মনে পড়ে রুবি রায়

ফকির লালন এর ছবি
লিখেছেন ফকির লালন (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৩/০৯/২০০৯ - ৮:৩৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মাঝে মধ্যে মনে হয়, যাই – দেখে আসি তুমি কেমন আছো। কিছুনা, তুমি থাকবে তোমার মতো। অফিস, বাসা, গ্রসারী, ছেলের স্কুল, টিউশন সবকিছু যেমন চলছে, তেমনই চলবে। আমি শুধু বাসার সামনে ফুটপাথে ল্যাম্পপোস্ট হয়ে দাঁড়িয়ে থাকবো তোমাকে দেখার জন্য, বেশী না, অল্প ক’টা দিন – বর্ষায়, রোদে, কুয়াশায়, শিশিরে। চিন্তার কিছু নেই, তুমি একদম টেরই পাবেনা যে এই রং ওঠা ল্যাম্পপোস্টটাই একদিন হিমবাহ ছিলো।

নিবিড় বৃষ্টি হবার পর যখন শহরটার সব প্রসাধন ধুয়ে গোপনগুলো বেড়িয়ে পরে; রিক্সা, সিএনজি আর গাড়ীর চাকা গুলো নানা অনুপাতে ডুবে যায়, লোকে যখন টিভিতে ফেনা তুলে ফ্যালে নিস্ফল আস্ফালনে-বিশ্লেষনে; আমি তখন নটরাজ। হা হা করে হাসি, পাগলা দাশুর অট্টহাসি – আজ তোমার দামড়াটার সাথে দেখা করা বন্ধ। ও শালার সাথে দীর্ঘক্ষন কথা বলতে হলে আজ তোমাকে ছাদে আসতেই হবে।

রোজকার গার্হস্থ্য যাপনে আটপৌঢ়ে, তবু এক দমকায় হাফসিল্ক উড়ে গ্যালে নোম্যান্স ল্যান্ডের মতো ঝলকে ওঠে এক চিলতে মেদ, নাভিমূলে কতো শতো রহস্যই না তুমি ধরো, এখনো কামরূপ কামাখ্যা। সময় সময় ইচ্ছে করে একখানা মাখনের ছুরি হয়ে যাই।

এখন তোমার ছবি কেনার টাকা হয়েছে তাই সেদিন গ্যালারীতে খুব কিউবিজম ঝাড়ছিলে। তিন চারটা উঠতি আর্টিস্ট আর কিছু ফতুয়া তোমাকে ঘিরে মাছির মতো ভন ভন করছিলো। ছবি ভুলে আমি দূরে দাঁড়িয়ে তোমাকে দেখে অবাক হচ্ছিলাম আর পাঞ্জাবীর পকেটে হাত মুঠো করে তুলিটা খুঁজছিলাম।


মন্তব্য

অন্দ্রিলা এর ছবি

বাহ সুন্দর তো। পুরানো পুরানো ভাব আছে। ভালো লাগলো পড়ে হাসি

অনিকেত এর ছবি

আমি শুধু বাসার সামনে ফুটপাথে ল্যাম্পপোস্ট হয়ে দাঁড়িয়ে থাকবো তোমাকে দেখার জন্য, বেশী না, অল্প ক’টা দিন – বর্ষায়, রোদে, কুয়াশায়, শিশিরে। চিন্তার কিছু নেই, তুমি একদম টেরই পাবেনা যে এই রং ওঠা ল্যাম্পপোস্টটাই একদিন হিমবাহ ছিলো।

নিবিঢ় বৃষ্টি হবার পর যখন শহরটার সব প্রসাধন ধুঁয়ে গোপনগুলো বেরিয়ে পরে

আজ তোমার দামড়াটার সাথে দেখা করা বন্ধ।

লালন---লেখাটা আমার খুব খুব ভাল লাগল----
বিশ লক্ষ তারা----

অতিথি লেখক এর ছবি

সুন্দর , বেশ সুন্দর। ছোট ছোট করে বিরহ মনের জ্বালা এত সুন্দর করে সাজানো বড় কঠিন। সেই কঠিন কাজটা আপনি কত সহজে করে ফেললেন। চলুক জীবন ---------

