়ে কথা বলতে হবে।

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

বাহ্! মাত্র এই মন্তব্যটা করলাম, তারপর দেখি আপনার লেখা, কাছাকাছি লাইনের চিন্তা। সীমিত সম্পদ আর অঢেল সম্পদের ব্যাপারটা সামনে আসা প্রয়োজন।

ব্যাপারটা অবশ্যই আলোচনাযোগ্য, তর্কসাপেক্ষ, সুনির্ধারিত নয়।

তাজ এর ছবি

সহমত।

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

যে কোনভাবেই হোক মেধাসম্পদ অনুমোদনহীনভাবে ব্যবহার করা ঠিক না। কোন কোন ক্ষেত্রে শুধু কৃতজ্ঞতা স্বীকারও আমার কাছে যথেষ্ট মনে হয় না।

ইশতিয়াক এর ছবি

আপনার লজিক মানতে পারলাম না। মেধাস্বত্ব আইন আছে বলেই মেধার বিকাশ ঘটছে। না হলে মানব সভ্যতার আজকে পর্যন্ত অগ্রগতি হতো না। যদিও আমার কাছে পরিসংখ্যান নেই, কিন্তু যদি পাওয়া যেতো, সেক্ষেত্রে জ্ঞান বিজ্ঞান আর শিল্পের উন্নতি সময়ের সাথে গ্রাফে আঁকলে দেখতেন একটা হঠাৎ উন্নতি। আর এই সাডেন রাইজ তা হতো যেদিন থেকে মেধাস্বত্ব আইন কার্যকর হয়েছে। মেধার মূল্য না থাকলে অর্জনের মূল্য কি? রবীন্দ্রনাথের লেখার মূল্য আছে বলেই আমরা পরবর্তীতে রবীন্দ্র বলয় থেকে বের হওয়া অনেক সাহিত্য পেয়েছি। আমাদের সংস্কৃতি পেয়েছে নতুন মাত্রা।

মেধার মূল্যই মানুষকে নতুনের পথে চলতে উৎসাহিত করে।

দুর্দান্ত এর ছবি

এটা ঠিক যে মেধাসত্ত্ব আইনের উদ্ভব ও শিল্প উন্নয়ন এই দুটি সমান্তরালে বেড়েছে। কিন্তু উন্নয়নশীল দেশগুলোর ক্ষেত্রে কি এরকম কোন সম্পর্কের খোঁজ আমরা পাই? শুধুমাত্র যে গোষ্ঠির পেটেন্ট আইনজ্ঞ ও প্রচলিত পেটেন্ট/কপিরাইট প্রকৃয়ার মধ্য দিয়ে যাবার আর্থিক শক্তি আছে, শুধু তারই নতুন উদ্ভাবন (পেটেন্ট) করা সহজ হয়, এবং বাকি সবার জন্য তখন নতুন উদ্ভাবন (আসলে নতুন উদ্ভাবনকে পেটেন্ট বানানোর) কিছুটা মুশকিল হয়। এখানে আবার কেউ কেউ মেধাসত্ত্ব আইনের সাথে খোলা-বাজার বা প্রতিযোগিতামূলক বাজার ব্যাবস্থার সাথে মেধাসত্ত্ব আইনের একটা বিরোধ খুজে পাবে।

ওইসিডি'তে মেধাসত্ত্ব আইন ও মুক্ত/প্রতিযোগিতার বাজার আইনগুলোর মধ্যকার সাযুয্যগত অসুবিধা নিয়ে আলোচনা চলছে। অবাক বিষয় হল, যে বড় কর্পোরেশানেরা গত শতাব্দিতে মুক্তবাজার অর্থনীতি ও প্রতিযোগিতা আইন লবিতে টাকা ঢালতো, আজকে তাদের অনেকেই মেধাসত্ত্ব আইনের লবিতে টাকা ঢালছে।

পেটেন্ট এটর্নি আর কম্পিটিশান স্পেশালিস্টদের মধ্যকার বিতর্ক খুব উপাদেয় কিছু নয়।

নয়ন  এর ছবি

নিজের লেখা জাফর ইকবালের নামে ছাপলে সেটা কি হবে এটা নিয়ে ভাবনায় পড়লাম হাসি

তোফায়েল মিয়াজী এর ছবি

সেটাও চুরি। এক্ষেত্রে আপনি তাঁর নাম চুরি করেছেন!

