১.
ইদানিং টিভিসংবাদের একটা বড় অংশে থাকছে জব ফেয়ার বা চাকরিমেলার খবর। কোথায়ো গোটাপাঁচেক কোম্পানি হয়তো ২/৩ জন কর্মচারি নিয়োগ দেবে, তো আয়োজন কর চাকরি মেলার। এইসব মেলায় চাকরি মেলে কিনা সে সম্পর্কে অবশ্য ঢের সংশয় আছে। তবে এলাকার এমপিরা হাসিমুখে টিভিসাক্ষাতকার দিতে থাকেন, কোম্পানিগুলোর বিনাপয়সায় বিজ্ঞাপণ হয়ে যায়, আমজনতা ভাবতে থাকে- ইশ আগে থেকে খবর পেলে নিশ্চই একটা চাকরি বাগানো যেত, কিন্তু চাকরি হারানো খুব কম লোকই আরেকটা ধরতে পারে।
তবে এর মধ্যেও সুখবর আছে, আশপাশ অত্র এলাকার মধ্যে অন্যতম বৃহত্ ক্যাসিনো চালু হচ্ছে সিঙ্গাপুরে এই বছরের শেষ নাগাদ। আর সেন্টোসাতে হচ্ছে ইন্টিগ্রেটেড রিসোর্ট। সবমিলিয়ে হাজার দশেক লোকের চাকরি হচ্ছে। চাকরির বাজারের যে অবস্থা, এই খবর পেয়ে ভাবছিলাম, যাক পুরা বুয়েট লাইফে ইন্টারন্যাশনাল ব্রিজ, পোকার আর টুয়েন্টনাইনের পেছনে দেয়া সময়গুলো বোধহয় বৃথা যায় নাই, আর কার্ড ডিলাইতে পারি ভালোই, নিদেনপক্ষে ডিলারের চাকরিটা পাওয়া যাবে। কিন্তু বিধিবাম, ওপেন ফর অনলি সিঙ্গাপুরিয়ানস! আমার মেজাজ এইবার চ্রম খ্রাপ, ওরা ক্যাসিনো কি চালাবে, এক প্যাকেট তাসে কয়টা কার্ড আছে সেইটাই জানে কিনা সন্দেহ! কিন্তু কালকে দেখলাম বলছে, নো ওরিজ্, হাতেকলমে ডিলিং শেখাবে, তাই এখন না জানা থাকলেও চলবে।
তবে হাল ছাড়ি নাই। ক্যাসিনোতে নিশ্চই প্রতি টেবিলে ভাগ্যবান জুয়াড়িদের ভাগ্যে পানি ঢালার জন্য 'কুলার' লাগবেই। আমার আবার কার্ড ভাগ্য উল্টো দিক থেকে অসাধারণ। অর্থাত্ আমি একজন পরীক্ষিত কুলার। গরম জুয়ার টেবিল ঠান্ডা ত্যানাত্যানা বানায়া দিতে আমার জুড়ি নিশ্চই এই দ্বীপদেশে পাওয়া যাবে না আর। তিতুমীর হলে আমার পাশের রুমেই টার্ম ফাইনালের আগে বসতো জুয়ার আসর। আমি খেলতাম না, যে ব্যাটার কাছে ক্লাশনোট কিংবা চোথা (নোট) চেয়েও পাইনাই শুধু তার পাশে গিয়ে বসতাম। সে তো বটেই, তার আশেপাশের জুয়াড়িরাও কাটা পড়তো দেদারসে। সুতরাং ক্যাসিনোর চাকরির আশা আমি এখনো ছাড়ি নাই।
বাই দ্য ওয়ে, আপনারা কী 'দ্য কুলার' সিনেমাটা দেখেছেন? আমি প্রথম দেখে বিশ্বাসই করতে পারি নাই যে, আমার মত দুনিয়ার আরো এমন পাপী থাকা সম্ভব! তবে ক্র্যামার ব্যাটা ছবিটা বানিয়েছে ভালো। আর, কুলারের চরিত্রে উইলিয়াম ম্যাকি নামের ভদ্রলোক যে অভিনয়টা করেছেন, এককথায় লাখটাকা দামি।
.