দলছুট।
========================
বন্ধু হবো, যদি হাত বাড়াও।

যুধিষ্ঠির এর ছবি

বেশ ভালো লাগলো। কিশোর বয়সের প্রেম-বিরহের কথা মনে করিয়ে দিলেন চোখ টিপি

বস, আপনার লেখায় বানান ভুল ধরার ধৃষ্টতা দেখাতে চাইনি, তাও মনে হলো এইগুলো বোধহয় শুধরে দেয়া যায় --

নিবিঢ় - নিবিড়
ধুঁয়ে - ধুয়ে
বেরিয়ে পরে - বেরিয়ে পড়ে (এটা আমি শতভাগ নিশ্চিত না, হাতের কাছে অভিধান নেই)
শতো - শত
ঝারছিলে - ঝাড়ছিলে
মূঠো - মুঠো

ফকির লালন এর ছবি

বানানগুলো সত্যিই ভুল ছিলো। দু একটা অসতর্কতার জন্য অতএব ক্ষমার অযোগ্য।
বাকীগুলো জানা ছিলোনা - অতএব ভবিষ্যতেও চলুক ভুল ধরা কোন অকারন বিনয় ছাড়াই। নতুবা ভুলগুলো ভুলই থেকে যাবে।

কোয়েলিয়া এর ছবি

যুধিষ্ঠর দা, বেয়াদবি নিয়েননা, আমার মতে এখানে "ঝরছিলে" ই হবে, "ঝড়ছিলে" না।
লেখা ভালো লাগলো। একটুখানি অঞ্জনের "মালা"র গন্ধ পেলাম যেন?

কোয়েলিয়া এর ছবি

আমি করজোরে মাফ চাই, আবার পড়ে দেখলাম কথিটা "ঝাড়লে", "ঝরালে" না, তাই যুধিষ্ঠির দা ১০০% সঠিক। কি করব ভাই, চোখের দোষ, বয়স তো আর কম হলো না।

যুধিষ্ঠির এর ছবি

হা হা, এত বিনয় করবেন না... আমরা সবাই প্রতিদিনই বানানের নতুন নতুন দিক শিখছি এখানে। অমিও ব্যাপারটা নিয়ে সন্দেহেই ছিলাম।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

ভালো লেখা। কেমন একটা রোমান্টিসিজম আছে... চলুক

---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!

শাহেনশাহ সিমন [অতিথি] এর ছবি

চলুক

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

লেখাটা পড়ে বেশ ক'টা গান মাথায় ভন ভন শুরু করলো... ভালো লাগলো!

-----------------------------------------------
আয়েশ করে আলসেমীতে ২৩ বছর পার, ভাল্লাগেনা আর!

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

মৃত্তিকা এর ছবি

চলুক চমৎকার লেগেছে!

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

বস, একটা বাংলা স্পেলচেকারের লিঙ্ক পরে পাঠিয়ে দেব। শান্ত খাল দিয়ে কোষা নৌকা বেয়ে যাওয়ার মত লেখায় কচুরীপানার ঝাড়ের মত ভুল বানান পথ আটকায় কেবল।

"শুক্রবার সকালে আমাদের গলি" আর এই লেখাটির মত একই ফরমাটের আপনার আর যা লেখা আছে সেগুলোকে দুই মলাটের মধ্যে বেঁধে ফেলেন। তাহলে বাসায়-অফিসে হাতের কাছে এই বই রেখে দেব। মন খারাপ হলে, খুব আনন্দ হলে, হতাশ হলে বা সুসংবাদ পেলে বইটা খুলে এক একটা পাতা পড়ব।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

বেশ বেশ; কতদিন পর এই লেখাটা পড়ে মনে পড়লো সেই দুর্দমনীয় অপ্রকাশিত ক্রোধ... সেই কিশোরকালের আবেগ...

তিন চারটা উঠতি আর্টিস্ট আর কিছু ফতুয়া তোমাকে ঘিরে মাছির মতো ভন ভন করছিলো। ছবি ভুলে আমি দূরে দাঁড়িয়ে তোমাকে দেখে অবাক হচ্ছিলাম আর পাঞ্জাবীর পকেটে হাত মূঠো করে তুলিটা খুঁজছিলাম।

অনন্য শিল্পি আবেগের প্রকাশ!

মনজুর এলাহী

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।