কাল রাত থেকেই মেজাজ-টা খিঁচড়ে হয়ে ছিল; বহু প্ল্যান-প্রোগ্রাম করার পর সব যদি ভেস্তে যাবার উপক্রম হয় - তাহলে মেজাজ না চড়ে আর যায় কোথায় ? অবশ্য এ ধরনের পরিস্হিতিতে আমি দু'টো সহজ-সরল, সেল্ফ-মেড নিয়ম মেনে চলি - এগুলো বলা যেতে পারে দুরন্ত'স ল'স অফ ইটারনাল হ্যাপিনেস:
1. be responsible for whatever you do
2. never blame others
(এখনো অনুবাদ করা হয় নাই )
যাই হোক - প্রথম ল' অনুযায়ী প্ল্যান-প্রোগ্রাম যেহেতু আমার, তাই এর দায়-দায়িত্বও আমাকে বহন করতে হবে; আর দ্বিতীয় ল'তো কোনো বুধোর ঘাড়ে দায় চাপানোর সুযোগ থেকেও বঞ্চিত করছে । কী আর করা ! রাতে ফেসবুকে স্ট্যাটাস আপডেট দিয়েছিলম :
" কতদিন স্বপ্ন দেখিনা - ক্লান্ত রিকশাওয়ালার মত ঘুমে ঢলে পড়ি নিমেষেই ;
আজ হতে রঙ্গীন চশমা পরে ঘুমাতে যাবো - আমার স্বপ্নেরা যে সাদাকালো "
মাগার ঘুম তো আর আসে না - স্বপ্নতো পরের কথা। জেগে-জেগে বানোয়াট স্বপ্ন দেখারও ইচ্ছে নেই। অবশেষে ঘন্টা দেড়েক হাত-পা ছোড়াছুড়ির পর ঘুমটা বোধহয় আসলো। ভেবেছিলাম সকালটাও বোধহয় এমন-ই যাবে। কিন্তু কোথায় কী ?
মাত্র চার ঘন্টা ঘুমের পরও এলার্ম ঠিকঠাক মতই কাকভোরে জাগিয়ে দিল। ভেবেছিলাম আজ আর হাঁটতে যাব না - গেলেও ১০ মিনিটে দু-চক্কর মেরে আবার দেব ঘুম। কিন্তু বাইরে বেরুতেই মাথা পুরো সাফ - ফাটাফাটি আবহাওয়া! কাল রাতে হালকা-পাতলা বৃষ্টি হয়েছিল। সব পঙ্কিলতা সেই বুঝি সাফ করে দিয়ে গেছে সতেজ অনুভব- এই মাল্টিন্যাশনাল সৌন্দর্য সাবানগুলো যা করার দাবী করে আর কি ! একটু একটু ঠান্ডা বাতাস - টুকটাক কিচিড়-মিচিড় : সব মিলিয়ে নিমেষেই মনটা ভাল হয়ে গেল। ঠিক করলাম - আজ আর বদ্ধ ঘেড়াটোপে নয়, বেরিয়ে পড়ব বাইরে। যেদিকে দুচোখ যায় ভঙ্গিতে কাটিয়ে দিলাম প্রায় ঘন্টাখানেক। ম্যানহোল খোলা গলির ঢাল থেকে শুরু করে মানব পুরীষময় ওভারব্রীজ কিছুই বাদ দেই নি। সব কিছুই আজ যেন মধুময়। এমনকি রাজপথ কাপিয়ে কালো ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে দাপিয়ে চলা দানব ট্রাকগুলোকেও মনে হচ্ছিল বড় আপন (আহ্ গলে লাগ্ যা)।
ফেরার পথে ভাবছিলাম জীবনের ৯১৩২ তম দিনটিকে অন্য দিনগুলোর চাইতে কিভাবে আলাদা করা যায়? এই যে দিনের শুরুতেই প্রকৃতির স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে মন ভাল করার একটা চেষ্টা - এটাই বা কম কিসে? সারাটা-দিন তো আজ খালি গুণগুণ করেই কাটিয়ে দিতে পারবো। প্রতিটি দিন-ই তো আসলে নতুন একটা দিন - প্রতিদিন-ই প্রকৃতি তার নতুন উপহার নিয়ে কড়া নাড়ে শ্রেষ্ঠ সৃষ্টির দুয়ারে। খালি বরণ করে নেবার অপেক্ষা।
মন্তব্য
অনুবাদে কষ্ট হলে বাংলাফাই করুন... তবু করুন!
