হাঁ, আগামী বছর নাগাদ বাংলাদেশে যাচ্ছেন তিনি। হেসে জানালেন সমরেশ দা। সমরেশ মজুমদার। সিলেটের মৌলভীবাজারের কুলাউড়া-শ্রীমংগল এলাকার চা বাগান ঘুরবেন। চা বাগান তার জীবনের একটি অংশ। এ নিয়ে তিনি লিখেছেন উপন্যাস ও। তাঁকে এই সফরের
স্পনসর করবেন সাপ্তাহিক ঠিকানার সি ও ও সাঈদ উর রব।
জানতে চাইলাম তার নতুন উপন্যাস '' আয় সুখ যায় সুখ '' বিষয়ে।
এট ছাপা হচ্ছে ধারাবাহিকভাবে '' কালি ও কলম ''এ। বললেন, তাতে তিনি রাজনীতি, সমাজচিত্রের সমকালকে তুলে ধরতে চান। তবে মাঝে মাঝে বাধ সাধে ঢাকাইয়া ভাষা রপ্ত না থাকার জ্বালা !
এর আগে নিউইয়র্ক বইমেলায় ছিল আড্ডা।
বাংলা ভাষার বিশ্বায়নকে স্পর্শ করে একজন লেখক কী লিখছেন কেন লিখছেন তাই ছিল আড্ডার বিষয়। অতিথি দু’জন- হাসান আজিজুল হক ও সমরেশ মজুমদার। নিউইয়র্ক বইমেলার এ আড্ডাটি ছিল খুবই প্রাণবন্ত। আঠারোতম বইমেলা ও বাংলা উৎসব উপলক্ষে নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটস সেজেছিল বর্ণিল সাজে। ২৬ জুন ২০০৯ বিকেলে উৎসবের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপুমনি। তিনদিনব্যাপী এই বইমেলা ও উৎসবে আমেরিকার বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকে ছুটে এসেছিলেন অভিবাসী বইপ্রেমীরা। ২৮ জুন রোববার বিকেলে শুরু হয় লেখকদের এই আড্ডা। অনেকেই নানাভাবে তাঁদের লেখালেখির তাগিদের কথা বললেন। জানালেন কেন লেখেন, কী লিখছেন ইত্যাদি। কথাসাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার বললেন, ভাষার বিশ্বায়নের সাথে সাথে লেখকের আর্থিক সংগতিরও বিশ্বায়ন হওয়া উচিৎ। একজন লেখক যিনি ভাষার উৎকর্ষ সাধন করে যাবেন, নান্দনিকতা বিতরণ করে যাবেন তাঁরও জীবন সংসার ও ভবিষ্যতের নিরাপত্তা প্রয়োজন। সমরেশ মজুমদার সুষ্ঠু অনুবাদের ওপর জোর দিয়ে বলেন যার যতটুকু সাধ্য তা নিয়ে সাহসিকতার সাথে কাজ করে যেতে হবে।
কথাশিল্পী হাসান আজিজুল হক কেবল উত্তম লেখক নন, ভালো কথকও বটে। তাঁর কথায় থাকে রসময় প্রাণোচ্ছলতা। বললেন, মানুষ কেন লেখে বা কেন নিজেকে প্রকাশ করে তার ব্যাখ্যা বিভিন্নভাবে দেয়া যায়।তবে আমি বলি যে দুটো জিনিস লুকনো যায় না, একটা হচ্ছে লেখকসত্তা, অন্যটি হচ্ছে লেজ। তাঁর কথায় হাসির রোল পড়ে যায় হল জুড়ে। তিনি বললেন, বিশ্বায়ন একটি বাণিজ্যের নাম। বুর্জোয়াতন্ত্রের এই স্লোগানটি হজম করার আগে লেখার সমকাল নিয়েও আমাদের ভাবতে হবে।