.
.
. ছবি: উইকি
.
.
.
.
.
.
.
২.
সেদিন হঠাত্ করে কোনো প্ল্যানপরিকল্পনা ছাড়াই আমি আর নাতাশা গেলাম চাইনিজ গার্ডেন। ভাবলাম, সূর্য ডোবার আগে আগে গিয়ে কি লাভ, ঘন্টাদুয়েক হাতে নিয়েই যাই। কিন্তু যে ঠাঠা রোদের মধ্যে গিয়া পড়লাম, পুরাই মেজাজ খ্রাপ।
কিন্তু একটু পরেই কনফুসিয়াসের সাথে দেখা হয়ে গেল। আমি তো ঘুরতে এসেছি, কিন্তু বেচারা কনফুকে যে এই রোদের মধ্যে প্রতিদিন এভাবেই ঠায় দাড়িয়ে থাকতে হয় লোকেদের মনোরঞ্জনের জন্য- এইটা ভাবতেই মনটা আরো বেশি খ্রাপ হয়ে গেল। বেচারা, কত ভালো ব্লগার, অথচ এই মন্দার কারণে তার এ কী দশা!
আরেকটু এগুলেই এই দুজনকে দেখি। আমি নিশ্চিত, আর যাই হোক পঁচিশবছরের নাদেখার কোনো ছাপ এই দুজনের মধ্যে নেই, হয়তো জগিংয়ে বের হয়েছিলেন, বিশ্রামের অবসরে বসেছিলেন ছায়ায় পাতা বেঞ্চে, বিনা উস্কানিতেই হয়ে গেছেন পাপরাজ্জির শিকার, কিন্তু কোনো কারণ ছাড়াই আমার মনে পড়ে জীবনানন্দের কবিতা, পঁচিশ বছর পরের একদিন কিংবা এইরকম কিছু একটা।
তাই আমরাও এরপর একটা বসে থাকার জায়গা খুঁজি। পেয়েও যাই। ক্লান্ত মস্তিষ্কে ভাবতে ভালোই লাগে, আহ্, বাড়ির সামনে যদি একরম একটা লেকভিউ থাকতো! হিজলের ছায়ায় শান্ত সমাহিত টালির ছাদের একতলা বাড়ি, সামনে কড়মচার বাড়ন্ত ডালে চঞ্চল এক কাঠবিড়ালির লেজ দুলিয়ে লুকোচুরি খেলা, লেকের জলে ছোটো ছোটো ঢেউ...
মনে পড়ে গেল, ফিরেই একটা ফাউল প্রোগ্রাম ডিবাগ করতে হবে রাত জেগে জেগে।
৩.
আরো কিছু ছবি
মন্তব্য
জাঝালো লেখা
সচলে সবাই দেখি জন্ম থেকেই ফটোগ্রাফী পারে
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...
কি যে কন্না!
ফটোগ্রাফীর জন্য বস্রা আছেন, আমাদেরগুলান ফটোগ্রাফী লয়, ইহা পয়েন্ট এ্যান্ড শুট... আর ফ্লিকারে পিকনিকবাজি
*********************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
হা হা হা! কঠিন মজা পেলাম! কখনো সিংহপুর গেলে এই স্ট্যাচুর সামনে ছবি তুলতে হবে।
-----------------------------------
আমার ইচ্ছে হলো বাজাতে গীটার, মন আমার, মন আমার, মন আমার-
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
হ।
দুই কনফু ফেইস টু ফেইস...
আপনার পঁচিশ বছর পরের ছবিটি মনে শান্তির শীতল পরশ বুলিয়ে গেল, ফারুক ভাই।
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
কনফুসিয়াস, আইসা পড়েন এই বছর। ফটোগ্রাফার ঐ ঐতিহাসিক ফেইস-টু-ফেইস ছবি তুলতে এখনি একপায়ে খাড়া!
