যখন মানুষের তৃষ্ণায় বাসা বাধে অশুভ ছত্রাক, ধমনীতে বাড়ে অধৈর্যের কালো রক্ত, কিংবা উদরে জন্ম নেয় সেই চতুর চড়ুই, রাজকন্যার সোনালি চুল চুরি করে যে তুলে দেয় ডাইনীর হাতে, তখন মানুষ কি জানে তার পাপ ছুঁয়েছে রাক্ষসের ডানা? কিছু কিছু মানুষও কি চড়ুইয়ের ঠোঁট আর দানবের চোখ নিয়ে বেঁচে থাকে না এক একটা রূপকথার গল্পে! অথচ, আমরা কেবল ভুলে যাই সেই পালকের কথা।
রাক্ষসপুরীতে বন্দী দুঃখী রাজকন্যার চোখ বেয়ে নেমে আসা একটা অশ্রু একদিন মুক্তো হয়ে গড়িয়ে গড়িয়ে সাত সাগর তেরো নদী পেরিয়ে ভিড়েছিল এক তুলসির ঘাটে। সেখানে একটা শুভ্র পালক পরম আদরে মুক্তোর গা থেকে মুছে দিয়েছিল সাগরের নোনা জল, নদীর আঠালো কাদা। সেই মুক্তো সেই নামগোত্রহীন পালকের কাছে বলেছিল দুঃখী রাজকন্যার গল্প, হয়ত সত্যিই গল্প কিংবা কেবল গল্পটাই সত্যি। কিন্তু শুভ্র পালক, বালকের স্বপ্নের মত বহু মেঘ পাড়ি দিয়ে, ভীষণ যুদ্ধে রাক্ষসদের ড্রাগনদের আর একচক্ষু দানবদেরকে পরাজিত করে অবশেষে একদিন ঠিকই রাজকন্যার জানলায় নোঙর করেছিল, তাকে উদ্ধার করবে বলে। কিন্তু হায়, সমস্ত রাক্ষসের ভ্রমরকৃষ্ণ হৃদয় ছিড়তে ছিড়তে আর ড্রাগনের উত্তাপে পুড়তে পুড়তে ক্লান্ত পালক কপালে সোনার কাঠি ছুঁইয়ে রাজকন্যার ঘুম ভাঙ্গাবে কি করে, তখন তার সেই শক্তি কোথায়? বেচারা পলকা পালক অবশেষে বুকের রক্ত ঢেলে কালি বানিয়ে লিখে রেখেছিল তার ভালোবাসার কথা। এবং তারপর, দুনিয়ার তাবৎ ব্যর্থ বিষন্ন প্রেমিকের মত আত্মাহুতি দিয়েছিল রাজকন্যার শিয়রে।
অথচ রূপকথার রূপসী রাজকন্যা, বুঝতে পারেনি পালকের ভার, ঘুম ভেঙ্গে উঠে তাকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছিল পাশের ডাস্টবিনে।
মন্তব্য
'রাজকন্যা' শব্দটা আসলেই আমার নারীসংগের আকাংখা তীব্রতর হয়।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
আকাংখা মেটানোই ভালো, পুষে রাখতে নেই, রাখলে তাতে অশুভ ছত্রাক জমে।
ফারুক মামা তো বিরাট কোবি। ভালো লাগলো ।
আমার ভাগ্নে মোঘল, আমিই জানি না!!!
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
আমার সব দাত ভেঙ্গে গুড়া গুড়া করে দিলেন দাদা - একটাও বাকি রাখলেন না। ডেন্টিস্টের ফি ক্লেইম করতে হইব।
আগেই বলছিলাম, এমনিতেই আপনার দাঁতে কোনো সিমেন্ট নাই, পড়ার সময় কেন যে হাড্ডি চাবাতে যান!
