লাল বাহাদুর শাস্ত্রী

ফাহিম হাসান এর ছবি
লিখেছেন ফাহিম হাসান (তারিখ: শুক্র, ২৯/০৭/২০১১ - ৪:০৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ইতিহাসে অনার্স পাশ করে টানা দুইবছর ধরে বেকার ছিলাম। শখানেক দরখাস্ত ফেলেও লাভ হয়নি। শেষ পর্যন্ত অনেক ধরাধরি করে একটা ফার্নিচার কোম্পানিতে কেরানীর কাজ জোগাড় করলাম। দায়িত্ব হল কাঠের সাপ্লাইয়ের হিসাব রাখা। পোস্টিং একদমই অজানা-অচেনা এক গ্রামে। বেঈমান শহুরে জীবনের পাছায় লাথি মেরে চলে আসলাম।

গ্রামের নাম কদমগাছি। কিন্তু কোন কদম গাছ নাই। চারিদিকে শুধু শাল-সেগুন-মেহগনি। একদম জঙ্গুলে জায়গা। মাইলখানেক দূরের বাজারে অল্প কিছু দোকান-পাট। অফিসটা মূলত একটা পরিত্যক্ত রেস্ট হাউসকে সংস্কার করে বানানো। চুপচাপ। সুনসান। ভূতের গল্প লেখার জন্য আদর্শ। তবে ইলেকট্রিসিটি আছে। চোরাই লাইন। মালিক ঘুষ দিয়ে নিয়েছেন করাতকল বসানোর জন্য।

অফিসে আমিসহ মোটে পাঁচজন লোক। আমাদের দারোয়ান রান্নাবান্নার কাজ পারে।কাজের তেমন কোন চাপ নেই। দিনভর আড্ডা আর কার্ড খেলা। রাতে ভিসিআরে ছবি দেখা বা ঘুম। আগে জানলে কিছু বই নিয়ে আসা যেত। একটাই সমস্যা – বাথরুম। উন্মুক্ত আকাশের নীচে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে হয়। আর দশজন দার্শনিকের মত আমিও জীবন সংক্রান্ত যাবতীয় চিন্তা এই সময়েই করি। বলাই বাহুল্য, মানবজন্মের সার্থকতা কোষ্ঠকাঠিন্যের ব্যস্তানুপাতিক।

এরকমই একদিন হয়ে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিচ্ছি। হঠাৎ মনে হল আমার উপর কেউ নজর রাখছে। কেমন অদ্ভুত একটা অনুভূতি। কে দেখবে? এখানে আছেই বা কে? উপরে চাইতেই দেখি একটা বুড়ো লোক দেওয়ালের উপর দিয়ে সরাসরি আমার দিকে তাকিয়ে আছে। ভয়ে চিৎকার করে উঠলাম এবং তৎক্ষনাৎ টের পেলাম ওটা কোন মানুষের মুখ নয়। স্রেফ একটা বানর।

বানর? মানে সেই স্তন্যপায়ী-শাখামৃগ যাকে ডকিন্স খুড়ো আমাদের দূর সম্পর্কের আত্মীয় বলে দাবী করেন? চিড়িয়াখানায় তাদের সাথে একবার সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়েছিল কিন্তু এখানে, এভাবে, এই সময়ে তাদের কোন সদস্য আমার উপর নজরদারি করবে তা বিশ্বাস করা শক্ত। পরে দারোয়ান জানালো এখানে বানরের উৎপাত একরকম লেগেই আছে। আমাদের অফিসের আশেপাশে যে ঝাঁকড়া মতন গাছগুলো আছে, সেগুলোই তাদের নিবাস।

ব্যাপারটা খুব ইন্টারেস্টিং লাগলো। গরু-ছাগল ছাড়া কোন প্রাণীকে এত কাছ থেকে দেখিনি। বানরগুলোর ভয়ডর নেই। সরসর করে ওরা গাছ থেকে নেমে আসে, ইতিউতি চায়, মওকা মতন কিছু পেলে আবার তরতর করে ফিরে যায়। কয়েকদিনের মাঝেই পারস্পরিক চেনাজানা হয়ে গেল। লক্ষ্য করলাম ওদের পালের গোদা, ভদ্র ভাষায় যাকে আলফা মেইল বলা হয়, বেশ ভারিক্কি চালে অফিসের চারপাশে টহল দেয়। সহজেই তাকে চেনা যায় - হোতকা মতন দেহ আর চোখে পড়ার মতন বিশাল, লাল পাছা। যত রকমের দুর্ধর্ষ অভিযানের সে-ই নেতা।