শিমুলাপা, পচিশ লক্ক থ্যাংকু
যারা একসাথে ছবি আর লেখা দেয়, তাদের হিংসা।
আচ্ছা, ছবি তুলতে গেলে কোনটা ভালো হওয়া লাগে- ক্যামেরা নাকি চোখ?
-------------------------------------
হাত বাঁধা, কিন্তু দড়ি মুক্ত - হায় পৃথিবী!
-------------------------------------
হাত বাঁধা, কিন্তু দড়ি মুক্ত - হায় পৃথিবী!
আর আমি হিংসা করি তাদের যাদের লেন্স কেনার ট্যাকার অভাব নাই। ফটোগ্রাফার বস্রা এই আসলো বইলা, উত্তর পেয়ে যাবেন।
জটিল লেখা, জটিল ছবি। সিরাজী ভাইয়ের পঁচিশ বছর পরের ছবিখানা বড়ই ভাল লাগল।
থ্যাংকু বিডিআর ভাই!
*********************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
চমতৎকার লেখা। ছবিগুলো আরো চমৎকার।
----মর্তুজা আশীষ আহমেদ(mortuzacse1982@yahoo.com)
ধন্যবাদ!
*********************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
থ্যাঙ্কু, থ্যাঙ্কু। ছবি দিলেন, তাই...।
আগের পর্বগুলো পড়তে হবে। ভালো লাগলো আপনার দিনপঞ্জি।
- দারুণ হয়েছে ফুহাহাহা (মুহাহাহা ইশটাইলে)
আমার ক্যামেরাও নাই, ফটুক তোলার চোখও নাই। আগে মোবাইলের ক্যামেরায় সামারে ললনাকূল উইথ স্বল্পবস্ত্রসম্ভারের ফটুক তুলতাম, এখন সেই ক্যামেরাও গেছে। কোনো আগ্গুন জায়গায় গেলে চোখ ভইরা দেখি আর মনে স্টোর করে রাখি। পরেরবার আসা লাগবে বলে অদৃশ্য টু-ডু লিস্টে টুকে রাখি। ফিরে এসে ভুলে যাই। ব্যস, এইতো চলছে গাড়ি, এভাবেই যাত্রাবড়ি!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
তাড়াতাড়ি পয়েন্ট & শুট আকামের জন্য একটা ক্যামেরা কিনা ফালান। একলা একলাই মাস্তি করবেন তা তো হয় না, দুয়েকটা আগ্গুন ছবি শেয়ারও কইরেন
আর আপনার হাসিতে আমি ডরাইসি।
লেখা আর ছবি মিলিয়ে সৈরম।
হুম... ছবিগুলান সুন্দর...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আমি যে জায়গা গুলাতে যাইনাই সিঙ্গাপুর তার মধ্যে অন্যতম। ছবি সুন্দর হইছে।
...........................
Every Picture Tells a Story
থ্যাংকু মুস্তাফিজ ভাই!
চলে আসেন সিঙ্গাপুর একসময়!
*********************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
দারুন। আমার এক বড় ভাই রিসেন্টলি গেছেন জব নিয়ে।
নিজের ফুলদানীতে যারা পৃথিবীর সব ফুলকে আঁটাতে চায় তারা মুদি; কবি নয়। কবির কাজ ফুল ফুটিয়ে যাওয়া তার চলার পথে পথে। সে ফুল কাকে গন্ধ দিলো, কার খোঁপায় বা ফুলদানীতে উঠলো তা দেখা তার কাজ নয়।
___________________________ [বুদ্ধদেব গুহ]
বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।
"কনফু' ভার্সেস "কনফু'
লেখা ভাল লাগল৷
--------------------------------------------------------------------- ----
"নিভন্ত এই চুল্লিতে মা
একটু আগুন দে
আরেকটু কাল বেঁচেই থাকি
বাঁচার আনন্দে৷'
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
সচলে অ্যাতো ফটুকবাজ!
হিংসা লাগে।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
যৌনদুর্বলতায় ভুগছি দীর্ঘকাল। দুর্বল হয়ে পড়ি রূপময়ী নারী দেখলেই...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
নতুন মন্তব্য করুন