তার ঠান্ডা লাগছে। এসি'র কন্ট্রোল ঠিকমত কাজ করছে না। অকর্মার ধারি মকবুল কে বলেছিলেন লোক ডেকে এসি সারিয়ে নিতে, ব্যাটা আহাম্মক বোধহয় সেটা ভুলে বসে আছে।
সাড়ে দশটায় বোর্ড মিটিং ছিল, সেটা ক্যানসেল হবার মেইলটা এল নটা পঞ্চাশে। তারপর, আর কোনো কাজ নেই তার।
তিনি ভাবছেন, এ যুগের ছেলেপুলের হয়েছে ভারী মজা। সময় কাটানো এদের কাছে কোনো ব্যাপারই না। সব লায়েক হয়ে গেছে। ইন্টারনেটে বসে বসে পর্ণসাইট ঘাটাঘাটি। ব্যস, ঘন্টার পর ঘন্টা খতম। বুড়ো বয়েসে ওসব তার পোষায়ো না, খুঁজে খুঁজে বের করে দেখতেও পারেন না।
তাই তিনি বসে আছেন লাঞ্চের অপেক্ষায়।
যদিও অফিসিয়াল লাঞ্চ আওয়ার বারোটা থেকে একটা, কিন্তু পৌনে বারোটা বাজলেই কাউকে আর সিটে বাসিয়ে রাখা যায় না। যেন ঐসময় সবার চেয়ার ফুঁড়ে তারকাটা বের হয়ে আসে। আর কেন্টিনের চেয়ারগুলোতে মনে হয় আঠা লাগানো থাকে। কোনো শালাই দেড়টার আগে কাজে বসে না।
তিনি ভাবছেন, আজকেও তাই হবে নিশ্চই।
এমন হাড় কাঁপানো ঠান্ডা লাগছে যে তিনি রীতিমত কাঁপছেন। ব্যাটা মকবুলের চাকরী না খেলেই নয়। মিটিংটা ক্যানসেল না হলেও হতো। তাহলে ঘন্টা দেড়েক অন্তত আরামে থাকা যেত জিএময়ের রুমে।
কল করলেন তার সেক্রেটারি মিলি কে।
এই মিলি মেয়েটাই সারা অফিসে একমাত্র কাজের। তিনি এরকম কাজের লোকই পছন্দ করেন তার আশেপাশে। টেবিল থেকে একটা ফাইল তুলে নিয়ে যথারীতি গাম্ভীর্য্যভরা মুখ নিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলেন, মিলির জন্য।
-প্রেজেন্টেশনটা তৈরি হয়েছে?
-জ্বী না স্যার, আরেকটু বাকী আছে। হয়ে যাবে স্যার, লাঞ্চের মধ্যে।
-ঠিক আছে, তোমাকে এখন সেটা করতে হবে না। তার চেয়ে বরং এই ফাইলটা রেডি কর। আই ওয়ান্ট দিস বাই লাঞ্চ।
হাতের ফাইলটা তিনি মিলির দিকে বাড়িয়ে দিলেন। মিলি হাত বাড়িয়ে নেবার সময় ওর শাড়ির সাথে ম্যাচিং করা নীল চুড়িগুলো মিষ্টি একটা আওয়াজ তুলে আবার থেমে গেল।
-আর হ্যা, লাঞ্চে একসাথে এখানে বসেই প্রেজেন্টেশানের কাজটা করা যাবেখন। আই উইল কল ইউ।
শেষ লাইনটার উপর অনাবশ্যক জোড় দেন তিনি।
মিলির শাড়িটা অদ্ভুতভাবে জড়িয়ে আছে ওর শরীর। হেটে দরোজা পর্যন্ত যেতে মিলির যে তিনটা সেকেন্ড লাগলো, তিনি হা করে গিললেন।
আজকালকার ছেলেপুলেরা একদম গোল্লায় গ্যাছে। না হলে ইন্টারনেটে কেউ ওসব খোঁজার জন্য পাগল হয়ে বসে থাকে কম্পিউটারের সামনে! এরকম জিনিস কি ইন্টারনেটে পাওয়া যায়!
অনাগত লাঞ্চ আওয়ার নিয়ে ভাবতে থাকেন তিনি। টাইয়ের নট টা খুলে দেন।
তার ক্রমশ গরম শরীর ঘিরে এসি'র ঠান্ডা বাতাস নিতান্তই অপ্রতুল হয়ে ঘুরতে থাকে।
মন্তব্য
- ভাইরে, বিকালটা অন্ততঃ ভেজিটেবলের উপর দিয়ে চালায়ে দিয়েন না।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
জ্বি না স্যার, রোজা রমজানের দিনে আর খাওয়াখাওয়ি চলবে না। ভেজিতেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে
"নীল চুড়িগুলো মিষ্টি একটা আওয়াজ তুলে আবার থেমে গেল"
সেরম!!!
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
গপ তো শেষ হইলো না..
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
শেষটুক আপনের জন্য রাইখ্যা দিছি। ফিনিশিং টাচ দেন।
চরম!
_________________________________________
বিষন্নতা ছোঁয় আমায় মাঝে মাঝেই, কখনো কি ছোঁয় না তোমায়?
চরম গরম না ঠান্ডা?
নতুন মন্তব্য করুন