একে তার পশ্চাদ্দেশের লালিমা, অদম্য সাহসিকতা, তার উপর ফাইনাল ইয়ারে স্বাধীন ভারতবর্ষের পেপারে আমার কম নাম্বার। সবমিলিয়ে তার নাম রেখে দিলাম লাল বাহাদুর শাস্ত্রী। সংক্ষেপে লাল।

লাল ছিল সত্যিই এক বীর-বাহাদুর ব্যাটা। ঝুঁকিপূর্ণ সব ডাকাতি অভিযান সে পরিচালনা করত। ফাঁক পেলেই তছনছ করে দিত অফিস ঘর। রান্নাঘরে হানা দিত খাদ্য,অখাদ্য সব হাতিয়ে নেওয়ার আশায়। অন্য গোত্রের কাউকে দেখলেই তেড়ে যেত, ভয় দেখাত। ওদিকে আবার শিভালরির কমতি নেই। দলের সুন্দরী তরুণীদের প্রতি সদা প্রখর দৃষ্টি। তার চোখ এড়িয়ে অন্য কোন জোয়ান-যুবার সাধ্য নেই প্রেম করার। তরুণীরাও লাল বাহাদুরের বিশেষ অনুরাগী ছিল। লাল পশ্চাতের এমনই মহিমা! রতিকুশল লাল বাহাদুরের হারেম আগলে রাখা দেখে ঈর্ষা জাগত মনে। সত্যি বলতে তার বিচিত্র কাজকারবার দেখেই দিব্যি সময় কাটিয়ে দিতাম।

একমাস পরে দূরবাসের সবকিছু সয়ে গেল। তবে গলির ক্রিকেট খেলাটা খুব মিস করতাম। তাই বাজার থেকে একটা ব্যাট কিনে, একটা গাছের গুঁড়িতে স্ট্যাম্প এঁকে নিলাম। হইহই করে ক্রিকেট খেলা চলল। দারোয়ান বয়স্ক মানুষ, শরীর ভারী হয়ে গিয়েছে, খেলতে চায় না, তাই তাকে বানানো হল আম্পায়ার।

খেলার ব্যাপারে আমি একটু ইয়ে। বন্ধুরা বলে খাইষ্টা কিসিমের। যেহেতু ব্যাট আমার পয়সায় কেনা, সবসময় আগে ব্যাটিং নিতাম। বোলিং এর সময় ভর করত রাজ্যের আলস্য। ফিল্ডিং করতে একদমই ইচ্ছা করত না তাই পারতপক্ষে আমি আউট হতে চাইতাম না। আমাকে হালাল উপায়ে আউট করার একটাই তরিকা ছিল - ক্যাচ। কী এল.বি.ডাব্লিউ, কী বোল্ড, বোলার চিৎকার করুক, আম্পায়ার কসম কাটুক, আমি ব্যাট আঁকড়ে নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থাকতাম। ভাগ্যিস ক্রিকেটে লাল কার্ড নাই!

কয়েকদিনের মধ্যেই খেলোয়াড় সংখ্যা বাড়ল। স্থানীয় চার-পাঁচজন ছাত্র যোগ হল। সেই সাথে বাড়ল দর্শকও। লাল বাহাদুর তার দলবলসহ বৈকালিক টহল মূলতবী রেখে আমাদের খেলা দেখত। আমার সন্দেহ হত সে খেলাটা বেশ ভালোই বোঝে কারণ আমি আউট হলেই তার যত উল্লাস।

