প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে সরকারীভাবে বা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মাধ্যমে যদি গ্রীডভিত্তিক বিদ্যুৎ না দেয়া যায় তাহলে সেখানকার মানুষদের জন্য বিকল্প সমাধান কী হতে পারে? একটা সমাধান হচ্ছে স্থানীয়ভাবে নবায়নযোগ্য শক্তি যেমন সৌরশক্তিকে কাজে লাগানো। কিন্তু বাংলাদেশে সৌরশক্তির পরিমাণ আসলে সীমিত। যদি বর্গমিটার পিছু সর্বোচ্চ দুই কিলোওয়াটও ধরা হয় তার পুরোটাই যে বিদ্যুতে রূপান্তরিত হবে এমন না। সৌরশক্তিকে বিদ্যুতে পরিণত করে যে ব্যয়বহুল সৌরকোষ তার দক্ষতা কিন্তু খুব কম। একারণে এক বর্গমিটারের একটি প্যানেল থেকে বড়জোর দেড়শো বা দুইশো ওয়াটের বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। আবার যেহেতু আবহাওয়া সবসময় এক থাকে না এবং সবচেয়ে বড় কথা, যেহেতু রাতের বেলা সূর্যের আলো থাকে না, তাই সৌরপ্যানেল ব্যবহার করে একই চাহিদার নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুত পাওয়া অসম্ভব। আমাদের দেশে যেসব সৌরপ্যানেল পাওয়া যায় সেগুলো সাধারণত দিনে তিন-চার ঘন্টার বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারে না। তাই অতিরিক্ত ব্যাটারিও লাগে বিদ্যুতশক্তিকে সঞ্চয় করে রাখার জন্য। এসব কারণে সৌরবিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য শক্তি হলেও ব্যয়সাধ্য।
বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের জন্য সৌরবিদ্যুত অর্থনৈতিকভাবে কতটুকু আকর্ষণীয় তার উপর কিছু গবেষণা হয়েছে (যদিও বেশিরভাগক্ষেত্রেই দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের সামাজিক উন্নয়ন, শিক্ষা, সমাজ আলোকিত করার মত ব্যাপারে সৌরবিদ্যুতের ভূমিকা কত মহান সেটা। কিন্তু এ ধরণের উন্নয়ন কেবল সৌরবিদ্যুতের ক্ষেত্রেই সত্য নয়, বিদ্যুতের অন্যান্য উৎসের জন্যও এটি সত্য - এই ব্যাপারটা অনেক সময়েই চেপে যাওয়া হয়)। এমনি এক গবেষণায়১ দেখানো হয়েছে যে ছোটখাটো ব্যবসা (যেমন ফোনের দোকান কিংবা মুদির দোকান) এবং বাড়িতে রেডিও/টিভিসহ বৈদ্যুতিক বাতি চালাতে সৌরবিদ্যুত একটা সুলভ উপায় হতে পারে, কিন্তু শুধু দুয়েকটা বাতি জ্বালানোর জন্য সৌরপ্যানেল বসানো অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক নয়।
তবু, আমরা লাখে লাখে সৌর প্যানেল কিনছি। বিশ হাজার টাকা খরচ করে দিনে তিন-চার ঘন্টার জন্য দুইটি বাতি জ্বালাতে পারলেই আমরা হাঁক দিয়ে বলতে পারি - মানিক, কি বাত্তি জ্বালাইলি? এতেই আমাদের আনন্দ। যারা সৌরপ্যানেল ব্যবহার করছেন বা করতে দেখেছেন এমন অনেকের কথা হচ্ছে, যেখানে তাদের গ্রামের বড়িতে সাধারণ উপায়ে বিদ্যুতের সুবিধা পাবার কোনো সম্ভাবনাই নেই, সেখানে সৌরপ্যানেল যেন জাদুর কাঠি।
কি কি জিনিস চালানো যায় এই প্যানেল দিয়ে? মূলত রাতের বেলা তিন থেকে চার ঘন্টার জন্য দুইটি ফ্লুরোসেন্ট বাতি জ্বালানোর ব্যবস্থা থাকে একটি প্যাকেজে। সাথে বড়জোড় আরেকটি টেবিল ফ্যান কিংবা সাদা-কালো টিভি চালানোর বন্দোবস্ত থাকে। কিন্তু যে সৌরকোষটি দেয়া হয় সেটি যদি প্রয়োজনীয় সৌরশক্তি যোগাড় না করতে পারে (এটি নির্ভর করে সৌরকোষের আকারের উপর), তাহলে হয়তো শুধু বাতিই জ্বালানো যাবে, কিন্তু ফ্যান বা টিভি চলবে না। বিদ্যুত সরবরাহের পুরো সামর্থ্যটা নির্ভর করে সৌরকোষটি কত ওয়াটের, বিদ্যুৎ সঞ্চয়ের যে ব্যাটারি সেটি কত অ্যাম্পিয়ার-আওয়ারের, ঘরের বাইরে সূর্যের আলোর প্রখরতা কেমন, আকাশ রোদেলা কিনা, ইত্যাদি নানান বিষয়ের উপর। আপনার সৌরকোষটি কত ওয়াটের (W) কিনবেন সেটি নির্ভর করে আপনার বিদ্যুতের চাহিদা কত তার উপর। গড়পড়তা হিসেবে গ্রামের একটি পরিবারের চাহিদা ১০০W এর মত (দুটি ফ্লুরোসেন্ট বাতি জ্বালাতে লাগে ১২ W, টেবিল ফ্যান চালাতে ৪০ W, টিভি চালাতে ৫০ W এর মত)২।
ইতিমধ্যেই দশ লাখ পরিবারের কাছে সৌরপ্যানেল বিক্রি করেছে গ্রামীণশক্তি। রহিমআফরোজে রিনিউয়েবল এনার্জি লিমিটেড বিক্রি করেছে এক লাখেরো বেশি পরিবারের কাছে।৩ অন্যদিকে ব্র্যাক বিক্রি করেছে ৭২ হাজারেরো বেশি।৪ যারা সৌরপ্যানেল বিক্রি করছেন তাদের ব্যবসায়িক দিক থেকে চিন্তা করলে সৌরপ্যানেল একটা হীরকখনি। কিন্তু এই ব্যবসাকে যে উপায়ে মানুষের কাছে হালাল করা হচ্ছে সেটি লক্ষ্যণীয়।
গ্রামীণশক্তি দেশে সৌরপ্যানেলের বোধহয় সবচেয়ে বড় বিক্রেতা। দু'দিন আগে প্রথমআলোর খবরে৫ ড. ইউনুস এবং গ্রামীণশক্তি তাদের লক্ষ্যমাত্রা জানিয়েছে - অন্তত ২০ লাখ পরিবারের কাছে তারা সৌরবিদ্যুৎ পৌছে দেবে (মানে, সৌরপ্যানেল বিক্রি করবে)। খবরটিতে বলা হয়েছেঃ
