যে দুজন গ্যাছে বনে
তাদের আর ফিরবার কোনো পথ নেই
কেননা অরণ্যের পথেরা আর নগরে ফেরেনা।
যারা সন্ন্যাস নিয়েছে প্রেমে
তাদের সম্ভবত সেখানেই থেকে যেতে হবে
কেননা প্রেমের তাবৎ পথই এখন ক্লেদে স্থিত।
আর যারা ভবঘুরে হয়ে গ্যাছে
ঘুরে ঘুরে যারা দেখেছে অনেক, তারাও
জেনেছে গন্তব্যের চেয়ে পথই বেশী মায়াবতী হয়।
(স্কটিশ কবি ক্যারল এ্যআন ডাফির জন্ম ’৫৫ তে, গ্লাসগোতে। পড়াশুনা করেছেন লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ে। তার কবিতা খুবই জনপ্রিয় ও পাঠক সমাদৃত। কবিতার জন্য নানা পুরস্কার পেয়েছেন। বর্তমানে পড়ান ম্যাঞ্চেস্টার মেট্রোপলিটান বিশ্ববিদ্যালয়ে।)
শব্দ এবং চওড়া রাত্রি
এই যে চওড়া রাত্রি, এর অন্য পাশে কোথাও এবং আমাদের
মধ্যকার বিদ্যমান এই দূরত্বেও, আমি তোমার কথাই ভাবছি।
আর আমার রুমটাও সরে যাচ্...
১
মাঝে মধ্যে মনে হয়, যাই – দেখে আসি তুমি কেমন আছো। কিছুনা, তুমি থাকবে তোমার মতো। অফিস, বাসা, গ্রসারী, ছেলের স্কুল, টিউশন সবকিছু যেমন চলছে, তেমনই চলবে। আমি শুধু বাসার সামনে ফুটপাথে ল্যাম্পপোস্ট হয়ে দাঁড়িয়ে থাকবো তোমাকে দেখার জন্য, বেশী না, অল্প ক’টা দিন – বর্ষায়, রোদে, কুয়াশায়, শিশিরে। চিন্তার কিছু নেই, তুমি একদম টেরই পাবেনা যে এই রং ওঠা ল্যাম্পপোস্টটাই একদিন হিমবাহ ছিলো।
২
নিবিড় ব...
যখন জীবন ছিলো হাতের মূঠোয় -
মাত্র বারোজন অশ্বারোহী নিয়ে
এক দমকা হাওয়ায়
দখল নিয়েছো লক্ষনাবতীর,
নারীসঙ্গ ভালো লাগেনি বলে
একরাত্রির শোকে
একবস্ত্রে ছেড়েছো কপিলাবস্তু,
রক্তপাত অনিবার্য জেনেও
আলাওল হয়ে
পদ্মাবতীর করতল করেছো চুম্বন।
কার নেশায় মুঠোবন্দী হয়ে আজ
এমন ক্লীব-বৃত্তি? প্রাচীন তেলাপোকা?
ক্ষয়ে যেতে যেতে টিকে থাকা
ছাড়া আর কোন অর্জন নেই?
বিস্তর লেখালেখি আর খোঁড়াখুঁড়ি করে তবে সরানো গ্যাছে জমে থাকা বর্ষার পানি। মোড়ের ডাস্টবিনটা তবু রয়েই গ্যালো। ফোন আর ইলেকট্রিক তারে গলিটা আজ়ণ্ম জঞ্জাল, দিগন্তজোড়া তারের আঁকিবুঁকি, আকাশের আজ বড় বিপদ!
টিউশনে যাবার পথে গলি থেকে সেই মেয়েটা কুড়িয়ে তুলে বই। চায়ের সঙ্গে তাই মোড়ের টং এ বেজে ওঠে গোটা দুই সিটি।
বন্ধ বালতিতে তড়পাচ্ছে পালকহীন দুটো মুরগী, একটা সরু রক্তের ধারা বয়ে যাচ্ছে ড...
আজ এখানে বৃষ্টি হলো খুব,
ঠিক যেনো বাংলাদেশের শ্রাবণ
পথ ভুলে ভুল ঠিকানায়।
তোমারও কি মনে হল আমার কথা?
সেই কোন কালে
কত যুগ আগে, এমনই বরোষায়
শুনিয়েছিলে 'আকাশ যেনো আলকাতরা
সেনাবাহিনীর মতো ঝাঁপিয়ে নামবে বৃষ্টি';
আর আমি, তোমাকে শোনাবো বলে
পড়েছিলাম মেঘদূত, খানিকটা রবীন্দ্রনাথ।
আজও বৃষ্টি হয়,
আকাশ, আলকাতরার চেয়েও আরও
ঘন কালো মেঘে করে অভিসার,
কেবল তুমিই গোনো বরফের কাপাস;
নিরাপদ ওমে, তো...
কতো খরচ করলে সন্ধ্যাটা কাটানো
যেতে পারে তোমার সাথে আজ়?
দু’জনে পিজা কিংবা চাইনিজ, ধরা
যাক শ ছয়েক; মাল্টিপ্লেক্সে একটা
সিনেমা, আরো শ দুই। বত্রিশবার
এসএমএসে আসবে কিনা, আর
অপেক্ষার মিনিট মিনিট এক ডজন
ব্যস্ত ফোন, ধরো শ খানেক; সিএনজি
বা ট্যাক্সিক্যাবে আরও শ এক। একটা
জয় গোস্বামী কিংবা ইফফাত আরা,
ধরো আরো তিনশো। রজনীগন্ধা চলবেতো?
মোটামুটি সপ্তায় তিন সন্ধ্যায় এককাপ
বিস্বাদ চা খেয়ে গাধ...
লোকে যে বলে
সুলভেই সবকিছু দাও-
কাজলরেখা,
সে কথা সত্যি নয়।
ফিরিয়ে দেবার আঘাত পেতে
ভালোবাসতে হয়েছে একুশটা বছর,
প্রত্যাখানের চিঠি পেতে
দিতে হয়েছে সহস্র সমর্পনের চিঠি,
আর মনে যে রেখেছো
সেজন্য ভোলার চেষ্টা করতে হয়েছে সারাটা জীবন!
পাখীরা ফিরেছে ঘরে
অথবা ঘরে ফেরে বলেই তারা পাখী।
আমাদেরই কোন ঘর নেই
শুধু ঘরের স্বপ্ন আঁকি।
এক টুকরো বাগান, আধখানা ঘর
আর বারান্দায় তোমার শাড়ী -
নাকি তোমাকে ভাবিনি বলেই
আমরা আজও, দীপান্তরী।
সকাল থেকে কথা বুনতে বুনতে
ভাবছি -
সে কি বকুল ফুলের মালা হবে কি?
আজ দুপুরে যক্ষপুরে যখন দেখা,
ভাবছি -
সে মালা, তোমায় দেবো কি।
যেইনা তোমার কাছে গেছি,
সেইনা তুমি পশমী বিড়াল
সারাটা দুপুর উথাল পাথাল
কোন পাপে যে, কি ভুলই ভেবেছি।
রুপোর কাঠি, সোনার কাঠি
তোমার খাটেই মানায় ভালো,
আমিই শুধু, অন্যরকম স্বপ্ন দেখেছি।