এভাবে প্রায় বছর দুয়েক পার করলাম। কর্তৃপক্ষ আমার গুণে মুগ্ধ হয়ে কাছের এক ভদ্র গোছের মফস্বলে পোস্টিং দিল। কদমগাছি ছেড়ে সেই যে আসলাম এরপর আর কারো সাথে যোগাযোগ করা হয়ে উঠে না। ফেলে আসা আলস্যের দিনগুলির কথা চিন্তা করে প্রায়ই মন উদাস হত। প্রায়ই ভাবতাম সময় পেলে ঘুরে আসব, আগের মত হুল্লোড় করে ক্রিকেট খেলব, কিন্তু কেন জানি হয়ে উঠত না। সময়ের সাথে সাথে জীবনে জটিলতাও বাড়তে থাকল। ছুটির দিনেও ঘোরাঘু্রির ইচ্ছে হত না, বাসায় বসে ঝিমাতেই ভালো লাগত।

* * * * *

এক শুক্কুরবার সকালে দেরী করে ঘুম থেকে উঠে সবে খবরের কাগজ খুলেছি, এমন সময় বাইরে শুনি বিরাট হই-চই-হল্লা। মফস্বলে উত্তেজনার বিশেষ কিছু পাই না, তাই খোঁজ নিতে গেলাম। কোলাহলের উপবৃত্তে উঁকি মারতেই অবাক হয়ে গেলাম। একটা ধাড়ি বুড়ো বানর খেলা দেখাচ্ছে। পুরুষ্টু লাল পাছা। আরে! এ তো আমার লাল বাহাদুর শাস্ত্রী – লাল, মেরে লাল। পড়ন্ত বয়সেও নানা কসরতে কুড়িয়ে নিচ্ছে বাহবা। খেলা শেষে আবার টাকার জন্য হাত পাতল সবার কাছে। একটা চকচকে পাঁচ টাকার নোট বাড়িয়ে দিলাম। নিল না। আমাকে দেখে কেমন দাঁত খিঁচিয়ে তেড়ে এল। ভয়ে পিছিয়ে আসলাম। কামড়ে দিবে নাকি?

নাহ। তবে মুখটা চোখা করে, আমাকে আমূলে চমকে দিয়ে, আম্পায়ার বিলি বাওডেনের মত তর্জনী উঁচিয়ে নীরবে ঘোষণা দিল – আউট!

খুশি মনে মেনে নিলাম। আউট হয়ে এত আনন্দ এর আগে কখনো পাই নাই।

----------------------------------------------------------------

বি দ্র: লাল বাহাদুর শাস্ত্রী বা বিলি বাওডেনের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রকাশ লেখকের উদ্দেশ্য না।

* মধুপুর জঙ্গলে একবার বিরাট একটা আলফা মেইল বানর দেখেছিলাম। বন বিভাগের বাংলোর কাছেই থাকত। ফরেস্ট অফিসারের কাছে জেনেছি তার দুরন্তপনার গল্প। পরে শুনেছি খাওয়া চুরির অপরাধে তার গায়ে ফুটন্ত পানি ঢেলে দেওয়া হয়। তার কোন ছবি নেই, তবে সম্ভবত ঐ গ্রুপের অন্য এক সদস্যের ছবি পরে তুলেছিলাম।

Rhesus macaque


মন্তব্য

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

পড়ে ভালো লাগল....

ফাহিম হাসান এর ছবি

চট-জলদি মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

শেষ ক'টা লাইন কষ্ট দিল! মানুষ কবে সভ্য হবে!
অনেকগুলো ছবি দেখার আশায় ছিলাম। নিরাশ করলেন।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

ফাহিম হাসান এর ছবি

মধুপুরে জঙ্গল আর নেই বললেই চলে। বন উজাড় করে চাষ চলছে। সামাজিক বনায়নের উদ্যোগে যেসব গছ লাগানো হয়েছে বেশিরভাগই কাঠের গাছ। ফলের গাছ না থাকলে জীবজন্তু খাবে কী? অনেকটা বাধ্য হয়েই চুরি করতে হয়। লোকজনও ধৈর্য ধরতে পারে না। নিসর্গের সাথে সম্পর্ক ক্ষীণ হচ্ছে, পশুপাখির প্রতি মমত্ববোধ কমে আসছে মন খারাপ

এর পরেই ছবি পোস্ট দিব। আশা করি তখন খুশি হবেন।

আশরাফ মাহমুদ এর ছবি

হা হা হা। মজারু লেখা। হাসি

বানর দেখলে আমি প্রথমে যা করি: মানুষের সাথে বানরের পার্থক্য বের করি। এবং প্রতিবারই।