ড. ইউনূস বলেন, ‘প্রতি পরিবারে কেন বিদ্যুৎ পৌঁছানো যাবে না? সৌরবিদ্যুৎ এখন আমাদের সাধ্যের মধ্যে এসেছে। এক ডলারের কমে এখন সৌরবিদ্যুতের প্যানেল পাওয়া যায়। কারও ভর্তুকির জন্য বসে থাকতে হবে না।’
এই কথাটি কতটুকু সঠিক? বাস্তবতা হলো, সৌরবিদ্যুত এখনো সবার সাধ্যের মধ্যে আসে নি। একটি প্যাকেজের দাম সাধারণত নির্ধারণ করা হয় কত ওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে (Wp) তার উপর ভিত্তি করে। রহিমআফরোজের মূল্যনীতির উপর তৈরি এক রিপোর্ট৩ থেকে নিচের দামগুলি জানা গেলঃ
ধরলাম, গ্রামীণশক্তি যে বিশ লাখ পরিবারকে ক্রেতা হিসেব চিহ্নিত করেছে তাদের সবাই মাত্র ২০Wp পেতে চায় যার জন্য প্রতি প্যানেলের দাম প্রায় বিশ হাজার টাকা। অর্থাৎ, পরিবার প্রতি মাত্র দুটি বাতি জ্বালানোর জন্য এই পরিবারগুলিকে খরচ করতে হবে নিদেনপক্ষে ৪০০০ কোটি টাকা। সৌরপ্যানেলের আকার যদি বেশি হয়, টাকার এই পরিমাণও সেই হারে বাড়বে। তার মানে, গৃহস্থালী-পর্যায়ের সৌরপ্যানেল যেগুলো কিনা গ্রামীণশক্তি কিংবা ব্র্যাক (দুই ব্র্যান্ডের দামই কাছাকাছি১) আমাদের দেশে বিক্রি করছে সেগুলো থেকে মাত্র ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুত পেতে খরচ হচ্ছে ৪০০০ কোটি টাকা, অর্থাৎ, মেগাওয়াট প্রতি ১০০ কোটি টাকা বা প্রায় ১২.৫ মিলিয়ন ডলার। একই পরিমাণ অর্থ দিয়ে প্রায় দশ গুণেরও বেশি বিদ্যুত উৎপাদনসক্ষম কয়লা/গ্যাস চালিত পাওয়ার প্লান্ট বানানো সম্ভব। অন্য কথায়, আমরা যে জিনিস ১ টাকায় পেতাম, সেটি কিনছি ১০ টাকা দিয়ে, কেবলমাত্র বিদ্যুতের সংযোগ না থাকার কারণে। গ্রামের দরিদ্র মানুষগুলি এত টাকা খরচ করছে কারণ তারা ভেবে বসে আছে কিংবা তাদেরকে বোঝানো হয়েছে যে সৌরপ্যানেল ছাড়া তাদের আর কোনো গতি নেই।
গ্রামীণশক্তির ২০ লাখ লক্ষ্যমাত্রার খবরে গ্রামীণশক্তির চেয়ারম্যান বলেছেনঃ
মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর বক্তব্যে বলেন, মানুষকে যদি পরিবেশ দেওয়া যায়, তবে দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ সব সমস্যার সমাধান তারাই করতে পারবে।
অথচ, বাস্তব চিত্র হচ্ছে - দারিদ্র্য বিমোচনের নামে অতি উচ্চমূল্যের সৌরপ্যানেলগুলি ১৪%৩ বা তারো বেশি মুনাফায় এই দেশে যে বিক্রি হচ্ছে তাই নয়, এই বিক্রিকে ঘিরে গড়ে উঠেছে এনজিওগুলির সুদের রমরমা ব্যবসা। যারা প্যানেল বিক্রি করছেন, তারাই সেই প্যানেল কেনার জন্য টাকা ধার দিচ্ছেন চড়া সুদে। ব্র্যাকের কাছ থেকে কিনলে ব্র্যাক ২ বছরের জন্য ১৫% সুদে ঋণ দেয়, আর গ্রামীণশক্তির কাছ থেকে কিনলে গ্রামীণশক্তি ঋণ দেয় ৩ বছরের জন্য ১২% সুদে, অথবা ২ বছরের জন্য ৮% সুদে।১ সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে কেউ যদি ঋণ নিয়ে সৌরকোষ কেনে তাহলে তার কাছে থেকে এই এনজিওগুলি লাভ করছে প্রথমে ১৪%, তারপর সুদ বাবদ মোট মূল্যের ১৫%। ড. ইউনুসের কথামত যদি সৌরবিদ্যুৎ সবার সাধ্যের মধ্যেই থাকতো তাহলে চড়া সুদের এই ব্যবসা তৈরি হলো কীভাবে?
মানছি, দেশের বিদ্যুৎ সংকট আসলেই তীব্র। যাদের বিদ্যুতের সংযোগ আছে, তারাই সবসময় বিদ্যুৎ পান না, ভয়াবহ লোডশেডিং। আর এর সাথে সাথে সেভাবে নতুন করে বিদ্যুৎ উৎপাদনও বাড়ছে না। এইসব দেখে গ্রামের মানুষ যে বিকল্প কিছু ভাববে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু, এর সুযোগ নিয়ে আর্থিক বিবেচনায় মারাত্নক রকমের উচ্চমূল্যের এক প্রযুক্তি আমাদেরকে গছিয়ে দিচ্ছে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। এর সাথে যুক্ত হয়েছে বিশ্বব্যাংক।৫ আমাদের জ্বালানিবিদ্যুৎখাত যেখানে কুইক রেন্টালের মত আরেক এডহক পদ্ধতি দিয়ে চালাতে হচ্ছে, সেটার উন্নয়ন না করে সোলারপ্যানেলের পিছনে বিশ্বব্যাংক কেন টাকা ঢালছে এই প্রশ্ন থেকেই যায়।
অন্যদিকে, আমাদের নিজেদের পরিকল্পনার অভাবও প্রকট মনে হয় যখন দেখি- এই যে বিশ লাখ পরিবার যারা প্যানেল কিনেছে/কিনবে, তাদের এই বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগটিকে পরিকল্পিত উপায়ে সংগ্রহ করে economy of scale আছে এমন প্রযুক্তিতে (যেমন বড় পাওয়ারপ্লান্ট) কিংবা সরকারীভাবে সৌরশক্তির অবকাঠামো গঠনের কাজে লাগানোর কোনো নিদর্শন বা ভাবনা কারো নেই। এভাবেই হয়তো এই বিলিয়ন ডলার চলে যাচ্ছে/যাবে অন্য কারো পকেটে। আর আমরা পিছিয়ে পড়ছি।
