• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

পরিমামার গল্প

এক লহমা এর ছবি
লিখেছেন এক লহমা [অতিথি] (তারিখ: মঙ্গল, ১৩/০৮/২০১৩ - ৯:২৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

- পিউ, ওরে ও পিউ।

পরিমামার গলা পেয়েই মন ভালো হয়ে গেল। পরিমামা অর্থাৎ পরিতোষ-মামা সম্পর্কে লতায়-পাতায় দূর সম্পর্কের। কিন্ত মনের হিসাবে তিনি এ বাড়ির সবার-ই খুব কাছের জন। সেই কোন ছোটবেলে থেকে উনি মাঝে মাঝে আমাদের বাড়ি এসে ঘুরে যান! পরি-মামা এসেছে মানে গল্প এসেছে। সবাই জানে পরিমামার গল্পের কোন বাস্তব-অবাস্তব নেই, সম্ভব-অসম্ভব নেই। যেমন একদিন এসে বলল
- চাঁদে ঘুরে এলাম। আমি যখন চাঁদে বসে বই পড়তে পড়তে পড়া থামিয়ে হাত নাড়ছিলাম এখান থেকে অনেকে আমায় দেখে হাত নেড়েছে।
আমরা জানি সেটা হয় না। কিন্তু পরিমামাকে সেই প্রশ্ন করতে নেই। বরং জিজ্ঞেস করতে হয়
- তারপর?
আর তখন গল্প এগোতে থাকে। একটু পরে পরে এক কাপ চা, সাথে টুকটাক মুখে ফেলার মত কিছু। ব্যস, গল্প চলতে থাকে।

আজ গুছিয়ে বসার পর পরিমামা বলল -
- ও: ক’ সপ্তাহ যা খাটনি গেল!
- কেন, কেন?
- সতুদাকে মনে আছে? সতুদার ভাগ্নে গজাকে নিয়ে খুব ঝামেলা গেল।
- কোন গজা? সেই যে, যিনি মামার কাছে থাকেন, যার বউ চলে গেছিল? যাওয়ার আগে বলে যায়নি কেন গেল, সেই গজা?
- হ্যাঁ, সে-ই।
- তার আবার কি হল? বউ ফিরে এল?
- তা হলে তো হয়েই যেত! না, না, বউ আর ফিরছে না। এখন তো আর কিছুতেই নয়।
- কেন, এখন আর কিছুতেই নয় কেন?
- সতুদা ক’ সপ্তাহ আগে ক্লাবে এসে বলল গজার কি যেন হয়েছে! জিজ্ঞেস করলাম - “কি হল, কি করে হল?” বলল কোন সাইবার কাফে না কোথায় গিয়ে কি সব পড়ে-টড়ে এসে কয়েকদিন কিরকম উদাস হয়ে থেকেছে। তারপর আস্তে আস্তে অবস্থা চরম হয়েছে। এখন মাঝে মাঝেই কেঁপে কেঁপে উঠছে। চোখ লাল। দু হাতে থেকে থেকে মুখ মুছছে। কিছু খেতে চায় না! হঠাৎ হঠাৎ ঘরবাড়ি কাঁপিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলছে। সতুদা ভেবেছিল ভাগ্নে কোথাও বউ-এর দেখা পেয়েছে। পেতেই পারে! কিন্তু, গজা কিছু বলছে না। তাই সতুদা এখন আমার কাছে এসেছে। আমি গজার বন্ধুদের কেসটা দেখতে বললাম। প্রথমে কেউ কিছু বার করতে পারে নি। শেষে ওদের-ই একজন একটুখানি মুখ খোলাতে পারল। গজাকে অনেকটা কনফিডেন্সে নেওয়ার পর গজা তাকে বলল - “চারিদিকে এত তেঁতুল গাছ!”
- কি?
- হ্যাঁ। আমরা তো থ! সতুদার বাড়ির ত্রিসীমানায় কোন তেঁতুল গাছ নেই! জয়ন্ত বলল তেঁতুল গাছে পেত্নী থাকে। নিশ্চয়ই গজা কোন তেঁতুল গাছের তলা দিয়ে কি পাশ দিয়ে গিয়েছিল, তখন সে গজার ঘাড়ে চেপে গেছে। বলে দু’ হাতে পেন্নাম ঠুকতে লাগল। জয়ন্ত প্রচুর হাবি-জাবি বলে। সবাই মিলে ওকে রে-রে করে বাতিল করে দিল। কিন্তু গজার কি হবে? জয়ন্তর শালা হীরেন দিদির বাড়ি বেড়াতে এসেছিল, জয়ন্তর সাথে সেদিন ক্লাবে এসেছিল ব্রীজ খেলতে। সে সাইকিয়াট্রিস্ট। হীরেন বলল - “মেসোমশাই, আপনার আপত্তি না থাকলে আমি একবার ওর সঙ্গে কথা বলে দেখতাম। আগেরবার যখন এসেছিলাম ওর সঙ্গে আমার অনেক কিছু নিয়ে কথা হয়েছিল।”