ফাহিম হাসান এর ছবি

ধন্যবাদ।

মানুষের সাথে বানরের মিল ও অমিল - দুটোই বেশ মজার।

সুমন_তুরহান এর ছবি

লেখাটি মজার ছিলো, শেষে এসে মন খারাপ হয়ে গেলো। প্রাইমেটরা অত্যন্ত বুদ্ধিমান, তাদের স্মৃতিশক্তি আর অনুভূতির ক্ষমতাও আমাদের কাছাকাছি। চারপাশের সবকিছুই নিয়েই তাদের কৌতুহলের শেষ নেই। এই কৌতুহল প্রকাশের ক্ষমতা প্রাইমেট আর গ্রেট এইপ'দের মধ্যেই বোধহয় সবচেয়ে বেশি।

ধন্যবাদ সুন্দর লেখার জন্যে। চলুক

ফাহিম হাসান এর ছবি

আপনাকেও ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। সত্যিই প্রাইমেটরা খুব বুদ্ধিমান। আপনাকে অনুরোধ জানাই Jane Goodall এর বই পড়তে। বিশেষ করে Through a Window: 30 years observing the Gombe chimpanzees বইটা।

সুমন_তুরহান এর ছবি

ধন্যবাদ বইটি রেকমেন্ড করার জন্যে, পড়বো। হাসি Jane Goodall - এর কয়েকটি ডকুমেন্টারি দেখেছিলাম বিভিন্ন সময়ে, উনি তো সারা জীবন শিম্পাঞ্জিদের জন্যে ব্যয় করলেন।

রানা মেহের এর ছবি

আমদের পাড়ায় একটা কুকুর ছিল। লাল বাহাদুরের ধারে কাছেও নয় সাহসে। ভীতুস্য ভীতু একটা। একদিন দেখি তার গায়ে শুধু চামড়া। কোন লোম নেই। বুয়া বললো কে নাকি গরম পানি ঢেলে দিয়েছে 'মজা' করে। মানুষের সেন্স অফ হিঊমার এতো উন্নত কেন কে জানে।

বেশি করে ছবি দিয়ে একটা লেখা দিন তো

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

ফাহিম হাসান এর ছবি

অমানুষিক নিষ্ঠুরতা কথাটা আসলে ভুল। মানুষের মত নিষ্ঠুর নির্যাতন, তাও বিনোদনের জন্য, অন্য কোন প্রাণী করে না। চিড়িয়াখানায় তো উত্যক্ত করেই, অনেক সময় পর্যটকরাও বানর দেখলে ঢিল ছুঁড়ে।

এর পরেই ছবি পোস্ট। সত্যি।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

গল্প ভালো লাগছে। কিন্তু বাস্তবতা ভালো লাগে নাই। মানুষ এমন ক্যান! কুত্তার গায়ে ভাতের মার ঢেলে দেয়, বানরের গায়ে দেয় গরম পানি।

ফাহিম হাসান এর ছবি

ধন্যবাদ ভাইয়া। আমিও শুনে খুব কষ্ট পেয়েছিলাম।

তাসনীম এর ছবি

লেখাতে মজা পেলাম। মানুষ বড় নৃশংস প্রানী, এটা প্রায়ই উপলব্ধি করি।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

ফাহিম হাসান এর ছবি

লেখায় মজা পেয়েছেন শুনে ভাল লাগলো। আপনার মত একই উপলব্ধি আমারও।

অপছন্দনীয় এর ছবি

মজা পাওয়ার জন্য বেড়ালকে পিটিয়ে মারা, কুকুরের লেজ কেটে দেয়া, বানরের গলায় দড়ি বেঁধে খেলা দেখানো, প্রতিটা শহরে চিড়িয়াখানা বানিয়ে রাখা এবং সেখানে ঘুরতে যাওয়া এসব না করলে আমরা মানুষ হবো কী করে?