আমি সৌরশক্তির বিরোধিতা করছি না। কিন্তু দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে হলে আমাদের ভেবেচিন্তে এগুতে হবে - আমি এই কথাটাই জোড় দিয়ে বলছি। সৌরবিদ্যুৎ যদি দেশের বিদ্যুতচাহিদা সুলভে মেটাতে পারে কখনো, আমরা সাদরে তাকে গ্রহন করবো। কিন্তু বর্তমানে অতিরিক্ত দাম শুধু প্রত্যন্ত অঞ্চলের গরিব মানুষ দেবে কেন? অন্য যে কোনো (জ্বীবাশ্মজ্বালানি কিংবা নবায়নযোগ্য) উৎসের মধ্যে বর্তমানে সৌরশক্তি বেশি ব্যয়বহুল। আপাত দৃষ্টিতে প্রত্যন্ত অঞ্চলের জন্য এটি একটি এডহক সমাধান হলেও দীর্ঘমেয়াদে সৌরশক্তি আমাদের জন্য লাভের না ক্ষতির হবে তা ভাবতে হবে আমাদেরকেই। কয়লা, গ্যাস, বায়ু, পানি, ভূগর্ভস্থ-তাপ ইত্যাদি সব উৎসগুলোর উপযোগিতা খুঁজে দেখতে হবে। আরো সবচেয়ে বড় কথা - যেই প্রযুক্তিই আমরা গ্রহন করি না কেন তার উপর দক্ষতা অর্জন করেই তবে সেটি গ্রহন করতে হবে। সৌরপ্যানেলগুলি যেগুলি বর্তমানে আমরা কিনছি, তাদের কোনোকিছুই দেশে তৈরি হচ্ছে না। আমরা কেবল মুনাফালোভী ব্যবসাদারদের বাজারে পরিণত হচ্ছি। কেবল ব্যবসায়িক বিবেচনা হলে না হয় বলা যেতো, কিন্তু মুখে তারা বলছে সামাজিকসেবা, বিদ্যুতায়ন। কিন্তু মুনাফা লুটছে দুইহাতে।
মন্তব্য
ভালো লাগলো। পড়ার সময় যেই চিন্তাগুলো আসছিলো শেষের দুই প্যারায় বলে দিয়েছেন।
গ্রামীণ শক্তি সৌরবিদ্যুৎ প্যানেল ব্যবহার বাবদ যেটুকু কার্বন নির্গমন কমে তার বিপরীতে কি কারো কাছ থেকে কার্বন ক্রেডিটের টাকা নেয়? যদি নেয়, সেটা কি মূল ক্রেতা যারা কিনা সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করে কার্বন নির্গমণ কমাচ্ছেন তারা কি জানেন, কিংবা তার ভাগ পান?
হিসাবে ভুল করলাম কি না জানি না,
৪০০ কোটি টাকা -> ৪০০০ কোটি টাকা
চার মেগাওয়াট -> চল্লিশ মেগাওয়াট
১০০ কোটি টাকা -> ১২.৫ মিলিয়ন ডলার
ভুল হলেও অবশ্য মেগাওয়াট প্রতি একশ কোটি টাকার হিসাব ঠিক থাকে।
সাম্য, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, ভুলটি ধরিয়ে দেবার জন্য। পোস্টে ঠিক করে দিয়েছি।
এক জায়গায় এখনো ৪০০ কোটি দেখাচ্ছে।
দিলাম।
সৌরবিদ্যুত এর অর্থনৈতিক দিক নিয়ে কিছু প্রশ্ন জেগেছিল মনে আপনার এই লেখাটি পড়ে সেগুলোর উত্তর পেয়ে গিয়েছি। ধন্যবাদ।
এই পোস্টে প্রতিটা প্রসঙ্গে আলাদা আলাদা মন্তব্য করার চেষ্টা করবো।
বিদ্যুতের কাভারেজঃ
বাংলাদেশের কত ভাগ মানুষের কাছে বিদ্যুতের সুবিধা পৌঁছে দেয়া গেছে এই হিসাবটার মধ্যে বড় বড় ফাঁকি আছে। সরকার হিসাব করে মোট কতগুলো সংযোগ দেয়া হয়েছে। সরকার যেটা বলে না, সেটা হচ্ছে সংযোগপ্রাপ্তরা ২৪ ঘন্টায় মোট কত ঘন্টা বিদ্যুতের সুবিধা পাচ্ছে। বাংলাদেশের গ্রাম ও শহরতলীগুলোর অনেক জায়গায় ঢাকা-চট্টগ্রামের মতো 'বিদ্যুৎ যায়' না, সেখানে মাঝে মাঝে 'বিদ্যুৎ আসে'।
আমি যদি দিনে ৪ ঘন্টা বিদ্যুতের সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকি তাহলে আমাকে 'বিদ্যুতের সুবিধাপ্রাপ্ত ১.০০ জন' বলা যাবে না, বরং 'বিদ্যুতের সুবিধাপ্রাপ্ত ০.৮৩ জন' বলাটা সঙ্গত হবে। আমরা বছরে গড়ে মাথাপিছু কী পরিমাণ বিদ্যুৎ কনজিউম করার জন্য পাই সেই হিসাবটা দিলে ফাঁকির ব্যাপারটা আরো স্পষ্ট হবে।
মাথাপিছু গড় বিদ্যুৎ ব্যবহারের পরিমাণ (ওয়াট)
ভারত = ৭৫
শ্রীলঙ্কা = ৫২
পাকিস্তান = ৪৭
ভুটান = ৩০
বাংলাদেশ = ২৫.৬৪
নেপাল = ২১
মায়ানমার = ৯
আফগানিস্তান = ১
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আমিও সংযোগের কথাই বলেছি। সেই হিসেবে কিন্তু সৌরশক্তির মধ্যেও বাইডিফল্ট লোডশেডিং এম্বেডেড আছে, যেহেতু আপনি ব্যাটারিতে সঞ্চয় ছাড়া ৩/৪ ঘন্টার বেশি বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না।
একটু ব্যাখ্যা করবেন দয়া করে?
এমনিতেই তো সূর্যের আলো দিনের বেলায় যতক্ষণ আছে (৮ ঘন্টার কম) তার চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না। তার উপর লস হিসেবে নিন।
সাধারণ প্যাকেজ যেমন ২০Wp এর প্যাকেজের বৈদ্যুতিক বাতির সিস্টেমটাই ডিজাইন করা হয় ৩/৪ ঘন্টার জন্য (রেফারেন্স ৩, পাতা ২১)। তবে ব্যাকাপ সিস্টেম থাকে ৪ দিনের।
বুঝলুম
এই হিসেবটার রেফারেন্স দিবেন কি? বরিশালে আমার দাদার বাড়ী তে ২১,০০০ টাকায় ৪-৫ বাতি আমি নিজেই জ্বলতে দেখেছি।
অনুন্নত সোলার কোষ ব্যবহার নিয়ে কিছু বলতে পারতেন। এটা আমার মনে হয় অনেক গুরুত্যপূর্ণ ইস্যু, যেটা নিয়ে কেউ ই কিছু বলে না।
রেফারেন্স ৩ দেখুন। সেখান থেকে দামের তালিকা তো আমি পোস্টেই তুলে দিয়েছি। ২০ ওয়াটের প্যাকেজের দাম ১৯,৩৯১। এর সাথে ইন্সটলেশন যোগ করুন। দাম বিশহাজারেরও বেশিই পড়বে। আর এই প্যাকেজের সাথে মাত্র ২টি বাতির ব্যবস্থাই থাকে (আবারো রেফারেন্স ৩, পৃষ্ঠা ২১)। আর প্রতিটাা ফ্লুরোসেন্ট বাতির বৈদ্যুতিক ক্ষমতা ৬ ওয়াট। সেই হিসেবে (এবং লস ধরে) ৩টার বেশি বাতি এতক্ষণ ধরে চালানো কি সম্ভব?