স্পর্শ এর ছবি

আমার পছন্দ তাই 'কপিলেফট'।[১] হাসি

[১] http://en.wikipedia.org/wiki/Copyleft


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

আনন্দ এর ছবি

সুন্দর লেখা। অনেকাংশেই একমত।

কপিরাইট কনসেপ্টটাই হলো লোভী, পুঁজিবাদি কনসেপ্ট। শিল্প, সাধনা, প্রযুক্তি, বিজ্ঞান মানুষ নিজের তাগিদেই, নিজের আনন্দেই উদ্ভাবন করে। এগুলোর কোনোটাই দিনমজুরী টাইপের কোনো কাজ না যে নির্দিষ্ট অঙ্কের পয়সা নিয়মিত দিতেই হবে। এই এক জিনিসের জন্যই আজ বাসমতি চাল থেকে মশা মারার ওষুধ পর্যন্ত সবকিছুই নিজে বানানো যায়না। পেটেন্ট(!)কারীকে আগে পয়সা দিতে হয়। টেড টকে রাব্বানী স্যার তাই যথার্থই তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর টেকনোলজীতে পিছিয়ে পড়ার সমস্যার অন্যতম একটা কারণ হিসেবে একে চিহ্নিত করেছেন। এগুলো সবই ওপেন সোর্সড হওয়া উচিত।

একই কথা সাহিত্যেও খাটে। লেখা পড়ার জন্য যদি নিয়মিতহারে মাসোহারা দেওয়া বাধ্যতামূলক হয় তাহলে সেটাও দিনমজুরী টাইপের জিনিস হবে। শিল্প এভাবে আসেনা। তুষ্ট শিল্পপিপাসুদের শিল্পীদের খুশি হয়ে দেওয়া উপহারকে যদি বাধ্যতামূলক করে দেওয়া হয় তো তার ফলাফল হিসেবে আমরা ঐ বাজারী ভাড়াটে রাইটার, অভিনেতা আর পরিচালকদেরই পাবো।(যেটা হলিউডে নিয়ম হয়ে গেছে)

প্লেজারিজম অবশ্যই নিন্দনীয়। সূত্র উল্লেখ করাটা উচিত। তবে তারচেয়েও বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত কি মেসেজটা পৌঁছানো হচ্ছে তা নিয়ে। কার লেখা তা নিয়ে মাতামাতির কনসেপ্টটা আমাদের প্রাচ্যের নয়। আমরা কোনটা আসলে সত্যিকারের লালনের গান বা খৈয়ামের রুবাই তা নিয়ে মাথা ঘামাই নি। গানটা কি বলতে চাচ্ছে তা নিয়েই সবসময় মাথা ঘামিয়ে এসেছি। হরি ব্যক্তির ইমেজ নিয়ে আমাদের কোনো মাথাব্যথা কখনোই ছিলোনা, হরিধান কিভাবে উপকারে আসতে পারে তা নিয়ে আমরা ভেবেছি। রবীন্দ্রনাথের ভাঙার গানগুলো, নজরুলের বেশিরভাগ সুর নিয়েও একই কথা প্রযোজ্য।

তার চেয়েও বড় কথা,শিল্প,সাহিত্যে অরিজিনালিটি বলতে আসলে ঠিক কি বোঝায়? ভাব মেরে না লিখলে, আঁকলে, গাইলে,নাচলে,অভিনয় করলে আদপেই কি কিছু করা সম্ভব? কল্পনাশক্তির অপর নামই হলো বিভিন্ন গুণীদের কাছ থেকে অল্প অল্প করে মৌলিক বস্তু ছুঁয়ে ছেনে কিছু একটা বানানো। কে বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবে যে সে কোনোকিছুই না মেরে (উৎকট) মৌলিক কিছু বানিয়েছে?

সামষ্টিক দিকে না যেতে পারলে, ব্যক্তির বদলে ব্যপ্তিতে না যেতে পারলে সামগ্রিক শান্তি কখনোই আসবে না।

ধন্যবাদ।

রেজওয়ান এর ছবি

অ্যাট্রিবিউশন, লিংকিং ইত্যাদি আপাত দৃষ্টিতে ফ্রি মনে হলেও এর অন্য মূল্য আছে। এটা কিন্তু মেধাস্বত্বকে বাধাগ্রস্ত করে না। বরং এর প্রচার করে। জাস্টিন বিবার বা রেবেকা ব্ল্যাক ইউটিউবে তাদের গান তুলে দেবার পর সেটা অনেকে শেয়ার করে। ফলে তারা জনপ্রিয়তা পায়। তেমন বলা যায় বাংলাদেশের অনেক ফটোগ্রাফারের ছবি সম্পর্কেও। তাই "নিতান্ত ভদ্রতা-শালীনতা ছাড়া অন্যের তোলা ছবি বা লেখার ক্রেডিট দেবার আর কি ভিত্তি থাকতে পারে" - সেটা জেনে নিতে আমার এই সিরিজটি পড়তে পারেন - http://www.sachalayatan.com/rezwan/35042 অথবা ক্রিস অ্যান্ডারসনের এই বইটি পড়তে পারেন। http://www.longtail.com/the_long_tail/2009/07/free-for-free-first-ebook-and-audiobook-versions-released.html