ফাহিম হাসান এর ছবি

কথা তো এইটাই

ফাহিম হাসান এর ছবি

ঘ্যাচাং

পাগল মন এর ছবি

গল্প পড়ে বেশ ভালো লাগল, কিন্তু শেষের প্যারাটা পড়ে মনটা খারাপ হয়ে গেল।

রাজারদেউড়ি নামে একটা জায়গা আছে পুরান ঢাকায়, সেখানে অনেক বানরের উৎপাত ছিল। এজন্য সেখানে ইলেক্ট্রিসিটির তারের ইন্সুলেটরের কোটিং সরায়ে ফেলে কর্তৃপক্ষ। এতে প্রচুর পরিমাণে বানর মারা পরে। এত বানরের মৃত্যু দেখে আবার এলাকার মানুষের মনে দয়ার উদ্রেক হয়, আর কোটিং দেয়া হয়। কিন্তু ততদিনে অনেক বানর মারা গেছে, বানররা অন্য এলাকায় সরে যাচ্ছে। পরবর্তীতে অবশ্য সেখানে বানরের উৎপাত আর আগের মত ছিলনা। আমরা মানুষেরা আসলেই অনেক পাষান, হিংস্র। মন খারাপ

------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।

ফাহিম হাসান এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-
রাজারদেউড়ির ঘটনা শুনি নাই, আপনার কাছ থেকে জেনে খারাপ লাগল।

বন্দনা এর ছবি

"আরে! এ তো আমার লাল বাহাদুর শাস্ত্রী – লাল, মেরে লাল।"হাহাহাহা হাসতে হাসতে শেষ। আর আপনি এত খাইশটা কেন, ক্যাচ ছাড়া আউট হননা। হো হো হো

ফাহিম হাসান এর ছবি

ধন্যবাদ।

ছোটবেলায় যখন গলিতে ক্রিকেট খেলতাম তখন খেলা চলত মোটে দুই-তিন ঘন্টা (বিকালের রোদ যতক্ষণ থাকে)। কিন্তু খেলোয়াড় তো অনেক। তাই একবার আউট হয়ে গেলে ঐ বিকালে আর ব্যাট করা যেত না। যেহেতু দেওয়ালের গায়ে স্ট্যাম্প আঁকা হত, বোল্ড হওয়ার মীমাংসা হত বোলার-আম্পায়ার Vs ব্যাটসম্যানের এর চিল্লাপাল্লার মধ্য দিয়ে। ক্যাচ তো চোখে দেখা যায়, তাই ওটাই সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য আউট হিসেবে বিবেচিত হত।

জহিরুল ইসলাম নাদিম এর ছবি

সুন্দর কাহিনী। লেখাও তরতর করে এগিয়েছে। ধন্যবাদ।
কিছু শব্দের ব্যবহার পর্যালোচনার দাবী রাখে। যেমন পুরাই (পুরোই), আসলাম (এলাম)। ক্রিয়াপদের ব্যবহারে সর্তকতা প্রয়োজন ছিল। যেমন "খেলাটা সে বেশ ভালই বুঝে (বোঝে)"। কোথাও নাই ব্যবহার করা হয়েছে কোথাও নেই। সংরক্ষণ করার আগে শেষ একটা দৃষ্টি দিলেই ঠিক হয়ে যেত।

ফাহিম হাসান এর ছবি

অ-নে-ক, অনেক ধন্যবাদ আপনার ফিডব্যাকের জন্য। চলতি কিছু কথার মিশ্রণ রয়ে গিয়েছিল লেখায়, শুধরে দিলাম। শুধু "আসলাম" শব্দটা আগের মতই রাখলাম।

আশা করি এভাবেই ভুলগুলো ধরিয়ে দিবেন পরের পোস্টগুলোতে। শুভেচ্ছা।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

স্বাভাবিক ভাষামাত্রই সঠিক।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

গুড স্টোরি।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

ফাহিম হাসান এর ছবি

ধন্যবাদ অনিন্দ্য ভাই।

সজল এর ছবি

ভালো হয়েছে। কিন্তু পশ্চাদ্দেশের রঙ দিয়ে নামকরণের আইডিয়া মানব সমাজে প্রচার করা কি ঠিক হলো? চোখ টিপি

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

ফাহিম হাসান এর ছবি

ধন্যবাদ।

ইয়ে, মানে, না, কিন্তু... ইয়ে, মানে...