হীরেন দেখে এসে বলল, - "গোলমাল আছে। গজার মন অন্য দিকে নিতে হবে।" হীরেনের সঙ্গে কথা বলে ঠিক হল গজা হীরেনের এক বন্ধুর ছবি আঁকার ক্লাসে ভর্ত্তি হবে।
- আচ্ছা! ভর্ত্তি হলেন উনি?
- হল। কিন্তু গজা যেই ছবি-ই আঁকে, সব ছবির-ই নীচের দিকটা ভেজা ভেজা। গজার ক্লাসের ড্রয়িং স্যার বলেছিলেন ছবি শুকিয়ে নিয়ে তারপর ওনার হাতে দিতে। তা, গজার ছবি আর শুকোয় না! খোঁজ করে দেখা গেল ছবি গজার কাছে না থাকলে শুকোচ্ছে। গজা হাতে নিলে ভিজে যাচ্ছে। কারণ, ছবি দেখে সমানে গজার মুখ থেকে লালা পড়ে যাচ্ছে।
- কেন, গজার ছবিতে কি ছিল?
- গজাকে প্রিয় খাবারের ছবি আঁকতে বলা হয়েছিল।
- কি এঁকেছিলেন উনি?
- তেঁতুলের আচার। চার চাকার সাইকেল গাড়িতে বয়ামের পর বয়াম ভর্ত্তি তেঁতুলের আচার।
- তা হলে তো জল আসবেই। আমাদের-ই আসছে।
- যা বলেছিস! তেঁতুলের আচার খুব ঝামেলার জিনিস।
- হ্যাঁ, তেঁতুল একটা অভিশাপ। পৃথিবীতে কেন যে তেঁতুল এল! সব তেঁতুল গাছ কেটে ফেলা উচিত।

মা পাশের ঘরে চা বানাতে বানাতে সব শুনছিল। এই সময় চা নিয়ে এসে পরিমামার হাতে তুলে দিতে দিতে আমাদের জোর বকা লাগাল - ছি-ই! ছি ছি-ছি-ছি! ছিঃ! ও কি রকম কথা! যার লালা পড়ে তার দোষ না, যত দোষ হল তেঁতুলের!

