ধন নয় মান নয় এতটুকু বাসা, করেছিনু আশা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
শুরু করবো একদম ছোট্ট-কুট্টি পিঁপড়া থেকে। লাউয়াছড়া জঙ্গলে ঘুরতে ঘুরতে এই বিস্ময়কর বাসাটা দেখতে পাই। কী সুন্দর গাছের পাতাগুলোকে মুড়ে বাসা বানিয়েছে তারা। দেখলে মনে হয় যেন একটা সবুজ ফুল। সাধারণত পিঁপড়াদের কলোনী একটু বড় হয়। সে তুলনায় বাড়িটা ছোট্ট মনে হল। কিন্তু দেখতে কী দারুণ!
তবে আরো দক্ষ হাতে বাড়ি বানায় মাকড়শা। নীচের ছবিতে যাকে দেখতে পাচ্ছেন সে হল Multi-Coloured Argiope (Argiope versicolor) তাঁর বাসাটা একটু অদ্ভুত। জালের বুননে একটা ক্রস চিহ্ন (x) দেখতে পাচ্ছ নিশ্চয়, বাসার মধ্যে সে তার ঠ্যাংগুলোকে গুটিয়ে এরকম ক্রস আকারে বসে থাকে।
বর্ষার শুরুতেই ব্যাঙের দল যে কোরাস গাওয়া শুরু করে অন্য সময় তারা থাকে কোথায়? বিশেষ করে শীতকালে? তখন তো ব্যাঙের দেখা পাওয়া মুশকিল! মাটিতে গর্ত করে থাকে তারা, কিংবা ইটের ফাঁক-ফোকড়ে। নিজেরা বাসা বানায় না (দু-একটা ব্যতিক্রম বাদে), কোন রকমে তাই মাথা গুঁজতে পারলেই হল।
কাঠ-শালিক (Chestnut tailed Starling, Sturnia malabarica) মূলত গাছের গর্তে, ফোকরে বাসা বাঁধে। নিজেরা গর্ত করে, কখনো কখনো কাঠ-ঠোকরার পরিত্যক্ত গর্তেও সংসার পাতে।
ফিঙে পাখির (Black Drongo, Dicrurus macrocercus) বাসা দেখতে অনেকটা U আকারের হয়। গাছের উপরের দিকে Y আতবে এদেরকে ইলেক্ট্রিকের খুঁটি, টিভির অ্যান্টেনাতেও বাসা বাঁধতেও দেখা যায়।
ফিঙে হল এক নম্বরের ঝগড়াটে পাখি। এদের মারকুটে স্বভাবের জন্য অনেক শিকারী পাখিও সমঝে চলে। ছানারা বাসায় থাকলে কারো সাধ্যি নেই সেই বাড়ির ধারে-কাছে ঘেঁষার। এজন্য অনেক সময় ছোট, নিরীহ পখি যেমন- বুলবুলি, ছাতারে এদের ধারে কাছে বাসা বুনে। ফিঙে পাখির প্রতিবেশী হওয়ার এই এক সুবিধা। সহজে কেউ ঘাঁটাবে না।
দাঁড়কাকের (Large-billed crow, Corvus macrorhynchos ) বাসা খুব অগোছালো থাকে। গৃহকাজে একদম মন নেই তার। খড়কুটো-পাতা, চুলের ফিতা, কাপড়ের টুকরো সব একজায়গায় কোনমতে জড় করে বাসা বানায় এরা। ছানাগুলো এর মাঝেই বেড়ে উঠে। তারপর ডানা মেলে উড়ে যায় পিছুটান ফেলে। একলা বাসাটা রোদে পুড়ে, জলে ভিজে একাকার হয়ে যায়।
আমরা যে হারে গাছপালা কেটে সাফ করছি, উজাড় করে ফেলছি বন-জ়ঙ্গল, তাতে পশু-পাখির বাসা বানানোর জায়গা যাচ্ছে ফুরিয়ে। অপরিকল্পিত নগরায়ন ও বৃক্ষনিধনের ঠেলায় অচিরেই হারিয়ে যাবে জীব-বৈচিত্র। পশুপাখির আবাসভূমি বলতে টিকে থাকবে মিরপুর চিড়িয়াখানা। আমি নিরাশাবাদী নই, কিন্তু বছর দুয়েক আগে মধুপুর জঙ্গলে গিয়ে দেখি শালবন বলতে কিছুই আর টিকে নেই। মুখপোড়া হনুমানের (Capped Langur) সংখ্যা কমতে কমতে প্রায় শূন্যের কোঠায়। তারাও খাবারের অভবে ধুঁকছে। বড় ডালপালার গাছ নেই। চরে বেড়ানোর জায়গা নেই। এক শীতের সকালে এমনি এক দৃশ্য দেখলাম।
মা হনুমান খাওয়া খুঁজছে। কোলে তার বাচ্চা। বাচ্চাটা ওখানেই খায়, ঘুমায়। কোল থেকে কিছুতেই নামে না। বোকা ছেলে ভেবেছে মায়ের বুকে মুখ গুঁজে কাটবে সুখের জীবন। জানে না এখনো -
যে বাস্তুহারা, সে মায়ের বুকেও নিরাপদ নয়।
মন্তব্য
দিব্যি ছবি সব কিন্তু এইভাবে বেচারাদের প্রাইভেসি ভাঙলেন?
