একসময় আমাদের বাড়ির একঘেয়ে টানাবারান্দা পেড়িয়ে কলপাড়ের ওপারে
বাড়ি ও বাহিরের মধ্যে একটা দেয়াল ছিল।
ইট-সুড়কির উঁচু দেয়াল, দিনের বেলা কোথায়ো হয়ত পলেস্তারা খসা
আর বৃদ্ধের আপাতঅর্থহীন জীবন নিয়ে শ্যাওলার সম্বল হয়ে থাকা প্রাচীর,
নিশুতি রাতে বাইরের শেয়ালেরা এসে গা ঘষতো সেই প্রাচীরে
কালোবিড়ালের রক্তমাখা সন্ধ্যার আকাশে উড়ে যাওয়া বাদুরের পাখায় ভর করা ভয়ে
পেলা দেয়া ব্রীজের মত লটকে থাকতো যে দেয়াল।
তবু কত যে তৃষ্ণা ছিল- একসময় বড় হব, মাথা উঁচু করলেই দেখবো
ওপারে ধানের ক্ষেত, আনন্দের আগুন লাগা বাতাসের ঢেউ
চুমু খেয়ে যায় সভ্যতার একটা একটা সবুজ গ্রীবায়
কিংবা দেখবো বাঁশঝাড়, জঙ্গলের ঢালে সাপেদের সঙ্গম।
মন্তব্য
ভালো লিখেছেন ফারুকভাই। শুধু ছবি নয়, গতি আর ঘটনাও আছে। আর থার্ড পয়েন্টটা না দেখিয়ে ছেড়ে দিলেন এটা আমার পছন্দ না হলেও কবির স্বাধীনতার প্রশ্নে মেনে নিতেই হয়।
'পেলা দেয়া' (৭ম লাইন) মানে কী?
পেলা মানে ক্যামনে যে বুঝাই, এইটা অনেকটা আঞ্চলিক শব্দ বলতে পারেন। মানে, কোনো কিছু দিয়ে সাপোর্ট দেয়া, ঠ্যাক দেয়া, এইসব আরকি...
থার্ড পয়েন্টা একটু ব্যাখ্যা করবেন?
এইটা পাঠকের দেখা, আপনার সাথে নাও মিলতে পারে, তবে খুন জেনেরিক তাই একেবারে অন্যপথে যাবে না বলে মনে হয়। ধরুন প্রথম বিষয় এখানে একটা দেয়াল। তার বর্ণনা, তার নিজস্বতা, এই সব নিয়ে একখানা নেহাতই দেয়াল। কিন্তু সে শুধু ইঁটের গাথনি নয়, এবং এখানে দ্বিতীয় পয়েন্ট, সে এক কিশোরের মুক্ত পৃথিবীর পথে বাধাস্বরূপ, তাকে সে দেয়াল আটকে রাখে প্রকৃতি সভ্যতা এমনকি সঙ্গমদৃশ্য থেকেও। এখানে একটা তৃতীয় পয়েন্টের অ্যান্টিসিপেশন আছে, কিন্তু সেই বাধা ভেঙে একদিন সে বেরোয় এবং দেখে পৃথিবীটাকে। হয়তো আশা ভঙ্গ হয়, বাইরেটাও একই রকম আদতে, কিম্বা হয়তো শিকড় ছঁিড়ে সে দূরে চলে যায় নতুন জগতের তুলনায় তার পরিচিত গন্ডির তুচ্ছতা অনুভব ক'রে। এই তৃতীয় পয়েন্টটা আপনি অধরা রেখে দিয়েছেন, এই কথাই বলছিলাম।
আপনার কনসেপশন আমারটার একদম কাছাকাছিই।
কোনো লেখা পড়ে তার চিত্রকল্পনার এক্সটেনশনটা একেক পাঠক কীভাবে করেন, তা বেশ ইন্টারেস্টিং। কারো মনে সেরকম কোনো কথা থাকলে বলে ফেলেন ঝটপট। জানতে মঞ্চায়।
ফারুক ভাই, আমি কবিতার গ্রামার জানি না, কিন্তু পড়ে ভালো লেগেছে। নষ্টালজিয়ার প্রতি আমার এক ধরনের আকর্ষন কাজ করে।
আরো কবিতা চাই।
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
কবিতার গ্রামার আমিও জানি না। হঠাৎ কিছু মাথায় আসলে নামিয়ে ফেলি, পড়ে ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো অনেক।
বেশ চমৎকার লাগলো।
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
অনেক বড় হয়েছি কিন্তু সেই দেয়ালখানা আর টপকানো হল না।
আর আমার কাছে মনে হয়, সেই দেয়াল এখন বাড়তে বাড়তে আকাশ ছুঁয়েছে, কোনোকিছুতেই বুঝি টপকানো যাবেনা আর!
খুব সুন্দর৷ ভারী ভাল লাগল৷
-------------------------------------------------
"নিভন্ত এই চুল্লিতে মা
একটু আগুন দে
আরেকটু কাল বেঁচেই থাকি
বাঁচার আনন্দে৷'
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
খুব ভাল লাগলো ফারুক ভাই
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
কতদিন ইচ্ছা ছিলো, কতো দূরে চলে যাবো...
কিচ্হু করা হলো না।
কবিতা ভাল্লাগছে...
শুকরিয়া।
আরো কত কি করার আছে বাকি!
কবিতাটা পড়ে ভালো লাগলো
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
আমারো ইচ্ছে ছিল বড় হয়ে মাঠের ওপাশে নেমে আসা আকাশের দেয়াল ছুঁয়ে আসবো। এখন বড় হলেও আকাশের দেয়াল ছোঁয়া হয়নি আজো।
বেছে বেছে সবচেয়ে কঠিন দেয়াল ছুঁয়ার প্ল্যান করছেন যে!
নতুন মন্তব্য করুন