কৌস্তুভ এর ছবি

গল্প ভালো লাগল। ঘুম কেড়ে নেওয়ার মত ভালো, তা না বললেও, ভালোই। ছবিটাও খাসা।

বলাই বাহুল্য, মানবজন্মের সার্থকতা কোষ্ঠকাঠিন্যের ব্যস্তানুপাতিক।
রতিকুশল লাল বাহাদুরের হারেম আগলে রাখা দেখে ঈর্ষা জাগত মনে।

হাততালি

যেটা বিশেষ করে ভালো লাগল সেটা হল বায়োলজির আইডিয়া বা টার্মগুলোর ব্যবহার। মিথোলজির ঠিক উলটো মেরুর এই জিনিসগুলোও যে গল্পে সমানভাবেই উপজীব্য হতে পারে, তা দেখানোয় আপনার চেষ্টা দেখে মনটা খুশি হয়ে গেল।

লাল পাছা যে প্রজনন-সক্ষমতার প্রদর্শন-সিগনাল, তা জানেন নিশ্চয়ই। এইটা লেখায় ছুঁয়ে গেলে পারতেন।

ধাড়ি বুড়ো বানরের খেলা দেখানোয় যে আপনি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ে ইমোশনের বন্যা আনেন নাই, সেজন্য চলুক

আর সমালোচনা বলতে, 'দ' বা 'বিশাল, লাল পাছা', এগুলো বড় বা বোল্ড না করলেই পারতেন, হঠাৎ করে চোখে লাগে, পড়ার ফ্লো-টা ভেঙে দেয়। তেমন দরকার হলে ইটালিক করে দিতে পারেন, আলাদাও হবে আবার রেড সিগনালের মত লাউড-ও হবেনা।

"একমাস পরে দূরবাসের সবকিছু সয়ে গেল।" এখান থেকে একটা নতুন পরিচ্ছেদও শুরু করতে পারেন হয়ত।

******

আপনি আমার কপিরাইট ভেঙে দুইটা জিনিস ব্যবহার করেছেন। এক, ডকিন্সকে খুড়ো ডাকা, আর দুই, পরিচ্ছেদ ভাঙায় ****** ব্যবহার। ক্ষতিপূরণ চাই।

******

নিন, অনেক সমালোচনা করলাম। পেট ভরেছে?

******

লোকে বানরের গায়ে গরম জল ঢেলে দেওয়ায় আমি বিস্মিত নই। আদিম যুগ থেকে বাসস্থান-খাদ্য-প্রাণধারনের জন্য অজস্র জীবের সাথে যুদ্ধ করেই আমরা বেঁচে রয়েছি। এখন অন্য মানুষের প্রতি আমাদের altruism (এর ভালো বাংলা কী?) এলেও, অন্য জাতির প্রাণীর ক্ষেত্রে, বিশেষ করে তারা আমাদের বিরুদ্ধে গেলে, আমাদের সেই ডিফল্ট মোড-ই চালু হয়ে যায় অবচেতন মনে।

ফাহিম হাসান এর ছবি

প্রথমে একটা বিশাল ধন্যবাদ

লেখার ব্যাপারে একদম ঠিক ধরেছেন। গল্পে বায়োলজি থেকে ধার করেছি অনেক। বায়োলজি পড়তে আমার খুব্বি ভালো লাগে! কিন্তু আমাদের পাঠ্য বইয়ে যতটা সম্ভব নীরস করে এই বিষয়গুলো উপস্থাপন করা হয়।

# দ এর সাইজ ছোট করে দিলাম, বিশাল পাছাকে ইটালিক করে দিলাম ( খাইছে )
# আমি লাল পাছার ব্যাপারটা ওভাবেই শুরুতে আনতে চাচ্ছিলাম, পরে দেখি গল্পটা বেশি বড় হয়ে যাচ্ছিল আর লেখার গতি কমিয়ে দিচ্ছিল। আপনার কথা শুনে দুটো লাইন বাড়তি যোগ করে দিলাম।

এরকম ফিডব্যাক পেলে মন, পেট দুটোই ভরে। আর কপিইরাইট ভাঙ্গার সময় আপনার কথা মনে পড়ছিল। এর ক্ষতিপূরণ দিব বস্টন এলে চোখ টিপি

altrusim এর ভাল বাংলা মাথায় আসছে না। তবে আপনার ব্যাখ্যার সাথে আমি একমত। তবে অনেকেই সচেতন ভাবে পশুপাখিকে কষ্ট দেয়, নির্মম আচরণ করে (উল্টোটাও আছে)। তাদেরকে বোঝানো বড় শক্ত।