ধন্যবাদ। প্রাইভেসি ভাঙ্গার জন্য আশা করি ওরা আমাকে ক্ষমা করে দিবে।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
অসাধারণ ছবিগুলোর জন্য
উৎসাহ দেওয়ার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
চমৎকার সব ছবি আর সে সাথে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা। অসাধারণ লাগলো।
------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।
ধন্যবাদ পাগল মন ভাই।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
ধন্যবাদ।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
অদ্ভুত সুন্দর !
ফিঙের ছবিটার ফ্রেমিং কী সুন্দর!
ধন্যবাদ ভাইজান। আমার কৃতিত্ব কম। প্রকৃতি নিজেই মেলে দেয় রূপ।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
আপনার লেখার এই স্টাইলটা খুবই ভাল লাগে। শেষ লাইনে এসে আরও একবার ভাল লাগলো। কাটাকুটি মাকড়সাকে দেখেছিলাম একদিন নন্দন কাননে
আরে সাফি ভাই! আপনার পোস্টটা খুব ভালো লেগেছে। আমার বাসা মিরপুরের কাছেই। নন্দন কাননে প্রায়ই যাওয়া হত।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
কী সুন্দর!!!
ধন্যবাদ। আপনার ব্লগের নিকটা দারুণ!
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
ধন্যবাদ আপা
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
ছবি এবং লেখা খুবই চমৎকার। ধন্যবাদ।
অসাধারণ
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ধন্যবাদ।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
ছবিগুলা এ্যাকশান হইছে...
হে হে ধৈবতদা। ধন্যবাদ।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
দুর্দান্ত!
love the life you live. live the life you love.
ধন্যবাদ।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
ধন্যবাদ।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
৫
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
ইয়াহু! আমি ৫ পাইছি!
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
দুর্দান্ত।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ধন্যবাদ তাসনীম ভাই।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
দুর্দান্ত! আইডিয়া, লেখা, ছবি তিনটাই।
ধন্যবাদ রানা ভাই। তিনটা আলাদা
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
ছবিগুলো মায়া লাগাইছে! দারুণ একটা পোষ্ট আচ্ছা, আপনি একটা সিরিজ লেখছিলেন ফটোগ্রাফির উপরে। একটা পর্ব দিয়েছিলেন, সুমী আপুর কথায় হাসতে হাসতে ওটা লেখার কথা কী ভুলেই গেলেন? নাকি দিযেছেন আমারই চোখ এড়িয়ে গেছে? তেমন হলে সরি। নইলে সরি ফেরৎ সহ পরের পর্ব জলদি দেন।
আরে আয়নামতি ভাই! সুমী আপু না, সিমি আপু। আমার অতি আদরের বোন। আমি যখন স্কুলে পড়তাম তখন একটা লিটল ম্যাগাজিন বের করতাম। সিমি আপু ঐটার কথা মনে করিয়ে দিয়েছিল।
উৎসাহ দেওয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। সরিসহ তাড়াতাড়ি পরের পর্ব দিব।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
অসাধারণ! সত্যি মুগ্ধ হয়েছি ছবিগুলো দেখে।
অনেক
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
ডুপ্লি ঘ্যাচাং
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
ঘর- চেনা হয়নি আমার...