অভিবাসী লেখকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা লিখে যান, যথাসম্ভব ভালো লেখার চেষ্টা করুন। বেশি করে ভালো লেখা পড়ুন, কারণ এই যুক্তরাষ্ট্রে প্রচুর ভালো লেখার রিসোর্স রয়েছে। সেসব কাজে লাগিয়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে আরো সমৃদ্ধ করা মোটেই কঠিন না। তিনি আরো বলেন, সাহিত্যে সমকালকে ধারণ করা জরুরি বিষয়। কারণ সময়ই বলে দেয় কোন দিকনির্দেশনা নিয়ে সেই সময়ের সাহিত্যটি এগিয়ে ছিল।
আড্ডার সঞ্চালক ছিলেন আদনান সৈয়দ, উপস্থিত ছিলেন সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল, ফকির ইলিয়াস, শামস আল মমিন, লুনা ঘোষ, দেবানন্দ সরকার, ফাহিম রেজা নূর, সোনিয়া কাদির প্রমুখ।
২৭ জুন সন্ধ্যায় মুমু আনসারীর উপস্থাপনায় অনুষ্ঠিত হয় স্বরচিত কবিতা পাঠের আসর। এতে প্রায় বিশজন কবি অংশগ্রহণ করেন। যথারীতি উপস্থিত ছিলেন হাসান আজিজুল হক ও সমরেশ মজুমদার। পরে আলাপচারিতায় সমরেশ মজুমদার বলেন, ইউরোপ-আমেরিকা ভিত্তিক বাংলা বইয়ের প্রকাশনা সংস্থা গড়ে ওঠা দরকার।
ছবিতে - ঠিকানা সম্পাদক মুহম্মদ ফজলুর রহমান, সমরেশ মজুমদার ,
সাংবাদিক আব্দুল মালেক, সাঈদ উর রব ও ফকির ইলিয়াস
মন্তব্য
ভালো লাগলো।
উৎকর্ষতা > উৎকর্ষ হবে।
ঠিক করেছি। ধন্যবাদ
ভালো লাগলো। ধন্যবাদ ইলিয়াস ভাই।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
ভালো খবর।
সমরেশের প্রথম বই পড়ি 'গর্ভধারিনী'। পড়ছিলাম, আর বারবার পেছনের ফ্ল্যাপে লেখকের ছবি দেখছিলাম। কী করে লিখে, এমন করে!
যদি কখনো সুযোগ পাই জলপাইগুড়ি আর ডুয়ার্সের চা বাগান দেখে আসবো। এখনো আমার কল্পনায় সমরেশের চরিত্ররা ওখানে ঘুরঘুর করে...
____________
অল্পকথা গল্পকথা
আমার শুরু সাতকাহন দিয়ে।
আমার শুরু অর্জুন দিয়ে, আনন্দমেলায় থাকতো প্রতি বছর, প্রথম পড়েছিলাম মনে হয় "অর্জুন বেড়িয়ে এল" ... ভালৈ লাগতো, তবে সুনীলের কাকাবাবু অনেক বেশি ভালো লাগতো ...
এরপর শারদীয় দেশের পূজা সংখ্যায় কোন একটা উপন্যাস পড়েছিলাম, তখন ক্লাস সেভেন-এইটে পড়ি, নাম পুরাপুরি নিশ্চিত না, "মধ্যরাতের রাখাল" হতে পারে ... চা-বাগানের শ্রমিক আর ম্যনেজার নিয়ে কাহিনী, বেশ ভালো লেগেছিল ...
কিন্তু সমরেশের মুগ্ধ ভক্ত হয়ে যাই গর্ভধারিণী পড়ে, এসএসসির দুই সপ্তা আগে ... বাসায় সামরিক আইন, গল্পের বই পড়া নিষেধ, তার মাঝে শুধু খাওয়ার সময় সামনে বই ধরে এক সপ্তায় শেষ করলাম ... এরপর পরীক্ষার পর একটানে শেষ করলাম কালপুরুষ-কালবেলা-উত্তরাধিকার-সাতকাহন-আট কুঠুরি নয় দরজা ...
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...