সৌরকোষের দক্ষতা এখনো অনেক কম। দুনিয়াজুড়ে গবেষণা হচ্ছে। কিন্তু গ্রামীণশক্তি ততদিন অপেক্ষা করবে বলে মনে হয় না। মুনাফা আসবে কোত্থেকে তাহলে?
বিদ্যুৎ উৎপাদন, পরিচলন ও বিতরণঃ
বিদ্যুত, পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার মতো ইউটিলিটিগুলোতে মানুষকে জাতীয় গ্রীডের আওতায় আনার চেষ্টা না করে বিচ্ছিন্ন একক ভোক্তা হিসাবে গড়ে তোলার সকল চেষ্টা সাধারণের স্বার্থের পরিপন্থী।
বাংলাদেশের ভৌগলিক চিত্রটি যেমন তাতে এখানে সবাইকে জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রীডের আওতায় আনাটা দুষ্কর কিছু না। নবায়নযোগ্য বা নবায়নযোগ্য নয় এমন সকল উৎস থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রীডে যোগ করা গেলে প্রডাকশন ম্যানেজমেন্ট, ডিস্ট্রিবিউশন ম্যানেজমেন্ট ও লোড ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়া সম্ভব। দিনের বেলা সৌর উৎস থেকে প্রাপ্ত বিদ্যুৎ রাতে যখন থাকবে না তখন অন্য উৎস থেকে প্রাপ্ত বিদ্যুৎ দিয়ে তার ঘাটতি মেটাতে হবে। এই কাজটা একজন একক ভোক্তার পক্ষে করা সম্ভব নয়।
নবায়নযোগ্য শক্তির ক্ষেত্রে দেশের যে স্থানে যেটা পর্যাপ্ত সে স্থানে ঐ শক্তিভিত্তিক পাওয়ার প্লান্ট বসিয়ে তার উৎপাদন জাতীয় গ্রীডে যোগ করতে হবে। নয়তো ঐ উৎপাদন স্থানীয় ভিত্তিতে ব্যবহারের চেষ্টা সুদূরপ্রসারী কোন ফল আনতে পারবে না।
বিদ্যুতের উৎপাদন, পরিচলন ও বিতরণ (production, transmission & distribution) ব্যবস্থার ক্ষেত্রে অনুসৃত বর্তমান জাতীয় নীতি ইউনিফর্ম নয়। বস্তুতঃ পরিচলন ও বিতরণ পুরোটাই সরকারের একক প্রতিষ্ঠানের হাতে রেখে উৎপাদনের ক্ষেত্রে বেসরকারী উদ্যোগের সুযোগ দেয়া প্রয়োজন। বেসরকারী উদ্যোগ থেকে প্রাপ্ত বিদ্যুতের ক্ষেত্রে একই প্রকার জ্বালানী থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ সকল বিক্রেতার কাছ থেকে একই মূল্যে ক্রয় এবং দেশের সকল অঞ্চলের একই শ্রেণীর ভোক্তার নিকট একই মূল্যে বিদ্যুৎ বিক্রয় করা আবশ্যক। এতে সমতা বিধান ও দুর্নীতি হ্রাস করা সম্ভব। বিতরণ ব্যবস্থা একক প্রতিষ্ঠানের আওতায় হলে ওহারহেড কমানো সম্ভব হবে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
একমত।
জ্বীবাশ্মজ্বালানি ও নবায়নযোগ্য সব ধরণের উৎস থেকে বিদ্যুত উৎপাদন করে গ্রীডে নিলে তখন ধনী-গরীব নির্বিশেষে সবাইকে একই দামে বিদ্যুৎ দিতে পারা যায় এবং নবায়নযোগ্য শক্তির যে অতিরিক্ত খরচ সেটাও সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া যায়। কিন্তু সৌরশক্তিভিত্তিক এখন যে বিচ্ছিন্ন ব্যবস্থা, তাতে কিন্তু প্রত্যন্ত এলাকার মানুষেরাই বেশি মূল্য দিচ্ছে।
শেষের দুই প্যারার সাথে একমত।
গ্রাম এলাকায় বাড়ি বাড়ি সোলার প্যানেল না বসিয়ে, একটা পাড়া বা ছোট কমুনিটির জন্য বসালে সেটা কি সাধারন জনগনের জন্য আরও লাভজনক হত না? এন জি ও গুল কখনই এই ব্যাবস্থা চালু করার কথা চিন্তাও করলনা কেন?
কেন সোলার প্যানেলই ব্যবহার করতে হবেঃ
সরকার নতুন বিদ্যুৎ সংযোগের ক্ষেত্রে আবাসিক খাতে সর্বনিম্ন ৩%, বাণিজ্যিকে ৭% ও শিল্প-কারখানায় ১০% সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা জারি করেছে। এক্ষেত্রে সরকারের যুক্তি হচ্ছে এতে বিদ্যমান বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার ওপর চাপ কমানোর পাশাপাশি নবায়নযোগ্য শক্তি উৎস ব্যবহার করে পরিবেশ দূষণ হ্রাসকরণ। সরকারের লক্ষ্য যদি তা-ই হয়ে থাকে তাহলে সেখানে নবায়নযোগ্য যে কোন শক্তি ব্যবহারের পরিবর্তে সোলার প্যানেল লাগানোর বাধ্যবাধকতাটি কেন আসলো?