বাহ, খুব ভালো! আমি এমনিতে কবিতা পড়িনা, কিন্তু আপনি ইদানিং আমাকে কবিতা পড়তে বাধ্য করছেন। ওহ, আপনি তো আবার বলবেন এটা কবিতা নয়। দেখি ষষ্ঠ পাণ্ডব এটাকেও কবিতার আকৃতিতে রিফরম্যাট করবে কি না।
ব্লগরব্লগর ভাল লেগেছে জেনে ভাল লাগছে।
এবার মনে হয় পাণ্ডবদা'র বেশ বেগ পেতে হবে (একজনের তো পড়েই দাঁত খুলে পড়ে গেছে, সত্যি সত্যিই ডাক্তারের 'টিনের বাক্সে বারো টাকা' আমারই দিতে হবে কিনা সেই ভয়ে আছি)
কী বোঝাতে চেয়েছেন না বুঝলেও এটা বুঝলাম যে আপনার কাছে সেই মহামূল্যবান পালকটা আছে। আর এই পালক যার কাছে থাকে তার কলম দিয়ে এরকম একটা করে স্বপ্নীল লেখা বের হতে থাকে।
বস, আমার দাঁত এমনিতেই ৩১ টা, আক্কেল বেশী হওয়ায় একখান ফেলায় দিসি, মাগার বস, এইডা বুঝলাম, আপনে বড় মাপের লেখক, আপনার লেখার মানে বুঝতে যাওয়া আমার জন্য ধৃষ্টতা, সহজ সরল কিছু লিখলে কমেন্টামুনে বস।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
বড় মাপের লেখক বৈলা গালি দিলেন বস!
শব্দচয়নে মুন্সিয়ানা আর কবিতার চমৎকার গাথুনিতে মুগ্ধ। তবে দৃশ্যকল্পের পরিবর্তন আরেকটু মসৃন হলে আরো ভালো লাগত
কবিতা নিয়ে আমি সহসা কিছু বলার দুঃসাহস দেখাইনা, কিন্তু রূপকথার পালক আমাকে ছুঁয়ে গেল।
মামুন ভাই, আপনার কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ, ভালো একটা পয়েন্ট ধরিয়ে দিয়েছেন, ভবিষ্যতে মাথায় থাকবে।
কবিতা বুঝার ক্ষমতা আল্লায় দেয় নাই আমারে। তবে ব্লগর ব্লগর হইলে বুঝসি। আর "রাজকন্যা" শব্দটা খুভ ভাল্লাগে।
-----------------------------------------
ভালবাসা তুমি - প্রেয়সীর ঠোঁটে প্রগাঢ় চুম্বন;
ভয়হীন তবু, দেখলে দেখুক না লোকজন।
-----------------------------------------
এই গল্প ভরা রাতে, কিছু স্বপ্ন মাখা নীল নীল হাতে
বেপরোয়া কিছু উচ্ছাস নিয়ে, তোমার অপেক্ষায় ...
লেখা পড়ে রাজকন্যার উপর মনটা বেজায় রাগ করলো...
ফাহা ভাইয়ের লেখাটা প্রথমে মাথার উপর দিয়া যাইতেসিলো, শেষে আইসে মনে হয় বুঝতে পারলাম...
---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!
ফাহা ভাই,
তুমুল একটা লেখা হয়েছে---তুমুল---!!
বিশ লক্ষ তারার বৃষ্টি আপনার উঠোনে---
শুভেচ্ছা
থ্যাঙ্কু অনিকেত দা!
অথচ রূপকথার রূপসী রাজকন্যা, বুঝতে পারেনি পালকের ভার, ঘুম ভেঙ্গে উঠে তাকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছিল পাশের ডাস্টবিনে।
কি অদ্ভুত...
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
সত্যিই অদ্ভুত, তাই না!
বাহ্! একেবারে কবিতার মতো কথা আপনার!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
ভালো লাগলো।
তোফা তোফা!
এটাকেই তো কবিতা বলে, না কি !
অদ্ভুত সুন্দর হয়েছে লেখাটা হাসান !
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
অদ্ভুত সুন্দর।
নতুন মন্তব্য করুন