যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত ঘাতক আশরাফুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ। বুদ্ধিজীবি হত্যার অন্যতম এই ঘাতকের বিচারের দাবী দীর্ঘদিন
থেকেই করে আসছিলেন অভিবাসীরা। আরেকজন ঘাতক চৌধুরী মঈনুদ্দীন এখন
অবস্থান করছে ইংল্যান্ডে। তার বিরুদ্ধেও প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
দৈনিক সংবাদ / ঢাকা - এর রিপোর্ট / ৮ নভেম্বর ২০০৯ প্রকাশিত
বুদ্ধিজীবী ঘাতক আশরাফের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে তদন্ত শুরু
রোজিনা ইসলাম
------------------------------------------------------
বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধী, ১৯৭১ সালে বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ডের অন্যতম নায়ক, আলবদর কমান্ডার আশরাফুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ আশরাফুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন আইন ভঙ্গের অভিযোগ পেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের ক্রিমিনাল ডিভিশন বলছে, আশরাফুজ্জামান খান যখন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসার জন্য আবেদন করেছিল তখন সে তার আলবদর বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত থাকার বিষয়টি গোপন করেছিল। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন এবং নাগরিকত্ব গ্রহণ করার সময়ও বিষয়টি গোপন করা হয়েছিল। আশরাফুজ্জামানের বিরুদ্ধে পাওয়া এসব অভিযোগের তদন্তের স্বার্থে ও সত্যতা যাচাইয়ের জন্য তার সম্পর্কে আরও যেসব তথ্য ও প্রমাণ বাংলাদেশ সরকারের কাছে রয়েছে তা দিয়ে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার।
সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ থেকে পাঠানো এক চিঠিতে এ অনুরোধ জানানো হয়। অপরাধ শাখার বিশেষ তদন্ত অফিসের পরিচালক এলি এম. রোজেনবাম স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকুকে এ অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন সেপ্টেম্বরে। সরকার এ অনুরোধে সাড়া দিতে প্রয়োজনীয় দলিলপত্র সংগ্রহ করছে।
এলি রোজেনবামের চিঠিতে লেখা হয়েছে, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক মোহাম্মদ আশারাফুজ্জামান খান ১৯৪৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুরে জন্মগ্রহণ করেন। একাত্তর সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় সে হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিল। আশরাফুজ্জামান খান ছিল ইসলামী ছাত্র সংঘের কেন্দ্রীয় সদস্য এবং আলবদর বাহিনীর শীর্ষস্থানীয় সদস্য। আশরাফুজ্জামান আলবদর বাহিনীর অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছে। এই বাহিনী ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে সরাসরি হত্যা, লুণ্ঠন, অপহরণসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিল। চিঠিতে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আশরাফুজ্জামান খান এবং তার বাহিনী মিরপুরে মুনীর চৌধুরী, আবুল খায়ের, গিয়াসউদ্দীন আহমেদ, রাশিদুল হাসান, ড. ফায়জুল মহি এবং ড. মোহাম্মদ মর্তুজাসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের হত্যা করে। আলবদর বাহিনী পূর্বদেশ'র সম্পাদক সাংবাদিক আ ন ম গোলাম মোস্তফাকে হত্যা করে। ১৯৭১ সালে তার এসব কাজের জন্য ১৯৯৭ সালের গত ২৪ সেপ্টেম্বর আশরাফুজ্জামানের নামে রমনা থানায় মামলা (নং-১১৫/১৯৯৭) করা হয়। চিঠিতে আরও বলা হয়, ওয়্যার ক্রাইমস ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি (ডবিস্নউসিএফএফসি) তার ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করছে।