এখানেই রহিমআফরোজ, ব্রাক বা গ্রামীণের সাথে সাথে সরকারী-বেসরকারী নানা প্রকল্পে সোলার পাওয়ার সিস্টেম সরবরাহকারী বিপুল সংখ্যক রাজনৈতিক ফড়িয়াদের প্রসঙ্গ চলে আসে। তাছাড়া গণচীন ও ভারত থেকে গণহারে আমদানীকৃত এইসব প্যানেলের বাজার তৈরিতে উৎপাদক দেশের আদৌ কোন ভূমিকা আছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা দরকার আছে।
একটা জিনিস লক্ষণীয় যে আইপিএস বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানগুলো সোলার পাওয়ার সিস্টেম বিক্রয়ের ক্ষেত্রে অগ্রণী। কারণ, এই সোলার পাওয়ার সিস্টেমগুলো একটু মডিফায়েড আইপিএস ছাড়া কিছু নয়। এইভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে মূলধনী ব্যয় ওয়াটপ্রতি ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা, যেখানে প্রচলিত জ্বালানী থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের মূলধনী ব্যয় ওয়াটপ্রতি ১০০ থেকে ১২০ টাকা হবার কথা। বাংলাদেশে যারা লেড-অ্যাসিড ব্যাটারী ব্যবহার করেন তারা জানেন যে, এই সব ব্যাটারীর আয়ুষ্কাল এখন ৩ বছরেরও নিচে নেমে এসেছে*। এ’জন্য সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহারে বিদ্যুৎ খরচ যা সাশ্রয় হবার কথা সেই লাভের গুড় ‘ব্যাটারী পিঁপড়া’ খেয়ে ফেলে। ফলে সোলার পাওয়ার সিস্টেমের মূলধনী ব্যয় কোনকালেই আর উঠে আসে না। এর বাইরে মূলধনী ব্যয় উঠে আসার জন্য যে সময়সীমা দেয়া হয়, ব্যবহৃত সোলার প্যানেলগুলো তার অনেক আগেই দক্ষতা হ্রাস হতে হতে মৃতকোষে পরিণত হয়।
বিশেষ ব্যাঙ্কঋণ পেয়ে প্রায় বিনাশুল্কে সোলার প্যানেল আমদানী করে সরকারী-বেসরকারী নানা প্রকল্পে তা সরবরাহ করে অথবা উচ্চ সুদে দরিদ্রদের মধ্যে তা বিক্রয় করে তারপর বছরের পর বছর ধরে মেইনটেনেন্স, ব্যাটারী আর প্যানেলের ব্যবসা করার সুযোগ পাওয়া তো সোনার ডিমপাড়া রাজহাঁস পাবার মতো ব্যাপার! তার ওপর কার্বন নিঃসরণ হ্রাসের কথা বলে (ব্যাটারী দিয়ে যে পরিবেশ দূষণ হয় সে কথা চেপে যান), কার্বন ক্রেডিটে ভাগ বসাতে পারলে তো কথাই নেই! সুতরাং নবায়নযোগ্য যে কোন শক্তি ব্যবহারের পরিবর্তে সোলার প্যানেল তো লাগাতেই হবে।
(*ব্যাটারীর আয়ু কী করে এতটা কমে গেল সে আলোচনা এখানে করলাম না। শুধু যারা কিঞ্চিত ভুরু কোঁচকাতে পারেন তাদের বলছি, এটা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও স্বউদ্যোগে সংগৃহীত তথ্য থেকে বলা। আমাকে আস্থায় নিতে পারেন।)
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ফারুক হাসানের চমৎকার পোস্ট আর পান্ডবদার যথারীতি অসাধারণ আলোচনা আমার জন্য একটা জটিল বিষয়কে সহজে বুঝতে সাহায্য করছে - - চলুক।
একটা সহজ হিসেব করি।
প্রতিদিন ২০ ওয়াট গড়ে ৪ ঘণ্টা করে হলে বছরে হবে ২০*৪*৩৬৫=২৯২০০ ওয়াট- ঘন্টা= ২৯ কিলোওয়াট ঘন্টা।
যদি ১০ বছর চলে তবে প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টার দাম পড়ে ৬৬ টাকা (মোট দাম ১৯৯৪১ ধরে)। যদি ২০ বছর চলে তবে ৩৩ টাকা।
এই হিসেবের মধ্যে আমি ভ্যারিয়েবল কস্ট (ব্যাটারি, ইন্সটলেশন, ম্যাইন্টেনেন্স ইত্যাদি)ধরি নাই এবং ধরে নিচ্ছি প্রতিদিন চলবে (যদিও শীতকালে চলার সম্ভাবনা একদম শূন্য কারণ কুয়াশা ও সূর্যের আলোর ক্ষণস্থায়িত্ব)।
এই হিসেবে তথাকথিত শক্তি সরবরাহকারীরা মানুষের মাথায় কুইক রেন্টালের মতই কাঁঠাল ভেঙ্গে খাচ্ছে।
-সুমন
আপনার হিসেবটা খুব সংক্ষিপ্ত হলে কিন্তু ফলপ্রসু। বিনিয়োগ করার সময় এই ছোট্ট হিসেবটাও অনেক সময় আমরা করি না।
সৌরপ্যানেলের দাম ঠিক কোন মাপকাঠি দিয়ে মাপার পরে বলা হচ্ছে যে তা সাধ্যের মধ্যে চলে আসছে? কিস্তি, সুদের হার, এককালীন মূল্যের বিপরীতে সমাজের ঐ অংশের আয় ব্যয়ের তুলনামূলক ছবিটা কি কেউ জানে? নাকি এটা বিজনেস মডেলের (সে যাই হোক) অনেকগুলো সিক্রেট বুলেট পয়েন্টের একটা?
জিনিসটার মেরামত বা গ্যারান্টির ব্যাপারটা কেমন? আদৌ আছে নাকি সবই ফকফকা?
মাপকাঠিটা যে কি তা খোদামালুম।
এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দারুণ একটা পোস্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ। আমার কাছে মনে হয়, যদিও কয়লা/গ্যাস চালিত বিদ্যুত প্ল্যান্ট তৈরি সোলার সেল এর চেয়ে সস্তা, ঐ প্ল্যান্টগুলো চালানোর মতো খনিজ সম্পদ আমাদের নেই। সে হিসেবে নবায়নযোগ্য কোন উৎসের পেছনে টাকা খরচ করাটাই হয়তো ভালো। তবে খেয়াল রাখা উচিত
১। সোলার সেল গুলো কোথা থেকে কেনা হচ্ছে, সেগুলোর মান, এফিশিয়েন্সি, বা কত বছর কোন সমস্যা ছাড়াই চলতে পারবে তা নিশ্চিত করা। যদি প্রতি ৪/৫ বছর পর পরই সেলগুলো অকেজো হয়ে পড়ে তাহলে এভাবে টাকা ফেলার মানে নেই। এখন আই পি এস এর ব্যাটারীগুলো যে অত্যন্ত নিম্ন মানের, সেরকম জিনিস যেনো গছিয়ে দেয়া না হয়।
২। যে পরিমাণ টাকা এই কাজে খরচ হবে, দেশে প্রাপ্ত সৌর শক্তি থেকে আসলেই সে পরিমাণ বিদ্যুত তৈরি হবে কিনা তার জন্য গবেষণা করা দরকার। এর আগে যেমন আর্সেনিকের কথা না ভেবে খাবার পানির জন্য নলকূপ স্হাপণের কথা বলা হয়েছিল, তেমন যেন না হয়।
৩। বিদেশ থেকে না কিনে, দেশেই এগুলো উৎপাদন করার চেষ্টা করা উচিত। তাহলে শুধু অনেক টাকা দেশেই থাকবে তা না, ভবিষ্যতে অন্য দেশে রপ্তানির ও একটা সূযোগ তৈরি হবে।
বাংলার গরিব মানুষগুলোকে ঠকতে দেখলে গা জ্বলে! তাদের রক্ত শুষে নিয়ে অনেকেই আজ মহামানব!
_____________________
Give Her Freedom!