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

এগুলো সবই ওপেন সোর্সড হওয়া উচিত।

ওপেন সোর্স ম্যাটেরিয়ালের কপিরাইট নেই, এ কথা আপনাকে কে বলল? অ্যাঁ

দুর্দান্ত এর ছবি

ওপেনসোরসে কপিরাইট আছে ঠিক, কিন্তু গতানুগতিক কপিরাইট যেরকম প্রথম প্রকাশক একচ্ছ্ত্র অধিকার দেয়, তার চাইতে অনেকটাই ভিন্ন ধরনের। জাফর ইকবালের উপন্য়াসটি ওপেনসোরস কপিরাইটের অধিনে প্রথম প্রকাশ করা হলে, সেটাকে পুনরমুদ্রন-পরিবরতন-পুনরুপস্থাপন করতে জাফর ইকবামের অনুমতির প্রয়োজন পড়বেনা।

আদতে ওপেন সোরস কাঠামোতে উতপাদ প্রক্রিয়াটাই ভিন্ন। মানে এই ধারনার অধিনে আসলে জাফর ইকবাল একটি আস্ত উপন্য়াস প্রকাশ করারই কোন প্রয়োজন নেই। মানে যে দুনিয়ার সকল উতপাদন ওপেন সোরস কাঠামোতে আসছে, সেখানে তো কপিরাইট আইন বলতে কোন কিছু থাকার আর দরকার থাকেনা। ঠিক না?

হিমু এর ছবি

এইরকম কাঠবলদমার্কা কথা বহুদিন শুনিনি। মাঝেমধ্যে সচলে এসে আমোদ দিয়ে যাবেন।

মানুষ নিজের তাগিদে আর আনন্দে উদ্ভাবন বা সৃষ্টি করলে সেটা বারোয়ারি সম্পত্তি হয়ে যায় নাকি? আপনার বাচ্চাকে দিয়ে তাহলে ঘর মোছাই আমরা, কী বলেন?

চরম উদাস এর ছবি

কপিরাইট কনসেপ্টটাই হলো লোভী, পুঁজিবাদি কনসেপ্ট। শিল্প, সাধনা, প্রযুক্তি, বিজ্ঞান মানুষ নিজের তাগিদেই, নিজের আনন্দেই উদ্ভাবন করে। এগুলোর কোনোটাই দিনমজুরী টাইপের কোনো কাজ না যে নির্দিষ্ট অঙ্কের পয়সা নিয়মিত দিতেই হবে। এই এক জিনিসের জন্যই আজ বাসমতি চাল থেকে মশা মারার ওষুধ পর্যন্ত সবকিছুই নিজে বানানো যায়না। পেটেন্ট(!)কারীকে আগে পয়সা দিতে হয়। টেড টকে রাব্বানী স্যার তাই যথার্থই তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর টেকনোলজীতে পিছিয়ে পড়ার সমস্যার অন্যতম একটা কারণ হিসেবে একে চিহ্নিত করেছেন। এগুলো সবই ওপেন সোর্সড হওয়া উচিত।

ওপেন সোর্স আর কপিরাইট এক জিনিস না রে ভাই ইয়ে, মানে... । এগুলো নিয়ে আপনাকে আরও নেকাপড়া করতে হবে। বাঁচতে হলে জানতে হবে।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

হো হো হো
কিছু বলার নাই!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

তাপস শর্মা এর ছবি

কপিরাইট কনসেপ্টটাই হলো লোভী, পুঁজিবাদি কনসেপ্ট।

ভাইরে আপনি যেই হোন আপনাকে একটা বিগ থ্যাঙ্কস। হাসতে হাসতে পেট ব্যাথা হয়ে গেলো হো হো হো
আপনি কি পশ্চিমবঙ্গের কোন বামফ্রন্টের নেতা? ইয়ে, মানে... .............তাহলে একটা শ্লোগান দেই - কমরেড এই টোটকা এখানে ছৈলত ন।

দুর্দান্ত এর ছবি

"কপিরাইট কনসেপ্টটাই হলো লোভী, পুঁজিবাদি কনসেপ্ট।"
আমি বড়জোর কপিরাইট আইনকে লোভী বলতে রাজি আছি। কিন্তু লোভ কি খারাপ কিছু?