ধন্যবাদ ইশতি ভাই
বাংলাফায়িং-টা তাহলে করেই ফেলি :
... ... ... গুরুচন্ডালী দোষে দুষ্ট হইল নাকি আবার ?
প্ল্যান প্রোগ্রামগুলো কি ছিলো? থাক বলা লাগবে না
এরকম দিন মাঝে সাঝে আসে, মন ভালো হয়ে যায় চট করে।
আপনি দিনক্ষণের যে হিসেব রাখেন সেটা কি সবসময় নাকি এই লেখাটার জন্য ক্যালকুলেটর বের করেছিলেন?
সবগুলো না বল্লেও একটু ইশারা (hints - এর অনুবাদ এমনই তো, নাকি ?) দিতে পারি:
১. সারাদিন যাযাবরের মত উদ্দেশ্যহীন ঘুরব (কোনভাবেই 'হিমু' থেকে অনুপ্রাণিত নয়)
২. খাব-দাব, গান গাইবো
৩. মায়ের হীরের টুকরো হবো
৪. বন্ধুর মুখে হাসি ফোটাবো
৫. সন্ধ্যে হলে বাড়ি ফিরে পড়তে বসবো ... ইত্যাদি
মজার ব্যাপার - কিভাবে কিভাবে যেন শেষটা বাদে সবগুলোই মিলে গেল, থামুন সচল ছেড়ে পড়তে বসছি
ঠিকই ধরছেন - দিনক্ষণের হিসেবটা ক্যালকুলেটর বের করেই করেছিলাম : ২৫ বছরে কত দিন হয় যেন - জানতে ইচ্ছে করছিল যে ...
আপনার জন্মদিন ছিলো বুঝি?
অভিনন্দন
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
ধন্যবাদ, ধন্যবাদ!!!
জন্মদিনের হাসি-আনন্দ, অভিনন্দনবার্তা সবই মধুর - কেবল বুড়িয়ে যাচ্ছি (অন্তত শারীরিক ভাবে) - এই চিন্তাটা মাথায় না আসলেই হয়
৯১৩২কে ৩৬৫ দিয়ে ভাগ দিলে কতো হয়?
অফটপিক
কতদিন স্বপ্ন দেখিনা - ক্লান্ত রিকশাওয়ালার মত ঘুমে ঢলে পড়ি নিমেষেই ;
আজ হতে রঙ্গীন চশমা পরে ঘুমাতে যাবো - আমার স্বপ্নেরা যে সাদাকালো
-এগুলো আপনার নিজের লেখা (সন্দেহ হচ্ছে যে আপনারই)? একটু সাইজ করলে কিন্তু কথাগুলো কবিতার দিকে দেৌড়ুবে।
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু
(৩৬৫ x ২৫) + ৬ (অধিবর্ষের জন্য) + ১ = ??? [খুবই সরল, তাই না ;-)]
পলাশ'দা, মোটা অক্ষরের কথাগুলো আমার নিজেরই অভিজ্ঞতা ও কল্পনা প্রসূত। কোন বিখ্যাত বা অখ্যাত লেখকের সাথে মিলে গেলে তা নিতান্তই অনভিপ্রেত কাকতাল মাত্র ! আর কবিতা লেখব আমি ! আমার কবিতা মতান্তরে ছড়া মতান্তরে 'কিছুই না'র একটা নমুনা দেই -
"ভোম্বল দাস, করে হাসফাঁস
একবার খেয়ে বলে পেট ভরে নাই
দ্বিতীয়বার খেয়ে বলে ভাল লাগে নাই।"
- সুতরাং বুঝতেই পারছেন, ছন্দময় পদ্য প্রসব করা আমার কাজ নয় - বরং খটোমটো গদ্য-তেই এই শব্দশ্রমিকের তেল বেরিয়ে যাবার যোগাড়। ভাবের ঘোরে লেখা বলেই হয়তো এটা কবিতার দিকে দৌড়ুতে চেয়েছিল! যাহোক, কোনমতে রাশ টেনে ধরতে পেরেছি তাহলে
নতুন মন্তব্য করুন