সৌরবিদ্যুতের খরচ ইউনিট-পিছু ৬০ থেকে ৭০ টাকার মধ্যে পড়ে। শহরে বসে ৬ থেকে ৭ টাকা ইউনিটের বিদ্যুৎ খরচ করে এসির বাতাসে পেছন ঠাণ্ডা করতে করতে উন্নয়ন উন্নয়ন চিৎকার করা লোকগুলির অবগতির জন্য বলতে হয়, জার্মানিতে সকল বিদ্যুতের ভোক্তা নবায়নযোগ্য শক্তির জন্য বিশেষ মাশুল দিতে বাধ্য। ঐ মাশুলের টাকা চলে যায় নবায়নযোগ্য খাতের উন্নয়নের পেছনে। বাংলাদেশে শহুরে ভোক্তারা নিজেরা সস্তায় বিদ্যুৎ খেয়ে দশগুণ দামে গরীবকে বিদ্যুৎ খেতে বাধ্য করে সেটার নাম দিচ্ছেন উন্নয়ন। এটা শুধু মূর্খামিই নয়, একটা চরম চামারপনাও।
বাংলাদেশে এখন সৌরকোষ-উন্নয়নের নামে যা চলছে, তা হচ্ছে প্রায় বিনা-শুল্কে সৌরকোষ ও ব্যাটারির আমদানি ব্যবসা। এর ওপর উন্নয়ন নামের মোড়ক লাগালে ব্যবসাটা নিয়ে কথা কম উঠবে, তাই ইউনূস মহাজনকে মডেলকন্যা হিসাবে সামনে রাখা হয়েছে।
আজব একটা দেশ আমাদের। কিছু বাটপার গরিবরে ১ লিটার পানি ১ টাকায় বিক্রি করে, ১ ইউনিট বিদ্যুৎ ৭০ টাকায় বিক্রি করে, আর শহরের অর্ধশিক্ষিত সুবিধাভোগীরা উন্নয়ন উন্নয়ন চিৎকার করতে করতে গলা ফাটায় ফেলে।
জার্মানিতে নবায়নযোগ্য ও অনবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ ভোক্তাদের মধ্যে ইউনিট প্রতি চার্জের কতটা পার্থক্য থাকে?
সৌরভ কবীর
গ্রিডের বিদ্যুৎ তো দুইটার মিক্স। গৃহস্থালি বিদ্যুৎ বিলের ৮.৮% বরাদ্দ রাখা হয় নবায়নযোগ্য শক্তিখাতের জন্য।
জার্মানির দেখছি প্রয়োজনের অর্ধেক বিদ্যুতই নবায়নযোগ্য উৎস থেকে আসে।
সৌরভ কবীর
ভর্তুকি দিলে মধ্যবিত্ত খেয়ে যায়। যার পাঁচটা গাড়ি সে এক-গাড়িওলার চেয়ে পাঁচগুণ বেশী ভর্তুকি পায়। আর যে পাবলিক ট্রানসিট ব্যবহার করে, তার তুলনায় এক-গাড়িওলা দশগুণ ভর্তুকি নেয়।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
চমৎকার পোস্ট।
এই নবায়নযোগ্য শক্তিউৎসের খরচ ও নির্ভরযোগ্যতার সাথে অন্য সম্ভাব্য নবায়নযোগ্য শক্তি উৎসের খরচ ও নির্ভরযোগ্যতার পরিমাপ পেলে আরও ভাল লাগতো।
http://en.wikipedia.org/wiki/Cost_of_electricity_by_source --- এখানে তো বায়ুশক্তির খরচ অনেক কম মনে হচ্ছে।
প্রাসঙ্গিক কিছু সাইট:
www.lged-rein.org/ - বাংলাদেশের সাইট কিন্তু হ্যাকড।
http://www.mnre.gov.in/schemes/offgrid/biogas-2/ ভারতে
http://www.energy.gov.lk/sub_pgs/energy_renewable.html শ্রীলংকায়
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
নবায়নযোগ্য শক্তিগুলোর মধ্যে সৌরশক্তির খরচ সবচেয়ে বেশি।
এইখানে কিছু তথ্য যোগ করতে চাই, বাংলাদেশের বিদ্যুতের বাজার রেগুলেটেড, দেশের সরকার দ্বারা। সরকারই একমাত্র প্লেয়ার এই মার্কেটে। কিন্তু আমাদের মত বিশাল জনসংখ্যার দেশে এই রেগুলেটেড মার্কেট পুরাপুরি অচল। এই মার্কেট ব্যবস্থায় একা সরকারের পক্ষে কোনদিন ও এই বিশাল জনসংখ্যার বিদ্যুতের চাহিদা মেটানো সম্ভব না। যদিও বড় স্কেলে নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট বসানো হয়, সেই ঋণের বোঝা বহন করার সাধ্য আমাদের দেশের নাই। সুতরাং দেশের বিদ্যুতের পুরা বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে হলে দেশের বিদ্যুতের বাজারকে প্রথমে ডি-রেগুলেটেড করতে হবে। নতুন প্লেয়ারকে বাজারে আসতে দিতে হবে। আর রিনিউয়াবেল এনার্জির দিকে খুব ঝুঁকতে হবে। কিন্তু সাথে সাথে রিনিউয়াবেল এনার্জি ট্যাক্স ক্রেডিটের ব্যবস্থা করতে হবে, যেটা গ্রাহক সরাসরি পাবে। এই এনজিও গুলার রিনিউয়াবেল এনার্জি সেক্টরে উচ্চ সুদের ব্যবসা বন্ধ করার জন্য সরকার নিজেই কম সুদে ঋণের ব্যবস্থা করতে পারে রিনিউয়াবেল এনার্জির প্রথম বিনিয়োগের জন্য। এইখানে অনেকের মন্তব্য দেখে আমার মনে হয়েছে যে, তারা রিনিউয়াবেল এনার্জি কে ফসিল ফুয়েলের বিকল্প প্রোডাকশন লাইন মনে করেন। কিন্তু ধারণাটা ভুল। নর্থ আমেরিকা, ইউরোপ স্পেশালি, রিনিউয়াবেল এনার্জির দিকে ঝুঁকতেছে কারণ তারা তাদের ভবিষ্যৎ এনার্জি- সিকুরিটি আর সবুজ পরিবেশের জন্য। যেমন কানাডা ২০১৫/১৬ নাগাদ তার সব কয়লা পাওয়ার প্ল্যান্ট বন্ধ করে দিবে পরিবেশ দূষণ কমানোর জন্য। কানাডা এই লাক্সারী afford করতে পারে কিন্তু আমরা না। আমরা রিনিউয়াবেল এনার্জির দিকে ঝুঁকতেছি আমাদের আর কোন উপায় নাই তাই। আর রিনিউয়াবেল এনার্জির প্রোডাকশন cost বেশী, সেটা মানতেই হবে। তবে রিনিউয়াবেল এনার্জি আর নন-রিনিউয়াবেল এনার্জির মধ্যে cost ব্যালান্স করতে হবে ট্যাক্স ক্রেডিটের মাধ্যমে যেটা জার্মানি, কানাডা করছে, আমার জানা মতে।
ডিরেগুলেশন করলে সিনারিও কেমন হবে বলে ভাবছেন?