আনন্দ এর ছবি

অদ্ভুত ব্যাপার! আপনি, জুলিয়ান আর নিয়াজ ছাড়া আর সবাইই কেমন মাতালের মতন আবোলতাবোল বকে গেলেন আমার কথাগুলোর বিরুদ্ধে, আর বাকিরা ব্লাইন্ড ডিসাইপলের মতন খ্যা খ্যা করে হেসে গেলেন! যেমনি নাচাও তেমনি নাচি টাইপের! সচলায়তনে আরো একটু ম্যাচুরিটি আশা করি। মন খারাপ

কপিরাইট আর ওপেনসোর্স এর ব্যাপারটিতে আপনার ব্যাখ্যাটিই আমি আসলে বলতে চেয়েছিলাম। দুটো আসলে কি বস্তু সেটা জানি বলেই মনে হয়।

আর পুঁজিবাদের ব্যাপার। কপিরাইটের ইতিহাসটা একটু দয়া করে ঘেঁটে দেখুন(http://en.wikipedia.org/wiki/History_of_copyright_law); এটা প্রিন্ট মিডিয়াকে গণমানুষের কাছে সহজলভ্য করে তোলাকে আটকাতে, বই এর জ্ঞানকে নির্দিষ্ট এলাকায় সীমাবদ্ধ রাখতে মানুষের চিরন্তন লোভকে উসকে দিয়ে একটা দারুণ শুভঙ্করের ফাঁকি ছাড়া আর কি! পুঁজিই মুখ্য, জ্ঞান বিতরণ ফালতু ব্যাপার! এটাই পুঁজিবাদী নয়কি!(আমি চুলচেরা অর্থনৈতিক বিশ্লেষণে আপাতত যাচ্ছিনা, তবে চাইলে আলোচনা চলতে পারে।)

আর কেউ কেউ সৃষ্টিশীল সৃজনী আর বাচ্চাকে দিয়ে ঘর মোছা একই রকম মনে করেন দেখছি! তাদের জন্য করুণা রইলো।

এর পরে স্রেফ পাঁক ছোড়াছুড়িই হবে হয়তো। তাতে আমার তেমন উৎসাহ নেই। সুস্থ আলোচনা কেউ করতে চাইলে আছি। না হলে থেমে গেলাম। উৎসাহীরা পাঁক ছুড়তে থাকুন, ব্লাইণ্ড ডিসাইপলরা খ্যা খ্যা রবে মধুর হাসি হাসতে থাকুন।

ধন্যবাদ।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

কপিরাইট কনসেপ্টটাই হলো লোভী, পুঁজিবাদি কনসেপ্ট।

ওদের অনেক আছে তবু দেয়না! অভিমান হলো?

শিল্প, সাধনা, প্রযুক্তি, বিজ্ঞান মানুষ নিজের তাগিদেই, নিজের আনন্দেই উদ্ভাবন করে। এগুলোর কোনোটাই দিনমজুরী টাইপের কোনো কাজ না যে নির্দিষ্ট অঙ্কের পয়সা নিয়মিত দিতেই হবে।

এই সময়ের বিজ্ঞান নিয়ে আপনার স্পষ্ট ধারণা নেই। আগে জানার চেষ্টা করুন। উদাহরণ দেই, ই্উরোপে বায়োসায়েন্সের একটা সামান্য পিএইডডি স্টুডেন্টের পেছনে ৩ বছরে ২ কোটি টাকার মতো খরচ হয়। মেধার দাম বাদ দিয়েই।

এই এক জিনিসের জন্যই আজ বাসমতি চাল থেকে মশা মারার ওষুধ পর্যন্ত সবকিছুই নিজে বানানো যায়না। পেটেন্ট(!)কারীকে আগে পয়সা দিতে হয়।

তো জমি যার, জমিতে যে বীজ লাগালো, গাছে পানি দিল, সার দিল, গাছ মরে যাবে সেই আশঙ্কায় ঘুম হারাম করল, গাছে ফল হলে সেই ফলে তার মালিকানা নেই?! এইটাকে কী মস্করা বলে?

