নিউ ইয়র্ক এর স্প্রিং স্ট্রিটের একটা সাবওয়ে স্টেশনে বসে পত্রিকা পড়ছে লোকটা। দেয়ালে ইটের গাঁথুনী, মাটিতেও। গাঁথুনীর খোপ খোপ ছাপ ছড়িয়ে পড়েছে বেঞ্চে, লোকটার শরীরে, তার টুপি, হাতে ধরা পত্রিকা, জামা-জুতো সব গ্রাস করেছে দেয়ালের বর্গাকার ডিজাইন। লোকটা তার পারিপার্শ্বিকের কাছে নিজের ব্যক্তিস্বত্ত্বাকে হারিয়ে ফেলেছে। লোকটার ডাকাতি হয়ে গেছে স্বাধীনতা।
লোকটা কি আমি? হয়তো। ইদানিং না বলতে ভুলে গেছি।
ইদানিং মানিয়ে নেয়া শিখে গেছি।
মানব চরিত্রের কতই না রূপ! সব রূপই কি আমরা দেখতে পাই, সবসময়? তাকে বুঝতে হলে বোধহয় অনেক দিক থেকে তাকে দেখতে হয়, ভাবতে হয়, জানতে হয়, জানা শিখতে হয়। ‘ক্রন্দসী নারী’র দুঃখ আর তার দু’চোখ বেয়ে নেমে আসা কান্নাকে পিকাসো তার জাদুর বলে আঁকেন, যদিও পাশ ফিরে থাকা, তবু আমরা তার দুটি চোখই দেখতে পাই – বহুমাত্রিক্তার অদ্ভুত ছায়া ধরা পড়ে একটি মাত্র মাত্রায়। তার সম্মুখ দেখি, দেখি তার পাশ। কোন দেখাটা সঠিক? এ প্রশ্ন অবান্তর। তার চেয়ে বরং আসুন স্বীকার করে নেই, যে কোনো দেখাই অন্য কোনো দেখা থেকে বড় নয়।
এরকম আমাকে নিয়ে কি কেউ ভেবেছে? পাবলো ইজ ডেড!
আসলে আমরা যা দেখি সেটা কি সত্যিই তাই? এই ছবিটা দেখুন। প্রথমে মনে হয় কালো পাখিরা উড়ছে ডান থেকে বামে। ওহ, দাড়ান, কয়েকটা সাদা পাখিও তো আছে, যাচ্ছে বাম থেকে ডানে। দুই প্রান্তের দিকে চলছে মাইগ্রেশন। কিন্তু একটা জায়গায় তো এরা আবার মিলে মিশে একাকারও হয়ে আছে, একেবারে কেন্দ্রে! কী অদ্ভুত! কী অদ্ভুত এ নান্দনিক প্রক্রিয়া! কী অদ্ভুত এ বৈপরীত্য!
.
সত্যও কি তাই? নীলস বোর বলেছিলেন, চরম সত্য হচ্ছে সেটাই যার বিপরীতও সত্য।
.
তবু যে যার অবস্থানে আমরা অনড় হয়ে থাকি। দেখি রূপকথার এই ঘোড়াকে, দেখি আর বুঝতে চেষ্ঠা করি সীমানাগুলো কীভাবে উঠে যায়, যাচ্ছে, প্রতিনিয়ত। কারো বনের ঘোড়া আর সহিস গাছ ফুড়ে বেরিয়ে আসতে চায়, যেমনটা তার চাওয়া, ঘটেও তাই। একেই বুঝি বলে point of view !
.
.
.
আমি তাই দেখি যা আমি দেখতে চাই, আমি তাই দেখি যা আমি বিশ্বাস করি।
মন্তব্য
এটাই তো 'পৃথিবীর লবন'। তবে মানি, মাঝে মাঝে এ্যাবসার্ড, বিপদজনকও। তবুও...
কিন্তু ব্যাপারটা এত সহজ না, তাই না? ইচ্ছে থাকলেও বাস্তবে নিজের প্রতি এতটা আত্মবিশ্বাসের সাথে পক্ষপাতিত্ব করা যায় না।
ইন্টারেস্টিং!
সাদাকালো পাখির ছবিটা কি এশারের ?
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
হ্যা, এশারের।
শেষ দুইটা ছবি দেখে মনে হয় ধোঁয়াটে বিষয়টা আন্দাজাইতে পারলাম...
_________________________________________
সেরিওজা
হুম!...এসব নিয়ে চিন্তা করাটাইতো বিপদ.....।
আমি তাই দেখি যা আমি দেখতে চাই, আমি তাই দেখি যা আমি বিশ্বাস করি ।
সত্যও কি তাই? নীলস বোর বলেছিলেন, চরম সত্য হচ্ছে সেটাই যার বিপরীতও সত্য।
চমৎকার ।
____________
প্রখর-রোদ্দুর ।
নতুন মন্তব্য করুন