হিমু ভাই, নাইস পয়েন্ট ! ডিরেগুলেড মার্কেটের সবচেয়ে বড় গুন হল, মার্কেট নিজেই তখন ডাইনামিক হয়ে যায়। সেই মার্কেটে বিদ্যুৎ-এর দাম, উৎপাদন সব কিছু মার্কেটের ডিমান্ড ঠিক করে, সরকার শুধু কিছু রুল সেট করে দেয়, যাতে করে মার্কেটে যাই হোক না কেন জনগণের স্বার্থ যেন কোন সময় ক্ষুণ্ণ না হয়। এতে করে অনেক কোম্পানি মার্কেটে চলে আসে, তারা নিজ গরযে উৎপাদন ঠিক রাখে, সরকার শুধু মার্কেট মনিটর করে। কিন্তু এখন সরকার কোম্পানির সাথে যে চুক্তি করে তাতে করে, উৎপাদনের দায়ভার সরকারেরও থেকে যায়। নর্থ আমেরিকার সমস্ত বিদ্যুৎ-এর মার্কেট ডিরেগুলেড এতে করে কোম্পানি গুলাও খুশি আবার জনগণও খুশি। ডিরেগুলেড মার্কেটের টেকনিক্যাল টার্মগুলা avoid করলাম, সহজে বোঝার জন্য।
আইডিয়াটা ভালই। তবে পরে না আবার আমাদের কম্পিউটার মার্কেটের মত হয়ে যায়। ইচ্ছা হইলে দাম বাড়ায়, ইচ্ছা হইলে কমায়
বাংলাদেশে ট্রানসপোর্ট, টেলিকম, মিডিয়া এমন অনেক সেক্টর আছে যেগুলো মোটামুটি ডিরেগুলেটেড বলা যায়। সেখানে কি oligopoly ঠেকানো গেছে? ডিরেগুলেটেড মার্কেটে বৃহৎ পুঁজির কাছে ক্ষুদ্র পুঁজি মার খেয়ে শেষমেশ তার চেহারা কেমন monopolistic হয়ে যায় তার উদাহরণ দুনিয়াজোড়া আছে। অমন ব্যবস্থায় রেগুলেটরী বডি হরহামেশা কোম্পানীগুলোর কাছে সেরদরে বিক্রি হয়ে গণবিরোধী সব পদক্ষেপ নেয়। বিদ্যুতের বাজার ডিরেগুলেটেড করলে প্রডাকশনের বাইরে কোম্পানীগুলোকে ট্রানসমিশন আর ডিস্ট্রিবিউশন-এরও প্যারালাল সিস্টেম তৈরি করতে হবে। এতে তাদের উৎপাদিত বিদ্যুতের বাজারমূল্য কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করেন?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
পাণ্ডব দা ......
..... এইখানে রেগুলেটরী বডি যদি বিক্রি হয়ে যায় তাইলে ব্যাপারটা কেমন দাঁড়াবে সেটা বলতে পারব না। তবে মার্কেট নিজেই ডাইনামিক থাকার কারণে একটা অসৎ সিধান্ত অন্য উৎপাদককে আহত করবে, তাই large scale -এ দুর্নীতি করার সুযোগ কম।
না নতুন করে প্যারালাল সিস্টেম তৈরি করতে হবে না, Expand করা লাগতে পারে। অন্য উৎপাদক বর্তমান সিস্টেম ব্যবহার করবে আর তার জন্য তাকে বর্তমান সিস্টেমের মালিককে পয়সা দিতে হবে। কেউ যদি নতুন কোন ট্রানসমিশন আর ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম তৈরি করে কোন অঞ্চলে তাইলে সবাই তার সিস্টেম ব্যবহার করবে, সেই অঞ্চলে। আর তার জন্য অন্য সবাই তাকে পয়সা দিবে । এইভাবেই বিদ্যুতের ডিরেগুলেড মার্কেট চলে, যেখানে ডিরেগুলেড মার্কেট আছে। কিন্তু মনোপলি হবার সুযোগ কই ?? আপনার এই পয়েন্টটা আমি ধরতে পারি নাই ।
ডিরেগুলেটেড মার্কেটে ট্রানসমিশন আর ডিস্ট্রিবিউশনে প্যারালাল সিস্টেম তৈরি না করলে সব তো ঐ পিডিবি'র ফানেলে গিয়ে ঠেকবে। বর্তমানে টেলিকম সেক্টরে এমন কিছু ফানেল আছে। খাম্বাওয়ালা যদি বলে, "আমারে ইউনিট প্রতি দুই ট্যাকা দেও" - তাহলে উৎপাদক কোথায় যাবে? সে তো আর তার প্রডাকশন ফেরি করতে পারবে না।
ডিরেগুলেটেড মার্কেট কী করে মনোপলিস্টিক মার্কেটে পরিণত হতে পারে সেটা আমার আগের মন্তব্যেই বলেছি। বিদ্যুৎ দশ-বিশ কোটি টাকার ব্যবসা নয়, বরং বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা। এই মার্কেটে যে মিলিয়ন ডলার নিয়ে নামবে অচিরেই সে বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগের কাছে মার খেতে থাকবে। বিলিওনারদের অঘোষিত গিল্ড রেগুলেটরি বডিকে দিয়ে এমন সব বিধান করবে যে মিলিওনাররা পথে বসবে। তখন আমরণ অনশন করেও ঐ সিদ্ধান্ত পালটানো যাবে না। বাংলাদেশে পোল্ট্রি শিল্পে এর মর্মান্তিক উদাহরণ আছে।
আপনি নিজেই পোস্ট দেবেন বলেছেন। অপেক্ষায় আছি। আশা করি সেখানেও ইন্টারেস্টিং আলোচনার সুযোগ থাকবে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ডিরেগুলেটেড হলে কি কুইক রেন্টালের প্রয়োজন আছে? সেদিক থেকে ভাবলে?
বিদ্যুতের রেগুলেটেড মার্কেটের সমস্যাটা ঠিক "উৎপাদনের দায়ভার" নিয়ে নয়, বরং দ্রুত একটা অপ্টিমাল সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনীহা।
ডিরেগুলেটেড মার্কেটে বড় কোম্পানি মার্কেটে চলে এলেই কি সব সমাধান হয়ে যাবে? কয়েকটা প্রশ্নের উত্তর ভাবুন।
১. উৎপাদক কোম্পানির ঝোঁক থাকবে গ্যাসভিত্তিক প্ল্যান্ট করার। আমাদের কি সেই চাহিদা মেটানোর মতো গ্যাস আছে?
