শিক্ষকেরা ক্ষমা চান নাই, শাস্তিকে ভয় পান নাই। দাপটের বিপরীতে তারা তাদের অহিংস ক্ষমতার পরিচয় দিলেন। কোনটা ক্ষমতা? ন্যায়হীন আইনের প্রতিহিংসা প্রয়োগের দম্ভ নাকি ন্যায়ের মৌন অটল সঙ্কল্প? তারা মৌন মিছিল করেছিলেন যার প্রতিবাদে, কারাবাস ও বন্দিত্ব কি তাদের সেই মৌন প্রতিরোধ ভাংতে পেরেছে? জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতার প্রকাশ হলো আইন। সেই জনগণ মনে করে না তারা অপরাধী। জনগণ এখন আইনকেই প্রশ্ন করবে, তুমি কি নৈতিক, তুমি কি সত্যের সেবক, তুমি কি ভুঁইফোঁড়ের সেবক নও, তোমাকে আমরা কেন মানব?
আজ জনতার আদালতে শাস্তিদাতারাই কাঠগড়ায় আর বন্দিরা মনের মণিকোঠায়। এ কেমন শাস্তি, যখন শাস্তি দেয়ার জন্য শাস্তিদাতাকেই সাফাই গাইতে হয়! আইন উপদেষ্টার কণ্ঠের কুঁই কুঁই সাফাই প্রমাণ করে অপরাধ কোথায় হয়েছে এবং কারা করেছে। ঐ চার প্রতিবাদী শিক্ষকের নৈতিক ক্ষমতার কাছে রাষ্ট্রের বলপ্রয়োগের ক্ষমতা তাই পরাভূত। আমি বিশ্বাস করি তারা একের পর এক বিজয়ের সোপান রচনা করে চলেছেন। বাংলাদেশ অচিরেই এই ক্ষমতার অভিষেক ঘটাবে। কারণ, রাষ্ট্র তাদের দোষী বললেও সমাজ মনে করে তারা নির্দোষ। এ ঘটনা বাংলাদেশে রাষ্ট্র ও সমাজের বিচ্ছেদ আরো বাড়িয়ে তুলবে।
জুডাসে ভরে গেছে দেশ। নপুংসক সিভিল সোসাইটি কর্পোরেট বেনিয়া আর উলঙ্গ বৈশ্বিক যুদ্ধবাজদের উপাঙ্গ মর্দন করে মধূ খাচ্ছে। রাজনীতিবিদরা খাল কেটে কুমীর এনেছে। এখন সেই কুমীরের ভয়ে সং সেজে ভং ধরে কেঁদে কেটে একশা। কেবল ছাত্র-শিক্ষকেরাই আগুনের পরশমণি জ্বালিয়ে রেখেছেন। তখনও এখনও। সেই আগুন সূর্যের স্বভাব ধারণ করে। রাহু সূর্যকে খায় সত্য, কিন্তু তা ক্ষণিকের জন্য। সুর্যকে কেউ গ্রাস করতে পারে না। এবং সত্য এই যে জুলুমের প্রধান প্রতিপক্ষ ঐ শিক্ষকেরাই। এই রায় তারই স্বীকৃতি। আদালতে শিক্ষকের অপরাধ নয়, প্রমাণিত হয়েছে জবরদখলকারীর জনবিচ্ছিন্নতা। বলবানের সমুখে সত্য উচ্চারণই ক্ষমতা। আমাদের শিক্ষকেরা সেই ক্ষমতা প্রদশন করেছেন। তাদের অভিবাদন। দিন আসছে। ইতিহাস সক্রিয় হয়ে উঠছে। স্বাধীনতার পর এই প্রথম রাজনৈতিক কারণে শিক্ষকের সাজা হলো। বিচার বিভাগের জন্যও এটা এক অগ্নিপরীক্ষা। এই আগুন যারা খাওয়ার খায়েশ করেছে, তাদের এবার তা হজমের সামর্থ্য দেখাতে হবে।
আগুন থেকে আগুনই জন্মায়।
মন্তব্য
চার শিক্ষককে অভিবাদন।
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
এরকম আলোচনা খোলাখুলি হচ্ছে?
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
এতসব অবিচার-অনাচার দেখতে দেখতে আমি প্রশ্ন করাও ভুলে গেছিলাম। শিক্ষকদের ব্যাপারে রায়টা শুনে আবার একটা প্রশ্ন জাগল মনে। সেটা এই যে, দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে শেষ পর্যন্ত এদেশে কোনটা স্বাধীন হইছে, বিচারবিভাগ নাকি সরকার?
অবশ্য বিচারবিভাগের সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে আমাদের অমূল্য প্রত্নবস্তুগুলো ফ্রান্সে চলে যাওয়ার ঘটনাটিও এরকম প্রশ্ন জাগায় ইন্ধন দিয়েছে।
ফারুক ওয়াসিফের লেখাটিতেও আগুন আছে।
রাইসুল মুসাফির
সবাই তো আর নিজেকে বেঁচতে পারেনা ।
শিক্ষকদের অভিনন্দন ।
ফারুক ওয়াসিফ, আরেকটা অনুরোধ- আপনারা যারা দেশে আছেন,ঘটনাপ্রবাহ বুঝার সুযোগ পাচ্ছেন তারা নিয়মিত এইবিষয়গুলো ব্লগে লিখুন । আমরা যারা বাইরে আছি তাদের দুর্ভাগ্য-কোন মিডিয়াকেই বিশ্বাস করা যায়না আর । স্বৈরাচার এরশাদের সময় ও সম্পাদকদের মেরুদন্ড ছিলো এখন সব দালাল ।
-----------------------------------------
মৃত্যুতে ও থামেনা উৎসব
জীবন এমনই প্রকান্ড প্রচুর ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
দেখুন, মিডিয়া যা হওয়ার তা তো হয়েছেই, কিন্তু আমরা যা বুঝি তা খোলাখুলি বলতে গিয়ে নানান তকমা গায়ে সেঁটে যাওয়ার বিপদ টের পাই। যাহোক, এখানকার পরিস্থিতি সত্যিই খারাপ। যেমন ফ্রান্সে প্রত্নসম্পদ পাচার ব্যাপারটার সঙ্গে যারা জড়িত ছিলেন তাদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের পূজারী ও বিশিষ্ট অভিনেতা কাম বিজ্ঞাপন ব্যবসায়ী, থিয়েটারকর্তা ইত্যাদিরাও জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ আছে। এখন বলেন, কাকে থূয়ে কাকে ধরবেন। ৩৬ বছের যারা রাম রাম রাম বলতেন, স্বার্থের ফেরে তারা এখন মরা মরা মরা বলছেন।
দু:খিত ফন্টে সমস্যা হচ্ছে।
::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::
বহুদিন হলো নিকষ কুঠার ফেলে এসে ভুলে
দাঁড়িয়েছি আজ মেঘের কিনারে এসে
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
অনুমতি ছাড়াই ফন্ট সমস্যার সমাধান করা হলো
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
চমৎকার লেখা।
এই চার শিক্ষকের প্রতি শ্রদ্ধায় মাথা নুয়ে এলো।
কী কারণে? না, মত প্রকাশের অভিযোগে!
ছি! বিচার বিভাগ!!
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
নতুন মন্তব্য করুন