চিঠিতে বলা হয়, 'জেনোসাইড '৭১ এন্ড একাউন্ট অফ দি কিলারস এন্ড কলাবরেটরস এবং সাউথ এশিয়া ট্রাইবুনাল (নং-২৩,৩০ ডিসেম্বর ২০০২) উল্লেখ আছে, ১৯৭১ সালের শেষ দিকে যুদ্ধাপরাধী আশরাফুজ্জামান খানের বাড়ি থেকে পাওয়া তার ব্যক্তিগত ডায়েরিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ জনের বেশি শিক্ষক ও কর্মচারীর নাম লেখা ছিল। একই সঙ্গে ১৯৭১ সালে হত্যা করা হয়েছে এমন বুদ্ধিজীবী এবং পরবর্তী সময়ে যাদের খুঁজে পাওয়া যায়নি অর্থাৎ গুম করা হয়েছিল তাদের নামও ডায়েরিতে লেখা ছিল। জেনোসাইড '৭১-এ আরও উল্লেখ আছে, জামায়াতে ইসলামী এসব খুন এবং গুম হয়ে যাওয়ার সঙ্গে জড়িত ছিল। এছাড়া আশরাফুজ্জামান খানের ড্রাইভার মফিজউদ্দিন সাক্ষী দিয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের সময় ৭ অধ্যাপক হত্যার প্রধান ঘাতক ছিল আশরাফুজ্জামান খান।
চিঠিতে আশরাফুজ্জামানের তদন্ত ও অভিযোগগুলোর সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ১৯৭১ সালে খানের যেসব কর্মকা- সম্পর্কিত সব নথিপত্র ও প্রয়োজনীয় তথ্যাদি রয়েছে তা দিয়ে সহায়তা করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানিয়েছে বিচার বিভাগ। বিচার বিভাগ থেকে যেসব তথ্য চাওয়া হয়েছে সেগুলো হলো_ বাংলাদেশ থেকে পালানোর সময় যে ডায়েরিটি আশরাফুজ্জমান খান তার ৩৫০নং নাখালপাড়ার বাসায় ফেলে গিয়েছিল সে ডায়েরিটি, পূর্বদেশ সাহিত্য সাময়িকীর সম্পাদককে অপহরণের ব্যাপারে প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষ্য অথবা অন্যান্য মূল দলিল, আশারাফুজ্জামান খানের ড্রাইভার মফিজউদ্দিনের দেয়া জিজ্ঞাসাবাদ বা ভাষ্যের কপি, প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য, ডবিস্নউসিএফএফসি'র ২০০৮ সালের ৩ এপ্রিল প্রকাশিত ১ হাজার ৫৯৭ জন যুদ্ধাপরাধীর তালিকা, ১৯৯৭ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর আশরাফুজ্জামানের নামে রমনা থানায় মামলার রেকর্ড ও তথ্যাদি। এছাড়া আশরাফুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারের কাছে যেসব তথ্য-প্রমাণ বা যেসব রেকর্ড রয়েছে তাও চাওয়া হয়েছে।
যুুক্তরাষ্ট্র সরকার এসব তথ্য ও প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য ও কপি যুক্তরাষ্ট্রের ঢাকা দূতাবাসের আঞ্চলিক আইন কর্মকর্তার কাছে জমা দিতে পরামর্শ দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এ পদক্ষেপের ব্যাপারে জানতে চাইলে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের মুখপাত্র হার্ভি সারনোবিৎজ গতকাল 'সংবাদ'কে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার সব সময় বাংলাদেশকে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে সহায়তা করে আসছে। এ উদ্যোগ তারই ধারাবাহিকতা।
উল্লেখ্য, গত ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দলেরই অঙ্গীকার ছিল ক্ষমতায় গেলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রধান অঙ্গীকারের একটি ছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা। মহাজোট সরকার গঠনের পর এ বিষয়ে জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে একটি প্রস্তাবও পাস করা হয়। এর মধ্য দিয়েই নতুন করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পথ উন্মুক্ত হয়। বিচারের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে সন্দেহভাজন যুদ্ধাপরাধীদের দেশত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সরকার। পাশাপাশি বিদেশে অবস্থানরত যুদ্ধপরাধীদের খুঁজে বের করতে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের সরকারের সহায়তা চাওয়া হয়।
মন্তব্য
কে জানে, চান্দুরা আবার এই বেটাকে বেকসুর খালাস দেয় কি না।
উই লাইক টু সী দ্যা এন্ড অব ইট
দেখা যাক্ কী হয়
.........................................
I think what I think because that's how I am. You think what you think because that's how you are.
...........................
Every Picture Tells a Story
সেটা ই আশা ।
আচ্ছা কোন অতিথি লেখক যদি এরকম একটা কপি পেস্ট পোস্ট দিত তাহলে কি সেটা প্রথম পাতায় আসত?
.