তুষ্ট শিল্পপিপাসুদের শিল্পীদের খুশি হয়ে দেওয়া উপহারকে যদি বাধ্যতামূলক করে দেওয়া হয় তো তার ফলাফল হিসেবে আমরা ঐ বাজারী ভাড়াটে রাইটার, অভিনেতা আর পরিচালকদেরই পাবো।(যেটা হলিউডে নিয়ম হয়ে গেছে)

দেইখেন না হলিউডের বাজারি সিনেমা! খাইয়েন না দাম দিয়ে কেনা বই! উদার সাহিত্যিকদের বই লিখতে বলেন, নিজের গাঁটের পয়সায় ছাপিয়ে বিনামূল্যে বিলিয়ে দিতে বলেন। তারপর আপনাদের দানের পয়সায় কুলালে সে বেচারা খেয়ে বাঁচবে, না হলে মরবে! তাতে অন্তত আপনার বর্ণিত পুঁজিবাদ তো মরল!

প্লেজারিজম অবশ্যই নিন্দনীয়। সূত্র উল্লেখ করাটা উচিত। তবে তারচেয়েও বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত কি মেসেজটা পৌঁছানো হচ্ছে তা নিয়ে।

জ্বি না। কী মেসেজ পৌঁছল সেটা গুরুত্বপূর্ণ সন্দেহ নেই। কিন্তু যাঁর লেখা তাঁকে প্রাপ্য সন্মান, এবং প্রযোজ্য হলে সন্মানী দেয়া আবশ্যকীয়! পুঁজিবাদ ভালো না বাসলে না বাসুন। শিল্প সাহিত্য হরিলুটের মাল মনে করে ফ্রিতে খাওয়ার ধান্দা বাদ দেন!

কার লেখা তা নিয়ে মাতামাতির কনসেপ্টটা আমাদের প্রাচ্যের নয়। আমরা কোনটা আসলে সত্যিকারের লালনের গান বা খৈয়ামের রুবাই তা নিয়ে মাথা ঘামাই নি।

এইটা হয়ে থাকলে একটা ইতরামি হইছে!

তার চেয়েও বড় কথা,শিল্প,সাহিত্যে অরিজিনালিটি বলতে আসলে ঠিক কি বোঝায়? ভাব মেরে না লিখলে, আঁকলে, গাইলে,নাচলে,অভিনয় করলে আদপেই কি কিছু করা সম্ভব? কল্পনাশক্তির অপর নামই হলো বিভিন্ন গুণীদের কাছ থেকে অল্প অল্প করে মৌলিক বস্তু ছুঁয়ে ছেনে কিছু একটা বানানো। কে বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবে যে সে কোনোকিছুই না মেরে (উৎকট) মৌলিক কিছু বানিয়েছে?

এইখানে আবারো কিছু বলার নাই! আবারো হো হো হো গড়াগড়ি দিয়া হাসি

সামষ্টিক দিকে না যেতে পারলে, ব্যক্তির বদলে ব্যপ্তিতে না যেতে পারলে সামগ্রিক শান্তি কখনোই আসবে না।

সমষ্টি মিলে ব্যক্তির পুটু মারার যে তাল করলেন, তাতে আপনার বর্ণিত সমাজে কোনো ব্যক্তি থাকবে না!

এই মন্তব্যটা বিরক্ত হয়ে লিখলাম। যুক্তিযুক্ত তর্কের এইখানে কোনো উপযোগিতা নেই! ওই বস্তু আপনার মগজে ঢুকলে আপনি এই মন্তব্যই করতেন না!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

লেখাটা, "ওদের অনেক আছে তবু দেয়না" বলে অভিমান করার মতো লাগলো!

মেধাসত্ত্ব রক্ষার সংগায় গরমিল থাকতে পারে। আইনে ফাঁক থাকতে পারে। কিন্তু সেটা 'মেধাসত্ত্ব' রক্ষার ধারণাটি বিলুপ্ত করে না!

উদাহরণ দেই, একটি অ্যান্টিবায়োটিক তৈরি করতে আপনাকে আক্ষরিক অর্থেই শতকোটি মুদ্রা বিনিয়োগ করতে হবে এবং শতাধিক লোকের যুগ যুগ ধরে খাটতে হবে! সেই অ্যান্টিবায়োটিকটি যখন তৈরি হবে, তখন সেই ফর্মুলা মেনে যে কেউ সেটি তৈরি করতে পারে। উপন্যাস কপি করার মতই। কিন্তু এই যারা 'কপিয়াল' তারা শতকোটি মুদ্রা বিনিয়োগ করেনি, শতেক লোকে মিলে বছরের পর বছর খাটেনি! যারা এই কাজ করেছে তারা কিন্তু ব্যর্থ হবার ঝুঁকি আছে জেনেই করেছে। তারা ব্যর্থও হতে পারত! এই ব্যর্থতার ঝুঁকি কপিয়ালেরা কেই ভাগ করে নেয়না!