কৌস্তুভ এর ছবি

হাসি

পরার্থপরতা-এই স্বল্পপ্রচলিত শব্দটা altruism এর বাংলা হতে পারে বোধহয়।

ফাহিম হাসান এর ছবি

এহ হে, এইটা মাথায় আসে নাই। আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

tanjim এর ছবি

ফাহিম ভাই, এক্কেবারে দ হয়েই পড়লাম......লিখা চাই আরো ঘন ঘন...লিখার ধারও বেড়েছে ,জানিয়ে গেলাম।

ফাহিম হাসান এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ। চেষ্টা করব আরো ঘন ঘন লেখা দিতে।

guesr_writer rajkonya এর ছবি

খুব মজার লেখা। পড়ে খুব ভাল লাগল।

বানরদের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর হল এতটুকু এতটুকু বানরের বাবুগুলো। খুব আদুরে আর মিষ্টি ওদের চেহারা। দেঁতো হাসি কখনো মায়ের লেজের উপর, কখনো মায়ের বুকে ঝুলে থাকে ওরা। আবার গাছের নরম ডালে ঝোলাঝুলিও করে থাকে। পাশেই গম্ভীর মুখে মা বসা :)। আরো আশ্চর্য! ওরা অনেকটা বিড়াল ছানাদের মত আওয়াজ করে।

আমাদের স্কুলের আশেপাশে অনেক বন-জঙ্গল থাকার কারণে প্রায়ই দল বেঁধে ওরা চলে আসে ক্যাম্পাসের ধারে কাছে। তেমনি সেদিন ওরা এসেছিল। সবাই দ্রুত রাস্তা পার হয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু একটা ছোট্ট বাবু বানর উঁচু গাছে বসে মিউ মিউ করছিল। হয়ত আজই প্রথম জঙ্গলের বাইরে এসেছে। ভাব গতিক কিছু বুঝতে পারছে না।

আরেকদিন দেখি, এক বানর গাছ থেকে এক আম নিয়ে রাস্তাটা জোরে পার হচ্ছে। এমন সময় আমার রিক্সাটা চলে এলো। বানর বাবাজি আম ফেলে রাস্তার ওপাশে চলে গেল। আমটা পড়ে রইল এই পারে। আর কেমন ফ্যাল ফ্যাল করে দুঃখী চোখে আমটার দিকে তাকিয়ে রইল। আহারে... আমার ইচ্ছে করছিল আমটা তুলে ওকে দিয়ে দিই। কিন্তু তা কি আর দেওয়া যায়?

ফাহিম হাসান এর ছবি

ধন্যবাদ। ঠিক বলেছেন। বানরের বাচ্চাগুলো খুব কিউট। খুবই আদর লাগে।

তানিম এহসান এর ছবি

খুব ভালো লাগলো ফাহিম ভাই। ছবিযুক্ত পরবর্তী লেখার জন্য অপেক্ষায় রইলাম। শুভেচ্ছা,

ফাহিম হাসান এর ছবি

ধন্যবাদ। চোখ রাখুন সচলের পর্দায়, সাথে থাকুন, পাশে থাকুন, ইইইয়াহহ!

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

বাহ! আমি ভাবলাম ছবি পোস্ট, পরে দেখি গল্প... কিন্তু এইরকমভাবে গল্প লিখতে পারলে আর ক্যাম্নে কী! সুন্দর!