সাতকাহন আমার সবচেয়ে প্রিয় বই , বেশ কয়েকবার পড়েছি।
কালবেলা ,কালপুরুষও মনে দাগ কেটে আছে ।
তাঁর অনেকগুলো উপন্যাস পড়েছিলাম, পড়ছি। ভালো লেখেন।
অভিনন্দন, ইলিয়াস ভাই।
----------------------------------------
শুধু শরীরে জেগে থাকে শরীরঘর
মধ্যবর্তী চরকায় খেয়ালী রোদের হাড়
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
খোমাখাতা
বিস্ময় নিয়ে লক্ষ্য করলাম, পোস্টের শিরোনামে বিকেলটা কাটছে মজুমদারের সাথেই, হকের সাথে নয়। যদিও হাসান আজিজুল হক বাংলা ছোটগল্পকে নতুন মোড় চিনিয়েছেন।
আমরা প্রায়শই প্রতিটি ক্ষেত্রে শুধু কেবলা খুঁজি এবং কেবলা দেখে বাহ্যজ্ঞানশূন্য হয়ে পড়ি। আমাদের এই কেবলামুখীনতা না কাটলে কিছুই হবে না আমাদের।
এই কথাটাই বলতে চাচ্ছিলাম। হিমু আগেই বলে দিলো। হাসান আজিজুল হক আমার সব থেকে প্রিয় লেখকদের একজন।
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
সমরেশ মজুমদার - এ: আড়াইখানা উপন্যাস লেখার পরই ভদ্রলোককে যে কি "কালবেলা'য় ধরল!! আর একটাও তেমন পোষাল না৷ তবে হ্যাঁ ভদ্রলোকের গল্প উপন্যাসগুলো বেশ সিরিয়াল/সিনেমা উপযোগী৷
-----------------------------------------------
"নিভন্ত এই চুল্লিতে মা
একটু আগুন দে
আরেকটু কাল বেঁচেই থাকি
বাঁচার আনন্দে৷'
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
সমরেশ মজুমদারের 'শেকল ছেঁড়া হাতের খোঁজে'ই হয়তো শেষ পর্যন্ত টিকে যাবে। ...
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
দময়ন্তী - এক্কেবারে আমার মনের কথাগুলো বলে দিলেন! ভদ্রলোকের লেখার স্টাইলটাই আমার আর পোষায় না। হাততালি না হাসি কিসের প্রঙ্গে যেন লেখেন - "একরাশ পায়রা উড়লো", এবং এরকম আরো কিছু কিছু বাক্যবন্ধ আছে ওনার - কথাগুলো এমনিতে হয়তো সুন্দর কিন্তু একসাথে কেমন যেন ছন্দহীন। পড়তে গেলে কেমন একটু অমসৃণ লাগে।
যাক গিয়ে, নিতান্তই ব্যক্তিগত মতামত .........
হুঁ৷
----------------------------------------------
"নিভন্ত এই চুল্লিতে মা
একটু আগুন দে
আরেকটু কাল বেঁচেই থাকি
বাঁচার আনন্দে৷'
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
আমার কাছে সমরেশ মজুমদারের "হারামির হাতবাক্স" সব থেকে ভালো লেগেছে।
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
সমরেশের 'কালবেলা' পড়ার পর কলেজ জীবনে তার লেখা যা পেয়েছি তাই গোগ্রাসে গিলেছি...
তার ভালো বইগুলোর মাঝে সাতকাহন কোন কারনে বাদ পড়ে গেছে...পড়া শুরু করেছিলাম অবশ্য...কেন যেন আর শেষ করা হয়নি...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
ব্যাক্তিগত ব্লগ | আমার ছবিঘর
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
ব্যাক্তিগত ব্লগ | আমার ছবিঘর
সবাইকে বিনীত ধন্যবাদ। আপনাদের মতামত জানলাম, বুঝলাম।
যা আমার বেশ কাজে লাগবে।
ফকির ইলিয়াস, দয়া করে সরেশ মজুমদারের সাথে যোগাযোগের উপায় জানাবেন কি? ইমেইল বা মোবাইল নম্বর? আমার প্রিয় লেখকদের মধ্যে উনি একজন। আমি যোগাযোগ করতে চাই।
আমার মেইল
নতুন মন্তব্য করুন