মেধারও বিনিয়োগ হতে পারে। সেই বিনিয়োগের লাভ একচেটিয়া দেখাতে পারে সেটাও ঠিক। একটি ফলদায়ী বৃক্ষ যেমন। একটি মাত্র বীজ থেকে সেটি বছরের পর বছর ধরে ফল পাওয়ার মতো লাভজনক! ব্যক্তি/গোষ্ঠীর মেধা কখনোই সরকারী সম্পত্তি নয় যে তাতে সকলের সমান ভাগ হতে হবে! তবে অবশ্যই, বাজার/ব্যবসার অংশ হিসেবেই, যার যে বাজার দর তার বেশিতে সে বিক্রী হয়না! জাফর ইকবাল স্যারের বইই হাজার কপি বিক্রী হয়! কুদ্দুসের বই সে আর তার বউ ছাড়া কেউ কেনে না!

আমি মেধাসত্ত্ব রক্ষার পক্ষে। ব্যক্তি/গোষ্ঠীর মেধাসত্ত্ব রাষ্ট্র রক্ষা করবে সেটার পক্ষে। কেউ উদার হয়ে মেধাসত্ত্ব বিলিয়ে দিলে তাঁকে অভিনন্দন। কিন্তু সেটি সেই স্কলারের ইচ্ছেতেই হতে হবে। (মেধাসত্ত্ব রক্ষার কিছু ব্যতিক্রম রয়েছে। কারা যেন, নিম গাছের উপর একচেটিয়া গবেষণার সত্ত্ব কিনে নিতে চেয়েছিল, এইসব ইতরামির পক্ষে নই আমি! কিন্তু এইসব সমস্যা ন্যায্যতার ভিত্তিতে রাষ্ট্রই মেটাবে।)

প্রসঙ্গত, এই লেখাটা পিপিদা'র লেখার মন্তব্য হিসেবে আসলেই আলোচনা জমত।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

একটি অ্যান্টিবায়োটিক তৈরি করতে আপনাকে আক্ষরিক অর্থেই শতকোটি মুদ্রা বিনিয়োগ করতে হবে এবং শতাধিক লোকের যুগ যুগ ধরে খাটতে হবে! সেই অ্যান্টিবায়োটিকটি যখন তৈরি হবে, তখন সেই ফর্মুলা মেনে যে কেউ সেটি তৈরি করতে পারে। উপন্যাস কপি করার মতই। কিন্তু এই যারা 'কপিয়াল' তারা শতকোটি মুদ্রা বিনিয়োগ করেনি, শতেক লোকে মিলে বছরের পর বছর খাটেনি! যারা এই কাজ করেছে তারা কিন্তু ব্যর্থ হবার ঝুঁকি আছে জেনেই করেছে। তারা ব্যর্থও হতে পারত! এই ব্যর্থতার ঝুঁকি কপিয়ালেরা কেই ভাগ করে নেয়না!

চলুক

কুমার এর ছবি

চলুক

দুর্দান্ত এর ছবি

"একটি অ্যান্টিবায়োটিক তৈরি করতে আপনাকে আক্ষরিক অর্থেই শতকোটি মুদ্রা বিনিয়োগ করতে হবে এবং শতাধিক লোকের যুগ যুগ ধরে খাটতে হবে! সেই অ্যান্টিবায়োটিকটি যখন তৈরি হবে, তখন সেই ফর্মুলা মেনে যে কেউ সেটি তৈরি করতে পারে। উপন্যাস কপি করার মতই। কিন্তু এই যারা 'কপিয়াল' তারা শতকোটি মুদ্রা বিনিয়োগ করেনি, শতেক লোকে মিলে বছরের পর বছর খাটেনি! যারা এই কাজ করেছে তারা কিন্তু ব্যর্থ হবার ঝুঁকি আছে জেনেই করেছে। তারা ব্যর্থও হতে পারত! এই ব্যর্থতার ঝুঁকি কপিয়ালেরা কেই ভাগ করে নেয়না!"

