আজকে পত্রিকায় এসেছে, হুমকির মুখে বিমানবন্দরের সামনে নির্মীয়মান ভাষ্কর্য সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। খতমে নবুওয়াতের রাঘববোয়ালরা মাদ্রাসা ছাত্রদের সংগঠিত করে এই কাজটি করিয়েছে। তাদের মূল অভিযোগ, তারা চান না যে হজ্জ্বযাত্রিরা ঐ ভাষ্কর্য (তাদের ভাষায় মূর্তি) দেখে হজ্জ্ব করতে যান। মাদ্রাসা সংশ্লিষ্টদের প্রধান আপত্তি, মানুষের আকৃতির কিছু ঐ জায়গায় থাকতে পারবে না। উল্লেখ্য, বিমান মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশীয় সংস্কৃতির নিদর্শন হিসেবে ভাষ্কর মৃণাল হক তৈরি করছিলেন এই বাউলের ভাষ্কর্যটি। তবে খবর পড়ে মনে হলো, সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যানও চান না যে হজ্জ্বযাত্রীরা মূর্তি দেখে হজে রওনা হোন।
যাই হোক, এ খবর পড়ে আমার কয়েকটা প্রশ্নের উত্তর জানতে ইচ্ছে হচ্ছে। আমি এইসব ব্যাপারে প্রায় মূর্খ। আমাকে জ্ঞান দান করে আলোকিত করুন।
প্রথমত, এত কিছু থাকতে এখন ভাষ্কর্য নিয়ে টানাটানি কেন? দেশে তো অনেক ভাষ্কর্য আছে। এখন কি সব ভাষ্কর্যই সরিয়ে ফেলতে হবে? হজ্জ্বযাত্রীরা তো উত্তরবঙ্গ থেকেও আসবেন, সেক্ষেত্রে আমরা কি গাজীপুর চৌরাস্তার 'জাগ্রত চৌরঙ্গীর' সেই দৃপ্ত মুক্তিযোদ্ধার ভাষ্কর্যও ভেঙ্গে ফেলবো? বকশিবাজার থেকে যদি কোনো হজ্জ্বযাত্রী বিমানবন্দরের দিকে আসতে চান তাহলে কি আমরা টিএসসি মোড়ের রাজু মনুমেন্ট ভেঙ্গে ফেলবো? যদি এদের না ভেঙ্গে ফেলি তাহলে লালন কি দোষ করলো?
দ্বিতীয়ত, আন্দোলনকারীদের এখন দাবি, ভাষ্কর্যটির জায়গায় হজ্জ্বমিনার স্থাপন করতে হবে। মনে হচ্ছে বাস্তবে তাই হবে। কারণ যতটুকু খবরে পড়লাম তাতে কতৃপক্ষের অবস্থানকে আমার কাছে মায়ের চাইতে মাসির দরদ বেশি বলেই মনে হলো। এরকম কেন হয়? প্রধানমন্ত্রী/প্রধানউপদেষ্টার কার্যালয়ের সামনের মুক্তো সহ ঝিনুকের ভাষ্কর্য, ফোয়ারা ইত্যাদি মিলিয়ে সৌন্দর্য বর্ধনের যে চেষ্ঠা কতৃপক্ষ দেখিয়েছেন তাতে আমি যারপর নাই মুগ্ধ। আমি শিল্পের তেমন কিছুই বুঝি না। শুধু প্রচন্ড ট্রাফিক জ্যামের কেন্দ্রে বসে ঘামতে ঘামতে প্রথমবারের মত যখন সেটি দেখি তখন কেন আমার মনে হয়, মধ্যপ্রাচ্যকে সন্তুষ্ট করাই আমাদের মোক্ষ? কাতারে আমি ঠিক এরকম ভাস্কর্য দেখেছি, আরব সাগরের পাড় ঘেষা দোহার প্রধান সড়ক 'কুর্ণিচ'য়ে, একই কনসেপ্ট। ঝিনুকে সুপ্ত মুক্তো। গ্যাস আর তেল আবিষ্কারের আগে কাতারিরা মুক্তোর ডুবুরি ছিল, তো কাতারে এটা থাকতেই পারে তাদের দেশীয় সংস্কৃতির প্রদর্শন হিসেবে। আমাদের এখানে কেন?
তৃতীয়ত, বাউলের ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হচ্ছিল দেশীয় সংস্কৃতিরই নিদর্শন হিসেবে। এখন যদি অন্য কিছু নির্মাণ করা হয়, তাহলে সেটাও তো দেশীয় সংস্কৃতির নিদর্শন হবে? তাই না?
আশা করা যায়, মিসকিন হিসেবে আমরা একধাপ উন্নীত হতে পারবো অচিড়েই।
মন্তব্য
মন্তব্যের ভাষা নাই।
শুধু মনে হয় এ পথের শেষ কোথায়...........
