অনেক দিন সংবাদ দিতে পারি নাই। কিন্তু অসুখের জানালায় বসে যেভাবে সঙ্গীদের দৌড়ঝাপ দেখে রুগ্ন বালক, সেভাবে চোখ রেখেছি_সংবাদ নিয়েছি। অধমের এখনকার হাল হলো সেই যাত্রা পালার নায়কের মতো।
এককালে করুণ কাহিনীর কদর ছিল। যাত্রাটি সেরকম এক। শেষ দৃশ্যে নায়ক রাজপুত্র মারা যাবে, আর নায়িকা রাজকন্যা সেই দুঃখে বিবাগী হবে। এসবের পর বিবেকের পাট। সে এসে তুমুল মোলোড্রামার পর খুচরা দার্শনিকতা সেরে উপসংহারমূলক গান গেয়ে শেষ করবে।
তো দৃশ্য চলে এসেছে। নায়ক ভিলেনের রাংতা মোড়ানো তরবারির গুতায় শুয়েও পড়েছে। দর্শকদের আশা, রাজপুত্র তো মরতে পারে না! ওদিকে পর্দার পেছনে নায়িকা রেডি। এখনই চিঁ চিঁ ই ই ই ডাক ছেড়ে মঞ্চে লাফিয়ে পড়তে প্রস্তুত। চোখে গ্লিসারিনও মাখা শেষ_ টলটল করছে_প্রথম ফোঁটা পড়লো বলে। বিবেকও তার পাট দেখে নিচ্ছে। ওদিকে নায়ক ব্যাটা খিচ লেগে পড়ে আছে তো পড়েই আছে। তার এখন, ভিলেনকে উদ্দেশ্য করে একটা মুখ খিচানি দিয়ে মরে যাবার কথা। আর দেরি করা যায় না ভেবে নায়িকা সিনে ঢুকে পড়লো মুখ ব্যাদান করে। ওদিকে চোরা চাহনিতে তাকে বুকের ওপর এসে ঝাঁপিয়ে পড়তে দেখে নায়ক এক লাফে খাড়া।
'আরে করিস কি মাগি' বলে সে তার অন্তিম ডায়লগ খানা ছাড়লো,
'মরি নাই মরি নাই, আমার রক্তের প্রয়োজন।'
বেচারা রক্তের পুটলি না নিয়েই মঞ্চে ঢুকে পড়েছিল। তাই ভিলেনের হাতে মরেও রক্তের অভাবে দর্শকদের বোঝাতে পারে নাই যে, তার বুকে জখম হয়েছে, এই সিনে তার মেলা রক্ত ঝরিয়ে মরবার পাট।
আমারও অবস্থা তাই। কেবল রক্ত ঝারাতে পারি নাই বলে এ যাত্রায় বেঁচে গেলাম।
তবে চালু রাজনীতির উকিল-কোটাল-মাতাল আর গদিনসীন-পর্দানসীন-ডাণ্ডানসীনদেরও দম ফুরায় ফুরায় অবস্থা। কেউ কিচ্ছুটি করতে পারছে না।
খালি গার্মেন্ট শ্রমিকরা দম ফুরালেই রাস্তায় নামে। ওদিকে বস্তি পোড়ে। সেই পোড়া কান্না আর পোড়া চামড়া গুগল আর্থ দিয়ে দেখা না গেলেও প্রধান উপদেষ্টা খামাখাই জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে কান গরম করেন।
দেশবাসী তো যাত্রার দর্শক। রাত জেগে তারা পালা দেখতে বসেছে। তাদের কথা একটাই,
'ব্যাটা মর, নাইলে যার যা পাট তা-ই কর। আহাম্মকের লাহান কাঁদস ক্যা!??'
মন্তব্য
'ব্যাটা মর, নাইলে যার যা পাট তা-ই কর। আহাম্মকের লাহান কাঁদস ক্যা!??' ..ডায়লগটা বেশ ভালো হয়েছে।
জটিলস্য জটিল
----------------------------------------------
আমাকে নিঃশব্দে অনুসরণ করে একটা নদী-
সাথে নিয়ে একটা পাহাড় আর একটা নিঃসঙ্গ মেঘ।
রক্ত ঝরাতে না পারা যাত্রাপালার নায়ক আপনাকে জীবিত দেখে স্বস্তি পেলাম। নিয়ত বঞ্চনার শিকার গার্মেন্ট শ্রমিক আর সাজানো আগুনে
সবহারা বস্তিবাসীদের হয়ে কথা বলবার লোক তো কুড়িতে দুইজনও নেই।
..................................................................................
শোনো, বীণা আমি বাজাইনি প্রতিবারই নিজে, এমনও হয়েছে
বীণায় রেখেছি হাত, নিজেই উঠেছে বীণা বেজে!
... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী
ঠিকাছে.........
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
'আর যাহা তাহা বলিবার নয়,
মর্ম মাঝে যাহা বয় রক্তময়
সকলই জানেন বিধি'
::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::
বহুদিন হলো নিকষ কুঠার ফেলে এসে ভুলে
দাঁড়িয়েছি আজ মেঘের কিনারে এসে
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
নতুন মন্তব্য করুন