সহমত, যে ঝুঁকি নেয় মুনাফা তারই হওয়া উচিত। কিন্তু ভেবে দেখা দরকার যে তার খরচ বাড়ার পেছনে গবেষনার পদ্ধতির কোন হাত আছে কিনা। ম্য়ালেরিয়া নিয়ে গবেষনার ক্ষেত্রে আমরা দেখছি যে ফাইজার-গ্ল্য়াক্সো এর মত বড় কোম্পানি গতানুগতিক কপিরাইট বাতাবরনে তিন অন্কের মিলিয়নের নিচে কোন গবেষনার পরিকল্পনা করতে পারছেনা, কিন্তু "মেডিসিন ফর ম্য়ালেরিয়া ভেন্চার" টি ওপেন সোরস কাঠামোর আওতায় দুই অন্কের মিলিয়নে তুলনীয় গবেষনা করতে পারছে।

ওপেন সোরস কিভাবে ওষুধ গবেষনার খরচ কমাচ্ছে, সেটা পড়ুন এখানে

মুনাফাহীন কাঠামোতে উন্মুক্ত কপিরাইট ও ম্য়ালেরিয়ার ওষুধ নিয়ে গবেষনা নিয়ে বিস্তারিত পড়ুন এখানে

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

ওপেন সোর্স ওষুধের খরচ কমালে সেটা খুব ভালো। কিন্তু এখানে সম্ভবত সেটা পসঙ্গ নয়। আমার উদাহরণটাতেও তা বলিনি।
গবেষণা/উৎপাদনের পদ্ধতি নিয়ে কি এই আলোচনা? নাকি উৎপাদন যেভাবেই হোক, সেই পণ্যের উপর উৎপাদকের অধিকার কতটুকু সেটা নিয়ে?

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

আনোয়ার এর ছবি

ভাই, আমি জানতাম, একটা ড্রাগ ফরমুলেশন য্তদিন পেটেন্ট করা থাকে ততদিন কেবল ঐ কোম্পানি তা উৎপাদন করতে ও বেচতে পারে, এবং একটা পেটেন্ট থাকে ১২ বছর (আমেরিকা তে)। এরপর তা জেনেরিক ফরমুলেশন হয়ে যায়। এটা করা হ্য় যাতে তারা অনেক লাভ করে তাদের গবেষনার খরচ তুলে আনতে পারে।

তবে আমার জানার গোলমাল থাকতে পারে।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

তো?

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

আনোয়ার এর ছবি

২১ নম্বর কমেন্টে অনার্যদা বলছিলেন কেউ ড্রাগ আবিষ্কার করলে যে কেউ ওটা বানাতে পারে। আমি শুনেছিলাম পেটেন্ট শেষ না হওয়া অবধি অন্য কেউ তা বানাতে পারে না। সেটাই বলেছিলাম।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

জ্বি। সেটা নিয়ে আমি কিছু বলিনি। আপনি বুঝতে ভুল করেছেন।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

একটু ভিন্ন দিক দিয়ে দেখি।

এক সময় মানুষ যেখানে খুশি যেতে পারতো। যেখানে ইচ্ছে ঘর তুলে থাকতে পারতো। সাধ্যে যতটুকু কুলায় ততটুকুই সে নিজে চাষ করতো।

তারপর কোনো এক সময় আইন হলো, জমির মালিক রাজা/সরকার। খাজনা দিয়ে ভোগ করতে হবে। তারও পরে আইন হলো, যার যা জমি আছে তা তার। চাষীরা জমির মালিক হলেন। আইন হলো বেচা-বিক্রির। ফলে, আইনের মার-প্যাঁচে কিছু কিছু মানুষের নাম উঠলো ভূমিহীনের খাতায়।

এই যে আইনের মার-প্যাঁচে মানুষ ভূমিহীন হলো, সম্পদ চলে গেল অন্যের অধিকারে। মুজিব মেহেদী একটা বই লিখলেন। তা ভিন্ন কোনো ব্যক্তি মেরে দিয়ে নিজের নামে ছেপে দিলো। মুজিব মেহেদী শুরুতেই যদি আইনের আওতায় নিজের বইটি নিয়ে আসতে পারতেন, তাহলে তা আজ ভিন্ন ব্যক্তির নামে হতে পারতো না। এমন আইন হয়তো নেই যা লেখকের অধিকার ফিরিয়ে দিতে পারে।

তার চেয়েও বড় কথা,শিল্প,সাহিত্যে অরিজিনালিটি বলতে আসলে ঠিক কি বোঝায়? ভাব মেরে না লিখলে, আঁকলে, গাইলে,নাচলে,অভিনয় করলে আদপেই কি কিছু করা সম্ভব? কল্পনাশক্তির অপর নামই হলো বিভিন্ন গুণীদের কাছ থেকে অল্প অল্প করে মৌলিক বস্তু ছুঁয়ে ছেনে কিছু একটা বানানো। কে বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবে যে সে কোনোকিছুই না মেরে (উৎকট) মৌলিক কিছু বানিয়েছে?