২. তেলভিত্তিক প্ল্যান্ট করা হলে সেখানে তেল সরবরাহের কাজটা সরকারী প্রতিষ্ঠানের ঘাড়ে গিয়ে পড়বে। এর দাম কি টাকায় পরিশোধ করা হবে, না ডলারে? টাকায় করা হলে বাড়তি তেল আমদানির কারণে ডলারের দাম বেড়ে যাবে, যার চূড়ান্ত ফলাফল মূল্যস্ফীতি।
হিমু ভাই, সরকার এইখানে রেগুলেটরি বডির ভূমিকা পালন করবে । সরকার বলে দিবে রিনিউয়াবেল এনার্জি সোর্সের কথা। কোন ফসিল ফুয়েল প্ল্যান্ট এনকারেজ করবে না। সাথে সাথে রিনিউয়াবেল এনার্জি প্রোডাকশন ট্যাক্স বেনিফিটও পাবে। কারণ যারা উৎপাদন করবে তাদেরকেও লাভের মুখ দেখতে হবে। কিন্তু সরকার বিশাল স্কেলে ভর্তুকি দিয়ে, কতদিন এই বিদ্যুৎ খাত চলাতে পারবে এইভাবে, বলেন ? আমি চেষ্টা করব একটা ডিটেলস পোস্ট দেবার এই বিষয়ের উপর। তাইলে পুরা ব্যাপারটা বোঝানো সহজ হবে।
লিখে ফেলুন, আপনার পোস্টটা ইন্টারেস্টিং হবে মনে হচ্ছে।
ডিরেগুলেটেড মার্কেট মনোপলির দিকে যায়। ডিরেগুলেটেড মার্কেট ভাল যতক্ষণ পর্যন্ত তা "নিত্যপ্রয়োজনীয়" সামগ্রীতে হাত না দেয়। কম্পিউটার বা কসমেটিক্সের জন্য ভাল, বিদ্যুতের জন্য মনে হয় না।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
আমারো এরকমই মনে হয়।
ঐতিহাসিকভাবেই আমরা ভোক্তাপ্রধান দেশ। আমরা ভোগের জন্য যতটা আছি উৎপাদনে তার ধারেকাছেও নাই। আর সেই ভোগের যোগানদার 'মধ্যমিয়া'দের জন্য বাংলাদেশটা একটা স্বর্গ বিশেষ।
বাংলাদেশে (এমনকি বাকী বিশ্বেও)ভবিষ্যতের সবচেয়ে অনিশ্চয়তার বিষয় হলো শক্তি। তেল গ্যাস কয়লা সবকিছুর গুদাম এই শতকের মাঝামাঝিতেই খালি হয়ে যাবে। সুতরাং সৌর শক্তির মতো নবায়নযোগ্য শক্তির চাহিদা বাড়বেই। যে কোন নতুন প্রযুক্তি শুরুতে উচ্চমূল্যে বিক্রি হয়, বাজার ছোট, উৎপাদমূল্য বেশি থাকে বলে। সেই সময় মাঠে সক্রিয় খেলোয়াড়গণ এখান থেকে মোটা দাগে আয় করতে পারে। দাম পড়ে গেলে খেলার মজা নাই। সৌরশক্তি নিয়ে ব্যবসায়ও একই চিত্র দেখা যাচ্ছে।
কিন্তু এদেশের দুর্ভাগ্য যে এখানে উৎপাদনমূখী প্রতিষ্ঠানের চেয়ে বাজারজাতকরন প্রতিষ্ঠানের দাপট বেশী। আমার ধারণা গ্রামীন বা ব্র্যাকের মতো প্রতিষ্ঠানের সুযোগ আছে সৌরপ্যানেল তৈরী করার প্রতিষ্ঠানে পরিণত হওয়ার। সেই পথে হাঁটার কোন পরিকল্পনা তাদের আছে কিনা জানি না। যদি কেবল বাজারজাতকরনের কাজ করে টাকার গুদাম ভারী করার পরিকল্পনার মধ্যেই তাদের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ থাকে, তবে এখানে সুখবর নেই।
প্রসঙ্গক্রমে বলি, চীন ২০০৮ সালে বিশ্বের সৌরপ্যানেলের ৮ শতাংশ তৈরী করতো, বর্তমানে সেটা ৫৫% এর বেশী। অর্থাৎ ওরা এই প্রযুক্তির ভোক্তা হবার বদলে উৎপাদকে পরিণত হয়েছে।
এখন আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আমরা কি ভোক্তাই থেকে যাবো নাকি প্রযুক্তির উৎপাদক হবার চিন্তাভাবনা করবো।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
চীনের উদাহরণটা আসলেও উৎসাহব্যাঞ্জক।
কয়লা আর প্রাকৃতিকগ্যাসের মজুদ কি একই কথা বলে, বিশেষকরে আমেরিকার বর্তমান প্রাকৃতিক ও শেল গ্যাসকে আমলে নিলে?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তথ্যবহুল পোস্টটির জন্য অনেক ধন্যবাদ। পোস্ট থেকে এবং মন্তব্যগুলো থেকে অনেক কিছুই জানতে পারলাম।
বিষয়টা এত পরিস্কার ভাবে জানা ছিলনা। এখন অনেক কিছু বুঝতে পারছি মনে হচ্ছে।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
খুবই গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট আর মন্তব্যগুলো। আলোচনা চলুক। আলোচনায় অংশ নিতে না পারলেও আলোচনায় আছি দর্ষক হিসেব।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
তার উপর সৌরপ্যানেল একটা হ্যাজার্ডাস ম্যাটেরিয়াল।
দেশীয় প্রযুক্তিতে ফুয়েল সেল বা উইন্ড টারবাইন তৈরি করার পিছনে এর কিয়দাংশ অর্থ ব্যয় করলেই ভালো সমাধান পেয়ে যেতাম আমরা। অবশ্য তখন মনে হয় ধান্দাবাজি এত জমতো না।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
কোনোমতে গছিয়ে দিতে পারলেই হয়। গাও-গ্যারামে প্যানেল, ব্যাটারি এইসব ডাম্পিংয়ের আর ঝামেলা কি?
স্পর্শ, ফুয়েল সেল নিয়ে একটা পোস্ট দাও। এই ব্যাপারটা নিয়ে কোন আলোচনাই হয় না।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
@ ষষ্ঠ পাণ্ডব (১৮)
আমার বাসার একটি (আসলে এক জোড়া) আইপিএস ব্যাটারি অন্ততঃ পক্ষে ছয় বছর এক নাগাড়ে চলছে। বেশীর ক্ষেত্রেই এটা সত্যি নয় - তা ও জানি। কিন্তু রহস্যটা কোথায়, বুঝতে পারি না।
লেখাটার শিরোনাম পড়েই অবাক হয়ে গিয়েছিলাম! আমি নিজেও ভাবতাম সৌরপ্যানেল দিয়ে বর্তমান বিদ্যুৎ চাহিদা পুরণ করা যাবে অনেকাংশেই। কিন্তু পরিসংখ্যান যে কী ভয়ানক চিত্র এঁকে দিল!
সৌরবিদ্যুৎ আখেরে অস্থায়ী বন্দোবস্ত-ই!
মিনহাজ.রাতুল
অনেক কিছু জানতে পারলাম।
আঃ হাকিম চাকলাদার
নতুন মন্তব্য করুন