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
মুর্খ আদমরা উপরের তলায় থেকে জামায়াতী চরণে সিজদা করে,
ফলে দেশীয় সংস্কৃতির এরকম টালমাটাল অবস্থা অবলোকন করতেই হবে..................................এসকলমনে মনে পাকিদের পাছায় লাথি দিয়ে পাকিতে পাঠাতে হবে।
একেএম আসাদুজ্জামান
আমার ধারণা, এই চান্সে মৌলবিরা জয়ী হলে ভবিষ্যতে জিয়ার মাজার ব্যতিরেকে দেশে আর কোনো নান্দনিক স্থাপনাই আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পাবে না, কুফরি ভাস্কর্য তো কোন ছার!
................................................................
তোমার হাতে রয়েছি যেটুকু আমি, আমার পকেটে আমি আছি যতটা, একদিন মনে হবে এটুকুই আমি, বাকি কিছু আমি নই আমার করুণ ছায়া
... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী
শুধু তাই নয়, ভবিষ্যতে হয়তো মোল্লাদের সার্টিফায়েড ভাষ্কর্য ছাড়া অন্য কিছুই তৈরি করা যাবে না। ভাষ্করদের জন্য দুর্দিন আসতেছে।
একটা কাজ বেসামরিক মিমান চলাচল কতৃপক্ষ করতে পারেন। সেটা হল কাবা ঘরের একটা মডেল। তাইলে কষ্ট কইরা হজ্বের জন্য লোকের এতদূর যেতে হবে না। দেশ থেকে কোন মুদ্রা বিদেশে যাবে না। আর একটা প্রস্তাব হল কিছু খেজুর গাছ লাগানো, তাইলে আমগো দেশটা পবিত্র আরব দেশের মত লাগব। তৃতীয় প্রস্তাব; নামাজ-কালাম তো সবাই আরুবী ভাষাতেই করে। কাজেই বাংলাটা তুলে দিয়ে রাষ্ট্রভাষা আরুবী করা হোক। তাইলে সব ঝামেলা মিট্টা যায়। মোমিনগন এখনো আল-হামদুলিল্লাহ বলেন না ক্যে!
**********************
কাঁশ বনের বাঘ
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
মীর নাসিরুদ্দিন তো বিমানবন্দরকে ঘষামাজা করতে গিয়া প্রথমেই আরবীতে জিয়া বিমানবন্দরের নাম লিখছিল। সেইটা দেইখাতো আমি টাস্কি খাইছিলাম যে কোন দেশে আছি আমি।
প্রবলেম এইটা না। প্রবলেমটা হইল সবাই ধর্ম ইস্যুতে হাটু কাঁপায়। আর ধর্মের নামে অনেক কিছুই জায়েজ করা যায়। তাই খেয়ে যাও আফিম। বুঁদ হয়ে থাক।
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
আরবি রুমালে ঢাকা পড়বে ঢাকা।
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।
___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!
দূর্বল ঈমান সামান্য বাতাসেই ভেঙ্গে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। ঈমানের জোর থাকলে এসবে কিছুই হওয়ার ভয় থাকতো না; ভাস্কর্য তো দুরের কথা বস্ত্রহীন চীয়ারলিডারগণও কিছু করতে পারতো না।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
মন্তব্যে জাঝা
হা হা...
ভাষা নেই।
শুধু বোবা কষ্ট।
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
এধরনের phony issues নিয়ে ঝড় তুলে, বর্তমান সরকার, নির্বাচনের নানা জনগুরুত্বপূর্ন issue থেকে জনগনের দৃষ্টি সরিয়ে নিতে চাইছে।
যে দেশের ৮০% মানুষ দারিদ্র্যসীমের নীচে বাস করে, সে দেশে কেবল সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য ভাস্কর্য নির্মান আমার কাছে অহেতুক মনে হয়।
তবে যে কারণে ভাস্কর্য সরিয়ে নেয়া হয়েছে বা নির্মান স্থগিত করা হয়েছে, সেটা কোনভাবেই সমর্থন করা যায় না।
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই,
দুইকে আমি এক করি না এক কে করি দুই৷
ভাষ্কর্য নির্মাণে কোনো সমস্যা আমি দেখি না। যে ভাষ্কর্য নিয়ে এই তুলকালাম সেটাও যে সরকারের অর্থায়নে হচ্ছে তা নয়। ভাষ্কর মৃণাল হক বলেছেন যে এই ভাষ্কর্যটি তৈরি করতে তিনিই স্পন্সর জোগাড় করেছিলেন।
যাই হোক,
এইসব ব্যাপারগুলোতে আমার বার বার একটি প্রশ্নই মনে জাগে, তা হলো হুজুরদের কথায় সরকার তার পাছার কাপড় ফেলে দৌড় দেয় কেনো ? হুজুরদের বদ দোয়ার ব্যাপারটা সরকারকে সম্ভবত বেশ ভাবায় কিংবা ভয় পাওয়ায় । বাংলাদেশে কি ধীরে ধীরে মিডলিস্টের এজেন্ট গুলার দেশ হয়ে যাচ্ছে ??? আরবিতে জিয়ার নাম করন করা দেখেই তীব্র ক্ষোভ হচ্ছিলো । ব্যাপারটা আসলে আরবির জন্য নয় , মূলত ক্ষোভ টা ছিলো এই কথা জানবার পর যে , তা জামাতি হুজুরীয় চাপে হয়েছে ।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে মাদ্রাসার এই ছাত্র ( আমি নিজের চোখে দেখেছি কিছু ছাত্রকে, যারা পাছার নীচে আরবি বই এর পৃষ্ঠা রেখে নকল করত ) সমাজের এই অদ্ভুত উত্থান , যারা সমাজের আর কোন অন্যায়ে মাথা উঁচু করেনা , অন্য অসঙ্গতিতে যারা রাস্তায় নামে না , যারা দেশে থেকেও সৌদি, কাতারীয়,পাকি তাদের উত্থান কি করে বন্ধ করা যায় ???