সুন্দর হইসে ছবিগুলা। অবশ্য আপনি সুন্দর সুন্দর ছবিই তোলেন।
আমার নিজের ঘরই রয়ে গেছে অচেনা! আপনাকে ধন্যবাদ। আর গাছপালা, পশুপাখি এমনিতেই সুন্দর। আমার কৃতিত্ব কম।
কিন্তু দেখেন মানুষ খালি নিজের বাসা নিয়েই চিন্তা করে। বন জঙ্গল উজাড় হচ্ছে দ্রুত।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
লেখা, ছবি সবকিছুতেই মুগ্ধতা।
আফসোস, তারা দাগাবার ক্ষমতা নেই।
সুপ্রিয় দেব শান্ত
ধন্যবাদ। "তারা" দাগানোর দরকার নেই। আপনারা মন্তব্যে ভালো লাগার কথা জানান। এটাই অনেক বড় পাওয়া।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
সুপার হৈছে
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
অনেক ধন্যবাদ অনিন্দ্য ভাই।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
আমি আগে থেকেই আপনের ফ্যান
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আপনার মত ফ্যান পায়া আমার আহ্লাদের সীমা নাই।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
আপনার তোলা ছবি সম্পর্কে নতুন করে আর বলার কিছু নেই। জাস্ট
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
অনেক ধন্যবাদ রাতঃস্মরণীয় ভাই
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
আপনার প্রতিমন্তব্য তো সব লাফিয়ে-ঝাঁপিয়ে একশা!
আর বইলেন না...মহা যন্ত্রণা
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
খাসা লেখা। ছবির ব্যাপারে মন্তব্য নাই। কয়েকবার করে ঢুকেও ছবি দেখতে পারলাম না, কাটাকাটা আসতেছে। নেট স্লো। তয় কাটাকুটি মাকড়সার ছবি দেখছি। দুর্দান্ত!
ধন্যবাদ। সময় পেলে আরেকবার ঢুঁ দিয়েন। আশা করি মজা পাবেন।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
কী দুর্দান্ত ছবি সব!
বড় বড় এই পিঁপড়াগুলোকে আমরা বলি আমপিঁপড়া।
আমাদের পেয়ারা, আম গাছে এতো বাসা বাঁধতো, গাছের কাছে যাওয়া যেতোনা।
বাধ্য হয়ে ভেঙে ফেলতে হতো। এখনও বোধহয় তাই হয়
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
অনেক ধন্যবাদ। আমাদের বাসার পাশে আমগাছেও এমন কিছু লাল পিঁপড়া ছিল। তবে ছবির প্রজাতিটা সনাক্ত করতে পারি নাই।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
অসাধারন একটা পোস্ট।
খুব বেশি সত্যি কথা।
ধন্যবাদ রু। আপনি নিয়মিত আমার পোস্ট পড়েন দেখে ভালো লাগলো।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
এহ! আমি আপনার ভাত মেরে দেবার জন্যে কত কষ্ট করে পিঁপড়া আর মাকড়সার খানকতক ছবি তুললাম! আপ্নে তাও আগেই পোস্ট দিয়ে দিলেন! ধুর মিয়া! কষে পাঁচ!!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
যাযাপু, প্লিজ ভাত মেরে দিন। কথা শুনে ছবিগুলো দেখার ইচ্ছা হচ্ছে খুব!
পাঁচের জন্য
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
এই রকম এক জোড়া কাঠ শালিক আমার ঘরের গা ঘেঁষে যে গাছটা, তাতে বাসা বানিয়েছিল। এভাবেই গাছের কোঠর থেকে মাথা বের করত। আসলে প্রথমে বাসাটা বাসাটা বানিয়েছিল একজোড়া রঙ্গিন কাঠ-্ঠোকরা। ওরা আসত, কোঠরে ঢুকে মাথা বের করত।ঠক ঠক করে গাছে ঠোকড়াতো। কয়েক দিন পরে দেখি কাঠ শালিকে্রা আসতে শুরু করেছে আর কাঠ-ঠোকরাদের আনাগোনা কম। দুদিন পরে দেখি একদম লা পাত্তা। হয়ত বাড়িটা কাঠ শালিকদের কাছে বেচে দিয়েছে। অথবা ভাড়াও দিতে। পাখিদের ব্যাপার স্যাপার আমরা আর কতটুকুই বা বুঝি?
বাহ! দারুণ গল্প তো।
অনেক সময় এক পাখির পরিত্যক্ত বাসায় অন্য পাখিরা বাসা করে।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
অসাধারন ছবি+পোস্টে
নতুন মন্তব্য করুন