আনন্দ (যাচাই করা হয়নি)'র কথাগুলো আমার ভালো লেগেছে। কিন্তু অনুকরণ, চুরি, নকল, যাই বলি না কেন, বাবা বা বড় ভাইকে নকল করতে করতে বড় হই। কিন্তু জীবনের একটা পর্যায়ে এসে কিন্তু সেই অনুকরণের ব্যাপারটা আমাদের মাঝে থাকে না। সেখানেও একটা অলিখিত আইন আছে যা আমরা মানি। যেমন কেউ যেন বলতে না পারে, ছেলেটা ঠিক তার বাবা বা ভাইয়ের মতোই কান চুলকায়। আমরা চেষ্টা করি নিজের মতো কিছু করতে। যার ভেতরে সেই ব্যাপারটি নাই, তিনি স্বকীয়তার ধার ধারবেন না। কাজেই তাদের হাত থেকে রক্ষা পেতে হলে আইন প্রয়োজন।

সেই ক্ষেত্রে জাফর ইকবালের প্রথম প্রকাশিত বইটি ২০২৫ সালে হিমুর নামে প্রকাশ হলে হিমুর নাম হলো। কেউ প্রতিবাদ করলেন না। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত হলেন জাফর ইকবাল, চুরি হলো তাঁর সৃষ্টি , মেধা-সম্পদ। অবমূল্যায়িত হলো তাঁর মেধা। এ ক্ষেত্রে আইন সে দিকটি রক্ষা করবে না? সুতরাং মেধা চুরি সম্ভব। এমনটি না হলে হুমায়ূন আজাদের নারী অথবা আমার অবিশ্বাস গ্রন্থ দুটি নিয়ে কোনো কথারই জন্ম হতো না।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

আপনার পোস্ট পড়ে আমি কিছু বুঝতে পারলাম না।

নিতান্ত ভদ্রতা-শালীনতা ছাড়া অন্যের তোলা ছবি বা লেখার ক্রেডিট দেবার আর কি ভিত্তি থাকতে পারে - সেটার ব্যাখ্যা আমাদের জানতে হবে।

আপনি ভদ্রতার কথা বললেন, শালীনতার কথা বললেন। কিন্তু ছবিটা যার তোলা তার ক্রেডিটের কথা বলতে কি ভুলে গেলেন? এটা যে তার তোলা ছবি সেটা বলতে আপনার কোথায় সমস্যা?

একটা সুন্দর ছবি দেখলে তার স্রষ্টার কথা মনে আসবে, এটাই স্বাভাবিক। কাউকে ক্রেডিট না দিয়ে ছবি নিজের বলে চালানোর মধ্যে আনন্দ কোথায় আমি তো বুঝি না। এখানে আইনগত ভিত্তি আসে কিভাবে? সবকিছুর কি আইনগত ভিত্তি থাকে? না থাকতে হয়?

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

চলুক

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

আসলে কী বলতে চাচ্ছেন, আমি ঠিক বুঝিনি। আপনি বলতে চাচ্ছেন অন্য কারও সৃষ্টি, যেমন লেখা উপন্যাস বা ছবি নিজের নামে মেরে দেয়ার কোন নৈতিক ভিত্তি নেই? আপনি বলেছেন যে, সেটার আইনগত ভিত্তি থাকতে পারে, কিন্তু নৈতিক ভিত্তি নেই! আমার তো বরং উল্টা মনে হচ্ছে, যে এটার আইনগত ভিত্তি যদি নাও থাকে অন্যের মেধাজাত কাজ তাকে না বলে মেরে দেয়া অনৈতিক।

কেউ চাইলে তার কাজকে বা অবদানকে উম্মুক্ত করে দিতে চাইলে সে স্যালুট পেতে। কিন্তু সেক্ষেত্রেও তার অবদান উল্লেখ করাই আমি নৈতিক মনে করি। আর কেউ যদি তার মেধাজাত উৎপাদ নিয়ে ব্যবসাই করতে চান, সে অধিকার তো তার থাকাই উচিৎ। সেটা না করে কেউ যদি সেটাকে উন্মুক্ত করে দেন, তাকে আমরা মহান বলতে পারি, কিন্তু সবাইকে তো মহান হতে বাধ্য করতে পারিনা!

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

আযাদ রাফি  এর ছবি

চলুক

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।