আমরা বললাম - তা, ড্রয়িং স্যার কি করল?
- কি আর করবে? খাবার ছাড়া অন্য কিছুর ছবি আঁকতে বলল। গজা বলল - “ঘর বাড়ির ছবি আঁকব?” স্যার বললেন - “আঁক।”
- আঁকলেন?
- হ্যাঁ, আঁকল। বাড়ি আঁকল। বাড়ির পাশে নদী আঁকল। নদীর পারে সারি সারি তেঁতুল গাছ। আর গাছের তলা লালায় ভিজে গেল!
- কি সর্বনাশ! তারপর?
- এরপর গজাকে শুধু ঘরের ভিতরের জিনিস আঁকতে বলা হল।
- গজা কি আঁকল?
চেয়ার আঁকল, টেবিল আঁকল, টেবিলের পিছনে দেয়াল আঁকল। দেয়ালে ক্যালেণ্ডার আঁকল, ব্যস!
- বুঝেছি, ক্যালেণ্ডারে তেঁতুল গাছ, গাছ দেখে লালায় গাছতলা ভিজে গেল।
- হ্যাঁ।
- তা হলে?
- তা হলে আর কি? গজাকে আঁকার স্কুল থেকে ছাড়িয়ে এনে গানের স্কুলে দেওয়া হল। গজাও মহা উৎসাহে ওর পুরান হারমনিয়াম নিয়ে প্র্যাক্টিসে লেগে গেল।
- এবারে গজা ঠিক হল?
- কোথায় আর ঠিক হল? প্রথমে রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইতে গেল। “ওগো নদী, আপন বেগে পাগল-পারা” হয়ে “স্তব্ধ চাঁপার তরুতে” এসে এত লালা পড়তে রইল যে ভিজে ভিজে রীড নষ্ট হয়ে গেল!
- অ্যাঁ! চাঁপার তরুতে লালা পড়বে কেন?
- পড়বে, পড়েছে। চাঁপার তরু বলতেই চাঁপা গাছ থেকে তেঁতুল গাছের কথা মনে পড়ে গেছে। তেঁতুল গাছ মানেই তেঁতুলের আচার, মানে লালা।
- কী জ্বালা! তা হলে?
- আর তা হলে! হারমনিয়াম বন্ধ করে তবলা ধরিয়ে দেওয়া হল। দু' দিন পরে দেখা গেল গজা বাজাচ্ছে - তাক তেরে কেটে তাক, মাখ কেটে-কুটে মাখ, কেটে-কুটে মাখ, কেটে-কুটে মাখ, মাখ কেটে-কুটে মাখ, মাখ কেটে-কুটে মাখ। আর লালা পরে পরে তবলা ফেঁসে যায়, যায়! তবলা ছাড়িয়ে টেলারিং শিখতে দেওয়া হল। গজা কাপড়ের তেঁতুল গাছ কেটে কেটে লালায় ভিজিয়ে ন্যাতা করে ফেলতে লাগল। শেষে ত এমন হল, করা তো পরে, গজার সামনে কিছু বলাই যায় না। যদি কেউ বলে চাঁদ - হয়ে গেল! চাঁদ - চাঁদ উঠেছে, ফুল ফুটেছে, কদমতলায় কে - কদমতলা - তেঁতুলতলা - তেঁতুল - লালা, আরো লালা। যদি বল জুতো - জুতো মানে হাঁটা, হাঁটা মানে হেঁটে হেঁটে বাজার - বাজারে তেঁতুল - লালা, আরো লালা। যদি বলো বিজলীবাতি, বিজলীবাতি - বিজলী - মেঘ - মেঘ থেকে জল পড়ে - পাতা নড়ে - পাতা - তেঁতুল পাতা।
- বুঝেছি, বুঝেছি, থামো তুমি। তা হলে? কিচ্ছু করা গেল না?
- কেন যাবে না? গজা এখন ভাল আছে!
- কী করে?
- গজাকে একটা ঘরে রেখে, কোলে রেখে লেখা যায় এমন মাপের একটা ব্ল্যাকবোর্ড আর এক বাক্স চকখড়ি দিয়ে দেওয়া হয়েছে। সাথে দেওয়া আছে একটা তোয়ালে। গজা মন দিয়ে তেঁতুল গাছের ছবি আঁকে। নীচে লিখে দ্যায় “তেঁতুল”। লালায় ভিজে গেলে তোয়ালে দিয়ে মুছে ফেলে আবার লেখে বা আঁকে যেমন মন চায়, আবার ভিজে গেলে মুছে ফেলে। আবার আঁকে বা লেখে। ঘরের সঙ্গেই বাথরুম রয়েছে। গজাকে আর ঘর থেকে বের হতে হয়না। ঘরের সামনে ২৪ ঘন্টা পাহারা আছে, চক ফুরিয়ে গেলে চক সাপ্লাই দ্যায়। তোয়ালে দ্যায়, সময় মত খাবার-দাবার দ্যায়। গজা ভাল আছে, সুখে আছে।

