পাখির কারাবাস

ফকির ইলিয়াস এর ছবি
লিখেছেন ফকির ইলিয়াস (তারিখ: বুধ, ০১/০৪/২০০৯ - ৩:৩৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আর বুনি না ফেরার প্রিয় তাঁত
আর খুলি না ঘরের তাম্রতালা
জানি সবই মেকি ঢেউয়ের জল
সবই ফিকে, ধূসর শব্দমালা।

অথচ এই প্রেমের ভুবন জুড়ে
ছিল বীণা, বাজতো আলোর ছলে
কেউ নামতো পদ্মপুকুর মাঝে
কেউ কবিতা শুনতো কালের কলে।

কলের গানে বেজে যেতো গান
বাঁশরিয়ার দুপুর চেরা বাঁশী
ডাকতো কাছে আঁকাবাঁকা পথে
পড়শীরা ও দেখে যেতো আসি।

ডাঙা বুকে সেই নদীদের নাম
আমিও লিখে রেখে দিতাম পাশে
প্রতিবেশী ছিলাম কি না , তাই
যুগের কোলাজ সাজিয়ে অভিলাষে।

আঁকা আমার কাজ ছিল না জানি
তবু কেন মুখের দিকে চেয়ে
তোমার ভুরু আঁকতে গেলেই শাদা
শিশিরগুলো ঝরতো গন্ড বেয়ে !

তা কি তবে কান্না ছিল কোনো
চৈত্রমনে বসন্তেরই দোলা
চেয়েছি আগুন ,আকাশ ছিদ্র করে
চেয়ে দেখেছি প্রান্তপরত খোলা।

মিশে গেলে ইচ্ছে শস্যদানা
মাটিও তারে যে সহজ গ্রহণে
টানে বুকে দু:খ ভুলে গিয়ে
নীলরঙা দিন অস্ত যায় উজানে।

আমার দুপাশে অস্তমিত রোদ
ফেরার বাসনা , গতায়ু ইতিহাস
যে প্রেম ছিল কুসুমগন্ধ মাখা
তা নেই তাই পাখির কারাবাস।


মন্তব্য

অনিশ্চিত এর ছবি

ডাঙা বুকে সেই নদীদের নাম
আমিও লিখে রেখে দিতাম পাশে
প্রতিবেশী ছিলাম কি না , তাই
যুগের কোলাজ সাজিয়ে অভিলাষে।

খুব ভালো লেগেছে। হেরমান হেস সিদ্ধার্থকে শেষ পর্যন্ত নদীর কাছেই নিয়ে গিয়েছিলেন। দেখিয়েছিলেন, পৃথিবীর কারাবাস ভাঙতে গেলে যেতে হয় প্রকৃতির কাছেই।
‌‌-------------------------------------
হাত বাঁধা, কিন্তু দড়ি মুক্ত - হায় পৃথিবী!

‌‌-------------------------------------
হাত বাঁধা, কিন্তু দড়ি মুক্ত - হায় পৃথিবী!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।