জানতে মনে চায়।
প্রথমত এটা কপি পেষ্ট নয়। সংবাদ এর খবর, পোস্ট কে সাপোর্ট দিয়েছে মাত্র।
আর প্রথম পাতায় অনেক অতিথি লেখকের লেখাই আসে/ এসেছে।
আপনার পছন্দনীয় ভালো লেখা আপনি তো শেয়ার করতেই পারেন।
কেন আপনার মনে হলো এটা কপি-পেস্ট লেখা? এখানে ঊদ্ধৃত অংশটি তো ইটালিক্সে আছে, তার পরে এমন মনে হওয়া দেখে সন্দেহ হয় পুরোটা স্ক্রোল করারও সময় পান নি হয়তো। তাছাড়া বিষয়ের বিচারে এই লেখা বিশেষতঃ বাংলাদেশী পাঠকদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। সে দিকটাও ভাবার ছিলো।
বক্রোক্তি খারাপ জিনিস নয়, তবে রিস্কি, কারণ ভেবেচিন্তে না লিখলে ব্যাকফায়ার করে।
মূলোদা
লেখাটা -------------- এর পরে কেবল ইটালিক অংশ না পুরোটাই খবরের কপি-পেস্ট। তবে বিষয় বিচারে প্রকাশের গুরুত্ব আছে।
ইলিয়াস ভাই,
মূল লেখার লিঙ্কটা যোগ করে দিতে পারেন।
দেখা যাক কী হয়।
আমি কপি পেস্টের বিরুদ্ধে কিছু দেখিনা, কিন্তু কোন খবর কপি পেস্ট করলে তার সাথে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বিশ্লেষণ বা লেখকের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি/মন্তব্য আশা করি।
আপনার মন্তব্য পড়ে ভাবলাম আমি মনে হয় পোস্টের নিচের দিকের কিছু অংশ মিস করেছি, ভাল করে পড়ে দেখলাম আবার। নতুন কিছু পেলাম না।
দুঃখিত, কিন্তু জানতে ইচ্ছা করছে, আপনি পুরোটা স্ক্রল করার সময় পেয়েছেন তো? আর বিষয় এর গুরুত্ব নিয়ে অবশ্য আমার মনে কোন সন্দেহ নেই।
"বক্রোক্তি খারাপ জিনিস নয়, তবে রিস্কি, কারণ ভেবেচিন্তে না লিখলে ব্যাকফায়ার করে।"
স্ক্রল আর করছি না। এভাবেই রেখে দেবো ভেবেছি ।
যাদের পছন্দ হবে না , তারা যেকোনো কিছুতেই খুঁত খুঁজে/ খুঁজবে ।
এটাই আসল কথা। তবে বিষয়টি কারো পছন্দ নাও লাগতে পারে !!!!!!!!!!!!!!
ইলিয়াস ভাই, আমার মনে হয় ভবিষ্যতে আপনি নিজের বিশ্লেষণ যোগ করে দিতে পারেন (আমি জানি না মূল খবরের কাগজের লেখাটা আপনারই রচনা কি না), যেহেতু সেই ক্ষমতা আপনার লেখনীর আছে। তা না হলে এটা এমন একটা প্রবণতার দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে, যা সচলে কিছু মাত্রায় নিরুৎসাহিত করা হয়ে থাকে। একজন অতিথি একটা খবরের কাগজের লেখা পোস্ট করে দিয়ে আপনাকে দৃষ্টান্ত মেনে তর্ক শুরু করতে পারেন। আমরা তো সবাই নতুন লেখা পড়তে চাই, তাই না?
প্রিয় হিমু ,
এই লেখাটুকু কিন্তু আমার , নতুন তথ্য সহ।
একটা পোস্ট দু লাইনেরও হতে পারে। দুহাজার লাইনেরও হতে পারে।
(আর রিপোর্ট টি যেহেতু অন্য আরেকটি নামে ছাপা হয়েছে , তাই সে বিষয়ে আমার
কিছু বলার নাই )
রিপোর্ট টি কে আমি এখানে সাপোর্টিং এভিডেন্স হিসেবেই ব্যবহার করেছি মাত্র।
তাছাড়া বিষয় বিবেচনায় এই খবরের গুরুত্ব অপরিসীম।
কোনো অতিথি লেখকও তেমন পোস্ট দিলে , প্রকাশে কোনো বাধা আছে বলে তো
আমি মনে করি না।
ধন্যবাদ আপনাকে।
আমরা তো সবাই অপেক্ষায় আছি, দেখা যাক কি হয়।
--------------------------------------------------------------
সকলই চলিয়া যায়,
সকলের যেতে হয় বলে।
==========================================================
ফ্লিকার । ফেসবুক । 500 PX ।
হাঁ এটা চাওয়া এবং দাবীও ।
লেখাটি কি মুক্তাঙ্গন এর যুদ্ধাপরাধ আর্কাইভ এ যুক্ত করতে পারি? অনুমতি দিলে লেখাটির লিঙ্ক সেখানে রেখে দিব। ধন্যবাদ।
হাঁ, পারেন । ধন্যবাদ
হুম। উপচুক্ত বিচার ও সাজা চাই।
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...
এটাই একান্ত কামনা
আশা করছি কিছু একটা হবে। হয়ত।
---------------------------------------------
ফুল ফোটে? তাই বল! আমি ভাবি পটকা।
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
বিচারটা খুবই জরুরী
নতুন মন্তব্য করুন