--------------------------------------------------------
কারও শেষ হয় নির্বাসনের জীবন । কারও হয় না । আমি কিন্তু পুষে রাখি দুঃসহ দেশহীনতা । মাঝে মাঝে শুধু কষ্টের কথা গুলো জড়ো করে কাউকে শোনাই, ভূমিকা ছাড়াই -- তসলিমা নাসরিন
---------------------------------------------------------------------------
কারও শেষ হয় নির্বাসনের জীবন । কারও হয় না । আমি কিন্তু পুষে রাখি দুঃসহ দেশহীনতা । মাঝে মাঝে শুধু কষ্টের কথা গুলো জড়ো করে কাউকে শোনাই, ভূমিকা ছাড়াই -- তসলিমা নাসরিন
প্রথম ইস্যুতে আমি বলবো যে মেরুদন্ডের অভাবই সরকারকে সবসময় হুজুরদের সামনে নত করে রাখে। এই সরকারের তো আর ভোটের জুজু নেই, তারপরও অবস্থাটা দেখেন!
দেশ চলা শুরু করেছিল উদ্ভট উটের পিঠে চড়ে। সেটা কিছুদিন সোজা চলে তো কিছুদিন উল্টাপাল্টা। এখন যতটা পথ গিয়েছিল ঠিক ততটা পথ ফিরে আসার চেষ্টা করছে মনে হয়।
যারা এসব নিয়ে লাফাচ্ছে তাদের বিদ্যার দৌড় আর ঈমানের দৌড় যে কতদূর সেটা তো আর বলে বোঝাতে হবেনা। তবে মনে হচ্ছে মানুষের দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহের একটা চেষ্টা হয়তো হবে। বিশেষ করে মুজাহিদ নিয়ে সরকার যখন বেকায়দায়।
ভাববার মত বিষয়। আফিম খাইয়ে কত কিছু যে ভুলিয়ে দেয়া যায়!
এই প্রক্রিয়া তো বহুত পুরান... এত বছর বাদে কষ্ট পান কেন?
শুনেছি একসময় শেরাটন থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত রাস্তার দুপাশ আবৃত ছিলো কৃষ্ণচূড়া গাছ দিয়ে। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় বসে গেলেন সৌদিতে। সেখান থেকে নসিহত নিয়ে দেশে আসলেন এবং তারপরই উধাও হয়ে গেলো সবকটা কৃষ্ণচূড়া গাছ... বেশ একটা মরুভূমি ইফেক্ট তৈরি হলো।
পরবর্তীতে বিএনপি এসে সেখানে রুপিলো খেজুড় গাছ... তাও বাচ্চা গাছ বড় হবার তর সইলো না... টাঙাইল থেকে উপড়ে নিয়ে আসা হলো আস্ত আস্ত গাছ। এবং সেটার ব্যাকআপ দেওয়া হলো পেছনে আরো একটা ছোট খেজুড় গাছ লাগিয়ে...
তার আগেই হয়ে গেছে আরবীকরণ...
এই সবই তো একটা দীর্ঘ ধারাবাহিক উদ্দেশ্যর ফল... বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা তো না।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
কিন্তু আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারি না, এই আরবীয়করণে কিংবা মরুপদলেহনে ফায়দাটা কি? (পোষ্টেই বলেছি, আমি নাদান, আমাকে আলোকিত করুন )
- বস, আরবী খোর্মা আর খেজুর বেহেশতী ফল। এগুলার মর্মতো আমি আর আপনে বুঝুম না! ওগো গুয়ামারা খাইলে আমাগো পশ্চাৎদেশ সবার আগে বেহেশতে যাইবো, এইটা বুঝেন না ক্যা?
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
হায় হায় রে, ওযুর পানি আন তাড়াতাড়ি!
- পর্দানশীন ভাস্কর্য বানানোর কোনো সিস্টেম নাই?
লালনরে বোরখা পরিয়ে রাখলেই তো হতো। এদেশে ভাস্কর্যও পর্দা করে, এমন একটা ভাব নিয়েই হাজীরা হজ্জ্বব্রত পালন করতে যেতে পারতেন!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
(বিপ্লব)
'পর্দানশীল ভাষ্কর্য' আইডিয়াটা জট্টিল। হাহাহা
হুমম... চ্ছিলনা
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
নতুন মন্তব্য করুন