হিংস্রতায় আর নৃশংসতায় মনে হয় মানুষের জুড়ি মেলা ভার প্রাণিজগতে। মানুষের আচরণ নিয়ে সেদিন ওডিনদার একটা ফেসবুকীয় পোস্টে আলাপ হচ্ছিল, তো মনে পড়লো যে মানুষের আসলে বুদ্ধি আর হিংস্রতা ছাড়া অন্য কোন ফিজিকাল ডিফেন্স মেকানিজম নেই অন্য প্রাণীদের মতন। তাই কি অনাবশ্যক নৃশংসতা দেখানোটা আমাদের মজ্জাগত হয়ে গেছে আদিমকাল থেকে?! চিন্তিত

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

ফাহিম হাসান এর ছবি

অনেক অনেক ধন্যবাদ যাযাপু।

মানুষের আসলে বুদ্ধি আর হিংস্রতা ছাড়া অন্য কোন ফিজিকাল ডিফেন্স মেকানিজম নেই অন্য প্রাণীদের মতন।

কথাটা সত্যি। কিন্তু হিংস্রতা এখন আর ডিফেন্স হিসেবে না, বিনোদনের উৎস হয়ে উঠছে অনেকটা মন খারাপ

অর্ক রায় চৌধুরী এর ছবি

অনেক কথা বলার ছিলো, তাই চুপ করে গেলাম।

ফাহিম হাসান এর ছবি

বলে ফেলুন, শেয়ার করুন আমাদের সাথে।

রু (অতিথি) এর ছবি

আপনার পোস্ট সবসময় ভালো লাগে।

ভাবতেই অবাক লাগে, নিজের বিমলানন্দের জন্য আরেকটা প্রানীকে কষ্ট শুধুমাত্র মানুষই দিতে পারে।

ফাহিম হাসান এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ। আপনি নিয়মিত আমার ব্লগ পড়েন, উৎসাহ দেন, সেজন্য আমি কৃতজ্ঞ।

guest_writer এর ছবি

গরম জল ঢালা আর মুক্ত জীবকে বন্দী করার ব্যাপারটা মন খারাপ করিয়ে দিল।
হিংস্রতা এখন আর ডিফেন্স হিসেবে না, বিনোদনের উৎস হয়ে উঠছে অনেকটা---- এটার ইতিহাস অনেক প্রাচীন, শিকড় অনেক গভীর।---- অণু

ফাহিম হাসান এর ছবি

সত্যি অণু ভাই, মন খারাপ করার মতই ব্যাপার।

সবজান্তা এর ছবি

আরে দুর্দান্ত ! আপনার লেখার হাত তো মারাত্মক !

ফাহিম হাসান এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ দেঁতো হাসি

ইস্কান্দর বরকন্দাজ এর ছবি

চমৎকারে অমত কার... চলুক

শুভেচ্ছা

ফাহিম হাসান এর ছবি

আরে বাহ! মন্তব্য পড়ে মন খুশি খুশি হয়ে গেল।

আশালতা এর ছবি

কৈফিয়ত দিই।
এই লেখাটা পোস্ট হবার পরপরই পড়েছি। কিন্তু কমেন্ট করিনি...ইচ্ছে ছিল না তা নয়, বলা যায় সম্ভব ছিলনা ওই অবস্থায়। নইলে আপনার লেখার জন্যে আমিই বরং তাগাদা দিচ্ছিলাম।

লেখা যে ভালো হয়েছে তা সবাই বলে দিয়েছেন, তবু আরেকবার বলি, ভীষণ ভালো লেগেছে। লেখায় পরিমিতি বোধটুকু দারুন সুন্দর। আপনার আসলেও নিয়মিত লেখা উচিত, আপনার জন্যে নয়, আমাদের জন্যে। হাসি
আর হ্যাঁ, বাচ্চাদের নিয়ে আরেকটা লেখা কিন্তু এখনও বাকি থেকে গেল।
অপেক্ষায় আছি কিন্তু পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

ফাহিম হাসান এর ছবি

আমার লেখার পিছনে পাঠকরাই মূল প্রেরণা। সচলায়তনে এসে পাঠকদের কাছ থেকে আশাতীত ভালোবাসা/ফিডব্যাক পেয়েছি - এজন্য আমি কৃতজ্ঞ। অনেক অল্প সময়েই সখ্যতা গড়ে উঠেছে সবার সাথে হোক সে অতিথি/হাচল/সচল।

অনুপ্রেরণার জন্য আবারো ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা। বাচ্চাদের নিয়ে একটা ছড়া লেখার কথা চিন্তা করছি। একটু গুছিয়ে নিয়েই পোস্ট দিব।

কল্যাণF এর ছবি

গুরু গুরু

ফাহিম হাসান এর ছবি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।