********** সমাপ্ত **********

একলহমা


মন্তব্য

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

(Y)
গজার নামটা দেখে দিলুর কথা মনে পড়ে গেল :S

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

(ধইন্যা)
দিলু? :S
- একলহমা

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

রাহাত খানের "দিলুর গল্প" দ্রষ্টব্য, আফসোস, রাহাত খান এই চরিত্র নিয়ে লেখালেখি চালিয়ে গেলে আমরা আরেক টেনিদা পেতাম :(

[কোনমতেই প্রাসঙ্গিক না যদিও :) ]

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

আমারো গজা পড়ে দিলুর গল্প মনে পড়ে গেলো - আহা গজাকে বাঁচাতে সেই বানরসেনা, ডালকুত্তাদের মাঠে নামানো আর দি গজা অনুসন্ধান কমিটির মাথা ন্যাড়া করা দল!!!

____________________________

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

জটিল লিখেছেন ভাই - এক্কেবারে সেরাম --- =)) =)) =))

মুখফোঁড়ের আদমের মত এই গজাকে নিয়েও হবে নাকি একটা সিরিজ?

____________________________

অতিথি লেখক এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ প্রোফেসর!
ইচ্ছে ত কত কিছুই করে, পারি কই। তবে মুখফোঁড় মূর্তিমান অভিশাপ, অত ভাল লেখা আমি রোজ ২৪ ঘন্টা অভ্যাস করলেও পারবনা!
ভাল থাকবেন, আপনার লেখার অপেক্ষায় আছি।
- একলহমা

অতিথি লেখক এর ছবি

অসাধারণ!
আপনাকে যে কী বলবো! ফাটাইয়া দিলেন যে একেবারে ভাইয়া।

-নিয়াজ

অতিথি লেখক এর ছবি

(ধইন্যা)
(আর কিছু কমু না। স্বপ্নীলভাই-এর আবার গলার ভিতর চুলকাইবে :)) )
-একলহমা

সত্যপীর এর ছবি

খি খি খি।

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক এর ছবি

:D
- একলহমা

অতিথি লেখক এর ছবি

=)) =)) =)) =)) =))
দুনিয়া তেঁতুলময় কি আর করা, ঈমান রক্ষার্থে সব মুমিন বান্দার উচিত ঘরের মধ্যে থাকা, গজার মত :p
ইসরাত

অতিথি লেখক এর ছবি

(ধইন্যা)
"ঈমান রক্ষার্থে সব মুমিন বান্দার উচিত ঘরের মধ্যে থাকা, গজার মত"
- পুরাই একমত :p
- একলহমা

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

:)

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অতিথি লেখক এর ছবি

(ধইন্যা)
- একলহমা

অতিথি লেখক এর ছবি

(এই মন্তব্য অতন্দ্র প্রহরীর জন্য)
(ধইন্যা)
হ্যাঁ, গজা-রা লালা ঝরাবেই। সেই কুমীরের গল্পের-ই মতন ;)
- একলহমা

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

হাহাহা। মজা লাগল। :)
সেই কৌতুকের কথা মনে পড়ল, স্কুলের এক ছেলে কিছু লিখতে/বলতে গেলেই কুমিরের কথায় চলে যেত। পুরাপুরি সেভাবে মনে নাই। পড়েছেন বা শুনেছেন নিশ্চয়ই?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।